hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ঈসা মসীহ ইসলামের এক নবী চার্চের বিকৃতির এক ঐতিহাসিক আলেখ্য

লেখকঃ মুহাম্মাদ আতাউর- রহীম

ভূমিকা
এ গ্রন্থের লেখক মুহাম্মাদ আতাউর রহীম আবেগ সহকারে উপলব্ধি করেন যে, খৃষ্টান দেশগুলোর জনসাধারণের যদি ইসলামি ধর্ম বিশ্বাস সম্পর্কে কিছু জ্ঞানও থাকত, পাশাপাশি তারা যদি আল্লাহর নবী ঈসা আলাইহিস সালামকে প্রকৃতই বুঝার চেষ্টা করত, তাহলে ভবিষ্যতে অনেক অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রণা পরিহার করা যেত। মেধাবী, উদার দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী আন্তর্জাতিক মনোভাবাপন্ন পণ্ডিত এ লেখক মানুষের সুখ ও কল্যাণ কামনার ক্ষেত্রে দেশ ও জাতীয়তার সীমা অতিক্রম করে গেছেন। তার বক্তব্য, আন্তঃসাংস্কৃতিক অজ্ঞতাই হচ্ছে আজকের দুর্দশা ও কষ্টের প্রধান একক কারণ।

সে কারণেই এ গ্রন্থটি রচিত, প্রধানত পাশ্চাত্যের উদ্দেশ্যে। তবে এ গ্রন্থটি তাদের জন্যও যারা ঈসা আলাইহিস সালামের জন্ম, তার মিশন ও তার অন্তর্ধানকে ঘিরে পরস্পরবিরোধী ধারণার জটাজাল থেকে মুক্তি পেতে চান। মুহাম্মাদ আতাউর রহীম এই বিশৃঙ্খলাকে একজন খাঁটি ঐতিহাসিকের যুক্তি দিয়ে আক্রমণ করেছেন। তিনি দেখতে পেয়েছেন যে, প্রায় সকল বিভ্রান্তির কারণ হলো দু’টি মতবাদ যা সকল যুক্তিকেই উপেক্ষা করেছে। মতবাদ দু’টি হলো কথিত যীশুর ঈশ্বরত্ব এবং ত্রিত্ববাদ।

এই গ্রন্থ খৃষ্টান চার্চ যার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল, সেই কল্পকাহিনীকে বিপুলভাবে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে এবং ঈসা আলাইহিস সালামকে দেখিয়েছে একেশ্বরবাদে বিশ্বাসের শিক্ষক হিসেবে যাকে ইয়াহূদী পুরোহিততন্ত্রের মধ্যকার অসংখ্য, খারাপ উপাদান ধ্বংসের জন্য আল্লাহ পাক নবী হিসেবে প্রেরণ করেছিলেন।

তবে আমি এই ভূমিকাকে এ গ্রন্থের সারমর্ম হিসেবে তুলে ধরতে চাচ্ছি না। এ গ্রন্থটি তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে ও স্বকীয়তায় উজ্জ্বল। সত্য উপলব্ধির ব্যাপারে অ-মুসলিমদের সাহায্য করতে এবং অধিকাংশ খৃষ্টানের ইসলামের প্রতি কুসংস্কারজনিত ভীতি হ্রাস করার একান্ত ইচ্ছার অংশ হিসেবে লেখক এ গ্রন্থটি রচনা করেছেন।

আমরা যারা মুসলিম তারা জানি যে, এ ভয় কতটা অমূলক। আমরা আমাদের জ্ঞান থেকে জানি, মহান আল্লাহ কত ক্ষমাশীল, মানুষের প্রতি কত অনুগ্রহশীল, তিনি মানুষের স্পর্শাতীত সত্ত্বা:

﴿لَيۡسَ كَمِثۡلِهِۦ شَيۡءٞۖ وَهُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلۡبَصِيرُ﴾ [ الشورا : ١١ ]

“কোনো কিছুই তার সদৃশ নয়, তিনি সর্ব শ্রোতা, তিনি সর্বদ্রষ্টা”। [সূরা আশ-শুরা, আয়াত: ১১]

আমরা নিশ্চিত জানি যে, আল্লাহ নবীগণকে প্রেরণ করেছেন, তারা আমাদের জন্যই প্রেরিত হয়েছেন, জগতে আমাদের একমাত্র মা‘বুদ হিসেবে আল্লাহর বাণী তারা প্রচার করেছেন এবং আমাদের অনুসরণের জন্য প্রদান করেছেন নির্দেশনা (আসমানি কিতাব)। মুসলিমগণ অপরিবর্তনীয় ও পূর্ণাঙ্গ পবিত্র কুরআনের অনুসারী, কিন্তু তারা সম্ভবত সময়ে সময়ে এ পূর্ণাঙ্গ অপরিবর্তনীয় মহা গ্রন্থটিকে অন্যদের জন্য বোধগম্য করে তুলতে সমর্থ হয় না। এই লেখক, সকল মানুষের জন্য তার গভীর দরদের কারণে (বিশেষ করে যারা তার চেয়েও সৌভাগ্যহীন) তাদের সাথে যোগাযোগের এই ব্যর্থতা সম্পর্কে সচেতন। তিনি ইসলামের বিভিন্ন আঞ্চলিক রূপ সম্পর্কেও বিশেষভাবে সচেতন যা কিনা ইসলামের অভ্যন্তরেই বিকাশ লাভ করেছে। এগুলো যারা ইসলামকে বেড়ার ওপার থেকে ভীতির সাথে দেখেছে তাদের বিভ্রান্ত করতে, এমনকি বিভিন্ন দেশের মুসলিমদের মধ্যেও বিভ্রান্তি ও ভুল বোঝাবুঝি ঘটাতে সক্ষম।

কেবল সুদৃঢ় সংকল্প, বিপুল সহানুভূতিই বিভিন্ন জাতির মধ্যে প্রকৃত ভ্রাতৃত্ব ও সমঝোতা আনতে পারে। সবচেয়ে বড় বাধা হলো অপরিচয়ের ভীতি। নৈতিক মূল্যবোধহীন পাশ্চাত্যের দিকে তাকিয়ে অনেক মুসলিমই মনে করেন যে, সেই আধ্যাত্মিক শূন্যতার মধ্যে ইসলামের প্রবেশ ঘটানো খুবই সহজ ব্যাপার হবে। কিন্তু এ ধরনের আশা পোষণ করা আসলে শূন্যে প্রাসাদ নির্মাণের মতোই। পাশ্চাত্যের প্রযুক্তি ও শিল্প প্রবৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য জনগণের গণশিক্ষা। এ গণশিক্ষা এসব লোকদের সবাইকে সুস্পষ্টভাবে দেখিয়েছে যে, ধর্মকে তারা যেভাবে জানে, তা সত্যের সমর্থনহীন মতবাদের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত। পরিণতিতে, এটা তেমন আশ্চর্যজনক নয় যে, এই শিল্প সমৃদ্ধ সমাজের বৃদ্ধিজীবী এলিটরা খৃষ্টান চার্চের একচেটিয়া পুরোহিততন্ত্রের কাছ থেকে তাদের নয়া আবিষ্কৃত স্বাধীনতার মধ্যে এক অপরিসীম মুক্তির স্বাদ খুঁজে পেয়ে প্রথম তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করেছে। অথচ এই পুরোহিততন্ত্রই শত শত বছর ধরে শিক্ষা বিস্তারের কাজটি পালন করে এসেছে। যা হোক, এ ধরনের লোকদের কাছে ধর্ম, তা সে যে নামেই হোক, শুধু পুরোনো কুসংস্কারই নয়, উপরন্তু তা এক বাধা সৃষ্টিকারী শক্তি এবং অধিকতর বৈজ্ঞানিক জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে এক প্রতিবন্ধক হিসেবে পরিদৃষ্ট হয়েছে। জন্মগতভাবে মুসলিম, যারা নিজেদের ও আল্লাহর মধ্যে সংঘৃষ্ট হতে অনভ্যস্ত, তারা এই মনোভাবকে উপলব্ধি করতে পারে নি বলেই মনে হয়। সত্য ভ্রষ্ট খৃষ্টানদের জন্য ধর্ম-বিশ্বাস হারানো হলো মানুষের তৈরি দর্শন থেকে বিচ্যুত হওয়া। যা কিনা অতীতে আইন- শৃঙ্খলা রক্ষার একটি পন্থা হিসেবেই কিছুটা যা কাজে লেগেছে।

ইসলাম পাশ্চাত্যের আধ্যাত্মিক শূন্যতা পূরণ করতে পারার আগে এসব সম্পূর্ণ বস্তুবাদী মানুষকে আল্লাহর প্রকৃত সত্ত্বার সম্পর্ক বুঝাতে হবে এবং আল্লাহ সম্পর্কে এই জ্ঞান যে তাদের প্রত্যাখ্যাত পুরোহিততন্ত্রকে পুনরায় গ্রহণ করার ওপর নির্ভর করে না তাও বুঝাতে হবে। তাদেরকে মুসলিমদের ব্যাপারে দৃষ্টান্ত স্থাপনের মাধ্যমে এক নতুন ধারণা প্রদান করতে হবে।

মধ্যপ্রাচ্যের ইসলামি দেশগুলো যদি প্রায় রাতারাতি বিপুল সম্পদ অর্জন করতে না পারত তাহলে ইসলাম সম্পর্কে পাশ্চাত্যের অজ্ঞতা আরো দীর্ঘস্থায়ী হয়ে বিদ্যমান থাকত। যেমন বলা যায়, রাশিয়াসহ সমগ্র ইউরোপ এবং আমেরিকা হঠাৎ করে শুধু তাদের কাছে অপরিচিত একটি ধর্ম বিশ্বাসেরই মুখোমুখি হয় নি, বরং এমন একটি ধর্ম বিশ্বাসের সম্মুখীন হয়েছে যার পিছনে রয়েছে একটি পণ্য, যেটাকে তারা স্বীকৃতি দেয়। সেটি হলো অর্থ, বিপুল পরিমাণ অর্থ। তার অর্থ শক্তি, যে শক্তি দিয়ে প্রায় সব কিছু জয় করা যায়।

এটা আশ্চর্যজনক নয় যে, এই শক্তির ব্যাপারে প্রকৃতই ভয় রয়েছে। দীর্ঘকাল পূর্বে মুসলিম বিশ্বই বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের একচেটিয়া অধিকারী ছিল। প্রাচ্যের বিকাশের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে পাশ্চাত্যের বিজ্ঞান, এটা দীর্ঘদিনের বিস্তৃত ইতিহাস। আরব দেশগুলো অতি সম্প্রতি প্রকৃত জাতীয়তাবোধ খুঁজে পেয়েছে। পাকিস্তান এই কয়েক দশক আগেও পশ্চিমা শিল্পশক্তির শোষণ-নিপীড়নের শিকার ছিল। তবুও বিশ্বব্যাপী ইসলাম (অনুসারী জনগোষ্ঠী পাশ্চাত্যের চন্দ্র পৃষ্ঠে পদচারণা, টেস্ট-টিউব শিশু তৈরির সক্ষমতা এবং মানুষের বর্তমান আয়ু সীমাকে দ্বিগুণ করার প্রায়) অর্জিত সাফল্য সত্ত্বেও সেই সমাজের ওপর প্রাধান্য বিস্তার করার সম্ভাবনা প্রদর্শন করছে।

রোমার যাজকতন্ত্রের অধীনতা ও শাসন থেকে নিজেদের দেশকে মুক্ত করতে এবং বেসামরিক সরকার ও নাগরিক আইন প্রতিষ্ঠা করতে যারা কঠিন লড়াই করেছে, খৃষ্টান দেশগুলোতে জন্মগ্রহণকারী সে সব লোকেরা আজ তাদের স্বাধীনতা দ্রুত বিলুপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছে।

মুহাম্মাদ আতাউর রহীমের এই গ্রন্থের মত ইসলামি পণ্ডিত-গবেষকরা মানুষের প্রতি সযত্ন ভালোবাসা নিয়ে যতক্ষণ না পাশ্চাত্যের সাথে একটি ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের পরিবেশ সৃষ্টি করবে ততদিন শুধু ভীতির আবহাওয়া থেকে বিরোধেরই সৃষ্টি হতে থাকবে। মুসলিম দেশগুলো বিশেষত যেসব দেশের বিপুল আর্থিক শক্তি রয়েছে, তাদের ওপরই আজ অর্পিত হয়েছে এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় উদাহরণ সৃষ্টির গুরু দায়িত্ব। আশার কথা যে, পশ্চিমা দেশগুলো এবং মুসলিম দেশগুলোতেও বিশ্ববিদ্যালয় ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোর বিস্তৃতি ও সংখ্যা বৃদ্ধি ইসলামি গবেষণা ও অধ্যয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ও গঠনমূলক অবদান রাখার সুযোগ সৃষ্টি করবে এবং এর ফলে ইসলাম সম্পর্কে পাশ্চাত্যের জনগণের অমূলক ভীতি ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হবে।

আমরা, মুসলিমরা আল্লাহর নির্দেশিত পথ অনুসরণ করব। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে আমরা হাত-পা গুটিয়ে পিছনে পড়ে থাকব। আমাদের রয়েছে মহানবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শ্রেষ্ঠতম দৃষ্টান্ত এবং আমাদের দিক-নির্দেশনা প্রদানকারী পবিত্র কুরআনের অপরিবর্তনীয় নির্দেশনা ও অনুপ্রেরণা। তবে এ নির্দেশনায় সুস্পষ্টভাবে যা বলা হয়েছে তা হলো আমরা যদি ইহকালে শান্তি ও পরকালে আল্লাহর সর্বোত্তম অনুগ্রহ চাই, তাহলে আমাদের অবশ্যই সেভাবে কাজ করতে হবে যেমনটি মহান রাব্বুল আলামিন চান।

অ্যান্ড্রু ডগলস হ্যামিলটন

জমাদিউস সানি, ১৩৯৯ হিজরি

এপ্রিল, ১৯৭৯ খ্রী.

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন