মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য; আমরা তাঁর প্রশংসা করি, তাঁর নিকট সাহায্য ও ক্ষমা প্রার্থনা করি; তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করি; তাঁর উপর ভরসা করি; আর আমাদের নফসের জন্য ক্ষতিকর এমন সকল খারাপি এবং আমাদের সকল প্রকার মন্দ আমল থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই। সুতরাং আল্লাহ যাকে পথ প্রদর্শন করেন, তাকে পথভ্রষ্ট করার কেউ নেই; আর যাকে তিনি পথহারা করেন, তাকে পথ প্রদর্শনকারীও কেউ নেই। আর আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তাঁর কোন শরীক নেই এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমাদের নেতা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসূল, যাকে তিনি সত্যসহকারে কিয়ামতকে সামনে রেখে সুসংবাদ দাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারীরূপে পাঠিয়েছেন। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করবে, সে সঠিক পথ পাবে; আর যে ব্যক্তি তাঁদের অবাধ্য হবে, সে তার নিজেরই ক্ষতি করবে এবং সে আল্লাহর কোন ক্ষতি করতে পারবে না।
অতঃপর...
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা তাঁর পবিত্র কিতাবে বলেন:
“বনী ইরাঈলের মধ্যে যারা কুফরী করেছিল, তারা দাঊদ ও ঈসা ইবন মারইয়াম কর্তৃক অভিশপ্ত হয়েছিল—এটা এই জন্য যে, তারা ছিল অবাধ্য ও সীমালংঘনকারী। তারা যেসব গর্হিত কাজ করত, তা থেকে তারা একে অন্যকে বারণ করত না। তারা যা করত, তা কতই না নিকৃষ্ট।” — (সূরা আল-মায়িদা: ৭৮-৭৯)
সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
“তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি কোন অশ্লীল কাজ দেখে, সে যেন তা হাত দ্বারা প্রতিরোধ করে; আর যদি তাতে সে অক্ষম হয়, তবে সে যেন তার মুখ দ্বারা তার প্রতিবাদ করে; আর সে যদি তাতেও অক্ষম হয়, তবে সে যেন তার অন্তর দ্বারা তা প্রতিরোধের পরিকল্পনা করে; আর তা হচ্ছে ঈমানের দুর্বলতা”। — (মুসলিম, ঈমান, বাব নং- ২২, হাদিস নং- ১৮৬)
আর দীনের ক্ষেত্রে ঈমানের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী অন্যতম মন্দ কাজ হল রাফেযী শিয়াদের ফিতনা, যার দিকে তার অনুসারীগণ প্রতিটি জায়গায় দাওয়াতী তৎপরতা চালাচ্ছে। আর তারা জনগণের কাছে প্রকাশ করে যে, শিয়া মাযহাব ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের প্রসিদ্ধ চার মাযহাবের মধ্যে বড় ধরনের কোন পার্থক্য নেই। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ও শিয়াদের মধ্যকার বিরোধ হল বিভিন্ন বিষয়ের শাখা-প্রশাখায় অতি সামান্য সাদাসিধে বিরোধ।
প্রকৃতপক্ষে বিষয়টি এই রকম নয়; বরং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ও শিয়াদের মধ্যকার বিরোধটি মৌলিক এবং প্রধান আকিদাসমূহের মধ্যে। আর তা এত জঘন্য যে, তার অনুসারী ব্যক্তি মুসলিম মিল্লাত থেকে খারিজ হয়ে যায়।
তাছাড়া আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের সাধারণ অনুসারীদের এই মারাত্মক বিরোধ সম্পর্কে কোন জ্ঞান নেই; এমনকি সাধারণ শিয়াদের অধিকাংশই জানে না শিয়াদের ভ্রান্ত আকিদা সম্পর্কে। কারণ, শিয়া আলেমগণ যেসব মৌলিক গ্রন্থের উপর তাদের মাযহাব নির্ভরশীল, সেগুলো সাধারণ জনসমক্ষে প্রকাশ করে না।
এই জন্য আমরা পাকিস্তান আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত সংগঠনের সভাপতি সম্মানিত শাইখ মুহাম্মদ আবদুস সাত্তার আততুনসাবীকে অনুরোধ করেছি যাতে তিনি আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ বিরোধী গুরুত্বপূর্ণ শিয়া আকিদাসমূহ একটি সংক্ষিপ্ত পুস্তকে সংকলন করেন; যা হবে জনগণের জন্য জাফরীয়া শিয়াদের মতবাদের উপর একটি প্রামাণ্য দলিল এবং তাদের জন্য তার (জাফরীয়া শিয়াদের মতবাদের) ভ্রান্ত ও অসার দিকগুলো সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে।
আর তিনিও তাতে সাড়া দিয়েছেন (আল্লাহ তাঁকে এই জন্য উত্তম পুরস্কার দান করুন) এবং এই মূল্যবান সংক্ষিপ্ত পুস্তিকাটি রচনা করছেন।
আর সম্মানিত শাইখ মুহাম্মদ আবদুস সাত্তার আততুনসাবী দেওবন্দ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষাসনদ লাভ করেন। তাঁর ওস্তাদদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন আল্লামা শাইখুল ইসলাম হোসাইন আহমদ মাদানী, যিনি শিয়া আকিদার গুরুত্ব অনুভব করার পর তাঁকে লাখনু যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন, যাতে তিনি এই বিষয়ে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের ইমাম শাইখ আবদুস শুকুর লাখনুবী’র নিকট থেকে ফায়দা হাসিল করতে পারেন। অতঃপর তিনি ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে লাখনু গমন করেন এবং শিয়াদের যুক্তি খণ্ডনের উপর বিশেষ অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য শাইখ লাখনুবী’র নিকট কয়েক মাস অবস্থান করেন; তিনি তাঁর নিকট এই বিষয়ে প্রচুর অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। অতঃপর তিনি ভারত ও পাকিস্তান নামে দেশ বিভক্তির পর নাজাফ, কারবালা ও তেহরানে গমন করেন এবং শিয়াদের কেন্দ্রসমূহ যিয়ারত করেন এবং তাদের গ্রন্থসমূহ ও তথ্যপঞ্জি’র উপর দক্ষতা অর্জন করেন, যা তিনি লাখনুতে অর্জন করতে পারেন নি। অতঃপর তিনি তাঁর দেশ পাকিস্তানে ফিরে যান এবং ঐ দিন থেকেই তিনি “আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত সংগঠন”-এর মঞ্চে বসে এই ময়দানে সংগ্রাম করতে থাকেন। আর তাঁর হাতে হাজার হাজার শিয়া তাওবা করে; আর তাদের বড় বড় আলেমগণ তাঁর সাথে বিতর্ক করে এবং আল্লাহ ইচ্ছায় তিনি তাদেরকে পরাজিত করেন; এমনকি শেষ পর্যন্ত শিয়াগণ তাঁকে ভয় পেতে লাগল এবং তারা তাঁর সাথে বিতর্কে আর অগ্রসর হতে চাইত না।
আর এই পুস্তিকাটি আকারে ছোট, বিষয়বস্তুর ক্ষেত্রে মূল্যবান। আমরা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা’র নিকট প্রত্যাশা করি, তিনি যেন তা ভালভাবে গ্রহণ করেন এবং তাকে তাঁর বান্দাদের জন্য হেদায়াতের মাধ্যম বা উপায় বানিয়ে দেন।
وصلى الله على سيدنا محمد و آله و صحبه وسلّم تسليمًا
بسم الله الرحمن الرحيم
الحمد لله رب العالمين . و الصلاة و السلام على خاتم الأنبياء وسيد المرسلين وعلى آله الطيبين وأصحابه البررة المتقين وأزواجه أمهات المؤمنين والتابعين لهم بإحسان أجمعين .
(সমস্ত প্রশংসা সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহর জন্য; আর সালাত (দুরূদ) ও সালাম সর্বশেষ নবী ও রসূলদের নেতা (মুহাম্মদ) সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি এবং এবং শান্তি বর্ষিত হউক তাঁর পবিত্র পরিবার-পরিজন, পুণ্যবান তাকওয়ার অধিকারী সাহাবীবৃন্দ ও তাঁর স্ত্রী মুমিন জননীগণের প্রতি এবং অতি উত্তমভাবে তাঁদের সকল অনুসারীদের প্রতি) ।
অতঃপর:
এটা সংক্ষিপ্ত নিবেদন, যার দ্বারা আমি আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি কামনা করছি এবং (এটা) আমার মুসলিম ভাইদের জন্য উপদেশ, যাতে তা হতে পারে সত্যের সন্ধানী’র জন্য হেদায়াতের মশাল এবং সরল সঠিক পথের অনুসন্ধানকারীদের জন্য সুপথের দিশা দানকারী আলোকস্তম্ভ। হে আল্লাহ! আমাদেরকে সত্যকে সত্যরূপে দেখাও এবং আমাদেরকে তার অনুসরণ করার তাওফিক দান কর; আর বাতিলকে বাতিলরূপেই আমাদেরকে দেখাও এবং তার থেকে দূরে থাকার তাওফিক আমাদেরকে দাও।
“আর এই পথই আমার সরল পথ সুতরাং তোমরা এর অনুসরণ করবে এবং বিভিন্ন পথ অনুসরণ করবে না, করলে তা তোমাদেরকে তার পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করবে”। — (সূরা আল-আন‘আম: ১৫৩)
তিনি আরও বলেন:
﴿أَرَءَيۡتَ مَنِ ٱتَّخَذَ إِلَٰهَهُۥ هَوَىٰهُ﴾ [ سورة الفرقان : 43]
“তুমি কি তাকে দেখ না, যে তার কামনা-বাসনাকে ইলাহরূপে গ্রহণ করে”? — (সূরা আল-ফুরকান: ৪৩)
“যারা দীন সম্পর্কে নানা মতের সৃষ্টি করেছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে, তাদের কোন দায়িত্ব তোমার নয়”। — (সূরা আল-আন‘আম: ১৫৯)
আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
«تركت فيكم أمرين لن تضلوا ما تمسكتم بهما كتاب الله وسنة نبيه » ( أخرجه الإمام مالك في الموطأ ).
“আমি তোমাদের মাঝে দু’টি জিনিস রেখে যাচ্ছি; যা তোমরা আঁকড়ে ধরে রাখতে পারলে কখনও পথভ্রষ্ট হবে না; সেই বস্তু দু’টি হল: আল্লাহর কিতাব ও তাঁর নবীর সুন্নাহ।” — (ইমাম মালেক, মুয়াত্তা, মানাকিব অধ্যায়, হাদিস নং- ৩৭৮৬)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন:
«وتفترق أمتي على ثلاث وسبعين ملة كلهم في النار إلا ملة واحدة قالوا ومن هي يا رسول الله قال : ما أنا عليه وأصحابي » ( أخرجه الترمذي ).
“আর আমার উম্মত তিহাত্তর দলে বিভক্ত হবে; একটি দল ছাড়া বাকি সব ক’টি দলই জাহান্নামের অধিবাসী হবে। সাহবীগণ বললেন: হে আল্লাহর রাসূল! সেই দল করা? তিনি বললে: সেই দল হল যার উপর আমি এবং আমার সাহাবীগণ রয়েছে।” — (তিরমিযী, ঈমান, বাব নং- ১৯, হাদিস নং- ২৬৪১)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন:
«إذا رأيتم الذين يسبون أصحابي فقولوا لعنة الله على شركم» ( أخرجه الترمذي ).
“তোমরা যখন তাদেরকে দেখবে, যারা আমার সাহাবীদেরকে গালি দেয়, তখন তোমরা বলবে: তোমাদের নিকৃষ্টদের উপর আল্লাহর লানত (অভিশাপ)”। — (তিরমিযী, মানাকিব, হাদিস নং- ৩৮৬৬)
ইবনু ‘আসাকির বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
« إذا ظهرت البدعُ ولَعَنَ آخرُ هذه الأمةِ أولَها فمن كان عنده علم فلينشرْه فإنَّ كاتمَ العلمِ يومئذٍ ككاتمِ ما أنزل اللهُ على محمدٍ صلى الله عليه وسلم» ( ابن عساكر عن معاذ ).
“যখন বিদ‘আত প্রকাশ পাবে এবং এই উম্মতের পরবর্তীগণ পূর্ববর্তীদেরকে অভিশাপ দেবে, তখন যার নিকট জ্ঞান আছে, সে যেন তা প্রকাশ করে; কারণ, সেই দিন ইলম তথা জ্ঞান গোপনকারী হবে ঐ ব্যক্তির মত, যে ব্যক্তি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তা গোপন করে।” — (ইবনু ‘আসাকির মু‘আয রা. থেকে); আল্লামা সুয়ুতী র. ‘জামে সগীর’-এ অনুরূপ বর্ণনা করেছেন [তবে হাদীসটির সনদ দুর্বল। দেখুন, আলবানী:দয়িফুল জামে‘, হাদীস নং ৫৮৯ [সম্পাদক]]।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন:
“যখন উম্মতের পরবর্তীগণ পূর্ববর্তীদেরকে অভিশাপ দেবে, তখন যে ব্যক্তি হাদিস গোপন করবে, তবে সে যেন আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তা গোপন করল।” — (ইবন মাজাহ, ইফতিতাহুল কিতাব ফিল ঈমান..., বাব নং- ২৪, হাদিস নং- ২৬৩ [হাদীসটির সনদ অত্যন্ত দুর্বল। [সম্পাদক]])
এই কথা পরিষ্কার যে, এই যুগে ছড়িয়ে পড়েছে নাস্তিকতা, কুটিলতা, পাপাচার, বিদ‘আত, ইসলাম ও তার নিদর্শনসমূহের সমালোচনা এবং পূর্ববর্তী উম্মত তথা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবী ও তাবেয়ীদের নিন্দা; আরও ছড়িয়ে পড়েছে নানারকম ফিতনা বা বিশৃঙ্খলা। বাতিলপন্থীগণ তাদের ভ্রান্ত মতবাদ দ্বারা আল্লাহর বান্দাদেরকে বিপথগামী করতে শুরু করেছে এবং পরিবর্তন করে দিচ্ছে আল্লাহর দীনকে। আর ইসলামের নামে নির্লজ্জ ও মনুষত্বহীনভাবে আল্লাহর কিতাবকে পরিবর্তন করছে এবং সঠিক ইসলামী জীবনবিধানের নামে ছড়িয়ে দিচ্ছে অবিশ্বাস, নাস্তিকতা, অন্যায় ও অবিচার।
আর এই ফিতনাসমূহের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ও নিকৃষ্টতর দিক হল রাফেযী ও শিয়া ফিতনা; এর দ্বারা তারা আহলে বাইত তথা নবী পরিবার ও ইমামদের প্রতি ভালবাসার গান গেয়ে মূর্খ ও নির্বোধ লোকদেরকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আর তার অনুসারীগণ তা প্রচলন ও সম্প্রসারণের জন্য ভয়ানক পদ্ধতি অবলম্বন করেছে এবং তাদের এই উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য তারা সকল আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে শুরু করেছে এবং তার জন্য তারা সকল প্রকার মূল্যবান ও দামী বস্তু ব্যয় করছে; আর এর জন্য যাবতীয় ষড়যন্ত্র ও কুটবুদ্ধির অবতারণা করছে। হে আল্লাহ! আমরা তোমাকে তাদের ঘাঁড়ে রাখছি এবং তাদের অনিষ্ট থেকে তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
আর মুসলিম দা‘য়ী (আল্লাহর দিকে আহ্বানকারী), বক্তা, সংস্কারক ও সকল আলেমের উপর ওয়াজিব (আবশ্যক) হল এই নিকৃষ্ট ফিতনার আসল চেহারা উম্মোচন করে দেয়া এবং জনগণের নিকট তার বিপথগামীতা ও অসারতা তুলে ধরা, যাতে তারা তাদের ঈমান ও আকিদাকে হেফাযত করতে পারে।
হে ইসলামের অনুসারী আলেমগণ! হে মুসলিমদের প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ! আজকের দিনে অন্যতম আবশ্যক কাজ হল, তোমাদের সর্বশক্তি দিয়ে সত্যকে বিজয় করা, বাতিলকে বিতাড়িত করা এবং এই ফিতনাকে দূর করা। কেননা প্রাথমিকভাবে দায়িত্ব তো তোমাদের উপরই বর্তায়, সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আল্লাহকে আরও ভয় কর তোমাদের নিজেদের ব্যাপারে এবং ঐসব মুসলিমদের ব্যাপারে, বাতিল যাদের মধ্যে তার ফিতনার বিষ ছড়িয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে এবং যাদের মধ্যে বাতিল তার (তথাকথিত!) বিপ্লবের আমদানী ঘটিয়েছে। ফলে ঐসব সহজ সরল লোকদের আকিদাকে হক থেকে বাতিলে রূপান্তরিত করছে।
ওহে! আমি কি পৌঁছাতে পেরেছি.. হে আল্লাহ তুমি সাক্ষী থাক...।
প্রকাশ থাকে যে, শিয়া ফিতনার সূচনা হয়েছে ইসলাম ও মুসলিমের শত্রু আবদুল্লাহ ইবন সাবা ইহুদী ও তার অনুসারী যুরারা, আবূ বসীর, আবদুল্লাহ ইবন ই‘য়াফুর, আবূ মিখনাফ লূত ইবন ইয়াহইয়া প্রমুখ মিথ্যাবাদীদের চেষ্টা-সাধনার দ্বারা; তাদের সার্বিক প্রচেষ্টা হচ্ছে, যাতে তারা এর মাধ্যমে ইসলামের প্রকৃতরূপকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে এবং মুসলিমদের ঐক্যবদ্ধ সারিকে ভেঙ্গে টুকরা টুকরা করতে পারে ।
আর তারা এই শিয়া আকিদাসমূহকে তাদের পক্ষ থেকে মিথ্যা অপবাদের মাধ্যমে সম্পর্কিত করেছে আমাদের নেতা আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ও তাঁর পবিত্র পরিবার-পরিজনের প্রতি; অথচ তাঁরা সকলেই এর থেকে মুক্ত। কারণ, আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ও তাঁর পরিবার-পরিজন সকলেই ছিলেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের অন্তর্ভুক্ত।
আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এবং জাফর সাদিক পর্যন্ত তাঁর পরিবার-পরিজনের সকলেই মদীনা মুনাওয়ারায় ঈমান, ইসলাম, কিতাব ও সুন্নাহ’র পরিবেশে জীবনযাপন করেছেন। আর তাঁদের ইবাদত ও যাবতীয় আমল-আখলাক ছিল আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের অন্যান্য সকলের আমল-আখলাকের মত।
যখন জিজ্ঞাসা করা হয় যে, আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু ও তাঁর বংশধরগণ ছিলেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের অন্তর্ভুক্ত; তাঁরা আমল করতেন তাদের (আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের) আমলের মত ... এবং তাঁদের গোটা জীবন ছিল আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের জীবনের মত? তখন তারা জবাব দেয় যে, নিশ্চয় তাঁরা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের অনুসরণ করতেন ‘তাকিয়া’ ( التقية ) [‘তাকিয়া’ ( التقية ) হচ্ছে মানুষের মনের বিপরীত অভিমত প্রকাশ করা। অর্থাৎ ভিতর এক রকম, আর বাহির অন্য রকম। - অনুবাদক।] –এর পথ অনুসরণ করে। তারা রাত ও দিনের মধ্যে এক ঘন্টা বাছাই করে সেই সময়ের মধ্যে তাদের অনুসারীদের সাথে বসত এবং তাদেরকে শিয়া মাযহাবের তালীম (প্রশিক্ষণ) দিত। তাদের এই জওয়াব শুনে একজন বিবেকবান ও ন্যায়পরায়ণ মুসলিম ব্যক্তি হতভম্ব হয়ে যাওয়ার কথা। কারণ, যদি আমরা তাদের কথা মেনে নেই, তবে তার থেকে এটা আবশ্যক হয় যে, ইমামগণ রাতে ও দিনে তেইশ ঘন্টা (তাদের কথা অনুযায়ী) বাতিলের উপর এবং এক ঘন্টা হকের উপর জীবন যাপন করেছে। আর এটা আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ও তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর শিয়াদের পক্ষ থেকে ডাহা মিথ্যা অপবাদ ছাড়া আর কিছুই নয়। সুতরাং মিথ্যাবাদীদের উপর আল্লাহর লানত (অভিশাপ)।
আমরা প্রথমে মোটামুটিভাবে তাদের কতগুলো ভ্রান্ত আকিদা লিপিবদ্ধ করব, অতঃপর তাদের নিকট নির্ভরযোগ্য তাদের গ্রন্থসমূহ ও তথ্যপঞ্জি থেকে রেফারেন্সসহ (তথ্যসূত্র উল্লেখ করে) বিস্তারিত আলোচনা করব; যাতে স্পষ্ট হয়ে যায় তাদের কর্মপদ্ধতি এবং জানা যায় তাদের পথভ্রষ্টতা ও গোমরাহী সম্পর্কে।
১. ইহুদী, খ্রিষ্টান ও সকল মুশরিকদের মত আল্লাহর সাথে শির্কের আকিদা (বিশ্বাস) পোষণ করা। (নাউযুবিল্লাহ)।
২. البداء - “বাদা [অর্থাৎ অপ্রকাশিত কোন কিছু প্রকাশ পাওয়া, অজানা কিছু নতুন করে জানা। [সম্পাদক]]” এর আকিদা পোষণ করা, যা আল্লাহ তা‘আলার প্রতি অজ্ঞতার সম্পর্ককে আবশ্যক করে তোলে।
৩. বার ইমামের নিষ্পাপ হওয়ার আকিদা পোষণ করা; যা সর্বশেষ নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খতমে নবুওয়তের আকিদার পরিপন্থী।
৪. ‘কুরআন বিকৃত ও পরিবর্তিত অবস্থায় মওজুদ রয়েছে এবং তাতে বেশি ও কম করা হয়েছে’ — এমন আকিদা বিশ্বাস পোষণ করা। (নাউযুবিল্লাহ); আর এটা তাদের নোংরা ও নিকৃষ্ট আকিদাসমূহের অন্যতম, যা তাদেরকে ইসলাম থেকে খারিজ করে দেয়া আবশ্যক করে তোলে।
৫. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং আলী, হাসান ও হোসাইন রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম-দের অসম্মান করার আকিদা।
৬. মুমিন জননী, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুন্না-দের অসম্মান করার আকিদা।
৭. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কন্যা, বিশেষ করে নারীদের নেত্রী ফাতিমা যোহরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুন্না-দের অসম্মান করার আকিদা।
৮. আব্বাস, ইবনু আব্বাস ও ‘আকিল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম-দের অপমান করার আকিদা।
৯. খোলাফায়ে রাশেদীন, মুহাজির ও আনসার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম-দের অপমান করার আকিদা।
১০. আহলে বাইত রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম তথা নবী পরিবার-পরিজনের মধ্যকার ইমামদের অপমান করার আকিদা।
১১. ‘তাকিয়া’ ( التقية ) –এর আকিদা।
১২. মুত‘আ বিয়ের (সাময়িক বিয়ে) আকিদা।
১৩. মহিলাদের যৌনাঙ্গ ধার করার (বেশ্যাবৃত্তি) বৈধতার আকিদা।
১৪. নারীদের সাথে সমকামিতা বৈধতার আকিদা।
১৫. রাজ‘আ ( الرجعة ) বা পুনর্জন্মের আকিদা।
১৬. মৃত্তিকার আকিদা।
১৭. হোসাইনের শাহাদাতের স্মরণে মাতম, বক্ষ বিদীর্ণকরণ ও গালে আঘাত করার মধ্যে সাওয়াব প্রত্যাশার আকিদা; যা বিপদে ধৈর্য অবলম্বন করার ইসলামী আকিদা বিশ্বাসের পরিপন্থী।
মুহাম্মদ আবদুস সাত্তার আততুনসাবী
দারুল উলুমুল আরাবিয়্যা আল-ইসলামিয়্যাহ
হুলকম্ব, বরী, ব্রিটেন
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/705/2
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।