HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
প্রকৃতি ও শরীয়ত স্বীকৃত অধিকার
লেখকঃ শাইখ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল উসাইমিন রহ.
৭
পাঁচ : আত্মীয় স্বজনের অধিকারসে সব নিকটতম ব্যক্তি যারা আমাদের সাথে আত্মীয়তার সূত্রে আবদ্ধ যথা ভাই-বোন, চাচা-মামা এবং তাদের ছেলে মেয়ে এবং তাদের ছাড়াও অন্য লোক যারা আত্মীয়তা সূত্রে আমাদের সাথে সংশ্লিষ্ট আমাদের উপর নিকটতম অনুসারে তাদের প্রত্যেকের অধিকার রয়েছে। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿ وَءَاتِ ذَا ٱلۡقُرۡبَىٰ حَقَّهُۥ﴾ [ الاسراء : ٢٦ ]
‘এবং নিকট আত্মীয়ের অধিকার আদায় কর।’ [সূরা বনী ইসরাইল: ২৬]
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন :
﴿ ۞وَٱعۡبُدُواْ ٱللَّهَ وَلَا تُشۡرِكُواْ بِهِۦ شَيۡٔٗاۖ وَبِٱلۡوَٰلِدَيۡنِ إِحۡسَٰنٗا وَبِذِي ٱلۡقُرۡبَىٰ﴾ [ النساء : ٣٦ ]
‘আর আল্লাহর বন্দেগী কর এবং তার সাথে কাউকে শরীক করো না, এ ছাড়া মাতা-পিতার সাথেও উত্তম আচরণ কর, আর উত্তম আচরণ কর নিকটাত্মীয়ের সাথে।’ [সূরা আন-নিসা: ৩৬]
সুতরাং প্রত্যেক লোকেরই উচিত, সে যেন তার নিকটাত্মীয়ের সাথে উত্তম ব্যবহার করে। এ উত্তম আচরণ বিভিন্ন পন্থায় হতে পারে। অর্থাৎ আত্মীয়ের প্রয়োজনের প্রেক্ষিতে ধন-সম্পদের মাধ্যমে এবং শারীরিক শক্তি সামর্থের দ্বারা তথা যে কোনো উত্তম পন্থায়। মানুষের বুদ্ধি বৃত্তি, প্রকৃতি এবং শরীয়াতের দাবীও এটাই!
আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার ব্যাপারে পবিত্র কুরআন এবং হাদিসেও বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। বিশেষ করে নিকটাত্মীয়ের অধিকার রক্ষার ব্যাপারে লোকদের উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বুখারী ও মুসলিমে এসেছে, আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা সমগ্র সৃষ্টির কাজ সম্পন্ন করে যখন নিষ্ক্রান্ত হলেন, তখন ‘বংশসম্পর্ক’ দাড়িয়ে বলল : আপনার নিকট সম্পর্কচ্ছেদ হতে রক্ষা প্রার্থীর এটাই উত্তম স্থান। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা বললেন : ‘তুমি কি সন্তষ্ট নও যে, যে ব্যক্তি তোমারাসথে সম্পর্ক রক্ষা করবে আমিও তার সাথে সম্পর্ক রক্ষা করব, আর যে ব্যক্তি তোমার সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করবে আমিও তার সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করব। অতঃপর সে বলল, অবশ্যই-হ্যাঁ, তিনি বললেন, তবে তাই হোক। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা (আমার কথার সমর্থনে) ইচ্ছা হলে পড়তে পার, (আল্লাহ তা‘আলার বাণী)
﴿ فَهَلۡ عَسَيۡتُمۡ إِن تَوَلَّيۡتُمۡ أَن تُفۡسِدُواْ فِي ٱلۡأَرۡضِ وَتُقَطِّعُوٓاْ أَرۡحَامَكُمۡ ٢٢ أُوْلَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ لَعَنَهُمُ ٱللَّهُ فَأَصَمَّهُمۡ وَأَعۡمَىٰٓ أَبۡصَٰرَهُمۡ ٢٣ ﴾ [ محمد : ٢٢، ٢٣ ]
‘তোমরা শীঘ্রই এ থেকে ফিরে যাবে এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে ও আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করবে। আর যারা এরূপ করবে তাদের ওপরই আল্লাহর অভিশম্পাত বর্ষিত হবে। আর এ ধরণের লোকদেরকেই বধির এবং অন্ধ করে দেওয়া হবে।’ [সূরা মুহাম্মাদ: ২২-২৩]
তাছাড়া রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং আখেরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে সে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে চলে।’ [বুখারী, ৬১৩৮]
অধিকাংশ লোকই এই অধিকারটিকে নস্যাৎ করে দিচ্ছে এবং এর প্রতি বিশেষ অবহেলা প্রদর্শন করছে। এদের মধ্যে এমন লোকের দৃষ্টান্ত বিরল নয়, যে তার আত্মীয় স্বজনের কোনো পরিচয়ই রাখে না। এমনকি কোনো প্রকার সম্পদ ব্যয় করে অথবা ব্যক্তিগত সদ্ভাব রক্ষা করে আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে না। এ ধরণের লোকও আেমাদের সমাজে বিরল নয় যে, দিনের পর দিন, মাসের পর মাস এবং বছরের পর বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও অনেকে আত্মীয় স্বজনের খবর নেয় না, তাদের সাথে দেখা সাক্ষাতের কোন ধার ধারে না। না সুখে সম্পদে তাদের নিকট কোনো উপঢোকন প্রেরণ করে আর না তাদের দুঃখের দিনে অথবা নিতান্ত প্রয়োজনের মুহুর্তে তাদের পাশে এসে দাড়ায়। বরং অধিকাংশ সময় তারা আত্মীয় স্বজনকে কথা অথবা কাজে দুঃখ দিয়ে থাকে, এমনকি কখনও কখনও এই উভয়বিধ উপায়েই দুঃখ দিয়ে থাকে।
আবার কোনো কোনো লোক এমনও রয়েছে যে দূরের লোকের সাথে সম্পর্ক রাখে অথচ তার নিকটাত্মীয়ের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করে। আবার কেউ আছে যে আত্মীয় স্বজনের সাথে ঠিক তখনই সম্পর্ক রাখে যখন তারা তার সাথে সম্পর্ক রক্ষা করে চলে, আর যখন তারা সম্পর্ক রাখে না তখন ও তারাও সম্পর্ক ঠিক রাখে না। এটাকে প্রকৃতপক্ষে আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা বলা যেতে পারে না। এটাকে নেহায়েত ভালো কাজের অনুরূপ অর্থাৎ বিনিময়ে আরেকটি ভালো কাজ বলা যায় মাত্র- যা নিকটাত্মীয় বা অন্যদের ব্যাপারে করা হয়ে থাকে। আর কোনো কাজের পুরস্কার শুধু নিকটাত্মীয়দের বেলা সীমাবদ্ধ নেই। তাকেই আমরা প্রকৃত আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী বলতে পারি যে শুধু আল্লাহর উদ্দেশ্যেই আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে চলে এবং এর বিপরীত হলে সে ব্যাপারে সে বিন্দুমাত্র ভ্রক্ষেপ করে না, চাই তার আত্মীয়-স্বজন তার সাথে সম্পর্ক রক্ষা করে চলে অথবা না চলে। এই প্রসংগে বোখারী শরীফে আবদুল্লাহ ইবন আমর ইবন ‘আস রা. থেকে একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে:
«لَيْسَ الوَاصِلُ بِالْمُكَافِئِ، وَلَكِنِ الوَاصِلُ الَّذِي إِذَا قُطِعَتْ رَحِمُهُ وَصَلَهَا»
‘তাকে প্রকৃত আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী বলা যেতে পারে না, যে শুধু ততটুকুই করে যতটুকু তার আত্মীয় তার সাথে করে থাকে। বরং প্রকৃত আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী তাকেই বলা যেতে পারে, যে ব্যক্তি তার আত্মীয় তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলেও সে তা রক্ষা করে চলে।’ [বুখারী, ৫৯৯১]
তাছাড়া এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এই বলে প্রশ্ন করল: হে, আল্লাহর রাসূল ! আমার কতিপয় আত্মীয় আছে। আমি তাদেরা সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে চলি অথচ তারা আমার সাথে তা ছিন্ন করে, আর আমি তাদের সাথে সুন্দর ব্যবহার করা সত্ত্বেও তারা আমার সাথে মন্দ আচরণ করে থাকে। আমি তাদের ব্যাপারে সহিষ্ণুতার পরিচয় দেই অথচ তারা তার উল্টো করে। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: ‘তোমার অবস্থা যদি এরূপই হয় যা তুমি বললে, তা হলে তুমি যেন তাদের মুখে গরম ছাই নিক্ষেপ করলে। আর তাদের বিপক্ষে তুমি সব সময়ই আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন সাহায্যকারী পাবে, যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি ঐ অবস্থায় বহাল থাকবে- [মুসলিম: ২৫৫৮]।
আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার কারণে শুধুই এটাই লাভ হতো যে, আল্লাহ তার সে সম্পকর্কে দুনিয়া ও আখেরাতের জন্য কায়েম রাখেন, তার ওপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হতে থাকবে এবং তার যাবতীয় কাজ সহজতর করে দেওয়া হবে এবং তার যাবতীয় দুঃখ-কষ্ট দুর হয়ে যাবে (তবে তা-ই যথেষ্ট ছিল)। অথচ এর অন্য লাভ তো রয়েছেই, ‘তাদের পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা, সহানুভূতি এবং সুখে-দুঃখ পরস্পরের প্রতি সাহায্য। সহযোগিতার কারণে তাদের মধ্যে একটি সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। আর যখন এর বিপরীত তাদের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা ও দূরত্ব সৃষ্টি হয়, তখন এইসব কল্যাণও দূরীভূত হয়ে যায়।
﴿ وَءَاتِ ذَا ٱلۡقُرۡبَىٰ حَقَّهُۥ﴾ [ الاسراء : ٢٦ ]
‘এবং নিকট আত্মীয়ের অধিকার আদায় কর।’ [সূরা বনী ইসরাইল: ২৬]
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন :
﴿ ۞وَٱعۡبُدُواْ ٱللَّهَ وَلَا تُشۡرِكُواْ بِهِۦ شَيۡٔٗاۖ وَبِٱلۡوَٰلِدَيۡنِ إِحۡسَٰنٗا وَبِذِي ٱلۡقُرۡبَىٰ﴾ [ النساء : ٣٦ ]
‘আর আল্লাহর বন্দেগী কর এবং তার সাথে কাউকে শরীক করো না, এ ছাড়া মাতা-পিতার সাথেও উত্তম আচরণ কর, আর উত্তম আচরণ কর নিকটাত্মীয়ের সাথে।’ [সূরা আন-নিসা: ৩৬]
সুতরাং প্রত্যেক লোকেরই উচিত, সে যেন তার নিকটাত্মীয়ের সাথে উত্তম ব্যবহার করে। এ উত্তম আচরণ বিভিন্ন পন্থায় হতে পারে। অর্থাৎ আত্মীয়ের প্রয়োজনের প্রেক্ষিতে ধন-সম্পদের মাধ্যমে এবং শারীরিক শক্তি সামর্থের দ্বারা তথা যে কোনো উত্তম পন্থায়। মানুষের বুদ্ধি বৃত্তি, প্রকৃতি এবং শরীয়াতের দাবীও এটাই!
আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার ব্যাপারে পবিত্র কুরআন এবং হাদিসেও বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। বিশেষ করে নিকটাত্মীয়ের অধিকার রক্ষার ব্যাপারে লোকদের উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বুখারী ও মুসলিমে এসেছে, আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা সমগ্র সৃষ্টির কাজ সম্পন্ন করে যখন নিষ্ক্রান্ত হলেন, তখন ‘বংশসম্পর্ক’ দাড়িয়ে বলল : আপনার নিকট সম্পর্কচ্ছেদ হতে রক্ষা প্রার্থীর এটাই উত্তম স্থান। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা বললেন : ‘তুমি কি সন্তষ্ট নও যে, যে ব্যক্তি তোমারাসথে সম্পর্ক রক্ষা করবে আমিও তার সাথে সম্পর্ক রক্ষা করব, আর যে ব্যক্তি তোমার সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করবে আমিও তার সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করব। অতঃপর সে বলল, অবশ্যই-হ্যাঁ, তিনি বললেন, তবে তাই হোক। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা (আমার কথার সমর্থনে) ইচ্ছা হলে পড়তে পার, (আল্লাহ তা‘আলার বাণী)
﴿ فَهَلۡ عَسَيۡتُمۡ إِن تَوَلَّيۡتُمۡ أَن تُفۡسِدُواْ فِي ٱلۡأَرۡضِ وَتُقَطِّعُوٓاْ أَرۡحَامَكُمۡ ٢٢ أُوْلَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ لَعَنَهُمُ ٱللَّهُ فَأَصَمَّهُمۡ وَأَعۡمَىٰٓ أَبۡصَٰرَهُمۡ ٢٣ ﴾ [ محمد : ٢٢، ٢٣ ]
‘তোমরা শীঘ্রই এ থেকে ফিরে যাবে এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে ও আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করবে। আর যারা এরূপ করবে তাদের ওপরই আল্লাহর অভিশম্পাত বর্ষিত হবে। আর এ ধরণের লোকদেরকেই বধির এবং অন্ধ করে দেওয়া হবে।’ [সূরা মুহাম্মাদ: ২২-২৩]
তাছাড়া রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং আখেরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে সে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে চলে।’ [বুখারী, ৬১৩৮]
অধিকাংশ লোকই এই অধিকারটিকে নস্যাৎ করে দিচ্ছে এবং এর প্রতি বিশেষ অবহেলা প্রদর্শন করছে। এদের মধ্যে এমন লোকের দৃষ্টান্ত বিরল নয়, যে তার আত্মীয় স্বজনের কোনো পরিচয়ই রাখে না। এমনকি কোনো প্রকার সম্পদ ব্যয় করে অথবা ব্যক্তিগত সদ্ভাব রক্ষা করে আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে না। এ ধরণের লোকও আেমাদের সমাজে বিরল নয় যে, দিনের পর দিন, মাসের পর মাস এবং বছরের পর বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও অনেকে আত্মীয় স্বজনের খবর নেয় না, তাদের সাথে দেখা সাক্ষাতের কোন ধার ধারে না। না সুখে সম্পদে তাদের নিকট কোনো উপঢোকন প্রেরণ করে আর না তাদের দুঃখের দিনে অথবা নিতান্ত প্রয়োজনের মুহুর্তে তাদের পাশে এসে দাড়ায়। বরং অধিকাংশ সময় তারা আত্মীয় স্বজনকে কথা অথবা কাজে দুঃখ দিয়ে থাকে, এমনকি কখনও কখনও এই উভয়বিধ উপায়েই দুঃখ দিয়ে থাকে।
আবার কোনো কোনো লোক এমনও রয়েছে যে দূরের লোকের সাথে সম্পর্ক রাখে অথচ তার নিকটাত্মীয়ের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করে। আবার কেউ আছে যে আত্মীয় স্বজনের সাথে ঠিক তখনই সম্পর্ক রাখে যখন তারা তার সাথে সম্পর্ক রক্ষা করে চলে, আর যখন তারা সম্পর্ক রাখে না তখন ও তারাও সম্পর্ক ঠিক রাখে না। এটাকে প্রকৃতপক্ষে আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা বলা যেতে পারে না। এটাকে নেহায়েত ভালো কাজের অনুরূপ অর্থাৎ বিনিময়ে আরেকটি ভালো কাজ বলা যায় মাত্র- যা নিকটাত্মীয় বা অন্যদের ব্যাপারে করা হয়ে থাকে। আর কোনো কাজের পুরস্কার শুধু নিকটাত্মীয়দের বেলা সীমাবদ্ধ নেই। তাকেই আমরা প্রকৃত আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী বলতে পারি যে শুধু আল্লাহর উদ্দেশ্যেই আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে চলে এবং এর বিপরীত হলে সে ব্যাপারে সে বিন্দুমাত্র ভ্রক্ষেপ করে না, চাই তার আত্মীয়-স্বজন তার সাথে সম্পর্ক রক্ষা করে চলে অথবা না চলে। এই প্রসংগে বোখারী শরীফে আবদুল্লাহ ইবন আমর ইবন ‘আস রা. থেকে একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে:
«لَيْسَ الوَاصِلُ بِالْمُكَافِئِ، وَلَكِنِ الوَاصِلُ الَّذِي إِذَا قُطِعَتْ رَحِمُهُ وَصَلَهَا»
‘তাকে প্রকৃত আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী বলা যেতে পারে না, যে শুধু ততটুকুই করে যতটুকু তার আত্মীয় তার সাথে করে থাকে। বরং প্রকৃত আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী তাকেই বলা যেতে পারে, যে ব্যক্তি তার আত্মীয় তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলেও সে তা রক্ষা করে চলে।’ [বুখারী, ৫৯৯১]
তাছাড়া এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এই বলে প্রশ্ন করল: হে, আল্লাহর রাসূল ! আমার কতিপয় আত্মীয় আছে। আমি তাদেরা সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে চলি অথচ তারা আমার সাথে তা ছিন্ন করে, আর আমি তাদের সাথে সুন্দর ব্যবহার করা সত্ত্বেও তারা আমার সাথে মন্দ আচরণ করে থাকে। আমি তাদের ব্যাপারে সহিষ্ণুতার পরিচয় দেই অথচ তারা তার উল্টো করে। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: ‘তোমার অবস্থা যদি এরূপই হয় যা তুমি বললে, তা হলে তুমি যেন তাদের মুখে গরম ছাই নিক্ষেপ করলে। আর তাদের বিপক্ষে তুমি সব সময়ই আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন সাহায্যকারী পাবে, যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি ঐ অবস্থায় বহাল থাকবে- [মুসলিম: ২৫৫৮]।
আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার কারণে শুধুই এটাই লাভ হতো যে, আল্লাহ তার সে সম্পকর্কে দুনিয়া ও আখেরাতের জন্য কায়েম রাখেন, তার ওপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হতে থাকবে এবং তার যাবতীয় কাজ সহজতর করে দেওয়া হবে এবং তার যাবতীয় দুঃখ-কষ্ট দুর হয়ে যাবে (তবে তা-ই যথেষ্ট ছিল)। অথচ এর অন্য লাভ তো রয়েছেই, ‘তাদের পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা, সহানুভূতি এবং সুখে-দুঃখ পরস্পরের প্রতি সাহায্য। সহযোগিতার কারণে তাদের মধ্যে একটি সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। আর যখন এর বিপরীত তাদের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা ও দূরত্ব সৃষ্টি হয়, তখন এইসব কল্যাণও দূরীভূত হয়ে যায়।
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন