HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আয়াতুল কুরসী ও তাওহীদের প্রমাণাদি

লেখকঃ শাইখ আব্দুর রায্‌যাক ইবন আব্দুল মুহসিন আল-বদর

১১
একটি মহান মূলনীতি
ইবনুল কাইয়্যেম রহ. বলেন, “এটির বর্ণনার পর এখানে এক মূলনীতি পাওয়া যায়, যা উক্ত বিষয়ের রহস্য উন্মোচন করে দেয়, আর তা হলো: আল্লাহর নিকট সবচেয়ে বড় গুনাহ হলো, তাঁর সম্পর্কে কু-ধারণা রাখা। কারণ, কু-ধারণা পোষণকারী তাঁর সম্পর্কে এমন ধারণা রাখে, যা তাঁর উত্তম নামসমূহ এবং গুণাবলীর বরখেলাফ। এ কারণে আল্লাহ তাঁর সম্পর্কে কু-ধারণা পোষণকারীদেরকে ধমক দিয়েছেন। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿عَلَيۡهِمۡ دَآئِرَةُ ٱلسَّوۡءِۖ وَغَضِبَ ٱللَّهُ عَلَيۡهِمۡ وَلَعَنَهُمۡ وَأَعَدَّ لَهُمۡ جَهَنَّمَۖ وَسَآءَتۡ مَصِيرٗا﴾ [ الفتح : ٦ ]

“অমঙ্গল চক্র তাদের জন্যে, আল্লাহ তাদের প্রতি রুষ্ট হয়েছেন এবং তাদেরকে অভিশপ্ত করেছেন আর তাদের জন্যে জাহান্নাম প্রস্তুত রেখেছেন; এটা কত নিকৃষ্ট আবাস!” [সূরা আল-ফাত্‌হ, আয়াত: ৬]

তাঁর কোনো গুণ অস্বীকারকারীর সম্পর্কে বলেন,

﴿وَذَٰلِكُمۡ ظَنُّكُمُ ٱلَّذِي ظَنَنتُم بِرَبِّكُمۡ أَرۡدَىٰكُمۡ فَأَصۡبَحۡتُم مِّنَ ٱلۡخَٰسِرِينَ ٢٣﴾ [ فصلت : ٢٣ ]

“তোমাদের রব সম্বন্ধে তোমাদের এই ধারণাই তোমাদের ধ্বংস এনেছে। ফলে তোমরা হয়েছো ক্ষতিগ্রস্ত।” [সূরা ফুস্‌সিলাত, আয়াত: ২৩]

আল্লাহ তাঁর খলীল ইবরাহীম আলাইহিস সালাম সম্পর্কে বলেন, তিনি তাঁর গোত্রকে বলেন,

﴿مَاذَا تَعۡبُدُونَ ٨٥ أَئِفۡكًا ءَالِهَةٗ دُونَ ٱللَّهِ تُرِيدُونَ ٨٦ فَمَا ظَنُّكُم بِرَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ٨٧﴾ [ الصافات : ٨٥، ٨٧ ]

“তোমরা কিসের পূজা করছ? তোমরা কি আল্লাহর পরিবর্তে মিথ্যা মা‘বুদগুলোকে চাও? জগতসমূহের রব সম্বন্ধে তোমাদের ধারণা কী?” [সূরা সাফ্‌ফাত, আয়াত: ৮৫-৮৭] অর্থাৎ অন্যের ইবাদত করার পর তোমাদের কী মনে হয়? তোমাদের আল্লাহ কী বদলা দিতে পারেন যখন তোমরা তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করবে? তাঁর নামাবলী, গুণাবলী এবং রুবুবিয়্যাতের সম্বন্ধে তোমরা কতই না বেশি খারাপ ধারণা পোষণ করছ, যার ফলে তোমরা অন্যের দাসত্বমুখী হয়ে গেছ?

যদি তোমরা তাঁর সম্পর্কে সে ধারণা রাখতে যা তিনি প্রাপ্য, তাহলে তা কতই না ভালো হত, আর তা হচ্ছে, তিনি সবকিছুর ব্যাপারে জ্ঞাত, সবকিছুর ওপর ক্ষমতাবান, তিনি তাঁর সত্তার বাইরে সকল কিছু থেকে অমুখাপেক্ষী, আর সবকিছু তাঁর মুখাপেক্ষী, তিনি তাঁর সৃষ্টির প্রতি ন্যায়বিচারক। সৃষ্টিকে পরিচালনার ব্যাপারে তিনি একক, এ ক্ষেত্রে তাঁর কেউ অংশী নেই। পুঙ্খানুপুঙ্খ বিষয়াদির তিনি যথার্থ জ্ঞানী, তাই সৃষ্টির কোনো কিছুই তাঁর কাছে অস্পষ্ট নয়। তিনি একাই তাদের জন্য যথেষ্ট, তাই কোনো সাহায্যকারীর প্রয়োজন নেই। তিনি তাঁর সত্তাসহ পরম করুণাময়, তাই দয়া করার ব্যাপারে তিনি কারো সহানুভূতির প্রয়োজন মনে করেন না। এটা রাজাগণ এবং অন্যান্য শাসকদের বিপরীত। কারণ, তারা মুখাপেক্ষী এমন লোকের, যারা তাদেরকে প্রজাদের অবস্থা এবং সমস্যার সম্পর্কে অবগত করাবে এবং তাদের প্রয়োজন পূরণে সাহায্য করবে। মুখাপেক্ষী এমন লোকের, যে তাদের সুপারিশের মাধ্যমে দয়াপ্রার্থী এবং সহানুভূতির তলবকারী হবে। এ কারণে তাদের মাধ্যমের প্রয়োজন হয়েছে তাদের সমস্যা, দুর্বলতা, অক্ষমতা এবং তাদের জ্ঞানে স্বল্পতার কারণে। কিন্তু যিনি সবকিছুর ওপর ক্ষমতাবান, সবকিছু হতে অমুখাপেক্ষী, সবকিছুর ব্যাপারে সম্যক জ্ঞানী, পরম করুণাময় দয়ালু, যার দয়া সবকিছুকে শামিল করেছে। এ রকম গুণে গুণান্বিত সত্তা এবং তাঁর সৃষ্টির মাঝে মাধ্যম স্থাপন করা আসলে তাঁর রুবুবিয়্যাত (প্রভূত্ব) উলুহিয়্যাত (ইবাদত-সংক্রান্ত) এবং একত্ব সম্পর্কীয় ব্যাপারে তাঁর ক্ষমতা ছোট করা এবং তাঁর সম্পর্কে কু-ধারণা রাখা ছাড়া আর কি। এটি কখনও তিনি তাঁর বান্দাদের জন্যে বৈধ করেন নি। সুবিবেক এবং সু স্বভাবও এর বৈধতা অস্বীকার করে। আর এর জঘন্যতা সুবিবেকের কাছে অপরাপর সকল জঘন্যতার উপরে স্থান পায়।

এর বিশ্লেষণ এইরূপ: অবশ্যই উপাসনাকারী তাঁর উপাস্যকে সম্মান করে, উপাস্যের মর্যাদা দেয় এবং তাঁর জন্যে বিনয়-নম্রতা অবলম্বন করে। অন্যদিকে মহান রব আল্লাহ তা‘আলাই হচ্ছেন এককভাবে পূর্ণ সম্মান, মর্যাদা, ভালোবাসা এবং বিনয় পাওয়ার হকদার। এটা তাঁর একচ্ছত্র হক। তাই তাঁর হক অন্যকে দেওয়া অথবা তাঁর হকের মাঝে অন্যকে অংশীদার সাব্যস্ত করা জঘন্য যুলুম-অত্যাচার। বিশেষ করে তাঁর হকে শরীককৃত ব্যক্তি যদি তাঁর বান্দা এব দাস হয় তাহলে তা হবে আরো জঘন্য। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ضَرَبَ لَكُم مَّثَلٗا مِّنۡ أَنفُسِكُمۡۖ هَل لَّكُم مِّن مَّا مَلَكَتۡ أَيۡمَٰنُكُم مِّن شُرَكَآءَ فِي مَا رَزَقۡنَٰكُمۡ فَأَنتُمۡ فِيهِ سَوَآءٞ تَخَافُونَهُمۡ كَخِيفَتِكُمۡ أَنفُسَكُمۡۚ كَذَٰلِكَ نُفَصِّلُ ٱلۡأٓيَٰتِ لِقَوۡمٖ يَعۡقِلُونَ ٢٨﴾ [ الروم : ٢٨ ]

“আল্লাহ তোমাদের জন্য তোমাদের নিজেদের মধ্যে একটি দৃষ্টান্ত পেশ করেছেন: তোমাদেরকে আমরা যে রিযিক দিয়েছি তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস-দাসীদের কেউ কি তাতে অংশীদার? ফলে তোমরা কি তাদেরকে সেরূপ ভয় কর? এভাবেই আমরা বোধশক্তি সম্পন্ন সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শণাবলী বর্ণনা করি।” [সূরা আর-রূম, আয়াত: ২৮] অর্থাৎ তোমাদের মধ্যে কেউ যদি অপছন্দ করে যে, তার দাস তার সম্পদে অংশীদার হোক, তাহলে কীভাবে আমার দাসদের মধ্যে কাউকে আমার অংশীদার করে থাক, যে বিষয়ে আমি একক? আর সে বিষয়টি হচ্ছে, ইবাদত বা উপাসনা, যা আমি ব্যতীত অন্যের জন্যে কখনো সমীচীন নয়, আমি ছাড়া অন্যের জন্য অগ্রহণযোগ্য।

সুতরাং যে কেউ এমন ধারণা রাখবে, সে আমাকে যথোচিত মর্যাদা দিল না, যথাযথ সম্মান করল না, আমাকে একক মনে করলো না, যে বিষয়ে আমি একক কোনো সৃষ্টি নয়। সে ব্যক্তি যথাযথ আল্লাহর সম্মান করলো না যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অন্যের ইবাদত করলো। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ ضُرِبَ مَثَلٞ فَٱسۡتَمِعُواْ لَهُۥٓۚ إِنَّ ٱلَّذِينَ تَدۡعُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ لَن يَخۡلُقُواْ ذُبَابٗا وَلَوِ ٱجۡتَمَعُواْ لَهُۥۖ وَإِن يَسۡلُبۡهُمُ ٱلذُّبَابُ شَيۡ‍ٔٗا لَّا يَسۡتَنقِذُوهُ مِنۡهُۚ ضَعُفَ ٱلطَّالِبُ وَٱلۡمَطۡلُوبُ ٧٣ مَا قَدَرُواْ ٱللَّهَ حَقَّ قَدۡرِهِۦٓۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَقَوِيٌّ عَزِيزٌ ٧٤﴾ [ الحج : ٧٣، ٧٤ ]

“হে লোকসকল! একটি উপমা দেওয়া হচ্ছে, মনোযোগসহ তা শ্রবণ কর; তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদেরকে ডাকো তারা তো কখনো একটি মাছিও সৃষ্টি করতে পারবে না, এই উদ্দেশ্যে তারা সবাই একত্রিত হলেও পারবে না এবং মাছি যদি সবকিছু ছিনিয়ে নিয়ে যায় তাদের নিকট থেকে, এটাও তারা এর নিকট থেকে উদ্ধার করতে পারবে না। পূজারী ও দেবতা কতই না দুর্বল! (বস্তুত) তারা আল্লাহর যথোচিত মর্যাদা দেয় না; আল্লাহ নিশ্চয় ক্ষমতাবান, পরাক্রমশালী।” [সূরা আল-হাজ্জ, আয়াত: ৭৩-৭৪]

তাই সে ব্যক্তি আল্লাহর যথাযথ সম্মান করলো না, যে ব্যক্তি তাঁর সাথে এমন কারো ইবাদত করলে যে অতি দুর্বল এবং অতি ছোট প্রাণী সৃষ্টি করতে অক্ষম এবং তার নিকট থেকে যদি মাছি কিছু ছিনিয়ে নিয়ে যায় তাও উদ্ধার করতে অপারগ।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمَا قَدَرُواْ ٱللَّهَ حَقَّ قَدۡرِهِۦ وَٱلۡأَرۡضُ جَمِيعٗا قَبۡضَتُهُۥ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ وَٱلسَّمَٰوَٰتُ مَطۡوِيَّٰتُۢ بِيَمِينِهِۦۚ سُبۡحَٰنَهُۥ وَتَعَٰلَىٰ عَمَّا يُشۡرِكُونَ ٦٧﴾ [ الزمر : ٦٧ ]

“তারা আল্লাহর যথোচিত সম্মান করে না। কিয়ামতের দিন সমস্ত পৃথিবী থাকবে তাঁর হাতের মৃষ্টিতে এবং আকাশমণ্ডলী থাকবে ভাজকৃত তাঁর ডান হাতে। পবিত্র ও মহান তিনি, তারা যাকে শরীক করে তিনি তার উর্ধ্বে।” [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৬৭] যার এই মহিমা ও মহত্ব তাঁর সে যথাযথ সম্মান করে না, যে তাঁর ইবাদতে অন্য এমন কাউকে শরীক করে যার এতে কোনোই অংশ নেই, বরং সে সবচেয়ে দুর্বল ও অক্ষম। তাই সে ব্যক্তি শক্তিশালী ক্ষমতাবান আল্লাহর যথাযথ সম্মান করলো না, যে ব্যক্তি দুর্বল পদদলিতকে তাঁর সাথে শরীক করলো”। [আল-জাওয়াব আল-কাফী ১৬২-১৬৪।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন