hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শিয়া আকিদার অসারতা

লেখকঃ শাইখ মুহাম্মদ আবদুস সাত্তার আত-তুনসাবী

দ্বাদশ ইমাম নিষ্পাপ:
মুহাম্মদ ইবন ইয়াকুব আল-কুলাইনী তার ‘উসুলুল কাফী’ গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখ করেছেন:

আবূ আবদিল্লাহ আ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আলী আ. যা কিছু নিয়ে এসেছেন, তা তিনি গ্রহণ করব এবং যা থেকে নিষেধ করেছেন, তা থেকে তিনি বিরত থাকব। তিনি (আলী) মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মত মর্যাদাসম্পন্ন। আর মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মর্যাদা আল্লাহর সকল সৃষ্টির উপর স্বীকৃত। কেউ আলীর কথার উপর কথা বলা যেন আল্লাহ ও তার রাসূলের উপর কথা বলা। আর আলীর কোন কথার বিরুদ্ধাচারণ করা আল্লাহর সাথে শির্ক করার পর্যায়ে।...... অনুরূপভাবে এ বিধান বহাল থাকবে ক্রমান্বয়ে আগত হেদায়াতের ইমামদের বেলায়ও [অর্থাৎ আলীর জন্য যা সাব্যস্ত করা হলো তা শুধু তার সাথেই বিশেষিত নয়; বরং তাদের অন্যান্য ইমামদের ক্ষেত্রেও তা সমভাবে প্রযোজ্য। সুতরাং তাদের মর্যাদাও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মর্যাদার অনুরূপ, কেউ তাদের উপর কথা বলার অর্থ আল্লাহ ও তার রাসূলের উপর কথা বলা, কেউ তাদের বর্ণিত ছোট বড় যে কোন বিধানের বিরোধিতা করার অর্থ আল্লাহর সাথে শির্কের নামান্তর। নাউযুবিল্লাহ কিভাবে তারা তাদের ইমামদেরকে আল্লাহর সমকক্ষ নির্ধারণ করে নিয়েছে!!!! [সম্পাদক]]; আল্লাহ তাদেরকে যমিনের খুঁটি বানিয়েছেন, যাতে যমিন তার অধিবাসীদের নিয়ে স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং যমিনের উপরে ও নীচে যারা আছেন, তাদের জন্য তাঁর পরিপূর্ণ দলিল বানিয়েছেন। আর আমীরুল মুমিনীন আ. বেশি বেশি বলতেন: জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যে আমি আল্লাহর বণ্টনকারী; আমি সত্য-মিথ্যার বড় পার্থক্যকারী; আমি লাঠি ও লৌহযন্ত্রের অধিকারী। আর আমাকে স্বীকৃতি দিয়েছে সকল ফেরেশতা, জিবরাঈল এবং রাসূলগণ, যেমনিভাবে তারা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। আর আমি তার (দায়িত্বের) বোঝার মতই বোঝা বহন করেছি; আর সেই বোঝাটি হল রব তথা প্রতিপালকের বোঝা। [উসুলুল কাফী ( أصول الكافي ), হুজ্জত অধ্যায়, পৃ. ১১৭]

কুলাইনী আরও উল্লেখ করেন, ইমাম জাফর সাদিক বলেন: আমরা আল্লাহর জ্ঞানভাণ্ডার; আমরা আল্লাহর আদেশের ব্যাখ্যা; আমরা নিষ্পাপ জাতি। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের আনুগত্য করতে নির্দেশ দিয়েছেন এবং আমাদের বিরুদ্ধাচরণ করতে নিষেধ করেছেন। আমরা আসমানের নীচে এবং যমিনের উপরে আল্লাহর পরিপূর্ণ দলিল। [উসুলুল কাফী ( أصول الكافي ), পৃ. ১৬৫]

কুলাইনী আরও উল্লেখ করেন যে, আমি আবূ আবদিল্লাহ আ.-কে বলতে শুনেছি: ইমামগণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সমান মর্যাদা সম্পন্ন; কিন্তু তারা নবী নন। আর তাদের জন্য বেশী নারী বিয়ে করা বৈধ নয়, যেমনিভাবে নবীর জন্য বৈধ ছিল। সুতরাং এটা ছাড়া তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সমান মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব। [উসুলুল কাফী ( أصول الكافي )]

কুলাইনী " باب ما نص الله عز و جل و رسوله على الأئمة عليهم السلام واحدا فواحدا " (এক এক করে ইমাম আ.-দের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূলের বক্তব্যের অধ্যায়)-এ উল্লেখ করেন: আল্লাহ তা‘আলার বাণী:

﴿ ٱلنَّبِيُّ أَوۡلَىٰ بِٱلۡمُؤۡمِنِينَ مِنۡ أَنفُسِهِمۡۖ وَأَزۡوَٰجُهُۥٓ أُمَّهَٰتُهُمۡۗ وَأُوْلُواْ ٱلۡأَرۡحَامِ بَعۡضُهُمۡ أَوۡلَىٰ بِبَعۡضٖ فِي كِتَٰبِ ٱللَّهِ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ وَٱلۡمُهَٰجِرِينَ﴾ [ سورةالأحزاب :6]

“নবী মুমিনদের নিকট তাদের নিজেদের অপেক্ষা ঘনিষ্ঠতর এবং তার স্ত্রীগণ তাদের মাতা। আল্লাহর বিধান অনুসারে মুমিন ও মুহাজির অপেক্ষা— যারা আত্মীয় তারা পরস্পরের নিকটতর।” — (সূরা আল-আহযাব: ৬); —প্রসঙ্গে আবূ জাফর আ. থেকে বর্ণিত যে, জিজ্ঞাসা করা হল, কাদের ব্যাপারে এই আয়াত নাযিল হয়েছে? তখন তিনি বললেন: এই আয়াত নাযিল হয়েছে আমীর বা ইমামদের ব্যাপারে; এই আয়াতটি হোসাইন আ.-এর পরে তার সন্তানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। সুতরাং আমরা ইমামত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর পরিবার-পরিজনের ব্যাপারে মুমিন, মুহাজির ও আনসারদের চেয়ে ঘনিষ্ঠতর। আমি বললাম, এর মধ্যে জাফরের সন্তানদের [উদ্দেশ্য, আপনাদের মত জা‘ফর তাইয়ার ও তার বংশধরদের জন্য কোন বৈশিষ্ট্য আছে কি ? কারণ জা‘ফর তো আলী রা. এর ভাই আর তার সন্তানরাও আলী রা. এরই ভ্রাতুষ্পুত্র।] কোন অংশ আছে কি? [অর্থাৎ তারা কি ইমাম হওয়ার যোগ্য? তাদের বংশধরদের কেউ কি ইমাম হওয়ার দাবী করতে পারে?] তিনি বললেন: না; অতঃপর আমি বললাম: এর মধ্যে আব্বাসের সন্তানদের কোন অংশ আছে কি? তিনি বললেন: না; অতঃপর আমি বনী আবদুল মুত্তালিবের মধ্যকার একজন একজন করে তার নিকট জিজ্ঞাসা করলাম, এর মধ্যে তাদের কোন অংশ আছে কিনা? তিনি প্রত্যেকের ব্যাপারে না বললেন। আর আমি হাসান আ.-এর সন্তানের কথা ভুলে গেছি; অতঃপর তার নিকট আবার হাজির হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম: হাসানের সন্তানের জন্য এর মধ্যে কোন অংশ আছে কি? তিনি বললেন: না [হাসানের বংশধরদের কেউ শিয়াদের নিকট ইমাম নয়। এর কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা তারা দিতে পারবে না। তবে সম্ভবত এটা এজন্যে যে, হাসান পারস্য রাজকুমারী বিয়ে করেন নি, যেমনটি হুসাইন করেছিলেন !!!। [সম্পাদক]], আল্লাহর শপথ করে বলছি হে আবদুর রহীম! এর মধ্যে আমরা ব্যতীত কোন মুহাম্মদী’র জন্য কোন অংশ নেই। [উসুলুল কাফী ( أصول الكافي ), পৃ. ১৭৭]

ইমামদের আনুগত্য ফরয হওয়ার অধ্যায় [আল-কুলাইনি, উসুলুল কাফী [সম্পাদক]]:

আবূ সাবাহ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি আবূ আবদিল্লাহ আ.-কে বলতে শুনেছি: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আলী ইমাম; আল্লাহ তার আনুগত্য করাকে ফরয করে দিয়েছেন। আর নিশ্চয় হাসান ইমাম; আল্লাহ তার আনুগত্য করাকে ফরয করে দিয়েছেন এবং হোসাইনও ইমাম; আল্লাহ তার আনুগত্য করাকে ফরয করে দিয়েছেন। আর আলী ইবন হোসাইন ইমাম; আল্লাহ তার আনুগত্য করাকে ফরয করে দিয়েছেন এবং মুহাম্মদ ইবন আলীও ইমাম; আল্লাহ তার আনুগত্য করাকে ফরয করে দিয়েছেন। [উসুলুল কাফী ( أصول الكافي ), পৃ. ১০৯]

কুলাইনী আরও উল্লেখ করেন, ইমাম মুহাম্মদ বাকের বলেন: আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে কদরের রাতসমূহে নবী এবং অসী [শিয়ারা নবীর জন্য অসী থাকতে হবে বলে মিথ্যা বিশ্বাস ও মত চালু করেছে। সেজন্য তারা প্রত্যেক নবীর জন্য অসী নির্ধারণ করে থাকে। অর্থাৎ তাদের মতে, নবী অবশ্যই তার মৃত্যুর পরে তার মিশন বাস্তবায়ণ করার জন্য একজনকে অসিয়ত করে যাবেন, তাকে বলা হবে, অসী। তাদের এসব পুরেপুরিই মিথ্যাচার [সম্পাদক]]দের নিকট নির্দেশ আসত যে, এটা কর; আর এই নির্দেশটি তারা ভালভাবেই শিখেছিল, কিভাবে তারা তা কার্যে পরিণত করবে। [উসুলুল কাফী ( أصول الكافي ), পৃ. ১৫৪]

শিয়াগণ তাদের নিজেদের মনগড়া মতে ইমামতের (নেতৃত্বের) অর্থ আবিষ্কার করেছে; এমনকি তারা ইমামকে আল্লাহর নবীদের মত নিষ্পাপ মনে করে এবং তারা তাকে অদৃশ্যজগতের জ্ঞানের অধিকারী মনে করে। আর তারা তাদের এই লক্ষ্যকে বাস্তবায়নের জন্য অসংখ্য মিথ্যা ও বানোয়াট বর্ণনা উপস্থাপন করে। অথচ বাস্তব ও সত্য কথা হচ্ছে, অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব। আর এই শব্দটি মুমিন ও কাফির উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। যেমন আল্লাহ তা‘আলার বাণী:

﴿ إِنِّي جَاعِلُكَ لِلنَّاسِ إِمَامٗا﴾ [ سورة البقرة : 124]

“আমি তোমাকে মানবজাতির নেতা বানাচ্ছি” —(সূরা আল-বাকারা: ১২৪)

﴿رَبَّنَا هَبۡ لَنَا مِنۡ أَزۡوَٰجِنَا وَذُرِّيَّٰتِنَا قُرَّةَ أَعۡيُنٖ وَٱجۡعَلۡنَا لِلۡمُتَّقِينَ إِمَامًا ٧٤ ﴾ [ سورة الفرقان : 74]

“হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের জন্য এমন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান কর, যারা হবে আমাদের জন্য নয়নপ্রীতিকর এবং আমাদেরকে কর মুত্তাকীদের জন্য অনুসরণযোগ্য” — (সূরা আল-ফুরকান: ৭৪)

আর কাফিরের ক্ষেত্রে ‘ইমাম’ শব্দের ব্যবহারে যেমন আল্লাহ তা‘আলার বাণী:

﴿ فَقَٰتِلُوٓاْ أَئِمَّةَ ٱلۡكُفۡرِ ﴾ [ سورة التوبة : 12]

“তবে কাফিরদের প্রধানদের সাথে যুদ্ধ কর” — (সূরা আত-তাওবা: ১২)

﴿وَجَعَلۡنَٰهُمۡ أَئِمَّةٗ يَدۡعُونَ إِلَى ٱلنَّارِ﴾ [ سورة القصص : 41]

“আর আমি তাদেরেকে নেতা বানিয়েছিলাম; তারা জনগণকে জাহান্নামের দিকে আহ্বান করত”। — (সূরা আল-কাসাস: ৪১)

সুতরাং এই ইমাম শব্দটি নিষ্পাপ হওয়া, অদৃশ্যজগতের জ্ঞান রাখা এবং বিভিন্ন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা থাকতে হবে এমনটি দাবি করে না। আর তাদের নিকট শরীয়তের এমন কোন প্রমাণ নেই, যার দ্বারা তারা ইমামের জন্য যেসব গুণাবলী নির্ধারণ করেছে, তা প্রমাণ করতে পারে। তবে হ্যাঁ, আল্লাহর কিতাব চারটি স্তর বিন্যাস করেছে; যেমন আল্লাহ তা‘আলার বাণী:

﴿ وَمَن يُطِعِ ٱللَّهَ وَٱلرَّسُولَ فَأُوْلَٰٓئِكَ مَعَ ٱلَّذِينَ أَنۡعَمَ ٱللَّهُ عَلَيۡهِم مِّنَ ٱلنَّبِيِّ‍ۧنَ وَٱلصِّدِّيقِينَ وَٱلشُّهَدَآءِ وَٱلصَّٰلِحِينَۚ وَحَسُنَ أُوْلَٰٓئِكَ رَفِيقٗا ٦٩﴾ [ سورة النساء : 69]

“আর কেউ আল্লাহ এবং রাসূলের আনুগত্য করলে সে নবী, সত্যনিষ্ঠ, শহীদ ও সৎকর্মপরায়ণ— যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন— তাদের সঙ্গী হবে এবং তারা কত উত্তম সঙ্গী!” — (সূরা আন-নিসা: ৬৯)

সুতরাং এই চার স্তরের মধ্যে ইমামতের পদ নেই, যা শিয়াগণ আবিষ্কার করেছে এবং তাদের মাযহাবের ভিত্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। অথচ আলী ও তাঁর পরিবার-পরিজন রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম (তার আনুগত্য করা ফরয অথবা সে নিষ্পাপ) এই অর্থে ইমাম হওয়ার তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। কারণ, ওসমান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু’র শাহাদাতের পর যখন জনগণ আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু’র হাতে আনুগত্যের শপথ নিতে চাইল এবং তারা বলল, আপনি আপনার হাত প্রসারিত করুন, আমরা আপনার নিকট আপনার খেলাফতের অধীনে থাকার জন্য আনুগত্যের শপথ গ্রহণ করব; তখন তিনি বললেন: তোমরা আমাকে মাফ কর (মুক্তি দাও) এবং আমি ভিন্ন অন্য একজনকে খোঁজ করে বের কর; আর তোমরা যদি আমাকে রুখসত দাও, তবে আমি তোমাদের মত একজন হব এবং তোমরা যাকে তোমাদের শাসনক্ষমতা দান করবে, আমি আলী তোমাদের চেয়ে বেশি তার কথা শুনব এবং তার আনুগত্য করব; আর আমার চেয়ে তোমাদের ভাল আমীরের জন্য আমি হব উত্তম সাহায্যকারী। [নাহজুল বালাগাহ ( نهج البلاغة ), প্রথম খণ্ড, পৃ. ১৮৩]

আর এই বক্তব্যটি নাহজুল বালাগাহ ( نهج البلاغة )-এর মধ্যে উদ্ধৃত; আর এই গ্রন্থটি শিয়াদের গ্রন্থসমূহের মধ্যে অন্যতম, যার উপর তারা নির্ভর করে থাকে।(?)

সুতরাং তার ইমামত (নেতৃত্ব) যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত হত, তা হলে তিনি এই ধরনের ওযর পেশ করতেন না। কারণ, আল্লাহর পক্ষ থেকে ইমামতের দায়িত্ব নির্ধারণ করে দেয়া হলে [যেমনটি শিয়ারা দাবী করে থাকে। [সম্পাদক]] তার আনুগত্য করা ইমাম ও প্রজাসাধারণ সবার উপরই ওয়াজিব। অনুরূপভাবে হাসান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তাঁর ইমামত (নেতৃত্ব)-কে মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু’র নিকট অর্পণ করেছেন এবং তাঁর হাতে আনুগত্যের শপথ করেছেন। অনুরূপভাবে হোসাইন রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুও মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু’র হাতে আনুগত্যের শপথ করেছেন। [মা‘রেফাতু আখবারির রিজাল ( معرفة أخبار الرجال ), (রিজালু কাশী) পৃ.৭২।]

সুতরাং হাসান ও হোসাইন রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা যদি আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে নির্দেশনার দ্বারা ইমাম হতেন, তবে তাঁরা মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু’র হাতে আনুগত্যের শপথ করতেন না এবং তাঁর নিকট ক্ষমতার বিষয়টি অর্পণ করতেন না।

আর খলীফা মামুনুর রশিদ আলী রেযা র.-কে বলেন: আমি চাই আমি নিজেকে খেলাফতের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নিব এবং সে পদে আপনাকে নিয়োগ দিব; আর আমি আপনার নিকট আনুগত্যের শপথ নিব। তখন তিনি বললেন, আমি স্বেচ্ছায় কখনও এই কাজ করব না।

সুতরাং এটাও প্রমাণ করে যে, ইমাম আলী রেযা র. ইমামত তথা নেতৃত্ব গ্রহণ করেন নি। অতএব, ইমামত (আল্লাহর পক্ষ থেকে) নির্দেশিত কোন ফরয বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত নয়, যার কারণে রাফেযী ও শিয়াগণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীগণকে কাফির বলে আখ্যায়িত করেছে; যে বিষয়ে অচিরেই আলোচনা আসছে ইনশাআল্লাহ।

আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যেসব গুণাবলী আমরা বিশ্বাস করে থাকি, সেগুলো আল-কুরআন ও হাদিসে নববীর বক্তব্য দ্বারা প্রমাণিত; সুতরাং আল-কুরআন সুস্পষ্ট ভাষায় বলে:

﴿ وَمَآ أَرۡسَلۡنَٰكَ إِلَّا رَحۡمَةٗ لِّلۡعَٰلَمِينَ ١٠٧ ﴾ [ سورة الأنبياء : 107]

“আমি তো তোমাকে বিশ্বজগতের প্রতি কেবল রহমতরূপেই প্রেরণ করেছি।” — (সূরা আল-আম্বিয়া: ১০৭)

﴿ وَمَآ أَرۡسَلۡنَٰكَ إِلَّا كَآفَّةٗ لِّلنَّاسِ بَشِيرٗا وَنَذِيرٗا ﴾ [ سورة سبا : 28]

“আমি তো তোমাকে সমগ্র মানবজাতির প্রতি সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করেছি।” — (সূরা সাবা: ২৮)

﴿ قُلۡ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ إِنِّي رَسُولُ ٱللَّهِ إِلَيۡكُمۡ جَمِيعًا ﴾ [ سورة الأعراف : 158]

“বল, হে মানুষ! আমি তোমাদের সকলের জন্য আল্লাহর রাসূল”। — (সূরা আল-আ‘রাফ: ১৫৮)

﴿ تَبَارَكَ ٱلَّذِي نَزَّلَ ٱلۡفُرۡقَانَ عَلَىٰ عَبۡدِهِۦ لِيَكُونَ لِلۡعَٰلَمِينَ نَذِيرًا ١﴾ [ سورة الفرقان : 1]

“কত বরকতময় তিনি, যিনি তাঁর বান্দার প্রতি ফুরকান অবতীর্ণ করেছেন; যাতে সে সৃষ্টিকুলের জন্য সতর্ককারী হতে পারে”। — (সূরা আল-ফুরকান: ১৫৮)

﴿ فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤۡمِنُونَ حَتَّىٰ يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيۡنَهُمۡ ثُمَّ لَا يَجِدُواْ فِيٓ أَنفُسِهِمۡ حَرَجٗا مِّمَّا قَضَيۡتَ وَيُسَلِّمُواْ تَسۡلِيمٗا ٦٥﴾ [ سورة النساء : 65]

“কিন্তু না, তোমার প্রতিপালকের শপথ! তারা মুমিন হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তারা তাদের নিজেদের বিবাদ-বিসম্বাদের বিচার ভার তোমার উপর অর্পণ না করে; অতঃপর তোমার সিদ্ধান্ত সম্বন্ধে তাদের মনে কোন দ্বিধা না থাকে এবং সর্বান্তঃকরণে তা মেনে না নেয়”। — (সূরা আন-নিসা: ৬৫)

﴿ وَمَآ ءَاتَىٰكُمُ ٱلرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَىٰكُمۡ عَنۡهُ فَٱنتَهُواْ ﴾ [ سورة الحشر : 7]

“রাসূল তোমাদেরকে যা দেয়, তা তোমরা গ্রহণ কর এবং যা থেকে তোমাদেরকে নিষেধ করে, তা থেকে তোমরা বিরত থাক”। — (সূরা আল-হাশর: ৭)

﴿ قُلۡ إِن كُنتُمۡ تُحِبُّونَ ٱللَّهَ فَٱتَّبِعُونِي يُحۡبِبۡكُمُ ٱللَّهُ ﴾ [ سورة آل عمران : 31]

“বল, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালবাস, তবে আমাকে অনুসরণ কর, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন”। — (সূরা আলে ইমরান: ৩১)

﴿ مَّن يُطِعِ ٱلرَّسُولَ فَقَدۡ أَطَاعَ ٱللَّهَ﴾ [ سورة النساء : 80]

“কেউ রাসূলের আনুগত্য করলে সে তো আল্লাহরই আনুগত্য করল”। — (সূরা আন-নিসা: ৮০)

﴿ وَمَن يُشَاقِقِ ٱلرَّسُولَ مِنۢ بَعۡدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ ٱلۡهُدَىٰ وَيَتَّبِعۡ غَيۡرَ سَبِيلِ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ نُوَلِّهِۦ مَا تَوَلَّىٰ وَنُصۡلِهِۦ جَهَنَّمَۖ وَسَآءَتۡ مَصِيرًا ١١٥ ﴾ [ سورة النساء : 115]

“কারো নিকট সৎপথ প্রকাশ হওয়ার পর সে যদি রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং মুমিনদের পথ ব্যতীত অন্য পথ অনুসরণ করে, তবে যে দিকে সে ফিরে যায় সে দিকেই তাকে ফিরায়ে দেব এবং জাহান্নামে তাকে দগ্ধ করব; আর তা কত মন্দ আবাস!” — (সূরা আন-নিসা: ১১৫)

আর ইমামগণ ঐক্যমত পোষণ করেছেন যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি এবং তাদের মধ্যে সব চেয়ে বেশি সম্মানিত। আর তাঁর রয়েছে সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ স্থান; যাঁর গুণাবলী ও মান-মর্যাদার ধারে কাছেও কোন সৃষ্টি পৌঁছাতে পারবে না; আর তিনি হলেন নিষ্পাপ, অনুসরণীয় এবং সর্বশেষ নবী। আর তাঁর খলিফাগণ তাঁর যথাযথ আনুগত্য করেছেন এবং অনুকরণ করেছেন তাঁর পদাঙ্ক। আর তাঁরা ছোট ও বড় প্রতিটি বিষয়ে তাঁর অনুসরণ করতেন। আর তাঁরা ছিলেন তাকওয়ার অনুসারী এবং মহান মর্যাদার অধিকারী; কিন্তু তাঁরা নিজেদেরকে নিষ্পাপ হওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর শরিক মনে করতেন না এবং মর্যাদা ও কামালিয়াতের (পরিপূর্ণতার) ক্ষেত্রে তাঁকে নিজেদের সমান মনে করতেন না; যেমনিভাবে শিয়াগণ তাদের ইমামদের ব্যাপারে মিথ্যারোপ করে থাকে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন