HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

দু’টি সাক্ষী (লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ ওয়া মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ) এর অর্থ ও তাদের প্রত্যেকের জরুরী বিষয়

লেখকঃ মাননীয় শাইখ আল্লামা আব্দুল্লাহ ইবন আব্দুর রাহমান ইবন জিবরীন

পঞ্চম অধ্যায়: দু’টি সাক্ষীর শর্তসমূহ:
আলেমগণ ইখলাসের কালিমার সাতটি শর্ত উল্লেখ করেছেন। কেউ কেউ ছন্দাকারে পেশ করেছেন এভাবে:

জ্ঞান, বিশ্বাস, নিষ্ঠা, তোমার সত্য বলা এবং আরও রয়েছে মুহাব্বত। আর আনুগত্য করা ও তা গ্রহণ করা।

এ শর্তগুলো কুর‘আন ও সুন্নাহর দলীল ঘাঁটাঘাঁটি ও খোঁজাখুঁজি করে বের করা হয়েছে। কেউ কেউ তার সাথে অষ্টম শর্ত যোগ করে এভাবে কবিতা লিখেছেন:

এগুলোর সাথে অষ্টম শর্তটি বাড়ানো হয়েছে যা হলো আল্লাহ ছাড়া অন্যান্য শরীকদেরকে অস্বীকার করা যাদেরকে পূজা করা হয়।

তিনি এ শর্তটি নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নিম্নোক্ত বাণী থেকেই নিয়েছেন:

“যে ব্যক্তি বলল আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন মা’বূদ নেই এবং আল্লাহ ছাড়া অন্যান্য মাবূদকে অস্বীকার করলো, তার জান ও মাল হারাম হয়ে গেলো।

মুসলিম এটি বর্ণনা করেছেন।

শাইখ মুহাম্মাদ ইবনু আব্দিল-ওয়াহহাব (রাহিমাহুল্লাহ) তাঁর তাওহীদ নামক কিতাবে এ হাদীসটি উল্লেখ করার পর বলেন: এটি “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” এর অর্থ বর্ণনাকারী একটি মহান হাদীস। কারণ, এটি শুধু মুখে বলাকে কারো জান ও সম্পদের রক্ষাকারী নির্ধারণ করেনি, বরং মুখে বলার সাথে তার অর্থ জানা ও তা স্বীকার করাকেও যথেষ্ট করেনি এবং সে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কাউকে ডাকে না যার কোন শরীক নেই এতেও যথেষ্ট করেনি, যতক্ষণ না তার সাথে আল্লাহ ছাড়া অন্য উপাস্যকে অস্বীকার করা যোগ না করবে। যদি সন্দেহ বা দ্বিধা থাকে তাহলে তার রক্ত ও সম্পদ নিরাপত্তা পাবে না।

এ শর্তের অর্থ হচ্ছে আল্লাহ ছাড়া অন্য যে কারো ইবাদাত বাতিল হওয়া বিশ্বাস করা। যে ব্যক্তি আল্লাহর নিরেট অধিকারের কোন কিছু অন্যের জন্য ব্যয় করবে সে সত্যিই পথভ্রষ্ট মুশরিক। আর আল্লাহ ছাড়া যত মা’বূদ রয়েছে যেমন: কবর, গম্বুজ, ভূখণ্ড ইত্যাদি তা সবই মুশরিকদের মূর্খতা ও কুসংস্কার থেকে তৈরি হয়েছে। সুতরাং যে তাদের এগুলোকে স্বীকার করবে অথবা তাদের সততার ব্যাপারে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগবে কিংবা তারা যার ওপর আছে তা বাতিল হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ করবে সে অবশ্যই তাওহীদপন্থী নয়। যদিও সে মুখে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বলে এবং যদিও সে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত না করে।

এদত সত্বেও সাতটি শর্তই দা’ওয়ার ইমামগণের কিতাবসমূহে প্রসিদ্ধ। তাই স্পষ্ট করার জন্য তার ওপর কতক দলীল উল্লেখ করবো:

প্রথম শর্ত: জ্ঞান

এর দলীল হলো আল্লাহর বাণী:

“অতএব, তুমি জেনে রাখো যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন মা’বূদ নেই”।

সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত: ১৯

মুসলিম উসমান —রাদিয়াল্লাহু আনহু— থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ —সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম— বলেছেন:

“যে মারা গেল, এবং সে জানে আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন মা’বূদ নেই, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে”।

উদ্দেশ্য হচ্ছে: সাক্ষী দু’টির অর্থ এবং সাক্ষী দু’টি যে আমল আবশ্যক করে তার সম্পর্কে সত্যিকার ইলম। আর ইলমের বিপরীত হচ্ছে মূর্খতা। এ মূর্খতাই এ উম্মতের মুশরিকদেরকে তার অর্থের বিরোধিতায় লিপ্ত করেছে। ফলে তারা “ইলাহ” এর অর্থ এবং অস্বীকার করা ও সাব্যস্ত করার উদ্দেশ্য সম্পর্কে মুর্খ রয়ে গেছে। এবং এ কালিমা দ্বারা উদ্দেশ্য তার অর্থ এটিও তাদের হাত ছাড়া হয়ে গেছে। বস্তুত কালিমার অর্থ সম্পর্কে জ্ঞানী মুশরিকরা তার অর্থেরই বিরোধিতা করেছে, যেমন তারা বলেছে:

“সে কি সকল মা’বূদকে বাদ দিয়ে এক মা’বূদকে প্রতিষ্ঠা করতে চায়”।

সূরা স্বাদ, আয়াত: ৫

আর তারা বলে:

“তোমরা চলো এবং নিজেদের মা’বূদগুলোর ব্যাপারে ধৈর্য ধরো”।

সূরা স্বাদ, আয়াত: ৬

দ্বিতীয় শর্ত: বিশ্বাস:

আর তার বিপরীত হলো সন্দেহ ও নিরবতা অবলম্বন করা, অথবা শুধু ধারণা ও সন্দেহ করা।

অর্থাৎ, যে ব্যক্তি দু’টি সাক্ষী (শাহাদাতাইন)কে স্বীকার করলো, তাকে অবশ্যই স্বীয় অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করতে হবে এবং সে যা বলছে তার বিশুদ্ধতার ব্যাপারে নিশ্চিত হতে হবে, যেমন আল্লাহ ইলাহ হওয়ার একমাত্র হকদার এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়ত বিশুদ্ধ এবং আল্লাহ ছাড়া যে কোন ইলাহের ইলাহ হওয়া এবং কোন ব্যক্তি নবুওতের দাবি করলে তার কথা বাতিল হওয়ার বিশ্বাস তার মধ্যে থাকতে হবে। যদি কেউ তাঁর (কালিমার) অর্থের বিশুদ্ধতায় সন্দেহ করে অথবা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত বাতিল হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চুপ থাকে, তাহলে এ দু’টি সাক্ষ্য তার কোন কাজে আসবে না।

এ শর্তের দলীল: মুসলিম আবু হুরাইরাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) এর সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি শাহাদাতাইন সম্পর্কে বলেন:

“এ দু’টি সাক্ষ্য নিয়ে নিঃসন্দেহে কোন বান্দা আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে”।

তার থেকে বিশুদ্ধ গ্রন্থে আরও রয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন:

“এ দেয়ালের পেছনে যার সাথে তুমি সাক্ষাত করবে, যে অবস্থায় সে অন্তরের দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে এ কথার সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন মা’বূদ নেই, তুমি তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দাও”।

আল্লাহ তা‘আলা এ বলে মু’মিনদের প্রশংসা করেন,

“নিশ্চয়ই সত্যিকার মু’মিন ওরা যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ওপর ঈমান এনেছে অতঃপর তাতে তারা কোন ধরনের সন্দেহ করেনি”।

সূরা আল-হুজুরাত, আয়াত: ১৫

তিনি মুনাফিকদেরকে এ বলে নিন্দা করেছেন যে,

“তাদের অন্তরগুলো সন্দেহের রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তাই তারা নিজেদের সন্দেহের মাঝে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগছে”।

সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৪৫

ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:

“ধৈর্য ঈমানের অর্ধেক। আর একীন পুরোটাই ঈমান”।

নিঃসন্দেহে যে ব্যক্তি শাহাদাতাইনের অর্থকে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, নিশ্চয়ই তার অঙ্গগুলো এক রবের ইবাদাতে ও রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর আনুগত্যে উজ্জীবিত হবে।

তৃতীয় শর্ত: কবুল করা যা প্রত্যাখ্যান করার বিপরীত:

দুনিয়াতে এমন ব্যক্তিও আছে যে শাহাদাতাইনের অর্থ জানে এবং সেগুলোর অর্থে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। তবে সে অহঙ্কার ও হিংসাবশতঃ সেগুলোকে প্রত্যাখ্যান করে। এটিই ছিলো ইহুদি ও খ্রিস্টান আলিমদের অবস্থা। তারা এক আল্লাহর ইবাদাতে সাক্ষ্য দিয়েছে এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে নিজেদের সন্তানদের ন্যায় চিনেছে এতদসত্ত্বেও তারা তাঁকে গ্রহণ করেনি।

“তাদের নিকট সত্য প্রকাশ হওয়ার পরও নিজেদের হিংসা বশতঃ।

সূরা আল-বাক্বারাহ, আয়াত: ১০৯

এভাবেই মুশরিকরা “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” এর অর্থ ও মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সততা জানতো। তবে তারা অহঙ্কারবশতঃ তা কবুল করা হতে বিরত থাকতো। যেমন: আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

“নিশ্চয়ই তাদেরকে যখন বলা হতো, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন মা’বূদ নেই তখন তারা অহঙ্কার দেখাতো”।

সূরা আস-সাফফাত: আয়াত: ৩৫

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

“নিশ্চয়ই তারা সত্যিই আপনার অবিশ্বাস করে না। তবে তাদের যালিমরা আল্লাহর নিদর্শনসমূহকে অস্বীকার করে”।

সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ৩৩

চতুর্থ শর্ত: হলো মেনে নেওয়া:

সম্ভবত কবুল করা ও মেনে নেওয়ার মাঝে পার্থক্য হলো, মেনে নেওয়া হচ্ছে কাজের মাধ্যমে তার অনুসরণ করা। আর কবুল করা হলো, কথা দ্বারা তার সত্যিকার অর্থ প্রকাশ করা। আর দু’টি থেকেই অনুসরণ আবশ্যক হয়। তবে মেনে নেওয়া হলো, আত্মসমর্পন করা ও অনুগত হওয়া এবং আল্লাহর বিধানাবলীর কোন কিছুকে পরিবর্তন না করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

“তোমরা তোমাদের রবের নিকট ফিরে যাও এবং তাঁর জন্য আত্মসমর্পণ করো”।

সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৫৪

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

“তার চেয়ে সুন্দর ধার্মিক আর কে যে নিজকে আল্লাহর সামনে সোপর্দ করলো এবং সে মুহসীন”।

সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১২৫

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

আর যে ব্যক্তি একনিষ্ঠ ও বিশুদ্ধচিত্তে আল্লাহর কাছে নিজকে সমর্পণ করে, সে তো শক্ত রশি আকড়েঁ ধরে।

সূরা লুক্বমান, আয়াত: ২২

এটিই হলো আল্লাহর একক ইবাদাতের মাধ্যমে তাঁর অনুগত হওয়া। আর নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সুন্নাত গ্রহণ করে এবং তাঁর আনীত বিধানের অনুসরণ করে ও তাঁর ফায়সালায় সন্তুষ্ট হয়ে তাঁর অনুগত হওয়া। যা আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নিম্নোক্ত বাণীতে উল্লেখ করেন:

অতএব তোমার রবের কসম, তারা মুমিন হবে না যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে বিচারক নির্ধারণ করে, তারপর তুমি যে ফয়সালা দেবে সে ব্যাপারে নিজদের অন্তরে কোন দ্বিধা অনুভব না করে এবং পূর্ণ সম্মতিতে মেনে নেয়।

সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৬৫

ফলে তাদের ঈমানের বিশুদ্ধতার ব্যাপারে শর্ত দিয়েছেন যে, তারা যেন তাঁর ফায়সালাকে মাথা পেতে মেনে নেয়। অর্থাৎ তাঁর রবের পক্ষ থেকে যা নিয়ে এসেছে তার অনুগত হয় এবং তা মেনে নেয়।

পঞ্চম শর্ত: সত্য (সত্যারোপ করা)।

যার বিপরীত মিথ্যা (মিথ্যারোপ করা)।

বিশুদ্ধ হাদীসে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর পক্ষ থেকে এ শর্তটি আরোপিত হয়েছে।

“যে ব্যক্তি নিজ অন্তর থেকে সততার সাথে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে”।

সুতরাং যে তা মুখে বলে এবং অন্তর দিয়ে তার অর্থকে অস্বীকার করে, এ কালিমা তাকে মুক্তি দিবে না। যেমন: আল্লাহ তা‘আলা মুনাফিকদের সম্পর্কে বর্ণনা করেন, তারা বললো:

“আমরা সাক্ষ্য দেই যে, নিশ্চয়ই আপনি আল্লাহর রাসূল”।

সূরা আল-মুনাফিকূন: আয়াত: ১

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

“আর আল্লাহ তা‘আলাও জানেন, নিশ্চয়ই আপনি তাঁর রাসূল। তবে আল্লাহ তা‘আলা সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, মুনাফিকরা নিশ্চিত মিথ্যুক”।

সূরা আল-মুনাফিকূন: আয়াত: ১

এমনিভাবে তিনি তাঁর বাণীতে তাদের মিথ্যারোপ করেন:

“আর মানুষের মধ্যে কিছু এমন আছে, যারা বলে, ‘আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর প্রতি এবং শেষ দিনের প্রতি’, অথচ তারা মুমিন নয়”।

সূরা আল-বাক্বারাহ, আয়াত: ৮

ষষ্ঠম শর্ত: ইখলাস:

তার বিপরীত হলো শির্ক

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

“তুমি আল্লাহর ইবাদাত করো তাঁর জন্য আনুগত্যকে খাঁটি করে। জেনে রাখো, খাঁটি আনুগত্য কেবল আল্লাহর জন্য”।

সূরা আয-যুমার, আয়াত: ২-৩

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

“আপনি বলুন, নিশ্চয়ই আমাকে আদেশ করা হয়েছে, যেন আমি আল্লাহর ইবাদাত করি তাঁর জন্য আনুগত্যকে খাঁটি করে”।

সূরা আয-যুমার, আয়াত: ১১

আর তিনি বলেন:

“আপনি বলুন, আমি আল্লাহর ইবাদাত করি তাঁর জন্য আনুগত্যকে খাঁটি করে”।

সূরা আয-যুমার, আয়াত: ১৪

বিশুদ্ধ হাদীসে আবু হুরাইরাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

আমার সুপারিশ দ্বারা সেই সবচেয়ে বেশি সৌভাগ্যবান হবে যে ব্যক্তি তার অন্তর থেকে একনিষ্ঠভাবে বলবে, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ (আল্লাহ ছাড়া সত্যিকার কোনো ইলাহ নেই)।

এটিই উতবান (রাযিয়াল্লাহু আনহু) এর হাদীসে বর্ণিত নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর বাণীর অর্থ:

“নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা আগুনের ওপর হারাম করে দিয়েছেন সেই ব্যক্তিকে যে, আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”বলে।

অতএব, ইখলাস মানে ইবাদাত একমাত্র আল্লাহর জন্য হওয়া। এর কোন কিছুই আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো জন্য ব্যয় করা যাবে না। না নিকটতম কোন ফিরিশতার জন্য, না কোন প্রেরিত নবীর জন্য। তেমনিভাবে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর অনুসরণে ইখলাস মানে তাঁর সুন্নাত ও ফায়সালার উপর যথেষ্ট করা এবং বিদ‘আত ও বিরোধিতা পরিত্যাগ করা। অনুরূপভাবে মানুষের তৈরিকৃত বিধি-বিধান ও প্রচলনের নিকট বিচারপ্রার্থী না হওয়া। যা তারা শরীয়তের সাথে সাংঘর্ষিকরূপে রচনা করেছে। কারণ, যে এগুলোর উপর সন্তুষ্ট অথবা এগুলো অনুযায়ী ফায়সালা করে সে নিশ্চয়ই একনিষ্ঠ নয়।

সপ্তম শর্ত: ভালোবাসা— যা তার বিপরীত ঘৃণা ও অপছন্দ করা।

তাই বান্দার উপর ওয়াজিব আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে ভালোবাসা এবং যে কথা ও কাজগুলোকে তিনি পছন্দ করেন সেগুলোকে ভালোবাসা। তেমনিভাবে তাঁর বন্ধু ও অনুগতদেরকে ভালোবাসা। এ ভালোবাসা যখন বিশুদ্ধ হবে তখন এর প্রতিক্রিয়াগুলোও শরীরে প্রকাশ পাবে। তাই আপনি একজন সত্যবাদী বান্দাকে দেখবেন আল্লাহর আনুগত্য ও তাঁর রাসূলের অনুসরণ করতে। তেমনিভাবে তাঁর আনুগত্য করে মজা পেতে ও তাঁর মাওলার পছন্দনীয় কথা ও কাজগুলোর দিকে দ্রুত ধাবিত হতে। আপনি তাকে দেখবেন পাপগুলো থেকে সতর্ক ও দূরে থাকতে এবং পাপীদেরকে ঘৃণা ও অপছন্দ করতে। যদিও সে পাপগুলো তার মনের পছন্দনীয় ও সাধারণত মজাদার হয়ে থাকে। কারণ, সে জানে জাহান্নামকে মনের চাহিদাসমূহ এবং জান্নাতকে অপছন্দনীয় বস্তুসামগ্রী দিয়ে বেষ্টন করা হয়েছে। যখন পরিস্থিতি এমন হবে তখন সে খাঁটি ভালোবাসার অধিকারী হবে। এ জন্যই যখন যুন-নূন মিশরীকে জিজ্ঞাসা করা হয়, কখন আমি নিজ প্রতিপালককে ভালোবাসি বলে প্রমাণিত হবে? তিনি বললেন: যখন তাঁর অপছন্দনীয় বস্তু তোমার নিকট ধৈর্যের চেয়ে তিক্ত হবে।

তাদের কেউ বলেন: যে আল্লাহর ভালোবাসার দাবি করে অথচ তাঁর মর্জি মাফিক কাজ করে না, তাহলে তার দাবি বাতিল।

আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বাণীতে তাঁর ভালোবাসার আলামতের জন্য নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর অনুসরণকে শর্ত করেছেন।

“বল, ‘যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস, তাহলে আমার অনুসরণ কর, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’।

সূরা আলি-ইমরান, আয়াত: ৩১

ইতিপূর্বে আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর ভালোবাসার কিছু দলীল ও তার জন্য আবশ্যক কিছু আমলের কথা উল্লেখ করেছি। তেমনিভাবে আল্লাহর ভালোবাসাও।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন