HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল্লাহর পথের অভিযাত্রী

লেখকঃ ড. লুতফুল্লাহ ইবন মোল্লা আব্দুল আযীম খাজা

সবচেয়ে বড় মূলনীতি:
দুই সফরের মাঝে সবচেয়ে বড় মূলনীতি হচ্ছে, মহান আল্লাহর তাওহিদ ও একত্ববাদ। এ একত্ববাদ প্রতিষ্ঠার জন্যই অসংখ্য নবী-রাসূল প্রেরিত হয়েছেন। অবতীর্ণ হয়েছে অগণিত কিতাব। মহান আল্লাহর সৃষ্টিকুল সৃষ্টির উদ্দেশ্য এটিই। এর মাধ্যমেই তিনি মানুষের মাঝে মর্যাদাগত তারতম্য নির্ধারণ করেছেন। তাদের জীবন, সম্মান ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান করেছেন। প্রবেশ করিয়েছেন তাদেরকে চিরন্তন জান্নাতে ।

তাওহীদের সারকথা হচ্ছে, ইবাদতের হকদার হিসাবে এককভাবে আল্লাহ তা‘আলাকেই নির্ধারণ করতে হবে। সাথে সাথে শির্ক ও তার যাবতীয় রাস্তা পরিহার করতে হবে।

দুনিয়ার জীবনে মানবজাতিকে এই নির্দেশই দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা আল্লাহ প্রদত্ত প্রতিদান অর্জন করতে পারে এবং নিজেদের বাঁচাতে পারে তাঁর কঠিন শাস্তি থেকে। প্রতিটি মানুষকে এ বিধান মান্য করতে হবে, বালেগ হওয়া থেকে শুরু করে মৃত্যু নিশ্চিত হওয়া পর্যন্ত। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿قُلۡ إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحۡيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ١٦٢ لَا شَرِيكَ لَهُۥۖ وَبِذَٰلِكَ أُمِرۡتُ وَأَنَا۠ أَوَّلُ ٱلۡمُسۡلِمِينَ ١٦٣﴾ [ الانعام : ١٦٢، ١٦٣ ]

“বল, নিশ্চয় আমার সালাত, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও আমার মরণ আল্লাহর জন্য, যিনি সকল সৃষ্টির রব। তাঁর কোনো শরীক নেই এবং আমাকে এরই নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। আর আমি মুসলিমদের মধ্যে প্রথম।” [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ১৬২-১৬৩]

হজ আলোচিত মূলনীতিকে তার যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে আরো পাকাপোক্ত ও শানিত করে। মানবান্তরের একেবারে গহীনে প্রোথিত করে দেয় দৃঢ়ভাবে। আর নিম্নোক্ত আমলগুলোর মাধ্যমে তাদেরকে উক্ত মূলনীতির ওপর গড়ে উঠতে সাহায্য করে:

এক. তালবিয়া

জাহেলি যুগে মুশরিকরাও হজ করত। তারা তাদের তালবিয়ায় বলত,

لبيك لا شريك لك ، إلا شريكا هو لك ، تملكه وما ملك .

“আমি উপস্থিত, তোমার কোনো শরিক নেই, তবে এমন শরিক যা তোমরই জন্য, যার মালিক তুমি, আর সে মালিক নয়।”

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে শির্কপূর্ণ এ তালবিয়া বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিলেন এবং নিম্নোক্ত তালবিয়া পাঠের আদেশ জারি করলেন,

لبيك اللهم لبيك ، لبيك لا شريك لك لبيك ، إن الحمد والنعمة لك والملك ، لا شريك لك .

“আমি হাযির হে আল্লাহ আমি হাজির, আমি হাযির তোমার কোনো শরীক নেই আমি হাযির, নিশ্চয় যাবতীয় প্রশংসা ও নি‘আমত তোমার এবং রাজত্বও, তোমার কোনো শরীক নেই।”

এ হচ্ছে তাওহিদের নিদর্শন, তাওহিদের কালেমা। প্রতিটি হজকারীকে ইহরাম থেকে শুরু করে হজ সমাপন পর্যন্ত আওয়াজ করে এ ঘোষণা উচ্চারণ করতে হয়।

দুই. নিয়ত ও সংকল্প

হজ কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের নিমিত্তে সম্পাদন করা হয়। অমুক কিংবা অমুকের জন্য নয়। না কোনো নবীর উদ্দেশ্যে, না কোনো ওলীর। হাজি সাহেব আপন পরিজন ও ঘর-বাড়ী ছেড়ে বের হন কেবল আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি কামনায়। তিনি ব্যতীত নবী পর্যন্ত তার নিয়তে অন্তর্ভুক্ত থাকেন না। এমনকি তাঁর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মসজিদের যিয়ারতও, না হজের শর্ত না আবশ্যিক কোনো কর্ম।

তবে মসজিদে নববীর যিয়ারত হজের সাথে সম্পৃক্ত না হলেও স্বতন্ত্রভাবে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুস্তাহাব আমল।

তিন. হজের কার্যাদি

হজের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যাবতীয় আমল কেবল আল্লাহর জন্য সম্পাদিত হয়। কোনো আমলেই তিনি ব্যতীত আর কারো অংশ নেই। ইহরাম, মিনায় রাত্রি যাপন, ‘আরাফায় অবস্থান, মুযদালিফায় রাত্রি যাপন এরপর তাওয়াফ-সা‘ঈ-পাথর নিক্ষেপ সব আমল কেবল আল্লাহরই উদ্দেশ্যে।

চার. দো‘আ

হজ সম্পাদন কালে পাঠ করার জন্য শরিয়ত অনুমোদিত সকল দো‘আতেই আল্লাহর তাওহীদ ও শির্ক বর্জনের ঘোষণা উচ্চারিত হয়েছে বার বার। যেমন সাফা-মারওয়ার দো‘আ, আরাফার সবোর্ত্তম দো‘আ ইত্যাদি। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ فَإِذَا قَضَيۡتُم مَّنَٰسِكَكُمۡ فَٱذۡكُرُواْ ٱللَّهَ كَذِكۡرِكُمۡ ءَابَآءَكُمۡ أَوۡ أَشَدَّ ذِكۡرٗاۗ فَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن يَقُولُ رَبَّنَآ ءَاتِنَا فِي ٱلدُّنۡيَا وَمَا لَهُۥ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ مِنۡ خَلَٰقٖ ٢٠٠ ﴾ [ البقرة : ٢٠٠ ]

“তারপর যখন তোমরা তোমাদের হজের কাজসমূহ শেষ করবে, তখন আল্লাহকে স্মরণ কর, যেভাবে তোমরা স্মরণ করতে তোমাদের বাপ-দাদাদেরকে, এমনকি তার চেয়ে অধিক স্মরণ।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২০০]

আল্লামা কুরতুবী রহ. বলেন,

ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু আতা, দাহহাক, রবি‘ প্রমুখ তাফসীরবিদগণ এ আয়াতের তাফসিরে বলেছেন, শিশুরা নিজ মাতা-পিতাকে যেভাবে মা...মা... বাবা...বাবা... বলে ডাকাডাকি করে তোমরাও অনুরূপ আল্লাহকে ডাকো, তার নিকট ফরিয়াদ কর, সাহায্য চাও, এবং তার আশ্রয় গ্রহণ কর। যেমনটি তোমরা শিশুকালে তোমাদের পিতার সাথে করতে।

অন্য একদল আলেম বলেছেন,

আয়াতের অর্থ হচ্ছে, আল্লাহর যিকির কর, তাঁকে ডাক, তাঁর বড়ত্ব বর্ণনা কর, তাঁর সম্মান ও মর্যাদা রক্ষা কর, কেউ তাঁর দীনের মাঝে শিরক প্রবর্তণে উদ্যোগী হলে তাকে প্রতিহত কর। যেমনটি তোমরা নিজ পিতা-মাতাকে ভালো ও কল্যাণের সাথে স্মরণ করে থাক। তাদের মর্যাদা রক্ষা করে চল।

পাঁচ. মাখলুকের কোনো অংশ নেই

হজে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোনো মাখলুক হতে তাবাররুক তথা বরকত নেওয়ার কোনো বিধান নেই। না কোনো যিয়ারতের স্থান হতে, না কবর, গম্বুজ কিংবা কোনো ব্যক্তি থেকে। অনুরূপভাবে হজে আল্লাহ ব্যতীত কারো নিকট দো‘আ করারও অনুমতি নেই, অনুমোদন নেই গাইরুল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থনার কিংবা ওসিলা দেওয়ার। মাখলুকের জন্য কেবল দো‘আ ও সহযোগিতার মাধ্যমে অনুগ্রহ করারই সুযোগ আছে। যেমন হজে অনুমোদন করা হয়েছে, মৃত ও অক্ষম ব্যক্তিবর্গের পক্ষে জীবিতদের হজ করা, দুর্বল ও মুহতাজদের সাহায্য করা।

সুতরাং হজে মাখলুকের অংশ কেবল এতটুকুই যে অক্ষম-আপারগতার অবস্থায় তার প্রতি ইহসান-অনুগ্রহ করা যাবে। তাদের মাধ্যমে বরকত অর্জন বা তাদের দারস্থ হবার প্রতি উৎসাহ প্রদান বুঝায় এমন ন্যূনতম কিছুও পাওয়া যায় না। জাহেলি যুগে মুশরিকরা হজে নিজ বাপ-দাদাদের নিয়ে গর্ব করত, তাদেরকে স্মরণ ও ডাকাডাকি করত। তাই আল্লাহ তা‘আলা মুমিনদের নির্দেশ দিলেন,

﴿فَإِذَا قَضَيۡتُم مَّنَٰسِكَكُمۡ فَٱذۡكُرُواْ ٱللَّهَ كَذِكۡرِكُمۡ ءَابَآءَكُمۡ أَوۡ أَشَدَّ ذِكۡرٗاۗ فَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن يَقُولُ رَبَّنَآ ءَاتِنَا فِي ٱلدُّنۡيَا وَمَا لَهُۥ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ مِنۡ خَلَٰقٖ ٢٠٠﴾ [ البقرة : ٢٠٠ ]

“তারপর যখন তোমরা তোমাদের হজের কাজসমূহ শেষ করবে, তখন আল্লাহকে স্মরণ কর, যেভাবে তোমরা স্মরণ করতে তোমাদের বাপ-দাদাদেরকে, এমনকি তার চেয়ে অধিক স্মরণ।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২০০]

আয়াতে তিনি তাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, মহান আল্লাহকে নিজ বাপ-দাদাদের চেয়েও অধিক স্মরণ করার জন্য। যাতে তারা বুঝতে পারে, এ জায়গাটি কেবল আল্লাহর বড়ত্ব প্রকাশের জন্যই নির্ধারিত। অন্যের কোনো আলোচনা বা যিকির এখানে চলবে না।

সুতরাং হজে একজন ব্যক্তি তাওহিদের শিক্ষা গ্রহণ করে নিখুত ও পরিশুদ্ধভাবে। তাওহীদের শিক্ষা নিয়েই সে প্রত্যাবর্তন করে, যাতে তার বাকি জীবনও হজের দিনগুলোর মতো এ শিক্ষার আলোকেই অতিবাহিত হয়।

হজ জিহ্বা, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও অন্তরের সমন্বিত আমলের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। মানুষ সাধারনত জিহ্বা ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আমলের উপর বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তাই আমি অন্তরের আমল সম্বন্ধে একটু স্মরণ করিয়ে দেওয়ার প্রয়াস চালিয়েছি, যাতে ইবাদতটি পূর্ণাঙ্গরূপে সম্পাদিত হয় আর সম্পাদনকারী লাভ করতে পারে প্রতিশ্রুত প্রতিদান পরিপূর্ণরূপে।

সমাপ্ত

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন