HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
বিদআত
লেখকঃ ইকবাল হোসাইন মাছুম
শাব্দিক অর্থে বেদআত البدع থেকে উদ্ভূত। যার অর্থ হচ্ছে,
الاختراع على غير مثال سابق .
অর্থাৎ অতীত দৃষ্টান্ত ব্যতীত নতুন আবিষ্কার।
এ থেকেই আল্লাহ তাআলার বাণী :
بَدِيعُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ . البقرة :(117)
অর্থাৎ ‘অতীত দৃষ্টান্ত ব্যতীত আকাশ জমিনের সৃষ্টিকর্তা। এবং
قُلْ مَا كُنْتُ بِدْعًا مِنَ الرُّسُلِ ( الأحقاف :9)
অর্থাৎ ‘আমিই প্রথম ব্যক্তি নই যে আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষের নিকট রিসালতের দায়িত্ব নিয়ে এসেছি।’ বরং আমার পূর্বে বহু রাসূল অতীত হয়েছেন। প্রচলন আছে : ابتدع فلان بدعة অর্থাৎ এমন পদ্ধতি শুরু করেছে যা ইতিপূর্বে কেউ করেনি। শরয়ি পরিভাষায় বেদআত বলা হয়—
ما أحدث فى الدين على خلاف ماكان عليه النبي صلى الله عليه وسلم وأصحابه من عقيدة وعمل .
‘দ্বীনের মধ্যে রাসূল সা. ও সাহাবা কর্তৃক প্রবর্তিত আক্বিদা ও আমল পরিপন্থী নতুন আক্বিদা ও আমলের প্রচলন ঘটানো।’
الاختراع على غير مثال سابق .
অর্থাৎ অতীত দৃষ্টান্ত ব্যতীত নতুন আবিষ্কার।
এ থেকেই আল্লাহ তাআলার বাণী :
بَدِيعُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ . البقرة :(117)
অর্থাৎ ‘অতীত দৃষ্টান্ত ব্যতীত আকাশ জমিনের সৃষ্টিকর্তা। এবং
قُلْ مَا كُنْتُ بِدْعًا مِنَ الرُّسُلِ ( الأحقاف :9)
অর্থাৎ ‘আমিই প্রথম ব্যক্তি নই যে আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষের নিকট রিসালতের দায়িত্ব নিয়ে এসেছি।’ বরং আমার পূর্বে বহু রাসূল অতীত হয়েছেন। প্রচলন আছে : ابتدع فلان بدعة অর্থাৎ এমন পদ্ধতি শুরু করেছে যা ইতিপূর্বে কেউ করেনি। শরয়ি পরিভাষায় বেদআত বলা হয়—
ما أحدث فى الدين على خلاف ماكان عليه النبي صلى الله عليه وسلم وأصحابه من عقيدة وعمل .
‘দ্বীনের মধ্যে রাসূল সা. ও সাহাবা কর্তৃক প্রবর্তিত আক্বিদা ও আমল পরিপন্থী নতুন আক্বিদা ও আমলের প্রচলন ঘটানো।’
(১) অভ্যাস (ও জাগতিক প্রয়োজনের) ক্ষেত্রে আবিষ্কার—যথা বর্তমানে প্রচলিত ও নিত্য নতুন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারসমূহ। এগুলো মুবাহ (অনুআেদিত)। কারণ আদত ও অভ্যাসের ক্ষেত্রে আসল হচ্ছে ইবাহাহ الإباحة বা বৈধ হওয়া।
(২) দ্বীনের (ইসলাম ধর্মের) ক্ষেত্রে আবিষ্কার। এটি হারাম। কারণ দ্বীনের ক্ষেত্রে মূলনীতি হচ্ছে توقيف বা শরিয়তের সিদ্ধান্তের উপর অবস্থান করা। রাসূলুল্লাহ সা. বলেন:—
من أحدث فى أمرنا هذا ما ليس منه فهو رد .
‘যে আমাদের দ্বীনে নতুন কিছু সংযোজন ও সৃষ্টি করবে যা মূলত তাতে নেই সেটি পরিত্যাজ্য।’
এ হাদিস প্রমাণ করছে যে, দ্বীনের মধ্যে প্রত্যেক নতুন সৃষ্ট বিষয়ই বেদআত আর প্রত্যেক বেদআতই গোমরাহি ও পরিত্যাজ্য। এর অর্থ হচ্ছে ইবাদত ও আক্বিদার ক্ষেত্রে নতুন আবিষ্কার, যার নজির পূর্বে নেই—হারাম ও অবৈধ। তবে এ অবৈধতার প্রকৃতি ও ধরন বেদআতের ধরন অনুপাতে বিভিন্ন রূপের হয়। কিছু বিষয় আছে যা সরাসরি কুফুরী যেমন কবরবাসীদের নৈকট্য অর্জনের উদ্দেশ্যে কবর তাওয়াফ করা, কবরের উদ্দেশ্যে জবেহ করা, মান্নত প্রেরণ করা, কবরবাসীর নিকট দোয়া করা, ফরিয়াদ করা, সাহায্য প্রার্থনা করা, এমনি ভাবে গোড়া মু’তাযিলা ও জহমীদের আক্বিদা ও মাজহাব।
আবার কিছু বিষয় আছে যা শিরকের মাধ্যম। যেমন কবরের উপর সৌধ বা এ জাতীয় কিছু নির্মাণ করা কবরের নিকট সালাত আদায় করা, দোয়া করা—ইত্যাদি। কিছু বিষয় আছে যা ফিসকে ইতেকাদী বা বিশ্বাসগত ফিসক। যেমন কবিরা গোনাহে আক্রান্ত ব্যক্তিকে কাফের বলে রায় দেয়া বা কবিরা গোনাহে লিপ্ত হওয়াকে কুফরি জ্ঞান করা। আমলকে ঈমানের সংজ্ঞা থেকে বহিষ্কার করা অর্থাৎ আমলকে ঈমানের অন্তর্ভুক্ত মনে না করা। আবার কিছু কিছু বেদআত আছে যা শুধুমাত্র গোনাহ ও নাফরমানি—যেমন বিবাহ শাদি পরিত্যাগ করা। রোদে দাঁড়িয়ে সিয়াম পালন করা।
(২) দ্বীনের (ইসলাম ধর্মের) ক্ষেত্রে আবিষ্কার। এটি হারাম। কারণ দ্বীনের ক্ষেত্রে মূলনীতি হচ্ছে توقيف বা শরিয়তের সিদ্ধান্তের উপর অবস্থান করা। রাসূলুল্লাহ সা. বলেন:—
من أحدث فى أمرنا هذا ما ليس منه فهو رد .
‘যে আমাদের দ্বীনে নতুন কিছু সংযোজন ও সৃষ্টি করবে যা মূলত তাতে নেই সেটি পরিত্যাজ্য।’
এ হাদিস প্রমাণ করছে যে, দ্বীনের মধ্যে প্রত্যেক নতুন সৃষ্ট বিষয়ই বেদআত আর প্রত্যেক বেদআতই গোমরাহি ও পরিত্যাজ্য। এর অর্থ হচ্ছে ইবাদত ও আক্বিদার ক্ষেত্রে নতুন আবিষ্কার, যার নজির পূর্বে নেই—হারাম ও অবৈধ। তবে এ অবৈধতার প্রকৃতি ও ধরন বেদআতের ধরন অনুপাতে বিভিন্ন রূপের হয়। কিছু বিষয় আছে যা সরাসরি কুফুরী যেমন কবরবাসীদের নৈকট্য অর্জনের উদ্দেশ্যে কবর তাওয়াফ করা, কবরের উদ্দেশ্যে জবেহ করা, মান্নত প্রেরণ করা, কবরবাসীর নিকট দোয়া করা, ফরিয়াদ করা, সাহায্য প্রার্থনা করা, এমনি ভাবে গোড়া মু’তাযিলা ও জহমীদের আক্বিদা ও মাজহাব।
আবার কিছু বিষয় আছে যা শিরকের মাধ্যম। যেমন কবরের উপর সৌধ বা এ জাতীয় কিছু নির্মাণ করা কবরের নিকট সালাত আদায় করা, দোয়া করা—ইত্যাদি। কিছু বিষয় আছে যা ফিসকে ইতেকাদী বা বিশ্বাসগত ফিসক। যেমন কবিরা গোনাহে আক্রান্ত ব্যক্তিকে কাফের বলে রায় দেয়া বা কবিরা গোনাহে লিপ্ত হওয়াকে কুফরি জ্ঞান করা। আমলকে ঈমানের সংজ্ঞা থেকে বহিষ্কার করা অর্থাৎ আমলকে ঈমানের অন্তর্ভুক্ত মনে না করা। আবার কিছু কিছু বেদআত আছে যা শুধুমাত্র গোনাহ ও নাফরমানি—যেমন বিবাহ শাদি পরিত্যাগ করা। রোদে দাঁড়িয়ে সিয়াম পালন করা।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে নিশ্চয়ই পরিষ্কার হয়েছে যে দ্বীনের ভিতর সকল বেদআতই হারাম। যারা বেদআতকে হাসানাহ ও সাইয়্যেআহ বলে বিভক্ত করে, তারা ভুল করে থাকেন। এবং রাসূল সা.-এর বাণী— فإن كل بدعة ضلالة নিশ্চয়ই প্রত্যেক বেদআত গোমরাহি—এর বিরোধিতাকারী। কেননা, রাসূলুল্লাহ সা. বেদআত প্রসঙ্গে রায় দিতে গিয়ে বলেছেন প্রত্যেক বেদআতই গোমরাহি আর এরা বলছে, না প্রত্যেক বেদআত গোমরাহি নয় বরং কিছু বেদআত আছে হাসানাহ (ভাল)।
আল্লামা হফেয ইবনে রজব বলেন : নবী আকরাম সা.-এর বাণী كل بدعة ضلالة (প্রত্যেক বেদআত গোমরাহি) একটি جوامع الكلم তথা ব্যাপক অর্থ বোধক বাক্য। কোন কিছুই তার বহির্ভূত নয়। সকল প্রকারই তার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। এটি দ্বীনের একটি বিশেষ মূলনীতি। এটি রাসূলের নিম্নোক্ত বাণীর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ বক্তব্য। আল্লাহর রাসূল বলেন : من أحدث في أمرنا هذا ما ليس منه فهو رد . (যে ব্যক্তি আমাদের এ দ্বীনে নতুন কিছু উদ্ভাবন করবে যা তার অন্তর্ভুক্ত নয়, সেটি পরিত্যাজ্য হবে)—সুতরাং যে কেউ নতুন কিছু উদ্ভাবন ও প্রবর্তন করবে এবং তাকে দ্বীনের দিকে নিসবত (সম্বন্ধযুক্ত) করবে অথচ দ্বীনে তার কোন মূল ভিত্তি নেই যার দিকে সে ফিরতে পারে, সেটিই গোমরাহি ও ভ্রষ্টতা। দ্বীন এ সকল বস্ত্ত থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। এ ক্ষেত্রে সকল বিষয়—যথা আকায়েদ, আমল জাহেরী ও বাতেনী আকওয়াল—সব সমান।
আল্লামা হফেয ইবনে রজব বলেন : নবী আকরাম সা.-এর বাণী كل بدعة ضلالة (প্রত্যেক বেদআত গোমরাহি) একটি جوامع الكلم তথা ব্যাপক অর্থ বোধক বাক্য। কোন কিছুই তার বহির্ভূত নয়। সকল প্রকারই তার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। এটি দ্বীনের একটি বিশেষ মূলনীতি। এটি রাসূলের নিম্নোক্ত বাণীর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ বক্তব্য। আল্লাহর রাসূল বলেন : من أحدث في أمرنا هذا ما ليس منه فهو رد . (যে ব্যক্তি আমাদের এ দ্বীনে নতুন কিছু উদ্ভাবন করবে যা তার অন্তর্ভুক্ত নয়, সেটি পরিত্যাজ্য হবে)—সুতরাং যে কেউ নতুন কিছু উদ্ভাবন ও প্রবর্তন করবে এবং তাকে দ্বীনের দিকে নিসবত (সম্বন্ধযুক্ত) করবে অথচ দ্বীনে তার কোন মূল ভিত্তি নেই যার দিকে সে ফিরতে পারে, সেটিই গোমরাহি ও ভ্রষ্টতা। দ্বীন এ সকল বস্ত্ত থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। এ ক্ষেত্রে সকল বিষয়—যথা আকায়েদ, আমল জাহেরী ও বাতেনী আকওয়াল—সব সমান।
সাহাবি ওমর রা. একবার সালাতে তারাবীহ সম্পর্কে বলেছিলেন : نعمت البدعة هذه (কত না সুন্দর বেদআত এটি) বেদআতকে হাসানাহ ও সাইয়্যেআহ দ্বারা বিভক্তকারীদের নিকট ওমরের এ উক্তিটি ব্যতীত তাদের মতের স্বপক্ষে আর কোন দলিল নেই।
তারা আরো বলে যে, এরূপ আরো অনেক নতুন নতুন বিষয়ের প্রবর্তন হয়েছিল কিন্তু সালাফের কেউ সে গুলোকে ঘৃণা ও প্রত্যাখ্যান করেননি, যেমন কোরআনুল কারীমকে এক মাসহাফে একত্রিত করা, (যা রাসূলের যুগে ছিল না) হাদিস লেখা ও সংকলন করা এটিও রাসূল সা. নিজে করে যাননি।
উত্তর :—আপত্তি উত্থাপিত বিষয়গুলো বেদআত নয় বরং শরিয়তের এগুলোর একটি ভিত্তি আছে। আর ওমর রা. এর বক্তব্য نعمت البدعة তে শরয়ি بدعة নয়। সুতরাং যে সকল বিষয়ের একটি শরয়ি ভিত্তি থাকবে যার দিকে প্রত্যাবর্তন করা যায়, সে গুলো সম্পর্কে যখন بدعة বলে মন্তব্য করা হবে তখন শাব্দিক বেদআত বুঝতে হবে—শরয়ি নয়। আর সালাতে তারাবীহ তো রাসূলুল্লাহ সা. নিজেই সাহাবিদের নিয়ে পড়ে ছিলেন। শেষ দিকে এসে ফরজ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করে তিনি তাদের থেকে পিছিয়ে গেছেন। তবে সাহাবারা বিক্ষিপ্ত ভাবে রাসূলের জীবদ্দশায় এবং ওফাতের পর ধারাবাহিক ভাবে পড়েছেন। এক পর্যায়ে এসে ওমর রা. সকলকে এক ইমামের পিছনে একত্রিত করে দিয়েছেন যেমন তারা রাসূলের পিছনে পড়ে ছিলেন। সুতরাং এটি দ্বীনের মধ্যে কোন নতুন বেদআত ছিল না। এখনও নয়। আর এক মাসহাফে কোরআন শরীফ একত্রিত করাও শরিয়তের একটি ভিত্তি আছে। কারণ রাসূলুল্লাহ সা. নিজে কোরআন লিপিবদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেগুলো বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্তাকারে ছিল পরে সাহাবায়ে কেরাম সংরক্ষণের নিমিত্তে সবগুলোকে এক মাসহাফে জমা করেছেন।
হাদিস লিপিবদ্ধ করারও একটি শরয়ি ভিত্তি আছে। রাসূল সা. কতিপয় সাহাবিকে অনুমতি প্রার্থনা করার পর কোন কোন হাদিস লেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে তার জীবদ্দশায় কোরআনের সাথে গায়রে কোরআন মিশ্রিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ব্যাপক হারে লেখার উপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু তার ওফাতের পর উক্ত নিষেধাজ্ঞা উঠে যায়। কেননা তিনি জীবিত থাকা অবস্থায়ই কোরআন পূর্ণতা লাভ করে এবং সংরক্ষণের ব্যবস্থা পাকাপাকি ভাবে সম্পূর্ণ হয়। এরপর মুসলমানগণ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করার উদ্দেশ্য হাদিস সংকলনে হাত দেন। এবং সম্পন্ন করেন। আল্লাহ তাআলা তাদেরকে ইসলাম ও মুসলমানদের পক্ষ থেকে উত্তম প্রতিদান দান করুন। কারণ তারা স্বীয় প্রতিপালকের কিতাব এবং নিজ নবীর সুন্নাহ বৃথা যাওয়া ও ধ্বংসের কবল থেকে রক্ষাকল্পে পদক্ষেপ নিয়েছেন। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে জানা যাবে যে ইলম ও ইবাদত সংশ্লিষ্ট সাধারণ বেদআতের প্রচলন উম্মতের মধ্যে খোলাফায়ে রাশেদীনের শেষ যুগে শুরু হয়েছে। যেমন রাসূলুল্লাহ সা. এ প্রসঙ্গে বলেছেন—
من يعش منكم فسيرى اختلافا كثيرا، فعليكم بسنتي وسنة الخلفاء الراشدين المهديين .
‘তোমাদের মধ্যে যারা বেঁচে থাকবে তারা বহু এখতেলাফ মতানৈক্য দেখতে পাবে। সেসময় তোমাদের কর্তব্য হবে আমার সুন্নত, হেদায়াত প্রাপ্ত খোলাফায়ে রাশেদীনের আদর্শ আঁকড়ে ধরা।’ সাহাবায়ে কেরাম সে সকল আহলে বেদআতকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
তারা আরো বলে যে, এরূপ আরো অনেক নতুন নতুন বিষয়ের প্রবর্তন হয়েছিল কিন্তু সালাফের কেউ সে গুলোকে ঘৃণা ও প্রত্যাখ্যান করেননি, যেমন কোরআনুল কারীমকে এক মাসহাফে একত্রিত করা, (যা রাসূলের যুগে ছিল না) হাদিস লেখা ও সংকলন করা এটিও রাসূল সা. নিজে করে যাননি।
উত্তর :—আপত্তি উত্থাপিত বিষয়গুলো বেদআত নয় বরং শরিয়তের এগুলোর একটি ভিত্তি আছে। আর ওমর রা. এর বক্তব্য نعمت البدعة তে শরয়ি بدعة নয়। সুতরাং যে সকল বিষয়ের একটি শরয়ি ভিত্তি থাকবে যার দিকে প্রত্যাবর্তন করা যায়, সে গুলো সম্পর্কে যখন بدعة বলে মন্তব্য করা হবে তখন শাব্দিক বেদআত বুঝতে হবে—শরয়ি নয়। আর সালাতে তারাবীহ তো রাসূলুল্লাহ সা. নিজেই সাহাবিদের নিয়ে পড়ে ছিলেন। শেষ দিকে এসে ফরজ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করে তিনি তাদের থেকে পিছিয়ে গেছেন। তবে সাহাবারা বিক্ষিপ্ত ভাবে রাসূলের জীবদ্দশায় এবং ওফাতের পর ধারাবাহিক ভাবে পড়েছেন। এক পর্যায়ে এসে ওমর রা. সকলকে এক ইমামের পিছনে একত্রিত করে দিয়েছেন যেমন তারা রাসূলের পিছনে পড়ে ছিলেন। সুতরাং এটি দ্বীনের মধ্যে কোন নতুন বেদআত ছিল না। এখনও নয়। আর এক মাসহাফে কোরআন শরীফ একত্রিত করাও শরিয়তের একটি ভিত্তি আছে। কারণ রাসূলুল্লাহ সা. নিজে কোরআন লিপিবদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেগুলো বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্তাকারে ছিল পরে সাহাবায়ে কেরাম সংরক্ষণের নিমিত্তে সবগুলোকে এক মাসহাফে জমা করেছেন।
হাদিস লিপিবদ্ধ করারও একটি শরয়ি ভিত্তি আছে। রাসূল সা. কতিপয় সাহাবিকে অনুমতি প্রার্থনা করার পর কোন কোন হাদিস লেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে তার জীবদ্দশায় কোরআনের সাথে গায়রে কোরআন মিশ্রিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ব্যাপক হারে লেখার উপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু তার ওফাতের পর উক্ত নিষেধাজ্ঞা উঠে যায়। কেননা তিনি জীবিত থাকা অবস্থায়ই কোরআন পূর্ণতা লাভ করে এবং সংরক্ষণের ব্যবস্থা পাকাপাকি ভাবে সম্পূর্ণ হয়। এরপর মুসলমানগণ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করার উদ্দেশ্য হাদিস সংকলনে হাত দেন। এবং সম্পন্ন করেন। আল্লাহ তাআলা তাদেরকে ইসলাম ও মুসলমানদের পক্ষ থেকে উত্তম প্রতিদান দান করুন। কারণ তারা স্বীয় প্রতিপালকের কিতাব এবং নিজ নবীর সুন্নাহ বৃথা যাওয়া ও ধ্বংসের কবল থেকে রক্ষাকল্পে পদক্ষেপ নিয়েছেন। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে জানা যাবে যে ইলম ও ইবাদত সংশ্লিষ্ট সাধারণ বেদআতের প্রচলন উম্মতের মধ্যে খোলাফায়ে রাশেদীনের শেষ যুগে শুরু হয়েছে। যেমন রাসূলুল্লাহ সা. এ প্রসঙ্গে বলেছেন—
من يعش منكم فسيرى اختلافا كثيرا، فعليكم بسنتي وسنة الخلفاء الراشدين المهديين .
‘তোমাদের মধ্যে যারা বেঁচে থাকবে তারা বহু এখতেলাফ মতানৈক্য দেখতে পাবে। সেসময় তোমাদের কর্তব্য হবে আমার সুন্নত, হেদায়াত প্রাপ্ত খোলাফায়ে রাশেদীনের আদর্শ আঁকড়ে ধরা।’ সাহাবায়ে কেরাম সে সকল আহলে বেদআতকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
বেদআত ও গোমরাহিতে পতিত হওয়া থেকে বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন হচ্ছে কোরআন ও সুন্নাহকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা। আল্লাহ তাআলা বলেন :
وَأَنَّ هَذَا صِرَاطِي مُسْتَقِيمًا فَاتَّبِعُوهُ وَلَا تَتَّبِعُوا السُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمْ عَنْ سَبِيلِهِ . ( سورة الأنعام :153)
‘এবং এ পথই আমার সরল পথ, সুতরাং তোমরা এরই অনুসরণ কর এবং ভিন্ন পথ অনুসরণ কর না। তাহলে সে সব পথ তোমাদেরকে তার পথ হতে বিচ্ছিন্ন করে দেবে।’
সাহাবি আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ রা. বর্ণিত হাদিসে রাসূলুল্লাহ সা. বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন এভাবে, আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ বলেন :
خط رسول الله صلى الله عليه وسلم خطا، ثم قال : هذا سبيل الله ثم خط خطوطا عن يمينه و عن شماله، ثم قال : و هذه سبل _ قال يزيد متفرقة _ على كل سبيل منها شيطان يدعو إليه .
‘রাসূলুল্লাহ সা. আমাদের (দেখানোর) জন্য একটি রেখা টানলেন বা দাগ দিলেন অত:পর বললেন এটি আল্লাহর পথ। এর পর এ রেখার ডানে বামে আরো অনেকগুলো দাগ দিলেন এর পর বললেন : এগুলো হচ্ছে বিভিন্ন পথ। ইয়াযীদ নামক হাদিসের জনৈক বর্ণনাকারী বললেন বিচ্ছিন্নকারী (অর্থাৎ এগুলো হচ্ছে বিচ্ছিন্নকারী বিভিন্ন পথ) এরপর প্রত্যেকটি পথের উপর একটি করে শয়তান বসে আছে, সে পথের দিকে আহবান করে। অত:পর পড়েছেন:—
وَأَنَّ هَذَا صِرَاطِي مُسْتَقِيمًا فَاتَّبِعُوهُ وَلَا تَتَّبِعُوا السُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمْ عَنْ سَبِيلِهِ . ( الأنعام :153)
‘এটিই আমার সরল পথ। তোমরা এর অনুসরণ কর। এবং ভিন্ন পথ অনুসরণ করো না। তাহলে সে সব পথ তোমাদেরকে তার পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে।’
অতএব যে ব্যক্তি কোরআন ও সুন্নাহ থেকে বিমুখ হবে, এড়িয়ে চলবে, বিভ্রান্তকারী রাস্তা এবং নব আবিষ্কৃত বেদআতসমূহ তাকে বিভ্রান্ত করে দেবে। বেদআত উৎপত্তির গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলোকে নিম্নোক্ত বিষয় গুলোতে সংক্ষেপণ করা যায়:—
وَأَنَّ هَذَا صِرَاطِي مُسْتَقِيمًا فَاتَّبِعُوهُ وَلَا تَتَّبِعُوا السُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمْ عَنْ سَبِيلِهِ . ( سورة الأنعام :153)
‘এবং এ পথই আমার সরল পথ, সুতরাং তোমরা এরই অনুসরণ কর এবং ভিন্ন পথ অনুসরণ কর না। তাহলে সে সব পথ তোমাদেরকে তার পথ হতে বিচ্ছিন্ন করে দেবে।’
সাহাবি আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ রা. বর্ণিত হাদিসে রাসূলুল্লাহ সা. বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন এভাবে, আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ বলেন :
خط رسول الله صلى الله عليه وسلم خطا، ثم قال : هذا سبيل الله ثم خط خطوطا عن يمينه و عن شماله، ثم قال : و هذه سبل _ قال يزيد متفرقة _ على كل سبيل منها شيطان يدعو إليه .
‘রাসূলুল্লাহ সা. আমাদের (দেখানোর) জন্য একটি রেখা টানলেন বা দাগ দিলেন অত:পর বললেন এটি আল্লাহর পথ। এর পর এ রেখার ডানে বামে আরো অনেকগুলো দাগ দিলেন এর পর বললেন : এগুলো হচ্ছে বিভিন্ন পথ। ইয়াযীদ নামক হাদিসের জনৈক বর্ণনাকারী বললেন বিচ্ছিন্নকারী (অর্থাৎ এগুলো হচ্ছে বিচ্ছিন্নকারী বিভিন্ন পথ) এরপর প্রত্যেকটি পথের উপর একটি করে শয়তান বসে আছে, সে পথের দিকে আহবান করে। অত:পর পড়েছেন:—
وَأَنَّ هَذَا صِرَاطِي مُسْتَقِيمًا فَاتَّبِعُوهُ وَلَا تَتَّبِعُوا السُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمْ عَنْ سَبِيلِهِ . ( الأنعام :153)
‘এটিই আমার সরল পথ। তোমরা এর অনুসরণ কর। এবং ভিন্ন পথ অনুসরণ করো না। তাহলে সে সব পথ তোমাদেরকে তার পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে।’
অতএব যে ব্যক্তি কোরআন ও সুন্নাহ থেকে বিমুখ হবে, এড়িয়ে চলবে, বিভ্রান্তকারী রাস্তা এবং নব আবিষ্কৃত বেদআতসমূহ তাকে বিভ্রান্ত করে দেবে। বেদআত উৎপত্তির গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলোকে নিম্নোক্ত বিষয় গুলোতে সংক্ষেপণ করা যায়:—
রাসূলের যুগ থেকে সময় যত দীর্ঘ হচ্ছে এবং মানুষ রিসালাতের প্রভাব ও নিদর্শন থেকে দূরে সরে চলেছে ততই ইলম ও ধর্মীয় জ্ঞান কমে চলেছে এবং মূর্খতা ও অজ্ঞতা বেড়ে চলেছে ও সর্বত্র বিস্তার লাভ করছে। বরং এ প্রসঙ্গে নবী সা. নিজেই বলেছেন—
من يعش منكم فسيرى اختلافا كثيرا .
‘তোমাদের মধ্যে যারা বেঁচে থাকবে অনেক মতানৈক্য দেখতে পাবে।’ তিনি আরও বলেন:—
إن الله لا يقبض العلم انتزاعا ينتزعه من العباد، و لكن يقبض العلم بقبض العلماء ، حتى إذا لم يبق عالما اتخذ الناس رؤوسا جهالا، فسئلوا، فأفتوا بغير علم، فضلوا، و أضلوا .
‘আল্লাহ তাআলা ইলম বান্দাদের থেকে উপড়ে নেয়ার মত করে উঠিয়ে নিবেন না বরং ওলামাদের মৃত্যুর মাধ্যমে উঠিয়ে নেবেন। এক পর্যায়ে যখন আর কোন আলেম অবশিষ্ট রাখবেন না তখন লোকেরা অজ্ঞ মূর্খদেরকে নিজেদের নেতা হিসাবে গ্রহণ করবে। তারা বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে তখন তারা না জেনে ফতওয়া দেবে। ফলে নিজেরাও গোমরাহ হবে এবং অপরদেরকে গোমরাহ করবে।’ বেদআতকে একমাত্র ইলম ও ওলামারাই প্রতিরোধ করতে পারেন এবং করেও থাকেন। যখন এতদুভয়ের বিলুপ্তি ঘটে, তখন বেদআত প্রকাশ ও প্রসারের সুযোগ পেয়ে যায়, আর বেদআতপন্থীরা এ বিষয়ে নব উদ্যম খুঁজে পায় এবং কাজ করতে শুরু করে।
من يعش منكم فسيرى اختلافا كثيرا .
‘তোমাদের মধ্যে যারা বেঁচে থাকবে অনেক মতানৈক্য দেখতে পাবে।’ তিনি আরও বলেন:—
إن الله لا يقبض العلم انتزاعا ينتزعه من العباد، و لكن يقبض العلم بقبض العلماء ، حتى إذا لم يبق عالما اتخذ الناس رؤوسا جهالا، فسئلوا، فأفتوا بغير علم، فضلوا، و أضلوا .
‘আল্লাহ তাআলা ইলম বান্দাদের থেকে উপড়ে নেয়ার মত করে উঠিয়ে নিবেন না বরং ওলামাদের মৃত্যুর মাধ্যমে উঠিয়ে নেবেন। এক পর্যায়ে যখন আর কোন আলেম অবশিষ্ট রাখবেন না তখন লোকেরা অজ্ঞ মূর্খদেরকে নিজেদের নেতা হিসাবে গ্রহণ করবে। তারা বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে তখন তারা না জেনে ফতওয়া দেবে। ফলে নিজেরাও গোমরাহ হবে এবং অপরদেরকে গোমরাহ করবে।’ বেদআতকে একমাত্র ইলম ও ওলামারাই প্রতিরোধ করতে পারেন এবং করেও থাকেন। যখন এতদুভয়ের বিলুপ্তি ঘটে, তখন বেদআত প্রকাশ ও প্রসারের সুযোগ পেয়ে যায়, আর বেদআতপন্থীরা এ বিষয়ে নব উদ্যম খুঁজে পায় এবং কাজ করতে শুরু করে।
মানুষ যখন কোরআন ও সুন্নাহ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তখন স্বীয় প্রবৃত্তির অনুসরণ করে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেছেন—
فَإِنْ لَمْ يَسْتَجِيبُوا لَكَ فَاعْلَمْ أَنَّمَا يَتَّبِعُونَ أَهْوَاءَهُمْ وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّنَ اتَّبَعَ هَوَاهُ بِغَيْرِ هُدًى مِنَ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ . ( القصص :50)
‘অত:পর তারা যদি আপনার ডাকে সাড়া না দেয়, তবে জানবেন, তারা শুধু নিজেদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে। আল্লাহর হেদায়াতের পরিবর্তে যে ব্যক্তি নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, তার চাইতে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে ? নিশ্চয় আল্লাহ জালিম সম্প্রদায়কে পথ দেখান না।’ আল্লাহ তাআলা আরো বলেন:
أَفَرَأَيْتَ مَنِ اتَّخَذَ إِلَهَهُ هَوَاهُ وَأَضَلَّهُ اللَّهُ عَلَى عِلْمٍ وَخَتَمَ عَلَى سَمْعِهِ وَقَلْبِهِ وَجَعَلَ عَلَى بَصَرِهِ غِشَاوَةً فَمَنْ يَهْدِيهِ مِنْ بَعْدِ اللَّهِ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ . ( الجاثية :23)
‘আপনি কি তার প্রতি লক্ষ্য করেছেন, যে তার খেয়াল খুশিকে নিজ ইলাহ বানিয়ে নিয়েছে? আল্লাহ জেনে তাকে পথভ্রষ্ট করেছেন, তার কান ও অন্তরে মোহর এঁটে দিয়েছেন। এবং তার চোখের উপর রেখেছেন পরদা। অতএব আল্লাহর পর কে তাকে পথ প্রদর্শন করবে? তোমরা কি চিন্তা ভাবনা কর না ?’
বেদআত অনুসৃত প্রবৃত্তির বুনন বৈ নয়।
فَإِنْ لَمْ يَسْتَجِيبُوا لَكَ فَاعْلَمْ أَنَّمَا يَتَّبِعُونَ أَهْوَاءَهُمْ وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّنَ اتَّبَعَ هَوَاهُ بِغَيْرِ هُدًى مِنَ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ . ( القصص :50)
‘অত:পর তারা যদি আপনার ডাকে সাড়া না দেয়, তবে জানবেন, তারা শুধু নিজেদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে। আল্লাহর হেদায়াতের পরিবর্তে যে ব্যক্তি নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, তার চাইতে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে ? নিশ্চয় আল্লাহ জালিম সম্প্রদায়কে পথ দেখান না।’ আল্লাহ তাআলা আরো বলেন:
أَفَرَأَيْتَ مَنِ اتَّخَذَ إِلَهَهُ هَوَاهُ وَأَضَلَّهُ اللَّهُ عَلَى عِلْمٍ وَخَتَمَ عَلَى سَمْعِهِ وَقَلْبِهِ وَجَعَلَ عَلَى بَصَرِهِ غِشَاوَةً فَمَنْ يَهْدِيهِ مِنْ بَعْدِ اللَّهِ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ . ( الجاثية :23)
‘আপনি কি তার প্রতি লক্ষ্য করেছেন, যে তার খেয়াল খুশিকে নিজ ইলাহ বানিয়ে নিয়েছে? আল্লাহ জেনে তাকে পথভ্রষ্ট করেছেন, তার কান ও অন্তরে মোহর এঁটে দিয়েছেন। এবং তার চোখের উপর রেখেছেন পরদা। অতএব আল্লাহর পর কে তাকে পথ প্রদর্শন করবে? তোমরা কি চিন্তা ভাবনা কর না ?’
বেদআত অনুসৃত প্রবৃত্তির বুনন বৈ নয়।
সত্যাসত্য যাচাই না করে কোন ব্যক্তি ও ব্যক্তি মতের পক্ষাবলম্বন করা অনেক সময় একজন ব্যক্তিকে সঠিক দলিলের অনুসরণ ও হক গ্রহণের ক্ষেত্রে বাধা প্রদান করে। ব্যক্তি ও দলিলের আনুগত্যের মাঝে সেই পক্ষাবলম্বন বাধা হয়ে দাঁড়ায়। আল্লাহ তাআলা বলেন:—
وَإِذَا قِيلَ لَهُمُ اتَّبِعُوا مَا أَنْزَلَ اللَّهُ قَالُوا بَلْ نَتَّبِعُ مَا أَلْفَيْنَا عَلَيْهِ آَبَاءَنَا أَوَلَوْ كَانَ آَبَاؤُهُمْ لَا يَعْقِلُونَ شَيْئًا وَلَا يَهْتَدُونَ . ( البقرة :170)
‘আর যখন তাদেরকে বলা হয় যে, তোমরা সে হুকুমের অনুসরণ কর যা আল্লাহ তাআলা অবতীর্ণ করেছেন, তখন তারা বলে কখনো না বরং আমরা তো সে বিষয়েরই অনুসরণ করব যাতে আমরা আমাদের বাপ-দাদাদের পেয়েছি, যদিও তাদের বাপ-দাদারা কিছুই জানতো না: জানতো না সঠিক পথও।’
বর্তমান যুগেও এ প্রকৃতির অনেক লোক পাওয়া যায়, যারা সুফিবাদে বিশ্বাসী কবর পূজারি। আপনি দেখতে পাবেন যে, তারা যে মতাবলম্বী এবং যে ব্যক্তির দর্শন গ্রহণ করেছে যদি সে মত ও দর্শনের বিপরীত কোরআন ও হাদিসের সঠিক উদ্ধৃতি উপস্থাপন করে তাদের বলা হয়, আপনি যে মত ও দর্শন গ্রহণ করেছেন সেগুলো তো কোরআনের এ আয়াত ও এ সকল হাদিস দ্বারা বাতিল বলে প্রমাণিত হচ্ছে। সুতরাং উক্ত মত ও পথ ছাড়ুন এবং কোরআন সুন্নাহর অনুসরণ করুন। সঠিক পথে ফিরে আসুন। তখন তারা নিজ মাজহাব মাশায়েখ ও বাপ-দাদার মাধ্যমে দলিল দিয়ে বলে যে, এতকাল যাবৎ তারা কি ভুল করে এসেছে ? যুগ যুগ ধরেই তো এ আমল চলে আসছে। কই কেউ তো ভুল বলেনি ? আমাদের পীর-বযুর্গরা এত বড় আলেম, তারা কি ভুল করতে পারে?—ইত্যাদি যতসব অসার ও বাতিল কথা বলে হককে এড়িয়ে যায়।
وَإِذَا قِيلَ لَهُمُ اتَّبِعُوا مَا أَنْزَلَ اللَّهُ قَالُوا بَلْ نَتَّبِعُ مَا أَلْفَيْنَا عَلَيْهِ آَبَاءَنَا أَوَلَوْ كَانَ آَبَاؤُهُمْ لَا يَعْقِلُونَ شَيْئًا وَلَا يَهْتَدُونَ . ( البقرة :170)
‘আর যখন তাদেরকে বলা হয় যে, তোমরা সে হুকুমের অনুসরণ কর যা আল্লাহ তাআলা অবতীর্ণ করেছেন, তখন তারা বলে কখনো না বরং আমরা তো সে বিষয়েরই অনুসরণ করব যাতে আমরা আমাদের বাপ-দাদাদের পেয়েছি, যদিও তাদের বাপ-দাদারা কিছুই জানতো না: জানতো না সঠিক পথও।’
বর্তমান যুগেও এ প্রকৃতির অনেক লোক পাওয়া যায়, যারা সুফিবাদে বিশ্বাসী কবর পূজারি। আপনি দেখতে পাবেন যে, তারা যে মতাবলম্বী এবং যে ব্যক্তির দর্শন গ্রহণ করেছে যদি সে মত ও দর্শনের বিপরীত কোরআন ও হাদিসের সঠিক উদ্ধৃতি উপস্থাপন করে তাদের বলা হয়, আপনি যে মত ও দর্শন গ্রহণ করেছেন সেগুলো তো কোরআনের এ আয়াত ও এ সকল হাদিস দ্বারা বাতিল বলে প্রমাণিত হচ্ছে। সুতরাং উক্ত মত ও পথ ছাড়ুন এবং কোরআন সুন্নাহর অনুসরণ করুন। সঠিক পথে ফিরে আসুন। তখন তারা নিজ মাজহাব মাশায়েখ ও বাপ-দাদার মাধ্যমে দলিল দিয়ে বলে যে, এতকাল যাবৎ তারা কি ভুল করে এসেছে ? যুগ যুগ ধরেই তো এ আমল চলে আসছে। কই কেউ তো ভুল বলেনি ? আমাদের পীর-বযুর্গরা এত বড় আলেম, তারা কি ভুল করতে পারে?—ইত্যাদি যতসব অসার ও বাতিল কথা বলে হককে এড়িয়ে যায়।
বেদআত ও কুপ্রথায় পতিত করার ব্যাপারে কাফেরদের সাদৃশ্য অবলম্বন একটি বিরাট কারণ, যেমন আবু ওয়াক্বিদ লায়সী রা. এর হাদিসে একটি ঘটনা উদ্ধৃত হয়েছে, তিনি বলেন : আমরা রাসূলুল্লাহ সা. এর সাথে হোনাইন অভিমুখে যাত্রা করলাম। সে সময় সবে মাত্র কিছুদিন হলো আমরা কুফর ছেড়ে ইসলামে দীক্ষিত হয়েছি, এদিকে ‘যাতে আনওয়াত’ নামে মুশরিকদের একটি বড়ই বৃক্ষ ছিল, যার চার পাশে তারা অবস্থান করত এবং নিজেদের যুদ্ধাস্ত্র সে গাছে ঝুলিয়ে রাখত। পথিমধ্যে আমরা সে গাছের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম, তখন আমরা বললাম ইয়া রাসূলুল্লাহ! তাদের যেমন ‘যাতে আনওয়াত’ আছে আপনি আমাদের জন্যও একটি ‘যাতে আনওয়াত’ স্থির করুন। এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ সা. বললেন : আল্লাহু আকবার إنها السنن এটি একটি রীতি, যে সত্তার হাতে আমার জীবন তার শপথ করে বলছি, তোমরা তেমন একটি কথাই কললে যেমনটি বলেছিল, বনী ইসরাইলরা নবী সা. মূসা আ. কে—
قَالُوا يَا مُوسَى اجْعَلْ لَنَا إِلَهًا كَمَا لَهُمْ آَلِهَةٌ قَالَ إِنَّكُمْ قَوْمٌ تَجْهَلُونَ . ( الأعراف :138)
তারা বলতে লাগল, হে মুসা আপনি আমাদের উপাসনার জন্যও তাদের মূর্তির মতই একটি মূর্তি নির্মাণ করে দিন। তিনি বললেন তোমরা নিতান্তই একটি অজ্ঞতা প্রসূত সম্প্রদায়।
তোমরা অবশ্যই তোমাদের পূর্বসূরিদের রীতি অনুসরণ করবে।
এ হাদিস নবী আকরাম সা. সুস্পষ্টকরে বর্ণনা করছেন যে, কাফেরদের সাদৃশ্য অবলম্বনই বনী ইসরাইলকে ইবাদতের জন্য মূর্তি নির্মাণ করে দেয়ার মত কদর্য অনুরোধ করতে উদ্বুদ্ধ করেছিল। আর ঐ একই জিনিস রাসূলুল্লাহ সা. কতিপয় সাহাবিকে বরকত হাসিলের জন্য আল্লাহকে বাদ দিয়ে একটি গাছ নির্ধারণ করে দেয়ার জন্য আবেদন করতে উৎসাহ করে তুলছিল। বর্তমান সময়েও এমনটি ঘটে চলেছে যে অধিকাংশ মুসলমান শিরকি ও বেদআতি কার্যকলাপের ক্ষেত্রে কাফেরদের অনুসরণ করে চলেছে। যেমন ঈদে মিলাদুন্নবি উদযাপন, নির্দিষ্ট কিছু কাজের জন্য সপ্তাহ বা দিনক্ষণ নির্ধারণ করে নেয়া। বিভিন্ন উপলক্ষ ও স্মরণিকা স্বরূপ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা। স্মৃতি সৌধ, স্তম্ভ, ভাস্কর্য ইত্যাদি নির্মাণ। কবরের উপর ঘর-গুম্বজ ইত্যাদি নির্মাণ করা।
قَالُوا يَا مُوسَى اجْعَلْ لَنَا إِلَهًا كَمَا لَهُمْ آَلِهَةٌ قَالَ إِنَّكُمْ قَوْمٌ تَجْهَلُونَ . ( الأعراف :138)
তারা বলতে লাগল, হে মুসা আপনি আমাদের উপাসনার জন্যও তাদের মূর্তির মতই একটি মূর্তি নির্মাণ করে দিন। তিনি বললেন তোমরা নিতান্তই একটি অজ্ঞতা প্রসূত সম্প্রদায়।
তোমরা অবশ্যই তোমাদের পূর্বসূরিদের রীতি অনুসরণ করবে।
এ হাদিস নবী আকরাম সা. সুস্পষ্টকরে বর্ণনা করছেন যে, কাফেরদের সাদৃশ্য অবলম্বনই বনী ইসরাইলকে ইবাদতের জন্য মূর্তি নির্মাণ করে দেয়ার মত কদর্য অনুরোধ করতে উদ্বুদ্ধ করেছিল। আর ঐ একই জিনিস রাসূলুল্লাহ সা. কতিপয় সাহাবিকে বরকত হাসিলের জন্য আল্লাহকে বাদ দিয়ে একটি গাছ নির্ধারণ করে দেয়ার জন্য আবেদন করতে উৎসাহ করে তুলছিল। বর্তমান সময়েও এমনটি ঘটে চলেছে যে অধিকাংশ মুসলমান শিরকি ও বেদআতি কার্যকলাপের ক্ষেত্রে কাফেরদের অনুসরণ করে চলেছে। যেমন ঈদে মিলাদুন্নবি উদযাপন, নির্দিষ্ট কিছু কাজের জন্য সপ্তাহ বা দিনক্ষণ নির্ধারণ করে নেয়া। বিভিন্ন উপলক্ষ ও স্মরণিকা স্বরূপ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা। স্মৃতি সৌধ, স্তম্ভ, ভাস্কর্য ইত্যাদি নির্মাণ। কবরের উপর ঘর-গুম্বজ ইত্যাদি নির্মাণ করা।
বেদআতের অভ্যুদয় ও ব্যাপ্তিতে নানাবিধ ক্ষতিকর দিক রয়েছে। যার উপর ভিত্তি করে অনেক মারাত্মক অপরাধ সংঘটিত হয়ে যায়। নিম্নে কিছু নমুনা পেশ করা হল।
(১) মহান আল্লাহ তাআলা এ দ্বীনকে পূর্ণতা দিয়েছেন মর্মে ঘোষণা করে বলছেন
الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الْإِسْلَامَ دِينًا ( المائدة :3)
‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম। তোমাদের উপর আমার নেয়ামত সম্পূর্ণ করে দিলাম, এবং তোমাদের জন্য দ্বীন হিসাবে ইসলামকে মনোনীত করলাম।’
বেদআত সংঘটিত করার মাধ্যমে আল্লাহর উপরোক্ত বাণীকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা হয়। কারণ একজন বেদআতি যখন একটি নতুন বেদআত প্রচলন ঘটায় তখন সে সেটিকে দ্বীন বলেই বিশ্বাস করে। আর এর অর্থই হচ্ছে, দ্বীন পূর্ব হতে পূর্ণাঙ্গ নয়। তাতে সংযোজনের সুযোগ আছে।
(২) বেদআতের প্রচলন দ্বারা শরিয়তে ইসলামিয়া অসম্পূর্ণ ও ত্রুটি যুক্ত ছিল—প্রমাণের চেষ্টা করা হয়। বেদআত প্রচলনকারী এর ত্রুটি দূর করে পূর্ণতা দান করেছেন মর্মে বিশ্বাস করাকে বাধ্য করে।
(৩) বেদআত—যে সকল মুসলমান তাকে গ্রহণ করেনি—তাদের ব্যাপারে অপবাদ দেয়াকে আবশ্যক করে যে, তাদের দ্বীন অসম্পূর্ণ, সাথে সাথে যারা এ বেদআত আত্মপ্রকাশ করার পূর্বেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন তাদের ধর্মও অপূর্ণ ছিল মর্মে বিশ্বাস করাকে জরুরি করে তুলে। অথচ এ ব্যাপারটি কত মারাত্মক।
(৪) বেদআত সুন্নত থেকে দূরে সরিয়ে দেয়, কেননা সাধারণত: দেখা যায় যারা বেদআত লিপ্ত হয়ে পড়ে তারা সুন্নত থেকে দূরে সরে যান। এ প্রসঙ্গে কতিপয় সালাফ থেকে বর্ণিত তারা বলেছেন :
ما أحدث قوم بدعة إلا هدموا مثلها من السنة .
‘যখনই কোন সম্প্রদায় বেদআতের প্রচলন ঘটায় তখন উক্ত বেদআতের কারণে সে স্থানের সুন্নতের বিলুপ্তি ঘটে।’
(৫) বেদআত উম্মতের ঐক্য-সংহতি বিনষ্ট করে তাদের মধ্যে অনৈক্য ও বিভক্তি সৃষ্টি করে। কারণ বেদআতপন্থীরা বিশ্বাস করে যে তারা হকপন্থী আর যারা তাদের মত গ্রহণ করেনি তারা সকলে বাতেল ও গোমরাহ। পক্ষান্তরে হকপন্থীরা বলে থাকে, তোমরাই মূলত বাতেল এবং তোমরাই গোমরাহিতে লিপ্ত। এতে করে উভয় দলের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এবং অনৈক্য দেখা দেয়।
(১) মহান আল্লাহ তাআলা এ দ্বীনকে পূর্ণতা দিয়েছেন মর্মে ঘোষণা করে বলছেন
الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الْإِسْلَامَ دِينًا ( المائدة :3)
‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম। তোমাদের উপর আমার নেয়ামত সম্পূর্ণ করে দিলাম, এবং তোমাদের জন্য দ্বীন হিসাবে ইসলামকে মনোনীত করলাম।’
বেদআত সংঘটিত করার মাধ্যমে আল্লাহর উপরোক্ত বাণীকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা হয়। কারণ একজন বেদআতি যখন একটি নতুন বেদআত প্রচলন ঘটায় তখন সে সেটিকে দ্বীন বলেই বিশ্বাস করে। আর এর অর্থই হচ্ছে, দ্বীন পূর্ব হতে পূর্ণাঙ্গ নয়। তাতে সংযোজনের সুযোগ আছে।
(২) বেদআতের প্রচলন দ্বারা শরিয়তে ইসলামিয়া অসম্পূর্ণ ও ত্রুটি যুক্ত ছিল—প্রমাণের চেষ্টা করা হয়। বেদআত প্রচলনকারী এর ত্রুটি দূর করে পূর্ণতা দান করেছেন মর্মে বিশ্বাস করাকে বাধ্য করে।
(৩) বেদআত—যে সকল মুসলমান তাকে গ্রহণ করেনি—তাদের ব্যাপারে অপবাদ দেয়াকে আবশ্যক করে যে, তাদের দ্বীন অসম্পূর্ণ, সাথে সাথে যারা এ বেদআত আত্মপ্রকাশ করার পূর্বেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন তাদের ধর্মও অপূর্ণ ছিল মর্মে বিশ্বাস করাকে জরুরি করে তুলে। অথচ এ ব্যাপারটি কত মারাত্মক।
(৪) বেদআত সুন্নত থেকে দূরে সরিয়ে দেয়, কেননা সাধারণত: দেখা যায় যারা বেদআত লিপ্ত হয়ে পড়ে তারা সুন্নত থেকে দূরে সরে যান। এ প্রসঙ্গে কতিপয় সালাফ থেকে বর্ণিত তারা বলেছেন :
ما أحدث قوم بدعة إلا هدموا مثلها من السنة .
‘যখনই কোন সম্প্রদায় বেদআতের প্রচলন ঘটায় তখন উক্ত বেদআতের কারণে সে স্থানের সুন্নতের বিলুপ্তি ঘটে।’
(৫) বেদআত উম্মতের ঐক্য-সংহতি বিনষ্ট করে তাদের মধ্যে অনৈক্য ও বিভক্তি সৃষ্টি করে। কারণ বেদআতপন্থীরা বিশ্বাস করে যে তারা হকপন্থী আর যারা তাদের মত গ্রহণ করেনি তারা সকলে বাতেল ও গোমরাহ। পক্ষান্তরে হকপন্থীরা বলে থাকে, তোমরাই মূলত বাতেল এবং তোমরাই গোমরাহিতে লিপ্ত। এতে করে উভয় দলের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এবং অনৈক্য দেখা দেয়।
সালাফে সালেহীনগণ সর্ব যুগে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে বেদআত পন্থীদের রদ করে এসেছেন এবং তাদের উদ্ভাবিত বেদআতকে অস্বীকার করে এর প্রচলনকে প্রতিরোধ প্রতিহত করে এসেছেন। কয়েকটি দৃষ্টান্ত এখানে তুলে ধরা হল।
(ক) উম্মে দারদা রা. বলেন: একবার আবু দারদা (তার স্বামী) রাগান্বিত অবস্থায় আমার নিকট আসলেন। আমি বললাম, কি হয়েছে ? উত্তরে বললেন, আল্লাহর কসম, আমি তাদের মাঝে মুহম্মদের রেখে যাওয়া কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। তবে হ্যা, শুধু এতটুকু যে তারা সকলেই সালাত আদায় করে।
(খ) ওমর বিন ইয়াহইয়া বলেন, আমি আমার পিতাকে তার বাবা থেকে হাদিস বর্ণনা করতে শুনেছি। তিনি বলেন : ফজরের নামাজের পূর্বে আমরা সাহাবি আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ রা.-এর বাড়ির সামনে সমবেত হয়ে বসতাম। তিনি বের হলে আমরা তার সাথে মসজিদে যেতাম, একদিন আমাদের কাছে আবু মূসা আশআরী রা. এসে বললেন, আবু আব্দুর রহমান কি বের হয়ে গেছেন ? আমরা বললাম, না। (তিনি ভিতরেই আছেন) তখন তিনিও আমাদের সাথে বসে পড়লেন, এক পর্যায়ে আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ বের হয়ে আসলেন। তিনি আসলে আমরা সকলেই তার নিকট গেলাম। আবু মুসা আশআরী বললেন, হে আবু আব্দুর রহমান আমি একটু আগে মসজিদে গিয়ে এমন একটি কাজ দেখলাম যা ইতিপূর্বে আর দেখিনি কাজটি আমার নিকট অপরিচিত মনে হল, তবে আলহামদু লিল্লাহ ! এতে আমি খারাপের কিছু দেখিনি। বরং ভালই মনে হল। তিনি জিজ্ঞেস করলেন : কাজটি কী ? আবু মুসা বললেন : বেঁচে থাকলে একটু পর আপনি নিজেই দেখতে পাবেন। আমি দেখলাম কিছু লোক মসজিদে নামাজের অপেক্ষায় গোল হয়ে হালকাবন্দী হয়ে বসে আছে, প্রত্যেক হালকায় একজন দায়িত্বশীল রয়েছে এবং সকলের হাতে কঙ্কর। দায়িত্বশীল বলছেন, আপনারা একশত বার তাকবীর বলুন, তারা একশত বার ‘আল্লাহু আকবার’ পাঠ করছে। তারপর বলছেন একশত বার তাহলীল পাঠ করুন তারা একশত বার লা ইলাহা বলছে, অত:পর বলছে একশত বার তাসবীহ পাঠ করুন, তারা একশত বার সুবহানাল্লাহ পাঠ করছে। শুনে আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ বললেন, আপনি এ দেখে তাদের কি বললেন ? তিনি বললেন, আমি তাদের কিছুই বলিনি, আপনার নির্দেশ বা রায়ের অপেক্ষায় আছি। তখন তিনি বললেন, আপনি কেন তাদের স্বীয় পাপের হিসাব করার নির্দেশ দেননি এবং তাদের নেক কাজগুলো বিনষ্ট হবে না মর্মে জামানত গ্রহণ করেননি ? একথা বলে তিনি মসজিদ পানে চললেন। আমরাও তার সাথে সাথে গেলাম, মসজিদে পৌঁছে একটি হালকার নিকট গিয়ে বললেন—আমি এসব কি দেখছি ? আপনারা এসব কি করছেন ? তারা উত্তরে বললেন, হে আবু আব্দুর রহমান, এ কঙ্করগুলো দিয়ে হিসাব করে করে আমরা তাকবীর, তাহলীল, তাসবীহ এবং তাহমীদ পাঠ করছি, তখন তিনি বললেন—আপনারা আনাদের পাপের হিসাব করুন, আপনাদের নেককাজ থেকে বিন্দুমাত্র কিছু নষ্ট হবে না—আমি এর দায়িত্ব নিচ্ছি, হে নবী মুহম্মদের উম্মতবৃন্দ! আপনাদের একী হল? আপনার ধ্বংস অত্যাসন্ন, নবীজীর এ সাহাবাবৃন্দ তখনও আনাদের মাঝে বিদ্যমান, এটি তার ব্যবহৃত বস্ত্র, এখনও পুরাতন হয়নি, তার পানপাত্র সমগ্র এখনও ভেঙে যায়নি। শপথ সে সত্তার, যার হাতে আমার প্রাণ, হয় তোমাদের এ ধর্ম, যা তোমরা পালন করছ, মুহাম্মদ সা. আনীত ধর্ম অপেক্ষা অধিক সঠিক অথবা তোমরা গোমরাহির দরজা উন্মুক্ত করছ। তখন তারা বললেন, হে আবু আব্দুর রহমান আল্লাহর কসম আমরা একমাত্র কল্যাণ ও নেকের উদ্দেশ্যেই এরূপ করেছি। তিনি বললেন, বহু কল্যাণ প্রত্যাশী আছে কিন্তু কল্যাণ তাদের পর্যন্ত পৌঁছোয় না। রাসূল সা. আমাদের বলেছেন, এমন কিছু লোকের আবির্ভাব ঘটবে, তারা কোরআন পড়বে কিন্তু কোরআন তাদের গলদেশ অতিক্রম করবে না, আল্লাহর কসম কে জানে হয়তো তাদের অধিকাংশ তোমাদের মধ্য হতেই হবে, অত:পর তিনি সেখান থেকে চলে গেলেন। আমর বিন সালামা বলেছেন : আমরা তাদের অধিকাংশ লোকদের দেখেছি যে তারা নাহরাওয়ানের যুদ্ধে খারেজিদের সাথে মিশে আমাদের আঘাত করছে।
(গ) এক ব্যক্তি ইমাম মালেক বিন আনাস রহ.-এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করলেন, আমি কোথা হতে হজের এহরাম বাঁধব ? তিনি বললেন : মীকাত থেকে, যেটি রাসূলুল্লাহ সা. নির্ধারণ করেছেন এবং নিজে এহরাম বেঁধেছেন। লোকটি বললেন, আমি যদি আরো দূর হতে এহরাম বাঁধি ? ইমাম মালেক বললেন, আমি এটি জায়েজ ও সংগত মনে করি না। আগন্তুক বললেন, আপনি এতে অপছন্দের কি দেখলেন ? তিনি বললেন : আমি আপনার উপর ফেতনাকে অপসন্দ করছি। লোকটি বললেন, নেক ও কল্যাণের কাজ বৃদ্ধি করাতে আবার ফেতনা কিসের ? ইমাম মালেক বললেন : আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেছেন—
فَلْيَحْذَرِ الَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنْ أَمْرِهِ أَنْ تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ . ( النور :63)
‘অতএব যারা তার আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে তারা যেন সতর্ক হয় যে বিপর্যয় ও ফেতনা তাদের স্পর্শ করবে, অথবা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তাদের গ্রাস করে নিবে।’
এর থেকে বড় ফেতনা আর কি হতে পারে যে রাসূলুল্লাহ সা. যে ফজিলত নির্ধারণ করেনি তুমি তা নির্ধারণ করে নিচ্ছ বা করতে চাচ্ছ ?
(ঘ) সাইদ ইবনে মুসাইয়েব রহ. জনৈক ব্যক্তিকে দেখতে পেলেন ফজর উদিত হওয়ার পর সে দুই রাকাতের অতিরিক্ত নামাজ পড়ে এবং তাতে রুকু সেজদা বেশি করে। তখন তিনি তাকে এ থেকে নিষেধ করলেন। সে বলল : হে আবু মুহাম্মদ, আল্লাহ তাআলা আমাকে নামাজ পড়ার কারণেও কি আজাব দেবেন ? সাইদ ইবনুল মুসাইয়্যাব বললেন : না, নামাজের কারণে নয়, আজাব দেবেন সুন্নত পরিপন্থী কাজ করার কারণে। এমনি করে ওলামায়ে ইসলাম সর্বযুগে বেদআত এবং বেদআত পন্থীদের প্রতিহত, প্রতিবাদ করে এসেছেন। আলহামদু লিল্লাহ!
বর্তমান যুগের সাথে রিসালতের যুগের দূরত্ব বেড়ে যাওয়া, ধর্মীয় জ্ঞানের অভাব, অপ্রতুলতা, বেদআত ও সুন্নত পরিপন্থী প্রচলনের আধিক্য ও এর প্রসারের ক্ষেত্রে বিশাল কর্মী বাহিনীর ব্যাপক কর্ম তৎপরতার এবং শিল্প-সংস্কৃতি, অভ্যাস আচরণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে কাফের বিধর্মীদের সাদৃশ্যাবলম্বন ব্যাপক সংক্রমণসহ নানাবিধ কারণে বেদআতের সংখ্যা ও প্রচলন অনেক। এখানে আমরা কয়েকটি প্রচলিত বেদআত সম্পর্কে সামান্য আলোচন করব।
(ক) উম্মে দারদা রা. বলেন: একবার আবু দারদা (তার স্বামী) রাগান্বিত অবস্থায় আমার নিকট আসলেন। আমি বললাম, কি হয়েছে ? উত্তরে বললেন, আল্লাহর কসম, আমি তাদের মাঝে মুহম্মদের রেখে যাওয়া কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। তবে হ্যা, শুধু এতটুকু যে তারা সকলেই সালাত আদায় করে।
(খ) ওমর বিন ইয়াহইয়া বলেন, আমি আমার পিতাকে তার বাবা থেকে হাদিস বর্ণনা করতে শুনেছি। তিনি বলেন : ফজরের নামাজের পূর্বে আমরা সাহাবি আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ রা.-এর বাড়ির সামনে সমবেত হয়ে বসতাম। তিনি বের হলে আমরা তার সাথে মসজিদে যেতাম, একদিন আমাদের কাছে আবু মূসা আশআরী রা. এসে বললেন, আবু আব্দুর রহমান কি বের হয়ে গেছেন ? আমরা বললাম, না। (তিনি ভিতরেই আছেন) তখন তিনিও আমাদের সাথে বসে পড়লেন, এক পর্যায়ে আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ বের হয়ে আসলেন। তিনি আসলে আমরা সকলেই তার নিকট গেলাম। আবু মুসা আশআরী বললেন, হে আবু আব্দুর রহমান আমি একটু আগে মসজিদে গিয়ে এমন একটি কাজ দেখলাম যা ইতিপূর্বে আর দেখিনি কাজটি আমার নিকট অপরিচিত মনে হল, তবে আলহামদু লিল্লাহ ! এতে আমি খারাপের কিছু দেখিনি। বরং ভালই মনে হল। তিনি জিজ্ঞেস করলেন : কাজটি কী ? আবু মুসা বললেন : বেঁচে থাকলে একটু পর আপনি নিজেই দেখতে পাবেন। আমি দেখলাম কিছু লোক মসজিদে নামাজের অপেক্ষায় গোল হয়ে হালকাবন্দী হয়ে বসে আছে, প্রত্যেক হালকায় একজন দায়িত্বশীল রয়েছে এবং সকলের হাতে কঙ্কর। দায়িত্বশীল বলছেন, আপনারা একশত বার তাকবীর বলুন, তারা একশত বার ‘আল্লাহু আকবার’ পাঠ করছে। তারপর বলছেন একশত বার তাহলীল পাঠ করুন তারা একশত বার লা ইলাহা বলছে, অত:পর বলছে একশত বার তাসবীহ পাঠ করুন, তারা একশত বার সুবহানাল্লাহ পাঠ করছে। শুনে আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ বললেন, আপনি এ দেখে তাদের কি বললেন ? তিনি বললেন, আমি তাদের কিছুই বলিনি, আপনার নির্দেশ বা রায়ের অপেক্ষায় আছি। তখন তিনি বললেন, আপনি কেন তাদের স্বীয় পাপের হিসাব করার নির্দেশ দেননি এবং তাদের নেক কাজগুলো বিনষ্ট হবে না মর্মে জামানত গ্রহণ করেননি ? একথা বলে তিনি মসজিদ পানে চললেন। আমরাও তার সাথে সাথে গেলাম, মসজিদে পৌঁছে একটি হালকার নিকট গিয়ে বললেন—আমি এসব কি দেখছি ? আপনারা এসব কি করছেন ? তারা উত্তরে বললেন, হে আবু আব্দুর রহমান, এ কঙ্করগুলো দিয়ে হিসাব করে করে আমরা তাকবীর, তাহলীল, তাসবীহ এবং তাহমীদ পাঠ করছি, তখন তিনি বললেন—আপনারা আনাদের পাপের হিসাব করুন, আপনাদের নেককাজ থেকে বিন্দুমাত্র কিছু নষ্ট হবে না—আমি এর দায়িত্ব নিচ্ছি, হে নবী মুহম্মদের উম্মতবৃন্দ! আপনাদের একী হল? আপনার ধ্বংস অত্যাসন্ন, নবীজীর এ সাহাবাবৃন্দ তখনও আনাদের মাঝে বিদ্যমান, এটি তার ব্যবহৃত বস্ত্র, এখনও পুরাতন হয়নি, তার পানপাত্র সমগ্র এখনও ভেঙে যায়নি। শপথ সে সত্তার, যার হাতে আমার প্রাণ, হয় তোমাদের এ ধর্ম, যা তোমরা পালন করছ, মুহাম্মদ সা. আনীত ধর্ম অপেক্ষা অধিক সঠিক অথবা তোমরা গোমরাহির দরজা উন্মুক্ত করছ। তখন তারা বললেন, হে আবু আব্দুর রহমান আল্লাহর কসম আমরা একমাত্র কল্যাণ ও নেকের উদ্দেশ্যেই এরূপ করেছি। তিনি বললেন, বহু কল্যাণ প্রত্যাশী আছে কিন্তু কল্যাণ তাদের পর্যন্ত পৌঁছোয় না। রাসূল সা. আমাদের বলেছেন, এমন কিছু লোকের আবির্ভাব ঘটবে, তারা কোরআন পড়বে কিন্তু কোরআন তাদের গলদেশ অতিক্রম করবে না, আল্লাহর কসম কে জানে হয়তো তাদের অধিকাংশ তোমাদের মধ্য হতেই হবে, অত:পর তিনি সেখান থেকে চলে গেলেন। আমর বিন সালামা বলেছেন : আমরা তাদের অধিকাংশ লোকদের দেখেছি যে তারা নাহরাওয়ানের যুদ্ধে খারেজিদের সাথে মিশে আমাদের আঘাত করছে।
(গ) এক ব্যক্তি ইমাম মালেক বিন আনাস রহ.-এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করলেন, আমি কোথা হতে হজের এহরাম বাঁধব ? তিনি বললেন : মীকাত থেকে, যেটি রাসূলুল্লাহ সা. নির্ধারণ করেছেন এবং নিজে এহরাম বেঁধেছেন। লোকটি বললেন, আমি যদি আরো দূর হতে এহরাম বাঁধি ? ইমাম মালেক বললেন, আমি এটি জায়েজ ও সংগত মনে করি না। আগন্তুক বললেন, আপনি এতে অপছন্দের কি দেখলেন ? তিনি বললেন : আমি আপনার উপর ফেতনাকে অপসন্দ করছি। লোকটি বললেন, নেক ও কল্যাণের কাজ বৃদ্ধি করাতে আবার ফেতনা কিসের ? ইমাম মালেক বললেন : আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেছেন—
فَلْيَحْذَرِ الَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنْ أَمْرِهِ أَنْ تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ . ( النور :63)
‘অতএব যারা তার আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে তারা যেন সতর্ক হয় যে বিপর্যয় ও ফেতনা তাদের স্পর্শ করবে, অথবা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তাদের গ্রাস করে নিবে।’
এর থেকে বড় ফেতনা আর কি হতে পারে যে রাসূলুল্লাহ সা. যে ফজিলত নির্ধারণ করেনি তুমি তা নির্ধারণ করে নিচ্ছ বা করতে চাচ্ছ ?
(ঘ) সাইদ ইবনে মুসাইয়েব রহ. জনৈক ব্যক্তিকে দেখতে পেলেন ফজর উদিত হওয়ার পর সে দুই রাকাতের অতিরিক্ত নামাজ পড়ে এবং তাতে রুকু সেজদা বেশি করে। তখন তিনি তাকে এ থেকে নিষেধ করলেন। সে বলল : হে আবু মুহাম্মদ, আল্লাহ তাআলা আমাকে নামাজ পড়ার কারণেও কি আজাব দেবেন ? সাইদ ইবনুল মুসাইয়্যাব বললেন : না, নামাজের কারণে নয়, আজাব দেবেন সুন্নত পরিপন্থী কাজ করার কারণে। এমনি করে ওলামায়ে ইসলাম সর্বযুগে বেদআত এবং বেদআত পন্থীদের প্রতিহত, প্রতিবাদ করে এসেছেন। আলহামদু লিল্লাহ!
বর্তমান যুগের সাথে রিসালতের যুগের দূরত্ব বেড়ে যাওয়া, ধর্মীয় জ্ঞানের অভাব, অপ্রতুলতা, বেদআত ও সুন্নত পরিপন্থী প্রচলনের আধিক্য ও এর প্রসারের ক্ষেত্রে বিশাল কর্মী বাহিনীর ব্যাপক কর্ম তৎপরতার এবং শিল্প-সংস্কৃতি, অভ্যাস আচরণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে কাফের বিধর্মীদের সাদৃশ্যাবলম্বন ব্যাপক সংক্রমণসহ নানাবিধ কারণে বেদআতের সংখ্যা ও প্রচলন অনেক। এখানে আমরা কয়েকটি প্রচলিত বেদআত সম্পর্কে সামান্য আলোচন করব।
খ্রিস্টান নাসারা নবী ঈসা আ.-এর জন্মদিন উদযাপন করতে গিয়ে হলি কৃস মাস পালন করে, তাদের দেখাদেখি কতক মুসলমানও একাজ শুরু করেছে, প্রত্যেক বৎসর রবিউল আউয়াল মাস আসলে রাসূল সা.-এর জন্ম দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদির আয়োজন করে। তাদের কেউ কেউ এ অনুষ্ঠান মসজিদে করে থাকে। কেউ কেউ নিজ বাড়িতে, আবার কেউ এ উদ্দেশ্যে বিশাল প্যান্ডেল তৈরি করে খুব জাঁক-জমকের সাথে উদযাপন করে। এসব অনুষ্ঠানে বিশেষ ব্যক্তিবর্গ ও সাধারণ জনগণসহ সর্ব শ্রেণির মানুষ ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে অংশগ্রহণ করে, এগুলো মূলত খ্রিস্টানদের কালচার-অনুকরণ, যা তারা ঈসা আ. এর জন্ম দিবস উদযাপন উপলক্ষে করে থাকে।
এসব অনুষ্ঠানাদি বেদআত ও খ্রিস্টানদের সাদৃশ্যাবলম্বন। তাছাড়া ও বিভিন্ন শিরক, ও নিষিদ্ধ কার্যাদি থেকে মুক্ত নয় যেমন রাসূল সা.-এর শানে কবিতা ও গজল আবৃতি যেসব গজলে তার প্রশংসার নামে এমন সব কথা বার্তা বলা হয়, যেগুলো মূলত আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত। এ কারণেই এগুলো শিরক হয়ে যায়। কোন কোন গজলে গাইরুল্লাহর নিকট দোয়া প্রার্থনা করা হয়—ইত্যাদি। অথচ নবী কারীম সা. তার প্রশংসার ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি ও অতিরঞ্জন থেকে কঠোর ভাবে নিষেধ করেছেন, তিনি বলেন:—
لاتطروني كما اطرت النصارى ابن مريم، إنما أنا عبد فقولوا عبد الله ورسوله .
‘খ্রিস্টানরা-নাসারা মরিয়ম তনয় ঈসার ব্যাপারে যেরূপ বাড়াবাড়ি করেছে তোমরা আমায় নিয়ে সে রূপ বাড়াবাড়ি করবে না, আমি একজন বান্দা বৈ অন্য কিছু নই। সুতরাং তোমরা আমার ব্যাপারে বলতে চাইলে এতটুকু বলবে, যে আল্লাহর বান্দা এবং তার রাসূল।’
কখনো এমন বিশ্বাস করা হয় যে, রাসূল সা. মিলাদ মাহফিলে উপস্থিত হন।
এসব অনুষ্ঠানাদি বেদআত ও খ্রিস্টানদের সাদৃশ্যাবলম্বন। তাছাড়া ও বিভিন্ন শিরক, ও নিষিদ্ধ কার্যাদি থেকে মুক্ত নয় যেমন রাসূল সা.-এর শানে কবিতা ও গজল আবৃতি যেসব গজলে তার প্রশংসার নামে এমন সব কথা বার্তা বলা হয়, যেগুলো মূলত আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত। এ কারণেই এগুলো শিরক হয়ে যায়। কোন কোন গজলে গাইরুল্লাহর নিকট দোয়া প্রার্থনা করা হয়—ইত্যাদি। অথচ নবী কারীম সা. তার প্রশংসার ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি ও অতিরঞ্জন থেকে কঠোর ভাবে নিষেধ করেছেন, তিনি বলেন:—
لاتطروني كما اطرت النصارى ابن مريم، إنما أنا عبد فقولوا عبد الله ورسوله .
‘খ্রিস্টানরা-নাসারা মরিয়ম তনয় ঈসার ব্যাপারে যেরূপ বাড়াবাড়ি করেছে তোমরা আমায় নিয়ে সে রূপ বাড়াবাড়ি করবে না, আমি একজন বান্দা বৈ অন্য কিছু নই। সুতরাং তোমরা আমার ব্যাপারে বলতে চাইলে এতটুকু বলবে, যে আল্লাহর বান্দা এবং তার রাসূল।’
কখনো এমন বিশ্বাস করা হয় যে, রাসূল সা. মিলাদ মাহফিলে উপস্থিত হন।
সম্মিলিত কণ্ঠে সুর করে গানের আকৃতিতে ঢোল তবলা বাজিয়ে গজল পরিবেশন। একই পদ্ধতিতে সুফি-সন্ন্যাসী কর্তৃক প্রবর্তিত বেদআতি জিকির আযকার।
নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা যাতে শরয়ি পর্দার বিধান লঙ্ঘন হওয়ার পাশাপাশি নানারকম ফেতনার সৃষ্টি হয়। এ থেকে আবার মাঝে মধ্যে অশ্লীল-অশালীন কাজ ও সংঘটিত হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। এছাড়াও আরো অনেক ধরনের শরয়িত বিরোধী কার্যকলাপ হয়ে থাকে। যদি উপরোক্ত অশালীন ও শরয়ি পরিপন্থী কোন কাজ নাও হয়, তাদের বক্তব্য মত শুধু মাত্র সমবেত হওয়া, খাবার বিতরণ ও আনন্দ ফুর্তি প্রকাশের মধেই সীমিত থাকে তারপরও তো এটি একটি নব আবিষ্কৃত বেদআত যার সম্পর্কে রাসূল সা. বলেছেন:—
كل محدثة بدعة، وكل بدعة ضلالة و كل ضلالة في النار .
‘প্রত্যেক নব আবিষ্কৃত আমলই বেদআত, আর প্রত্যেক বেদআতই ভ্রষ্টতা ও গোমরাহি এবং সকল গোমরাহির স্থান জাহান্নাম।’ তাছাড়া এটিতো এ পর্যন্তই সীমিত থাকে না, বরং জমায়েতই ক্রমান্বয়ে আরো উন্নত হতে থাকবে এবং এক পর্যায়ে এসে তাতেও সে সকল নিষিদ্ধ ও শরিয়ত পরিপন্থী কাজ কর্ম শুরু হবে যা অন্যান্য সমাবেশ গুলোতে হয়।
এবং ইতিপূর্বে আমরা বলে এসেছি যে এ উপলক্ষে উদ্যাপিত সকল ক্রিয়াকর্মই বেদআত; কোরআন ও হাদিসে এর কোন ভিত্তি নেই। সালাফে সালেহীন ও স্বীকৃতি ও মর্যাদা প্রাপ্ত প্রথম তিন যুগের কেউ এ সকল কাজ করেছেন মর্মেও কোন প্রমাণ নেই। বরং এটি সৃষ্টিই হয়েছে হিজরি চতুর্থ শতাব্দীর পর। বাতেনপন্থী উবায়দীরা, যারা নিজেদের ফাতেমী বলে দাবি করে এর প্রচলন শুরু করে।
ইমাম আল ফাকিহানী রহ. বলেন:—
আম্মা বাদ, কতিপয় লোক রবিউল আউয়াল মাসে মিলাদের নাম করে যে সমাবেশ ইত্যাদি করে থাকে এ প্রসঙ্গে বিভিন্ন জন থেকে আমার নিকট বার বার প্রশ্ন আসছে যে এরূপ আমলের কোন ভিত্তি শরীয়তে আছে কি না ? উত্তরে আমি আল্লাহর তাওফীক চেয়ে বলব: না, আমার জানা মতে এ মিলাদ মাহফিলের কোন ভিত্তি না কোরআনে আছে, না হাদিসে, এবং এ আমল নির্ভরযোগ্য আমাদের কোন পূর্বসূরিদের কেউ করেছেন মর্মেও কোথাও বর্ণিত হয়নি। বরং এটি নব আবিষ্কৃত বেদআত যার প্রবর্তন করেছে কিছু বাতেল লোক। এবং এটি একটি কুপ্রবৃত্তির চাহিদা প্রসূত কাজ যাকে কাজে লাগিয়ে ফায়দা লুটছে পেট পূজারিরা।
শাইখুল ইসলাম আল্লামা ইবনে তাইমিয়াহ রহ. এ প্রসঙ্গে বলেন :—
অনুরূপভাবে যা বর্তমানে কিছু লোক নতুন প্রবর্তন করেছে, হয়তো নবী ঈসা আ. এর জন্ম দিবস উপলক্ষে খ্রিস্টান নাসারাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠান উদযাপনের অনুকরণে অথবা নবী আকরাম সা. এর মহববতও সম্মান প্রদর্শনের নিমিত্তে...যেমন তার জন্ম দিবসকে ঈদ হিসেবে উদযাপন করা, যদিও তার জন্ম দিবস সম্পর্কে ওলামাদের মাঝে মতানৈক্য রয়েছে। (এ সবই বেদআত)। কেননা সালাফে সালেহীনদের কেউ এরূপ কিছুই করেননি। যদি এসকল কাজ কল্যাণকর ও ফজিলতপূর্ণ অথবা শুধুমাত্র বৈধ হত, তাহলে সালাফে সালেহীনরাই এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতেন। এবং আমাদের চেয়ে অনেক বেশি আরম্ভরতার সাথে উদযাপন করতেন। কারণ তারা নবীর মুহাববত ও সম্মান প্রদর্শনের ক্ষেত্রে আমাদের চেয়ে অনেক অনেক এগিয়ে ছিলেন। নিজেদের জীবনের চেয়ে রাসূল তাদের নিকট অধিক প্রিয় ছিলেন এ কথার প্রমাণ তারা বার বার দিয়েছেন। রাসূলের জন্য তারা পরিবার পরিজন ও মাতৃভূমিসহ সবকিছু ত্যাগ করেছেন। নিজের জীবন পর্যন্ত দিতে কুণ্ঠাবোধ করেননি। তা ছাড়া কল্যাণমূলক ও বৈধ কাজে তাদের আগ্রহ আমাদের চেয়ে বেশি ছিল। শরিয়ত সম্মত কাজে তারা আমাদের চেয়ে অনেক বেশি আগ্রহী ছিলেন। বরং নবীজীর প্রকৃত মহববত ও সম্মান প্রদর্শন, হারিয়ে যাওয়া সুন্নতের পূণজাগরণ, যে দ্বীন ও শরিয়ত নিয়ে তিনি প্রেরিত হয়েছেন তার প্রচার ও প্রসার, এবং এর জন্য মুখ, হাত, ও হৃদয় দিয়ে জেহাদ ইত্যাদি কাজে অবতীর্ণ হওয়া, ও জান-তোড় মেহনত করাই প্রকৃত অর্থে তাকে ভালবাসা, মুহাববত ও ভালবাসার এ পন্থাই অবলম্বন করেছিলেন মুহাজির, আনসার ও তাদের অনুগামী উম্মতের পূর্বসূরিরা, এটিই ছিল তাদের পথ ও পন্থা। সুতরাং কেউ যদি প্রকৃতই রাসূল সা.কে ভালোবাসতে চায়, সম্মান প্রদর্শন করতে চায়, তাহলে তাকেও তাদের অনুসরণে রাসূলের আনুগত্য করতে হবে। সুন্নত অনুযায়ী আমল করতে হবে। জন্ম দিবস উদযাপন করে তার ভালোবাসার বহি:প্রকাশ করা হচ্ছে মূলত খ্রিস্টানদের অনুসরণ। যা সর্বতোভাবেই বেদআত ও জঘণ্য পাপ। মিলাদের এ বেদআতি প্রচলনকে খন্ডন করে অনেক কিতাব ও পুস্তিকা পূর্বেই প্রণীত হয়েছে। বর্তমানেও হচ্ছে। এটি যে বেদআত ও কাফেরদের সাদৃশ্যাবলম্বন তা তো প্রমাণিত সত্য। এ ছাড়াও নবীজীর জন্ম দিবস উদযাপন মূলত অন্য ওলী আউলিয়া ও পীর মাশায়েখদের জন্মদিবস উদযাপন ও সে উপলক্ষে বিভিন্ন পাপ কর্ম এবং বেদআতি কাজ সম্পাদনের রাস্তাকে খুলে দেয় ও প্রশস্ত করে।
নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা যাতে শরয়ি পর্দার বিধান লঙ্ঘন হওয়ার পাশাপাশি নানারকম ফেতনার সৃষ্টি হয়। এ থেকে আবার মাঝে মধ্যে অশ্লীল-অশালীন কাজ ও সংঘটিত হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। এছাড়াও আরো অনেক ধরনের শরয়িত বিরোধী কার্যকলাপ হয়ে থাকে। যদি উপরোক্ত অশালীন ও শরয়ি পরিপন্থী কোন কাজ নাও হয়, তাদের বক্তব্য মত শুধু মাত্র সমবেত হওয়া, খাবার বিতরণ ও আনন্দ ফুর্তি প্রকাশের মধেই সীমিত থাকে তারপরও তো এটি একটি নব আবিষ্কৃত বেদআত যার সম্পর্কে রাসূল সা. বলেছেন:—
كل محدثة بدعة، وكل بدعة ضلالة و كل ضلالة في النار .
‘প্রত্যেক নব আবিষ্কৃত আমলই বেদআত, আর প্রত্যেক বেদআতই ভ্রষ্টতা ও গোমরাহি এবং সকল গোমরাহির স্থান জাহান্নাম।’ তাছাড়া এটিতো এ পর্যন্তই সীমিত থাকে না, বরং জমায়েতই ক্রমান্বয়ে আরো উন্নত হতে থাকবে এবং এক পর্যায়ে এসে তাতেও সে সকল নিষিদ্ধ ও শরিয়ত পরিপন্থী কাজ কর্ম শুরু হবে যা অন্যান্য সমাবেশ গুলোতে হয়।
এবং ইতিপূর্বে আমরা বলে এসেছি যে এ উপলক্ষে উদ্যাপিত সকল ক্রিয়াকর্মই বেদআত; কোরআন ও হাদিসে এর কোন ভিত্তি নেই। সালাফে সালেহীন ও স্বীকৃতি ও মর্যাদা প্রাপ্ত প্রথম তিন যুগের কেউ এ সকল কাজ করেছেন মর্মেও কোন প্রমাণ নেই। বরং এটি সৃষ্টিই হয়েছে হিজরি চতুর্থ শতাব্দীর পর। বাতেনপন্থী উবায়দীরা, যারা নিজেদের ফাতেমী বলে দাবি করে এর প্রচলন শুরু করে।
ইমাম আল ফাকিহানী রহ. বলেন:—
আম্মা বাদ, কতিপয় লোক রবিউল আউয়াল মাসে মিলাদের নাম করে যে সমাবেশ ইত্যাদি করে থাকে এ প্রসঙ্গে বিভিন্ন জন থেকে আমার নিকট বার বার প্রশ্ন আসছে যে এরূপ আমলের কোন ভিত্তি শরীয়তে আছে কি না ? উত্তরে আমি আল্লাহর তাওফীক চেয়ে বলব: না, আমার জানা মতে এ মিলাদ মাহফিলের কোন ভিত্তি না কোরআনে আছে, না হাদিসে, এবং এ আমল নির্ভরযোগ্য আমাদের কোন পূর্বসূরিদের কেউ করেছেন মর্মেও কোথাও বর্ণিত হয়নি। বরং এটি নব আবিষ্কৃত বেদআত যার প্রবর্তন করেছে কিছু বাতেল লোক। এবং এটি একটি কুপ্রবৃত্তির চাহিদা প্রসূত কাজ যাকে কাজে লাগিয়ে ফায়দা লুটছে পেট পূজারিরা।
শাইখুল ইসলাম আল্লামা ইবনে তাইমিয়াহ রহ. এ প্রসঙ্গে বলেন :—
অনুরূপভাবে যা বর্তমানে কিছু লোক নতুন প্রবর্তন করেছে, হয়তো নবী ঈসা আ. এর জন্ম দিবস উপলক্ষে খ্রিস্টান নাসারাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠান উদযাপনের অনুকরণে অথবা নবী আকরাম সা. এর মহববতও সম্মান প্রদর্শনের নিমিত্তে...যেমন তার জন্ম দিবসকে ঈদ হিসেবে উদযাপন করা, যদিও তার জন্ম দিবস সম্পর্কে ওলামাদের মাঝে মতানৈক্য রয়েছে। (এ সবই বেদআত)। কেননা সালাফে সালেহীনদের কেউ এরূপ কিছুই করেননি। যদি এসকল কাজ কল্যাণকর ও ফজিলতপূর্ণ অথবা শুধুমাত্র বৈধ হত, তাহলে সালাফে সালেহীনরাই এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতেন। এবং আমাদের চেয়ে অনেক বেশি আরম্ভরতার সাথে উদযাপন করতেন। কারণ তারা নবীর মুহাববত ও সম্মান প্রদর্শনের ক্ষেত্রে আমাদের চেয়ে অনেক অনেক এগিয়ে ছিলেন। নিজেদের জীবনের চেয়ে রাসূল তাদের নিকট অধিক প্রিয় ছিলেন এ কথার প্রমাণ তারা বার বার দিয়েছেন। রাসূলের জন্য তারা পরিবার পরিজন ও মাতৃভূমিসহ সবকিছু ত্যাগ করেছেন। নিজের জীবন পর্যন্ত দিতে কুণ্ঠাবোধ করেননি। তা ছাড়া কল্যাণমূলক ও বৈধ কাজে তাদের আগ্রহ আমাদের চেয়ে বেশি ছিল। শরিয়ত সম্মত কাজে তারা আমাদের চেয়ে অনেক বেশি আগ্রহী ছিলেন। বরং নবীজীর প্রকৃত মহববত ও সম্মান প্রদর্শন, হারিয়ে যাওয়া সুন্নতের পূণজাগরণ, যে দ্বীন ও শরিয়ত নিয়ে তিনি প্রেরিত হয়েছেন তার প্রচার ও প্রসার, এবং এর জন্য মুখ, হাত, ও হৃদয় দিয়ে জেহাদ ইত্যাদি কাজে অবতীর্ণ হওয়া, ও জান-তোড় মেহনত করাই প্রকৃত অর্থে তাকে ভালবাসা, মুহাববত ও ভালবাসার এ পন্থাই অবলম্বন করেছিলেন মুহাজির, আনসার ও তাদের অনুগামী উম্মতের পূর্বসূরিরা, এটিই ছিল তাদের পথ ও পন্থা। সুতরাং কেউ যদি প্রকৃতই রাসূল সা.কে ভালোবাসতে চায়, সম্মান প্রদর্শন করতে চায়, তাহলে তাকেও তাদের অনুসরণে রাসূলের আনুগত্য করতে হবে। সুন্নত অনুযায়ী আমল করতে হবে। জন্ম দিবস উদযাপন করে তার ভালোবাসার বহি:প্রকাশ করা হচ্ছে মূলত খ্রিস্টানদের অনুসরণ। যা সর্বতোভাবেই বেদআত ও জঘণ্য পাপ। মিলাদের এ বেদআতি প্রচলনকে খন্ডন করে অনেক কিতাব ও পুস্তিকা পূর্বেই প্রণীত হয়েছে। বর্তমানেও হচ্ছে। এটি যে বেদআত ও কাফেরদের সাদৃশ্যাবলম্বন তা তো প্রমাণিত সত্য। এ ছাড়াও নবীজীর জন্ম দিবস উদযাপন মূলত অন্য ওলী আউলিয়া ও পীর মাশায়েখদের জন্মদিবস উদযাপন ও সে উপলক্ষে বিভিন্ন পাপ কর্ম এবং বেদআতি কাজ সম্পাদনের রাস্তাকে খুলে দেয় ও প্রশস্ত করে।
নব প্রবর্তিত বেদআতের একটি হচ্ছে মাখলুক দ্বারা বরকত প্রার্থনা করা, এটি পৌত্তলিকতার একটি ধরন। এবং এমন একটি ফাঁদ যার মাধ্যমে মৌসুমি ও ভাড়াটে ইসলাম প্রেমিকরা সহজ সরল মুসলমানদের ধন-সম্পদ শিকার করে।
তাবাররুক দ্বারা ( التبرك ) উদ্দেশ্য হচ্ছে, বরকত প্রার্থনা করা অর্থাৎ কোন বস্ত্ততে মঙ্গল ও কল্যাণ ছাবেত এবং বেশি হওয়া।
কল্যাণ প্রতিষ্ঠা ও বৃদ্ধি করার প্রার্থনা একমাত্র তার নিকটই করা হয় যিনি কল্যাণের মালিক এবং বৃদ্ধি করার ক্ষমতা রাখে। আর তিনি হচ্ছেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা। তিনিই বরকত অবতীর্ণ এবং প্রতিষ্ঠিত করেন। মাখলুক (সৃষ্টি-জীব) না বরকত দেয়ার ক্ষমতা রাখে, না সৃষ্টি করার ক্ষমতা রাখে, সে বরকত ধরেও রাখতে পারে না। আবার প্রতিষ্ঠিত ও করতে পারে না।
জীবিত বা মৃত কোন ব্যক্তি, অনুরূপভাবে কোন স্থান ও নিদর্শনের মাধ্যমে তাবাররুক তথা বরকত কামনা ও প্রার্থনা করা না জায়েজ। কারণ এটি হয়তো শিরক হবে অথবা শিরকের ওসীলা বা মাধ্যম হবে। বরকত কামনার মাধ্যমে যদি এ বিশ্বাস করা হয় যে ঐ সকল বস্ত্ত বা ব্যক্তি স্বয়ং বরকত দান করার ক্ষমতা রাখে এবং তাদের নিকট বরকত কামনা করা হলে তারা তা দেবেন, তা হলে এটি তো সরাসরি শিরক। কেননা কোন কিছু হ্রাস বৃদ্ধি করার ক্ষমতা একমাত্র মহান আল্লাহ রাখেন আর এসব ক্ষেত্রে বরকত প্রার্থনাকারীরা গাইরুল্লাহর কাছে বরকত তথা বৃদ্ধির প্রার্থনা করছে। আর যদি বিশ্বাসটি এমন হয় যে তাদের জিয়ারত করা বা স্পর্শ করা অথবা তাদেরকে মাসেহ করার মাধ্যমে বরকত হাসেল হয়। উক্ত কর্মগুলো বরকত হাসেলের মাধ্যম তাহলে এটি হবে শিরকের ওসীলা যার মাধ্যমে শিরকের রাস্তা প্রশস্ত হয় এবং উক্ত বিশ্বাস স্থাপনকারী ক্রমান্বয়ে শিরক পর্যন্ত পৌঁছে যায়। এখানে একটি প্রশ্ন উঠতে পারে যে, একাজটি শিরক বা শিরক ওসীলা কিভাবে হয় ? অথচ সাহাবায়ে কেরাম রিদওয়ানুল্লাহি আজমায়ীন রাসূলুল্লাহ সা.-এর থু থু, চুল এবং শরীর থেকে যা কিছু বিচ্ছিন্ন হত তা দ্বারা বরকত প্রার্থনা করতেন ? এর উত্তর হচ্ছে, এসকল কাজ রাসূলুল্লাহ সা.-এর সাথে খাস, এবং তারা এগুলো তার জীবদ্দশায়ই করেছেন সুতরাং অন্য কারো দ্বারা বা তার ইন্তেকালের পর তার ব্যবহৃত বস্ত্ত দ্বারা এটি জায়েজ নয়।
এর প্রমাণ হল যে সকল সাহাবারা তার জীবদ্দশায় তার থু থু, চুল, শরীর থেকে গড়িয়ে পড়া পানি ইত্যাদি দ্বারা বরকত নিতেন তারাই তার ইন্তেকালের পর তার ব্যবহৃত কামরা ইত্যাদি দ্বারা বরকত নিয়েছেন এমন কোন প্রমাণ নেই। অনুরূপভাবে তিনি যে স্থানে বসতেন, সালাত আদায় করতেন সাহাবারা বরকতের উদ্দেশ্য সে সব স্থানে যাননি বা কোন কিছু করেননি। যখন রাসূলুল্লাহর ব্যাপারে তাদের অবস্থা এরূপ তাহলে অন্যান্য ওলী আউলিয়াদের ব্যাপারে তো বিষয়টি আরো স্পষ্ট। এমনি করে সাহাবাগণ আবু বকর, ওমর, সহ অন্যান্য মর্যাদা সম্পন্ন সাহাবাদের দ্বারাও তাদের জীবিত থাকা অবস্থায় বা ইন্তেকালের পর কখনোই বরকত নিতেন না। তারা নামাজ পড়া ও দোয়া করার উদ্দেশ্যে গারে হেরাতেও যেতেন না। যে তুর পাহাড়ে আল্লাহ তাআলা নবী মূসা আ.-এর সাথে কথা বলেছেন সাহাবারা নামাজ আদায় বা দোয়ার উদ্দেশ্যে সেখানে যেতেন বলেও কোন প্রমাণ নেই। এছাড়াও সে সকল স্থানে বিভিন্ন কারণে প্রসিদ্ধ হয়েছে নবীদের স্মৃতি জড়িয়ে আছে বা নবীদের সমাহিত করা হয়েছে এরূপ কোন স্থানেই বরকতের জন্য তাদের যাতায়াত ছিল না।
নবী আকরাম সা. মক্কা বা মদিনা মুনাওয়ারায় যেখানে দাঁড়িয়ে সব সময় সালাত আদায় করেছেন, সালাফে সালেহীনদের কেউ সেখানে গিয়ে সে জায়গায় স্পর্শ করেননি। চুম্বন করেননি।
অতএব যে সব স্থানে রাসূল সা. এর সম্মানিত পা চলাচল করেছে, তিনি নামাজ আদায় করেছেন, সে সকল জায়গা স্পর্শ করা ও চুম্বন করা—তিনি উম্মতের জন্য অনুমতি দেননি। তাহলে অন্যদের বসার স্থান বা নামাজের স্থান সম্পর্কে কী বলা যেতে পারে ?
সুতরাং কোন বস্ত্ত স্পর্শ করা বা চুম্বন করা কোন ক্রমেই রাসূলুল্লাহর প্রবর্তিত শরিয়তের অন্তর্ভুক্ত নয়।
তাবাররুক দ্বারা ( التبرك ) উদ্দেশ্য হচ্ছে, বরকত প্রার্থনা করা অর্থাৎ কোন বস্ত্ততে মঙ্গল ও কল্যাণ ছাবেত এবং বেশি হওয়া।
কল্যাণ প্রতিষ্ঠা ও বৃদ্ধি করার প্রার্থনা একমাত্র তার নিকটই করা হয় যিনি কল্যাণের মালিক এবং বৃদ্ধি করার ক্ষমতা রাখে। আর তিনি হচ্ছেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা। তিনিই বরকত অবতীর্ণ এবং প্রতিষ্ঠিত করেন। মাখলুক (সৃষ্টি-জীব) না বরকত দেয়ার ক্ষমতা রাখে, না সৃষ্টি করার ক্ষমতা রাখে, সে বরকত ধরেও রাখতে পারে না। আবার প্রতিষ্ঠিত ও করতে পারে না।
জীবিত বা মৃত কোন ব্যক্তি, অনুরূপভাবে কোন স্থান ও নিদর্শনের মাধ্যমে তাবাররুক তথা বরকত কামনা ও প্রার্থনা করা না জায়েজ। কারণ এটি হয়তো শিরক হবে অথবা শিরকের ওসীলা বা মাধ্যম হবে। বরকত কামনার মাধ্যমে যদি এ বিশ্বাস করা হয় যে ঐ সকল বস্ত্ত বা ব্যক্তি স্বয়ং বরকত দান করার ক্ষমতা রাখে এবং তাদের নিকট বরকত কামনা করা হলে তারা তা দেবেন, তা হলে এটি তো সরাসরি শিরক। কেননা কোন কিছু হ্রাস বৃদ্ধি করার ক্ষমতা একমাত্র মহান আল্লাহ রাখেন আর এসব ক্ষেত্রে বরকত প্রার্থনাকারীরা গাইরুল্লাহর কাছে বরকত তথা বৃদ্ধির প্রার্থনা করছে। আর যদি বিশ্বাসটি এমন হয় যে তাদের জিয়ারত করা বা স্পর্শ করা অথবা তাদেরকে মাসেহ করার মাধ্যমে বরকত হাসেল হয়। উক্ত কর্মগুলো বরকত হাসেলের মাধ্যম তাহলে এটি হবে শিরকের ওসীলা যার মাধ্যমে শিরকের রাস্তা প্রশস্ত হয় এবং উক্ত বিশ্বাস স্থাপনকারী ক্রমান্বয়ে শিরক পর্যন্ত পৌঁছে যায়। এখানে একটি প্রশ্ন উঠতে পারে যে, একাজটি শিরক বা শিরক ওসীলা কিভাবে হয় ? অথচ সাহাবায়ে কেরাম রিদওয়ানুল্লাহি আজমায়ীন রাসূলুল্লাহ সা.-এর থু থু, চুল এবং শরীর থেকে যা কিছু বিচ্ছিন্ন হত তা দ্বারা বরকত প্রার্থনা করতেন ? এর উত্তর হচ্ছে, এসকল কাজ রাসূলুল্লাহ সা.-এর সাথে খাস, এবং তারা এগুলো তার জীবদ্দশায়ই করেছেন সুতরাং অন্য কারো দ্বারা বা তার ইন্তেকালের পর তার ব্যবহৃত বস্ত্ত দ্বারা এটি জায়েজ নয়।
এর প্রমাণ হল যে সকল সাহাবারা তার জীবদ্দশায় তার থু থু, চুল, শরীর থেকে গড়িয়ে পড়া পানি ইত্যাদি দ্বারা বরকত নিতেন তারাই তার ইন্তেকালের পর তার ব্যবহৃত কামরা ইত্যাদি দ্বারা বরকত নিয়েছেন এমন কোন প্রমাণ নেই। অনুরূপভাবে তিনি যে স্থানে বসতেন, সালাত আদায় করতেন সাহাবারা বরকতের উদ্দেশ্য সে সব স্থানে যাননি বা কোন কিছু করেননি। যখন রাসূলুল্লাহর ব্যাপারে তাদের অবস্থা এরূপ তাহলে অন্যান্য ওলী আউলিয়াদের ব্যাপারে তো বিষয়টি আরো স্পষ্ট। এমনি করে সাহাবাগণ আবু বকর, ওমর, সহ অন্যান্য মর্যাদা সম্পন্ন সাহাবাদের দ্বারাও তাদের জীবিত থাকা অবস্থায় বা ইন্তেকালের পর কখনোই বরকত নিতেন না। তারা নামাজ পড়া ও দোয়া করার উদ্দেশ্যে গারে হেরাতেও যেতেন না। যে তুর পাহাড়ে আল্লাহ তাআলা নবী মূসা আ.-এর সাথে কথা বলেছেন সাহাবারা নামাজ আদায় বা দোয়ার উদ্দেশ্যে সেখানে যেতেন বলেও কোন প্রমাণ নেই। এছাড়াও সে সকল স্থানে বিভিন্ন কারণে প্রসিদ্ধ হয়েছে নবীদের স্মৃতি জড়িয়ে আছে বা নবীদের সমাহিত করা হয়েছে এরূপ কোন স্থানেই বরকতের জন্য তাদের যাতায়াত ছিল না।
নবী আকরাম সা. মক্কা বা মদিনা মুনাওয়ারায় যেখানে দাঁড়িয়ে সব সময় সালাত আদায় করেছেন, সালাফে সালেহীনদের কেউ সেখানে গিয়ে সে জায়গায় স্পর্শ করেননি। চুম্বন করেননি।
অতএব যে সব স্থানে রাসূল সা. এর সম্মানিত পা চলাচল করেছে, তিনি নামাজ আদায় করেছেন, সে সকল জায়গা স্পর্শ করা ও চুম্বন করা—তিনি উম্মতের জন্য অনুমতি দেননি। তাহলে অন্যদের বসার স্থান বা নামাজের স্থান সম্পর্কে কী বলা যেতে পারে ?
সুতরাং কোন বস্ত্ত স্পর্শ করা বা চুম্বন করা কোন ক্রমেই রাসূলুল্লাহর প্রবর্তিত শরিয়তের অন্তর্ভুক্ত নয়।
বর্তমান যুগে ইবাদতের ক্ষেত্রে নব প্রবর্তিত বেদআতের সংখ্যা অনেক। ইবাদতের ক্ষেত্রে মৌলিক বিধিমালা হচ্ছে—তাওক্বীফ (কোরআন সুন্নাহর উপর নির্ভরশীল) দলিল প্রমাণ ব্যতীত কোন কিছু অনুমোদন পেতে পারে না। যে আমলের পক্ষে দলিল নেই সেটি বেদআত। রাসূলুল্লাহ সা. বলেন :—
من عمل عملاليس عليه أمرنافهو رد .
‘যে এমন আমল সম্পাদন করল যে ব্যাপারে আমাদের কোন নির্দেশ নেই সে পরিত্যাজ্য।’
من عمل عملاليس عليه أمرنافهو رد .
‘যে এমন আমল সম্পাদন করল যে ব্যাপারে আমাদের কোন নির্দেশ নেই সে পরিত্যাজ্য।’
যেমন—
(১) উচ্চে কণ্ঠে নামাজের নিয়্যত করা। যেমন نويت أن أصلي لله كذا وكذا ... এটি বেদআত কারণ রাসূলুল্লাহ সা.এরূপ করেননি, করেছেন মর্মে কোন প্রমাণ নেই। তা ছাড়া আল্লাহ তাআলা বলেছেন :—
قُلْ أَتُعَلِّمُونَ اللَّهَ بِدِينِكُمْ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ وَاللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ . ( الحجرات :16)
‘বলুন : তোমরা কি তোমাদের ধর্ম পরায়ণতা সম্পর্কে আল্লাহকে অবহিত করছ? অথচ আল্লাহ তাআলা ভূ-মন্ডল ও নভোমন্ডলস্থ যা কিছু আছে সে সম্পর্কে পূর্ণ জানেন। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।’
নিয়তের স্থান হচ্ছে অন্তর। নিয়ত অন্তরের কর্ম। জিহবার কর্ম নয়।
(২) নামাজের পর জামাতবদ্ধ হয়ে সম্মিলিত কণ্ঠে উচ্চস্বরে জিকির করা। কেননা এ ক্ষেত্রে শরিয়ত অনুমোদিত পন্থা হচ্ছে হাদিসে বর্ণিত জিকির করবে। (সুতরাং উচ্চ স্বরে সম্মিলিত কণ্ঠে আদায় করা হবে বেদআত।)
(৩) বিভিন্ন উপলক্ষে, দোয়ার পূর্বে পরে এবং মৃত ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে সূরা ফাতেহা পড়তে বলা।
(৪) মৃতদের জন্য তাজিয়া ও মাতম অনুষ্ঠান করা, খাবার দাবার ও ভোজের আয়োজন করা, পয়সার বিনিময়ে কোরআন তেলাওয়াতের আয়োজন করা। যারা এসব অনুষ্ঠানাদির আয়োজন করে তাদের ধারণা মতে এতে করে মৃতদের উপকার হয় এবং তাদের সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়। অথচ এসবই হচ্ছে নিকৃষ্টতম বেদআত যার পক্ষে শরয়ি কোন দলিল নেই। এগুলো একটি কুপ্রথা এবং ধর্মের নামে বিভ্রান্তি যার পক্ষে আল্লাহ তাআলা কোন দলিল অবতীর্ণ করেননি।
(৫) ধর্মের নামে বিভিন্ন উপলক্ষে বিভিন্ন দিনে অনুষ্ঠান ও উৎসব উদযাপন করা। যেমন ইসরা ও মি’রাজ দিবস, হিজরত দিবস ইত্যাদি উপলক্ষে উক্ত দিবসগুলো ধর্মীয় আমেজে বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদি উদযাপন করা। এসব উপলক্ষে ঐ দিনগুলো উদযাপন করার শরয়ি কোন ভিত্তি নেই। বর্তমানে রজব মাসকে কেন্দ্র করে যা করা হয়—যেমন রজবী উমরা, এবং অন্যান্য ইবাদত যথা শুধু নফল রোজা, নফল নামাজ আদায় করা—এগুলো বেদআত হওয়ার কারণ হল, রজব মাসের অন্যান্য মাসের উপর কোন প্রাধান্য নেই। এর আলাদা কোন বৈশিষ্ট্যও নেই। এ মাসে আদায়কৃত হজ, উমরা, নামাজ, রোজা, ও কুরবানির উপর কোন বৈশিষ্ট্য নেই।
(৬) রকমারি বেশে, নানাবিধ ঢংয়ে বহুবিধ আওয়াজে বিভিন্ন জিকির আযকার করা, যা আজকালকার সুফীরা করে থাকে। এ সব নিকৃষ্ট বেদআত, এবং শরিয়ত অনুমোদিত আঙ্গিকলব্ধ ও পদ্ধতি বিরুদ্ধ।
(৭) শাবান মাসের মধ্য রজনিকে রাত জাগরণ এবং দিনকে রোজা রাখার জন্য নির্দিষ্ট করে নেয়া। কেননা এ নির্দিষ্ট করনে শরিয়তের কোন দলিল প্রমাণ নেই। এবং রাসূল এসব আমল করেছেন মর্মে সহীহ কোন সনদ নেই।
(৮) প্রচলিত বেদআতের আরও একটি হচ্ছে কবরের উপর সৌধ জাতীয় কিছু নির্মাণ করা, তাকে সেজদার স্থান বানানো, বরকত হাসিলের উদ্দেশ্যে জিয়ারত করা, মৃত ব্যক্তিদের ওসীলা দেয়াসহ এজাতীয় শিরকী কাজ-কারবার। মহিলাদের কবর জিয়ারতও এর অন্তর্ভুক্ত। অথচ কবর জিয়ারতকারী মহিলা এবং কবরের উপর মসজিদ নির্মাণ ও বাতি প্রজ্বলিত কারীদের রাসূলুল্লাহ সা.লা’নত করেছেন।
(১) উচ্চে কণ্ঠে নামাজের নিয়্যত করা। যেমন نويت أن أصلي لله كذا وكذا ... এটি বেদআত কারণ রাসূলুল্লাহ সা.এরূপ করেননি, করেছেন মর্মে কোন প্রমাণ নেই। তা ছাড়া আল্লাহ তাআলা বলেছেন :—
قُلْ أَتُعَلِّمُونَ اللَّهَ بِدِينِكُمْ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ وَاللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ . ( الحجرات :16)
‘বলুন : তোমরা কি তোমাদের ধর্ম পরায়ণতা সম্পর্কে আল্লাহকে অবহিত করছ? অথচ আল্লাহ তাআলা ভূ-মন্ডল ও নভোমন্ডলস্থ যা কিছু আছে সে সম্পর্কে পূর্ণ জানেন। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।’
নিয়তের স্থান হচ্ছে অন্তর। নিয়ত অন্তরের কর্ম। জিহবার কর্ম নয়।
(২) নামাজের পর জামাতবদ্ধ হয়ে সম্মিলিত কণ্ঠে উচ্চস্বরে জিকির করা। কেননা এ ক্ষেত্রে শরিয়ত অনুমোদিত পন্থা হচ্ছে হাদিসে বর্ণিত জিকির করবে। (সুতরাং উচ্চ স্বরে সম্মিলিত কণ্ঠে আদায় করা হবে বেদআত।)
(৩) বিভিন্ন উপলক্ষে, দোয়ার পূর্বে পরে এবং মৃত ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে সূরা ফাতেহা পড়তে বলা।
(৪) মৃতদের জন্য তাজিয়া ও মাতম অনুষ্ঠান করা, খাবার দাবার ও ভোজের আয়োজন করা, পয়সার বিনিময়ে কোরআন তেলাওয়াতের আয়োজন করা। যারা এসব অনুষ্ঠানাদির আয়োজন করে তাদের ধারণা মতে এতে করে মৃতদের উপকার হয় এবং তাদের সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়। অথচ এসবই হচ্ছে নিকৃষ্টতম বেদআত যার পক্ষে শরয়ি কোন দলিল নেই। এগুলো একটি কুপ্রথা এবং ধর্মের নামে বিভ্রান্তি যার পক্ষে আল্লাহ তাআলা কোন দলিল অবতীর্ণ করেননি।
(৫) ধর্মের নামে বিভিন্ন উপলক্ষে বিভিন্ন দিনে অনুষ্ঠান ও উৎসব উদযাপন করা। যেমন ইসরা ও মি’রাজ দিবস, হিজরত দিবস ইত্যাদি উপলক্ষে উক্ত দিবসগুলো ধর্মীয় আমেজে বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদি উদযাপন করা। এসব উপলক্ষে ঐ দিনগুলো উদযাপন করার শরয়ি কোন ভিত্তি নেই। বর্তমানে রজব মাসকে কেন্দ্র করে যা করা হয়—যেমন রজবী উমরা, এবং অন্যান্য ইবাদত যথা শুধু নফল রোজা, নফল নামাজ আদায় করা—এগুলো বেদআত হওয়ার কারণ হল, রজব মাসের অন্যান্য মাসের উপর কোন প্রাধান্য নেই। এর আলাদা কোন বৈশিষ্ট্যও নেই। এ মাসে আদায়কৃত হজ, উমরা, নামাজ, রোজা, ও কুরবানির উপর কোন বৈশিষ্ট্য নেই।
(৬) রকমারি বেশে, নানাবিধ ঢংয়ে বহুবিধ আওয়াজে বিভিন্ন জিকির আযকার করা, যা আজকালকার সুফীরা করে থাকে। এ সব নিকৃষ্ট বেদআত, এবং শরিয়ত অনুমোদিত আঙ্গিকলব্ধ ও পদ্ধতি বিরুদ্ধ।
(৭) শাবান মাসের মধ্য রজনিকে রাত জাগরণ এবং দিনকে রোজা রাখার জন্য নির্দিষ্ট করে নেয়া। কেননা এ নির্দিষ্ট করনে শরিয়তের কোন দলিল প্রমাণ নেই। এবং রাসূল এসব আমল করেছেন মর্মে সহীহ কোন সনদ নেই।
(৮) প্রচলিত বেদআতের আরও একটি হচ্ছে কবরের উপর সৌধ জাতীয় কিছু নির্মাণ করা, তাকে সেজদার স্থান বানানো, বরকত হাসিলের উদ্দেশ্যে জিয়ারত করা, মৃত ব্যক্তিদের ওসীলা দেয়াসহ এজাতীয় শিরকী কাজ-কারবার। মহিলাদের কবর জিয়ারতও এর অন্তর্ভুক্ত। অথচ কবর জিয়ারতকারী মহিলা এবং কবরের উপর মসজিদ নির্মাণ ও বাতি প্রজ্বলিত কারীদের রাসূলুল্লাহ সা.লা’নত করেছেন।
বেদআত কুফরির রাস্তা। দ্বীনের মধ্যে (এমন জিনিসের) সংযোজন যার অনুমোদন আল্লাহ ও রাসূল কেউ দেননি। বেদআত নিকৃষ্ট ধরনের কবিরা গুনাহ। শয়তান কবিরা গুনাহ দ্বারা যতটুকু আনন্দিত হয় বেদআতের দ্বারা এর চেয়ে বহু গুন বেশি খুশি হয়। কেননা গুনাহ্গার পাপী পাপকে পাপ মনে করে পাপ করে ফলে কোন এক সময় তাওবা করে নেয়। পক্ষান্তরে বেদআতি বেদআতকে দ্বীন জ্ঞান করে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য অর্জনের উদ্দেশ্যে বেদআত কর্ম সম্পাদন করে। ফলে কখনো তাওবা করার প্রয়োজন অনুভব করে না বরং তাওবা করেও না।
বেদআত সুন্নতকে ধ্বংস ও বিলুপ্ত করে দেয়। এবং বেদআতপন্থীদের নিকট সুন্নত ও সুন্নত প্রেমীদের ঘৃণিত ও নিন্দিত করে তুলে।
বেদআত সম্পাদনকারীকে আল্লাহ থেকে দূরে সরিয়ে দেয় এবং তার ক্রোধ ও শাস্তিকে আবশ্যক করে তোলে। অন্তর বিনষ্ট ও বক্র করে দেয়।
বেদআত সুন্নতকে ধ্বংস ও বিলুপ্ত করে দেয়। এবং বেদআতপন্থীদের নিকট সুন্নত ও সুন্নত প্রেমীদের ঘৃণিত ও নিন্দিত করে তুলে।
বেদআত সম্পাদনকারীকে আল্লাহ থেকে দূরে সরিয়ে দেয় এবং তার ক্রোধ ও শাস্তিকে আবশ্যক করে তোলে। অন্তর বিনষ্ট ও বক্র করে দেয়।
পূর্বে আলোচিত অনেক বেদআতই অনেক মুসলমানদের জীবনে অজ্ঞতা ও অসচেতনতার কারণে খুব প্রগাঢ় ও দৃঢ়ভাবে গেড়ে বসেছে। তারা এসব বেদআতকে দ্বীনেরই একটি অংশ মনে করে এবং ভাবে—এ সকল কাজ সম্পাদন না করলে দ্বীনদারী লঙ্ঘন হবে। তা ছাড়া সুবিধাভোগী কিছু লোকের এসব কর্ম প্রচার ও প্রসারে ব্যাপক অংশগ্রহণ এবং নিরলস পরিশ্রমও একটি বড় কারণ। এ পরিস্থিতি ও পরিবেশ মুহাম্মাদ মুস্তাফা সা.-এর প্রকৃত অনুসারী এবং তার আদর্শ প্রচারে সচেষ্ট ব্যক্তিবর্গকে সমাজ সংস্কার ও বেদআত বিতাড়নে রাসূলুল্লাহর নীতি আদর্শ ও তার পথ ও পদ্ধতি অনুসরণের দিকে আহবান করছে। যেমন: ধৈর্যধারণ করা, মনকে প্রশস্ত করা, কষ্ট সহিষ্ণু মনোবৃত্তি, উত্তম ব্যবহার ও চরিত্র প্রদর্শন করা এবং নির্দেশ বর্ণনা করার সময় উত্তম পন্থা ও প্রাঞ্জল ভাষা ব্যবহার করা যা হক গ্রহণ ও বাতেল পরিহার করনে উৎসাহ প্রদান করবে। আল্লাহ স্বীয় নবীকে বলছেন—
وَلَوْ كُنْتَ فَظًّا غَلِيظَ الْقَلْبِ لَانْفَضُّوا مِنْ حَوْلِكَ . ( آل عمران :159)
‘আপনি যদি রূঢ় ও কঠিন হৃদয় হতেন, তাহলে তারা আপনার কাছে থেকে দূরে সরে যেত।’
দাওয়াত কর্মীদের অতীব গুরুত্ব পূর্ণ হচ্ছে :—
তাদের সুন্নত সম্পর্কে বিশদভাবে জানতে হবে। সুন্নতের অনুসরণের মর্তবা ও গুরুত্ব রাসূলুল্লাহ সা.-এর আদর্শ, পথ ও কর্মপন্থা অনুকরণের বরকত সম্বন্ধে ধারণা রাখতে হবে। এবং এটিই যে তার মুহববতের দলিল সেটিও বুঝতে হবে। আর তার আদর্শ ও সুন্নতের বিরোধিতায় মানুষকে রাসূলুল্লাহর সুন্নত ও আদর্শ সম্পর্কে অভিজ্ঞ ও অনুসারী সাহাবা ও তাবেয়ীন এবং দ্বীনের পথে অগ্র সেনানী হেদায়াতের রাহবারদের রাস্তা থেকে দুরে সরিয়ে দেয়—সে সম্পর্কে ও ধারণা থাকতে হবে।
وَلَوْ كُنْتَ فَظًّا غَلِيظَ الْقَلْبِ لَانْفَضُّوا مِنْ حَوْلِكَ . ( آل عمران :159)
‘আপনি যদি রূঢ় ও কঠিন হৃদয় হতেন, তাহলে তারা আপনার কাছে থেকে দূরে সরে যেত।’
দাওয়াত কর্মীদের অতীব গুরুত্ব পূর্ণ হচ্ছে :—
তাদের সুন্নত সম্পর্কে বিশদভাবে জানতে হবে। সুন্নতের অনুসরণের মর্তবা ও গুরুত্ব রাসূলুল্লাহ সা.-এর আদর্শ, পথ ও কর্মপন্থা অনুকরণের বরকত সম্বন্ধে ধারণা রাখতে হবে। এবং এটিই যে তার মুহববতের দলিল সেটিও বুঝতে হবে। আর তার আদর্শ ও সুন্নতের বিরোধিতায় মানুষকে রাসূলুল্লাহর সুন্নত ও আদর্শ সম্পর্কে অভিজ্ঞ ও অনুসারী সাহাবা ও তাবেয়ীন এবং দ্বীনের পথে অগ্র সেনানী হেদায়াতের রাহবারদের রাস্তা থেকে দুরে সরিয়ে দেয়—সে সম্পর্কে ও ধারণা থাকতে হবে।
বেদআত বিতাড়ন করতে গিয়ে বেদআতে নিমজ্জিত মানুষদেরকে বলা হয় আপনারা যা করছেন এগুলোতো সব বেদআত যা মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যায়—তাহলে মানুষ তার কথা শুনবে না বরং বিরোধিতা করবে। আর যদি বেদআত নাম না নিয়ে সুন্নতের মুহাববত ও রাসূল সা.-এর অনুসরণের মর্যাদা কি তাকে ভালবাসার স্বরূপ কি, সুন্নতের অনুসরণই যে তাকে প্রকৃত অর্থে ভালোবাসা—ইত্যাদি পদ্ধতিতে কাজ করা হয়, তাহলে এটি মানুষের মধ্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে এবং সুন্নতের প্রতি তারা আকৃষ্ট হবে। ফলে ধীরে ধীরে সুন্নতের প্রসার ঘটবে আর বেদআত উঠে যাবে। তাতে মূল কাজ বেশি হবে। তাই দাওয়াত কর্মীদের বেদআতের বিরুদ্ধে ঘোষণা দিয়ে জেহাদে অবতীর্ণ না হয়ে সুন্নতের প্রসারতায় আত্মনিয়োগই হবে অধিক ফলদায়ক। আল্লাহ আমাদের সহায় হন।
সমাপ্ত
সমাপ্ত
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন