HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলাম

লেখকঃ শাইখ আব্দুর রাজ্জাক ইবন আব্দুল মুহসিন আল-বদর

মানব জাতির প্রকৃত সম্মান কী?
মানবজাতির জন্য প্রকৃত সম্মান কী? তা আমাদের অবশ্যই জানা থাকা দরকার। আমরা অনেকেই মনে করি টাকা-পয়সা, ধন-দৌলত, ইত্যাদিতেই মানুষের প্রকৃত সম্মান, আবার কেউ মনে করি ক্ষমতা ও রাজত্ব ইত্যাদিতে প্রকৃত সম্মান। কিন্তু কুরআন ও হাদীসের প্রমাণাদিতে চিন্তা-গবেষণা করলে, আমরা দেখতে পাই যে, মানব জাতির জন্য আল্লাহর পক্ষ হতে প্রদত্ত সম্মান দুই ধরনের হতে পারে:

এক. সাধারণ সম্মান, যার বর্ণনা আল্লাহ তা‘আলা নিজেই কুরআনে দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَلَقَدۡ كَرَّمۡنَا بَنِيٓ ءَادَمَ وَحَمَلۡنَٰهُمۡ فِي ٱلۡبَرِّ وَٱلۡبَحۡرِ وَرَزَقۡنَٰهُم مِّنَ ٱلطَّيِّبَٰتِ وَفَضَّلۡنَٰهُمۡ عَلَىٰ كَثِيرٖ مِّمَّنۡ خَلَقۡنَا تَفۡضِيلٗا ٧٠﴾ [ الاسراء : ٧٠ ]

“আর আমরা তো আদম সন্তানদের সম্মানিত করেছি এবং আমরা তাদেরকে স্থলে ও সমুদ্রে বাহন দিয়েছি এবং তাদেরকে দিয়েছি উত্তম রিযিক। আর আমি যা সৃষ্টি করেছি তাদের থেকে অনেকের ওপর আমরা তাদেরকে অনেক মর্যাদা দিয়েছি। [সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ৭০]

এ আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা ইবন কাসীর রহ. বলেন, আয়াতে আল্লাহ সংবাদ দেন যে, তিনি আদম সন্তানদের সুন্দর ও নিখুঁত আকৃতিতে সৃষ্টি করার মাধ্যমে তাদের শ্রেষ্ঠত্ব, বিশেষ সম্মান ও মহা মর্যাদা দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা মানবকে এমন আকৃতিতে তৈরি করেছেন, যার কোনো তুলনা অন্য কোনো মাখলুকের সাথে চলে না। আল্লাহ তা‘আলা অন্য কোনো মাখলুককে জ্ঞান দেন নি। দুনিয়া পরিচালনার দায়িত্ব দেন নি একমাত্র মানবই জগতের পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে।

অর্থাৎ তারা তাদের দু-পায়ের উপর দাঁড়িয়ে চলাচল করে, দু হাত দিয়ে খায়, কথা বলতে পারে ইত্যাদি। অথচ মানুষ ছাড়া অন্যান্য জীব জন্তু চার পায়ের ওপর হাটে, তারা হাতে তুলে খেতে পারে না বরং মুখ দিয়ে খায়। আর আল্লাহ তা‘আলা মানবজাতির জন্য চোখ, কান ও হাত-পা দিয়েছেন, যেগুলোর মাধ্যমে তারা দেখতে ও শোনতে পায় এবং অন্তর দিয়ে বুঝতে ও অনুভব করতে পারে। তারা তাদের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দ্বারা উপকৃত হয়, যেমন, এ সব দ্বারা তারা বিভিন্ন ধরনের কাজ কর্ম, ভালো মন্দের বিচার এবং দুনিয়া ও আখিরাতে কোনোটি উপকার কোনোটি ক্ষতি তা বিবেচনা করতে পারে।

দুই. বিশেষ সম্মান। এটি হলো আল্লাহ তা‘আলা মানব জাতিকে এ দীনের প্রতি হিদায়াত দেওয়া এবং মহান রাব্বুল আলামীনের আনুগত্যের তাওফীক লাভ করা। আর এটিই হলো, প্রকৃত সম্মান, পরিপূর্ণ ইজ্জত ও দুনিয়াও আখিরাতের চিরস্থায়ী কল্যাণ। কারণ, ইসলাম হলো আল্লাহ তা‘আলার মনোনীত দীন, এ দীনই হলো, ইজ্জত-সম্মান ও মান-মর্যাদার একমাত্র মাপকাঠি। আর এ কথা দিবালোকের মত স্পষ্ট যে, যাবতীয় ইজ্জত কেবল আল্লাহর জন্য, তার রাসূলের জন্য এবং মুমিন বান্দাদের জন্য। আল্লাহর বড়ত্বের প্রতি বিশ্বাস, তার মমত্বের প্রতি অনুগত হওয়া এবং তার আদেশ-নিষেধ মানার মধ্যেই আল্লাহ তা‘আলার সম্মান যে নিহিত সে কথার ঘোষণা দিয়ে পবিত্র কুরআনে বলেন,

﴿أَلَمۡ تَرَ أَنَّ ٱللَّهَ يَسۡجُدُۤ لَهُۥۤ مَن فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَن فِي ٱلۡأَرۡضِ وَٱلشَّمۡسُ وَٱلۡقَمَرُ وَٱلنُّجُومُ وَٱلۡجِبَالُ وَٱلشَّجَرُ وَٱلدَّوَآبُّ وَكَثِيرٞ مِّنَ ٱلنَّاسِۖ وَكَثِيرٌ حَقَّ عَلَيۡهِ ٱلۡعَذَابُۗ وَمَن يُهِنِ ٱللَّهُ فَمَا لَهُۥ مِن مُّكۡرِمٍۚ إِنَّ ٱللَّهَ يَفۡعَلُ مَا يَشَآءُ۩ ١٨﴾ [ الحج : ١٨ ]

“তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে সাজদাহ করে যা কিছু রয়েছে আসমানসমূহে এবং যা কিছু রয়েছে যমীনে, সুর্য, চাদ, তারকারাজী, পর্বতমালা, বৃলতা, জীবজন্তু ও মানুষের মধ্যে অনেকে। আবার অনেকের ওপর শাস্তি অবধারিত হয়ে আছে। আল্লাহ যাকে অপমানিত করেন, তার সম্মানদাতা কেউ নেই। নিশ্চয় আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করেন।” [সূরা আল-হাজ, আয়াত: ১৮]

মনে রাখতে হবে, যাকে আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ঈমান আনা ও বিশ্বাসের তাওফীক দেওয়া হয় নি, যার ফলে রহমানের ইবাদতকে সে করনীয় মনে করেনি, সে প্রকৃত পক্ষে অপদস্থ ও অসম্মানিত, তার সম্মান লাভের কোনো উপায় নেই। আল্লাহর পক্ষ হতে তার প্রতি কোনো প্রকার সম্মান প্রদর্শন করা হবে না।

দুনিয়াতে মানুষ তার ঈমান-আমল, কথা-কাজ ও বিশ্বাস অনুযায়ীই ইজ্জত-সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী হয়ে থাকে। যার মধ্যে যত বেশি ঈমান আমল থাকবে, সেই তত বেশি ইজ্জত সম্মানের অধিকারী হবে। দীনকে বাদ দিয়ে যে ব্যক্তি ইজ্জত-সম্মান তালাশ করে, সে অবশ্যই পদে পদে লাঞ্ছিত হবে। ইসলামের বাহিরে গিয়ে কেউ সম্মানের অধিকারী হতে পারে না। সুতরাং ইসলামের বাহিরে গিয়ে যে সম্মান চায়, তাকে কোনো সম্মান দেওয়া হবে না, বরং তাকে অপমান করা হবে।

এখানে একটি কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে, প্রথম প্রকার সম্মান লাভ করা আল্লাহর তা‘আলার পক্ষ থেকেই হয়ে থাকে। আল্লাহ তা‘আলা মানব সৃষ্টির সাথে তাদের যাবতীয় বৈশিষ্ট্য গুলো দিয়েই তৈরি করেন। তাতে মানুষের কোনো দখল নেই। আর একজন যখন প্রথম প্রকার সম্মান লাভে ধন্য হয়, তা তাকে বাধ্য করে যাতে সে দ্বিতীয় প্রকার সম্মানও লাভ করে। “যাকে আল্লাহ তা‘আলা যাকে ধন-সম্পদ, টাকা পয়সা, শক্তি, সামর্থ্য ও সুস্থতা দিয়েছে, তার ওপর কর্তব্য হলো, সে যেন তার প্রচেষ্টাকে আল্লাহ তা‘আলার ইবাদতে নিয়োজিত করে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে যথাসাধ্য চেষ্টা করে। অন্যথায় আল্লাহ তা‘আলা তাকে কিয়ামতের দিন তাকে দেয় নি‘আমতগুলির বিষয়ে জিজ্ঞাসা করবে। ইমাম মুসলিম স্বীয় কিতাব সহীহ মুসলিমে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে, সাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করল যে, আমরা আমাদের প্রভুকে কিয়ামতের দিনে দেখতে পাব কি? তখন তিনি বললেন,

«هل تضارون في رؤية الشمس في الظهيرة ليست في سحابة؟ قالوا : لا قال : فهل تضارون في رؤية القمر ليلة البدر ليس في سحابة؟ قالوا : لا، قال : فوالذي نفسي بيده لا تضارون في رؤية ربِّكم إلاَّ كما تضارون في رؤية أحدهما، قال : فيلقى العبد فيقول : أي فُلْ ألم أُكرمْك وأُسوِّدك وأُزوِّجك وأُسخِّر لك الخيلَ والإبل وأذرك ترأس وترْبع؟ فيقول : بلى، قال : فيقول : أفظننت أنَّك ملاقيّ؟ فيقول : لا، فيقول : فإنِّي أنساك كما نسيتني، ثم يلقى الثاني فيقول : أي فل ألم أكرمك وأُسوِّدك وأُزوِّجك وأُسخِّر لك الخيلَ والإبل وأذرك ترأس وترْبع؟ فيقول : بلى أي ربّ، فيقول : أفظننت أنَّك ملاقيّ؟ فيقول : لا، فيقول : فإنِّي أنساك كما نسيتني، ثم يلقى الثالث فيقول له مثل ذلك فيقول : يا ربِّ آمنت بك وبكتابك وبرسلك، وصلّيتُ وصمت وتصدّقتُ، ويثني بخيرٍ ما استطاع، فيقول : هنا إذاً، قال : ثم يقال له : الآن نبعث شاهداً عليك، ويتفكّر في نفسه من ذا الذي يشهد عليَّ؟ ! فيختم على فيه ويقال لفخذه ولحمه وعظامه : أنطقي فتنطق فخذه ولحمه وعظامه بعمله، وذلك ليعذر من نفسه، وذلك المنافق، وذلك الذي يسخط اللهُ عليه»

“পরিষ্কার আকাশে যখন কোনো মেঘের আবরণ না থাকে, তখন কি তোমাদের সূর্য দেখতে কোনো কষ্ট হয়? তারা বলল, না। তিনি আরও বললেন পূর্ণিমার রাতে চাঁদ দেখতে কি তোমাদের কষ্ট হয়? তারা বলল, না। তখন তিনি বললেন, পূর্ণিমার রাতে চাঁদ দেখতে তোমাদের যেমন কোনো প্রকার কষ্ট হয় না, অনুরুপভাবে কিয়ামতে দিন আল্লাহকে দেখতেও তোমাদের কোনো প্রকার কষ্ট হবে না। তারপর বান্দা আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করলে, আল্লাহ তাকে ডেকে বলবে, বলতো দেখি, আমি কি তোমাকে সম্মান দেইনি, তোমাকে ক্ষমতা দেই নি, তোমাকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করি নি, তোমাদের জন্য উট ও ঘোড়াকে অনুগত করি নি এবং আমি কি তোমাদের স্বাধীনতা দেই নি? তখন বান্দা বলবে, অবশ্যই, তুমি আমাদের যাবতীয় বিষয়গুলোর ব্যাপারে ক্ষমতা দিয়েছ! তাহলে তোমরা কি এ কথা বিশ্বাস করতে যে, একদিন তোমাকে আমার সাথে সাক্ষাত করতে হবে? তখন সে বলবে, না! তখন আল্লাহ তা‘আলা বলবে, আজকের দিন আমি তোমাকে ভূলে যাব, যেমনটি তুমি আমাকে দুনিয়াতে ভুলে গিয়েছিলে! তারপর আল্লাহ অপর এক বান্দার প্রতি লক্ষ করে বলবে, বলতো দেখি আমি কি তোমাকে সম্মান দেই নি, তোমাকে ক্ষমতা দেই নি, তোমাকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করি নি, তোমাদের জন্য উট ও ঘোড়াকে অনুগত করি নি এবং আমি কি তোমাদের স্বাধীনতা দেই নি? তখন বান্দা বলবে, অবশ্যই, তুমি আমাদের জন্য যাবতীয় বিষয়গুলো ব্যাপারে ক্ষমতা দিয়েছ! তোমরা কি এ কথা বিশ্বাস করতে যে, একদিন তোমাকে আমার সাথে সাক্ষাত করতে হবে? তখন সে বলবে না! তখন আল্লাহ তা‘আলা বলবে, আজকের দিন আমি তোমাকে ভূলে যাব, যেমনটি তুমি আমাকে ভুলে গিয়েছিলে। তারপর আল্লাহ তা‘আলা তৃতীয় লোকটির সাক্ষাতকার নিবে এবং তাকেও অনুরূপ প্রশ্ন করা হবে, তখন সে উত্তরে বলবে, হে আমার রব! আমি তোমার প্রতি বিশ্বাস করছি, তোমার অবতীর্ণ কিতাব ও প্রেরিত রাসূলের প্রতি ঈমান এনেছি, সালাত আদায় করছি, রোজা রেখেছি ও দান খয়রাত করেছি। তারপর যথাসম্ভব সে উত্তম প্রসংশা করবে। তখন সে বলবে, তোমাকে ধন্যবাদ জানানো হলো, এরপর তাকে বলা হবে, তোমার বিপক্ষে কি সাক্ষ্য উপস্থিত করব? এ কথা শোনে লোকটি চিন্তায় পড়ে যাবে, কে তার বিপক্ষে সাক্ষ্য দেবে? তখন আল্লাহ তা‘আলা তার মুখে তালা দিয়ে দেবে। (মুখে সে আর কোনো কথা বলতে পারবে না) আর তার উরু, গোশত ও হাড়গুলোকে বলা হবে, তোমরা কথা বল, তখন তারা ষতার বিপক্ষে কথা বলবে, তার উরু, গোশত ও হাড়গুলো তার কর্ম সম্পর্কে সাক্ষ্য দেবে। আর এ সব আল্লাহ তা‘আলা এ জন্য করবেন, যাতে সে নিজেকে অপরাধি সাব্যস্ত করতে পারে। আর এ লোকটি হলো, মুনাফেক। আল্লাহ তা‘আলা এ লোকটির ওপরই ক্ষুব্ধ। কিয়ামতের দিন তার ওপর অধিক ক্ষুব্ধ হবেন।” [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৯৬৮।]

হাদীস দ্বারা স্পষ্ট প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামতের দিন তার বান্দাদের একজনকে যে, সুস্থতা, ধন-সম্পদ, ঘর-বাড়ী, টাকা- পয়সা ইত্যাদি নি‘আমত দিয়েছেন, সে সম্পর্কে তাকে অবশ্যই জিজ্ঞাসা করবে। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা-তো তাকে এ সব নি‘আমত এ জন্য দিয়েছেন, যাতে সে এগুলোকে আল্লাহর বন্দেগীতে কাজে লাগায় এবং আল্লাহর রাহে তা ব্যয় করে। কিন্তু যদি সে তা না করে, অন্যায় কাজ করে, আল্লাহর নাফরমানী করে এবং অন্য কোনো বিপথে কাজে লাগায়, তাহলে কিয়ামতের দিন তাকে অবশ্যই তার নি‘আমতের হিসাব দিতে হবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন