hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কুরআন ও সুন্নাহ’র আলোকে রাতের সালাত

লেখকঃ ড. সাঈদ ইবন আলী ইবন ওয়াহফ আল-কাহতানী

১৪
দ্বিতীয় অধ্যায়: তারাবীর সালাত
১. তারাবীর অর্থ: তারাবীকে তারাবী বলার কারণ, তারা সালাতে তারাবীর প্রত্যেক চার রাকাত পর আরাম করত। [‘আল-কামুসুল মুহিত’: বাবুল হা, ফাসলুর রা: (পৃ. ২৮২), ‘লিসানুল আরব’ লি ইবন মানযুর, বাবুল হা, ফাসলুর রা: (২/৪৬২)।] তারাবীর আভিধানিত অর্থ বিশ্রাম নেয়া ও আরাম করা।

তারাবি: অর্থাৎ রমযান মাসে প্রথম রাতে কিয়াম করা। [দেখুন: মাজমু ফাতওয়াল ইমাম আব্দুল আযীয ইবন আব্দুল্লাহ ইবন বায রহ.।] প্রবাদে বলা হয়আয়াত: الترويحة في شهر رمضان ‘রমযান মাসের বিশ্রাম’। কারণ, তারা প্রত্যেক দুই সালামের পর বিশ্রাম নিত। এর প্রমাণ আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার হাদীস, তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল: রমযানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সালাত কিরূপ ছিল? তিনি বললেন: রমযান ও রমযান ভিন্ন অন্য মাসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এগারো রাকাতের অধিক পড়তেন না: তিনি চার রাকাত সালাত আদায় করতেন, তার সৌন্দর্য ও দীর্ঘ সম্পর্কে কি বলব! অতঃপর তিনি চার রাকাত পড়তেন, তার সৌন্দর্য ও দীর্ঘ সম্পর্কে কি বলব! অতঃপর তিনি তিন রাকাত পড়তেন...”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১১৪৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৩৮।] এখানে “তিনি চার রাকাত পড়তেন... অতঃপর চার রাকাত পড়তেন...”। তার কথা প্রমাণ করে: প্রথম চার রাকাত ও দ্বিতীয় চার রাকাত এবং শেষের তিন রাকাতের মধ্যবর্তী বিরতি ছিল। চার রাকাত সালাতে প্রত্যেক দু’রাকাত পর সালাম ফিরাতেন। [দেখুন: শারহুল মুমতি লিল আল্লামা ইবন উসাইমীন: (৪/৬৬)।] কারণ, আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকেই বর্ণিত, তিনি বলেছেন: “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে এগারো রাকাত সালাত আদায় করতেন, এক রাকাত দ্বারা তিনি বিতর আদায় করতেন”। মুসলিমের বর্ণিত শব্দ হচ্ছে: “প্রত্যেক দু’রাকাত পর সালাম ফিরাতেন ও এক রাকাত দ্বারা বিতর আদায় করতেন” [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৩৬)] এ হাদীস পূর্বের হাদীসের ব্যাখ্যা প্রদান করে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক দু’রাকাত পর সালাম ফিরাতেন। অধিকন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«صلاة الليل مثنى مثنى» .

“রাতের সালাত দু’রাকাত দু’রাকাত”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৯০; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৪৯)]

২. সালাতে তারাবী সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের বাণী ও কর্ম দ্বারা এর অনুমোদন দিয়েছেন। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রমযানে কিয়ামের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে উৎসাহ প্রদান করতেন, তাদের ওপর অবশ্য জরুরি করতেন না। তিনি বলতেন:

«من قام رمضان إيماناً واحتساباً غُفِر له ما تقدَّم من ذنبه»

“ইমান ও সাওয়াবের নিয়তে যে রমযানে কিয়াম করল, তার পূর্বের গুনা মাপ করে দেওয়া হবে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৫৯)] ইমাম নববী রহ. বলেছেন: “রমযানের কিয়াম মুস্তাহাব, এ ব্যাপারে সকল আলেম একমত”। [শারহুন নববী আলা সহিহে সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬/২৮৬)] অতএব, তারাবীর সালাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা এতে কারো দ্বিমত নেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কথা ও কাজের দ্বারা এর সূচনা করেছেন। [দেখুন: ‘আল-মুগনি’ লি ইবন কুদামাহ: (২/৬০১)।]

৩. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী দ্বারা তারাবীর ফযীলত প্রমাণিত হয় আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«من قام رمضان إيماناً واحتساباً غُفر له ما تقدم من ذنبه» .

“ইমান ও সাওয়াবের নিয়তে যে কিয়াম করল, তার পূর্বের পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হবে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৫৯।] মুসলিম যদি এ বিশ্বাস নিয়ে তারাবীর সালাত আদায় করে যে, এটা আল্লাহর শরী‘আত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনিত দ্বীন, যা তিনি বাণী ও আমলের দ্বারা বাস্তবায়ন করেছেন এবং তার উদ্দেশ্য হয় আল্লাহকে পাওয়া, তার সাওয়াব, মাগফেরাত ও সন্তুষ্টি অর্জন করা, তাহলে সে এ মর্যাদা লাভ করবে। [দেখুন: শারহুন নববী আলা সহীহে মুসলিম: (৬/২৮৬), ফাতহুল বারি লি ইবন হাজার: (১/৯২), নাইলুল আওতার লিশ শাওকানি: (২/২৩৩)।]

৪. সালাতে তারাবী জামা‘আতের সাথে আদায় করা, রমযানে কিয়াম করা ও চলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ইমামের সাথে থাকার ফযীলত: আবু যর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে আমরা রমযানে সিয়াম পালন করেছি, তিনি আমাদের সাথে কিয়াম করেননি, যখন রমযানের মাত্র সাত দিন বাকি, তিনি আমাদের সাথে দীর্ঘ কিয়াম করলেন যে, রাতের এক তৃতীয়াংশ চলে গেল। ষষ্ঠ রাতে তিনি আমাদের সাথে কিয়াম করলেন না, পঞ্চম রাতে তিনি আমাদের সাথে এত দীর্ঘ কিয়াম করলেন যে, রাতের অর্ধেক চলে গেল, আমরা বললাম: হে আল্লাহর রাসূল, যদি এ রাতের বাকি অংশও আমাদের নিয়ে নফল আদায় করতেন? অতঃপর তিনি বললেন:

«إنه من قام مع الإمام حتى ينصرف، كتب الله له قيام ليلة»

“যে ইমামের সাথে কিয়াম করবে, তার চলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত, আল্লাহ তার জন্য পুরো রাতের কিয়াম লিখবেন”। অপর শব্দে এসেছে: “তার জন্য পুরো রাতের কিয়াম লেখা হয়”। যখন চতুর্থ রাত অবশিষ্ট রইল তিনি আমাদের সাথে কিয়াম করলেন না, যখন তৃতীয় রাত উপস্থিত হল, তিনি তার পরিবার, নারী ও লোকদের জমা করলেন, অতঃপর তিনি আমাদের সাথে এত দীর্ঘ কিয়াম করলেন যে, আমরা আশঙ্কা করছিলাম আমাদের থেকে ফালাহ ছুটে যাবে। তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম: ফালাহ কী? তিনি বললেন: সাহরী অতঃপর মাসের অবশিষ্ট রাতগুলোতে আমাদের নিয়ে কিয়াম করেন নি”। [আহমদ: (৫/১৫৯); আবু দাউদ, হাদীস নং ১৩৭৫; নাসাঈ, হাদীস নং ১৬০৫; তিরমিযী, হাদীস নং ৮০৬; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১৩২৭, আলবানী সহীহ সুনান নাসাঈ: (১/৩৫৩) ও অন্যান্য গ্রন্থে হাদীসটি সহীহ বলেছেন।]

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো এক রাতের মধ্যভাগে বের হন, অতঃপর মসজিদে সালাত আদায় করেন কতক লোক তার সাথে সালাত আদায় করল। মানুষেরা এ ঘটনা বলাবলি করতে লাগল, ফলে তার চেয়ে অধিক লোক জমা হল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্বিতীয় রাতে তাদের নিকট গেলেন, তারা তার সাথে সালাত আদায় করল। মানুষেরা এ ঘটনা বলাবলি করতে লাগল তৃতীয় রাতে আরো অধিক লোক মসজিদে জড়ো হল। তিনি তাদের নিকট বের হলেন, তারা তার সাথে সালাত আদায় করল। যখন চতুর্থ রাত হল, লোকের সমাগমে মসজিদ সংকীর্ণ হয়ে গেল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের নিকট বের হলেন না। উপস্থিত কেউ কেউ বলতে ছিল: আস-সালাত, রাসূলুল্লাহ তাদের নিকট বের হলেন না, একেবারে ফজর সালাতের জন্য বের হলেন। যখন ফজর শেষ করলেন মানুষের দিকে মুখ করলেন, অতঃপর খুৎবা পড়ে বললেন:

«أما بعد، فإنه لم يخف عليَّ شأنكم، ولكني خشيت أن تُفرض عليكم صلاة الليل فتعجزوا عنها»

“অতঃপর, তোমাদের অবস্থা আমার নিকট গোপন ছিল না, কিন্তু আমি আশঙ্কা করেছি তোমাদের ওপর রাতের সালাত ফরয করে দেওয়া হবে, তখন তোমরা তা আদায় করতে সক্ষম হবে না”। এটা ছিল রমযানের ঘটনা”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯২৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৬১।]

আব্দুর রহমান ইবন আউফ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন: আমি কোনো এক রাতে উমার ইবন খাত্তাবের সাথে মসজিদের উদ্দেশ্যে বের হই, তখন লোকেরা বিক্ষিপ্তভাবে নিজ নিজ সালাত আদায় করছিল। আবার কারো সাথে জমাতবদ্ধ কিছু লোক সালাত আদায় করছিল। উমার বললেন: “আমি ভাবছি, যদি তাদের সবাইকে এক তিলাওয়াতকারীর সাথে জমা করে দেই তাহলে খুব ভালো হবে”। অতঃপর তিনি সিদ্ধান্ত নিয়ে উবাই ইবন কা‘ব-এর পিছনে সবাইকে জমা করে দেন। অতঃপর তিনি তার সাথে অপর রাতে বের হন, তখন লোকেরা তাদের ইমামের সাথে সালাত আদায় করছিল। উমার বললেন: এটা কত সুন্দর বিদআত, যারা এর থেকে ঘুমাচ্ছে তারা দণ্ডায়মানদের থেকে উত্তম, (তার উদ্দেশ্য শেষ রাত) তখন লোকেরা প্রথম রাতে সালাত আদায় করল”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০১০।]

এসব হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় মসজিদে জমাতের সাথে সালাতে তারাবী ও রমযানের কিয়াম বৈধ আর যে ইমামের সাথে থাকবে, যতক্ষণ না সে প্রস্থান করে, তার জন্য পূর্ণ রাতের কিয়াম লিখা হয়

উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুর বাণী: “এটা খুব সুন্দর বিদআত”, এখানে উদ্দেশ্য আভিধানিক অর্থ, অর্থাৎ এ কাজটি এর পূর্বে এভাবে ছিল না, তবে তার ভিত্তি বিদ্যমান ছিল, যা এ কাজের দলীল। যেমন,

ক. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানে কিয়ামের জন্য উদ্বুদ্ধ করতেন, তাতে উৎসাহ প্রদান করতেন এবং তিনি একাধিক রাত তার সাথীদের নিয়ে সালাত আদায় করেছেন, অতঃপর তার থেকে বিরত থাকেন এ আশঙ্কায় যে, তাদের ওপর তা ফরয করে দেওয়া হতে পারে, আর তখন তারা আদায় করতে সক্ষম হবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুর পর সে আশঙ্কা নেই।

খ. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খোলাফায়ে রাশেদিনের আনুগত্য করার নির্দেশ দিয়েছেন, তারাবী খোলাফায়ে রাশেদিনের সুন্নাত। [দেখুন : জামেউল উলুম ওয়াল হিকাম, লি ইবন রজব: (২/১২৯)।]

আমি শাইখ আব্দুল আযীয ইবন বায রহ.-কে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুর বাণী “এটা খুব সুন্দর বিদআত” সম্পর্কে বলতে শুনেছি: বিদআত এখানে আভিধানিক অর্থে, অর্থাৎ ইতিপূর্বে পুরো রমযান এভাবে সালাত আদায়ের রেওয়াজ ছিল না, এটা তিনি আবিষ্কার করেছেন। এ হচ্ছে তার কথার কারণ, অন্যথায় এটা সুন্নাত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একাধিক রাত তা আদায় করেছেন”। [সহীহ বুখারী (২০১০) নং হাদীসের ব্যাখ্যার সময় এ বাণী শ্রবণ করেছি।]

৫. রমযান মাসের শেষ দশকে কিয়ামের প্রতি গুরুত্বারোপ করা। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«من صام رمضان إيماناً واحتساباً، غُفِر له ما تقدم من ذنبه، ومن قام ليلة القدر إيماناً واحتساباً غُفرَ له ما تقدم من ذنبه» .

“যে ব্যক্তি ইমান ও সওয়াবের আশায় রমযানে সিয়াম পালন করল, তার পূর্বের গুনা মাফ করে দেওয়া হবে। আর যে লাইলাতুল কদরে ইমান ও সাওয়াবের আশায় কিয়াম করবে, তার পূর্বের সকল পাপ ক্ষমা করা হবে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০১৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৬০।] আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«كان النبي صلى الله عليه وسلم‎ إذا دخل العشر أحيى الليل، وأيقظ أهله، وجدَّ، وشدَّ المئزر » .

“রমযানের শেষ দশক পদার্পণ করলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাত জাগরণ করতেন, তার পরিবারকে জাগিয়ে দিতেন, খুব পরিশ্রম করতেন ও কোমর বেধে নিতেন। [ইবাদতের জন্য কাপড় গুটানো বা ওপরে তোলা। এখানে উদ্দেশ্য নারীদের সঙ্গ ত্যাগ করা।], [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০২৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৭৪।] তার থেকে আরো বর্ণিত, তিনি বলেছেন:

«كان رسول الله صلى الله عليه وسلم‎ يجتهد في العشر الأواخر ما لا يجتهد في غيره» .

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানের শেষ দশকে খুব পরিশ্রম করতেন, যেরূপ তিনি অন্য সময় করতেন না”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৭৫।]

নুমান ইবন বাশির রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«قمنا مع رسول الله صلى الله عليه وسلم‎ ليلة ثلاث وعشرين إلى ثلث الليل الأول، ثم قمنا معه ليلة خمس وعشرين إلى نصف الليل، ثم قمنا معه ليلة سبع وعشرين حتى ظننا أن لا ندرك الفلاح . وكانوا يسمونه السحور» .

“আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে তেইশ রমযানের রাতে প্রথম তৃতীয়াংশ কিয়াম করি। অতঃপর পঁচিশ রমযানে আমরা তার সাথে অর্ধেক রাত পর্যন্ত কিয়াম করি। অতঃপর সাতাইশ রমযানে আমরা তার সাথে এত দীর্ঘ কিয়াম করি যে, আমাদের আশঙ্কা হয়েছিল আমরা ফালাহ পাব না। তারা সাহরীকে ফালাহ বলত” [নাসাঈ, হাদীস নং ১৬০৬, আলবানী হাদীসটি সহীহ বলেছেন। দেখুন: সহীহ সুনান নাসাঈ: (১/৩৫৪)।] আবুযর থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে: “যখন সাতাইশ তারিখের রাত হল, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার পরিবার, নারী ও লোকদের জমা করে তাদের সাথে কিয়াম করেন” [আহমদ: (৫/১৫৯), আবু দাউদ, হাদীস নং ১৩৭৫; নাসাঈ, হাদীস নং ১৬০৫; তিরমিযী, হাদীস নং ৮০৬; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১৩২৭।]

৬. এশার সালাত ও তার সুন্নাত আদায়ের পর থেকে তারাবীর সময় আরম্ভ হয়। অতএব সে সময় থেকে তারাবী পড়। [দেখুন: ‘আশ-শারহুল মুমতি’ লিল আল্লামা ইবন উসাইমিন: (৪/৮২)।]

৭. সালাতে তারাবীর রাকাত সংখ্যা। তারাবীর এমন কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যা নেই, যার বিপরীত করা যাবে না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«صلاة الليل مثنى مثنى، فإذا خَشي أحدكم الصبح صلى ركعة واحدة تُوتِرُ له ما قد صلّى» .

“রাতের সালাত দু’রাকাত, দু’রাকাত, যখন তোমাদের কেউ ভোর হওয়ার আশঙ্কা করে, সে যেন এক রাকাত পড়ে নেয়, যা তার পূর্বের সকল সালাত বেজোড় করে দিবে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৯০; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৪৯।] যদি কেউ বিশ রাকাত তারাবী আদায় করে তিন রাকাত দ্বারা বিতর পড়ে অথবা ছত্রিশ রাকাত তারাবী আদায় করে তিন রাকাত দ্বারা বিতর পড়ে অথবা এক চল্লিশ রাকাত তারাবী আদায় করে, তাতে কোনো সমস্যা নেই”। [দেখুন: তিরমিযী: (৩/১৬১); আল-মুগনি লি ইবন কুদামাহ: (২/৬০৪); ফাতওয়া ইবন তাইমিয়া: (২৩/১১২-১১৩) ও সুবুলুস সালাম লিস সান‘আনি: (৩/২০-২৩)।] হ্যাঁ উত্তম হচ্ছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেরূপ পড়েছেন সেরূপ পড়া, অর্থাৎ তেরো রাকাত অথবা এগারো রাকাত পড়া। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«كان رسول الله صلى الله عليه وسلم‎ يصلي من الليل ثلاث عشرة ركعة»

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে তেরো রাকাত সালাত আদায় করতেন”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৬৪।]

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«ما كان رسول الله صلى الله عليه وسلم‎ يزيد في رمضان ولا في غيره على إحدى عشرة ركعة»

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযান ও গায়রে রমযানে এগারো রাকাতের চেয়ে বেশি পড়তেন না”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১১৪৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৩৮।] এটাই উত্তম এবং এতে পরিপূর্ণ সাওয়াব রয়েছে। [দেখুন: আশ-শারহুল মুমতি লি ইবন উসাইমিন: (৪/৭২)।] যদি কেউ এর চেয়ে অধিক পড়ে কোনো সমস্যা নেই, কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«صلاة الليل مثنى مثنى، فإذا خَشي أحدكم الصبح صلى ركعة واحدة تُوتِرُ له ما قد صلّى» .

“রাতের সালাত দু’রাকাত দু’রাকাত, যখন তোমাদের কেউ ভোর হওয়ার আশঙ্কা করবে, এক রাকাত পড়ে নিবে, যা তার পূর্বের সকল সালাত বেজোড় করে দিবে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৯০; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৪৯।] তারাবীর ব্যাপারে স্বাধীনতা রয়েছে, তবে উত্তম হচ্ছে এগারো রাকাত পড়া। আল্লাহ তাওফীক দাতা। [দেখুন: ফতোয়াল ইমাম ইবন বায: (১১/৩২০-৩২৪)।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন