HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুসলিমের আদব বা শিষ্টাচার

লেখকঃ আহমদ আল-মাযইয়াদ/আদেল ইবন আলী আশ-শিদ্দী

6. মানুষের সাথে শিষ্টাচার
একজন মুসলিম তার কথা-বার্তা, চাল-চলন, আচার আচরণে মানুষের সাথে শিষ্টাচার প্রদর্শন করবে। কেননা স্তর বা মর্যাদার বিবেচনায় প্রতি শ্রেণির মানুষেরই পৃথক আদব তথা শিষ্টাচার রয়েছে। মানুষের সাথে আচার-আচরণে শিষ্টাচার প্রদর্শনের প্রকৃতি ও নমুনা নিম্নরূপ হওয়া উচিৎ:

১) মুসলিম তার পিতা-মাতার সাথে সর্বক্ষেত্রে আনুগত্য প্রদর্শন করবে, তবে আল্লাহর অবাধ্যতায় নয়। সে তাদেরকে সমীহ করবে, মর্যাদা দেবে, এবং তাদের অনুগত থাকবে। কথা-কাজে তাদেরকে সম্মান দেখাবে। তাদের সাথে কর্কশ আওয়াজে কথা বলবে না। তাদের উপরে নিজের আওয়াজকে উচুঁ করবে না। তাদেরকে নাম ধরে ডাকবে না, বরং তাদেরকে সম্বোধন করবে সম্মানজনক শব্দে। তাদের প্রতি যথোচিৎ ইহসানসুন্দর আচরণ করবে এবং তাদের প্রয়োজনে তাদের জন্য অর্থ ব্যয় করবে।

২) মুসলিম মাত্রই একথা জানে যে তার সন্তানদের ওপর তার কিছু কর্তব্য রয়েছে। যেমন, তাদের জন্য স্ত্রী নির্বাচন করা, যারা তাদের সন্তানদের মা হবে, আর সন্তানদের প্রতি পিতার কর্তব্য হচ্ছে তাদেরকে উওম লালন-পালন, শিক্ষা প্রশিক্ষণ, এবং তাদের ব্যয়ভার গ্রহণ করা এবং তাদের প্রতি কোমল আচরণ করা, এটা তারা উপযুক্ত হয়ে কর্মক্ষম হওয়া পর্যন্ত।

৩) আর মুসলিম স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার পারস্পরিক শিষ্টাচার এর স্বীকৃতি দিবে।

আর এটা এমন কয়েকটি দায়িত্ব যা প্রত্যেকের সাথে সংশ্লিষ্ট। যেমন, আল-কুরআনের বাণী,

﴿ وَلَهُنَّ مِثۡلُ ٱلَّذِي عَلَيۡهِنَّ بِٱلۡمَعۡرُوفِۚ وَلِلرِّجَالِ عَلَيۡهِنَّ دَرَجَةٞۗ ﴾ [ البقرة : ٢٢٨ ]

‘‘নারীদের উপর যেমন পুরুষদের ন্যায় সংগত অধিকার রয়েছে তেমনি অধিকার রয়েছে নারীদের স্বামীদের উপরও। তবে পুরুষদের অধিকার স্ত্রীদের উপর বেশি।’’ [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২২৮]

আর ইসলাম ধর্ম স্বামীকে তার স্ত্রীর সাথে নিম্নলিখিত শিষ্টাচার বজায় রাখতে নির্দেশ দিয়েছে:

ক. ধৈর্যশীলতা ও কোমল আচরণ: যেমন: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«اسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا، فَإِنَّ الْمَرْأَةَ خُلِقَتْ مِنْ ضِلْعٍ، وَإِنَّ أَعْوَجَ شَيْءٍ فِي الضِّلْعِ أَعْلَاهُ، إِنْ ذَهَبْتَ تُقِيمُهُ كَسَرْتَهُ، وَإِنْ تَرَكْتَهُ لَمْ يَزَلْ أَعْوَجَ، اسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا»

‘‘তোমরা মহিলাদের কল্যাণ কামনা করবে। কেননা তাদেরকে পাজর থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। যদি পাজরের কোনো একটি বেকে যায় তাহলে এটা আরো চওড়া হয়ে যাবে। তুমি এটাকে সোজা করতে চাইলে ভেঙ্গে যাবে। আর তুমি এটাকে ছেড়ে দিলে সর্বদাই বাকা থাকবে। সুতরাং মহিলাদের ক্ষেত্রে কল্যাণ কামনা কর।” [. সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৩৩১, ৫১৮৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৪৬৮]

খ. ন্যায় সংগতভাবে তার ভরণ পোষণের ব্যবস্থা করা: এটা ইসলাম ধর্ম স্বামীর উপর ওয়াজিব করে দিয়েছে।

গ. তার সাথে সদাচরণ করা: যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«خِيَارُكُمْ خِيَارُكُمْ لِنِسَائِهِمْ»

‘‘তোমাদের সেই ব্যক্তি উত্তম যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম।’’ [. সুনান ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১৯৭৮]

ঘ. তাকে ভালোবাসা এবং ঘৃণা না করা: যেহেতু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী রয়েছে,

«لَا يَفْرَكْ مُؤْمِنٌ مُؤْمِنَةً، إِنْ كَرِهَ مِنْهَا خُلُقًا رَضِيَ مِنْهَا آخَرَ»

‘‘কোনো মুমিন স্বামী যেন কোনো মুমিন স্ত্রীকে পৃথক না করে। যদি সে তার কোনো একটি আচরণ অপছন্দ করে তাহলে অপর একটি আচরণ তার পছন্দ হবে।’’ [. সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৪৬৯]

ঙ. ন্যায় বিচার করা এবং অত্যাচার না করা।

চ. অশ্লীল কর্ম হতে পবিত্রকরণ এবং উপভোগের অধিকার দেওয়া।

ছ. তার গোপনীয় কথা প্রকাশ করা হারাম।

জ. তার পদস্খলন ও দোষ ত্রুটি খুঁজে বের করা হারাম।

ঝ. তাকে শিক্ষা দেওয়া এবং সৎকাজের আদেশ করা ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করা।

ঞ. তার সাথে খেলা করা এবং তাকে ভালোবাসা। যেমনিভাবে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«خَرَجْتُ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي بَعْضِ أَسْفَارِهِ وَأَنَا جَارِيَةٌ لَمْ أَحْمِلِ اللَّحْمَ وَلَمْ أَبْدُنْ»، فَقَالَ لِلنَّاسِ : «تَقَدَّمُوا» فَتَقَدَّمُوا، ثُمَّ قَالَ لِي : «تَعَالَيْ حَتَّى أُسَابِقَكِ» فَسَابَقْتُهُ فَسَبَقْتُهُ، فَسَكَتَ عَنِّي، حَتَّى إِذَا حَمَلْتُ اللَّحْمَ وَبَدُنْتُ وَنَسِيتُ، خَرَجْتُ مَعَهُ فِي بَعْضِ أَسْفَارِهِ، فَقَالَ لِلنَّاسِ : «تَقَدَّمُوا» فَتَقَدَّمُوا، ثُمَّ قَالَ : «تَعَالَيْ حَتَّى أُسَابِقَكِ» فَسَابَقْتُهُ، فَسَبَقَنِي، فَجَعَلَ يَضْحَكُ، وَهُوَ يَقُولُ : «هَذِهِ بِتِلْكَ»

“আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে কোনো এক ভ্রমনে বের হলাম। তখন আমি ছোট বয়সী ছিলাম, মেদবহুল ছিলাম না, ভারী বা মোটা ছিলাম না। অতঃপর তিনি লোকজনকে বললেন, ‘‘তোমরা অগ্রসর হও।’’ অত:পর তারা অগ্রসর হলো। অত:পর আমাকে বললেন: ‘‘এদিকে আস। আমি তোমার সাথে দৌড় প্রতিযোগিতা করব তারপর আমি তার সাথে দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করলাম। এ্বং আমি বিজয়ী হলাম। তখন তিনি চুপ হয়ে গেলেন। অত:পর যখন আমার মেদ বেড়ে গেল, আমি মোটা হয়ে গেলাম এবং পূর্বের ঘটনা ভুলে গিয়েছিলাম তখন আমি তাঁর সাথে কোনো এক ভ্রমণে বের হলাম। তিনি মানুষকে বললেন, ‘‘তোমরা অগ্রসর হও।’’ তারা অগ্রসর হয়ে গেল। পরে আমাকে বললেন, আয়েশা তুমি এসো আমি তোমার সাথে দৌড় প্রতিযোগিতা করবো। দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে তিনি বিজয়ী হলেন। তারপর তিনি হাসতে লাগলেন এবং বললেন, ‘‘এটি প্রথমবার তোমার বিজয়ের প্রতিশোধ।’’ [. সুনান আবু দাউদ, হাদীস নং ২৫৭৮]

ইনিই হচ্ছেন দীন ইসলামের নবী এবং এটাই তার স্ত্রীর সাথে আচরণ।

৪. মুসলিম ব্যক্তি তার নিকটাত্মীয় ও রক্ত সম্পর্কীয় লোকদের সাথে ভদ্র সুলভ আচরণ করবে। তারা আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্ন করলেও সে আত্মীয়তা বজায় রাখবে। তারা তাকে বিরক্ত করলেও সে তাদের সাথে সদাচরণ করবে। তারা তার সাথে দুর্ব্যবহার করলে সে তাদের সাথে সৎ ব্যবহার করবে।

সে তাদের বড়দের সম্মান করবে এবং ছোটদের স্নেহ করবে। তাদের রোগীদের সেবা করবে এবং তাদের বিপদগ্রস্থ লোকদেরকে সমবেদনা জানাবে। এবং তাদের বিপদ আপদে এগিয়ে আসবে। কেননা আল্লাহর বাণী,

﴿ وَءَاتِ ذَا ٱلۡقُرۡبَىٰ حَقَّهُۥ وَٱلۡمِسۡكِينَ وَٱبۡنَ ٱلسَّبِيلِ ﴾ [ الاسراء : ٢٦ ]

‘‘আত্মীয়কে তার অধিকার দিয়ে দাও এবং মিসকীন ও পথিককে.... ।’’ [সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ২৬]

৫. ইসলাম প্রতিবেশীদের হক নির্ধারণ করে দিয়েছে যেমনিভাবে নিকটাত্মীয়দের অধিকার আদায়ের নির্দেশ দিয়েছে।

এগুলো হচ্ছে, তাদের সাথে কথায় কাজে সদাচরণ করা এবং তাদেরকে কষ্ট না দেওয়া এবং তাদের ক্ষতি হবে এমন কোনো বিষয়ে জড়িত না হওয়া। তাদের সম্মান করা, সাক্ষাতে হাসিমুখে কথা বলা, তাদের খোজ খবর নেওয়া, তাদেরকে উপহার দেওয়া এবং তাদের মূল্যায়ন করা। ঠাট্টা-বিদ্রুপ না করা। যেমন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«مَا زَالَ جِبْرِيلُ يُوصِينِي بِالْجَارِ، حَتَّى ظَنَنْتُ أَنَّهُ سَيُوَرِّثُهُ»

‘‘জিবরীল সর্বদাই আমাকে প্রতিবেশীর ব্যাপারে অসিয়ত করতেন এমনকি আমি ধারণা করলাম যে, তিনি অচিরেই তাকে (প্রতিবেশীকে) উত্তরসূরী করে দিবেন।’’ [. সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬০১৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬৪১]

নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন,

«مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَاليَوْمِ الآخِرِ فَلْيُكْرِمْ جَارَهُ»

‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে সে যেন তার প্রতিবেশীকে সম্মান করে।’’ [. সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬০১৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪৭]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন