HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
সালাত আদায়ের জন্য আসো
লেখকঃ খালেদ আবূ সালেহ
৪
হে সালাত বর্জনকারী!হে সালাত বর্জনকারী! তুমি সালাতকে বর্জন করেছ, তাহলে তোমার জন্য ইসলামের আর কী বাকি থাকল? তুমি কি জান না যে, সালাত হচ্ছে ইসলামের খুঁটি এবং ঈমানের তাঁবু?
হে সালাত বর্জনকারী! তুমি ছাড়া প্রত্যেকটি সৃষ্টি তার প্রতিপালককে সাজদাহ করে!! আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿أَلَمۡ تَرَ أَنَّ ٱللَّهَ يَسۡجُدُۤ لَهُۥۤ مَن فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَن فِي ٱلۡأَرۡضِ وَٱلشَّمۡسُ وَٱلۡقَمَرُ وَٱلنُّجُومُ وَٱلۡجِبَالُ وَٱلشَّجَرُ وَٱلدَّوَآبُّ وَكَثِيرٞ مِّنَ ٱلنَّاسِۖ وَكَثِيرٌ حَقَّ عَلَيۡهِ ٱلۡعَذَابُۗ﴾ [ الحج : ١٨ ]
“আপনি কি দেখেন না যে, আল্লাহকে সাজদাহ করে যারা আছে আসমানসমূহে ও যারা আছে যমীনে, আর সূর্য, চাঁদ, নক্ষত্রমণ্ডলী, পর্বতরাজি, বৃক্ষলতা, জীবজন্তু এবং সাজদাহ করে মানুষের মধ্যে অনেকে? আবার অনেকের প্রতি অবধারিত হয়েছে শাস্তি।” [সূরা আল-হাজ, আয়াত: ১৮]
আর যখন তুমি সালাত আদায় করছ না, তখন তুমি তো ঐসব লোকদের কাতারে শামিল হয়ে যাচ্ছ, যাদের প্রতি আল্লাহর শাস্তি অবধারিত হয়ে গেছে!
হে সালাত বর্জনকারী! তুমি কি জানো না যে, সালাত বর্জন করাটা কুফুরী ও শির্কের পর্যায়ভুক্ত? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«بَيْنَ الرَّجُلِ وَبَيْنَ الشِّرْكِ والكفر، تَرْكَ الصَّلاَةِ » .
“ব্যক্তি এবং শির্ক ও কুফুরের মধ্যে পার্থক্য হলো সালাত ত্যাগ করা।” [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৫৭] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন:
«العَهْدُ الَّذِي بَيْنَنَا وَبَيْنَهُمْ الصَّلاَةُ، فَمَنْ تَرَكَهَا فَقَدْ كَفَرَ» .
“আমাদের ও তাদের (অমুসলিমদের) মধ্যে যে প্রতিজ্ঞা বা চুক্তি রয়েছে তা হচ্ছে সালাত। সুতরাং যে ব্যক্তি সালাত বর্জন করল, সে কুফুরী করল।” [আহমাদ ও তিরমিযী। আর আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।]
হে সালাত বর্জনকারী! তুমি কি জানো না যে, সালাত বর্জন করা এবং তাকে অবজ্ঞা করাটা মুনাফেকী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ? আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿إِنَّ ٱلۡمُنَٰفِقِينَ يُخَٰدِعُونَ ٱللَّهَ وَهُوَ خَٰدِعُهُمۡ وَإِذَا قَامُوٓاْ إِلَى ٱلصَّلَوٰةِ قَامُواْ كُسَالَىٰ يُرَآءُونَ ٱلنَّاسَ وَلَا يَذۡكُرُونَ ٱللَّهَ إِلَّا قَلِيلٗا ١٤٢﴾ [ النساء : ١٤٢ ]
“নিশ্চয় মুনাফিকরা আল্লাহর সাথে ধোঁকাবাজি করে। বস্তুতঃ তিনি তাদেরকে ধোঁকায় ফেলেন। আর যখন তারা সালাতে দাঁড়ায়, তখন শৈথিল্যের সাথে দাঁড়ায়, শুধুমাত্র লোক দেখানোর জন্য এবং আল্লাহকে তারা অল্পই স্মরণ করে।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১৪২]
আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
«إنَّ أَثْقَلَ الصَّلاةِ عَلَى الْمُنَافِقِينَ : صَلاةُ الْعِشَاءِ وَصَلاةُ الْفَجْرِ . وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِيهَا لأَتَوْهُمَا وَلَوْ حَبْوًا» .
“নিশ্চয় মুনাফিকদের ওপর বেশি ভারী ও কষ্টকর সালাত হলো এশা ও ফজরের সালাত। আর যদি তারা জানত যে, এ দুই সালাতের মধ্যে কী আছে, তাহলে তারা হামাগুড়ি দিয়ে হলেও এ দুই সালাতে শামিল হত।” [বুখারী, হাদীস নং ৬২৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৫১৪]
হে সালাত বর্জনকারী! তুমি কি বিষয়টি ভেবে দেখেছ? মুনাফিক সম্প্রদায়ও সালাত আদায় করত, তবে তারা সালাত আদায় করত লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে, অথচ তুমি কখনও সালাত-ই আদায় করছ না!!
হে সালাত বর্জনকারী! তুমি কি জানো না যে, সালাত বর্জন করাটা এক প্রকার গাফলতি ও অলসতা এবং অন্তরের কঠোরতা ও নিষ্ঠুরতা? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«لَيَنْتَهِيَنَّ أَقْوَامٌ عَنْ وَدْعِهِمُ الْجُمُعَاتِ، أَوْ لَيَخْتِمَنَّ اللَّهُ عَلَى قُلُوبِهِمْ، ثُمَّ لَيَكُونُنَّ مِنَ الْغَافِلِينَ» .
“অবশ্যই মুসলিম জনগণ সালাতের জামা‘আত/জুম‘আহ ছেড়ে দেওয়া থেকে বিরত থাকবে, নতুবা আল্লাহ তা‘আলা তাদের অন্তরের ওপর মোহর মেরে দেবেন, তারপর তারা নিশ্চিতভাবে গাফেল বান্দাদের কাতারে শামিল হয়ে যাবে।” [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২০৩৯]
হে সালাত বর্জনকারী! তুমি কি জানো না যে, সালাত বর্জন করার বিষয়টি সকল আমল বিনষ্ট করে দেয়? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«مَنْ تَرَكَ صَلَاةَ الْعَصْرِ فَقَدْ حَبِطَ عَمَلُهُ» .
“যে ব্যক্তি আসরের সালাত বর্জন করল, সে ব্যক্তির আমল নষ্ট হয়ে গেল।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫২৮]
হে সালাত বর্জনকারী! তুমি কি জানো না যে, সালাত বর্জন করার ব্যাপারটি কাফির ও পাপীষ্ঠদের সাথে জাহান্নামের মধ্যে নিয়ে যাবে? আল্লাহ তা‘আলা যখন জাহান্নামের অধিবাসীদেরকে প্রশ্ন করবেন, তখন জবাবে তারা কী বলবে, তা কোড করে বলেন, :
﴿مَا سَلَكَكُمۡ فِي سَقَرَ ٤٢ قَالُواْ لَمۡ نَكُ مِنَ ٱلۡمُصَلِّينَ ٤٣﴾ [ المدثر : ٤٢، ٤٣ ]
“তোমাদেরকে কিসে ‘সাকার’-এ নিক্ষেপ করেছে? তারা বলবে, আমরা সালাত আদায়কারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না।” [সূরা আল-মুদ্দাচ্ছির, আয়াত: ৪২-৪৩]
আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:
﴿فَخَلَفَ مِنۢ بَعۡدِهِمۡ خَلۡفٌ أَضَاعُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَٱتَّبَعُواْ ٱلشَّهَوَٰتِۖ فَسَوۡفَ يَلۡقَوۡنَ غَيًّا ٥٩﴾ [ مريم : ٥٩ ]
“তাদের পরে আসল অযোগ্য উত্তরসূরীরা, তারা সালাত নষ্ট করল এবং কুপ্রবৃত্তির অনুবর্তী হল। কাজেই অচিরেই তারা ক্ষতিগ্রস্ততার সম্মুখীন হবে।” [সূরা মারইয়াম, আয়াত: ৫৯]
হে সালাত বর্জনকারী! তুমি কি জানো না যে, সালাত বর্জন করার বিষয়টি তোমার জন্য বড় ধরনের বিপদ-মুসীবত ডেকে আনবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
«الَّذِى تَفُوتُهُ صَلاَةُ الْعَصْرِ، كَأَنَّمَا وُتِرَ أَهْلَهُ، وَمَالَهُ» .
“যে ব্যক্তির আসরের সালাত ছুটে গেল, সে ব্যক্তির পরিবার-পরিজন ও ধন-সম্পদ যেন লুণ্ঠিত হয়ে গেল।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫২৭] অর্থাৎ সে যেন তার পরিবার-পরিজন ও ধন-সম্পদ হারিয়ে ফেলল। সুতরাং এক ওয়াক্ত সালাত বর্জনের পরিণতি এমন হলে, সকল ওয়াক্তের সালাত বর্জন করার পরিণতি কেমন ভয়াবহ হতে পারে?
হে সালাত বর্জনকারী! তুমি কি জানো না যে, সালাত বর্জন করার বিষয়টি হৃদয় মনের অস্থিরতা, অশান্তি ও কষ্টকর পরিস্থিতি তৈরি করে এবং জীবন-যাপনের বিষয়টিকে সংকুচিত ও দুর্বিষহ করে তুলে? আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿وَمَنۡ أَعۡرَضَ عَن ذِكۡرِي فَإِنَّ لَهُۥ مَعِيشَةٗ ضَنكٗا وَنَحۡشُرُهُۥ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ أَعۡمَىٰ ١٢٤ قَالَ رَبِّ لِمَ حَشَرۡتَنِيٓ أَعۡمَىٰ وَقَدۡ كُنتُ بَصِيرٗا ١٢٥ قَالَ كَذَٰلِكَ أَتَتۡكَ ءَايَٰتُنَا فَنَسِيتَهَاۖ وَكَذَٰلِكَ ٱلۡيَوۡمَ تُنسَىٰ ١٢٦﴾ [ طه : ١٢٤، ١٢٦ ]
“‘আর যে আমার স্মরণ থেকে বিমুখ থাকবে, নিশ্চয় তার জীবন-যাপন হবে সংকুচিত এবং আমরা তাকে কিয়ামতের দিন জমায়েত করব অন্ধ অবস্থায়। সে বলবে, ‘হে আমার রব! কেন আমাকে অন্ধ অবস্থায় জমায়েত করলেন? অথচ আমি তো ছিলাম চক্ষুষ্মান। তিনি বলবেন, ‘এরূপই আমাদের নিদর্শনাবলী তোমার কাছে এসেছিল; কিন্তু তুমি তা ছেড়ে দিয়েছিলে এবং সেভাবে আজ তোমাকেও (জাহান্নামে) ছেড়ে রাখা হবে।” [সূরা ত্বহা, আয়াত: ১২৪-১২৬]
সুতরাং হে সালাত বর্জনকারী! হায়, তোমার জন্য আফসোস হয় এবং হৃদয়ে কষ্ট অনুভব করি! কীভাবে সময় অতিবাহিত হয় এবং কিভাবে জীবনকাল ফুরিয়ে যাচ্ছে, অথচ তোমার রব থেকে তোমার অন্তর আড়ালকৃত ও বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে? দুনিয়ার সবচেয়ে উৎকৃষ্ট বস্তুর মজা উপভোগ না করে তুমি কিভাবে দুনিয়া থেকে বেরিয়ে যাবে? আর দুনিয়ার মধ্যকার সবচেয়ে উৎকৃষ্ট বস্তু হলো আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলার ‘ইবাদাত করা, তাঁর যিকির করা, তাঁর শুকরিয়া বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা এবং তাঁর উদ্দেশ্যে সালাত আদায় করা।
হে সালাত বর্জনকারী! যখন তোমার নিকট তোমার সালাতের বিষয়টি অবজ্ঞার বস্তু হয়, তখন তোমার দীনের কোন বিষয়টি তোমার নিকট প্রিয় হবে? তুমি কি জান না যে, যে ব্যক্তি সালাতকে উপেক্ষা করল, তাহলে এর চেয়ে আর বড় উপেক্ষা বা হাতছাড়া কারার মতো কোনো বস্তু কি হতে পারে?
হাসান বলেন: হে আদম সন্তান! যখন তোমার নিকট তোমার সালাতের বিষয়টি অবজ্ঞার বস্তু হয়, তখন এমন কী বস্তু আছে, যা তোমার নিকট প্রিয় হবে?
হে গাফেল (অলস) ব্যক্তি! তুমি সালাত বর্জনকারী অবস্থায় মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়ার পূর্বেই ফিরে আস তুমি তোমার ‘রব’-এর কাছে।
হে সালাত বর্জনকারী! তুমি ছাড়া প্রত্যেকটি সৃষ্টি তার প্রতিপালককে সাজদাহ করে!! আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿أَلَمۡ تَرَ أَنَّ ٱللَّهَ يَسۡجُدُۤ لَهُۥۤ مَن فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَن فِي ٱلۡأَرۡضِ وَٱلشَّمۡسُ وَٱلۡقَمَرُ وَٱلنُّجُومُ وَٱلۡجِبَالُ وَٱلشَّجَرُ وَٱلدَّوَآبُّ وَكَثِيرٞ مِّنَ ٱلنَّاسِۖ وَكَثِيرٌ حَقَّ عَلَيۡهِ ٱلۡعَذَابُۗ﴾ [ الحج : ١٨ ]
“আপনি কি দেখেন না যে, আল্লাহকে সাজদাহ করে যারা আছে আসমানসমূহে ও যারা আছে যমীনে, আর সূর্য, চাঁদ, নক্ষত্রমণ্ডলী, পর্বতরাজি, বৃক্ষলতা, জীবজন্তু এবং সাজদাহ করে মানুষের মধ্যে অনেকে? আবার অনেকের প্রতি অবধারিত হয়েছে শাস্তি।” [সূরা আল-হাজ, আয়াত: ১৮]
আর যখন তুমি সালাত আদায় করছ না, তখন তুমি তো ঐসব লোকদের কাতারে শামিল হয়ে যাচ্ছ, যাদের প্রতি আল্লাহর শাস্তি অবধারিত হয়ে গেছে!
হে সালাত বর্জনকারী! তুমি কি জানো না যে, সালাত বর্জন করাটা কুফুরী ও শির্কের পর্যায়ভুক্ত? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«بَيْنَ الرَّجُلِ وَبَيْنَ الشِّرْكِ والكفر، تَرْكَ الصَّلاَةِ » .
“ব্যক্তি এবং শির্ক ও কুফুরের মধ্যে পার্থক্য হলো সালাত ত্যাগ করা।” [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৫৭] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন:
«العَهْدُ الَّذِي بَيْنَنَا وَبَيْنَهُمْ الصَّلاَةُ، فَمَنْ تَرَكَهَا فَقَدْ كَفَرَ» .
“আমাদের ও তাদের (অমুসলিমদের) মধ্যে যে প্রতিজ্ঞা বা চুক্তি রয়েছে তা হচ্ছে সালাত। সুতরাং যে ব্যক্তি সালাত বর্জন করল, সে কুফুরী করল।” [আহমাদ ও তিরমিযী। আর আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।]
হে সালাত বর্জনকারী! তুমি কি জানো না যে, সালাত বর্জন করা এবং তাকে অবজ্ঞা করাটা মুনাফেকী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ? আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿إِنَّ ٱلۡمُنَٰفِقِينَ يُخَٰدِعُونَ ٱللَّهَ وَهُوَ خَٰدِعُهُمۡ وَإِذَا قَامُوٓاْ إِلَى ٱلصَّلَوٰةِ قَامُواْ كُسَالَىٰ يُرَآءُونَ ٱلنَّاسَ وَلَا يَذۡكُرُونَ ٱللَّهَ إِلَّا قَلِيلٗا ١٤٢﴾ [ النساء : ١٤٢ ]
“নিশ্চয় মুনাফিকরা আল্লাহর সাথে ধোঁকাবাজি করে। বস্তুতঃ তিনি তাদেরকে ধোঁকায় ফেলেন। আর যখন তারা সালাতে দাঁড়ায়, তখন শৈথিল্যের সাথে দাঁড়ায়, শুধুমাত্র লোক দেখানোর জন্য এবং আল্লাহকে তারা অল্পই স্মরণ করে।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১৪২]
আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
«إنَّ أَثْقَلَ الصَّلاةِ عَلَى الْمُنَافِقِينَ : صَلاةُ الْعِشَاءِ وَصَلاةُ الْفَجْرِ . وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِيهَا لأَتَوْهُمَا وَلَوْ حَبْوًا» .
“নিশ্চয় মুনাফিকদের ওপর বেশি ভারী ও কষ্টকর সালাত হলো এশা ও ফজরের সালাত। আর যদি তারা জানত যে, এ দুই সালাতের মধ্যে কী আছে, তাহলে তারা হামাগুড়ি দিয়ে হলেও এ দুই সালাতে শামিল হত।” [বুখারী, হাদীস নং ৬২৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৫১৪]
হে সালাত বর্জনকারী! তুমি কি বিষয়টি ভেবে দেখেছ? মুনাফিক সম্প্রদায়ও সালাত আদায় করত, তবে তারা সালাত আদায় করত লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে, অথচ তুমি কখনও সালাত-ই আদায় করছ না!!
হে সালাত বর্জনকারী! তুমি কি জানো না যে, সালাত বর্জন করাটা এক প্রকার গাফলতি ও অলসতা এবং অন্তরের কঠোরতা ও নিষ্ঠুরতা? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«لَيَنْتَهِيَنَّ أَقْوَامٌ عَنْ وَدْعِهِمُ الْجُمُعَاتِ، أَوْ لَيَخْتِمَنَّ اللَّهُ عَلَى قُلُوبِهِمْ، ثُمَّ لَيَكُونُنَّ مِنَ الْغَافِلِينَ» .
“অবশ্যই মুসলিম জনগণ সালাতের জামা‘আত/জুম‘আহ ছেড়ে দেওয়া থেকে বিরত থাকবে, নতুবা আল্লাহ তা‘আলা তাদের অন্তরের ওপর মোহর মেরে দেবেন, তারপর তারা নিশ্চিতভাবে গাফেল বান্দাদের কাতারে শামিল হয়ে যাবে।” [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২০৩৯]
হে সালাত বর্জনকারী! তুমি কি জানো না যে, সালাত বর্জন করার বিষয়টি সকল আমল বিনষ্ট করে দেয়? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«مَنْ تَرَكَ صَلَاةَ الْعَصْرِ فَقَدْ حَبِطَ عَمَلُهُ» .
“যে ব্যক্তি আসরের সালাত বর্জন করল, সে ব্যক্তির আমল নষ্ট হয়ে গেল।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫২৮]
হে সালাত বর্জনকারী! তুমি কি জানো না যে, সালাত বর্জন করার ব্যাপারটি কাফির ও পাপীষ্ঠদের সাথে জাহান্নামের মধ্যে নিয়ে যাবে? আল্লাহ তা‘আলা যখন জাহান্নামের অধিবাসীদেরকে প্রশ্ন করবেন, তখন জবাবে তারা কী বলবে, তা কোড করে বলেন, :
﴿مَا سَلَكَكُمۡ فِي سَقَرَ ٤٢ قَالُواْ لَمۡ نَكُ مِنَ ٱلۡمُصَلِّينَ ٤٣﴾ [ المدثر : ٤٢، ٤٣ ]
“তোমাদেরকে কিসে ‘সাকার’-এ নিক্ষেপ করেছে? তারা বলবে, আমরা সালাত আদায়কারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না।” [সূরা আল-মুদ্দাচ্ছির, আয়াত: ৪২-৪৩]
আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:
﴿فَخَلَفَ مِنۢ بَعۡدِهِمۡ خَلۡفٌ أَضَاعُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَٱتَّبَعُواْ ٱلشَّهَوَٰتِۖ فَسَوۡفَ يَلۡقَوۡنَ غَيًّا ٥٩﴾ [ مريم : ٥٩ ]
“তাদের পরে আসল অযোগ্য উত্তরসূরীরা, তারা সালাত নষ্ট করল এবং কুপ্রবৃত্তির অনুবর্তী হল। কাজেই অচিরেই তারা ক্ষতিগ্রস্ততার সম্মুখীন হবে।” [সূরা মারইয়াম, আয়াত: ৫৯]
হে সালাত বর্জনকারী! তুমি কি জানো না যে, সালাত বর্জন করার বিষয়টি তোমার জন্য বড় ধরনের বিপদ-মুসীবত ডেকে আনবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
«الَّذِى تَفُوتُهُ صَلاَةُ الْعَصْرِ، كَأَنَّمَا وُتِرَ أَهْلَهُ، وَمَالَهُ» .
“যে ব্যক্তির আসরের সালাত ছুটে গেল, সে ব্যক্তির পরিবার-পরিজন ও ধন-সম্পদ যেন লুণ্ঠিত হয়ে গেল।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫২৭] অর্থাৎ সে যেন তার পরিবার-পরিজন ও ধন-সম্পদ হারিয়ে ফেলল। সুতরাং এক ওয়াক্ত সালাত বর্জনের পরিণতি এমন হলে, সকল ওয়াক্তের সালাত বর্জন করার পরিণতি কেমন ভয়াবহ হতে পারে?
হে সালাত বর্জনকারী! তুমি কি জানো না যে, সালাত বর্জন করার বিষয়টি হৃদয় মনের অস্থিরতা, অশান্তি ও কষ্টকর পরিস্থিতি তৈরি করে এবং জীবন-যাপনের বিষয়টিকে সংকুচিত ও দুর্বিষহ করে তুলে? আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿وَمَنۡ أَعۡرَضَ عَن ذِكۡرِي فَإِنَّ لَهُۥ مَعِيشَةٗ ضَنكٗا وَنَحۡشُرُهُۥ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ أَعۡمَىٰ ١٢٤ قَالَ رَبِّ لِمَ حَشَرۡتَنِيٓ أَعۡمَىٰ وَقَدۡ كُنتُ بَصِيرٗا ١٢٥ قَالَ كَذَٰلِكَ أَتَتۡكَ ءَايَٰتُنَا فَنَسِيتَهَاۖ وَكَذَٰلِكَ ٱلۡيَوۡمَ تُنسَىٰ ١٢٦﴾ [ طه : ١٢٤، ١٢٦ ]
“‘আর যে আমার স্মরণ থেকে বিমুখ থাকবে, নিশ্চয় তার জীবন-যাপন হবে সংকুচিত এবং আমরা তাকে কিয়ামতের দিন জমায়েত করব অন্ধ অবস্থায়। সে বলবে, ‘হে আমার রব! কেন আমাকে অন্ধ অবস্থায় জমায়েত করলেন? অথচ আমি তো ছিলাম চক্ষুষ্মান। তিনি বলবেন, ‘এরূপই আমাদের নিদর্শনাবলী তোমার কাছে এসেছিল; কিন্তু তুমি তা ছেড়ে দিয়েছিলে এবং সেভাবে আজ তোমাকেও (জাহান্নামে) ছেড়ে রাখা হবে।” [সূরা ত্বহা, আয়াত: ১২৪-১২৬]
সুতরাং হে সালাত বর্জনকারী! হায়, তোমার জন্য আফসোস হয় এবং হৃদয়ে কষ্ট অনুভব করি! কীভাবে সময় অতিবাহিত হয় এবং কিভাবে জীবনকাল ফুরিয়ে যাচ্ছে, অথচ তোমার রব থেকে তোমার অন্তর আড়ালকৃত ও বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে? দুনিয়ার সবচেয়ে উৎকৃষ্ট বস্তুর মজা উপভোগ না করে তুমি কিভাবে দুনিয়া থেকে বেরিয়ে যাবে? আর দুনিয়ার মধ্যকার সবচেয়ে উৎকৃষ্ট বস্তু হলো আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলার ‘ইবাদাত করা, তাঁর যিকির করা, তাঁর শুকরিয়া বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা এবং তাঁর উদ্দেশ্যে সালাত আদায় করা।
হে সালাত বর্জনকারী! যখন তোমার নিকট তোমার সালাতের বিষয়টি অবজ্ঞার বস্তু হয়, তখন তোমার দীনের কোন বিষয়টি তোমার নিকট প্রিয় হবে? তুমি কি জান না যে, যে ব্যক্তি সালাতকে উপেক্ষা করল, তাহলে এর চেয়ে আর বড় উপেক্ষা বা হাতছাড়া কারার মতো কোনো বস্তু কি হতে পারে?
হাসান বলেন: হে আদম সন্তান! যখন তোমার নিকট তোমার সালাতের বিষয়টি অবজ্ঞার বস্তু হয়, তখন এমন কী বস্তু আছে, যা তোমার নিকট প্রিয় হবে?
হে গাফেল (অলস) ব্যক্তি! তুমি সালাত বর্জনকারী অবস্থায় মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়ার পূর্বেই ফিরে আস তুমি তোমার ‘রব’-এর কাছে।
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন