HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
কীভাবে আমরা সন্তানদের লালন-পালন করব
লেখকঃ আখতারুজ্জামান মুহাম্মদ সুলাইমান
৯
সন্তানের মাতা পিতার প্রতি কর্তব্যসমূহদুনিয়া আখেরাতে নাজাত পেতে হলে, নিম্নোক্ত উপদেশগুলো পালন করতে হবে-
১। মাতা পিতার সাথে ভদ্রভাবে কথা বলবে। তাদেরকে উহ্ শব্দটিও পর্যন্ত বলবে না। তাদের ধমক দিবে না। আর তাদের সংগে নম্র ব্যবহার করবে।
২। সর্বদা মাতাপিতার আদেশ নিষেধ পালন করতে তৎপর হবে, তবে কোনো পাপের কাজ ব্যতীত। কারণ, স্রষ্টার সাথে কোনো পাপের কাজে কোনো সৃষ্টির আনুগত্য করা যাবে না।
৩। তাদের সঙ্গে উত্তম ব্যবহার করবে। কখনও তাদের সম্মুখে বেয়াদবি করবে না। কখনও তাদের প্রতি রাগের সাথে দৃষ্টি নিক্ষেপ করবে না।
৪। সর্বদা মাতাপিতার সুনাম, সম্মান ও ধনসম্পদের হিফাযতে সচেষ্ট হবে। আর তাদের অনুমতি ব্যতীত তাদের কোনো টাকা-পয়সা ধরবে না।
৫। এমন কাজে তৎপর হও, যাতে তারা খুশি হন, যদিও তারা সেসবের হুকুম নাও করে থাকেন। যেমন তাদের খেদমত করা এবং তাদের প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করে দেওয়া। আর সব সময় ইলম অর্জনে সচেষ্ট হবে।
৬। তোমার সর্ববিধ কাজে তাদের সাথে পরামর্শ করবে। আর যদি কোনো অবস্থায় তাদের বিরোধিতা করতে করতেই হয়, তবে সেজন্য তাদের নিকট নিজের ওযর পেশ করবে।
৭। সর্বদা তাদের ডাকে হাসিমুখে উপস্থিত হবে।
৮। তাদের বন্ধু বান্ধবদের ও আত্মীয় স্বজনদের সম্মান করতে হবে তাদের জীবদ্দশায় এবং মৃত্যুর পরেও।
৯। তাদের সাথে ঝগড়া করবে না এবং তাদের ভুল ভ্রান্তি খুঁজতে তৎপর হবে না। বরঞ্চ আদবের সাথে তাদেরকে সঠিক জিনিস জানাতে আপ্রাণ চেষ্টা করবে।
১০। তাদের অবাধ্য হবে না। তাদের সম্মুখে উচ্চস্বরে কথা বলবে না। তাদের কথাবার্তা মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করবে। তাদের সাথে উত্তম ব্যবহার করবে। মাতাপিতার সম্মানে তোমার কোনো ভাই-বোনদের কষ্ট দিবে না।
১১। যখনই তাদের কেউ তোমার সম্মুখে উপস্থিত হন তখনই তাদেরকে সসম্মানে অভ্যর্থনা জানাবে।
১২। বাড়িতে মাতাকে তার কাজে সর্বদা সহযোগিতা করবে। আর পিতার কাজে সহযোগিতা করতে কখনও পিছপা হবে না।
১৩। মাতাপিতার অনুমতি ব্যতীত কোথাও বের হবে না, যদিও সে কাজ যতই গুরুত্বপূর্ণ হোক না কেন। যদি বিশেষ অসুবিধার কারণে বের হতে হয়, তা হলে তাদের নিকট ওযর পেশ করবে। আর দেশের কিংবা শহরের বাইরে গেলে, সর্বদা তাদের সাথে চিঠি-পত্র/মোবাইলের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখবে।
১৪। অনুমতি ব্যতীত কক্ষণো তাদের কক্ষে প্রবেশ করবে না। বিশেষ করে তাদের ঘুম কিংবা বিশ্রামের সময়।
১৫। যদি তোমার ধূমপানের বদ অভ্যাস থাকে, তবে কক্ষণো তাদের সম্মুখে তো তা করবেই না, বরং জেনে রাখবে যে, ধুমপান শরী‘আতে বৈধ নয়।
১৬। তাদের পূর্বে খাবার গ্রহণ করবে না। খানাপিনার সময় তাদেরকে আদর আপ্যায়ন করতে সচেষ্ট হবে।
১৭। তাদের সম্মুখে কখনও মিথ্যা কথা বলবে না। তাদের কোনো কাজ তোমার পছন্দ না হলে তাদের দোষ বের করতে তৎপর হবে না।।
১৮। তাদের সম্মুখে তোমার স্ত্রী বা সন্তানদের প্রাধান্য দিবে না। সর্ব অবস্থাতেই তাদের রাযী খুশি রাখতে তৎপর হবে। তাদের রাযী খুশিতেই আল্লাহপাক রাযী হবেন। আর তাদের নারাযীতে আল্লাহ তা‘আলা নারায হবেন।
১৯। তাদের সম্মুখে কোনো উঁচু স্থানে উপবেশন করবে না। তাদের সম্মুখে কক্ষণোই অহংকারের সাথে পদদ্বয়কে লম্বা করে দেবে না।
২০। কখনও পিতার সম্মুখে নিজের বড়ত্ব দেখাবে না, তুমি যত বড় উর্দ্ধতন কর্মচারী/কর্মকর্তাই হও না কেন। তাদের কোনো ভালো কাজকে খারাপ বলবে না কিংবা তাদের কোনো কষ্ট দিবে না, যদিও তা মুখের কথার দ্বারাই হোক না কেন।
২১। তাদের জন্য খরচের ব্যাপারে কক্ষণও এত কৃপণতা করবে না, যাতে তারা কোনো অভিযোগ উত্থাপন করে। এটা তোমার জন্য অত্যন্ত লজ্জাস্কর ব্যাপার। পরে তোমার সন্তানদের মধ্যেও তা দেখতে পাবে। তাই তোমার সন্তানদের ব্যাপারেও চিন্তা-ভাবনা কর।
মাতাপিতার সাথে যে ব্যবহার করবে, সন্তানদের নিকট হতে সে ব্যবহার আশা করতে পার।
২২। বেশি বেশি মাতাপিতার দেখাশোনা করবে এবং তাদের সর্বদা হাদিয়া উপহার দিতে তৎপর হবে তারা যে কষ্ট করে তোমাকে প্রতিপালন করেছেন তজ্জন্য তাদের শুকরিয়া আদায়ে তৎপর হবে। তুমি যেমন আজ তোমার সন্তানদের আদর কর এবং তাদের জন্য কষ্ট কর, একদা তারাও তোমার জন্য ঐ রকমই কষ্ট করতেন।
২৩। তোমার নিকট সর্বাধিক সম্মানিত ও হকদার হলেন তোমার মাতা। তারপর তোমার পিতা। মনে রেখ, মায়ের পায়ের কাছে সন্তানের জান্নাত (হাসান সনদে মুসনাদে ইমাম আহমাদ)।
২৪। মাতা পিতার অবাধ্যচরণ ও তাদের সাথে রাগারাগি করা থেকে বিরত থাকবে। অন্যথায় তুমি দুনিয়া ও আখেরাতে দুঃখ কষ্টের মধ্যে পড়বে। আজ তুমি তোমার মাতাপিতার সাথে যে ব্যবহার করবে, ভবিষ্যতে তোমার সন্তানরাও তোমার সাথে একই রকম ব্যবহার করবে।
২৫। যদি তাদের নিকট কোনো কিছু চাও, তবে নম্রভাবে তা চাও। আর যখন তুমি তা তাদের নিকট হতে পাবে, তখন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে। আর যদি তারা তা দিতে অপারগ হন, তবে তাদের ওজর গ্রহণ করবে। তাদের নিকট এমন অনেক কিছু দাবী করবে না, যা দিতে তাদের কষ্ট হয়।
২৬। যখন তুমি রিযক উপার্জনক্ষম হবে, তখন হতেই রিযক অন্বেষণে তৎপর হও। আর সাথে সাথে মাতাপিতাকে সাহায্য করতে চেষ্টা কর।
