HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

দু’টি সাক্ষী (লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ ওয়া মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ) এর অর্থ ও তাদের প্রত্যেকের জরুরী বিষয়

লেখকঃ মাননীয় শাইখ আল্লামা আব্দুল্লাহ ইবন আব্দুর রাহমান ইবন জিবরীন

দ্বিতীয় অধ্যায় : দু’টি সাক্ষীর ওপর জিহাদ করা ও সাক্ষী দু’টি বাস্তবায়ন করা ওয়াজিব।
সহীহ বুখারী ও মুসলিমে আবু হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,আমাকে মানুষের সাথে ততক্ষণ পর্যন্ত যুদ্ধ করার আদেশ দেয়া হয়েছে যে পর্যন্ত না তারা এ কথার স্বীকৃতি দিবে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য মাবুদ নেই। যে বলবে, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য ইলাহ নেই। সে আমার হাত থেকে তার জান-মাল নিরাপদ করে নিবে। তবে উক্ত দু’টি বিষয়ের সাক্ষীর অধিকার স্বরূপ তার ওপর কিছু আবশ্যক হলে সে কথা ভিন্ন। আর তার হিসাব আল্লাহর ওপর ন্যস্ত থাকবে”। সহীহ মুসলিমের অন্য বর্ণনায় এসেছে,“যতক্ষণ না তারা এ কথার সাক্ষ্য দিবে যে, আল্লাহ্ ব্যতীত আর কোন সত্য উপাস্য নেই। আর যতক্ষণ না তারা আমার প্রতি এবং আমি যা নিয়ে এসেছি, তার প্রতি ঈমান আনয়ন না করবে”।ইবনে উমার রাযিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে সহীহ বুখারী ও মুসলিমে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,“আমাকে লোকেদের বিরুদ্ধে জিহাদ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে; যতক্ষণ না তারা সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ ছাড়া (সত্য) কোনো উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল। আর তাঁরা সালাত প্রতিষ্ঠা করবে ও যাকাত প্রদান করবে। যখন তারা এ কাজগুলো সম্পাদন করবে, তখন তারা আমার নিকট থেকে তাদের রক্ত (জান) এবং মাল বাঁচিয়ে নেবে; কিন্তু ইসলামের হক ব্যতীত। আর তাদের হিসাব আল্লাহর ওপর ন্যস্ত হবে।”সহীহ বুখারীতে আনাস রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,“আমি আদিষ্ট হয়েছি মানুষের (মুশরিকদের) সাথে যুদ্ধ করার জন্য, যতক্ষণ না তারা এ কথার সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ্ ব্যতীত আর কোনো সত্য উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। তারা যখন এই সাক্ষ্য দিবে যে, আল্লাহ্ ব্যতীত আর কোনো সত্য উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল, এবং আমাদের ন্যায় নামায আদায় করবে, আমাদের কিবলার দিকে মুখ করবে এবং আমাদের যবেহকৃত পশুর গোশত ভক্ষণ করবে তখন আমাদের ওপর তাদের জান-মাল হারাম হয়ে যাবে। তবে তাঁর অধিকার স্বরূপ (তাদের ওপর কিছু আবশ্যক) হলে, সে কথা ভিন্ন”।এ বিষয়ে আরো অনেক হাদীস রয়েছে। এভাবেই যারাই উপরোক্ত দু’টি বিষয়ের সাক্ষ্য দিয়ে ইসলাম কবুল করতো, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে গ্রহণ করে নিতেন। আবু যার গিফরী রাযিয়াল্লাহু আনহু এর ইসলাম গ্রহণের ঘটনায় ঐতিহাসিকগণ উল্লেখ করেছেন যে, তিনি বলেন,আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বললাম, السلام عليك يا رسول الله، أشهد أن لا إله إلا الله وأن محمدا رسول الله অতঃপর আমি তাঁর চেহারা মোবারকে খুশির লক্ষণ দেখতে পেলাম।তাঁরা খালেদ ইবন ওয়ালীদের ব্যাপারে উল্লেখ করেছেন যে, তিনি ইসলাম গ্রহণ করার জন্য মদীনায় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আগমণ করলেন। তিনি বলেন,আমি তাঁকে সালাম দিয়ে বললাম, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোনো সত্য ইলাহ নেই আর আপনি আল্লাহর রাসূল। তিনি তখন বললেন, আমি সেই আল্লাহর প্রশংসা করছি, যিনি তোমাকে সঠিক পথ দেখিয়েছেন।অনুরূপ খালেদ ইবন সাঈদ ইবন আস রাদিয়াল্লাহু আনহুর ইসলাম গ্রহণের ঘটনা। তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে সাক্ষাৎ করেবললেন, আপনি কিসের দিকে আহবান করেন? তিনি বললেন, আমি এক আল্লাহর দিকে আহবান করছি যার কোনো শরীক নেই। আর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসূল। সেই সঙ্গে তুমি যে পাথরের এবাদত করছো, যে শুনে না, কারো ক্ষতি বা উপকার করতে পারে না এবং কে তার এবাদত করছে আর কে করছে না, তাও জানে না, তার এবাদত বর্জন করার দাওয়াত দিচ্ছি। খালেদ বলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই এবং আপনি আল্লাহর রাসূল।এ সব ঘটনা এবং আরো ঘটনা প্রমাণ করে যে, ইসলামে প্রবেশ করার জন্য শাহাদাত দুটি মুখে উচ্চারণ করা পূর্বশর্ত। যে ব্যক্তি সাক্ষ্য দু’টি প্রদান করবে, সে এ দ্বীনে প্রবেশ করল। এর মাধ্যমে তার জান-মাল রক্ষা পাবে এবং তাকে হত্যা করা হারাম হবে। এই পবিত্র বাক্য পাঠ করার পরও উসামা ইবন যায়েদ রাযিয়াল্লাহু আনহু যখন এক লাককে হত্যা করেছিলেন, তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর প্রতিবাদ করেছেন। সহীহ মুসলিম এবং অন্যান্য কিতাবে বর্ণিত হয়েছে যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে এক যুদ্ধে পাঠালেন। তিনি বলেন,আমি এমন এক লোককে পেলাম, যে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ পাঠ করছিল। আমি তাকে আঘাত করলাম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি কি তাকে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলার পরও হত্যা করেছো? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! সে অস্ত্রের ভয়ে তা পাঠ করেছে। তিনি বললেন, তুমি কি তার অন্তর চিরে দেখেছিলে?সহীহ বুখারীতে জুন্দুব আল-বাজালীর হাদীছে এসেছে,উসামা বলেছিল, হে আল্লাহর রাসূল! সে তো মুসলিমদেরকে কষ্ট দিয়েছে এবং অমুক অমুককে হত্যা করেছে। একারণেই আমি তার ওপর তলোয়ার উঠিয়েছি, তখন সে তলোয়ার দেখে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ পাঠ করেছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, কিয়ামতের দিন যখন সে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ নিয়ে উপস্থিত হবে, তখন তুমি কি করবে?ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু এর হাদীছে এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মু‘আয রাযিয়াল্লাহু আনহুকে ইয়ামানে পাঠালেন, তখন তাকে বলেছেন,সর্ব প্রথম যে জিনিষের দিকে তুমি তাদেরকে ডাকবে, তা হলো, একথার সাক্ষ্য দান করা যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোনো সত্য মাবুদ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসূল। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)এ অর্থে আরো অনেক হাদীছ রয়েছে, যা থেকে বুঝা যায় যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর যামানায় এদু’টি শাহাদাতকে যথেষ্ট মনে করতেন। সুতরাং, যে ব্যক্তি এদু’টি বিষয়ের সাক্ষ্য দিতো, এর অর্থ অনুযায়ী আমল করতো, প্রত্যেকটি বিষয়ের সাক্ষ্য প্রদানে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্যের যে দাবি রয়েছে তা বাস্তবায়ন করতো এবং সকল শ্রেণীর এবাদত সম্পন্ন করতো, পবিত্র বাক্য ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর সাক্ষ্য দেয়ার অর্থ বুঝে আল্লাহর তাওহীদ বাস্তবায়ন করতো, সমস্ত শির্কী আমল ও অভ্যাস বর্জন করতো এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল, -এ কথার সাক্ষ্য দেয়া থেকে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আনুগত্য ও অনুসরণ করার আবশ্যকতা বুঝে নিতো, তাদেরকেই তিনি মুসলিম বলে গণ্য করতেন। কারণ তারা ছিল স্পষ্ট আরবী ভাষী। তারা কালিমায়ে শাহাদাতের অর্থ বুঝতো ও জানতো। ‘ইলাহ’ অর্থ কি তাও তারা জানতো। لا إله إلا الله এর মধ্যে বর্জন করা ও সাব্যস্ত করার যে অর্থ রয়েছে, তারা তাও বুঝতো। সুতরাং এ কালিমাকে তাদের মুখে বলানোর ওপরই তিনি যথেষ্ট মনে করতেন। কেননা, এ কালিমা উচ্চারণ করা দ্বারা নাজাত পাওয়া শর্ত হলো, এর অর্থ সম্পর্কে অবগত হওয়া এবং প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে এর দাবি অনুপাতে আমল করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, فَاعْلَمْ أَنَّهُ لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ “জেনে রেখো, আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোন সত্য মাবুদ নেই”।সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত : ১৯আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,তবে যে হকের সাক্ষ্য দেয় অথচ তারা জানে।সূরা যুখরুফ: আয়াত : ৮৬

এরূপ আরো অনেক আয়াত যেগুলো প্রমাণ করে যে, তাঁর অর্থ জানা শর্ত। সুতরাং যেসব মুশরিক প্রকাশ্যভাবে দুই শাহাদাত উচ্চারণ করবে তাঁর থেকে বিরত থাকতে হবে এবং এর মাধ্যমে সে তার জান নিরাপদ করে নিবে। এরপর তাকে পরীক্ষা করতে হবে এবং তার ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। সে যদি দীনের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকে, তাওহীদকে বাস্তবায়ন করে এবং ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী আমল করে, তাহলে সে মুসলিম। তাঁর জন্য তাই রয়েছে যা অন্যান্য মুসলিমের জন্য রয়েছে। আর অন্যান্য মুসলিমদের ওপর যা আবশ্যক তার ওপরও তাই আবশ্যক। আর যদি সে যা সাক্ষ্য দিয়েছে তার বিপরীত আমল করে অথবা তার ওপর অর্পিত কোনো আমল অস্বীকার বশত বর্জন করে কিংবা দীনের সর্বজন বিধিত হারাম জিনিষগুলোকে হালাল মনে করে, তাহলে এই বাক্যটি তাকে রক্ষা করবে না।

বর্তমানকালের অনেক আলেম ও সাধারণ লোক, মূর্খ কিংবা মুকাল্লিদের মধ্যে এটিই লক্ষ্যণীয়, যে কারণে পরবর্তীকালের অনেক লোকের আকীদাহ বরবাদ হয়ে গেছে। তারা তাদের দীন ও শাহাদাতের বাক্য দু’টির অর্থ সম্পর্কে অজ্ঞতা নিয়ে বড় হয়েছে। শুধু তাই নয়; তারা আরবী ভাষার অর্থ সম্পর্কেও অজ্ঞতা নিয়ে প্রতিপালিত হয়েছে। সুতরাং তাদের অধিকাংশই শাহাদাতের বাক্য দু’টির অর্থ বুঝে না। তাই তারা এর প্রকাশ্য বিরোধিতায় লিপ্ত হয়। তারা এই বিশ্বাসে শাহাদাতের বাক্য দু’টি উচ্চারণ করাকেই যথেষ্ট মনে করে যে, অর্থ না বুঝে এবং তার দাবি অনুযায়ী আমল ব্যতীত তা আওড়ালেই ছাওয়াব পাওয়া যাবে এবং এর মাধ্যমে তাদের জান-মাল সংরক্ষিত থাকবে। এজন্যই যারা কালেমার অর্থের বিরুদ্ধাচারণে লিপ্ত হয় এবং তার উচ্চারণকে যথেষ্ট মনে করে আর ধারণা করে যে, এর মাধ্যমেই সে পূর্ণ তাওহীদের অধিকারী মুসলিম। তাদের উপর সুস্পষ্টভাবে দলীল-প্রমাণ সাব্যস্ত করার জন্যে এ দু’টি সাক্ষীর অর্থ বর্ণনা করা আমাদের জরুরি দায়িত্ব হিসেবে দেখা দিয়েছে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন