মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
উক্ত আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা ইখলাসপূর্ণ ইবাদতকেই তার জন্য স্বীকৃতি প্রদান করেছেন-অল্প হোক কিংবা বেশি, বৃহৎ কিংবা ক্ষুদ্র, যে কোনো ধরণের শির্ক হতে যা বিমুক্ত ও পরিশ্রুত। আয়াতগুলো স্পষ্ট ঘোষণা করে যে, দীন ইসলামে ইখলাস এক গুরুত্বপূর্ণ শর্তের নাম, তাবৎ আম্বিয়া এ প্রক্রিয়ারই স্বীকৃতি বহন করেন, দীনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, শরী‘আতের প্রতিটি অনুঘটনায় ইখলাসের অনুসন্ধান প্রমাণ করে ইখলাসের মার্যাদা ও গুরুত্ব।
ইখলাস, সন্দেহ নেই, নবী-রাসূলদের দাওয়াতের দাওয়াতের কুঞ্জিকা, যে নীতিমালা নিয়ে তারা আগত, তার মহোত্তম স্থানের অধিকারী।
“আল্লাহর ইবাদত করার ও তাগুতকে বর্জন করার নির্দেশ দেওয়ার জন্য আমরা প্রত্যেক জাতির মধ্যে রাসূল প্রেরণ করেছি।” [সূরা আন-নাহল, আয়াত: ৩৬]
ইবন কাসির রহ. বলেন, এ আদেশ নিয়ে রাসূলগণ পৃথিবীতে আগমন করেন। নূহ আলাইহিস সালাম যে জাতির প্রতি প্রেরিত হয়েছিলেন, সে জাতির মাঝেই সর্বপ্রথম যখন শির্কের উৎপত্তি হয়, তখন তাকে মানব জাতির জন্য প্রথম রাসূল হিসেবে প্রেরণ করা হয়, যে ধারাবাহিকতার সমাপ্তি ঘটে নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাধ্যমে, যার দাওয়াত বিস্তৃত ছিল জিন্ন-ইনসান ও পৃথিবীর তাবৎ জাতিবর্গের জন্য। পৃথিবীতে রাসূলরূপে আগত সকলের দায়িত্ব ছিল আল-কুরআনের ভাষায়-
“আমরা তোমার পূর্বে এ আদেশ ব্যতীত কোনো রাসূল প্রেরণ করি নি যে, আমি ছাড়া অন্য কোনো সত্য ইলাহ নেই। সুতরাং আমারই ইবাদত কর।” [সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ২৫]
এ তাওহীদ ও ইখলাস হলো কলব বা হৃদয়ের কমের মাঝে সর্বোচ্চ স্তরের। এটাই বান্দার কর্মের উদ্দেশ্য ও পরিমাণে-মর্যাদায় সর্ববৃহৎ।
ইবনুল কাইয়্যেম রহ. বক্তব্যটির ব্যাখ্যায় বলেন, আল্লাহর দাসত্বের প্রাণ হলো অন্তরের কাজ। যদি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের দ্বারা দাসত্ব করা হয়; কিন্তু অন্তর ইখলাস ও তাওহীদ থেকে শুন্য থাকে, তবে সে যেন একটি মৃতদেহ, যার কোনো রূহ নেই। নিয়ত হলো অন্তরের আমল। [বাদায়ে‘ আল-ফাওয়ায়েদ: ইবনুল কাইয়্যেম।]
ইখলাস হলো ইবাদত কবুলের দু’ শর্তের একটি। ইখলাস ব্যতীত কোনো ইবাদত কবুল হবে না।
নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“আল্লাহ তা‘আলা শুধু সে আমলই গ্রহণ করেন, যা ইখলাসের সাথে এবং আল্লাহকে সন্তুষ্টি করার উদ্দেশ্যে করা হয়।” [নাসাঈ, হাদীস নং ৩১৪০।]
যারা আল্লাহর ব্যাপারে ইখলাস অবলম্বন করেছে, আল্লাহ তাঁর কালামে প্রশংসার সাথে তাদের কথা আলোচনা করেছেন। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা তাঁর কালীম মূসা আলাইহিস সালামের প্রসঙ্গে আল-কুরআনে উল্লেখ করেন-
“আমরা তাকে মন্দ কাজ ও অশ্লীলতা থেকে বিরত রাখার জন্য এভাবে নিদর্শন দেখিয়েছিলাম। সে ছিল আমার বিশুদ্ধচিত্ত (ইখলাস অবলম্বনকারী) বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত।” [সূরা ইউসূফ, আয়াত: ২৪]
এমনিভাবে তিনি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম সম্পর্কে বলেছেন:
“বল, আল্লাহ সম্পর্কে তোমরা কি আমাদের সাথে বিতর্কে লিপ্ত হতে চাও? যখন তিনি আমাদের রব ও তোমাদেরও রব। আমাদের কর্ম আমাদের ও তোমাদের কর্ম তোমাদের এবং আমরা তাঁর প্রতি একনিষ্ঠ (ইখলাস অবলম্বনকারী)।” [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৩৯]
এ সকল আয়াত থেকে বুঝে আসে আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামের সবচেয়ে বড় গুণ ছিল ইখলাস বা আল্লাহর প্রতি একনিষ্ঠতা। [আখলাকুন্নবী ফি আল কিতাবে ওয়াস সুন্নাহ: হাদ্দাদ।]
অপরদিকে ইখলাসশূণ্য ব্যক্তির জন্য এসেছে কঠোর হুশিয়ারী ও শাস্তির সংবাদ। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন,
“আমি তাদের কৃতকর্মের প্রতি লক্ষ করব। অতঃপর সেগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত করব।” [সূরা আল-ফুরকান, আয়াত: ২৩]
আয়াতটি উল্লেখের পর ইবনুল কাইয়্যেম রহ.-এর মন্তব্য এই যে, এ আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ব্যর্থ কাজকে বুঝিয়েছেন, যা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পদ্ধতিতে করা হয় নি অথবা তাঁর পদ্ধতিতে করা হয়েছিল, তবে একনিষ্ঠভাবে (ইখলাসের সাথে) আল্লাহর উদ্দেশ্যে করা হয় নি। [মাদারিজুল সালেকীন।]
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবন কাসীর রহ. বলেন, মুশরিকরা রক্ষা লাভ ও শুভ পরিণতির আশায় পার্থিবে যে কর্মসম্পাদন করেছে, তা যারপরনাই মূল্যহীন, কিছুই নয়। কারণ, ইখলাস অথবা আল্লাহ প্রণীত বিধানের প্রতি আনুগত্য শরী‘আতের এ দু’টি আবশ্যকীয় শর্তের কোনোটিই তাতে উপস্থিত নেই। যে সকল কাজ খালেস আল্লাহর জন্য করা হয় না কিংবা শরী‘আতের অনুমোদিত পন্থায় পালন করা হয় না তা বাতিল বলে গণ্য, তাতে সন্দেহ নেই। (তাফসীর ইবন কাসীর)
“আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আমি শরীকদের শির্ক অর্থাৎ অংশীদারদের অংশ গ্রহণ থেকে অমুখাপেক্ষী। যদি কোনো ব্যক্তি কোনো আমল করে এবং এতে আমার সাথে অন্য কাউকে শরীক করে তাহলে আমি তাকে ও তার শির্কী কাজকে প্রত্যাখ্যান করি।” [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৯৮৫।]
“যে জ্ঞান অর্জন করা হয় আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে তা যদি কেউ পার্থিব স্বার্থ লাভের উদ্দেশ্যে করে তাহলে সে কিয়ামতের দিবসে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না।” [আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৬৬৪।]
হাদীসে আরো এসেছে: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
“যে ব্যক্তি জ্ঞান অর্জন করবে আলিমদের ওপর প্রাধান্য বিস্তারের উদ্দেশ্যে অথবা মূর্খদের সাথে অহমিকা প্রদর্শনের জন্যে কিংবা মানুষকে তার দিকে আকৃষ্ট করার লক্ষ্য নিয়ে, আল্লাহ তা‘আলা তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন।” [তিরমিযী, হাদীস নং ২৬৫৪।]
সুতরাং প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য যাবতীয় ইবাদতের ক্ষেত্রেই ইখলাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বান্দার কিছু আমল হবে ইখলাসে পূর্ণ, কিছু হবে শূণ্য, কিছু মুআমালায় ইখলাস হবে তার আদর্শ, অপর কিছু মুআলামা হবে ইখলাস থেকে বিচ্যুত এ খুবই গর্হিত বিষয়, এ কখনো স্বীকৃত নয় শরী‘আহ মোতাবেকে। ইবনুল কাইয়্যেম রহ. ইখলাসের গুরুত্ব ও অবস্থান বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন, ইখলাস ও আনুগত্য শূন্য আমল তুলনীয় এমন মুসাফিরের সাথে, যে অকাজের ধুলোয় পূর্ণ করেছে তার থলে এবং প্রচুর ক্লান্তি ও ঘর্মাক্ত দেহে অতিক্রম করছে মরুভুমির পর মরুভুমি, তার জন্য এ সফর নিশ্চয় নিষ্ফল ও শুভ পরিণতি শূন্য। [আল-ফাওয়ায়িদ: ইবনুল কাইয়্যেম।]
ইখলাস একটি কঠিন কাজ:
ইখলাসের গুরুত্ব ও মর্যাদা সত্বেও আমরা বলব, নিঃসন্দেহে ইখলাস নফসের জন্য কঠিন একটি বিষয়। কারণ, নফস এবং প্রবৃত্তি ও নফসের আকাঙ্খার মাঝে ইখলাস এক কঠোর দেওয়াল ও বাধা হয়ে নিজেকে উপস্থিত করে। নিজ প্রবৃত্তি, সামাজিক অবস্থা ও শয়তানের কুমন্ত্রণা মোকাবেলা করে ইখলাস ধরে রাখা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এর ওপর অটল থাকতে সংগ্রাম ও অধ্যবসায়ের প্রয়োজন। এ সংগ্রাম শুধু সাধারণ মানুষ করবে তা কিন্তু নয় বরং আলিম-উলামা, ইসলাম প্রচারক ও নেককার-মুত্তাকী সকলের প্রয়োজন। সুফিয়ান আস-সাওরী বলেন: আমার কাঝে নিজের নিয়ত ঠিক করার কাজটা যত কঠিন মনে হয়েছে অন্য কোনো কাজ আমার জন্য এত কঠিন ছিল না। কতবার নিয়ত ঠিক করেছি কিন্তু কিছুক্ষণ যেতে না যেতেই আবার পাল্টে গেছে। [আল-জামে লি আখলাকির রাবী ওয়া আদাবুছ ছামে: খতীব বাগদাদী।]
ইউসূফ ইবন হুসাইন রাযী বলেন: দুনিয়ার সবচেয়ে কঠিন কাজ হলো ইখলাসের ওপর অটল থাকা। আমি আমার অন্তর থেকে রিয়া (লোক দেখানো ভাবনা) দূর করার জন্য কত প্রচেষ্টা চালিয়েছি, সে দূর হয়েছে বটে তবে আবার ভিন্ন আকৃতিতে, ভিন্ন রূপে উপস্থিত হয়েছে। [জামে আল উলুম ওআল-হিকাম: ইবন রজব।]
সাহাল ইবন আব্দুল্লাহকে প্রশ্ন করা হলো, আপন প্রবৃত্তির নিকট কঠিনতম কর্ম কী? তিনি বললেন, ইখলাস। কেননা, প্রবৃত্তি কখনো ইখলাস গ্রহণ করতে চায় না। [সাফওয়াতু আস সাফওয়াহ: ইবনল জাওযী।]
তাই মন্দ কর্মে প্রণোদনাদাতা নফস বান্দার কাছে ইখলাসকে মন্দরূপে উপস্থাপন করে, দৃশ্যমান করে তোলে এমন রূপে, যা সে ঘৃণা করে মনেপ্রাণে। সে দেখায়, ইখলাস অবলম্বনের ফলে তাকে ত্যাগ করতে হবে বিলাসী মনোবৃত্তির দাসত্ব, সে তোষামুদি স্বভাব ও মেনে নেওয়ার দুর্বলতা মানুষকে সমাজের সকল শ্রেণির কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে ব্যাপক অবদান রাখে, তাও তাকে ছিন্ন করতে হবে আমূলে। সুতরাং বান্দা যখন তার আমলকে একনিষ্ঠতায় নিবিষ্ট করে, আল্লাহ ব্যতীত ভিন্ন কেউ তার কর্মের উদ্দেশ্য হয় না, তখন বাধ্য হয়েই বিশাল একটি শ্রেণির সাথে তাকে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হয়, তারাও তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে। একে অপরের ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয়।
এ জন্যে রাসূলুল্লাহ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহি ওয়াসাল্লাম অধিকাংশ সময় এ দো‘আ পাঠ করতেন:
“হে অন্তর পরিবর্তনকারী! আমার অন্তর আপনার দীনের ওপর অবিচল রাখুন!” [তিরমিযী, হাদীস নং ৩৪৪৪।]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/556/4
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।