HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

লেখকঃ আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান

আলেম-ওলামা দাওয়াত-কর্মীদের জন্য এ গুণটির প্রয়োজনীয়তা:
আমাদের আলেম-উলামা, দাওয়াতী কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে এ গুণটি থাকা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু দুঃখজনক সত্য হল, তাদের মধ্যেই এ গুণটির অভাব সবচেয়ে বেশি। তিনটি উদাহরণ দিচ্ছি:

এক. আমি একটি মসজিদে জুমু‘আর সালাত আদায় করলাম। দেখলাম খতীব সাহেব খুৎবাহপূর্ব বক্তৃতার এক পর্যায়ে বললেন, আজকাল অনেক মৌলভীকে দেখা যায় টেলিভিশনে আলোচনা করতে। এরা সব কমার্শিয়াল মৌলভী। এরা পলিটিক্সবাজ।

এখানে তিনি যে সকল আলেম টিভিতে আলোচনা করেন তাদেরকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখেছেন এবং তার দৃষ্টিভঙ্গিতে অন্য মুসল্লীদের শেয়ার করার চেষ্টা করেছেন।

দুই. এক মসজিদে জুমু‘আর সালাত পড়ছিলাম। মুহতারাম খতীব প্রথম খুতবা দিলেন বাংলা ভাষায়। পরের খুতবা দিলেন আরবিতে। খুৎবার মধ্যে বললেন, যারা শুধু আরবি ভাষায় খুৎবা দেয় তাদের খুৎবা সঠিক নয়। মানুষে কিছু বোঝে না। সৌদি আরবের সকল আলেম একমত যে, খুৎবা দিতে হবে স্থানীয় ভাষায়। তারা মানুষকে বোঝাতে যেয়ে খুৎবার পূর্বে বাংলাতে আলোচনা করেন। এটা বিদ‘আত।

আবার অন্য এক মসজিদে জুমু‘আর সালাত আদায় করলাম। খতীব আরবিতে খুৎবা দিলেন। খুৎবাপূর্ব বক্তৃতায় বললেন, দু একজন পণ্ডিত আছেন যারা বাংলা ভাষায় খুৎবা দেন। বাংলা ভাষায় খুৎবা দেওয়া বিদ‘আত। বাংলায় খুৎবা দিলে খুৎবা আদায় হয় না।

এ ধরনের ঘটনায় রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে ধরনের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করতেন আমরা যদি সেরূপ করতে সক্ষম হতাম, তাহলে বহু সমস্যারই সমাধান হয়ে যেত। অর্থাৎ যদি এরূপ ভাবতে সক্ষম হতাম যে, যে ব্যক্তি আরবিতে খুৎবা দেওয়া জরুরি মনে করছে সেও রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাতের অনুসরণ করছে, কেননা রাসূলুল্লাল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরবি ভিন্ন অন্য কোনো ভাষায় খুৎবা দেন নি। আর যে ব্যক্তি মাতৃভাষায় খুৎবা দেওয়ার প্রতি জোর দিচ্ছে সেও রাসূলুল্লাহর সুন্নাতের বিরুদ্ধে যায় নি। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মাতৃভাষা ব্যতীত অন্য কোনো ভাষায় খুৎবা দিতেন না।

তিন. হকপন্থি জনৈক আলেমের আত্মীয় তাবলীগ জামা‘আতের সাথে সময় লাগাতে বের হয়েছেন, তিনি সময় লাগাতে গেলেন জয়পুরহাটে। যে মসজিদে জামা‘আতটি অবস্থান নিল তার ইমাম ছিলেন আহলে হাদীসের জনৈক আলেম। আত্মীয় লোকটি মোবাইলে উল্লিখিত আলেম-আত্মীয়ের কাছে একটি মাস’আলাহ জানতে চাইলেন। তিনি বললেন, যে মসজিদে আমরা সালাত পড়ি তার ইমাম সাহেব আহলে হাদীসের লোক। তাই আমীর সাহেব বলেছেন, তাদের পিছনে সালাত হবে না। তাদের পিছনে সালাত পড়লে সালাত ঘুরিয়ে পড়তে হবে। প্রশ্ন হলো, আমীর সাহেবের কথা কি ঠিক? আমাদের সালাত কি দ্বিতীয়বার ঘুরিয়ে পড়তে হবে?

উত্তরে বলা হলো, না, দ্বিতীয়বার পড়তে হবে না। আহলে হাদীসের ইমামের পিছনে সালাত পড়লে তা অবশ্যই শুদ্ধ হবে। সে বেচারা এ কথা আমীর সাহেবকেও বললেন। আমীর সাহেব জিজ্ঞাসা করলেন, কে বলেছে এ মাস’আলাহ? তিনি বললেন, আমার অমুক আত্মীয়। সে আলেম। একটি গবেষণা সংস্থায় কাজ করে। আমীর সাহেব বললেন, তাদের পিছনেও সালাত হয় না। তারাও এ দলের লোক।

প্রিয় পাঠক! দেখুন! এত বড় নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কীভাবে দাওয়াতী কাজ আঞ্জাম দেওয়া সম্ভব? যারা দাওয়াত, তাবলীগ ও তালিমের কাজ করেন -তাদের উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কী বলেছেন? তিনি বলেছেন,

«يسروا و لا تعسروا و بشروا و لا تنفروا» .

“তোমরা সহজ করো কঠিন করো না। সুসংবাদ দাও। ঘৃণা সৃষ্টি করো না।” (আহমদ ও বায়হাকি)

আমাদের ধর্মীয় নেতাদের মধ্যে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির ব্যবহার এত বেশি যে, নতুন কোনো কিছু দেখলে তা কীভাবে হারাম ঘোষণা করা যায় সে প্রচেষ্টা শুরু করে দেন। এটাকে ইতিবাচক হিসেবে নিয়ে তা কীভাবে ইসলাম ও মুসলিমদের কল্যাণে ব্যবহার করা যায়, শুরুতে তারা সে কথা ভাবতেই পারেন না। আর যখন ভাবতে শুরু করেন, তখন সময় তাদেরকে পিছনে রেখে এগিয়ে যায় দূরে বহু দূর। শুধু তাই নয় বরং দেরী করে হলেও যখন কেউ চিন্তা শুরু করে সচেতনতার পরিচয় দেন, তখন আলেমদের অন্য একদল তাদের ব্যাপারে জনগণের মধ্যে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রচার করতে থাকেন। তাদের ইতিবাচক চিন্তা ও কর্মও হয় বাধাগ্রস্ত।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় হিজরতের পর খেজুর গাছে পরাগায়ন করাকে অপ্রয়োজনীয় বলে মত প্রকাশ করেছিলেন। পরবর্তীতে যখন ফলন কম হল তখন তিনি আবার তা করার অনুমতি দিলেন। কারণ মতামতটি ছিল তার ব্যক্তিগত। তাই আলেম ওলামা, ইসলামের দাওয়াত-কর্মী সকলকে বিষয়টি অনুধাবন করা উচিত। মানুষকে কাছে টানতে হলে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে ইসলামের আলোকে ইসলামের স্বার্থে। তবে তা করতে হবে কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে। কুরআন ও হাদীস যা স্পষ্টভাবে নিষেধ করেছে সেখানে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের নামে তা হালকা করে দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। কুরআন ও হাদীস বাদ দিয়ে অন্য কারো মতবাদ, তরিকা অবলম্বন করা হল ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির একটা বড় অন্তরায়।

নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি হল মুনাফিকদের স্বভাব যারা মুনাফিক তারা সকল কিছু নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখে থাকে। কুরআনে এর বহু দৃষ্টান্ত উল্লেখ রয়েছে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “তারা সকল আওয়াজকে নিজেদের বিরুদ্ধে বলে ভাবে।”

এমনকি আমরা অনেক সময় বলে থাকি মুসলিমগণ খারাপ হয়ে গেছে, তারা ইসলাম থেকে দূরে সরে গেছে। কথাটি সঠিক হলেও মুসলিম উম্মাহ সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা রাখতে হবে।

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«الخير فيَّ وفي أمتي إلى يوم القيامة» .

“আমি এবং আমার উম্মতের মধ্যে কিয়ামত অবধি কল্যাণ বিদ্যমান থাকবে।”

সমাপ্ত

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন