মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
ঈসা মসীহ ইসলামের এক নবী চার্চের বিকৃতির এক ঐতিহাসিক আলেখ্য
লেখকঃ মুহাম্মাদ আতাউর- রহীম
১৫
দশম অধ্যায়: হাদীস ও মুসলিম ইতিহাস গ্রন্থে ঈসা আলাইহিস সালাম
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/604/15
জ্ঞানের আরেকটি উৎস হলো হাদীস, আর এ হাদীস সম্পর্কে খৃষ্টান ধর্মাবলম্বীদের অন্ধকারে রাখা হয়েছে। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মুখের বাণী ও তার কর্মকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ সম্বলিত লিখিত রূপই হলো হাদীস। সতর্ক পরীক্ষা ও যাচাই-বাছাই এর পরিণতিতে প্রামাণ্য হাদীস গ্রন্থসমূহের ওপর ভিত্তি করে যে হাদীস সাহিত্য গড়ে উঠেছে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য বিগত শতকে রোমান চার্চ ও খৃষ্টান মিশনারীগণ একটি অত্যাধুনিক কপট বৃত্তি (Pseudo_Scholarship) প্রতিষ্ঠা করে। নিউ টেস্টামেন্টে যেসব গসপেল অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সেগুলো মোটেই কোনো যাচাই-বাছাই করা হয় নি। কিন্তু হাদীসের ক্ষেত্রে তেমনটি ঘটে নি। প্রতিটি হাদীসই নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে গৃহীত, প্রয়োজনে তার উৎস সন্ধানে পৌঁছে যাওয়া হয়েছে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সেই সাহাবির কাছে যিনি প্রকৃতই তার মুখের কথা শ্রবণ করেছেন ও বিভিন্ন ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন। হাদীসসমূহের সর্বাপেক্ষা নির্ভরযোগ্য সূত্র হলেন সে সব ব্যক্তি যারা আল্লাহকে ভয় করতেন ও ভালোবাসতেন। হাদীস গ্রন্থগুলোর মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ দু’টি ইমাম আল-বুখারী ও ইমাম মুসলিম কর্তৃক সংকলিত। মহানবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাতের প্রায় একশ বিশ বছর পর তা সংকলিত করা হয়। এসব হাদীসে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবন ও জ্ঞানের প্রতিটি দিকই উপস্থিত। হাদীস হলো মুহাম্োদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শিক্ষার অপরিহার্য অংশ। ইমাম বুখারী রহ. ও ইমাম মুসলিম রহ. সেসব হাদীস সংগ্রহ করেছিলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সমকালীন প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ থেকে।
হাদীসে যেমন ঈসা আলাইহিস সালামের প্রসঙ্গ রয়েছে, তেমনি বহু মুসলিম পণ্ডিতও তার বাণী ও কর্মের বিবরণ প্রদান করেছেন। এগুলো মূলত ঈসা আলাইহিস সালামের প্রথম দিকের অনুসারীগণ কর্তৃক সংগৃহীত হয়েছিল। যারা আরব ও উত্তর আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়েছিলেন। যখন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমন ঘটল, তখন ঈসা আলাইহিস সালামের এসব শিষ্যের বহু অনুসারীই ইসলাম গ্রহণ করেন। ঈসা আলাইহিস সালাম সম্পর্কে তাদের কাছে যেসব বিবরণ ছিল তা তারা রক্ষা করেছিলেন। ঈসা আলাইহিস সালাম শেষ নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমনের ব্যাপারে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। যাহোক, মুসলিমরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম হাদীসমূহ লালন ও চর্চা করেন। এগুলোর মধ্যে বহু হাদীস চূড়ান্তভাবে সা’লাবীর’র ‘কাসাসুল আম্বিয়া’ (Stories of the Prophets) এবং আল- গাযালীর ‘ইহয়াউ উলুমিদ্দীন’ (Revival of the life Transaction Sciences) গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত হয়। এটা তাৎপর্যপূর্ণভাবে লক্ষণীয় যে, এসব হাদীসে কি স্পষ্টভাবে সেই মহান নবীর জীবন ও কর্মের এক সুস্পষ্ট ও পূর্ণাঙ্গ চিত্র ফুটে উঠেছে যিনি সুগম করেছিলেন শেষ নবীর পৃথিবীতে আগমনের পথ।
কা‘ব আল আহবার বলেন, মারইয়ামের পুত্র ঈসা আলাইহিস সালাম ছিলেন লাল রঙের, সাদা ঘেঁষা, তার চুল দীর্ঘ ছিল না, তিনি কখনই মাথায় তেল ব্যবহার করতেন না। তিনি খালি পায়ে হাঁটতেন, কোনো বাড়ি ঘর, আসবাবপত্র, কোনো সামগ্রী, পোশাক অথবা অন্য কিছুই তার ছিল না শুধুমাত্র দিনের খাবার ছাড়া। যেখানেই সূর্যাস্ত হত সেখানেই তিনি থেমে পড়তেন এবং পরদিন ভোর না হওয়া পর্যন্ত উপাসনায় রত থাকতেন। তিনি জন্মান্ধের দৃষ্টি ফিরিয়ে দিতেন। কুষ্ঠদের রোগ নিরাময় করতেন এবং আল্লাহর হুকুমে মৃতদের পুনর্জীবন দান করতেন। তিনি তার লোকদের বলতেন তারা বাড়িতে কী খাচ্ছে এবং আগামীকালের জন্য কী মজুত করে রেখেছে। তিনি সমুদ্রের পানির ওপর দিয়ে হেঁটে যেতেন। তার মাথা অবিন্যস্ত থাকত, তার মুখমণ্ডল ছিল ছোট। তিনি ছিলেন পৃথিবীতে এক কঠোর তপস্বী, যাঁর লক্ষ্য ছিল পরকাল এবং তিনি ছিলেন আল্লাহর ইবাদতে মশগুল। ইয়াহূদীরা যতদিন না তাকে খুঁজে এবং তাঁকে হত্যা করার চক্রান্ত করেছিল ততদিন তিনি ছিলেন পৃথিবীতে এক মূসাফির। এরপর আল্লাহ তাঁকে আসমানে তুলে নেন; আল্লাহই সম্যক অবগত।
ঈসা আলাইহিস সালাম বলেছেন, যারা ইহলোকের আকাঙ্ক্ষা করে তারা হলো সেই ব্যক্তির ন্যায় যে সমুদ্রের পানি পান করে; যত বেশি সে পান করবে তার তৃষ্ণা তত বৃদ্ধি পাবে, যতক্ষণ না তার মৃত্যু হয়।”
ঈসা আলাইহিস সালাম একদিন তিন ব্যক্তিকে দেখতে পেলেন। তাদের শরীর ছিল কৃশকায় ও ফ্যাকাশে। তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমাদের এই অবস্থার কারণ কী?” তারা জবাব দিল, আগুনের ভয়ে। তিনি বললেন, “যারা ভীত তাদের নিরাপত্তা দান আল্লাহর দায়িত্ব।” তিনি তাদের ছেড়ে এগিয়ে গিয়ে আরো তিন ব্যক্তিকে দেখতে পেলেন। তারা আরো বেশি ক্ষীণকায় ও ফ্যাকাশে। তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমাদের এই অবস্থা হয়েছে কেন? তারা জবাব দিল, “আমরা জান্নাতের বাগান চাই।” তিনি বললেন, “তোমাদের আশা পূরণ করা আল্লাহর দায়িত্ব।” তাদের অতিক্রম করে আরো কিছু দূর অগ্রসর হওয়ার পর তিনি আরো তিন ব্যক্তিকে দেখতে পেলেন। তারা ছিল আগের লোকগুলোর চেয়েও ক্ষীণকায় এবং তাদের চেহারা আরো বেশি ফ্যাকাশে ছিল। তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমাদের এই অবস্থার কারণ কি?” তারা জবাব দিল, আমরা আল্লাহকে ভালোবাসি। তিনি শ্রেষ্ঠ ও মহীয়ান।” তিনি বললেন, তোমরা তারা যারা আল্লাহর নিকটতম, তোমরা তারা যারা আল্লাহর নিকটতম, তোমরা তারা যারা আল্লাহর নিকটতম।”
আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বর্ণনা করেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন:
“গতরাতে স্বপ্নে আমি নিজেকে কা‘বা ঘরে দেখতে পেলাম। আমি লালাভ চেহারার এক ব্যক্তিকে দেখতে পেলাম। এ ধরনের লোক যেমন অত্যন্ত সুদর্শন হয়, তিনিও সেরকমই ছিলেন যেমনটি তোমরা অত্যন্ত সুন্দর কেশগুচ্ছ সম্পন্ন লোককে দেখতে পাও। তার চুলগুলো আঁচড়ানো ছিল এবং সেগুলো পানিতে সিক্ত ছিল। তিনি দু’ব্যক্তির কাঁধে ভর দিয়ে কা‘বা গৃহ তাওয়াফ করতে থাকলেন। আমি যখন জিজ্ঞাসা করলাম তখন আমাকে বলা হলো, ঈসা মসীহ-মারইয়ামের পুত্র.....: (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)
আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“যার হাতে আমার প্রাণ তার কসম, মারইয়ামের পুত্র শিগগিরই তোমাদের মধ্যে আসবেন একজন ন্যায় বিচারক হিসেবে। তিনি ক্রুশ ভেঙে ফেলবেন, অত্যাচারী, অমানুষদের হত্যা করবেন এবং জিযিয়া কর বিলুপ্ত করবেন। তখন এত বেশি সম্পদ হবে যে দান গ্রহণ করার মত কাউকে পাওয়া যাবে না এবং একটি সাজদাহ হবে পৃথিবী ও তার সম্পদের চেয়ে অনেক বেশি উত্তম।” অতপর আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, মন চাইলে উচ্চারণ কর, ﴿وَإِن مِّنۡ أَهۡلِ ٱلۡكِتَٰبِ إِلَّا لَيُؤۡمِنَنَّ بِهِۦ قَبۡلَ مَوۡتِهِۦ﴾ [ النساء : ١٥٩ ] “কিতাবের অনুসারী প্রতিটি ব্যক্তিই মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তাঁকে বিশ্বাস করবেই”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১৫৯] (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)
আবূ হুরায়রা কর্তৃক বর্ণিত আছে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে,
“পৃথিবীতে এবং আখিরাতে আমি মারইয়ামের পুত্র ঈসার নিকটতম। সাহাবীগণ বললেন: হে আল্লাহর রাসূল! তা কীভাবে? তিনি বললেন: নবীগণ বৈমাত্রেয় ভাই ভাই, তাদের মাতা ভিন্ন ভিন্ন, কিন্তু ধর্ম এক। আমাদের দু’জনের মধ্যে কোনো নবী নেই”। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর এই বিখ্যাত ভাষণে এ ব্যাপারে যা বলেছেন তার সারকথা হলো: নবীগণ ভাই ভাই, তারা সকলেই এক, তাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। তারা এক পিতার পুত্র: তারা একই মতবাদ ঘোষণা করেছেন (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) আল্লাহ ছাড়া আর কোনো সত্য ইলাহ নেই। তার একক সত্ত্বায় তার সাথে আর কিছু যুক্ত হতে পারে না।
তাদের মাতাগণ পৃথক: প্রত্যেক নবীকেই একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রত্যেক নবী লাভ করেছেন সুন্নাহ বা জীবন-কাঠামো, রীতি-নীতি, একটি সামাজিক পদ্ধতি যার অনুসরণ দ্বারা তার সম্প্রদায় জীবন-যাপন করবে। যখনই একজন নতুন নবী এসেছেন তিনি নতুন সময়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সুন্নাহর নতুন রূপ নিয়ে এসেছেন। এটাই হলো শারিয়া বা নবীগণের পথ। এভাবে শেষ নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমনের মধ্যে দিয়ে আসমানি দিক নির্দেশনার সমাপ্তি ঘটেছে। সর্বশেষ নাযিলকৃত গ্রন্থ মহিমান্বিত কুরআনের মধ্য দিয়ে নবুওয়াতের অবসান সূচিত হয়েছে। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শরী‘আহ ও সুন্নাহর সাথে নবুওয়াত সীলমোহরকৃত ও সমাপ্ত হয়েছে।
ধর্মোপসনার বিজ্ঞান হলো আল্লাহকে পাওয়ার পন্থা। আদম আলাইহিস সালামের সন্তানদের কাছে নাযিলকৃত কিতাব ও সুন্নাহ’তে আল্লাহর নিদর্শন বিরাজিত। ইসলামের নবী ঈসা আলাইহিস সালামের পথ শেষে শুরু হয়েছে ইসলামের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পথ।
“এ দিনে আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পূর্ণাঙ্গ করেছি এবং তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পন্ন করেছি এবং তোমাদের জন্য মনোনীত করেছি দীন-আল-ইসলাম।” [সূরা আল-মায়েদাহ, আয়াত: ৩]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/604/15
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।