HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

বৈধ অবৈধের মানদণ্ডে পবিত্র মক্কার বিভিন্ন স্থানসমূহের সম্মাননা

লেখকঃ শাইখ সা‘দ ইবন আলী আশ-শাহরানী

কাজের মাধ্যমে ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর প্রতিবাদ:
অপর এক ঘটনায় ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে, যে তিনি জানতে পারলেন,

«أَمَرَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ بِقَطْعِ الشَّجَرَةِ الَّتِي بُويِعَ تَحْتَهَا النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَقَطَعَهَا لِأَنَّ النَّاسَ كَانُوا يَذْهَبُونَ فَيُصَلُّونَ تَحْتَهَا , فَخَافَ عَلَيْهِمُ الْفِتْنَةَ»

“যে কিছু মানুষ ঐ বৃক্ষের নিকট আসে যে বৃক্ষের নিচে সাহাবাগণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বাইয়াত করেছিল, তখন তিনি নির্দেশ দিলেন যেন এই বৃক্ষ কেটে ফেলা হয় তখন তা কেটে দেয়া হল”। (প্রাগুক্ত)

এ হল উমার ইবন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর কথা এবং কাজ যার ব্যাপারে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«إِنَّ اللَّهَ جَعَلَ الحَقَّ عَلَى لِسَانِ عُمَرَ وَقَلْبِهِ»

“নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা‘আলা উমারের যবানে এবং অন্তরে সত্যকে ঢেলে দিয়েছেন”। (তিরমিযী, ৩৬৮২)

ইমাম ইবন ওদ্যাহ আল-কুরতুবী এই দু’টি ঘটনা বর্ণনা করার পর বলেছেন: মালেক ইবন আনাস এবং মদীনার অন্যান্য আলেম এ সমস্ত মসজিদ এবং মদীনার মসজিদ কোবা এবং উহুদ ব্যতীত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্মৃতি বিজড়িত স্থানসমূহে আগমন করাকে অপছন্দ করতেন। (প্রাগুক্ত, পৃ. ৮৯)

৪. নিশ্চয়ই সাহাবীগণ রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট বাইয়াতে রিদওয়ান করেছিলেন, যার কথা আল্লাহ্ কুরআনে উল্লেখ করেছেন, তখন তাদের সংখ্যা ছিল ১৪০০, পরের বছর যখন তারা এসেছিলেন তখন তাদের কেউ সেই স্থানটি সম্পর্কে কিছু জানত না, ঐ স্থানটি নির্ধারণে তাদের মধ্যে কোনো দু’জন সাহাবী একমতও হয় নি; বরং ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু যার কাজকে কিছু মানুষ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্মৃতি বিজড়িত স্থানসমূহকে বরকতময় বলে মনে করার ক্ষেত্রে দলীল হিসেবে গ্রহণ করে থাকে, তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন যে এই বৃক্ষের স্থানটি নির্ধারিত নেই, আর এটি তাদের কাছ থেকে গোপন রাখা আল্লাহর একটি দয়া।

ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেন:

قَالَ ابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا : «رَجَعْنَا مِنَ العَامِ المُقْبِلِ فَمَا اجْتَمَعَ مِنَّا اثْنَانِ عَلَى الشَّجَرَةِ الَّتِي بَايَعْنَا تَحْتَهَا، كَانَتْ رَحْمَةً مِنَ اللَّهِ»

“পরের বছর আমরা আসলাম তখন আমাদের মধ্যে কোনো দু’জন ঐ বৃক্ষের নিচে একত্রিত হয় নি যে বৃক্ষের নিচে আমরা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বাইয়াত করেছিলাম। আর তা ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে দয়া।” (বুখারী, ২৯৫৮)

হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.) বলেছেন: মাগাযী (যুদ্ধ) অধ্যায়ে আসবে যে, সাঈদের পিতা মুসায়্যিব ইবনে হুযন বৃক্ষের স্থানটি গোপন রাখার বিষয়ে ইবনে উমারকে তার সমর্থনের কথা এবং এর মধ্যে কি হিকমত রয়েছে তার বর্ণনা। আর তাহলো যে ঐ বৃক্ষের নিচে যে কল্যাণকর ঘটনা ঘটেছিল তা নিয়ে যেন কোনো ফেতনা না হয়, যদি বৃক্ষটিকে রেখে দেওয়া হত তাহলে অজ্ঞ লোকদের সম্মান করা থেকে বৃক্ষটি রক্ষা পেত না, এমনকি তারা হয়ত এই বৃক্ষের ব্যাপারে এই বিশ্বাসও পোষণ করত যে তা মানুষের উপকার বা অপকার করার ক্ষমতা রাখে, যেমন আজ আমরা অন্যান্য স্থানগুলোর অবস্থা প্রত্যক্ষ করছি। ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা তার বক্তব্যে একথার প্রতিও ইঙ্গিত করেছেন যে, ‘‘এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত ছিল, অর্থাৎ: ঘটনাটি তাদের সামনে সংঘটিত হওয়ার পরও ঐ বৃক্ষের স্থানটি গোপন রাখা আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ। (ফাতহুল বারী, ৬/১১৮)

এ বিষয়কে সমর্থন করে কাজী ইয়াদ রহ. বলেন: বৃক্ষের বিষয়টি যে পরবর্তী বছর তারা তা ভুলে গিয়েছিল, কেউ বলেছেন যে, এটা মুমেনদের জন্য রহমত এবং তাদেরকে পাপে পতিত হওয়া থেকে সংরক্ষণ করা হয়েছে। কেননা যদি তার স্থানটি নির্দিষ্ট থাকত তাহলে অনারব এবং জাহেলদের মাধ্যমে ঐ স্থানটিকে সম্মান জানানো এবং সেখানে কোনো ইবাদত করার ভয় ছিল।

৫. ঐ সমস্ত স্থানকে সম্মান জানানো যা সম্মান করা বিধি সম্মত নয় তা বিরাট ফেতনা-ফাসাদের কারণ: আর তা বিভিন্নভাবে স্পষ্ট করা সম্ভব:

(ক) এ সমস্ত স্থানকে সম্মান জানানো থেকে নিষেধ করা শির্কের মাধ্যমকে বন্ধ করা। কেননা তা যিয়ারত এবং সেখানে ইবাদত করার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করা মানুষকে ঐ স্থানকে সম্মান জানানো এবং তাকে পবিত্র বলে মনে করা এবং তা নিয়ে ফিতনায় পতিত হওয়ার দিকে ঠেলে দিবে, এমনকি বিষয়টি হয়ত কখনো এমনও হতে পারে যে কেউ ঐ স্থানটিকে ইবাদতখানায় পরিণত করবে।

(খ) এসমস্ত স্থানকে ইবাদতের জন্য নির্ধারণ করা কবরস্থানে সালাত আদায় করার মত।

অতএব তা হারামে পতিত হওয়ার মাধ্যমের ন্যায়। ফলে কবরের নিকট সালাত আদায় করা তা ইবাদত করার পথ ও মাধ্যম। তাই এসমস্ত স্থানে সালাত আদায় করা, স্থানটিকে সম্মান জানানো এবং তা ঐ স্থানটিকে ও ঐ স্মৃতিকে কোনো সময় মসজিদে পরিণত করার মাধ্যম। আর শরীয়তের দলীলসমূহ অকাট্যভাবে প্রমাণ করেছে যে নবীগণের কবরসমূহকে মসজিদে পরিণত করা হারাম।

যেমন ইবনে আব্বাস এবং আয়শা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত হাদীসে তারা বলেছেন:

أَنَّ عَائِشَةَ، وَعَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَبَّاسٍ، قَالاَ : لَمَّا نَزَلَ بِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ طَفِقَ يَطْرَحُ خَمِيصَةً لَهُ عَلَى وَجْهِهِ، فَإِذَا اغْتَمَّ بِهَا كَشَفَهَا عَنْ وَجْهِهِ، فَقَالَ وَهُوَ كَذَلِكَ : «لَعْنَةُ اللَّهِ عَلَى اليَهُودِ وَالنَّصَارَى، اتَّخَذُوا قُبُورَ أَنْبِيَائِهِمْ مَسَاجِدَ» يُحَذِّرُ مَا صَنَعُوا

“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মৃত্যু শয্যায় শায়িত তখন তাঁর একটি চাদর দিয়ে তাঁর চেহারাকে ঢেকে দেয়া হচ্ছিল, যখন তিনি আবার হুশ ফিরে পেতেন তখন চাদর সরিয়ে দেয়া হত, তখন তিনি বললেন: ইহুদী নাসারাদের উপর আল্লাহর লা‘নত, কারণ তারা তাদের নবীগণের কবরসমূহকে মসজিদে পরিণত করেছিল, তারা যা করেছিল তাথেকে তিনি তাঁর উম্মতকে সতর্ক করছিলেন। এ বিষয়ে আরো অনেক হাদীস রয়েছে।

(গ) নিশ্চয়ই এসস্ত স্থানসমূহকে সম্মান জানানোর মাঝে রয়েছে আহলে কিতাব (ইয়াহূদী নাসারাদের) সাথে তাদের বিদ‘আতী এবং অন্যান্য কর্মকান্ডে সাদৃশ্যতার মাধ্যম। এমনকি তারা তাদের নবীগণের কবরসমূহ এবং স্মৃতি বিজড়িত স্থানসমূহকে মাজার এবং দর্শনীয় স্থানে পরিণত করেছিল। আর ইসলাম তাদের সাদৃশ্যতা অবলম্বন করা থেকে সতর্ক করেছে, তাই ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেছেন:

«أَيُّهَا النَّاسُ , إِنَّمَا هَلَكَ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ باتِّبَاعِهِمْ مِثْلَ هَذَا , حَتَّى أَحْدَثُوهَا بِيَعًا»

“নিশ্চয়ই তোমাদের পূর্ববর্তীগণ এধরণের অনুসরণের কারণে পথভ্রষ্ট হয়েছিল, এমনকি তারা এগুলো নিয়ে উপাসনালয়ও আবিষ্কার করেছিল।”

৬. নিশ্চয়ই ইসলাম আমাদের জন্য যে স্থানসমূহকে সম্মান যোগ্য করেছে সে সমস্ত স্থানকে সম্মান করা এবং সেখানে আল্লাহর ইবাদত করা বিধিবদ্ধ, যেমন: কা‘বা ঘরের ত্বাওয়াফ করা, হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ এবং চুম্বন করা। এগুলোতে পার্থিব কোনো বরকত লাভ করা উদ্দেশ্য নয়, তাই হাজরে আসওয়াদ সম্পর্কে ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেছেন:

«إِنِّي أَعْلَمُ أَنَّكَ حَجَرٌ، لاَ تَضُرُّ وَلاَ تَنْفَعُ، وَلَوْلاَ أَنِّي رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُقَبِّلُكَ مَا قَبَّلْتُكَ»

“নিশ্চয়ই আমি অবগত আছি যে তুমি একটি পাথর মাত্র, তুমি অপকারও করতে পার না আবার উপকারও করতে পার না, যদি আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে না দেখতাম যে তিনি তোমাকে চুম্বন করছেন, তাহলে আমিও তোমাকে চুম্বন করতাম না”। (বুখারী: ১৫৯৭)

নিশ্চয়ই উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর এই কথার মাঝে কিছু কিছু জাহেলরা যা করে থাকে তার প্রতিবাদ রয়েছে, তারা মনে করে হাজরে আসওয়াদের বিশেষ কোনো ফযিলত রয়েছে, বা তার কোনো স্বকীয়তা রয়েছে বলে প্রমাণ দিতে চেষ্টা করে।

৭. নিশ্চয়ই এই সমস্ত স্থানসমূহকে সম্মান জানানো এবং পবিত্র মনে করা প্রকারান্তরে এগুলোকে আনন্দ উৎসবের স্থানে পরিণত করা। কেননা ‘ঈদ সময় এবং স্থানকে অন্তর্ভুক্ত করে।

‘ঈদ এমন একটি বিষয়ের নাম মানুষ যা করে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। বা যেখানে বার বার মানুষ আসে বিশেষ কিছু করার জন্য। বস্তুত: যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নিষেধ করেছেন তাঁর কবরকে যেন আমরা ঈদগাহে পরিণত না করি, যখন তিনি বলেছেন:

«وَلَا تَجْعَلُوا قَبْرِي عِيدًا»

“আমার কবরকে তোমরা ঈদগাহে পরিণত কর না”। অথচ তাঁর কবরটি সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ স্থান, অতএব নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সমস্ত স্থান অতিক্রম করেছেন এবং যে সমস্ত স্থানে সালাত আদায় করেছেন সেগুলোকে আনন্দ উৎসবের স্থানে পরিণত না করা আরো বেশি সমীচীন।

৮-মদীনার যে স্থানটিতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সবসময় সালাত আদায় করতেন, সালফে সালেহীনগণের কেউ ঐ স্থানটিকে স্পর্শ বা চুম্বন করতেন না, এমনিভাবে মক্কা বা অন্যান্য স্থান যেখানে তিনি সালাত আদায় করেছেন সেগুলোকেও তা করা হত না। অতএব যে স্থানটিকে তাঁর পবিত্র কদমদ্বয় স্পর্শ করত এবং সেখানে তিনি সালাত আদায় করতেন, তা স্পর্শ করা এবং চুম্বন করা তাঁর উম্মতের জন্য বিধি সম্মত করা হয় নি, তাহলে তাঁর রেখে যাওয়া যেসব স্মৃতিসমূহের বিশুদ্ধতা সম্পর্কে জানা নেই বা যে বিষয়ে জানা যায় যে এটা মিথ্যা। যেমন, কিছু মানুষ অনেক পাথর সংগ্রহ করে তার উপর পায়েরাগ অংকন করে থাকে আর জাহেলরা মনে করে যে, এটা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পদচিহ্ন, সেগুলোর ক্ষেত্রে তা কিভাবে হতে পারে? বরং এগুলো পরিত্যাগ করাই উত্তম।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন