hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

হজের সাথে সংশ্লিষ্ট আকীদাগত ভুল-ভ্রান্তিসমূহ

লেখকঃ ড. আহমাদ ইবন উসমান আল-মাযইয়াদ

২৩
দ্বিতীয় অধ্যায় : নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কবর যিয়ারত করার ক্ষেত্রে আকিদাগত ভুল-ভ্রান্তিসমূহ
হাজীগণ কর্তৃক যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের মদীনা ও তাঁর মাসজিদে প্রবেশ করার ইচ্ছা পোষণ করবে, তখন মাসজিদে প্রবেশকারী ব্যক্তি সর্বপ্রথম যে চিন্তা করবে, তা হলো নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কবর যিয়ারত করা এবং রাহামাতুল্লিল ‘আলামীনের ওপর সালাম পেশ করা। আর আলিমগণ তাঁর কবরের নিকট দাঁড়ানো এবং তাঁর প্রতি সালাম পেশের ধরন ও পদ্ধতি স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন [দেখুন: আল-মুগনী: (৫/৪৪৬-৪৬৮); আল-মাজমূ‘উ শরহু ‘আল-মুহায্যাব’: (৮/২৫৫-২৫৭); মানসাকু শাইখুল ইসলাম, যা ‘ফাতওয়া সমগ্র’ এর আওতায় মুদ্রিত: (২৬/১৪৬-১৪৭), ফাতাওয়া ইবন ইবরাহীম: (৬/১৩৪-১৩৫); ‘হুকুকুন্ নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আলা উম্মাতিহ’: (২/৭৬২-৭৬৫); ‘ফিকহুল ‘ইবাদাত’, মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল-‘উসাইমীন: (পৃ. ৪০৪)।]; কিন্তু সাধারণ মানুষ এ কাজটিকে সীমা অতিক্রম করে অনেকগুলো মন্দ কাজে পরিণত করে। যেমন, কোনো কোনো মানুষ হুজরা তথা কবরের পাশ্ববর্তী দেওয়াল স্পর্শ করে স্বীয় শরীর মাসেহ করে, অথবা তার দ্বারা বরকত হাসিলের (বৃথা) চেষ্টা করে এবং তা চুম্বন করে, আর কতগুলো বানানো দো‘আ বা অযীফা পাঠ করে এবং আল্লাহ তা‘আলার নিকট দো‘আ করার সময় কবরকে সামনে রেখে দো‘আ করে; আর তাদের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক হলো সে ব্যক্তি, যে ‘শির্কে আকবর’ (বড় শির্ক)-এর মধ্যে জড়িয়ে যায়, যে শির্ক তাকে দীন থেকে খারিজ করে দেয়; আর এটা হয়ে থাকে- যখন সে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট প্রার্থনা করে, তাঁর নিকট সাহায্য চায় এবং তাঁর কাছে প্রয়োজন পূরণের আবেদন করে।

ইমাম ইবন কুদামা রহ. বলেন, “নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কবরের সীমানা প্রাচীর (বরকতের উদ্দেশ্যে) স্পর্শ করা এবং তা চুম্বন করা ভালো কাজ নয়।” [ইমাম গাযালী রহ. তাঁর ‘এহইয়াউ ‘উলুমুদ্ দীন’ গ্রন্থে যে ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কবরকে চুম্বন করে অথবা তার হাত দ্বারা স্পর্শ করে, সে ব্যক্তির নিন্দা ও সমালোচনা করতে গিয়ে বলেন: “নিশ্চয় কবর বা মাযারকে স্পর্শ করা ও চুম্বন করাটা খ্রিষ্টান ও ইহুদীদের সংস্কৃতি।” -‘এহইয়াউ ‘উলুমুদ্ দীন’: (১/২৭৮); আরও দেখুন: ‘আল-আমরু বিল ইত্তিবা‘য়ে ওয়ান্ নাহইউ ‘আনিল্ ইবতেদা‘য়ে’: (পৃ. ২৫৯)]

ইমাম আহমাদ রহ. বলেন, “এ জাতীয় কিছু আমার জানা নেই।”

আছরম রহ. বলেন, “আমি মদীনাবাসী বিজ্ঞ আলিমগণকে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কবরকে স্পর্শ না করতে দেখিছি, তারা এক পাশে দাঁড়াতেন এবং সালাম পেশ করতেন।”

আবূ আবদিল্লাহ রহ. বলেন, “আর আবদুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা এরূপ করতেন।” [আল-মুগনী: (৫/৪৬৮)।]

ইমাম নববী রহ. বলেন,

“নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কবর তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করা বৈধ নয়। আর কবরের দেওয়ালের সাথে পিঠ ও পেট লাগানো মাকরূহ। আর একই কথা বলেছেন আবূ আবদিল্লাহ আল-হালিমী ও অন্যান্য প্রমুখ, তারা বলেন, আরও মাকরূহ হবে হাত দ্বারা তা (দেয়াল) স্পর্শ ও চুম্বন করা; বরং আদব হলো তার থেকে এমনভাবে দূরে থাকা, যেমনিভাবে সে তাঁর থেকে দূরে থাকত, যদি সে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবদ্দশায় তাঁর নিকট হাযির হত।”

এটাই হলো সঠিক কথা, যা আলিমগণ বলেছেন এবং তার ওপর তারা একমত হয়েছেন, আর অধিকাংশ সাধারণ মানুষের বিপরীত কথা ও এ জাতীয় কাজের দ্বারা প্রতারিত হওয়া যাবে না। কারণ, অনুসরণ ও কাজকর্মের বিষয়টি নির্দিষ্ট হবে শুধুমাত্র সহীহ হাদীস ও আলিমগণের মতামতের মাধ্যমে। আর সাধারণ জনগণ ও অন্যান্য মানুষের উদ্ভাবিত নতুন নতুন নিয়ম-কানূন, অজ্ঞতা ও মূর্খতার দিকে দৃষ্টি দেওয়া যাবে না।

আর ‘সহীহাইন’ তথা সহীহ বুখারী ও মুসলিমে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«مَنْ أحْدَثَ في دِينِنَا مَا لَيْسَ مِنْهُ، فَهُوَ رَدٌّ » .

“যে ব্যক্তি আমাদের দীনের ব্যাপারে এমন নতুন কিছু সৃষ্টি করে, যা তার অন্তর্ভুক্ত নয়, তা প্রত্যাখ্যাত ও পরিত্যাজ্য।” আর সহীহ মুসলিমের অপর এক বর্ণনায় আছে:

«مَنْ عَمِلَ عَمَلاً لَيْسَ عَلَيهِ أمرُنا ؛ فَهُوَ رَدٌّ» .

“যে ব্যক্তি এমন কোনো কাজ করল, যার ব্যাপারে আমাদের কোনো নির্দেশনা নেই, সে কাজ প্রত্যাখ্যাত ও অগ্রহণযোগ্য।”

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«لَا تَجْعَلُوا قَبْرِي عِيدًا، وَصَلُّوا عَلَيَّ ؛ فَإِنَّ صَلَاتَكُمْ تَبْلُغُنِي حَيْثُ كُنْتُمْ» .

“তোমরা আমার কবরকে উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু বানিয়ো না; আর তোমরা আমার ওপর দুরূদ পাঠ কর। কারণ, তোমরা যেখানেই থাক, তোমাদের দুরূদ আমার কাছে পৌঁছে যাবে।” [হাদীসটি ‘মারফু’ সনদে আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন; আহমাদ, আল-মুসনাদ, হাদীস নং ৮৮০৪; আবূ দাউদ, আস-সুনান, হাদীস নং ২০৪২; আর এ বিষয় বা পরিচ্ছেদে অনেকগুলো হাদীস বর্ণিত আছে, যার কিছু সংখ্যক সমালোচনা থেকে মুক্ত নয়; হাদীসগুলো দেখুন: ফাদলুস্ সালাত ‘আলান্ নাবিয়্যে সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম: (পৃ. ১১৪-১২৯); হায়াতুল আম্বিয়া সালাওয়াতুল্লাহে ‘আলাইহিম বা‘দা ওফাতিহিম: (পৃ. ৯৩-১০৬); জালাউল আফহাম ফী ফাদলিস্ সালাত ‘আলা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাইরিল আনাম: (পৃ. ১০৭-১১০) ও (১৬৩-১৬৫); আল-কাউলু আল-বাদি‘উ ফিস্ সালাত ‘আলাল হাবীব আশ-শাফী‘য়ে: (পৃ. ২২৫-২৪৭); তাহযীর আস-সাজিদ মিন ইত্তিখায আল-কুবুর মাসাজিদ: পৃ. ১২৮-১২৯)।] হাদীসটি ইমাম আবূ দাউদ রহ. সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন।

আর ফুদাইল ইবন ‘ইয়াদ রহ. বলেন, “তার অর্থ হলো: তুমি সঠিক পথ অনুসরণ কর এবং সুপথের অনুসারীরে সংখ্যার কমতি তোমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে না। আর ভ্রান্ত পথ থেকে দূরে থাক এবং বিপথগামীদের সংখ্যাধিক্যের দ্বারা প্রতারিত হয়ো না।

আর যে ব্যক্তির মনে জাগ্রত হয় যে, হাত দ্বারা স্পর্শ ও অনুরূপ কর্মকাণ্ড বেশি বেশি বরকত অর্জনে সহায়ক, সে ব্যক্তি স্বীয় মূর্খতা ও অসতর্কতার সাগরে ডুবে আছে; কারণ, বরকত তো শুধু ঐ কাজের মধ্যে আছে, যা শরী‘আতসম্মত, আর কীভাবে সঠিক পথ বাদ দিয়ে ভুল পথে ফযীলত ও মর্যাদা কামনা করা যায়? [আল-মাজমূ‘উ শরহু ‘আল-মুহায্যাব’: (৮/২৫৭-২৫৮); আরও দেখুন: ‘আদ-দীন আল-খালেস’: (৩/৬০০)।]।”

আর এ বরকতময় দেশের সরকার কিছু ব্যক্তিকে নিয়োগ দিয়েছেন, যারা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কবরের চার পাশে দাঁড়িয়ে থেকে জনগণকে এসব কাজ থেকে বাধা প্রদান করে এবং তাদের সঠিক পথ দেখিয়ে দেয় -আল্লাহ তাদেরকে উত্তম পুরস্কার দান করুন। আর আকীদাগত বিরোধের অধিকাংশই দেখা যায় নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কবরের নিকট।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন