HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আয়াতুল কুরসী ও তাওহীদের প্রমাণাদি

লেখকঃ শাইখ আব্দুর রায্‌যাক ইবন আব্দুল মুহসিন আল-বদর

আয়াতুল কুরসীর সংক্ষিপ্ত বিষয়াদি
এই মর্যাদা সম্পন্ন মুবারক আয়াতটি দশটি বাক্য দ্বারা গঠিত। এতে আল্লাহর তাওহীদ, তাঁর সম্মান, মাহাত্ম্য এবং পূর্ণাঙ্গতা ও মহানুভবতার ক্ষেত্রে তাঁর একত্বের বর্ণনা হয়েছে যা, এর পাঠকারীর রক্ষা ও যথেষ্টতা সত্যায়িত করে। এতে আল্লাহ তা‘আলার সুন্দর নামসমুহের পাঁচটি নাম আছে। কুঁড়িটিরও অধিক গুণের উল্লেখ আছে। ইবাদতের ব্যাপারে তাঁর একত্বের বর্ণনা এবং তিনি ব্যতীত অন্য উপাস্য বাতিল, এর উল্লেখ দ্বারা আয়াত শুরু করা হয়েছে। তারপর আল্লাহর পূর্ণ জীবনের বর্ণনা করা হয়েছে যার ধ্বংস নেই। তারপর তাঁর পবিত্র কাইয়ুমিয়্যাত তথা সবকিছুর ধারক (নিজের ও সৃষ্টির যাবতীয় পরিকল্পনার ধারক) এটি বর্ণিত হয়েছে। অতঃপর অক্ষম গুণাবলী হতে তাঁর পবিত্রতা বর্ণনা করা হয়েছে যেমন তন্দ্রা এবং ঘুম। অতঃপর তাঁর প্রশস্ত রাজত্বের বর্ণনা হয়েছে। বলা হয়েছে: ভুমণ্ডলে ও নভোমণ্ডলে যা কিছু আছে সবই তাঁর দাস, তাঁর সার্বভৌমত্বে ও তাঁর অধীনে। তাঁর মহানতার প্রমাণস্বরূপ বলা হয়েছে যে, সৃষ্টির কেউই তাঁর আদেশ ব্যতীত তাঁর নিকট সুপারিশ করতে পারবে না। এতে মহান আল্লাহর জ্ঞানের গুণের প্রমাণ এসেছে। তাঁর জ্ঞান সবকিছুকে পরিবেষ্টিত। তিনি জানেন অতীতে যা হয়েছে, ভবিষ্যতে যা হবে এবং যা হয় নি, যদি হত, তো কেমন হত। এতে আল্লাহ সুবহানাহুর মহানতার বর্ণনা হয়েছে তাঁর সৃষ্টিসমূহের বড়ত্বের বর্ণনার মাধ্যমে। কারণ, কুরসী যেটি সৃষ্টিজগতের মধ্যে একটি সৃষ্টি, যা আকাশ ও যমীনকে পরিব্যপ্ত করে আছে। তাহলে সম্মানীয় স্রষ্টা এবং মহান প্রভূ কত মহান হতে পারেন! এতে তাঁর পূর্ণ ক্ষমতার বর্ণনা হয়েছে। তাঁর পূর্ণ ক্ষমতার পরিচয় এই যে, আকাশ এবং যমীনের সংরক্ষণে তাঁর কোনো অসুবিধা হয় না। অতঃপর দু’টি মহান নামের উল্লেখের মাধ্যমে আয়াতের সমাপ্তি করা হয়েছে।

সে দু’টি নাম হচ্ছে: ‘আল্‌ ‘আলিইউ’ সর্বোচ্চ, ‘আল্‌ আযীম’ সর্বমহান। এই দু’টি নাম দ্বারা আল্লাহ তা‘আলার সত্তা, সম্মান ও ক্ষমতা এবং বিজয়ের দিক থেকে সর্বোচ্চে থাকার প্রমাণ দেওয়া হয়েছে। তাঁর মহত্বের প্রমাণ হয় এ বিশ্বাসের মাধ্যমে যে, সর্বপ্রকার মাহাত্ম্য এবং মর্যাদার মালিক কেবল তিনি। তিনি ব্যতীত আর কেউই সম্মান, বড়াই এবং মর্যাদার হকদার নয়।

এই হচ্ছে আয়াতুল কুরসীর সংক্ষিপ্ত বিষয়াদি। এটি একটি মহান আয়াত। এতে আছে মহান অর্থ, গভীর অর্থের দলীল-প্রমাণাদি এবং ঈমানী জ্ঞানসমূহ যা, এই আয়াতের শ্রেষ্ঠত্ব এবং সুমহান মর্যাদা প্রমাণ করে।

মুহতারাম শাইখ আল্লামা আব্দুর রহমান ইবন সা‘দী রহ. তাঁর তাফসীর গ্রন্থে বলেন, এ মর্যাদাসম্পন্ন আয়াতটি কুরআন মাজীদের সর্বমহান এবং সর্বোত্তম আয়াত। কারণ, এতে বর্ণিত হয়েছে মহৎ বিষয়াদী এবং মহান গুণাবলী। আর এ কারণেই বহু হাদীসে এটি পড়তে উৎসাহিত করা হয়েছে এবং মানুষকে সকাল-সন্ধা, ঘুমানোর সময় এবং ফরয সালাতসমূহের পর পড়তে বলা হয়েছে।

আল্লাহ তা‘আলা নিজ সম্পর্কে বলেন, (লা ইলাহা ইল্লা হুওয়া) অর্থাৎ তিনি ছাড়া সত্য কোনো উপাস্য নেই। তাহলে তিনিই সত্য মা‘বুদ যার জন্যে নির্ধারিত হবে সমস্ত প্রকারের ইবাদত, আনুগত্য এবং উপাসনা। তাঁর অগণিত করুনার কারণে এবং এই কারণে যে, দাসকে তাঁর প্রভূর দাস হওয়া মানায়। তাঁর আদেশাদি পালন করা এবং নিষেধাদি থেকে বিরত থাকা মানায়। তিনি ব্যতীত সব মিথ্যা। তাই তিনি ব্যতীত অন্যের ইবাদত মিথ্যা। কারণ, তিনি ছাড়া সব সৃষ্টি, অক্ষম, নিয়ন্ত্রিত, তাঁরই মুখাপেক্ষী সর্বক্ষেত্রে। তিনি ব্যতীত কেউই কোনো প্রকার ইবাদত পাওয়ার যোগ্য নয়।

আল্লাহ তা‘আলার বাণী (আল্‌ হাইউল কাইয়ূম): ‘চিরঞ্জীব ও সর্বদা রক্ষণাবেক্ষণকারী’ এই দু’টি সম্মানীয় নাম কোনো না কোনোরূপে আল্লাহর সকল সুন্দর নামাবলীর ওপর প্রমাণ বহন করে। যেমন, ‘হাই’ তথা চিরঞ্জীব, আর ‘হাই’ তো সেই সত্তাই হতে পারেন, যিনি পূর্ণ জীবনের অধিকারী, সত্তার সমস্ত গুণকে আবশ্যককারী। যেমন শ্রবণ, দর্শন, জ্ঞান, ক্ষমতা ইত্যাদি। (আল্‌ কাইয়্যূম) অর্থাৎ নিজের ধারক এবং অপরের ধারক। এটি তাঁর সমস্ত কর্ম প্রমাণ করে যে, সমস্ত কর্মের গুণে তিনি গুণান্বিত যা তিনি চান। যেমন ‘আরশের উপর উঠা, অবতরণ করা, বাক্যালাপ করা, বলা, সৃষ্টি করা, রুযী দেওয়া, মৃত্যু দেওয়া, জীবিত করা এবং সব প্রকারের পরিকল্পনা করা। এসব কার্যাদি কাইয়ূম শব্দের সাথে সংযুক্ত। এ কারণে কিছু গবেষক বলেছেন: উপরোক্ত নাম দু’টি ইসমে আযম (মহান নাম) যার দ্বারা আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করলে তিনি কবুল করেন এবং চাইলে তিনি দান করেন।

তাঁর পূর্ণ জীবন এবং পূর্ণ ধারক হওয়ার স্বরূপ এই যে, তাঁকে তন্দ্রা এবং নিদ্রা স্পর্শ করে না।

(লাহু মা ফিস্‌ সামাওয়াতি ওয়া মা ফিল্‌ আর্‌দ) আকাশ ও যমীনে যা কিছু আছে সব তাঁর মালিকানাধীন’। অর্থাৎ তিনি প্রভূ, তিনি ছাড়া অন্য সব দাস। তিনি সৃষ্টিকর্তা, রিযিকদাতা পরিকল্পনাকারী, আর বাকী সবকিছু সৃষ্ট, রিযিকপ্রাপ্ত, নিয়ন্ত্রিত, যারা আকাশ এবং যমীনে অণু পরিমাণেরও না নিজের জন্য মালিক, না অপরের জন্য মালিক।

এ কারণে আল্লাহ বলেন, (কে আছে যে, তাঁর কাছে সুপারিশ করবে তাঁর আদেশ ছাড়া?) অর্থাৎ তাঁর আদেশ ব্যতীত তাঁর কাছে কেউ সুপারিশ করতে পারবে না। সমস্ত সুপারিশের মালিক তিনি। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার প্রতি রহম করতে চাইবেন, আদেশ করবেন তাকে, যাকে আল্লাহ সম্মান দিতে চাইবেন, যেন সে সেই বান্দার জন্য সুপারিশ করে। তার পরেও সুপারিশকারী আল্লাহর আদেশের পূর্বে সুপারিশ শুরু করবে না।

তার পরে আল্লাহ বলেন, (তিনি অবগত যা তাদের সম্মুখে আছে) অর্থাৎ অতীতের সমস্ত বিষয়। (এবং পশ্চাতে যা আছে) অর্থাৎ ভবিষ্যতে যা কিছু হবে। সব বিষয়ের সম্পর্কে তাঁর জ্ঞান পূংখানুপূংখরূপে পরিবেষ্টিত। আগের ও পরের, প্রকাশ্য এবং অপ্রকাশ্য, উপস্থিত এবং অনুপস্থিত সবকিছু। বান্দারা এ সবের মালিক নয় আর না অনু পরিমাণ কোনো ইলমের মালিক। কেবল ততটুকুই যতটুকু আল্লাহ তাদের শিক্ষা দেন।

এ কারণে আল্লাহ বলেন, “তাঁর জ্ঞান ভাণ্ডার থেকে তারা কিছুই আয়ত্ব করতে পারে না, কেবল যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন।” এটি তাঁর মাহাত্ম্যের পূর্ণাঙ্গতা এবং ক্ষমতার ব্যাপকতা প্রমাণ করে। আর এটা যদি কুরসীর অবস্থা হয়, যা মহান আকাশ এবং যমীন এবং উভয়ের মধ্যে অবস্থিত বৃহৎ সবকিছুকে পরিবেষ্টন করতে সক্ষম, অথচ কুরসী আল্লাহুর সর্ববৃহৎ সৃষ্টি নয়। বরং এর অপেক্ষা বড় সৃষ্টি আছে আর তা হচ্ছে ‘আরশ’। আরও যা কেবল আল্লাহই জানেন। এই সৃষ্টিগুলোর বড়ত্বতা সম্পর্কে চিন্তা করলে মানুষ হতভম্ব হয়ে যায়। দৃষ্টি শক্তি দুর্বল হয়ে যায়, পাহাড় কম্পিত হয় এবং বীরপুরুষ কাপুরুষ হয়ে পড়ে। তাহলে তিনি কত মহান যিনি এ সবের সৃষ্টিকর্তা, আবিষ্কারক! যিনি এতে রেখেছেন কত তত্ত্ব কত রহস্য! যিনি আকাশ এবং যমীনকে বিচ্যুত হওয়া থেকে রক্ষা করেন বিনা কষ্টে বিনা শ্রান্তে।

এই কারণে আল্লাহ বলেন, (ওয়ালা ইয়াউদুহু) অর্থাৎ বিনা শ্রান্তে। (উভয়ের রক্ষণাবেক্ষণ করেন)।

আর (তিনি সর্বোচ্চ) তাঁর সত্তায় তিনি আরশের উপর, ক্ষমতার মাধ্যমে তিনি সমস্ত সৃষ্টির ওপর, অনুরূপভাবে মর্যাদার দিক থেকেও তিনি সবার উপরে, তাঁর গুণসমূহের পূর্ণাঙ্গতার কারণে।

(আল্‌ আযীম) সর্বাপেক্ষা মহান। যার মহানতার কাছে অত্যাচারীর অত্যাচার দুর্বল। যার মর্যাদার সামনে শক্তিশালী বাদশাহদের মর্যাদা ক্ষীণ। পবিত্রতা বর্ণনা করি তাঁরই যিনি মহান মহত্বের মালিক, পূর্ণ অহংকারের মালিক এবং প্রত্যেক বস্তুর প্রতি জয়-বিজয়ের মালিক।” [তাফসীর সা‘দী, পৃ. ১১০।]

ইব্‌নে কাসীর রাহেমাহুল্লাহ তাঁর তফসীরে বলেন, “ এই আয়াতে (আয়াতুল কুরসী) দশটি বাক্য আছে..” । তারপর তিনি সে গুলোর ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ শুরু করেন। এই মুবারক আয়াতটির ব্যাখ্যা এবং নির্ভুল প্রমাণাদি জানার জন্যে এর তাফসীর এবং অন্যান্য তাফসীরের বই পাঠ করা ভালো হবে।

এই বরকতপূর্ণ আয়াতের প্রমাণাদিকে কেন্দ্র করে নিম্নে তাওহীদের দলীলসমূহ এবং মহৎ সহায়ক বিষয়াদির কিছু বর্ণনা দেওয়া হলো: তাওহীদ সাব্যস্ত করণার্থে এবং তাওহীদের সহায়ক বিষয়াদী বর্ণনার্থে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন