HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কালেমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর অর্থ, শর্তসমূহ এবং ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে তার প্রভাব

লেখকঃ শায়খ সালেহ ইবন ফাওযান আলে-ফাওযান

ব্যক্তি জীবনে কালেমা لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ এর গুরুত্ব ও মর্যাদা:
এটি এমন এক গুরুত্বপূর্ণ বাণী যা মুসলিমগণ তাদের আযান, ইকামাত, বক্তৃতা-বিবৃতিতে বলিষ্ঠ কন্ঠে ঘোষণা করে থাকে, এটি এমন এক কালেমা যার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আসমান জমিন, সৃষ্টি হয়েছে সমস্ত মাখলুকাত। আর এর প্রচারের জন্য আল্লাহ যুগে যুগে পাঠিয়েছেন অসংখ্য রাসুল এবং নাযিল করেছেন আসমানি কিতাবসমূহ, প্রণয়ন করেছেন অসংখ্য বিধান। প্রতিষ্ঠিত করেছেন মীযান এবং ব্যবস্থা করেছেন পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসেবের, তৈরি করেছেন জান্নাত এবং জাহান্নাম। এই কালেমাকে স্বীকার করা এবং অস্বীকার করার মাধ্যমে মানব সম্প্রদায় ঈমানদার এবং কাফির এই দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে। অতএব, সৃষ্টি জগতে মানুষের কর্ম, কর্মের ফলাফল, পুরস্কার অথবা শাস্তি সব কিছুরই উৎস হচ্ছে এই কালেমা। এরই জন্য উৎপত্তি হয়েছে সৃষ্টি কুলের, এ সত্যের ভিত্তিতেই আখেরাতের জিজ্ঞাসাবাদ এবং এর ভিত্তিতেই প্রতিষ্ঠিত হবে সাওয়াব ও শাস্তি। এই কালেমার ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মুসলিমদের কিবলা এবং এ হলো মুসলিমদের জাতি সত্তার ভিত্তি-প্রস্তর এবং এর প্রতিষ্ঠার জন্য খাপ থেকে খোলা হয়েছে জিহাদের তরবারী।

বান্দার ওপর এটাই হচ্ছে আল্লাহর অধিকার, এটাই ইসলামের মূল বক্তব্য ও শান্তির আবাসের (জান্নাতের) চাবিকাঠি এবং পূর্বা-পর সকলই জিজ্ঞাসিত হবে এই কালেমা সম্পর্কে।

আল্লাহ কিয়ামতের দিন প্রত্যেক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করবেন, তুমি কার ইবাদত করেছ? নবীদের ডাকে কতটুকু সাড়া দিয়েছ? এ দুই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া ব্যতীত কোনো ব্যক্তি তার দুটো পা সামান্যতম নাড়াতে পারবে না। আর প্রথম প্রশ্নের সঠিক উত্তর হবে لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ কে ভালোভাবে জেনে এর স্বীকৃতি দান করা এবং এর দাবী অনুযায়ী কাজ করার মাধ্যমে। আর দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর সঠিক হবে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রাসূল হিসেবে মেনে তাঁর নির্দেশের আনুগত্যের মাধ্যমে। আর এ কালেমাই হচ্ছে কুফুর ও ইসলামের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টিকারী। এ হচ্ছে আল্লাহভীতির কালেমা ও মজবুত অবলম্বন এবং এ কালেমাই ইবরাহীম আলাইহিস সালাম রেখে গেলেন।

﴿وَجَعَلَهَا كَلِمَةَۢ بَاقِيَةٗ فِي عَقِبِهِۦ لَعَلَّهُمۡ يَرۡجِعُونَ ٢٨ ﴾ [ الزخرف : ٢٨ ]

“অক্ষয় বাণীরূপে তাঁর পরবর্তীতে তাঁর সন্তানদের জন্য যেন তারা ফিরে আসে এ পথে”। [সূরা আয-যুখরুফ আয়াত: ২৮]

এই সেই কালেমা যার সাক্ষ্য আল্লাহ তা‘আলা স্বয়ং নিজেই নিজের জন্য দিয়েছেন, আরো দিয়েছেন ফিরিশতাগণ ও জ্ঞানী ব্যক্তিগণ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿شَهِدَ ٱللَّهُ أَنَّهُۥ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ وَٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ وَأُوْلُواْ ٱلۡعِلۡمِ قَآئِمَۢا بِٱلۡقِسۡطِۚ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلۡعَزِيزُ ٱلۡحَكِيمُ ١٨ ﴾ [ ال عمران : ١٨ ]

“আল্লাহ সাক্ষ্য দিয়েছেন, নিশ্চয় তিনি ছাড়া আর কোনো সত্য মা‘বুদ নেই এবং ফিরেশতাগণ ও ন্যায়নিষ্ঠ জ্ঞানীগণও সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, তিনি ছাড়া আর কোনো সত্য ইলাহ নেই। তিনি পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়’। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৮]

এ কালেমাই ইখলাস তথা সত্যনিষ্ঠার বাণী, এটাই সত্যের সাক্ষ্য ও তার দাওয়াত এবং শির্ক এর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার বাণী এবং এ জন্যই সমস্ত সৃষ্টি জগতের সৃষ্টি। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمَا خَلَقۡتُ ٱلۡجِنَّ وَٱلۡإِنسَ إِلَّا لِيَعۡبُدُونِ ٥٦ ﴾ [ الذاريات : ٥٦ ]

“আমি জিন্ন ও ইনসানকে শুধুমাত্র আমার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি”। [সূরা আয-যারিয়াত, আয়াত: ৫৬]

এই কালেমা প্রচারের জন্য আল্লাহ সমস্ত রাসূল এবং আসমানি কিতাবসমূহ প্রেরণ করেছেন, তিনি বলেন,

﴿وَمَآ أَرۡسَلۡنَا مِن قَبۡلِكَ مِن رَّسُولٍ إِلَّا نُوحِيٓ إِلَيۡهِ أَنَّهُۥ لَآ إِلَٰهَ إِلَّآ أَنَا۠ فَٱعۡبُدُونِ ٢٥﴾ [ الانبياء : ٢٥ ]

“আমরা তোমার পূর্বে যে রাসূলই প্রেরণ করেছি তাঁর নিকট এই প্রত্যাদেশ পাঠিয়েছি যে, আমি ছাড়া অন্য কোনো সত্য মা‘বুদ নেই অতএব তোমরা আমারই ইবাদত কর’। [সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ২৫]

আল্লাহ আরো বলেন,

﴿يُنَزِّلُ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةَ بِٱلرُّوحِ مِنۡ أَمۡرِهِۦ عَلَىٰ مَن يَشَآءُ مِنۡ عِبَادِهِۦٓ أَنۡ أَنذِرُوٓاْ أَنَّهُۥ لَآ إِلَٰهَ إِلَّآ أَنَا۠ فَٱتَّقُونِ ٢﴾ [ النحل : ٢ ]

“তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার প্রতি ইচ্ছা স্বীয় নির্দেশে রূহ (ওহী) সহ ফিরিশতা প্রেরণ করেন এই বলে যে, তোমরা সতর্ক কর যে, আমি ছাড়া আর কোনো সত্য মা‘বুদ নেই। অতএব, তোমরা আমাকেই ভয় কর”। [সূরা আন-নাহল, আয়াত: ২]

ইবন উইয়াইনা বলেন, “বান্দার ওপর আল্লাহ তা‘আলার সবচেয়ে প্রধান এবং বড় নি‘আমত হলো তিনি তাদেরকে لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ তাঁর এই একত্ববাদের সাথে পরিচয় করে দিয়েছেন। দুনিয়ার পিপাসা কাতর তৃষ্ণার্ত একজন মানুষের নিকট ঠাণ্ডা পানির যে মূল্য, আখেরাতে জান্নাতবাসীদের জন্য এ কালেমা তদ্রূপ’ [ইবন রাজাব, কালেমাতুল ইখলাস, পৃ. ৫২-৫৩।]।

তাছাড়া যে ব্যক্তি এ কালেমার স্বীকৃতি দান করল সে তার সম্পদ এবং জীবনের নিরাপত্তা গ্রহণ করল। আর যে ব্যক্তি তা অস্বীকার করল সে তার জীবন ও সম্পদ নিরাপদ করল না।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«مَنْ قَالَ : لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، وَكَفَرَ بِمَا يُعْبَدُ مَنْ دُونِ اللهِ، حَرُمَ مَالُهُ، وَدَمُهُ، وَحِسَابُهُ عَلَى اللهِ»

“যে ব্যক্তি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ এর স্বীকৃতি দান করল এবং আল্লাহ ছাড়া অন্য সব উপাস্যকে অস্বীকার করল, তার ধন- সম্পদ ও জীবন নিরাপদ হল এবং তার কৃতকর্মের হিসাব আল্লাহর ওপর বর্তাল”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৩।]

একজন কাফিরকে ইসলামের প্রতি আহ্বানের জন্য প্রথম এই কালেমার স্বীকৃতি চাওয়া হয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মু‘আয রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে ইয়ামানে ইসলামের দাওয়াতের জন্য পাঠান তখন তাঁকে বলেন,

«إِنَّكَ تَأْتِي قَوْمًا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ، فَادْعُهُمْ إِلَى شَهَادَةِ أَنَّ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ»

“তুমি আহলে কিতাবের নিকট যাচ্ছ, অতএব সর্বপ্রথম তাদেরকে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর সাক্ষ্য দান করার জন্য আহ্বান করবে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৩৪৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৯।]

প্রিয় পাঠকগণ, এবার চিন্তা করুন, দীনের দৃষ্টিতে কোন পর্যায়ে এ কালেমার স্থান এবং এর গুরুত্ব কতটুকু। এজন্যই বান্দার প্রথম কাজ হলো এ কালেমার স্বীকৃতি দান করা; কেননা এ হলো সমস্ত কর্মের মূল ভিত্তি।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন