মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
কালেমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর অর্থ, শর্তসমূহ এবং ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে তার প্রভাব
লেখকঃ শায়খ সালেহ ইবন ফাওযান আলে-ফাওযান
১১
কালেমা لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ এর প্রভাব
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/24/11
সত্য এবং নিষ্ঠার সাথে এ মহান কালেমা পাঠ করলে এবং এর প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য দাবী অনুযায়ী আমল করলে ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে এ কালেমার এক বিশেষ সুফল প্রতিফলিত হবে। তন্মধ্যে নিম্নবর্তী বিষয়গুলো উল্লেখযোগ্য:
ক) এই কালেমা মুসলিমদের মধ্যে একতা সৃষ্টি করে আর এর ফলস্বরূপ তারা আল্লাহর বলে বলিয়ান হয়ে বিজয় সূচিত করতে পারে আল্লাহদ্রোহীদের ওপর, কেননা তখন তারা একই দ্বীনের অনুসারি এবং একই আকিদায় বিশ্বাসী হয়ে পড়ে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“তিনিই তোমাকে শক্তি যুগিয়েছেন আপন সাহায্যে ও মুমিনদের দিয়ে। আর তিনি প্রীতি সঞ্চার করেছেন তাদের অন্তরে। জমিনের সকল সম্পদ ব্যায় করলে ও তুমি তাদের হৃদয়ে প্রীতি সঞ্চার করতে পারতে না। কিন্তু আল্লাহ তাদের মনে পারস্পরিক প্রীতি সঞ্চার করেছেন, নিশ্চয় তিনি পরাক্রমশালী এবং প্রজ্ঞাময়’। [সূরা আল-আনফাল, আয়াত: ৬২-৬৩]
ইসলামী আকীদায় যদি অনৈক্য সৃষ্টি হয় তাহলে তা থেকে পরস্পরের মধ্যে বিভক্তি এবং ঝগড়া কলহের জন্ম নেয়। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“অতঃপর তারা তাদের কাজকে বহুধা বিভক্ত করে দিয়েছে প্রত্যেক সম্প্রদায় নিজ নিজ মতবাদ নিয়ে আনন্দিত।” [সূরা আল-মুমিনূন, আয়াত: ৫৩]
অতএব, মানুষের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টির একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে তাওহীদ ও ঈমানি আকীদার বন্ধনে একত্রিত হওয়া। আর এটাই لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ এর একমাত্র অর্থ। ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পূর্বে আরবদের অবস্থা এবং তাদের পরবর্তী অবস্থা বিবেচনা করলেই একথা সুস্পষ্ট বুঝা যাবে।
খ) لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ এই কালেমার ভিত্তিতে গড়ে উঠা সমাজের মধ্যে ফিরে আসে শান্তি আর নিরাপত্তার গ্যার্যান্টি; কেননা এ ধরনের ঈমানের ফলে ঐ সমাজের প্রত্যেক ব্যক্তিই আল্লাহ যা হালাল করেছেন তা গ্রহণ করে আর যা হারাম করেছেন তাকে পরিহার করে, সকল মানুষ ফিরে আসে সীমালংঘন অত্যাচার ও শত্রুতার পথ থেকে এবং একে অপরের প্রতি বাড়িয়ে দেয় সহানুভূতি, ভালোবাসা ও ভ্রাতৃত্বের হাত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“নিশ্চয় মুমিনরা একে অপরের ভাই’। [সূরা আল-হুজুরাত, আয়াত: ১০]
আর এই বাণীর অনুসরণে একে অপরকে জড়িয়ে নেয় প্রীতি আর ভালবাসার জালে। এর বাস্তব নিদর্শন হলো আরবদের অবস্থা। তারা এ কালেমার ছায়াতলে একত্রিত হওয়ার পূর্বে একে অপরের চরম শত্রু ছিল। হত্যা, লুন্ঠন আর রাহাজানির জন্য তারা গর্ববোধ করত। আর যখন তারা لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ এর ঝাণ্ডাতলে একত্রিত হলো তখন গড়ে উঠল তাদের মাঝে ভ্রাতৃত্বের সীসাঢালা প্রাচীর। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“আর তোমরা সে নি‘আমতের কথা স্মরণ কর, যা আল্লাহ তোমাদেরকে দান করেছেন। তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে অতঃপর আল্লাহ তোমাদের মনে সম্প্রীতি দান করেছেন, ফলে তাঁর অনুগ্রহে তোমরা পরস্পর ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছ”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১০৩]
গ) এ কালেমার বন্ধনে একত্রিত হয়ে মুসলিমগণ লাভ করবে খেলাফতের দায়িত্ব এবং নেতৃত্বদান করবে এ পৃথিবীর, আর তারা দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে মোকাবিলা করবে সকল ষড়যন্ত্র ও বিভিন্ন মতবাদের। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে আল্লাহ তাদেরকে ওয়াদা দিয়েছেন যে, তাদেরকে অবশ্যই পৃথিবীতে প্রতিনিধিত্ব দান করবেন, যেমন তিনি প্রতিনিধিত্ব দান করেছেন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে এবং তিনি অবশ্যই সুদৃঢ় করবেন তাদের দ্বীনকে; যে দ্বীনকে তিনি পছন্দ করেছেন তাদের জন্য এবং ভয়-ভীতির পরিবর্তে অবশ্যই তাদেরকে শান্তি দান করবেন, তারা একমাত্র আমারই ইবাদত করে এবং আমার সাথে কোনো কিছুকে শরীক করবে না।” [সূরা আন-নূর, আয়াত: ৫৫]
এখানে এই মহান সফলতা অর্জনের জন্য আল্লাহ তা‘আলা একমাত্র তাঁর ইবাদত করা এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক না করার শর্তারোপ করেছেন আর এটাই হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর দাবী ও অর্থ।
ঘ) যে ব্যক্তি ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’ এর স্বীকৃতি দান করবে এবং এর দাবী অনুযায়ী আমল করবে তার হৃদয়ের মধ্যে খুঁজে পাবে এক অনাবিল প্রশান্তি। কেননা সে এক প্রতিপালকের ইবাদাত করে এবং তিনি কি চান এবং কিসে তিনি রাজি হবেন সে অনুপাতে কাজ করে এবং যে কাজে তিনি নারাজ হবেন তা থেকে বিরত থাকে। আর যে ব্যক্তি বহু দেব-দেবীর পূজা করে তার হৃদয়ে এমন প্রশান্তি আসতে পারে না, কারণ ঐ সমস্ত উপাস্যদের প্রত্যেকের উদ্দেশ্য হবে ভিন্ন ভিন্ন এবং প্রত্যেকে চাইবে তাকে ভিন্ন ভাবে পরিচালনা করার জন্য। আল্লাহ বলেন,
“আল্লাহ একটি দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন, কোনো একজন লোকের উপর পরস্পর বিরোধী কয়েকজন মালিক রয়েছে আরেক ব্যক্তির প্রভু মাত্র একজন, তাদের উভয়ের উদাহরণ কি সমান?” [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ২৯]
ইমাম ইবনুল কাইয়্যেম বলেন, এখানে আল্লাহ একজন মুশরিক ও একজন একত্ববাদে বিশ্বাসী ব্যক্তির অবস্থা বুঝাবার জন্য এ উদাহরণ দিয়েছেন। একজন মুশরিকের অবস্থা হচ্ছে এমন একজন দাস বা চাকরের মত যার ওপর কর্তৃত্ব রয়েছে একত্রে কয়েকজন মালিকের। আর ঐ সমস্ত মালিকরা হচ্ছে পরস্পর বিরোধী, তাদের সম্পর্ক হচ্ছে দা-কুমড়ার সম্পর্ক, একজন অপর জনের চির শত্রু। আর আয়াতে বর্ণিত (মোতাশাকেছ) এর অর্থ হলো, ‘যে ব্যক্তির চরিত্র অত্যন্ত খারাপ’ আর মুশরিক যেহেতু বিভিন্ন উপাস্যের পূজা করে সেহেতু তার উপমা দেওয়া হয়েছে ঐ দাস বা চাকরের সাথে যার মালিক হচ্ছে একত্রে কয়েকজন ব্যক্তি, যাদের প্রত্যেকেই তার খেদমত পাওয়ার জন্য প্রতিযোগিতা করে। এমতাবস্থায় তার পক্ষে এসব মালিকদের সবার সন্তুষ্টি অর্জন করা অসম্ভব। আর যে ব্যক্তি শুধুমাত্র এক আল্লাহর ইবাদত করে তার উদাহরণ হচ্ছে ঐ চাকরের মতো যে শুধুমাত্র একজন মালিকের অধীনস্ত সে তার মালিকের উদ্দেশ্য সম্বন্ধে অবগত থাকে এবং তার মনোতুষ্টির পথ সে জানে। তাই এ চাকরের জন্য বহু মালিকের অত্যাচার ও নিপীড়নের ভয় থাকে না। শুধু তাই নয় নিজের মনিবের প্রীতি, ভালোবাসা, দয়া ও করুণা নিয়ে অত্যন্ত নিরাপদে সে তার নিকট বসবাস করে। এখন প্রশ্ন হলো এ দু’জন চাকরের অবস্থা কি এক? [ইবনুল কাইয়্যেম, ই‘লামুল মুওয়াক্কে‘য়ীন, ১/১৮৭।]!
ঙ) এ ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’ কালেমার অনুসারীরা দুনিয়া ও আখেরাতে সম্মান ও সুমহান মর্যাদা লাভ করবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“যে আল্লাহর দিকে একনিষ্ঠ হয়ে তাঁর সাথে শরীক না করে এবং যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে যেন আকাশ থেকে ছিটকে পড়ল, অতঃপর মৃতভোজী পাখি তাকে ছোঁ মেরে নিয়ে গেল অথবা বাতাস তাকে উড়িয়ে নিয়ে কোনো দূরবর্তী স্থানে নিক্ষেপ করল”। [সূরা আল-হাজ, আয়াত: ৩১] এ আয়াত থেকে বুঝা যায় যে, তাওহীদ সুউচ্চে উঠা ও উন্নত শিখরে আরোহণ পক্ষান্তরে শির্ক হচ্ছে পতিত হওয়া, নীচে নামা ও অতল গহ্বরে নিক্ষিপ্ত হওয়া।
আল্লামা ইবনুল কাইয়্যেম রহ. বলেন, ঈমান এবং তাওহীদের সুমহান মর্যাদা, প্রশস্তি ও সম্মানের কারণে এর উদাহরণ দেওয়া হয়েছে সুমহান আকাশের সাথে, যার দ্বারা সে উর্ধ্বলোকে উঠে এবং অবতরণ স্থান, সে সেখান থেকে যমীনে অবতরণ করে এবং যমীন থেকে সেটার দিকেই আরোহণ করে। আর ঈমান ও তাওহীদ পরিত্যাগকারীর উদাহরণ দেওয়া হয়েছে আকাশ থেকে যমীনের অতল গহ্বরে পড়ে যাওয়ার সাথে, যার ফলে তার হৃদয় মন হয়ে আসে ভীষণ সংকুচিত, আর সে অনুভব করে কষ্টের পর কষ্ট, আঘাতের পর আঘাত। আর যেখানে রয়েছে এমন পাখি যে তার অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলো ছোঁ মেরে নিয়ে যাবে ও ছিন্ন-ভিন্ন করে দিবে। ঐ পাখির উদাহরণ দিয়ে বুঝানো হয়েছে এমন শয়তানদের যারা তার সহযোগী হবে এবং তাকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়ার জন্য অস্থির ও বিব্রত করতে থাকবে। আর যে বাতাস তাকে দূরবর্তী সংকীর্ণ স্থানে নিক্ষেপ করবে তা হলো তার মনের কামনা বাসনা, যা তাকে আকাশ থেকে মাটির অতল গহ্বরে নিক্ষেপ করতে প্রলুব্ধ করবে। [ইবনুল কাইয়্যেম, ই‘লামুল মুওয়াক্কি‘য়ীন, ১/১৮০।]
চ) এ কালেমা তার জীবন সম্পদ ও সম্মানের নিরাপত্তা দান করবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “আমি আদিষ্ট হয়েছি মানুষের সাথে জিহাদ করার জন্য যে পর্যন্ত না তারা বলবে, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ আর যখন তারা এ স্বীকৃতি দান করবে তখন আমার নিকট থেকে তাদের জীবন ও সম্পদকে নিরাপদ করবে। তবে তার (ইসলামের) কোনো হক বা অধিকার লঙ্ঘন হলে তা আর নিরাপদ থাকবে না”।
এখানে “তার হক বা অধিকার” বলতে বুঝানো হয়েছে, তারা যখন এ কালেমার স্বীকৃতি এবং দাবী অনুযায়ী কাজ করা থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখবে, অর্থাৎ তাওহীদের ওপর অবিচল থাকবে না, ইবাদতকে শির্ক মুক্ত করবে না ও ইসলামের প্রধান প্রধান কাজগুলো আদায় করবে না, তখন ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর স্বীকৃতি তাদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা দান করবে না বরং এজন্য তাদের জীবন নাশ করা হবে এবং তাদের সম্পদকে মুসলিমদের জন্য গনীমত হিসেবে গ্রহণ করা হবে, যেভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর খলীফাগণ করেছেন।
এছাড়া ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে ইবাদত, মু‘আমালাত (লেন-দেন) চরিত্র গঠন, আচার অনুষ্ঠান সবকিছুতেই এ কালেমার প্রভাব পড়বে।
পরিশেষে আল্লাহর তাওফীক কামনা করি। আল্লাহর পক্ষ থেকে সালাত ও সালাম পেশ করা হোক আমাদের নবী মুহাম্মাদের ওপর এবং তাঁর পরিবার-পরিজন ও সাহাবায়ে কেরামের ওপর।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/24/11
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।