HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কালেমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর অর্থ, শর্তসমূহ এবং ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে তার প্রভাব

লেখকঃ শায়খ সালেহ ইবন ফাওযান আলে-ফাওযান

لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ এর ফযীলত:
এ কালেমার অনেক ফযীলত বর্ণিত হয়েছে এবং আল্লাহর নিকট এর বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। তন্মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য:

যে ব্যক্তি সত্য-সত্যিই কায়মনোবাক্যে এ কালেমা পাঠ করবে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। আর যে ব্যক্তি মিছে-মিছি এ কালেমা পাঠ করবে তা দুনিয়াতে তার জীবন ও সম্পদের হিফাযত করবে বটে, তবে তাকে এর হিসাব আল্লাহর নিকট দিতে হবে।

এটি একটি সংক্ষিপ্ত বাক্য, হাতেগোনা কয়েকটি বর্ণ এবং শব্দের সমারোহ মাত্র, উচ্চারণেও অতি সহজ কিন্তু কিয়ামতের দিন মীযানের পাল্লায় হবে অনেক ভারী।

ইবন হিব্বান এবং আল হাকেম আবু সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«قَالَ مُوسَى يَا رب عَلمنِي شَيْئا أذكرك وأدعوك بِهِ قَالَ يَا مُوسَى قل لَا إِلَه إِلَّا الله قَالَ كل عِبَادك يَقُولُونَ هَذَا قَالَ يَا مُوسَى لَو أَن السَّمَوَات السَّبع وعامرهن غَيْرِي والأرضيين السَّبع فِي كفة وَلَا إِلَه إِلَّا الله فِي كفة مَالَتْ بِهن لَا إِلَه إِلَّا الله»

“মূসা ‘আলাইহিস সালাম একদা আল্লাহ তা‘আলাকে বললেন, হে রব, আমাকে এমন একটি বিষয় শিক্ষা দান করুন যা দ্বারা আমি আপনাকে স্মরণ করব এবং আপনাকে আহ্বান করব। আল্লাহ বললেন, হে মূসা বলো, لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ মূসা ‘আলাইহিস সালাম বললেন, এতো আপনার সকল বান্দাই বলে থাকে। আল্লাহ বললেন, হে মূসা, আমি ব্যতীত সপ্তাকাশ ও এর মাঝে অবস্থানকারী সকল কিছু এবং সপ্ত জমীন যদি এক পাল্লায় রাখা হয় আর لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ এক পাল্লায় রাখা হয় তা হলে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর পাল্লা ভারী হবে”। (হাকেম বলেন, হাদীসটি সহীহ)। [হাকেম (১/৫২৮); ইবন হিব্বান, হাদীস নং (২৩২৪) মাওয়ারিদ।]

অতএব, এ হাদীসের মাধ্যমে প্রমাণ পাওয়া গেল যে, লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ হচ্ছে, সবচেয়ে উত্তম যিকির।

আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সবচেয়ে উত্তম দো‘আ ‘আরাফাত দিবসের দো‘আ এবং সবচেয়ে উত্তম কথা যা আমি এবং আমার পূর্ববর্তী নবীগণ বলেছেন, তা হলো,

لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ ، لَهُ الـمُـلْكُ وَ لَهُ الحَمْدُ وَ هُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ

“একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কোনো সত্য মা‘বুদ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই। রাজত্ব একমাত্র তাঁরই জন্য এবং প্রশংসা একমাত্র তাঁরই জন্য, তিনি সকল কিছুর ওপর ক্ষমতাবান’। [তিরমিযী, কিতাবুদ দাওয়াহ্, হাদীস নং-২৩২৪।]

এ কালেমা যে সমস্ত কিছু থেকে গুরুত্বপূর্ণ ও ভারী তার আরেকটি প্রমাণ হলো, আবদুল্লাহ ইবন ‘আমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে অপর একটি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«إِنَّ اللَّهَ سَيُخَلِّصُ رَجُلًا مِنْ أُمَّتِي عَلَى رُءُوسِ الخَلَائِقِ يَوْمَ القِيَامَةِ فَيَنْشُرُ عَلَيْهِ تِسْعَةً وَتِسْعِينَ سِجِلًّا كُلُّ سِجِلٍّ مِثْلُ مَدِّ البَصَرِ، ثُمَّ يَقُولُ : أَتُنْكِرُ مِنْ هَذَا شَيْئًا؟ أَظَلَمَكَ كَتَبَتِي الحَافِظُونَ؟ فَيَقُولُ : لَا يَا رَبِّ، فَيَقُولُ : أَفَلَكَ عُذْرٌ؟ فَيَقُولُ : لَا يَا رَبِّ، فَيَقُولُ : بَلَى إِنَّ لَكَ عِنْدَنَا حَسَنَةً، فَإِنَّهُ لَا ظُلْمَ عَلَيْكَ اليَوْمَ، فَتَخْرُجُ بِطَاقَةٌ فِيهَا : أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ، فَيَقُولُ : احْضُرْ وَزْنَكَ، فَيَقُولُ : يَا رَبِّ مَا هَذِهِ البِطَاقَةُ مَعَ هَذِهِ السِّجِلَّاتِ، فَقَالَ : إِنَّكَ لَا تُظْلَمُ " ، قَالَ : «فَتُوضَعُ السِّجِلَّاتُ فِي كَفَّةٍ وَالبِطَاقَةُ فِي كَفَّةٍ، فَطَاشَتِ السِّجِلَّاتُ وَثَقُلَتِ البِطَاقَةُ، فَلَا يَثْقُلُ مَعَ اسْمِ اللَّهِ شَيْءٌ»

“কিয়ামতের দিন আমার উম্মাতের এক ব্যক্তিকে সকল মানুষের সামনে ডাকা হবে, তার সামনে নিরানব্বইটি (পাপের) নিবন্ধ পুস্তক রাখা হবে এবং একেকটি পুস্তকের পরিধি হবে চক্ষুদৃষ্টির সীমারেখার সমান। এর পর তাকে বলা হবে, এই নিবন্ধ পুস্তকে যা কিছু লিপিবদ্ধ হয়েছে তা কি তুমি অস্বীকার কর? উত্তরে ঐ ব্যক্তি বলবে, হে রব আমি তা অস্বীকার করি না। তারপর বলা হবে, এর জন্য তোমার কোনো আপত্তি আছে কিনা? অথবা এর পরিবর্তে তোমার কোনো নেক কাজ আছে কিনা? তখন সে ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় বলবে, না তাও নেই। অতঃপর বলা হবে, আমার নিকট তোমার কিছু পুণ্যের কাজ আছে এবং তোমার ওপর কোনো প্রকার অত্যাচার করা হবে না, অতঃপর তার জন্য একখানা কার্ড বের করা হবে তাতে লেখা থাকবে,

أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ وَ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَ رَسُوْلُهُ

‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো সত্য মা‘বুদ নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল।’ তখন ঐ ব্যক্তি বিস্ময়ের সাথে বলবে, হে আমার রব, এই কার্ডখানা কি নিরানব্বইটি নিবন্ধ পুস্তকের সমতুল্য হবে? তখন বলা হবে, তোমার ওপর কোনো প্রকার অত্যাচার করা হবে না। এর পর ঐ নিরানব্বইটি পুস্তক এক পাল্লায় রাখা হবে এবং ঐ কার্ড খানা এক পাল্লায় রাখা হবে তখন ঐ পুস্তক গুলোর ওজন কার্ড খানার তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য হবে এবং কার্ডের পাল্লা ভারী হবে।” [জামে‘ আত তিরমিযী, হাদিস নং ২৬৩৯; আল-হাকেম ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৫-৬।]

হাফেয ইবন রজব রহ. তার ‘কালেমাতুল ইখলাস’ নামক গ্রন্থে এ মহামূল্যবান কালেমার আরো বহু ফযীলত বর্ণনা করেছেন এবং প্রত্যেকটির সপক্ষে দলীল-প্রমাণাদি উল্লেখ করেছেন। তন্মধ্যে রয়েছে, এই কালেমা হবে জান্নাতের মূল্য, কোনো ব্যক্তি জীবনের শেষ মূহুর্তেও এ কালেমা পাঠ করে মারা গেলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে, এটাই জাহান্নাম থেকে মুক্তির একমাত্র পথ এবং আল্লাহর ক্ষমা নিশ্চিত করার মাধ্যম, সমস্ত পূণ্য কাজগুলোর মধ্যে এ কালেমাই শ্রেষ্ঠ, এটি পাপ পঙ্কিলতাকে দূর করে, হৃদয় মনে ঈমানের যা কিছু নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় এ কালেমা সেগুলোকে সজীব করে, স্তুপকৃত পাপ-রাশি সম্বলিত বালাম গ্রন্থগুলোর উপর এ কালেমা ভারী হবে। আল্লাহকে পাওয়ার পথে যতসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে সব কিছুকে এ কালেমা ছিন্ন-ভিন্ন করে আল্লাহর নিকট পৌঁছে দিবে। এ কালেমার স্বীকৃতি দানকারীকে আল্লাহ সত্যায়িত করবেন। নবীদের কথার মধ্যে উত্তম কথা হলো এটাই, সবচেয়ে উত্তম আমল হচ্ছে এটিই, আর এটি হচ্ছে এমন আমল যা বহুগুণ বর্ধিত হয়। এটি গোলাম আযাদ করার সমতুল্য। শয়তান থেকে হিফাযতকারী। কবর ও হাশরের বিভীষিকাময় অবস্থার নিরাপত্তা দানকারী। কবর থেকে দণ্ডায়মান হওয়ার পর এ কালেমাই হবে মুমিনদের শ্লোগান।

এ কালেমার ফযীলতের মধ্যে আরো হচ্ছে, এই কালেমার স্বীকৃতি দানকারির জন্য জান্নাতের আটটি দ্বার খুলে দেওয়া হবে এবং সে ইচ্ছামত যে কোনো দ্বার দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে।

এ কালেমার অন্য ফযীলত হচ্ছে, এর সাক্ষ্যদানকারী এর দাবী অনুযায়ী পূর্ণভাবে কাজ না করার ফলে এবং বিভিন্ন অপরাধের ফল স্বরূপ জাহান্নামে প্রবেশ করলেও অবশ্যই কোনো এক সময় জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করবে।

ইবন রজব রহ. তার উক্ত বইতে এই কালেমার এ সব ফযীলত বর্ণনার জন্য যে পরিচ্ছেদ রচনা করেছেন এ হচ্ছে তার বর্ণনা। তিনি এসবগুলো দলীল প্রমাণাদিসহ বর্ণনা করেছেন। [ইবন রাজাব, কালেমাতুল ইখলাস, পৃ. ৫৪-৬৬।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন