মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
“আর যখন যাবতীয় বিষয়ের ফয়সালা হয়ে যাবে, তখন শয়তান বলবে, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে ওয়াদা দিয়েছিলেন সত্য ওয়াদা, তোমাদের উপর আমার কোন আধিপত্য ছিল না, তবে আমিও তোমাদেরকে ওয়াদা দিয়েছিলাম, এখন আমি তা ভঙ্গ করলাম। তোমাদেরকে দাওয়াত দিয়েছি, আর তোমরা আমার দাওয়াতে সাড়া দিয়েছ। সুতরাং তোমরা আমাকে ভর্ৎসনা করো না, বরং নিজদেরকেই ভর্ৎসনা কর। আমি তোমাদের উদ্ধারকারী নই, আর তোমরাও আমার উদ্ধারকারী নও। ইতঃপূর্বে তোমরা আমাকে যার সাথে শরীক করেছ, নিশ্চয় আমি তা অস্বীকার করছি। নিশ্চয় যালিমদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব’ [. এ বিষয়টির উপর আল-ইবন আব্দুর রহমান রহ. স্বীয় কিতাব ‘ফাওযুল আযীম’-এ পাঠকের উপকারার্থে অনেক গুলো আয়াত উল্লেখ করেন। যেমন- আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন, ﴿أَلَمۡ تَكُنۡ ءَايَٰتِي تُتۡلَىٰ عَلَيۡكُمۡ فَكُنتُم بِهَا تُكَذِّبُونَ ١٠٥ قَالُواْ رَبَّنَا غَلَبَتۡ عَلَيۡنَا شِقۡوَتُنَا وَكُنَّا قَوۡمٗا ضَآلِّينَ ١٠٦ رَبَّنَآ أَخۡرِجۡنَا مِنۡهَا فَإِنۡ عُدۡنَا فَإِنَّا ظَٰلِمُونَ ١٠٧ قَالَ ٱخۡسَُٔواْ فِيهَا وَلَا تُكَلِّمُونِ ١٠٨ إِنَّهُۥ كَانَ فَرِيقٞ مِّنۡ عِبَادِي يَقُولُونَ رَبَّنَآ ءَامَنَّا فَٱغۡفِرۡ لَنَا وَٱرۡحَمۡنَا وَأَنتَ خَيۡرُ ٱلرَّٰحِمِينَ ١٠٩ فَٱتَّخَذۡتُمُوهُمۡ سِخۡرِيًّا حَتَّىٰٓ أَنسَوۡكُمۡ ذِكۡرِي وَكُنتُم مِّنۡهُمۡ تَضۡحَكُونَ ١١٠ إِنِّي جَزَيۡتُهُمُ ٱلۡيَوۡمَ بِمَا صَبَرُوٓاْ أَنَّهُمۡ هُمُ ٱلۡفَآئِزُونَ ١١١﴾ [ المؤمنون : ١٠٥، ١١١ ] ‘আমার আয়াতসমূহ কি তোমাদের কাছে পাঠ করা হত না?’ তারপর তোমরা তা অস্বীকার করতে’। তারা বলবে, ‘হে আমাদের রব, দুর্ভাগ্য আমাদেরকে পেয়ে বসেছিল, আর আমরা ছিলাম পথভ্রষ্ট’। ‘হে আমাদের রব, এ থেকে আমাদেরকে বের করে দিন, তারপর যদি আমরা আবার তা করি তবে অবশ্যই আমরা হব যালিম। ’আল্লাহ বলবেন, ‘তোমরা ধিকৃত অবস্থায় এখানেই থাক, আর আমার সাথে কথা বলো না।’ আমার বান্দাদের একদল ছিল যারা বলত, ‘হে আমাদের রব, আমরা ঈমান এনেছি, অতএব আমাদেরকে ক্ষমা ও দয়া করুন,আর আপনি সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু। তারপর তাদেরকে নিয়ে তোমরা ঠাট্টা করতে। অবশেষে তা তোমাদেরকে আমার স্মরণ ভুলিয়ে দিয়েছিল। আর তোমরা তাদের নিয়ে হাসি-তামাশা করতে।’ নিশ্চয় আমি তাদের ধৈর্যের কারণে আজ তাদেরকে পুরস্কৃত করলাম; নিশ্চয় তারাই হল সফলকাম। [সূরা আল-মুমিন, আয়াত: ১০৫-১১১] আল্লাহ বলেন, ﴿ إِنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ يُنَادَوۡنَ لَمَقۡتُ ٱللَّهِ أَكۡبَرُ مِن مَّقۡتِكُمۡ أَنفُسَكُمۡ إِذۡ تُدۡعَوۡنَ إِلَى ٱلۡإِيمَٰنِ فَتَكۡفُرُونَ ١٠ قَالُواْ رَبَّنَآ أَمَتَّنَا ٱثۡنَتَيۡنِ وَأَحۡيَيۡتَنَا ٱثۡنَتَيۡنِ فَٱعۡتَرَفۡنَا بِذُنُوبِنَا فَهَلۡ إِلَىٰ خُرُوجٖ مِّن سَبِيلٖ ١١ ذَٰلِكُم بِأَنَّهُۥٓ إِذَا دُعِيَ ٱللَّهُ وَحۡدَهُۥ كَفَرۡتُمۡ وَإِن يُشۡرَكۡ بِهِۦ تُؤۡمِنُواْۚ فَٱلۡحُكۡمُ لِلَّهِ ٱلۡعَلِيِّ ٱلۡكَبِيرِ ١٢ ﴾ [ غافر : ١٠، ١٢ ] “নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে তাদেরকে উচ্চকণ্ঠে বলা হবে; ‘তোমাদের নিজদের প্রতি তোমাদের (আজকের) এ অসন্তোষ অপেক্ষা অবশ্যই আল্লাহর অসন্তোষ অধিকতর ছিল, যখন তোমাদেরকে ঈমানের প্রতি আহ্বান করা হয়েছিল তারপর তোমরা তা অস্বীকার করেছিলে’। তারা বলবে, ‘হে আমাদের রব, আপনি আমাদেরকে দু’বার মৃত্যু দিয়েছেন এবং দু’বার জীবন দিয়েছেন। অতঃপর আমরা আমাদের অপরাধ স্বীকার করছি। অতএব (জাহান্নাম থেকে) বের হবার কোন পথ আছে কি’? [তাদেরকে বলা হবে] ‘এটা তো এজন্য যে, যখন আল্লাহকে এককভাবে ডাকা হত তখন তোমরা তাঁকে অস্বীকার করতে আর যখন তাঁর সাথে শরীক করা হত তখন তোমরা বিশ্বাস করতে। সুতরাং যাবতীয় কর্তৃত্ব সমুচ্চ, মহান আল্লাহর’। [সূরা গাফের, আয়াত: ১০, ১২] আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন, ﴿ وَقَالَ ٱلَّذِينَ فِي ٱلنَّارِ لِخَزَنَةِ جَهَنَّمَ ٱدۡعُواْ رَبَّكُمۡ يُخَفِّفۡ عَنَّا يَوۡمٗا مِّنَ ٱلۡعَذَابِ ٤٩ قَالُوٓاْ أَوَ لَمۡ تَكُ تَأۡتِيكُمۡ رُسُلُكُم بِٱلۡبَيِّنَٰتِۖ قَالُواْ بَلَىٰۚ قَالُواْ فَٱدۡعُواْۗ وَمَا دُعَٰٓؤُاْ ٱلۡكَٰفِرِينَ إِلَّا فِي ضَلَٰلٍ ٥٠ ﴾ [ غافر : ٤٩، ٥٠ ] “আর যারা আগুনে থাকবে তারা আগুনের দারোয়ানদেরকে বলবে, ‘তোমাদের রবকে একটু ডাকো না! তিনি যেন একটি দিন আমাদের আযাব লাঘব করে দেন।’ তারা বলবে, ‘তোমাদের কাছে কি সুস্পষ্ট প্রমাণাদিসহ তোমাদের রাসূলগণ আসেনি’? জাহান্নামীরা বলবে, ‘হ্যাঁ অবশ্যই’। দারোয়ানরা বলবে, ‘তবে তোমরাই দো‘আ কর। আর কাফিরদের দো‘আ কেবল নিষ্ফলই হয়”। [সূরা গাফের, আয়াত: ৪৯, ৫০] আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আরও বলেন, ﴿ وَنَادَوۡاْ يَٰمَٰلِكُ لِيَقۡضِ عَلَيۡنَا رَبُّكَۖ قَالَ إِنَّكُم مَّٰكِثُونَ ٧٧ لَقَدۡ جِئۡنَٰكُم بِٱلۡحَقِّ وَلَٰكِنَّ أَكۡثَرَكُمۡ لِلۡحَقِّ كَٰرِهُونَ ٧٨ ﴾ [ الزخرف : ٧٧، ٧٨ ] “তারা চিৎকার করে বলবে, ‘হে মালিক, তোমার রব যেন আমাদেরকে শেষ করে দেন’। সে বলবে, ‘নিশ্চয় তোমরা অবস্থানকারী’।‘অবশ্যই তোমাদের কাছে আমি সত্য নিয়ে এসেছিলাম; কিন্তু তোমাদের অধিকাংশই ছিলে সত্য অপছন্দকারী”। [সূরা যুখরফ, আয়াত: ৭৭, ৭৮] আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আরও বলেন, ﴿ وَنَادَىٰٓ أَصۡحَٰبُ ٱلۡجَنَّةِ أَصۡحَٰبَ ٱلنَّارِ أَن قَدۡ وَجَدۡنَا مَا وَعَدَنَا رَبُّنَا حَقّٗا فَهَلۡ وَجَدتُّم مَّا وَعَدَ رَبُّكُمۡ حَقّٗاۖ قَالُواْ نَعَمۡۚ فَأَذَّنَ مُؤَذِّنُۢ بَيۡنَهُمۡ أَن لَّعۡنَةُ ٱللَّهِ عَلَى ٱلظَّٰلِمِينَ ٤٤ ﴾ [ الاعراف : ٤٤ ] “আর জান্নাতের অধিবাসীগণ আগুনের অধিবাসীদেরকে ডাকবে যে, ‘আমাদের রব আমাদেরকে যে ওয়াদা দিয়েছেন তা আমরা সত্য পেয়েছি। সুতরাং তোমাদের রব তোমাদেরকে যে ওয়াদা দিয়েছেন, তা কি তোমরা সত্যই পেয়েছ’? তারা বলবে, ‘হ্যাঁ’। অতঃপর এক ঘোষক তাদের মধ্যে ঘোষণা দেবে যে, আল্লাহর লা’নত যালিমদের উপর”। [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ৪৪] আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন, ﴿ وَنَادَىٰٓ أَصۡحَٰبُ ٱلنَّارِ أَصۡحَٰبَ ٱلۡجَنَّةِ أَنۡ أَفِيضُواْ عَلَيۡنَا مِنَ ٱلۡمَآءِ أَوۡ مِمَّا رَزَقَكُمُ ٱللَّهُۚ قَالُوٓاْ إِنَّ ٱللَّهَ حَرَّمَهُمَا عَلَى ٱلۡكَٰفِرِينَ ٥٠ ٱلَّذِينَ ٱتَّخَذُواْ دِينَهُمۡ لَهۡوٗا وَلَعِبٗا وَغَرَّتۡهُمُ ٱلۡحَيَوٰةُ ٱلدُّنۡيَاۚ فَٱلۡيَوۡمَ نَنسَىٰهُمۡ كَمَا نَسُواْ لِقَآءَ يَوۡمِهِمۡ هَٰذَا وَمَا كَانُواْ بَِٔايَٰتِنَا يَجۡحَدُونَ ٥١ ﴾ [ الاعراف : ٥٠، ٥١ ] “আর আগুনের অধিবাসীরা জান্নাতের অধিবাসীদেরকে ডেকে বলবে, ‘আমাদের উপর কিছু পানি অথবা তোমাদেরকে আল্লাহ যে রিযক দিয়েছেন, তা ঢেলে দাও’। তারা বলবে, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তা কাফিরদের উপর হারাম করেছেন’। ‘যারা তাদের ধর্মকে গ্রহণ করেছে খেলা ও তামাশারূপে এবং তাদেরকে দুনিয়ার জীবন প্রতারিত করেছে’। সুতরাং আজ আমি তাদেরকে ভুলে যাব, যেমন তারা তাদের এই দিনের সাক্ষাতকে ভুলে গিয়েছিল। আর (যেভাবে) তারা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করত। [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ৫০, ৫১]]।
জাহান্নামীদের জন্য সবচেয়ে বড় আযাব হল, আল্লাহর দর্শন থেকে তাদের বঞ্চিত হওয়া। জাহান্নামীদের মাঝে আর আল্লাহর মাঝে একটি পর্দা থাকবে। ফলে তারা আল্লাহকে দেখতে পাবে না। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এরশাদ করেন,
“কখনো নয়, নিশ্চয় সেদিন তারা তাদের রব থেকে পর্দার আড়ালে থাকবে। তারপর নিশ্চয় তারা প্রজ্বলিত আগুনে প্রবেশ করবে। তারপর বলা হবে, এটাই তা যা তোমরা অস্বীকার করতে” [. সূরা আল-মুতাফফিফিন, আয়াত: ১৫, ১৭।]।
দ্বিতীয় বিষয় : জাহান্নামীদের দৈহিক শাস্তি
জাহান্নামীদের সবচেয়ে বড় শাস্তি হল, তাদের মধ্যে যারা কাফের ও মুনাফেক তারা চিরকাল জাহান্নামের অবস্থান করবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এ বিষয়ে এরশাদ করে বলেন,
“নিশ্চয় অপরাধীরা জাহান্নামের আযাবে স্থায়ী হবে; তাদের থেকে আযাব কমানো হবে না এবং তাতে তারা হতাশ হয়ে পড়বে” [. সূরা যুখরুফ, আয়াত: ৭৪,৭৫।]। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এরশাদ করে বলেন,
“সুতরাং তোমরা স্বাদ গ্রহণ কর। আর আমি তো কেবল তোমাদের আযাবই বৃদ্ধি করব” [. সূরা আন-নাবা, আয়াত: ৩০।]। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আরও বলেন, ﴿ وَسُقُواْ مَآءً حَمِيمٗا فَقَطَّعَ أَمۡعَآءَهُمۡ ١٥ ﴾ [ محمد : ١٥ ]
“এবং তাদেরকে ফুটন্ত পানি পান করানো হবে ফলে তা তাদের নাড়িভুঁড়ি ছিন্নÑবিচ্ছিন্ন করে দেবে” [. সূরা মুহাম্মদ: আয়াত: ১৫]?
আল্লামা সা’দী রহ. বলেন, তাদেরকে জাহান্নামে অত্যন্ত গরম পানি পান করানো হবে( [. আব্দুর রহমান নাসের আসসা’দী, তাফসীরুল করিম আররহমান পৃ: ৭৮৬।]).।
জাহান্নামীদের আরেকটি শাস্তি হল, জাহীম ও যাক্কুম: আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন,
“নিশ্চয় যাক্কূম বৃক্ষ, পাপীর খাদ্য ; গলিত তামার মত, উদরসমূহে ফুটতে থাকবে। ফুটন্ত পানির মত, (বলা হবে) ‘ওকে ধর, অতঃপর তাকে জাহান্নামের মধ্যস্থলে টেনে নিয়ে যাও। তারপর তার মাথার উপর ফুটন্ত পানির আযাব ঢেলে দাও। (বলা হবে) ‘তুমি আস্বাদন কর, নিশ্চয় তুমিই সম্মানিত, অভিজাত” [. সূরা আদ-দুখান, আয়াত: ৪৩-৪৯।]।
আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা সা’দী রহ. বলেন [. আল্লামা সা’দী, তাইসীরুল কারিম আররহমান পৃ: ৭৭৪।], [. মানুষকে ভয় দেখানো এবং সতর্ক করার উদ্দেশ্যে আল্লাহ তা’আলা তার স্বীয় কিতাব কুরআন কারীমে জাহান্নামের শাস্তির কথা অনেকবার উল্লেখ করেছেন এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ হাদীসে অসংখ্যবার জাহান্নামের শাস্তির বর্ণনা দিয়েছেন। আল্লাহ তা’আলা বলেন, ﴿فَٱتَّقُواْ ٱلنَّارَ ٱلَّتِي وَقُودُهَا ٱلنَّاسُ وَٱلۡحِجَارَةُۖ أُعِدَّتۡ لِلۡكَٰفِرِينَ ٢٤ ﴾ [ البقرة : ٢٤ ] “তাহলে আগুনকে ভয় কর যার জ্বালানী হবে মানুষ ও পাথর, যা প্রস্তুত করা হয়েছে কাফিরদের জন্য”। [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ২৪] আল্লাহ তা’আলা আরও বলেন, ﴿فَأَنذَرۡتُكُمۡ نَارٗا تَلَظَّىٰ ١٤ لَا يَصۡلَىٰهَآ إِلَّا ٱلۡأَشۡقَى ١٥ ٱلَّذِي كَذَّبَ وَتَوَلَّىٰ ١٦ ﴾ [ الليل : ١٤، ١٦ ] অতএব আমি তোমাদের সতর্ক করে দিয়েছি লেলিহান আগুন সম্পর্কে, তাতে নিতান্ত হতভাগা ছাড়া কেউ প্রবেশ করবে না; যে অস্বীকার করেছে এবং মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। [সূরা আল-লাইল, আয়াত: ১৪, ১৬]রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ নিজেও মানুষকে জাহান্নামের আগুন ও শাস্তি হতে ভয় দেখান ও সতর্ক করেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ বলেন, « أنا آخذ بحُجَزكم عن النار، هلمَّ عن النار هلمَّ عن النار، فتغلبوني تقحمون فيها » [ مسلم، 2284].“আমি তোমাদের জাহান্নাম থেকে বাঁচানোর জন্য তোমাদের কোমর পেঁচিয়ে ধরব। আর তোমাদের বলতে থাকব, জাহান্নাম থেকে দূর হও, জাহান্নাম থেকে দূর হও। কিন্তু তোমরা আমাকে পরাহত করবে, তোমরা জাহান্নামে প্রবেশ করবে। [মুসলিম, হাদিস নং: ২২৮৪]], কিয়ামত দিবসের কথা আলোচনা করার পর, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন জানিয়ে দেন যে, মানুষকে সেদিন দুটি ভাগে ভাগ করা হবে। একদল জান্নাতে যাবে এবং একদল জাহান্নামে যাবে। যারা জাহান্নামে যাবে তারা অপরাধী যারা আল্লাহর নাফরমানি ও আল্লাহর সাথে কুফরী করেছিল। আর তাদের খাদ্য হবে, জাক্কুম বৃক্ষ। এটি একটি অতীব খারাপ ও ভয়ানক বৃক্ষ। আর তাদের খাদ্য হবে দুর্গন্ধযুক্ত, পঁচা গলা পিতের মত। যার গন্ধ ও স্বাদ হবে খুব তীক্ত ও অসহনীয়। আর তাদের দেয়া হবে, গরম খাওয়ার, তা তাদের উদরসমূহে ফুটতে থাকবে ফুটন্ত গরম পানির মত। আযাবে আক্রান্ত ব্যক্তিকে বলা হবে, তুমি বেদনাদায়ক শাস্তি ও ভয়াবহ আযাব উপভোগ করতে থাক। [ إِنَّكَ أَنتَ ٱلۡعَزِيزُ ٱلۡكَرِيمُ ] অর্থাৎ তোমার বিশ্বাস অনুযায়ী তুমি শক্তিশালী তুমি নিজেকে আল্লাহর আযাব হতে বিরত রাখতে সক্ষম হবে। আর তুমি আল্লাহর নিকট সম্মানী। তোমাকে কোন শাস্তি স্পর্শ করবে না। কিন্তু মনে রাখবে, আজকের দিন তুমি বুঝতে পারবে তুমি কি সম্মানী নাকি নিকৃষ্ট, অপমানিত ও লাঞ্ছিত। [.আল্লাহ তা’আলা যে ভয় দেখান তার একটি প্রমাণ হল, আল্লাহ জাহান্নামের দরজাসমূহের বর্ণনা দিয়ে বলেন, ﴿وَإِنَّ جَهَنَّمَ لَمَوۡعِدُهُمۡ أَجۡمَعِينَ ٤٣ لَهَا سَبۡعَةُ أَبۡوَٰبٖ لِّكُلِّ بَابٖ مِّنۡهُمۡ جُزۡءٞ مَّقۡسُومٌ ٤٤ ﴾ [ الحجر : ٤٣، ٤٤ ] ‘আর নিশ্চয় জাহান্নাম তাদের সকলের প্রতিশ্রুত স্থান’। ‘তার সাতটি দরজা রয়েছে। প্রতিটি দরজার জন্য রয়েছে তাদের মধ্য থেকে নির্দিষ্ট একটি শ্রেণী’। [সূরা আল-হিজর, আয়াত: ৪৩, ৪৪] রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ বর্ণনা দেন - «أن أهل النار يلعن بعضهم بعضاً، وكلما دخلت أمة لعنت أختها، জাহান্নামীরা একে অপরের উপর অভিশাপ করবে, যখনই একটি জামাত জাহান্নামে প্রবেশ করবে, অপর জামাত তাদের অভিশাপ দেবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ বলেন, أن عمق النار في دركاتها سبعون عاماً يقول : « هذا حجر رُمي به في النار منذ سبعين خريفاً، فهو يهوي في النار الآن حتى انتهى إلى قعرها» [ مسلم، برقم 2844].“জাহান্নামের গভীরতা সত্তুর বছরের রাস্তা। তিনি বলেন, এটি একটি পাথর যাকে সত্তুর বছর থেকে নিক্ষেপ করা হয়েছে। আর সেটি এখন পর্যন্ত নীচের দিকে যাচ্ছে। পাথরটি ততদিন পর্যন্ত জাহান্নামে যেতে থাকবে যতদিন সে তার একেবারে গভীরে না পৌঁছবে। [মুসলিম, হাদিস নং: ২৮৪৪] রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ আরও বলেন, «أن أهون أهل النار عذاباً يوم القيامة رجل على أخمص قدميه جمرتان يغلي منهما دماغه كما يغلي المرجل، ما يرى أن أحداً أشدّ منه عذاباً» [ مسلم، برقم 213]. “কিয়ামতের দিন সর্বাধিক হালকা আযাব যাকে দেয়া হবে, সে হল, ঐ ব্যক্তি যাকে আগুনের কয়লার দুটি জুতো পরানো হবে। তার মগজ এরকম টগবগ করতে থাকবে যেমনটি টগবগ করতে থাকে পাতিলের গরম পানি। অথচ সে তার মত এত কষ্ট বা শাস্তি আর কাউকে দিচ্ছে বলে বিশ্বাস করতে পারবে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’বলেন, « يُؤتى بجهنم يوم القيامة لها سبعون ألف زمام، مع كل زمام سبعون ألف مَلَك يجرّونها » [ مسلم، برقم 2842]. “কিয়ামতের জাহান্নামকে উপস্থিত করা হবে, তখন তার জন্য সত্তরটি লাগাম থাকবে। প্রতিটি লাগামের সাথে সত্তুর হাজার ফেরেশতা থাকবে তারা জাহান্নাম টেনে নিয়ে আসবে। মুসলিম, হাদিস নং ২৮৪২। আল্লাহ তা’আলা বলেন, ﴿ ٖ يُصَبُّ مِن فَوۡقِ رُءُوسِهِمُ ٱلۡحَمِيمُ ١٩ يُصۡهَرُ بِهِۦ مَا فِي بُطُونِهِمۡ وَٱلۡجُلُودُ ٢٠ ﴾ [ الحج : ١٩، ٢٠ ] “তাদের মাথার উপর থেকে ঢেলে দেয়া হবে ফুটন্ত পানি। যার দ্বারা তাদের পেটের অভ্যন্তরে যা কিছু রয়েছে তা ও তাদের চামড়াসমূহ বিগলিত করা হবে”। [ সূরা আল-হজ্জ, আয়াত: ১৯, ২০] আল্লাহ তা’আলা আরও বলেন, ﴿ وَتَرَى ٱلۡمُجۡرِمِينَ يَوۡمَئِذٖ مُّقَرَّنِينَ فِي ٱلۡأَصۡفَادِ ٤٩ سَرَابِيلُهُم مِّن قَطِرَانٖ وَتَغۡشَىٰ وُجُوهَهُمُ ٱلنَّارُ ٥٠ ﴾ [ ابراهيم : ٤٩، ٥٠ ] “আর সে দিন তুমি অপরাধীদের দেখবে তারা শিকলে বাঁধা। তাদের পোশাক হবে আলকাতরার এবং আগুন তাদের চেহারাসমূহকে ঢেকে ফেলবে”। [সূরা ইবরাহিম, আয়াত: ৪৯, ৫০] আল্লাহ তা’আলা জাহান্নামীদের দেহকে জাহান্নামে বড় করে দেবেন যাতে তাদের কষ্ট বেশি হয়। যেমন আবু হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত রাসূর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ বলেন, « ما بين منكبي الكافر مسيرة ثلاثة أيام للراكب المسرع » [ البخاري، برقم 6552 ، ومسلم، برقم 2852] “একজন কাফেরের কাঁধ একজন দ্রূতগামী আরোহীর তিন দিনের রাস্তার সমান চওড়া। [বুখারি হাদিস নং: ৬৫৫২, মুসলিম হাদিস নং: ২৮৫২] রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ আরও বলেন, « ضرس الكافر أو ناب الكافر مثل أحد، وغِلَظُ جلده مسيرة ثلاث » [ مسلم، برقم 2851]. “একজন কাফেরের দাঁত ওহুদ পাহাড়েরর সমান। আর তার চামড়া মোটা হওয়ার দূরত্ব তিন দিনের পথ। [মুসলিম, হাদিস নং: ২৮৫১] জাহান্নামীরা কিয়ামত দিবসে তারা নিজেরাও ক্ষতির সম্মূখীন হবে এবং তাদের পরিবার পরিজনদেরও ক্ষতির সম্মূখীন করবে। আর এটি তাদের জন্য সু-স্পষ্ট ক্ষতি, আল্লাহর নিকট আমরা জাহান্নাম হতে আশ্রয় চাই। জাহান্নামীদের শাস্তি সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা বলেন, ﴿ إِنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ بَِٔايَٰتِنَا سَوۡفَ نُصۡلِيهِمۡ نَارٗا كُلَّمَا نَضِجَتۡ جُلُودُهُم بَدَّلۡنَٰهُمۡ جُلُودًا غَيۡرَهَا لِيَذُوقُواْ ٱلۡعَذَابَۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَزِيزًا حَكِيمٗا ٥٦ ﴾ [ النساء : ٥٦ ] “নিশ্চয় যারা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে, অচিরেই আমি তাদেরকে প্রবেশ করাব আগুনে। যখনই তাদের চামড়াগুলো পুড়ে যাবে তখনই আমি তাদেরকে পালটে দেব অন্য চামড়া দিয়ে যাতে তারা আস্বাদন করে আযাব। নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আরও বলেন, ﴿ يَوۡمَ تُقَلَّبُ وُجُوهُهُمۡ فِي ٱلنَّارِ يَقُولُونَ يَٰلَيۡتَنَآ أَطَعۡنَا ٱللَّهَ وَأَطَعۡنَا ٱلرَّسُولَا۠ ٦٦ ﴾ [ الاحزاب : ٦٦ ] “যেদিন তাদের চেহারাগুলো আগুনে উপুড় করে দেয়া হবে, তারা বলবে, ‘হায়, আমরা যদি আল্লাহর আনুগত্য করতাম এবং রাসূলের আনুগত্য করতাম”! [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৬৬] আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এরশাদ করে বলেন, ﴿ يَوۡمَ يُسۡحَبُونَ فِي ٱلنَّارِ عَلَىٰ وُجُوهِهِمۡ ذُوقُواْ مَسَّ سَقَرَ ٤٨ ﴾ [ القمر : ٤٨ ] “সেদিন তাদেরকে উপুড় করে টেনে হিঁচড়ে জাহান্নামে নেয়া হবে। (বলা হবে) জাহান্নামের ছোঁয়া আস্বাদন কর”। [সূরা আল-কামার, আয়াত: ৪৮] হাদিসে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ বলেন, «يحشر المتكبرون يوم القيامة أمثال الذر في صور الرجال، يغشاهم الذل من كل مكان، يُساقون إلى سجن في جهنم، يُسمَّى بولس، تعلوهم نارُ الأنيار، يسقون من عصارة أهل النار طينة الخَبَال » [ الترمذي، برقم 2623 ، وأحمد، 2/189 ، وحسنه الألباني في صحيح الترمذي، 2/304].“কিয়ামতের দিন অহংকারীদের একজন মানুষের আকৃতিতে অণুকণার মত করে একত্র করা হবে। তাদের চতুর্দিক থেকে অপমান ও লাঞ্ছনা গ্রাস করে ফেলবে। তাদেরকে জাহান্নামের মধ্যে বুলস নামক জেল খানায় টেনে নেয়া হবে। তাদের মাথার উপর থাকবে জাহান্নামের উত্তপ্ত আগুন। তাদের পান করানো হবে, জাহান্নামীদের দেহের পঁচা-গন্ধ পুজ ইত্যাদি”। তিরমিযি, হাদিস নং: ২৬২৩ আহমাদ হাদিস নং: ১৮৯/২ আর আল্লামা আলবানী সহীহ তিরমিযিতে হাদিসটিকে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন ৩০৪/২। আব্দুল্ল্লাহ ইবন্ কাইস রা. এর হাদিসে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ বলেন, « إن أهل النار ليبكون حتى لو أجريت السفن في دموعهم لجرت، وإنهم ليبكون الدم » يعني مكان الدمع، [ الحاكم، 4/605 ، وصححه ووافقه الذهبي، وحسنه الألباني في الأحاديث الصحيحة، 4/245 ، برقم 1679].জাহান্নামীরা কিয়ামতের দিন এ রকম কাঁদতে থাকবে যদি তাদের চোখের পানিতে কেউ নৌকা চালাতে চায় তবে সে নৌকা চালাতে পারবে। আর সেদিন তাদের চোখের পানি হবে রক্ত। অর্থাৎ চোখের পানির পরিবর্তে তাদের চোখ থেকে রক্ত বের হবে। [হাকিম ৬০৪/৪ এবং হাদিসটিকে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন। আর ইমাম যাহবী তার সাথে ঐকমত পোষণ করেন। আর আল্লামা আলবানী আহাদিসে সহীহা কিতাবে হাদিসটি হাসান বলে আখ্যায়িত করেন। দেখুন: ২৪৫/৪, হাদিস নং: ১৬৭৯] আল্লাহ তা’আলা তার কিতাবে জাহান্নামীদের শাস্তি অনেক বর্ণনা করেছেন এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ হাদিসে অনেক সতর্ক করেছেন। আমরা আল্লাহর নিকট জান্নাতুল ফিরদাউস কামনা করি এবং জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাই।]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/304/9
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।