২৭। মনে রেখ তোমার ওপর তোমার মাতাপিতার হক আছে। তেমনিভাবে তোমার স্ত্রীরও। তাই প্রত্যেকের হককে সঠিকভাবে আদায় করতে সচেষ্ট হবে। আর তাদের মধ্যে কোনো মনোমালিন্য দেখা দিলে তা দূর করতে চেষ্টা করবে এবং গোপনে গোপনে উভয়কেই হাদিয়া দিবে।
২৮। যদি কক্ষণও তোমার স্ত্রীর সাথে তোমার মাতা পিতার কোনো মনোমালিন্য হয়, তবে তার উত্তম বিচারে সচেষ্ট হবে এবং স্ত্রীকে এটা ভালোভাবে বুঝিয়ে বলবে যে, তুমি তার পক্ষে আছ যদি সে হকের ওপর থাকে। কিন্তু মাতা পিতাকে খুশি করাও তোমার জন্য অত্যন্ত জরুরী।
২৯। যদি বিয়ে কিংবা তালাকের ব্যাপারে তোমার মাতাপিতার সাথে তোমার কোনো মতবিরোধ দেখা দেয়, তবে শরী‘আতের আইনের আশ্রয় গ্রহণ কর, এটাই হবে তোমাদের জন্য উত্তম সাহায্যকারী।
৩০। ভালো বা মন্দ উভয় ক্ষেত্রেই মাতা পিতার দো‘আ কবুল হয়। তাই তোমার ওপর তাদের বদ-দো‘আ থেকে বাঁচতে সচেষ্ট হও।
৩১। অন্যদের সাথে উত্তম ব্যবহার করতে সচেষ্ট হও। যে অন্যদের গালি দেয়, সে নিজেও গালি খায়।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«مِنَ الْكَبَائِرِ شَتْمُ الرَّجُلِ وَالِدَيْهِ» قَالُوا : يَا رَسُولَ اللهِ، وَهَلْ يَشْتِمُ الرَّجُلُ وَالِدَيْهِ؟ قَالَ : «نَعَمْ يَسُبُّ أَبَا الرَّجُلِ فَيَسُبُّ أَبَاهُ، وَيَسُبُّ أُمَّهُ فَيَسُبُّ أُمَّهُ»
“কবীরা গুনাহের মধ্যে কেউ তার পিতামাতাকে গালি দেওয়াও অন্তর্ভূক্ত সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, কেউ কি তার মাতা পিতাকে গালি দেয়? উত্তরে তিনি বললেন, হ্যাঁ, কেউ অন্য কোনো ব্যক্তির পিতাকে গালি দেয় তখন সেও তার পিতাকে গালি দেয় আর কেউ কারো মাতাকে গালি দিলে সেও তার মাতাকে গালি দেয়”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫৯৭৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯০]
৩২। মাতাপিতার সাথে সাক্ষাত করতে থাক তাদের জীবদ্দশায় এবং মৃত্যুর পরেও। তাদের পক্ষ থেকে দান খয়রাত করতে থাক। সর্বদা তাদের জন্য এই বলে বেশি বেশি করে দো‘আ করতে থাক।
﴿ رَّبِّ ٱغۡفِرۡ لِي وَلِوَٰلِدَيَّ وَلِمَن دَخَلَ بَيۡتِيَ مُؤۡمِنٗا وَلِلۡمُؤۡمِنِينَ وَٱلۡمُؤۡمِنَٰتِۖ ﴾ [ نوح : ٢٨ ]
“হে আমার রব! আমাকে এবং আমার মাতাপিতাকে এবং ঈমানসহ যারা আমার ঘরে প্রবেশ করে তাদেরকে এবং অন্যান্য মুমিন নারী পুরুষদেরকে ক্ষমা করে দাও।” [সূরা নুহ, আয়াত: ২৮]
অন্যত্র আছে,
﴿ رَّبِّ ٱرۡحَمۡهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرٗا ٢٤ ﴾ [ الاسراء : ٢٤ ]
“হে আমার রব, তুমি আমার মাতা পিতার ওপর দয়া কর যেমনিভাবে তারা আমাকে ছোট অবস্থায় লালন-পালন করেছেন।” [সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ২৪]
সমাপ্ত
১। মাতা পিতার সাথে ভদ্রভাবে কথা বলবে। তাদেরকে উহ্ শব্দটিও পর্যন্ত বলবে না। তাদের ধমক দিবে না। আর তাদের সংগে নম্র ব্যবহার করবে।
২। সর্বদা মাতাপিতার আদেশ নিষেধ পালন করতে তৎপর হবে, তবে কোনো পাপের কাজ ব্যতীত। কারণ, স্রষ্টার সাথে কোনো পাপের কাজে কোনো সৃষ্টির আনুগত্য করা যাবে না।
৩। তাদের সঙ্গে উত্তম ব্যবহার করবে। কখনও তাদের সম্মুখে বেয়াদবি করবে না। কখনও তাদের প্রতি রাগের সাথে দৃষ্টি নিক্ষেপ করবে না।
৪। সর্বদা মাতাপিতার সুনাম, সম্মান ও ধনসম্পদের হিফাযতে সচেষ্ট হবে। আর তাদের অনুমতি ব্যতীত তাদের কোনো টাকা-পয়সা ধরবে না।
৫। এমন কাজে তৎপর হও, যাতে তারা খুশি হন, যদিও তারা সেসবের হুকুম নাও করে থাকেন। যেমন তাদের খেদমত করা এবং তাদের প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করে দেওয়া। আর সব সময় ইলম অর্জনে সচেষ্ট হবে।
৬। তোমার সর্ববিধ কাজে তাদের সাথে পরামর্শ করবে। আর যদি কোনো অবস্থায় তাদের বিরোধিতা করতে করতেই হয়, তবে সেজন্য তাদের নিকট নিজের ওযর পেশ করবে।
৭। সর্বদা তাদের ডাকে হাসিমুখে উপস্থিত হবে।
৮। তাদের বন্ধু বান্ধবদের ও আত্মীয় স্বজনদের সম্মান করতে হবে তাদের জীবদ্দশায় এবং মৃত্যুর পরেও।
৯। তাদের সাথে ঝগড়া করবে না এবং তাদের ভুল ভ্রান্তি খুঁজতে তৎপর হবে না। বরঞ্চ আদবের সাথে তাদেরকে সঠিক জিনিস জানাতে আপ্রাণ চেষ্টা করবে।
১০। তাদের অবাধ্য হবে না। তাদের সম্মুখে উচ্চস্বরে কথা বলবে না। তাদের কথাবার্তা মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করবে। তাদের সাথে উত্তম ব্যবহার করবে। মাতাপিতার সম্মানে তোমার কোনো ভাই-বোনদের কষ্ট দিবে না।
১১। যখনই তাদের কেউ তোমার সম্মুখে উপস্থিত হন তখনই তাদেরকে সসম্মানে অভ্যর্থনা জানাবে।
১২। বাড়িতে মাতাকে তার কাজে সর্বদা সহযোগিতা করবে। আর পিতার কাজে সহযোগিতা করতে কখনও পিছপা হবে না।
১৩। মাতাপিতার অনুমতি ব্যতীত কোথাও বের হবে না, যদিও সে কাজ যতই গুরুত্বপূর্ণ হোক না কেন। যদি বিশেষ অসুবিধার কারণে বের হতে হয়, তা হলে তাদের নিকট ওযর পেশ করবে। আর দেশের কিংবা শহরের বাইরে গেলে, সর্বদা তাদের সাথে চিঠি-পত্র/মোবাইলের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখবে।
১৪। অনুমতি ব্যতীত কক্ষণো তাদের কক্ষে প্রবেশ করবে না। বিশেষ করে তাদের ঘুম কিংবা বিশ্রামের সময়।
১৫। যদি তোমার ধূমপানের বদ অভ্যাস থাকে, তবে কক্ষণো তাদের সম্মুখে তো তা করবেই না, বরং জেনে রাখবে যে, ধুমপান শরী‘আতে বৈধ নয়।
১৬। তাদের পূর্বে খাবার গ্রহণ করবে না। খানাপিনার সময় তাদেরকে আদর আপ্যায়ন করতে সচেষ্ট হবে।
১৭। তাদের সম্মুখে কখনও মিথ্যা কথা বলবে না। তাদের কোনো কাজ তোমার পছন্দ না হলে তাদের দোষ বের করতে তৎপর হবে না।।
১৮। তাদের সম্মুখে তোমার স্ত্রী বা সন্তানদের প্রাধান্য দিবে না। সর্ব অবস্থাতেই তাদের রাযী খুশি রাখতে তৎপর হবে। তাদের রাযী খুশিতেই আল্লাহপাক রাযী হবেন। আর তাদের নারাযীতে আল্লাহ তা‘আলা নারায হবেন।
১৯। তাদের সম্মুখে কোনো উঁচু স্থানে উপবেশন করবে না। তাদের সম্মুখে কক্ষণোই অহংকারের সাথে পদদ্বয়কে লম্বা করে দেবে না।
২০। কখনও পিতার সম্মুখে নিজের বড়ত্ব দেখাবে না, তুমি যত বড় উর্দ্ধতন কর্মচারী/কর্মকর্তাই হও না কেন। তাদের কোনো ভালো কাজকে খারাপ বলবে না কিংবা তাদের কোনো কষ্ট দিবে না, যদিও তা মুখের কথার দ্বারাই হোক না কেন।
২১। তাদের জন্য খরচের ব্যাপারে কক্ষণও এত কৃপণতা করবে না, যাতে তারা কোনো অভিযোগ উত্থাপন করে। এটা তোমার জন্য অত্যন্ত লজ্জাস্কর ব্যাপার। পরে তোমার সন্তানদের মধ্যেও তা দেখতে পাবে। তাই তোমার সন্তানদের ব্যাপারেও চিন্তা-ভাবনা কর।
মাতাপিতার সাথে যে ব্যবহার করবে, সন্তানদের নিকট হতে সে ব্যবহার আশা করতে পার।
২২। বেশি বেশি মাতাপিতার দেখাশোনা করবে এবং তাদের সর্বদা হাদিয়া উপহার দিতে তৎপর হবে তারা যে কষ্ট করে তোমাকে প্রতিপালন করেছেন তজ্জন্য তাদের শুকরিয়া আদায়ে তৎপর হবে। তুমি যেমন আজ তোমার সন্তানদের আদর কর এবং তাদের জন্য কষ্ট কর, একদা তারাও তোমার জন্য ঐ রকমই কষ্ট করতেন।
২৩। তোমার নিকট সর্বাধিক সম্মানিত ও হকদার হলেন তোমার মাতা। তারপর তোমার পিতা। মনে রেখ, মায়ের পায়ের কাছে সন্তানের জান্নাত (হাসান সনদে মুসনাদে ইমাম আহমাদ)।
২৪। মাতা পিতার অবাধ্যচরণ ও তাদের সাথে রাগারাগি করা থেকে বিরত থাকবে। অন্যথায় তুমি দুনিয়া ও আখেরাতে দুঃখ কষ্টের মধ্যে পড়বে। আজ তুমি তোমার মাতাপিতার সাথে যে ব্যবহার করবে, ভবিষ্যতে তোমার সন্তানরাও তোমার সাথে একই রকম ব্যবহার করবে।
২৫। যদি তাদের নিকট কোনো কিছু চাও, তবে নম্রভাবে তা চাও। আর যখন তুমি তা তাদের নিকট হতে পাবে, তখন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে। আর যদি তারা তা দিতে অপারগ হন, তবে তাদের ওজর গ্রহণ করবে। তাদের নিকট এমন অনেক কিছু দাবী করবে না, যা দিতে তাদের কষ্ট হয়।
২৬। যখন তুমি রিযক উপার্জনক্ষম হবে, তখন হতেই রিযক অন্বেষণে তৎপর হও। আর সাথে সাথে মাতাপিতাকে সাহায্য করতে চেষ্টা কর।
২৭। মনে রেখ তোমার ওপর তোমার মাতাপিতার হক আছে। তেমনিভাবে তোমার স্ত্রীরও। তাই প্রত্যেকের হককে সঠিকভাবে আদায় করতে সচেষ্ট হবে। আর তাদের মধ্যে কোনো মনোমালিন্য দেখা দিলে তা দূর করতে চেষ্টা করবে এবং গোপনে গোপনে উভয়কেই হাদিয়া দিবে।
২৮। যদি কক্ষণও তোমার স্ত্রীর সাথে তোমার মাতা পিতার কোনো মনোমালিন্য হয়, তবে তার উত্তম বিচারে সচেষ্ট হবে এবং স্ত্রীকে এটা ভালোভাবে বুঝিয়ে বলবে যে, তুমি তার পক্ষে আছ যদি সে হকের ওপর থাকে। কিন্তু মাতা পিতাকে খুশি করাও তোমার জন্য অত্যন্ত জরুরী।
২৯। যদি বিয়ে কিংবা তালাকের ব্যাপারে তোমার মাতাপিতার সাথে তোমার কোনো মতবিরোধ দেখা দেয়, তবে শরী‘আতের আইনের আশ্রয় গ্রহণ কর, এটাই হবে তোমাদের জন্য উত্তম সাহায্যকারী।
৩০। ভালো বা মন্দ উভয় ক্ষেত্রেই মাতা পিতার দো‘আ কবুল হয়। তাই তোমার ওপর তাদের বদ-দো‘আ থেকে বাঁচতে সচেষ্ট হও।
৩১। অন্যদের সাথে উত্তম ব্যবহার করতে সচেষ্ট হও। যে অন্যদের গালি দেয়, সে নিজেও গালি খায়।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«مِنَ الْكَبَائِرِ شَتْمُ الرَّجُلِ وَالِدَيْهِ» قَالُوا : يَا رَسُولَ اللهِ، وَهَلْ يَشْتِمُ الرَّجُلُ وَالِدَيْهِ؟ قَالَ : «نَعَمْ يَسُبُّ أَبَا الرَّجُلِ فَيَسُبُّ أَبَاهُ، وَيَسُبُّ أُمَّهُ فَيَسُبُّ أُمَّهُ»
“কবীরা গুনাহের মধ্যে কেউ তার পিতামাতাকে গালি দেওয়াও অন্তর্ভূক্ত সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, কেউ কি তার মাতা পিতাকে গালি দেয়? উত্তরে তিনি বললেন, হ্যাঁ, কেউ অন্য কোনো ব্যক্তির পিতাকে গালি দেয় তখন সেও তার পিতাকে গালি দেয় আর কেউ কারো মাতাকে গালি দিলে সেও তার মাতাকে গালি দেয়”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫৯৭৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯০]
৩২। মাতাপিতার সাথে সাক্ষাত করতে থাক তাদের জীবদ্দশায় এবং মৃত্যুর পরেও। তাদের পক্ষ থেকে দান খয়রাত করতে থাক। সর্বদা তাদের জন্য এই বলে বেশি বেশি করে দো‘আ করতে থাক।
﴿ رَّبِّ ٱغۡفِرۡ لِي وَلِوَٰلِدَيَّ وَلِمَن دَخَلَ بَيۡتِيَ مُؤۡمِنٗا وَلِلۡمُؤۡمِنِينَ وَٱلۡمُؤۡمِنَٰتِۖ ﴾ [ نوح : ٢٨ ]
“হে আমার রব! আমাকে এবং আমার মাতাপিতাকে এবং ঈমানসহ যারা আমার ঘরে প্রবেশ করে তাদেরকে এবং অন্যান্য মুমিন নারী পুরুষদেরকে ক্ষমা করে দাও।” [সূরা নুহ, আয়াত: ২৮]
অন্যত্র আছে,
﴿ رَّبِّ ٱرۡحَمۡهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرٗا ٢٤ ﴾ [ الاسراء : ٢٤ ]
“হে আমার রব, তুমি আমার মাতা পিতার ওপর দয়া কর যেমনিভাবে তারা আমাকে ছোট অবস্থায় লালন-পালন করেছেন।” [সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ২৪]
সমাপ্ত
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন