HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল-কুরআন ইসলামী শরীয়াহ্-এর অন্যতম উৎস

লেখকঃ ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী

ভূমিকা :
বিভিন্ন প্রাকৃতিক প্রয়োজনের প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্টিলগ্ন থেকেই সমাজের প্রত্যেকের রয়েছে নানাবিধ চাহিদা। ব্যক্তি একাই নিজের সে সব চাহিদা মেটাতে সক্ষম নয়। জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে সমাজের অন্যদের সহযোগিতার প্রতি তাকে মুখাপেক্ষী হতে হয়। ফলে স্বভাবতই মানুষের জীবন হয়ে পড়েছে সৃষ্টির আদিকাল থেকেই সমাজবদ্ধ। সমাজের সকলের অধিকারকে সুশৃংখলভাবে সংরক্ষণ করার জন্য প্রয়োজন একটি পরিপূর্ণ আইনী ব্যবস্থা ও বিধানের, যা তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ণয় করবে, অধিকারের সীমা নির্দিষ্ট করে দেবে ও প্রত্যেকের স্বেচ্ছাচারিতাকে আইনের দ্বারা সীমিত ও নিয়ন্ত্রিত করবে। এ ব্যবস্থা না হলে মানুষের সামষ্টিক জীবন হয়ে পড়বে খুবই দুষ্কর। কেননা মানুষের একটা প্রবণতা হচ্ছে নিজের সুবিধা ও স্বার্থকে বড় করে দেখা। এ প্রবণতা যদি আইন দ্বারা সুনিয়ন্ত্রিত না হয়, তাহলে পারস্পরিক যুলুম-নির্যাতন বেড়ে যাবে, অধিকার ক্ষুন্ন হবে এবং সমাজে বিপর্যয় সৃষ্টি হবে। আর প্রতাপশালী ও কূটজাল বিস্তারকারীদের দৌরাত্ম্য প্রতিষ্ঠিত হবে। সুতরাং মানুষ সবসময়ই সুশৃংখল আইন-কানুন সম্বলিত এমন এক জীবন-ব্যবস্থা মেনে চলার তীব্র প্রয়োজন অনুভব করেছে, যাতে সমাজের সকলের অধিকার নিশ্চিত হয়, কেউ কারো অধিকার হরণ করতে না পারে এবং কেউ-ই তার নিজের সীমালঙ্ঘন করে অন্যের সীমায় অনুপ্রবেশ করতে না পারে। বস্তুত একটা সুষম, কল্যাণমুখী ও সর্বাত্মক ব্যবস্থা ছাড়া মানুষের পক্ষে সুস্থ স্বাভাবিক সমাজ-জীবন যাপন করা কোনমতেই সম্ভবপর নয়। এজন্যই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা মানবজাতির প্রতি রহমত স্বরূপ নাযিল করেছেন এক মহান শরীয়াহ্ তথা সার্বিক আইন ও বিধান যার ভিত্তিতে হতে পারে মানুষের যাবতীয় সমস্যার সার্থক সমাধান ও তাদের পারস্পরিক বিবাদ-বিসম্বাদের সুষ্ঠু মীমাংসা ও নিষ্পত্তি। তাঁর অবতারিত শরীয়ত তাঁর অগণিত অন্য সব নিয়ামতের মতই বিশ্বমানবতার প্রতি এক বিরাট রহমত হয়ে দেখা দিয়েছে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন,

﴿ ثُمَّ جَعَلۡنَٰكَ عَلَىٰ شَرِيعَةٖ مِّنَ ٱلۡأَمۡرِ فَٱتَّبِعۡهَا وَلَا تَتَّبِعۡ أَهۡوَآءَ ٱلَّذِينَ لَا يَعۡلَمُونَ ١٨ ﴾ [ الجاثية : ١٨ ]

‘‘এরপর আমি তোমাকে প্রতিষ্ঠিত করেছি দীনের অন্তর্গত ‘শরীয়াহ্’ এর উপর, সুতরাং তুমি তার অনুসরণ কর। আর অজ্ঞদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করো না’’। [আল-জাসিয়াহ : ১৮]

বস্তুত আল্লাহর শরীয়াহ্ই হচ্ছে তাঁর বান্দাদের মধ্যে পারস্পরিক ন্যায়পরায়ণতা স্থাপনের যথার্থ বিধান। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাদেরকে নিজ নিজ জীবন, সমাজ ও রাষ্ট্রের উৎকর্ষ সাধনের ব্যাপারে কেবলমাত্র তাদের নিজস্ব বিবেক-বুদ্ধির উপর একান্তভাবে নির্ভরশীল ও মুখাপেক্ষী করে ছেড়ে দেন নি। বরং তাদেরকে প্রবৃত্তির স্বেচ্ছাচার থেকে মুক্ত করেছেন ইসলামী শরীয়াহ্-এর বিধান উপস্থাপন করে। মানব রচিত কোনো বিধানই প্রবৃত্তির কামনা-বাসনা ও স্বেচ্ছাচার থেকে মুক্ত ও পবিত্র নয়। তা থেকে মুক্ত ও পবিত্র হচ্ছে আল্লাহর শরীয়াহ্-এর বিধান। কেননা তিনিই মানবের স্রষ্টা। সুতরাং সৃষ্টির হাজত ও তা পূরণ করার পরিপূর্ণ বিধান তিনি ছাড়া আর কেউই যথাযথভাবে প্রদান করতে সক্ষম নয়।

অতএব ইসলামী শরীয়াহ্ মেনে নেয়া ঈমান ও ইসলামেরই অনিবার্য দাবী। আল-কুরআনে আল্লাহ বলেন,

﴿ وَمَا كَانَ لِمُؤۡمِنٖ وَلَا مُؤۡمِنَةٍ إِذَا قَضَى ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥٓ أَمۡرًا أَن يَكُونَ لَهُمُ ٱلۡخِيَرَةُ مِنۡ أَمۡرِهِمۡۗ ﴾ [ الاحزاب : ٣٦ ]

‘‘আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোন বিষয়ে নির্দেশ দিলে কোনো মুমিন পুরুষ কিংবা মুমিন নারীর সে বিষয়ে ভিন্ন সিদ্ধান্তের অধিকার থাকবে না।’’ [সূরা আল-আহযাব : ৩৬]

তিনি আরো বলেন,

﴿ فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤۡمِنُونَ حَتَّىٰ يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيۡنَهُمۡ ثُمَّ لَا يَجِدُواْ فِيٓ أَنفُسِهِمۡ حَرَجٗا مِّمَّا قَضَيۡتَ وَيُسَلِّمُواْ تَسۡلِيمٗا ٦٥ ﴾ [ النساء : ٦٥ ]

‘‘কিন্তু না, তোমার প্রতিপালকের শপথ! তারা মুমিন হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা নিজেদের বিবাদ-বিসম্বাদের বিচার ভার তোমার উপর অর্পণ না করে; অতঃপর তোমার সিদ্ধান্ত সম্মন্ধে তাদের মনে কোন দ্বিধা না থাকে এবং সর্বান্তকরণে তা মেনে নেয়।’’ [সূরা আন-নিসা : ৬৫]

কিন্তু দূর্ভাগ্যের বিষয় মুসলিম দেশসমূহ দীর্ঘকাল ধরে ঔপনিবেশিকতার করতলগত থেকে ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও আকীদাগত নানা বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছে; কেননা ঔপনিবেশবাদীরা মুসলিমদের ব্যক্তিগত, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক জীবনের চালচিত্রকে ইসলামের মূলধারা থেকে সরিয়ে নেয়ার যাবতীয় চেষ্টা-তদ্বির করতে কোন ত্রুটি করে নি। তারা অবশেষে এ সকল মুসলিম দেশসমূহ ছেড়ে যেতে বাধ্য হলেও পেছনে রেখে গিয়েছে তাদের অনৈসলামী চিন্তা-চেতনার অত্যন্ত প্রভাবশালী স্বাক্ষর, যা রেখাপাত করেছে মুসলিমদের আমলী ও আখলাকী জীবনের বহু ক্ষেত্রে এবং পাল্টে দিয়েছে তাদের চিন্তা-ধারা ও আইনী প্রক্রিয়ার অনেক কিছূ। এর ফলে মুসলিম সমাজের বিরাট একটা অংশ হারিয়েছে তাদের বিবেকের স্বাতন্ত্র্যবোধ, মানসিকতায় ফুটে উঠেছে পরাধীনতা ও হীনমন্যতা।

মিশনারি, প্রাচ্যবিদ এবং তাদের দোসর ও তল্পীবাহকদের মাধ্যমে যে চিন্তা-ধারা ও দর্শন মুসলিম দেশসমূহের শিক্ষিত সমাজে অত্যন্ত সুকৌশলে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে তন্মধ্যে একটি হল এই যে -‘‘ইসলামী শরীয়াহ্ একটি প্রাচীন জীবন পদ্ধতি, যা এ যুগে অচল এবং আধুনিক জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা ও প্রগতির বিভিন্ন উত্থান-পতনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার সামর্থ তার নেই। অতএব শরীয়াহ্ অনুসরণে উন্নয়ন কর্মকান্ডে দেখা দেয় স্থবিরতা। কেননা শরীয়াহ্ আজ থেকে চৌদ্দশত বৎসর আগের পুরনো। সে যুগ আর বর্তমান যুগ এক নয়। সে পরিবেশ ও বর্তমান পরিবেশ অভিন্ন নয় এবং সে যুগের লোকেরা আজকের প্রগতিশীল লোকদের থেকে ছিল ভিন্ন প্রকৃতির’’। এভাবে তারা বিভিন্ন যুক্তি প্রদর্শন করেও যখন মুসলিমদের বৃহত্তর অংশকে বিচ্যুত করতে পারলো না, তখন আবারো আঘাত হানলো এ কথা বলে যে, ‘‘শরীয়াহ্ আইনের উৎস কুরআন নয়’’। এ প্রবন্ধে শরীয়াহ্ এর পরিচয়, উৎস এবং শরীয়াহ্ আইন যে কুরআনেরই বিধান এবং কুরআন থেকে উৎসারিত সে বিষয়টি তুলে ধরার পাশাপাশি শরীয়াহ্ যে প্রগতিশীল, আধুনিক ও উন্নয়নধর্মী সেটিও তুলে ধরা হবে ইনশাআল্লাহ।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন