hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কুরআন ও সুন্নাহ্‌র আলোকে জান্নাত ও জাহান্নাম

লেখকঃ আব্দুর রহমান বিন সাঈদ বিন আলী বিন ওহাফ আল-কাহতানী রহ.

প্রথম অধ্যায়: জান্নাত ও জাহান্নামের পরিচিতি এবং নামসমূহের আলোচনা প্রথম পরিচ্ছেদ: জান্নাতের পরিচিতি ও জান্নাতের নামসমূহ:
জান্নাত: জান্নাত শব্দের আভিধানিক অর্থ বাগান। এ শব্দ থেকেই জিনান বলা হয়ে থাকে। আর আরবরা খেজুর গাছকেও জান্নাত বলে আখ্যায়িত করত( [. মুহাম্মদ বিন আবু বকর আর রাযি, মুখতারুস সিহাহ পৃ: ৪৮ [দেখুন: আল্লামা ইবন মানজুর, লিসানুল আরব, পৃ: ১৩/৯৯ এবং আল্লামা আছফাহানী, মুফরাদাতুল কুরআন, পৃ: ২০৪।])।

মুখতার আল-কামুসে জান্নাত শব্দের অর্থ: জান্নাত অর্থ- খেজুর গাছ, বিভিন্ন ধরনের গাছ বিশিষ্ট বাগান। এর বহুবচন জিনানুন( [. আহমদ তাহের আযযাবী, মুখতারুল কামুস, পৃ: ১১৭।])।

পরিভাষায় জান্নাতের সংজ্ঞা: এটি সেই ঘরের একটি ব্যাপক নাম [যে ঘরকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার অনুসারীদের জন্য তৈরি করে রেখেছেন] যাতে রয়েছে অফুরন্ত ও অসংখ্য নেয়ামত, অনাবিল আনন্দ ও প্রশান্তি, অন্তহীন খুশি, আনন্দ ও চিরস্থায়ী শান্তি ( [. এ শব্দটি মূলত: নির্গত হয়েছে ‘সতর’ ও ‘তাগতিয়া’ শব্দদ্বয় হতে। এ কারণেই গর্বজাত সন্তানকে জানিন বলা হয়ে থাকে। কারণ, সে মায়ের পেটে অদৃশ্য ও গোপন থাকে। এবং এ কারণেই বাগানকে জান্নাত বলা হয়ে থাকে, কারণ, তার অভ্যন্তর গাছ গাছালী দ্বারা আবৃত বা গোপন থাকে। আর এ শব্দটি শুধু মাত্র যেখানে অধিক পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের গাছ থাকে সে বাগানের ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়ে থাকে। দেখুন: আল্লামা ইবনুল কাইয়েম রহ. এর ‘হাদিয়ুল আরওয়াহ ইলা বিলাদিল আফরাহ’ পৃ: ১১১।])।

জান্নাতের নামসমূহ:

জান্নাতের নাম, অর্থ ও শব্দের উৎপত্তি সম্পর্কে আল্লামা ইবনুল কাইয়েম রহ. বলেন, জান্নাতের সিফাতসমূহের বিবেচনায় জান্নাতের নাম একাধিক, কিন্তু জান্নাত একাধিক নয় জান্নাত একটিই। সুতরাং, এ দিকটির বিবেচনায় একাধিক নামের অর্থ অভিন্ন আর জান্নাতের সিফাতসমূহের দিক বিবেচনায় প্রতিটি নামের অর্থ ভিন্ন। অনুরূপভাবে আল্লাহর নাম, আল্লাহর কিতাবের নাম, আল্লাহর রাসূলদের নাম, আখিরাতের নাম ও জাহান্নামের নাম ইত্যাদি( [. আল্লামা ইবনুল কাইয়েম, হাদিয়ুল আরওয়াহ, পৃ: ১১১।])। [এগুলো সবই এক, কিন্তু সিফাত একাধিক হওয়ার কারণে এগুলোর নাম একাধিক]

জান্নাতের নামসমূহ:

১- জান্নাত: আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এরশাদ করেন,

﴿ٱدۡخُلُواْ ٱلۡجَنَّةَ بِمَا كُنتُمۡ تَعۡمَلُونَ ٣٢﴾ [ النحل : ٣٢ ]

“জান্নাতে প্রবেশ কর, যে আমল তোমরা করতে তার কারণে” [. সূরা আন-নাহাল আয়াত: ৩২]।

২- দারুস-সালাম: আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এরশাদ করেন,

﴿وَٱللَّهُ يَدۡعُوٓاْ إِلَىٰ دَارِ ٱلسَّلَٰمِ وَيَهۡدِي مَن يَشَآءُ إِلَىٰ صِرَٰطٖ مُّسۡتَقِيمٖ ٢٥﴾ [ يونس : ٢٥ ]

“আর আল্লাহ শান্তির আবাসের দিকে আহ্বান করেন এবং যাকে ইচ্ছা হিদায়াত দেন সরল পথের দিকে”( [. সূরা ইউনুস, আয়াত: ২৫]) আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আরও এরশাদ করেন,

﴿۞لَهُمۡ دَارُ ٱلسَّلَٰمِ عِندَ رَبِّهِمۡۖ وَهُوَ وَلِيُّهُم بِمَا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ١٢٧ ﴾ [ الانعام : ١٢٧ ]

“তাদের জন্য তাদের রবের নিকট রয়েছে শান্তির আবাস এবং তারা যে আমল করত, তার কারণে তিনি তাদের অভিভাবক”।( [. সূরা আল-আনয়াম, আয়াত: ১২৭]) [যাবতীয় সকল বিপদ আপদ হতে এটি একটি শান্তি ও নিরাপত্তার ঘর( [. হাদিয়ুল আরহওয়াহ ইলা বিলাদিল আফরাহ পৃ: ১১৩]).।]

৩- দারুল খুলুদ ( [. এ বলে নামকরণ করার কারণ হল, জান্নাতীরা কখনোই তা হতে বের হবে না। আল্লাহ তা’আলা বলেন, ﴿عَطَآءً غَيۡرَ مَجۡذُوذٖ ١٠٨﴾ [ هود : ١٠٨ ] ‘অব্যাহত প্রতিদানস্বরুপ’। সূরা হুদ, আয়াত: ১০৮। আল্লাহ আরও বলেন, ﴿ إِنَّ هَٰذَا لَرِزۡقُنَا مَا لَهُۥ مِن نَّفَادٍ ٥٤﴾ [ص: ٥٤ ] ‘নিশ্চয় এটি আমার দেয়া রিযিক, যা নি:শেষ হওয়ার নয়’। সূরা সাদ, আয়াত: ৫৪। আল্লাহ আরও বলেন, ﴿وَمَا هُم مِّنۡهَا بِمُخۡرَجِينَ ٤٨ ﴾ [ الحجر : ٤٨ ] ‘তবে তারা তা হতে বের হবে না’। সূরা আল-হিজর আয়াত: ৪৮।]): আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন,

﴿ ٱدۡخُلُوهَا بِسَلَٰمٖۖ ذَٰلِكَ يَوۡمُ ٱلۡخُلُودِ ٣٤ ﴾ [ق: ٣٤ ]

“তোমরা তাতে শান্তির সাথে প্রবেশ কর। এটাই স্থায়িত্বের দিন” [. সূরা ক্বাফ, আয়াত: ৩৪।]।

৪- দারুল মুকামাহ: আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন,

﴿ ٱلَّذِيٓ أَحَلَّنَا دَارَ ٱلۡمُقَامَةِ مِن فَضۡلِهِۦ لَا يَمَسُّنَا فِيهَا نَصَبٞ وَلَا يَمَسُّنَا فِيهَا لُغُوبٞ ٣٥ ﴾ [ فاطر : ٣٥ ]

‘যিনি নিজ অনুগ্রহে আমাদেরকে স্থায়ী নিবাসে স্থান দিয়েছেন, যেখানে কোন কষ্ট আমাদেরকে স্পর্শ করে না এবং যেখানে কোন ক্লান্তিও আমাদেরকে স্পর্শ করে না [. সূরা ফাতের, আয়াত: ৩৫।].’।

৫- জান্নাতুল মাওয়া: আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন,

﴿عِندَهَا جَنَّةُ ٱلۡمَأۡوَىٰٓ ١٥﴾ [ النجم : ١٥ ]

“যার কাছে জান্নাতুল মা’ওয়া অবস্থিত” [. সূরা আন-নজম, আয়াত: ১৫।] ।

৬- জান্নাতু আদন [. জান্নাতে আদন: অর্থাৎ স্থায়ী ও চিরঞ্জীব জান্নাত। প্রবাদে বলা হয়ে থাকে, عَدَن المكان যখন তা নিয়ে দাঁড়ায়। সুতরাং এ হল, জান্নাত যাকে প্রতিষ্ঠিত করা হল, হাদিয়ুল আরওয়াহ, পৃ: ১১৪।]: আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন,

﴿جَنَّٰتِ عَدۡنٍ ٱلَّتِي وَعَدَ ٱلرَّحۡمَٰنُ عِبَادَهُۥ بِٱلۡغَيۡبِۚ إِنَّهُۥ كَانَ وَعۡدُهُۥ مَأۡتِيّٗا ٦١﴾ [ مريم : ٦١ ] .

“তা চিরস্থায়ী জান্নাত, যার ওয়াদা পরম করুণাময় তাঁর বান্দাদের দিয়েছেন গায়েবের সাথে। নিশ্চয় তাঁর ওয়াদা-কৃত বিষয় অবশ্যম্ভাবী” [. সূরা মারয়াম, আয়াত: ৬১।]।

৭- আল ফিরদাউস: আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এরশাদ করেন,

﴿ إِنَّ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّٰلِحَٰتِ كَانَتۡ لَهُمۡ جَنَّٰتُ ٱلۡفِرۡدَوۡسِ نُزُلًا ١٠٧﴾ [ الكهف : ١٠٧ ]

“নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে, তাদের মেহমানদারির জন্য রয়েছে জান্নাতুল ফেরদাউস” [. সূরা কাহাফ, আয়াত: ১০৭।], [.ফিরদাউস: এমন বাগান যাতে রয়েছে সব ধরনের গাছ গাছালি এবং বিভিন্ন বাগানে যা থাকে তা সবই এক জায়গায় অর্থাৎ ঐ বাগানে পাওয়া যায়, তাকে জান্নাতুল ফিরদাউস বলা হয়ে থাকে। দেখুন: আল্লামা ইবনে হাজরের ফতহুল বারী ১৩/৬, কামুসুল মুহিত পৃ: ৭২৫। ফিরদাউস: এমন জান্নাত যা সব জান্নাতের বিষয়ে ব্যবহার করা যায় অথবা সর্বত্তোম ও সর্ব উৎকৃষ্ট জান্নাতকে জান্নাতুল ফিরদাউস বলা হয়ে থাকে। মনে রাখতে হবে, এ জান্নাতটি অন্যান্য জান্নাতের তুলনায় এ নামে নাম করণ করা বিষয়ে অধিক উপযুক্ত। [হাদিয়ুল আরওয়াহ পৃ: ১১৬] আল্লামা ইবনুল কাইয়েম রহ. বলেন, জান্নাত হল, গোলাকার গম্বুজের মত। সর্বোৎকৃষ্ট, প্রশস্ত ও সর্বোত্তম জান্নাত হল, জান্নাতুল ফিরদাউস। আর এ জান্নাতের ছাদ হল, আল্লাহর আরশ। যেমন, সহীহ হাদিসে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ বলেন, « إذا سألتم الله فاسألوه الفردوس؛ فإنه أوسط الجنة، وأعلى الجنة، وفوقه عرش الرحمن، ومنه تفجَّر أنهار الجنة » “তোমরা যখন আল্লাহর নিকট জান্নাত কামনা করবে তখন জান্নাতুল ফিরদাউস কামনা করবে। কারণ, তা হল, উৎকৃষ্ট জান্নাত ও উন্নত জান্নাত। এ জান্নাতের উপর রয়েছে পরম করুণাময় আল্লাহর আরশ। তা হতে জান্নাতের নহর সমূহ প্রবাহিত হয়”। [বুখারি ২৭৯০, ৭৪২৩] হাদিয়ুল আরওয়াহ পৃ: ৮৪।] ।

৮- জান্নাতুন নাঈম: আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এরশাদ করেন,

﴿ إِنَّ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّٰلِحَٰتِ لَهُمۡ جَنَّٰتُ ٱلنَّعِيمِ ٨﴾ [ لقمان : ٨ ]

“নিশ্চয় যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাদের জন্য রয়েছে নিআমতপূর্ণ জান্নাত;”

৯- আল মাকামুল আমীন: আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এরশাদ করেন, ﴿إِنَّ ٱلۡمُتَّقِينَ فِي مَقَامٍ أَمِينٖ ٥١﴾ [ الدخان : ٥١ ] ( [.সূরা দুখান, আয়াত: ৫১।]) ( [.মাকাম শব্দের অর্থ: অবস্থানের জায়গা। আর আল আমীন অর্থ সব ধরনের খারাবী ও বিপদ-আপদ হতে নিরাপদ হওয়া। এটি ঐ জান্নাতকে বলা হয়, যে জান্নাত সব ধরনের নিরাপত্তাজনিত বিষয়গুলোকে অন্তর্ভূক্ত করে। [হাদিয়ুল আরওয়াহ, পৃ: ১১৬]]). “নিশ্চয় মুত্তাকীরা থাকবে নিরাপদ স্থানে”,

১০- মাকয়াদু সিদকীন: আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এরশাদ করেন,

﴿فِي مَقۡعَدِ صِدۡقٍ عِندَ مَلِيكٖ مُّقۡتَدِرِۢ ٥٥﴾ [ القمر : ٥٥ ]

“যথাযোগ্য আসনে, সর্বশক্তিমান মহা অধিপতির নিকটে”( [.মাকয়াদে সিদক: এটি একটি জান্নাতের নাম। এ জান্নাতকে এ নামে নাম করণ করার, এ জান্নাতে যত সুন্দর সুন্দর আসন ও বসার স্থান চাওয়া হয়, সবই পাওয়া যায়। যেমন বলা হয় ‘সত্যিকার মহব্বত’ যখন তার মধ্যে সত্যিকার ও পরিপূর্ণরূপে মহব্বত পাওয়া যায়। [হাদিয়ুল আরওয়াহ, পৃ: ১১৭]]).।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন