HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

প্রকৃতি ও শরীয়ত স্বীকৃত অধিকার

লেখকঃ শাইখ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল উসাইমিন রহ.

১১
নয়: সাধারণ মুসলিমদের অধিকার
এই অধিকারসমূহ অসংখ্য। তার মধ্যে এমন কিছু অধিকার রয়েছে যা বিশুদ্ধ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :

«حَقُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ سِتٌّ» قِيلَ : مَا هُنَّ يَا رَسُولَ اللهِ؟، قَالَ : «إِذَا لَقِيتَهُ فَسَلِّمْ عَلَيْهِ، وَإِذَا دَعَاكَ فَأَجِبْهُ، وَإِذَا اسْتَنْصَحَكَ فَانْصَحْ لَهُ، وَإِذَا عَطَسَ فَحَمِدَ اللهَ فَسَمِّتْهُ، وَإِذَا مَرِضَ فَعُدْهُ وَإِذَا مَاتَ فَاتَّبِعْهُ»

‘একজন মুসলিমের ওপর অন্য একজন মুসলিমের ৬টি অধিকার রয়েছে। যখন সে তার সাথে সাক্ষাৎ করবে তখন তাকে সালাম করবে। যখন সে তাকে দাওয়াত দেবে, তখন সে তার দাওয়াতে সাড়া দেবে। যখন সে তার নিকট উপদেশ চাইবে, তখন তাকে উপদেশ দান করবে, যখন সে হাঁচি দিবে তখন সে ‘ইয়ারহামু কাল্লাহ’ বলবে, যখন সে রোগাক্রান্ত হবে তখন তাকে দেখতে যাবে, আর যখন সে মৃত্যুবরণ করবে তখন তাকে দাফন করতে এগিয়ে যাবে [মুসলিম, ২১৬২।]।’

আলোচ্য হাদীসে মুসলিমদের মধ্যকার পারস্পরিক অধিকার সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

এর মধ্যে প্রথম অধিকারটি হলো: সালাম বিনিময়। সালাম হচ্ছে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। এছাড়া মুসলিমদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা এবং বন্ধুত্ব সৃষ্টিরও একটি কারণ হচ্ছে সালাম; যা স্পষ্টভাবে দেখা যায়। আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী থেকেও স্পষ্ট, যেখানে তিনি বলেছেন,

«لَا تَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ حَتَّى تُؤْمِنُوا، وَلَا تُؤْمِنُوا حَتَّى تَحَابُّوا، أَوَلَا أَدُلُّكُمْ عَلَى شَيْءٍ إِذَا فَعَلْتُمُوهُ تَحَابَبْتُمْ؟ أَفْشُوا السَّلَامَ بَيْنَكُمْ»

‘আল্লাহ্‌র কসম ! তোমরা মুমিন না হওয়া পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেনা এবং পরস্পর পরস্পরকে ভালো না বাসা পর্যন্ত মুমিনও হতে পারবে না। আমি কি লোকদিগকে এমন একটি কাজ সম্পর্কে খবর দিব না যে কাজটি করলে তোমাদের পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা জাগ্রত হতে পারে। আর সেই কাজটি হচ্ছে তোমাদের পরস্পরের মধে সালাম বিনিময় [মুসলিম, ৫৪।]।’

রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো যখনই কারো সাথে সাক্ষাৎ করতেন তখন তিনিই তাকে প্রথমে সালাম করতেন। এমনকি ছেলে-মেয়েদের নিকট দিয়ে যাবার সময়ও তিনি তাদেরকে সালাম করতেন। তবে সুন্নাত হচ্ছে যে, ছোট বড়কে সালাম করবে এবং কম সংখ্যক লোক বেশী সংখ্যক লোককে সালাম করবে এবং আরোহী ব্যক্তি পায়দলে চলাচলকারীকে সালাম করবে।

কিন্তু যখন এ সুন্নাতের অনুসরণ করা না হয় যা উত্তম পন্থা, তাহলে দ্বিতীয় পন্থাই অবলম্বন করা প্রয়োজন। সুতরাং যদি ছোট সালাম না দেয়; তা হলে বড়রা সালাম দেবে এবং অল্প সংখ্যক লোক যদি সালাম না দেয় তাহলে বেশী সংখ্যক লোকই সালাম দিবে যাতে সালাম নষ্ট না হয়।

‘আম্মার ইবন ইয়াসার থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন :

" ثَلاَثٌ مَنْ جَمَعَهُنَّ فَقَدْ جَمَعَ الإِيمَانَ : الإِنْصَافُ مِنْ نَفْسِكَ، وَبَذْلُ السَّلاَمِ لِلْعَالَمِ، وَالإِنْفَاقُ مِنَ الإِقْتَارِ "

‘যার মধ্যে এই তিনটি গুণ পাওয়া যাবে তার ঈমান পূর্ণতা লাভ করেছে। তিনটি গুণ হলো এই নিজের থেকেই ইনসাফ করা, সালাম প্রদান করা এবং দারিদ্র সত্ত্বেও আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করা [বুখারী। তা‘লীক করে। ১/১৫।]।’

সালাম দেওয়া যদিও সুন্নাত কিন্তু সালামের জবাব প্রদান করা ফরযে কেফায়া। যদি কেউ দলের পক্ষ থেকে সালাম দেয়, তবে তা অন্যদের থেকে যথেষ্ট হয়ে যায়। আবার কোনো ব্যক্তি যদি একদল লোকের ওপর সালাম করে এবং তাদের একজন তার জবাব দেয়, তা হলে সকলের পক্ষ থেকেই তা আদায় হয়ে যায়।

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿ وَإِذَا حُيِّيتُم بِتَحِيَّةٖ فَحَيُّواْ بِأَحۡسَنَ مِنۡهَآ أَوۡ رُدُّوهَآۗ ﴾ [ النساء : ٨٦ ]

‘যখন তোমাদেরকে অভিবাদন করা হবে, তখন তোমরাও তাদেরকে উত্তমরূপে অভিবাদন কর অথবা তাদের অভিবাদনের জবাবা দাও।’ [সূরা আন-নিসা: ৮৬]

সালামের জবাবে শুধু আহলান সাহলান (শুভাগমন, ওয়েলকাম) এই কথা বলাই যথেষ্ট নয়। কেননা তাতো সালামের চেয়ে উত্তম কিছু নয়, আর না সালামের অনুরূপ। অতএব যখন বলা হবে ‘আসসালামু আলাইকুম’ তখন তার উত্তরে ‘ওয়া আলাইকুমুস সালাম’ বলা প্রয়োজন, আর যখন শুভাগমন তথা আহলান সাহলান বলা হবে, তখন তাঁর জবাবে অনুরূপ শুভাগমন বলাই শ্রেয়। আর যদি তার সাথে সালাম বা সম্ভাষণ যোগ করা হয়, তা হলে তাই উত্তম।

দ্বিতীয় অধিকার : যখন তোমাকে নিমন্ত্রণ করা হবে, তখন তুমি অবশ্যই তার সে নিমন্ত্রণে সাড়া দেবে। অর্থাৎ যখন তোমাকে কারো বাড়ীতে যাবার জন্য অথবা অন্য কোনো কারণে দাওয়াত করা হবে তখন তুমি তার ডাকে অবশ্যই সাড়া দিবে। দাওয়াতে সাড়া দেওয়া সুন্নাতে মোয়াক্কাদা। কেননা, এর মধ্যে নিমন্ত্রণকারীর অন্তরে ভালোবাসা ও অন্তরের টান রয়েছে। কিন্তু বিয়ের অলিমার দাওয়াত এর থেকে স্বতন্ত্র। কারণ, অলিমার দাওয়াতে সাড়া দেওয়া কিছু শর্তানুসারে ওয়াজিব। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«وَمَنْ لَمْ يُجِبِ الدَّعْوَةَ، فَقَدْ عَصَى اللهَ وَرَسُولَهُ»

‘আর যে কেউ অলিমার দাওয়াতে সাড়া না দিবে, সে আল্লাহ ও তার রাসূলের অবাধ্যতা অবলম্বন করল’ [বুখারী, ৫১৭৭; মুসলিম, ১৪৩২।]।

তাছাড়া রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী, “যখন তোমাকে ডাকবে তখন তুমি তার ডাকে সাড়া দিবে” এর মধ্যে আরও অন্তর্ভুক্ত হবে, সাহায্য-সহযোগিতার জন্য ডাকলে তাতে সাড়া দেওয়া, কোনো বোঝা উঠিয়ে দিতে ডাকলে, বা কোনো বোঝা নামাতে সহযোগিতা চাইলে তাতে সহযোগিতা করাও এর অন্তর্ভুক্ত। কারণ, রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«إِنَّ المُؤْمِنَ لِلْمُؤْمِنِ كَالْبُنْيَانِ يَشُدُّ بَعْضُهُ بَعْضًا»

‘একজন মুমিন আর একজন মুমিনের জন্য ইমারতের ভিত্তি স্বরূপ-যার কোনো অংশ অন্য অংশকে মজবুত করে থাকে [বুখারী, ৪৮১; মুসলিম, ২৫৮৫।]।’

তৃতীয় অধিকার : যখন সে তোমার নিকট সদুপদেশ প্রার্থনা করবে তখন তাকে তুমি সদুপদেশ দিবে। অর্থাৎ যখন কোনো লোক তোমার নিকট কোনো ব্যাপারে নসিহতের উদ্দেশ্যে আসে তখন তাকে অবশ্যই নসিহত বা সদুপদেশ প্রদান করবে। কেননা এটা দ্বীনের একটা অংশ বিশেষ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«الدِّينُ النَّصِيحَةُ» قُلْنَا : لِمَنْ؟ قَالَ : «لِلَّهِ وَلِكِتَابِهِ وَلِرَسُولِهِ وَلِأَئِمَّةِ الْمُسْلِمِينَ وَعَامَّتِهِمْ»

‘দ্বীন হচ্ছে সদুপদেশ দান। আমরা বললাম, কার জন্য? তিনি বললেন, আল্লাহর জন্য, তাঁর কিতাবের জন্য, তাঁর রাসূলের জন্য, মুসলিমদের ইমামদের জন্য এবং সর্বসাধারণের জন্য’ [মুসলিম, ৫৫।]।

আর যদি সে তোমার নিকট সদুপদেশ প্রার্থনা করতে না আসে এবং তার কোনো অসুবিধা ও দোষ ত্রুটি থাকে তাহলে তোমার কর্তব্য হচ্ছে তার নিকট গিয়ে তাকে সদুপদেশ দান করা। কারণ তার মাধ্যমে তুমি মুসলিমদের থেকে ক্ষতি ও অন্যায় নিরোধ করলে। আর যদি সে যা করবে তাতে কোনো ক্ষতি বা গোনাহ না থাকে, আর তোমার মনে হচ্ছে যে অন্য কাজটি তার জন্য বেশি উপকারী হত, তবে সে ক্ষেত্রে তোমার জন্য তাকে নসীহত করা ওয়াজিব নয়; যদি না তোমার কাছে নসীহত চাওয়া হয়ে থাকে। যদি তাতে নসীহত চাওয়া হয়, তবে নসীহত আবশ্যক হয়ে পড়ে।

চতুর্থ অধিকার : যখন কোনো লোক হাঁচি দেয় এবং বলে ‘আল হামদু লিল্লাহ’ তখন তুমি এই দোয়াটি পাঠ করবে ‘‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ বা আল্লাহ তোমার উপর রহম করুন। ‘‘হাচি দেওয়ার সময় সে যে ‘আলহামদু লিল্লাহ’ বলে আল্লাহর প্রশংসা আদায় করেছে তার প্রতি কৃতজ্ঞতাস্বরূপই এই কথা বলতে হবে। আর হাঁচি দেওয়ার সময় সে যদি ‘আল হামদুলিল্লাহ’ না বলে, তা হলে তার এরূপ না বলার কারণেই শ্রবণ কারীর ওপর অনুরূপ দোয়ার ব্যাপারটি বর্তায় না।

আর হাচি দেওয়ার পর যদি উক্ত ব্যক্তি ‘আল হামদুলিল্লাহ’ বলে তা হলে শ্রবণকারীর জন্য অবশ্য কর্তব্য হবে তার উত্তরে তার প্রতি রহমতের দো‘আ করা। আর সেটা শোনার পর হাঁচিদাতা এই ভাবে দো‘আ করবে, ‘ইয়াহদীকুমুল্লাহু ওয়া ইয়ুসলিহু বালাকুম’ বা ‘আল্লাহ তোমাকে সৎপথ প্রদর্শন করুন এবং তোমার হাল অবস্থার পরিশুদ্ধি ঘটান।’

আর যদি কেউ হাঁচি দেয় এবং ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলা হয়, আর তার জবাবে ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ বলা হয়, আর তা তিনবার পরপর হয়, তখন যদি চতুর্থবারেও কেউ হাঁচি দেয়, তখন তার জওয়াবে বলতে হবে, ‘আফাকাল্লাহ’ (আল্লাহ তোমাকে রোগমুক্ত করুন)। সেখানে ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ বলা হবে না।

পঞ্চম অধিকার : যখন কোনো লোক অসুস্থ বা রুগ্ন হয়ে পড়বে, তখন তাকে দেখতে যাবে। অসুস্থ বা রোগাক্রান্ত ব্যক্তিকে তার মুসলিম ভাইগণ দেখতে যাবে এটা তার অধিকার। কাজেই মুসলিম ভাইগণ দেখতে যাবে এটা তার অধিকার। কাজেই মুসলিম ভাইদের উচিত এই অধিকারটিকে প্রতিষ্ঠিত করা। আত্মীয়, সংগী-সাথী অথবা প্রতিবেশী যার সাথে যে রকম সম্পর্ক সেটা অনুসারে তাকে দেখতে যাওয়ার গুরুত্ব নির্ধারিত হবে।

আর তুমি রুগ্ন ব্যক্তিকে দেখতে যাবে এটা তার অধিকার। তবে এই দেখতে যাওয়াটা হচ্ছে রোগী ও তার রোগের অবস্থার সাথে সম্পৃক্ত। কোনো সময় এমন হয় যে, তার অবস্থা খুবই সঙ্গীন তখন তার জন্য বেশী বেশী পেরেশান হতে হয়। আর কোনো সময় অতোটা না হলেও চলে। সুতরাং প্রত্যেক অবস্থায় সে অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া জরূরী।

রোগী দেখার সুন্নাত নিয়ম হচ্ছে, তার অবস্থা সম্পর্কে খোজ-খবর নেওয়া, তার জন্য দো‘আ করা এবং তার জন্য আশা ও প্রশস্তি মূলক কথা-বার্তা বলা। কেননা সেটা সুস্বাস্থ্য ও রোগমুক্তির অন্যতম কারণ হতে পারে। আর তার জন্য উচিত হবে রুগ্ন ব্যক্তিকে কোনো রূপ ভীতি প্রদর্শন না করে তাওবার কথা স্বরণ করিয়ে দেওয়া। যেমন তাকে এভাবে সদুপদেশ দেবে : ‘তোমার যে অসুখ হয়েছে, এটা তোমার মঙ্গলের জন্যই হয়েছে। কারণ রোগ মানুষের যাবতীয় পাপ মোচন করে ফেলে এবং তার মন্দ স্বভাবগুলো নিশ্চি‎হ্ন করে দেয়। কাজেই এই অবস্থায় তুমি বেশি বেশি আল্লাহর যিকর ও মাগফিরাত কামনা কর এবং এভাবেই আল্লাহর কাছে দোয়া করার মাধ্যমে অনেক পূর্ণ অর্জন করতে পার।’

ষষ্ঠ অধিকার : যখন কোনো লোক মারা যাবে, তখন তার জানাযায় ও দাফন কাফনে অংশ গ্রহণ করবে। যখন কোনো একজন মুসলিম ভাই মারা যায় তখন তার জানাজায় অংশগ্রহণ করা এটা তার অধিকার এবং এতে অনেক পূণ্যও রয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«مَنْ شَهِدَ جَنَازَةً حَتَّى يُصَلَّى عَلَيْهَا فَلَهُ قِيرَاطٌ، وَمَنْ شَهِدَ حَتَّى تُدْفَنَ فَلَهُ قِيرَاطَانِ»، قِيلَ : وَمَا الْقِيرَاطَانِ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ : «مِثْلُ الْجَبَلَيْنِ الْعَظِيمَيْنِ»

‘যে ব্যক্তি জানাযা অনুসরণ করল এবং জানাযার নামাজ আদায় করল তার জন্য এক কিরাত সওয়াব এবং যে ব্যক্তি জানাযার অনুসরণ করল এবং দাফন কার্যেও শরীক হলো তার জন্য দু’ কিরাত সওয়াব। সাহাবাদের মধ্য থেকে কোনো একজন জিজ্ঞাসা করল : হে আল্লাহর নবী ! দুই কিরাত এই কথার অর্থ কি ? তখন তিনি বললেন, তা হচ্ছে দুটি বিশাল পর্বতের সমতুল্য [নাসায়ী, ১৯৯৫। শাইখের ব্যবহৃত শব্দ পুরোপুরি কোথাও পাই নি, তবে কয়েকটি হাদীসে তা এসেছে। সেজন্য আমি সবচেয়ে কাছাকাছি শব্দটি নাসায়ী থেকে গ্রহণ করেছি। [সম্পাদক]]।’

একজন মুসলিমের ওপর আরেকজন মুসলিমের অধিকারসমূহের মধ্যে আরও হচ্ছে, সে তাকে দু:খ-কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকবে। কেননা কোনো মুসলিমকে দুঃখ দেওয়া বড়ই অন্যায় কাজ।

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿ وَٱلَّذِينَ يُؤۡذُونَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ وَٱلۡمُؤۡمِنَٰتِ بِغَيۡرِ مَا ٱكۡتَسَبُواْ فَقَدِ ٱحۡتَمَلُواْ بُهۡتَٰنٗا وَإِثۡمٗا مُّبِينٗا ٥٨ ﴾ [ الاحزاب : ٥٨ ]

‘যারা মুমিন পুরুষ ও মুমিন স্ত্রীলোকদের বিনা কারণে কষ্ট দেয় তারা নিশ্চয় নিজেদের ঘরে একটি অপবাদ ও পরিষ্কার গুনাহ চাপিয়ে নিল।’ [সূরা আল-আহযাব: ৫৮]

আর অধিকন্তু যে তার ভাইকে কষ্ট দেয় আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়া ও আখেরাতে তার প্রতিশোধ নিয়ে থাকেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :

«َلَا تَبَاغَضُوا، وَلَا تَدَابَرُوا، ... وَكُونُوا عِبَادَ اللهِ إِخْوَانًا الْمُسْلِمُ أَخُو الْمُسْلِمِ، لَا يَظْلِمُهُ وَلَا يَخْذُلُهُ، وَلَا يَحْقِرُهُ» ... «بِحَسْبِ امْرِئٍ مِنَ الشَّرِّ أَنْ يَحْقِرَ أَخَاهُ الْمُسْلِمَ، كُلُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ حَرَامٌ، دَمُهُ، وَمَالُهُ، وَعِرْضُهُ»

‘তোমরা পরস্পর পরস্পরের প্রতি ক্রোধাম্বিত হয়ো না এবং পরস্পর পরস্পরের পিছনে লেগো না, বরং তোমরা ‘ভাই ভাই হয়ে আল্লাহর বান্দা হিসেবে জীবন যাপন কর। একজন মুসলিম আরেক জন মুসলিমের ভাই। সে তার প্রতি জুলুম করতে পারে না। তাকে অপমান করতে পারে না ( তাকে বিপদে ছেড়ে যেতে পারে না)। তাকে তুচ্ছজ্ঞান করতে পারে না। একজন মুসলিম খারাপ হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে সে তার মুসলিম ভাইকে অপমান করবে। প্রতিটি মুসলিমের ওপর অন্য মুসলিমের রক্ত, সম্পদ, সম্মান প্রভৃতি হারাম করে দেয়া হয়েছে [মুসলিম, ২৫৬৪।]।’

মোটকথা, একজন মুসলিমের ওপর অন্য একজন মুসলিমের অধিকার অনেক। সম্ভবত এর সার্বিক অর্থেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : ‘একজন মুসলিম অন্য মুসলিমের ভাই।’ অতএব, যখন সে এই ভ্রাতৃত্ব রক্ষার জন্য প্রস্তুত হবে, তখন সে চাইবে কি করে তার সামগ্রিক ব্যাপারে মংগল হতে পারে এবং সে তার জন্য পীড়াদায়ক জিনিসগুলো থেকে দূরে থাকবে।’

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন