HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
মুসলিম নারীর অধিকার ও দায়িত্ব ইসলামের ইশতিহার ও সনদ
লেখকঃ ফায়সাল বিন খালেদ
৩
প্রথমত: মৌলিক পূর্বানুমান ও অবস্থানএই ক্ষেত্রে কিছু পূর্বাবস্থান ও সিদ্ধান্ত রয়েছে, যা নারীর অধিকার ও দায়িত্ব বিষয়ে শরীয়তের মূলনীতিগুলোর ঝোঁক ঠিক করে দেয়, তার প্রবণতা ও সিদ্ধান্তগুলো নির্ধারণ করে দেয়। এর মধ্যে প্রধান পূর্বাবস্থানগুলো :
১. যাবতীয় কল্যণ ও সত্যের , পার্থিব ও পরকালীন উভয় ক্ষেত্রে , উৎস হচ্ছে ওহী বা প্রত্যাদেশ অর্থ্যাৎ পবিত্র কোরআন ও হাদীস, জীবনের যাবতীয় সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে এই উৎসতেই ফিরে যেতে হবে, কোন ক্ষেত্রে তার বিরোধিতা করা যাবে না, দৃঢ়ভাবে এই বিশ্বাস ও আস্থা পোষণ করা। কারণ, উম্মাহর সর্বসম্মতিক্রমে, এটা ঈমানের একটি মৌলিক অঙ্গ এবং তার শর্ত। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেছেন :
(আরবি)
অর্থাৎ ‘আপনার রবের কছম তাদের ঈমান আনা হবে না, যদি না তারা তাদের মাঝে বিবদমান বিষয়গুলোতে আপনাকে বিচারক মানে এবং আপনার সিদ্ধান্তকে নিঃসংকোচে ও পূর্ণাঙ্গভাবে মেনে নেয়’- সূরা নিছা (৬৫)। ইসলামী ডিসকোর্সের একটি স্বতঃসিদ্ধ সিদ্ধান্ত হচ্ছে, ‘রবুবিয়্যাত’-এ বিশ্বাস। অর্থাৎ এই বিশ্বাস রাখা যে, ব্যক্তিগত ও সামাজিক তথা গোটা মানবীয় জীবনের যাবতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত ও বিধান দেওয়ার এক মাত্র অধিকার আল্লাহ তায়ালার। স্বতঃসিদ্ধ সিদ্ধান্তের আরেকটি হচ্ছে ‘উলুহিয়্যাত’-এ বিশ্বাস। এ বিশ্বাসের অর্থ সর্ব ক্ষেত্রে একমাত্র আল্লাহকেই বিচারক মানা ও একমাত্র তারই ইবাদত করা।
২. দৃঢ়ভাবে এ-বিশ্বাস রাখা যে, ইসলামী শরীয়ত স্থান ও কাল ভেদে জীবনের সব এলাকায় সফল ও কার্যকর ভূমিকা পালন করতে সক্ষম। এই দ্বীন ও তার যাবতীয় মৌলিক ও আনুষাঙ্গিক বিধানগুলোর প্রতি সম্পূর্ণ আস্থা রাখা এবং বিশ্বাস করা যে, এই দ্বীনের পুরোটাই কল্যাণকর, সুবিচারী এবং মানুষের জন্য এক মহা আশীর্বাদ। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন :
(আরবি)
অর্থাৎ ‘এই কোরআন সঠিকতম পথের নির্দেশনা দেয় এবং সৎকর্মশীল মোমেনদের এই সুসংবাদ দেয় যে, তাদের জন্য রয়েছে মহা প্রতিদান’। সূরা ইছরা (৯)। এই বিশ্বাস ও আস্থা রাখতে হবে কারণ, এই বিধানের উৎস প্রজ্ঞাবান ও সূক্ষ্ম জ্ঞানী আল্লাহ, যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে যার পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান ও প্রজ্ঞা রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন :
(আরবি)
অর্থাৎ ‘তারা কি জাহেলিয়্যাতের বিধান চায় ? যাদের ইয়াক্বীন আছে তাদের জন্য আল্লাহর বিধানের চেয়ে ভাল আর কোন বিধান থাকতে পারে ! - সূরা মাঈদা (৫০)।
সুতরাং যে কোন সিদ্ধান্ত ও অনুশীলনের শুদ্ধতা ও অশুদ্ধতা, সফলতা ও ভ্রষ্টতা নির্ধারণ করতে হবে এই মাপকাঠি দ্বারা এবং এর উপর নির্ভর করেই তার সংশোধন ও সংস্কার করতে হবে, অমুসলিমদের বা অমুসলিম চিন্তা ও সংস্কৃতি প্রভাবিত কোন মুসলমানের চিন্তাপদ্ধতি ও পরিমাপক দ্বারা নয়। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন :
(আরবি)
অর্থাৎ ‘তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন, তারা যেন, আললাহ আপনার নিকট যা নাযিল করেছেন, তার কোন কিছু থেকে আপনাকে বিচ্যুত করতে না পারে’- সূরা মাঈদা (৪৯)।
৩. মূল্যবোধ, বিধান, নানা বিষয়ের ধারণা, বিচারকাঠি, ইত্যাদি বিষয়ের মানব রচিত বিচার পদ্ধতিগুলোর সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে সচেতন থাকা। মানবীয় এই সব চিন্তা ও বিচারপদ্ধতিগুলো, অনেক সময়ই, হাজির হয় ঝলমল মোড়কে। এবং অনেক ক্ষেত্রে তা - স্বীকার করতে দ্বিধা নেই- পূর্ণ বা খন্ডিত সত্য ধারণ করতে পারে। কারণ নানা ভ্রষ্টতা সত্ত্বেও, বিচার-বিবেচনা ও সত্য চেনার ক্ষেত্রে মানুষের যে আদি-জন্মগত স্বভাব, মানুষের মাঝে সব সময় তার কিছু অবশিষ্ট থেকে যায়। সেই আদি ফিতরতের বলে বা বিশুদ্ধ-নিখাদ বুদ্ধি-যুক্তি দ্বারা মানুষ তার রচিত চিন্তা ও বিচার পদ্ধতিতে অনেক সময় সত্যকে পেতে সফল হয়। কিন্তু সচেতন থাকতে হবে, সব কিছুর পরও এই মেথডলজি সীমাবদ্ধ এবং আল্লাহ প্রদত্ব পদ্ধতির মত সর্বদিকে সুসঙ্গত নয়। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন :
(আরবি)
অর্থাৎ ‘যদি তা আল্লাহ ভিন্ন অন্য কারো পক্ষ থেকে হত তবে তাতে অনেক অসঙ্গতি পেত’- সূরা নিছা (৮২)।
মানুষ,মুসলমান কাফের নির্বিশেষে, আজ যে সব অনিষ্ট-অকল্যাণে আক্রান্ত হয়ে আছে তার কারণ এই সঠিক আল্লাহ প্রদত্ব উৎস থেকে বিচারপদ্ধতিগুলোর বিচ্যুতি। এই সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন :
(আরবি)
অর্থাৎ ‘মানুষের নিজেদের কর্মের ফলেই জলে-স্থলে ফাসাদ ছড়িয়ে পড়েছে’। সূরা রোম (২১)। আল্লাহ আরো এরশাদ করেন :
(আরবি)
অর্থাৎ ‘ যদি আসমান ও জমিনে আল্লাহ ছাড়া অন্য আরো ইলাহ থাকত তাহলে তা ধ্বংস হয়ে যেত। সুতরাং তারা যা বলে আরশের রব তা থেকে পবিত্র’- সূরা আম্বিয়া (২২)।
৪. ইসলাম ধর্ম ন্যায় ও ইনসাফের ধর্ম,এই বিশ্বাস জাগরূক রাখা। আর ন্যায়পরায়নতা মানে সমমানের দুটি বিষয়ের মাঝে সমতা রক্ষা করা এবং অসম বিষয়গুলোর জন্য নিজ নিজ অবস্থা অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন মান নির্ধারণ করা। ইসলাম নিঃশর্ত সমতা-সাম্যের ধর্ম, এই ধারণা ভুল। নিঃশর্ত সাম্যের ধারণা অনেক ক্ষেত্রে দুটি ভিন্ন মানের বিষয়কে সমমান দান করে, যা মূলত জুলুম ও অবিচার। তবে যারা ইসলাম সাম্যের ধর্ম বলতে, ইসলাম ন্যায়পরায়নতার ধর্ম বুঝাতে চান, তারা ধারণাগতভাবে সঠিক। কিন্তু তাদের ভাষাটি ভুল। কোরআন কোথাও নিঃশর্ত সাম্যের আদেশ করে নি। কোরআন, বরং, সব জায়গায় ন্যায়পরায়নতার নির্দেশ দিয়েছে। যেমন আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন :
(আরবি)
অর্থাৎ ‘আল্লাহ ন্যায়পরায়নতা ও এহছান (সর্বত্তোম উপায় অবলম্বন) এর আদেশ দেন’- সূরা নাহাল (৯০)। শরীয়তের বিধানগুলোর ভিত্তি হচ্ছে ন্যয়পরয়ানতা। সুতরাং সমতা রক্ষায় যেখানে ন্যায়বিচার হয় সেখানে শরীয়ত সাম্য রক্ষা করে আর যেখানে ভিন্নতা-তারতম্য করাই হয় ইনসাফের দাবি সেখানে
শরীয়ত তারতম্য করে। ইসলামে নিঃশর্ত সমতার কোন ধারণা নেই। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন :
(আরবি)
অর্থাৎ ‘আপনার রবের কালিমা পূর্ণ সত্য ও ইনসাফপূর্ণ। তার বাণীতে কেউ পরিবর্তন করতে পারে না। তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ’- সূরা আনআ’ম (১১৫)। অর্থাৎ আল্লাহর কালিমা সত্য সংবাদ দান করে এবং ইনসাফপূর্ণ বিধান দেয়। তাই ইসলাম মানবীয় জীবন ও মানবীয় সম্পর্কগুলোকে যে এককের উপর প্রতিষ্ঠিত করতে চায় তা ‘ইনসাফ’। সবাইকে ইনসাফ করতে হবে, সবার সাথে এবং সর্বাবস্থায়। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন :
(আরবি)
অর্থাৎ ‘কোন সম্প্রদায়ের শত্রুতা যেন তোমাদের অন্যায় করতে বাধ্য না করে। ইনসাফ করে যাও। কারণ সেটাই তাক্বওয়ার সবচেয়ে নিকটবর্তী’- সূরা মাঈদা (৮)।
৫. আধুনিক ‘জাহেলিয়্যাত’-এর নাম পশ্চিম। সমকালীন এই জাহেলিয়্যাত মানবীয় সম্পর্কগুলোর ক্ষেত্রে যে মৌলিক চিন্তা ও মূল্যবোধের উপর নির্ভর করে তার নাম ব্যক্তিতান্ত্রিকতা। ব্যক্তিতান্ত্রিকতা নির্ভর যে কোন ধরনের মানবীয় সম্পর্ক, পরিণতীতে, যৌক্তিক ও প্রকৃতিকভাবেই, চরম দ্বন্দ্ব ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক, ব্যক্তিতান্ত্রিক ও স্বার্থপর হয়ে উঠে। পরস্পর দ্বন্দ্ব ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং ব্যক্তিতান্ত্রিকতা ও স্বার্থপরতা হয় এই সম্পর্কের মূল চালিকা শক্তি। পরস্পর সহযোগিতা ও সহমর্মিতা এবং আত্মত্যাগ ও পরার্থপরতা , এই সম্পর্কগুলোর এলকায় এই শব্দগুলোর কোন অর্থ থাকে না। এই পরিণতি কোন ধরনের মানবীয় সম্পর্কের জন্যই সুখকর নয়। কিন্তু ওহী নির্ভর চিন্তা ও বিচার পদ্ধতিবিচ্যুত পশ্চিম মানুষকে এর চেয়ে ভাল কিছু দিতে সক্ষম নয়। আজ জগৎ জুড়ে নারী-পুরুষের সম্পর্ক যে নির্মম দ্বান্দ্বিকতায় আক্রান্ত হয়ে আছে, তাদের উভয়ের অধিকার ব্যহত হচ্ছে তা মূলত পশ্চিমের ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রাকৃতিক ফলাফল। কারণ পশ্চিমের এই চিন্তা ও সংস্কৃতির আদি বীজ, যে মিথলজি বা পুরাণ, তা মনে করে নারী ও পুরুষ এই দুই লিঙ্গের মাঝে রয়েছে এক আদি দ্বন্দ্ব, এবং নারীই হচ্ছে মানুষের মহা আদি পাপের মূল কারণ। এই মিথলজি অন্য অনেক সভ্যতা ও সংস্কৃতির সাথে সংযুক্ত হতে পারে। কিন্তু ইসলামী শরীয়ত ও মুসলিম সংস্কৃতির সাথে এর আদৌ কোনো সম্পর্ক নেই।
ইসলামী শরীয়তে মানুষকে যে অধিকার দিয়েছে, তার নির্ধারক নারী বা পুরুষ নয়। তার নির্ধারক আল্লাহ তায়ালা, যিনি সব কিছু সম্পর্কে সূক্ষ্ম জ্ঞানের অধিকারী। এরশাদ হয়েছে :
(আরবি)
অর্থাৎ ‘তিনি ঐ সত্ত্বা যিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন এক নফস থেকে অতঃপর তার থেকে সৃষ্টি করেছেন তার সঙ্গিনীকে, যাতে সে তার নিকট প্রশান্তি পায়’- সূরা আ’রাফ (১৮৯)। অনেক মুসলিম সমাজে নারী-পুরুষ পরস্পরের প্রতি অবিচার করছে। ক্ষুণ্ণ হচ্ছে তাদের অধিকার। ইসলামের কোন ত্রুটির কারণে এ রূপ ঘটছে ব্যাপারটিা আদৌ সেরকম নয়। এটা ইসলামের কোন সংকটও নয়। তার কারণ, বরং, সেই সমাজের মুসলমানদের নিজেদের দ্বীন থেকে বিচ্যুতি, ইসলামের বিধানাবলী সম্পর্কে অজ্ঞতা, রবের প্রতি তাদের ঈমানের দুর্বলতা। কিংবা দেখা যাবে সেই সমাজের মুসলমানরা মাবন রচিত কোন বিধান বা শরীয়ত বিরোধী স্থানীয় কোন প্রথা ও সংস্কারের অনুকরণ করার ফলে এই বিপদে আক্রান্ত হয়েছে।
৬. ইসলামের প্রতিষ্ঠার পর থেকেই শুরু হয়েছে মুসলমান ও কাফেরদের লড়াই। আজ ইসলাম ও পাশ্চাত্য সভ্যতার যে লড়াই চলছে তা, সেই অব্যাহত লাড়ইয়েরই ধারাবাহিকতা। এই নিরবধী লড়াইয়ের যে পর্বগুলোতে মুসলমানরা সাময়িকভাবে পরাস্ত হয় এবং কাফেররা তাদের উপর অধিপত্য করতে থাকে, সেই পর্বগুলোতে মুসলমানদের মাঝে উদ্ভব ঘটে নানা ধরনের মুনাফেকীর। যে মুসলানদের মনে অসুস্থতা আছে, ঈমানে দুর্বলতা আছে, তাদের সে অসুস্থতা ও দুর্বলতা উম্মুক্ত হয়ে পড়ে। বেড়ে যায় ইসলামবিরোধী চিন্তা ও বক্তব্যের অনুগত মুসলিম শ্রোতা ও পাঠক। কাফেরদের সাথে সাথে এই মুনাফেক মুসলিম শ্রেণীও ইসলামের শত্রু। তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা ওয়াজিব। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন :
(আরবি)
অর্থাৎ ‘হে নবী আপনি কাফের ও মুনফেকদের সাথে জিহাদ করুন এবং তাদের উপর কঠোর হোন। তাদের ঠিকানা জাহান্নাম। এবং তা খুবই নিকৃষ্ট ঠিকানা’- সূরা তাওবা (৭৩)। আল্লাহ তায়ালা আরো এরশাদ করেন :
(আরবি)
অর্থাৎ ‘তারাই শত্রু। অতএব তাদের ব্যাপারে সতর্ক হও। আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করুন। বিভ্রান্ত হয়ে তারা কোথায় যাচ্ছে’!- সূরা মুনাফিকূন (৪)। এই মুনাফেকরা অধিকাংশ সময় বিভ্রান্তিকর ও প্রতারক ভাষা ব্যবহার করে। তারা বিকৃত ব্যাখ্যা দিয়ে এবং তার মূল লক্ষ্য সম্পর্কে সংশয় তৈরি করে ইসলামী শরীয়তের উদ্ধৃতি দিয়ে আলোচনা করে থাকে। ফলে তাদের ভাষা মুসলমানদের বিভ্রান্ত করে। সুতরাং এই সম্পর্কে মুসলামনদেরকে সতর্ক করা মুসলিম চিন্তাবিদদের একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য। এবং মুসলমানদের মধ্যে বস্ত্তগত ও চিন্তাগত পরাজয়ের প্রভাবে ইসলাম ও তার শরীয়ত ও বিধানের প্রতি যাদের আস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে ইসলাম বিরোধী চিন্তা ও ডিসকোর্সের প্রতি মনযোগ বেড়ে যায় এবং ফলে তাদের মনে নানা সংশয় বিকশিত হয়, তাদেরকে বন্ধুত্বপূর্ণ ভাষায় নসিহত করাও সমান গুরুত্বের দাবি রাখে।
১. যাবতীয় কল্যণ ও সত্যের , পার্থিব ও পরকালীন উভয় ক্ষেত্রে , উৎস হচ্ছে ওহী বা প্রত্যাদেশ অর্থ্যাৎ পবিত্র কোরআন ও হাদীস, জীবনের যাবতীয় সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে এই উৎসতেই ফিরে যেতে হবে, কোন ক্ষেত্রে তার বিরোধিতা করা যাবে না, দৃঢ়ভাবে এই বিশ্বাস ও আস্থা পোষণ করা। কারণ, উম্মাহর সর্বসম্মতিক্রমে, এটা ঈমানের একটি মৌলিক অঙ্গ এবং তার শর্ত। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেছেন :
(আরবি)
অর্থাৎ ‘আপনার রবের কছম তাদের ঈমান আনা হবে না, যদি না তারা তাদের মাঝে বিবদমান বিষয়গুলোতে আপনাকে বিচারক মানে এবং আপনার সিদ্ধান্তকে নিঃসংকোচে ও পূর্ণাঙ্গভাবে মেনে নেয়’- সূরা নিছা (৬৫)। ইসলামী ডিসকোর্সের একটি স্বতঃসিদ্ধ সিদ্ধান্ত হচ্ছে, ‘রবুবিয়্যাত’-এ বিশ্বাস। অর্থাৎ এই বিশ্বাস রাখা যে, ব্যক্তিগত ও সামাজিক তথা গোটা মানবীয় জীবনের যাবতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত ও বিধান দেওয়ার এক মাত্র অধিকার আল্লাহ তায়ালার। স্বতঃসিদ্ধ সিদ্ধান্তের আরেকটি হচ্ছে ‘উলুহিয়্যাত’-এ বিশ্বাস। এ বিশ্বাসের অর্থ সর্ব ক্ষেত্রে একমাত্র আল্লাহকেই বিচারক মানা ও একমাত্র তারই ইবাদত করা।
২. দৃঢ়ভাবে এ-বিশ্বাস রাখা যে, ইসলামী শরীয়ত স্থান ও কাল ভেদে জীবনের সব এলাকায় সফল ও কার্যকর ভূমিকা পালন করতে সক্ষম। এই দ্বীন ও তার যাবতীয় মৌলিক ও আনুষাঙ্গিক বিধানগুলোর প্রতি সম্পূর্ণ আস্থা রাখা এবং বিশ্বাস করা যে, এই দ্বীনের পুরোটাই কল্যাণকর, সুবিচারী এবং মানুষের জন্য এক মহা আশীর্বাদ। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন :
(আরবি)
অর্থাৎ ‘এই কোরআন সঠিকতম পথের নির্দেশনা দেয় এবং সৎকর্মশীল মোমেনদের এই সুসংবাদ দেয় যে, তাদের জন্য রয়েছে মহা প্রতিদান’। সূরা ইছরা (৯)। এই বিশ্বাস ও আস্থা রাখতে হবে কারণ, এই বিধানের উৎস প্রজ্ঞাবান ও সূক্ষ্ম জ্ঞানী আল্লাহ, যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে যার পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান ও প্রজ্ঞা রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন :
(আরবি)
অর্থাৎ ‘তারা কি জাহেলিয়্যাতের বিধান চায় ? যাদের ইয়াক্বীন আছে তাদের জন্য আল্লাহর বিধানের চেয়ে ভাল আর কোন বিধান থাকতে পারে ! - সূরা মাঈদা (৫০)।
সুতরাং যে কোন সিদ্ধান্ত ও অনুশীলনের শুদ্ধতা ও অশুদ্ধতা, সফলতা ও ভ্রষ্টতা নির্ধারণ করতে হবে এই মাপকাঠি দ্বারা এবং এর উপর নির্ভর করেই তার সংশোধন ও সংস্কার করতে হবে, অমুসলিমদের বা অমুসলিম চিন্তা ও সংস্কৃতি প্রভাবিত কোন মুসলমানের চিন্তাপদ্ধতি ও পরিমাপক দ্বারা নয়। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন :
(আরবি)
অর্থাৎ ‘তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন, তারা যেন, আললাহ আপনার নিকট যা নাযিল করেছেন, তার কোন কিছু থেকে আপনাকে বিচ্যুত করতে না পারে’- সূরা মাঈদা (৪৯)।
৩. মূল্যবোধ, বিধান, নানা বিষয়ের ধারণা, বিচারকাঠি, ইত্যাদি বিষয়ের মানব রচিত বিচার পদ্ধতিগুলোর সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে সচেতন থাকা। মানবীয় এই সব চিন্তা ও বিচারপদ্ধতিগুলো, অনেক সময়ই, হাজির হয় ঝলমল মোড়কে। এবং অনেক ক্ষেত্রে তা - স্বীকার করতে দ্বিধা নেই- পূর্ণ বা খন্ডিত সত্য ধারণ করতে পারে। কারণ নানা ভ্রষ্টতা সত্ত্বেও, বিচার-বিবেচনা ও সত্য চেনার ক্ষেত্রে মানুষের যে আদি-জন্মগত স্বভাব, মানুষের মাঝে সব সময় তার কিছু অবশিষ্ট থেকে যায়। সেই আদি ফিতরতের বলে বা বিশুদ্ধ-নিখাদ বুদ্ধি-যুক্তি দ্বারা মানুষ তার রচিত চিন্তা ও বিচার পদ্ধতিতে অনেক সময় সত্যকে পেতে সফল হয়। কিন্তু সচেতন থাকতে হবে, সব কিছুর পরও এই মেথডলজি সীমাবদ্ধ এবং আল্লাহ প্রদত্ব পদ্ধতির মত সর্বদিকে সুসঙ্গত নয়। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন :
(আরবি)
অর্থাৎ ‘যদি তা আল্লাহ ভিন্ন অন্য কারো পক্ষ থেকে হত তবে তাতে অনেক অসঙ্গতি পেত’- সূরা নিছা (৮২)।
মানুষ,মুসলমান কাফের নির্বিশেষে, আজ যে সব অনিষ্ট-অকল্যাণে আক্রান্ত হয়ে আছে তার কারণ এই সঠিক আল্লাহ প্রদত্ব উৎস থেকে বিচারপদ্ধতিগুলোর বিচ্যুতি। এই সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন :
(আরবি)
অর্থাৎ ‘মানুষের নিজেদের কর্মের ফলেই জলে-স্থলে ফাসাদ ছড়িয়ে পড়েছে’। সূরা রোম (২১)। আল্লাহ আরো এরশাদ করেন :
(আরবি)
অর্থাৎ ‘ যদি আসমান ও জমিনে আল্লাহ ছাড়া অন্য আরো ইলাহ থাকত তাহলে তা ধ্বংস হয়ে যেত। সুতরাং তারা যা বলে আরশের রব তা থেকে পবিত্র’- সূরা আম্বিয়া (২২)।
৪. ইসলাম ধর্ম ন্যায় ও ইনসাফের ধর্ম,এই বিশ্বাস জাগরূক রাখা। আর ন্যায়পরায়নতা মানে সমমানের দুটি বিষয়ের মাঝে সমতা রক্ষা করা এবং অসম বিষয়গুলোর জন্য নিজ নিজ অবস্থা অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন মান নির্ধারণ করা। ইসলাম নিঃশর্ত সমতা-সাম্যের ধর্ম, এই ধারণা ভুল। নিঃশর্ত সাম্যের ধারণা অনেক ক্ষেত্রে দুটি ভিন্ন মানের বিষয়কে সমমান দান করে, যা মূলত জুলুম ও অবিচার। তবে যারা ইসলাম সাম্যের ধর্ম বলতে, ইসলাম ন্যায়পরায়নতার ধর্ম বুঝাতে চান, তারা ধারণাগতভাবে সঠিক। কিন্তু তাদের ভাষাটি ভুল। কোরআন কোথাও নিঃশর্ত সাম্যের আদেশ করে নি। কোরআন, বরং, সব জায়গায় ন্যায়পরায়নতার নির্দেশ দিয়েছে। যেমন আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন :
(আরবি)
অর্থাৎ ‘আল্লাহ ন্যায়পরায়নতা ও এহছান (সর্বত্তোম উপায় অবলম্বন) এর আদেশ দেন’- সূরা নাহাল (৯০)। শরীয়তের বিধানগুলোর ভিত্তি হচ্ছে ন্যয়পরয়ানতা। সুতরাং সমতা রক্ষায় যেখানে ন্যায়বিচার হয় সেখানে শরীয়ত সাম্য রক্ষা করে আর যেখানে ভিন্নতা-তারতম্য করাই হয় ইনসাফের দাবি সেখানে
শরীয়ত তারতম্য করে। ইসলামে নিঃশর্ত সমতার কোন ধারণা নেই। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন :
(আরবি)
অর্থাৎ ‘আপনার রবের কালিমা পূর্ণ সত্য ও ইনসাফপূর্ণ। তার বাণীতে কেউ পরিবর্তন করতে পারে না। তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ’- সূরা আনআ’ম (১১৫)। অর্থাৎ আল্লাহর কালিমা সত্য সংবাদ দান করে এবং ইনসাফপূর্ণ বিধান দেয়। তাই ইসলাম মানবীয় জীবন ও মানবীয় সম্পর্কগুলোকে যে এককের উপর প্রতিষ্ঠিত করতে চায় তা ‘ইনসাফ’। সবাইকে ইনসাফ করতে হবে, সবার সাথে এবং সর্বাবস্থায়। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন :
(আরবি)
অর্থাৎ ‘কোন সম্প্রদায়ের শত্রুতা যেন তোমাদের অন্যায় করতে বাধ্য না করে। ইনসাফ করে যাও। কারণ সেটাই তাক্বওয়ার সবচেয়ে নিকটবর্তী’- সূরা মাঈদা (৮)।
৫. আধুনিক ‘জাহেলিয়্যাত’-এর নাম পশ্চিম। সমকালীন এই জাহেলিয়্যাত মানবীয় সম্পর্কগুলোর ক্ষেত্রে যে মৌলিক চিন্তা ও মূল্যবোধের উপর নির্ভর করে তার নাম ব্যক্তিতান্ত্রিকতা। ব্যক্তিতান্ত্রিকতা নির্ভর যে কোন ধরনের মানবীয় সম্পর্ক, পরিণতীতে, যৌক্তিক ও প্রকৃতিকভাবেই, চরম দ্বন্দ্ব ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক, ব্যক্তিতান্ত্রিক ও স্বার্থপর হয়ে উঠে। পরস্পর দ্বন্দ্ব ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং ব্যক্তিতান্ত্রিকতা ও স্বার্থপরতা হয় এই সম্পর্কের মূল চালিকা শক্তি। পরস্পর সহযোগিতা ও সহমর্মিতা এবং আত্মত্যাগ ও পরার্থপরতা , এই সম্পর্কগুলোর এলকায় এই শব্দগুলোর কোন অর্থ থাকে না। এই পরিণতি কোন ধরনের মানবীয় সম্পর্কের জন্যই সুখকর নয়। কিন্তু ওহী নির্ভর চিন্তা ও বিচার পদ্ধতিবিচ্যুত পশ্চিম মানুষকে এর চেয়ে ভাল কিছু দিতে সক্ষম নয়। আজ জগৎ জুড়ে নারী-পুরুষের সম্পর্ক যে নির্মম দ্বান্দ্বিকতায় আক্রান্ত হয়ে আছে, তাদের উভয়ের অধিকার ব্যহত হচ্ছে তা মূলত পশ্চিমের ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রাকৃতিক ফলাফল। কারণ পশ্চিমের এই চিন্তা ও সংস্কৃতির আদি বীজ, যে মিথলজি বা পুরাণ, তা মনে করে নারী ও পুরুষ এই দুই লিঙ্গের মাঝে রয়েছে এক আদি দ্বন্দ্ব, এবং নারীই হচ্ছে মানুষের মহা আদি পাপের মূল কারণ। এই মিথলজি অন্য অনেক সভ্যতা ও সংস্কৃতির সাথে সংযুক্ত হতে পারে। কিন্তু ইসলামী শরীয়ত ও মুসলিম সংস্কৃতির সাথে এর আদৌ কোনো সম্পর্ক নেই।
ইসলামী শরীয়তে মানুষকে যে অধিকার দিয়েছে, তার নির্ধারক নারী বা পুরুষ নয়। তার নির্ধারক আল্লাহ তায়ালা, যিনি সব কিছু সম্পর্কে সূক্ষ্ম জ্ঞানের অধিকারী। এরশাদ হয়েছে :
(আরবি)
অর্থাৎ ‘তিনি ঐ সত্ত্বা যিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন এক নফস থেকে অতঃপর তার থেকে সৃষ্টি করেছেন তার সঙ্গিনীকে, যাতে সে তার নিকট প্রশান্তি পায়’- সূরা আ’রাফ (১৮৯)। অনেক মুসলিম সমাজে নারী-পুরুষ পরস্পরের প্রতি অবিচার করছে। ক্ষুণ্ণ হচ্ছে তাদের অধিকার। ইসলামের কোন ত্রুটির কারণে এ রূপ ঘটছে ব্যাপারটিা আদৌ সেরকম নয়। এটা ইসলামের কোন সংকটও নয়। তার কারণ, বরং, সেই সমাজের মুসলমানদের নিজেদের দ্বীন থেকে বিচ্যুতি, ইসলামের বিধানাবলী সম্পর্কে অজ্ঞতা, রবের প্রতি তাদের ঈমানের দুর্বলতা। কিংবা দেখা যাবে সেই সমাজের মুসলমানরা মাবন রচিত কোন বিধান বা শরীয়ত বিরোধী স্থানীয় কোন প্রথা ও সংস্কারের অনুকরণ করার ফলে এই বিপদে আক্রান্ত হয়েছে।
৬. ইসলামের প্রতিষ্ঠার পর থেকেই শুরু হয়েছে মুসলমান ও কাফেরদের লড়াই। আজ ইসলাম ও পাশ্চাত্য সভ্যতার যে লড়াই চলছে তা, সেই অব্যাহত লাড়ইয়েরই ধারাবাহিকতা। এই নিরবধী লড়াইয়ের যে পর্বগুলোতে মুসলমানরা সাময়িকভাবে পরাস্ত হয় এবং কাফেররা তাদের উপর অধিপত্য করতে থাকে, সেই পর্বগুলোতে মুসলমানদের মাঝে উদ্ভব ঘটে নানা ধরনের মুনাফেকীর। যে মুসলানদের মনে অসুস্থতা আছে, ঈমানে দুর্বলতা আছে, তাদের সে অসুস্থতা ও দুর্বলতা উম্মুক্ত হয়ে পড়ে। বেড়ে যায় ইসলামবিরোধী চিন্তা ও বক্তব্যের অনুগত মুসলিম শ্রোতা ও পাঠক। কাফেরদের সাথে সাথে এই মুনাফেক মুসলিম শ্রেণীও ইসলামের শত্রু। তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা ওয়াজিব। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন :
(আরবি)
অর্থাৎ ‘হে নবী আপনি কাফের ও মুনফেকদের সাথে জিহাদ করুন এবং তাদের উপর কঠোর হোন। তাদের ঠিকানা জাহান্নাম। এবং তা খুবই নিকৃষ্ট ঠিকানা’- সূরা তাওবা (৭৩)। আল্লাহ তায়ালা আরো এরশাদ করেন :
(আরবি)
অর্থাৎ ‘তারাই শত্রু। অতএব তাদের ব্যাপারে সতর্ক হও। আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করুন। বিভ্রান্ত হয়ে তারা কোথায় যাচ্ছে’!- সূরা মুনাফিকূন (৪)। এই মুনাফেকরা অধিকাংশ সময় বিভ্রান্তিকর ও প্রতারক ভাষা ব্যবহার করে। তারা বিকৃত ব্যাখ্যা দিয়ে এবং তার মূল লক্ষ্য সম্পর্কে সংশয় তৈরি করে ইসলামী শরীয়তের উদ্ধৃতি দিয়ে আলোচনা করে থাকে। ফলে তাদের ভাষা মুসলমানদের বিভ্রান্ত করে। সুতরাং এই সম্পর্কে মুসলামনদেরকে সতর্ক করা মুসলিম চিন্তাবিদদের একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য। এবং মুসলমানদের মধ্যে বস্ত্তগত ও চিন্তাগত পরাজয়ের প্রভাবে ইসলাম ও তার শরীয়ত ও বিধানের প্রতি যাদের আস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে ইসলাম বিরোধী চিন্তা ও ডিসকোর্সের প্রতি মনযোগ বেড়ে যায় এবং ফলে তাদের মনে নানা সংশয় বিকশিত হয়, তাদেরকে বন্ধুত্বপূর্ণ ভাষায় নসিহত করাও সমান গুরুত্বের দাবি রাখে।
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন