HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের প্রাথমিক শিক্ষা

লেখকঃ অনুবাদ ও গবেষণা বিভাগ, জুবাইল দাওয়া এন্ড গাইডেন্স সেন্টার

২১
ফাতিহা এবং কতিপয় ছোট সূরা
সূরা আল ফাতিহা

بِِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ (1

الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ (2) الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ (3) مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ (4) إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ (5) اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ (6) صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ (7

বিসমিল্লাহির্‌ রাহমানির রাহীম আমি শুরু করছি আল্লাহ্‌র নামে- তাঁর প্রতি সম্মান রেখে, কুরআন পাঠে তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে এবং তাঁর নিকট গ্রহণ হওয়ার কামনা করে। তিনি পরম করুনাময় অতিব দয়ালু।

আল হামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন সকল প্রশংসা আল্লাহ্‌র জন্য। যিনি তার যোগ্য। কেননা তিনি সমস্ত জগতের স্রষ্টা। জগতের সর্ববিষয়ে তত্বাবধানকারী। তিনি স্বীয় অনুগ্রহ দ্বারা সৃষ্টিকুলকে পালন করেন। এবং হেদায়ত ও ঈমান দ্বারা নেক লোকদেরকে প্রতিপালন করেন।

আর্‌ রাহমানির রাহীম যার দয়া সমস্ত সৃষ্টিকে পরিব্যাপ্ত করেছে। এবং তিনি মুমিনদের প্রতি বিশেষ করুণা করেন।

মালিকি ইয়াউমিদ্দীন তিনিই এককভাবে ক্বিয়ামত দিবস, হিসাব এবং কর্মের প্রতিদান দিবসের মালিক।

ইয়্যাকা নাবুদু ওয়া ইয়্যাকা নাসতাঈন হে আল্লাহ্‌ বিশেষভাবে আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত-দাসত্ব করি। সকল বিষয়ে শুধুমাত্র তোমারই কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি।

ইহদিনাছ্‌ ছিরাত্বাল মুস্‌ত্বাক্বীম আমাদেরকে দেখাও সঠিক পথ (ইসলাম)। তার উপর প্রতিষ্ঠিত রাখ এবং তার আনুকুল্য দান কর।

ছিরাত্বাল্লাযীনা আন্‌ আমতা আলাইহিম, গাইরিল মাগযূবি আলাইহিম ওয়ালায্‌ যোওয়াল্লীন হে আল্লাহ্‌! সেপথ হল আপনার সম্মানিত বান্দা নবী ও সৎলোকদের পথ। আমাদেরকে দূরে রাখ এমন লোকদের পথ থেকে যাদের উপর তুমি রাগম্বিত হয়েছ। যারা সৎপথ পাওয়ার পরও তা পরিত্যাগ করেছে। (যেমন ইহুদী সমপ্রদায়)। এবং যারা সৎপথ থেকে বিভ্রান্ত তাদের নীতি থেকে আমাদেরকে দূরে রাখ। যারা আল্লাহ্‌র রাস্তা ছেড়ে অন্য রাস্তায় সত্যপথ খুঁজেছে এবং পথভ্রষ্ট হয়েছে। (যেমন খৃষ্টান সমপ্রদায়।) [. পবিত্র কুরআনের মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ সূরা হল সূরা ফাতিহা। এদ্বারা কুরআন শুরু করা হয়েছে। এর মধ্যে মুসলিমের জন্য কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশাবলী রয়েছে: মুসলিম আল্লাহ্‌র মর্যাদা, সুবিশাল রাজত্ব ও সুন্দর সুন্দর নাম উল্লেখ করে তাঁকে স্মরণ করবে এবং তাঁর প্রশংসা করবে। স্মরণ করবে পরকালের কথা এবং তার জন্য প্রস'তি গ্রহণ করবে সৎআমলের মাধ্যমে। যাবতীয় ইবাদত একনিষ্ঠভাবে শুধু তার জন্যই করবে, কাউকে দেখানোর জন্য করবে না। আল্লাহ্‌র কাছে সাহায্য চাইবে এবং শুধুমাত্র তাঁর উপরই ভরসা করবে। অন-রকে গাইরুল্লাহ্‌র সাথে সম্পর্কিত করবে না- সে যে কেউ হোক না কেন। আদবের সাথে আল্লাহ্‌কে ডাকবে। তাঁর কাছে ইসলাম এবং কল্যাণের হেদায়াত চাইবে। ইসলামের কারণে এবং আল্লাহ্‌র আনুগত্য করতে পারার কারণে খুশি হবে। কেননা এটা সবচেয়ে বড় নেয়ামত। অন্যরা ইসলামে প্রবেশ করুক, হেদায়াত লাভ করুক এটা মনে প্রাণে চাইবে এবং আকাংখা রাখবে। তাদেরকে ইসলমের পথে দাওওয়াতর দিবে। মুসলমানদের সাথে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক গড়বে এবং নেক লোকদেরকে ভালবাসবে। বিশ্বাস রাখবে যে,ইহুদী-খৃষ্টানগণ কাফের। ধর্মীয় কোন বিষয়ে তাদের অনুসরণ করবে না। ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানার্জন এবং তা বাস-বায়ন করতে সচেষ্ট হবে। আল্লাহ্‌র ইবাদত জেনে-বুঝে করার চেষ্টা করবে। জ্ঞানার্জন করার পর মূর্খ ও অজ্ঞানের মত কাজ করবে না। যেমন ইহুদীরা করত। আর আল্লাহ্‌ অনুমোদিত পন্থা ব্যতিরেকে অন্য পন্থা আল্লাহ্‌র ইবাদত করবে না। যেমন করত খৃষ্টানগণ।]

সূরা আল্‌ আছর

بِِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ

وَالْعَصْرِ (১) إِنَّ الإِنسَانَ لَفِي خُسْرٍ (২) إِلا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ (৩)

১-২) ওয়াল আছ্‌র্‌। ইন্নাল ইন্‌সানা লাফী খুস্‌র্‌। আল্লাহ্‌ যুগের শপথ করে বলেন, নিঃসন্দেহে আদম সন্তান ক্ষতি ও ধ্বংসের মধ্যে রয়েছে।

৩) ইল্লাল্লাযীনা আমানূ ওয়া আমেলুছ্‌ ছালেহাতি ওয়া তাওয়াছাওবিল হাক্কি ওয়া তাওয়াছাওবিছ্‌ ছব্‌র্‌। তবে তারা নয় যারা ঈমান এনেছে আল্লাহ্‌র প্রতি এবং সৎ আমল করেছে। আর পরস্পর পরস্পরকে উপদেশ দিয়েছে সত্য আঁকড়ে ধরার (অর্থাৎ- ইসলাম, সৎ আমল এবং ন্যায়নিষ্ঠা) এবং একজন অন্যজনকে নছীহত করে ধৈর্যাবলম্বন করার। (অর্থাৎ- ইসলামের উপর এবং আল্লাহ্‌র আনুগত্য করার উপর ধৈর্য ধারণ করবে। আল্লাহ্‌ যা নিষেধ করেছেন তা পরিত্যাগ করার ক্ষেত্রে ছবর করবে। বিপদাপদে পতিত হলে ধৈর্য ধারণ করবে। কেননা যাবতীয় বিপদ-মুছীবত আল্লাহ্‌র নিকট থেকে এবং তার নির্ধারিত তক্বদীর অনুযায়ী হয়ে থাকে।)

সূরা আল্‌ হুমাযাহ্‌ (ঠাট্টা-বিদ্রুপ)

بِِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ

وَيْلٌ لِكُلِّ هُمَزَةٍ لُمَزَةٍ (১) الَّذِي جَمَعَ مَالًا وَعَدَّدَهُ (২) يَحْسَبُ أَنَّ مَالَهُ أَخْلَدَهُ (৩) كَلَّا لَيُنْبَذَنَّ فِي الْحُطَمَةِ (৪) وَمَا أَدْرَاكَ مَا الْحُطَمَةُ (৫) نَارُ اللَّهِ الْمُوقَدَةُ (৬) الَّتِي تَطَّلِعُ عَلَى الْأَفْئِدَةِ (৭) إِنَّهَا عَلَيْهِمْ مُوصَدَةٌ (৮) فِي عَمَدٍ مُمَدَّدَةٍ (৯)

১) ওয়াইলুল্লি কুল্লি হুমাযাতিল্‌ লুমাযাহ্‌। অকল্যাণ ও ধ্বংস সে সমস্ত লোকের জন্য যারা মানুষের গীবত (পরচর্চা) করে। অর্থাৎ- মানুষের অনুপস্থিতে তাদের অপসন্দনীয় দোষগুলো অপরের সামনে তুলে ধরে। মানুষকে ঠাট্টা করে। বিভিন্ন আকার ইঙ্গিতে তাদেরকে বিদ্রুপ করে।

২) আল্লাযী জামাআ মালাঁও ওয়া আদ্দাদাহ্‌। যে সম্পদ জমা করতে ব্যতিব্যস্ত থাকে। এবং কমে যাওয়ার ভয়ে তা বারবার গণনা করে রাখে। (অর্থাৎ- সে বড়ই কৃপণ)

৩) ইয়াহ্‌সাবু আন্না মালাহু আখলাদাহ্‌। সে ধারণা করে তার এই জমাকৃত সম্পদ যা থেকে সে কিছুই খরচ করে না তাকে দুনিয়ায় চিরস্থায়ী বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা দিবে। যার ফলে সে হিসাব-নিকাশ এবং প্রতিদান থেকে রেহাই পেয়ে যাবে।

৪) কাল্লা, লাইয়ুম্বাযান্না ফিল হুত্বমাহ্‌। কখনই নয়; অবশ্যই সে জাহান্নামে নিক্ষপ্ত হবে, যে সে তার ভিতরের সব কিছুকে চুর্ণবিচুর্ণ করে ফেলবে।

৫) ওয়ামা আদরাকা মাল্‌ হুত্বামাহ্‌। আপনি কি জানেন সেই জাহান্নামের প্রকৃত চিত্র কিরূপ?

৬-৭) নারুল্লাহিল্‌ মূক্বাদাহ্‌। আল্লাহ্‌র প্রজ্জলিত অগ্নি যা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দগ্ধ করে নষ্ট হৃদয় পর্যন্ত পৌঁছবে তারপর তাকেও দগ্ধ করবে। অথচ তার মৃত্যু হবে না।

৮-৯) ইন্নাহা আলাইহিম্‌ মুওছাদাহ্‌, ফী আমাদিম্‌ মুমাদ্দাদাহ্‌। সেই জাহান্নামের দরজা বন্ধ থাকবে প্রলম্বিত বিশাল বিশাল স্তম্ভ দ্বারা। ফলে সেখান থেকে তাদের পালাবার উপায় থাকবে না। এবং সেখানে তাদের জন্য কোন কল্যাণও প্রবেশ করবে না।

সূরা আল ফীল (হস্তি)

بِِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ

أَلَمْ تَرَى كَيْفَ فَعَلَ رَبُّكَ بِأَصْحَابِ الْفِيلِ (১) أَلَمْ يَجْعَلْ كَيْدَهُمْ فِي تَضْلِيلٍ (২) وَأَرْسَلَ عَلَيْهِمْ طَيْرًا أَبَابِيلَ (৩) تَرْمِيهِمْ بِحِجَارَةٍ مِنْ سِجِّيلٍ (৪) فَجَعَلَهُمْ كَعَصْفٍ مَأْكُولٍ (৫)

১) আলম্‌ তারা কায়ফা ফাওআলা রাব্বুকা বি আসহাবিল ফীল। আপনি কি দেখেননি আপনার পালনকর্তা কিরকম আচরণ করেছেন হস্তি বাহীনির সাথে? (আবরাহা হাবশী হস্তিসহ বিশাল সৈন্য বাহীনি নিয়ে ইয়ামান থেকে এসেছিল মসজিদে হারাম তথা কাওবা ঘর ধ্বংস করার জন্য। ঘটনাটি ছিল নবী মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নবুওত প্রাপ্তির চল্লিশ বছর আগে।)

২) আলাম্‌ ইয়াজআল্‌ কায়দাহুম ফী তাযলীল। তারা যা অন্যায় পরিকল্পনা করেছিল আল্লাহ্‌ কি তা নষ্ট ও বাতিল করে দেননি?

৩-৪) ওয়া আরসালা আলাইহিম ত্বায়রান আবাবীল। তারমীহিম্‌ বিহিজারাতিম্‌ মিন সিজ্জীল। তিনি প্রেরণ করেছিলেন তাদের উপর ঝাঁকে ঝাঁকে পাখির দল। যারা তাদের উপর কঠিন মাটির পাথর নিক্ষেপ করছিল।

৫) ফাজাআলাহুম কাআছ্‌ফিম্‌ মাকূল। অতঃপর তিনি তাদেরকে এমনভাবে ধ্বংস করে দেন, যেন তারা পশু দ্বারা ভক্ষিত তৃণের ন্যায় ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে গেছে।

সূরা কুরায়শ

بِِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ

لإِيلافِ قُرَيْشٍ (১) إِيْلاَفِهِمْ رِحْلَةَ الشِّتَاءِ وَالصَّيْفِ (২) فَلْيَعْبُدُوا رَبَّ هَذَا الْبَيْتِ (৩) الَّذِي أَطْعَمَهُمْ مِنْ جُوعٍ وَآمَنَهُمْ مِنْ خَوْفٍ (৪)

১-২) লি ইলাফি কুরায়শ্‌। ইলাফিহিম রিহ্‌লাতাশ্‌ শিতায়ী ওয়াছ্‌ ছায়ফ। আশ্চর্য! (নবী মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর গোত্র) কুরায়শদের আশক্তি দেখে। তারা শীতকালে (ইয়ামানের দিকে) এবং গ্রীষ্মকালে (শামের দিকে) ব্যবসায়িক সফর করত। নিজেদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী আমদানী করত নিরাপত্তার সাথে এবং আল্লাহ্‌র অনুগ্রহে সহজভাবে। আশ্চর্য! তারপরও তারা আল্লাহ্‌র কৃতজ্ঞতা করে না।

৩) ফাল্‌ ইয়াবুদূ রাব্বা হাযাল বাইতি। সুতরাং তারা যেন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং ইবাদত করে এককভাবে আল্লাহ্‌র, যিনি এই ঘরের পালনকর্তা। (অর্থৎ- কাওবা ঘর, যার কারণে তারা সমস্ত মানুষের মধ্যে সম্মানিত হয়েছে। আর মানুষ এঘরকে শ্রদ্ধা করার কারণে তারাও নিরাপত্তা লাভ করেছে।)

৪) আল্লাযী আত্বআমাহুম্‌ মিন্‌ জূঈন্‌ ওয়া আমানহুম্‌ মিন খাওফ্‌। যিনি তাদেরকে কঠিন দারিদ্রের সময় খাদ্য দান করেছেন। ভীষন ভয় থেকে দান করেছেন নিরাপত্তা। (কেননা মক্কা অনাবাদী একটি উপত্যকা ছিল। তারপর আল্লাহ্‌ তাদের জন্য নিরাপত্তার সাথে জীবিকা উপার্জন ও ব্যবসা করা সহজ করে দিয়েছেন। ফলে মানুষ তাদের ক্ষতি করে না শত্রুতা করে না। তারা বলে, কুরায়শরা আল্লাহ্‌র ঘরের পরিবার। অথচ অন্যান্য স্থানের মানুষ সন্ত্রাস ও ছিনতাইয়ের শিকার হয়। এমনিভাবে হস্তি বাহীনির ষড়যন্ত্র থেকেও আল্লাহ্‌ তাদেরকে বাঁচিয়েছেন।)

সূরা আল মাঊন

بِِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ

أَرَأَيْتَ الَّذِي يُكَذِّبُ بِالدِّينِ (১) فَذَلِكَ الَّذِي يَدُعُّ الْيَتِيمَ (২) وَلَا يَحُضُّ عَلَى طَعَامِ الْمِسْكِينِ (৩) ف َوَيْلٌ لِلْمُصَلِّينَ (৪) الَّذِينَ هُمْ عَنْ صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ (৫) الَّذِينَ هُمْ يُرَاءُونَ (৬) وَيَمْنَعُونَ الْمَاعُونَ (৭)

১) আরাআয়তাল্লাযী ইয়ুকায্‌ যিবু বিদ্দীন। আপনি কি এমন লোককে দেখেছেন, যে মৃত্যু পরবর্তী হিসাব-নিকাশ এবং প্রতিদানের জন্য পুনরুত্থানকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে।

২) ফাযালিকাল্লাযী ইয়াদুঊল ইয়াত্বীম। এলোক তো ইয়াতীমকে কঠিন ও নির্দয়ভাবে তার অধিকার থেকে বঞ্ছিত করে। কারণ তার হৃদয় বড় কঠিন, পরকালের জীবন এবং শস্তি সম্পর্কে সে উদাসীন।

৩) ওয়ালা ইয়াহুয্‌যু আলা ত্বয়ামিল মিসকীন। সে অন্যকে উদ্বুদ্ধ করে না অভাবীদেরকে খাদ্য প্রদান করার জন্য। তাহলে কিভাবে সে নিজ সম্পদ থেকে অভাবীকে খাদ্য দান করবে? (কারণ সে পরকালের প্রতিদানকে মিথ্যা মনে করে)

৪-৫) ফাওয়াইলুল্‌ লিল্‌ মুছল্লীন। আল্লাযীনাহুম আন ছালাতিহিম সাহূন। কঠিন শাস্তি মুছল্লীদের জন্য। যারা স্বীয় ছালাতের ব্যাপারে উদাসীন। সঠিকভাবে, বিশুদ্ধভাবে ও সময়মত ছালাত আদায় করে না। ছালাতের ব্যাপারে কোন পরওয়া করে না। (তাহলে যারা মোটেই ছালাত আদায় করে না তাদের অবস্থা কেমন হবে?) যদি তারা পুনরুত্থান এবং প্রতিদানের প্রতি বিশ্বাস রাখত তবে সঠিকভাবে ছালাত আদায় করত।

৬) আল্লাযীনা হুম ইয়ুরাউনা। যারা ছালাত ও নেক আমল প্রকাশ করে মানুষকে দেখানোর জন্য। মানুষের প্রশংসা শোনার জন্য।

৭) ওয়া ইয়ামনাঊনাল্‌ মাঊন। তারা কর্য নেয়া বস্তু অত্যাচার বশতঃ ফেরত দিতে অস্বীকার করে যদিও তা অতিসামন্য বস্তু হয়। এবং এমন বস্তুও কৃপণতার কারণে কর্য দিতে অস্বীকৃতি জানায় যা দিলে কোন ক্ষতি নেই যেমন কুড়াল, হাড়ি-পাতিল, বালতি প্রভৃতি।

সূরা কাওছার

بِِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ

إِنَّا أَعْطَيْنَاكَ الْكَوْثَرَ (১) فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ (২) إِنَّ شَانِئَكَ هُوَ الأَبْتَرُ (৩)

১) ইন্না আত্বায়নাকাল্‌ কাওছার। হে মুহাম্মাদ! নিশ্চয় আমি আপনাকে পরকালে মহান হাওযে কাওছার দান করেছি। (রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: কাওছার একটি নদী। আল্লাহ্‌ জান্নাতে আমাকে তা দান করেছেন। তাতে রয়েছে অফুরন্ত কল্যাণ। ক্বিয়ামত দিবসে আমার উম্মত সেখানে উপস্থিত হবে। (আমি তাদেরকে সেখান থেকে পানি পান করাবো।) আকাশের নক্ষত্রের সংখ্যা পরিমাণ তার পেয়ালার সংখ্যা হবে।)

২) ফাছাল্লিলি রাব্বিকা ওয়ান্‌হার। একনিষ্ঠতার সাথে আপনার পালনকর্তার জন্য ছালাত আদায় করুন। একমাত্র তাঁরই জন্য প্রাণী যবেহ্‌ করুন। তিনি আপনাকে যা প্রদান করেছেন তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য এগুলো করুন।

৩) ইন্না শানিআকা হুওয়াল্‌ আবতার। নিঃসন্দেহে আপনাকে এবং আপনি যে হেদায়াত নিয়ে এসেছেন তাকে ঘৃণাকারীরই প্রভাব ও স্মরণ বিচ্ছিন্ন ও বিলীন। সে সকল প্রকার কল্যাণ থেকে বঞ্ছিত। (কেননা যাবতীয় কল্যাণ তো আপনাকে ভালবাসা ও আপনার অনুসরণের মধ্যেই রয়েছে।)

সূরা আল কাফেরূন

بِِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ

قُلْ يَاأَيُّهَا الْكَافِرُونَ (১) لاَ أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُونَ (২) وَلاَ أَنْتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ (৩) وَلاَ أَنَا عَابِدٌ مَا عَبَدتُّمْ (৪) وَلاَ أَنْتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ (৫) لَكُمْ دِينُكُمْ وَلِيَ دِينِ (৬)

১) কুল ইয়া আইয়্যুহাল কাফেরূন। আপনি বলুন, হে আল্লাহ্‌র নেয়ামতকে অস্বীকারকারীগণ! আল্লাহ্‌ এবং তার রাসূলকে মিথ্যা প্রতিপন্নকারীগণ!

২) লা আবুদু মা তাবুদূন। তোমরা যে সমস্ত সৃষ্ট বস্তুর, মূর্তির এবং বাতিল মাওবূদদের ইবাদত করে থাক আমি তার ইবাদত করি না। আমি সবকিছু থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন ও মুক্ত ঘোষণা করছি।

৩) ওয়া লা আন্‌তুম আবেদূন মা আবুদ। আমি যে একক মাবূদের ইবাদত করছি তোমরাও তার ইবাদত কর না; অথচ তিনিই সকল ইবাদত পাওয়ার অধিকারী। সুতরাং তোমরা হক্বের উপর প্রতিষ্ঠিত নও।

৪) ওয়ালা আনা আবেদুম্মা আবদ্‌তুম। আমি আবরও তাগিদের সাথে বলছি যে, তোমরা যে সমস্ত মূর্তি ও বাতিল মাওবূদের ইবাদত করছো আমি কখনই তার ইবাদত করব না।

৫) ওয়া লা আন্‌তুম আবেদূন মা আবুদ। আরো নিশ্চিত করে বলছি যে, নিঃসন্দেহে তোমরা সঠিক ইবাদতের উপর প্রতিষ্ঠিত নও। যেমনটি আমি আছি।

৬) লাকুম দ্বীনুকুম ওয়া লিয়া দ্বীন। সুতরাং তোমরা যে ধর্মকে আঁকড়ে ধরে আছো তার উপরই থাক। আমি তার অনুসরন করব না। আর আমি যে ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত আছি তাতেই আমি সন্তুষ্ট। এটা ছাড়া অন্য কিছু গ্রহণ করতে প্রস্তুত নই।

সূরা নছর

بِِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ

إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللَّهِ وَالْفَتْحُ (১) وَرَأَيْتَ النَّاسَ يَدْخُلُونَ فِي دِينِ اللَّهِ أَفْوَاجًا (২) فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَاسْتَغْفِرْهُ إِنَّهُ كَانَ تَوَّابًا (৩)

১) ইযা জা-আ নাছরুল্লাহি ওয়াল ফাত্‌হু। হে মুহাম্মাদ! যখন আপনি কুরায়শদের উপর বিজয় লাভ করবেন। (যারা আপনার সাথে শত্রুতা করেছে এবং মক্কা থেকে বের করে দিয়েছে।) আর এই মক্কা বিজয় আপনার জন্য পূর্ণ হয়ে গেছে।

২) ওয়া রাআইতান্নাসা ইয়াদখুলূনা ফী দ্বীনিল্লাহি আফওয়াজা। আর আপনি দেখবেন যে, লোকেরা দলে দলে ইসলামের সুশিতল ছায়াতলে প্রবেশ করবে।

৩) ফাসাব্বিহ্‌ বিহামদি রাব্বিকা ওয়াস্তাগ্‌ফিরহু ইন্নাহু কানা তাওয়াবা। যখন এগুলো ঘটবে তখন বেশী বেশী আল্লাহ্‌র তাসবীহ্‌ পাঠ করুন এবং তাঁর প্রশংসা করুন। তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য এবং তাঁর সাক্ষাত লাভের সময় নিকটবর্তী হওয়ার জন্য। কেননা যারা তাঁকে স্মরণ করে, তাঁর কৃতজ্ঞতা করে ও তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে তিনি তাদের তওবা কবূল করেন এবং তাদের উপর দয়া করেন।

সূরা লাহাব

بِِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ

تَبَّتْ يَدَا أَبِي لَهَبٍ وَتَبَّ (১) مَا أَغْنَى عَنْهُ مَالُهُ وَمَا كَسَبَ (২) سَيَصْلَى نَارًا ذَاتَ لَهَبٍ (৩) وَامْرَأَتُهُ حَمَّالَةَ الْحَطَبِ (৪) فِي جِيدِهَا حَبْلٌ مِنْ مَسَدٍ (৫)

১) তাব্বাত ইয়াদা আবী লাহাবিঁউ ওয়া তাব্বা। আবু লাহাবের দুহাত ধ্বংস হোক ও দুর্ভোগ হোক। আর তার ক্ষতি ও ধ্বংস নিশ্চিত হয়েছে। (আবু লাহাব নবী মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর পিতৃব্য ছিল। সে তাঁকে কষ্ট দিত এবং মানুষকে তাঁর অনুসরণ ও সত্যায়ন করা থেকে বাধা দিত।)

২) মা আগনা আনহু মালুহু ওয়ামা কাসাব। তার উপার্জিত সম্পদ, সন্তান ও দুনিয়াবী প্রাচুর্য্য কোনই কাজে আসেনি। আল্লাহ্‌র শাস্তি যখন তার উপর পতিত হয়েছে তখন এগুলো তার কোনই উপকার করতে পারেনি।

৩-৪) সাইয়াছলা নারান্‌ যাতা লাহাব। ওয়াম্‌রাআতুহু হাম্মালাতাল হাতাব। অচিরেই প্রবেশ করবে প্রজ্জলিত লেলিহান অগ্নিতে সে এবং তার স্ত্রী (উম্মু জামিল) যে কাঠ এবং কাঁটা বহণ করত এবং নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে কষ্ট দেয়ার জন্য তাঁর চলার পথে বিছিয়ে রাখত।

৫) ফীজীদেহা হাবলুম্‌ মিম্মাসাদ। আল্লাহ্‌র নির্দেশে, তার স্কন্ধে খেজুর বৃক্ষের ছাল দ্বারা পাকানো রশি বাঁধা হবে। তারপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে এবং শাস্তি দেয়া হবে।

সূরা ইখলাছ

بِِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ

قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ (১) اللَّهُ الصَّمَدُ (২) لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ (৩) وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ (৪)

১) ক্বল হুওয়াল্লাহু আহাদ। আপনি বলুন! তিনি আল্লাহ্‌ একক মাওবূদ। দাসত্বের মধ্যে তাঁর কোন শরীক নেই।

২) আল্লাহুছ্‌ ছমাদ। সবধরণের প্রয়োজনে একমাত্র আল্লাহ্‌র কাছেই বান্দা মুখাপেক্ষী। তিনি তাদের প্রয়োজন পূরণ করে থাকেন। তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন।

৩) লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ। তাঁর কোন সন্তান নেই এবং জম্মদাতাও নেই।

৪) ওয়া লাম ইয়াকুল্লাহু কুফুওয়ান্‌ আহাদ। তাঁর তুল্য কোন কিছু নেই। না তাঁর সত্বার তুল্য, না তাঁর গুণাবলীর, না কর্মের, না তাঁর নামের তুল্য কেউ বা কোন কিছু আছে।

সূরা ফালাক্ব

بِِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ

قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ (১) مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ (২) وَمِنْ شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ (৩) وَمِنْ شَرِّ النَّفَّاثَاتِ فِي الْعُقَدِ (৪) وَمِنْ شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ (৫)

১) কুল আঊযু বিরাব্বিল ফালাক্ব। আপনি বলুন! আমি প্রভাতের পালনকর্তার কাছে আশ্রয় কামনা করছি।

২) মিন শার্‌রি মা খালাক্ব। সৃষ্টি জগতের সবকিছুর অনিষ্ট ও ক্ষতি থেকে।

৩) ওয়া মিন শার্‌রি গাসিক্বিন ইযা ওয়াক্বাব। এবং রাতের ভীষণ অন্ধকারের অনিষ্ট থেকে যখন তা সমাগত হয়। রাতে যত প্রকারের অনিষ্ট ও বিপদ আছে তার সব কিছু থেকে আশ্রয় কামনা করছি।

৪) ওয়া মিন শার্‌রিন্নাফ্‌ফাছাতি ফিল ঊক্বাদ। যাদুকারীনির অনিষ্ট থেকে যখন সে যাদুর উদ্দেশ্যে গ্রন্থীতে ফুঁৎকার দেয়।

৫) ওয়া মিন শার্‌রি হাসিদিন ইযা হাসাদ। এবং হিংসুকের অনিষ্ট থেকে। যে কিনা মানুষের নেয়ামতে হিংসা করে এবং উক্ত নিয়ামত বিদুরিত হওয়ার কামনা করে।

সূরা নাস

بِِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ

قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ (১) مَلِكِ النَّاسِ (২) إِلَهِ النَّاسِ (৩) مِنْ شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ (৪) الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ (৫) مِنْ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ (৬)

১) কুল আঊযু বিরাব্বিন্নাস। বলুন! আমি মানুষের পালনকর্তার কাছে আশ্রয় কামনা করছি। যিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন এবং তাদেরকে হেফাযত করেন। তিনি মানুষের মুখাপেক্ষী নন।

২) মালিকিন্নাস। তিনি মানুষের প্রতিটি বিষয়ের মালিক ও কর্তৃত্বকারী।

৩) ইলাহিন্নাস। তিনি মানুষের উপাস্য। এককভাবে তিনিই তাদের যাবতীয় ইবাদত পাওয়ার হক্বদার।

৪) মিন শার্‌রিল ওয়াস্‌ওয়াসিল খান্নাস। (আশ্রয় কামনা করছি) শয়তানের ক্ষতি থেকে যে গোপনে অকল্যাণের পথে আহবান জানায়। এবং আল্লাহ্‌কে স্মরণ করলে আবার লুকিয়ে যায়।

৫) আল্লাযী ইওয়াস্‌বিসু ফী ছুদূরিন্নাস। যে মানুষের অন্তরে কুমন্ত্রনা দেয়।

৬) মিনাল জিন্নাতি ওয়ান্নাস। সে শয়তান মানুষের মধ্যে থেকে এবং জ্বিনের মধ্যে থেকে।

সকল প্রশংসা সেই আল্লাহ্‌র জন্য

যিনি আমাদেরকে ইসলামের হেদায়াত দান করেছেন।

আমরা আল্লাহ্‌ সুবহানাহুর কাছে প্রার্থনা করি

তিনি উপকার দান করুন প্রত্যেক পাঠক ও শ্রবণকারীকে।

উত্তম পারিতোষিক দান করুন

এর অনুবাদক, সম্পাদক ও পরিবেশকসহ

সবাইকে যারা একাজে অংশ নিয়েছেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন