মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সম্পর্ক সুদৃঢ় করা, তার সন্তুষ্টি কামনা করা এবং শুধু তাকে পাওয়ার আশা করাই হচ্ছে তওহিদের মূল তত্ত্বকথা। আর এটাই হচ্ছে কালিমায়ে শাহাদাত ‘লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’-র অর্থ ও দাবি।
শায়েখ মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহহাব রহ. বলেন, ‘ইলাহ’ হচ্ছে আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য। যারা আল্লাহ সম্পর্কে জানে না, তাদের কাছে হয়তো ব্যাপারটি সাধারণ হতে পারে, কিন্তু যারা আল্লাহ সম্পর্কে জানে ও তার কুদরতের ধারণা রাখে, তাদের কাছে বিষয়টি মোটেও সাধারণ নয়। বরং অসাধারণ ও খুব গুরুত্বপূর্ণ।’ (দুরারে সানিয়্যাহ : ২ / ২১)
পক্ষান্তরে যাদের চূড়াান্ত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আল্লাহ নয়, তাদের অবশ্যই আল্লাহ ব্যতীত অন্য সত্তা বা বস্ত্ত রয়েছে, এবং তারা (জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতসারে) সে সত্তা বা বস্ত্তর দাসত্ব করছে। ইবনে তাইমিয়াহ রহ. বিষয়টি আরো স্পষ্ট করে বলেন, ‘তথ্য তালাশ করে দেখা গেছে যে, যে যত বেশী আল্লাহর এবাদত থেকে নিজকে গুটিয়ে নিয়েছে, সে তত বেশী শিরকে লিপ্ত হয়েছে। কারণ, আল্লাহর এবাদত, আনুগত্য ও তার শরণাপন্ন হওয়া থেকে বিরত থাকার অর্থ হচ্ছে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো এবাদত ও আনুগত্য করা এবং তার শরণাপন্ন হওয়া।’
প্রত্যেকের জন্যই একটি আশ্রয় কেন্দ্র বা ভরসাস্থল রয়েছে, যার তরে সে উৎসর্গ হয় এবং যাকে সে অন্তরের ভক্তি-শ্রদ্ধা দিয়ে মহববত করে। অতএব যে ব্যক্তি নিজ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আল্লাহকে স্থির না করে তাকে প্রত্যাখ্যান করল, সে নিশ্চিত আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে লক্ষ্য স্থির করল এবং তার দাসে পরিণত হল। হতে পারে তা বস্ত্ত-ধন-সম্পদ-পদমর্যাদা-ভাষ্কর্য বা আল্লাহ ব্যতীত কোন সত্তা।
বর্তমান পরিবেশ ও পরিস্থিতির ওপর দৃষ্টি দিলে দেখা যায় যে, মানুষ বিভিন্নভাবে ও নানান পদ্ধতিতে প্রবৃত্তির অনুসরণ করছে ও শয়তানের দাসত্বে লিপ্ত হচ্ছে। কারো আছে নারীর প্রতি অবৈধ আসক্তি, কারো আছে সম্পদের মোহ, কারো আছে অভিজাত পোশাক-আশাকের উচ্চাভিলাষ। কারো আছে বাড়ি-গাড়ি ও ঐশ্বর্যের সীমাহীন আকাঙ্খা। কারো আছে ক্ষমতার লোভ। কারো আছে খেল-তামাশা ও গান-বাজনার অধীর আগ্রহ ইত্যাদি।
হ্যাঁ, মানুষের অন্তরে বিদ্যমান ও স্মায়ুতন্ত্রের অভ্যন্তরে বিরাজমান এমন কিছু প্রবৃত্তির আচার ও কামনা বাসনার বিবরণ-বিশ্লেষণ নিয়েই আমাদের এ আয়োজন।
প্রবৃত্তির মোকাবিলায় সঠিক পদ্ধতি গ্রহণ করা প্রসঙ্গে কিছু কথা :
প্রবৃত্তি বা বিষয়ে প্রধান প্রধান স্বভাবের আলোচনার পূর্বে, তা প্রতিরোধের ব্যবস্থা ও মোকাবিলা করার পদ্ধতির ওপর সংক্ষিপ্ত একটি ভূমিকা আবশ্যক জ্ঞান করছি।
বর্তমান বিশ্ব মানুষের জৈবিক ও দৈহিক চাহিদার পূরণের ক্ষেত্রে দুভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। এক শ্রেণী দৈহিক ও জৈবিক চাহিদাকে মূল প্রতিপাদ্য হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং একেই তারা পার্থিব জীবনের মূল লক্ষ্য হিসেবে স্থির করেছে। ফলে তারা এ চাহিদা পূরণ করার জন্য অশ্লীলতায় লিপ্ত হচ্ছে, নিমজ্জিত হচ্ছে পাপাচারে, ত্যাগ করেছে সালাত ও অন্যান্য এবাদত। এদের অধিকাংশ হচ্ছে পাশ্চাত্যের অধিবাসী বা তাদের অনুসারী। দ্বিতীয় শ্রেণী দৈহিক ও জৈবিক চাহিদাকে সম্পূর্ণ রূপে ত্যাগ করে গ্রহণ করেছে বৈরাগ্যবাদ। ফলে এরা আল্লাহর হালাল করা অনেক বস্ত্তকেই হারাম করে নিয়েছে। এদের অধিকাংশ হচ্ছে প্রাচ্যের অধিবাসী বা তাদের অনুসারী। এর বিপরীতে ইসলাম দৈহিক ও জৈবিক চাহিদার ক্ষেত্রে মধ্যম পন্থা গ্রহণ করেছে। আর এটাই হচ্ছে মানুষের জৈবিক ও আত্মিক চাহিদার মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত। ইসলাম আল্লাহর মনোনীত দীন, মানুষের স্বভাবের ধর্ম। ইসলাম মানুষের সার্বিক চাহিদার জিম্মাদার, তাই সে মানুষের সৃষ্টিগত স্বভাব ও প্রকৃতিগত চাহিদার বিরোধিতা করে না, বরং তার স্বীকৃতি দেয় এবং সংগত কারণে তা নিয়ন্ত্রণও করে।
ইবনে কাইয়ূম রহ. ইসলামের এ মধ্যম পন্থার ব্যাখ্যায় বলেন, ‘মানুষ কখনো প্রবৃত্তি থেকে আলাদা হতে পারবে না, যতদিন সে আছে ততদিন তার প্রবৃত্তিও আছে, এর থেকে মুক্ত হওয়া অসম্ভব, তাই ইসলাম তাকে প্রবৃত্তি থেকে আলাদা হতে বলেনি বরং তা নিয়ন্ত্রণ করার নির্দেশ দিয়েছে। যেমন তাকে নারীর প্রতি আসক্তি ত্যাগ করতে বলেনি, বরং তাকে বিবাহের নিদের্শ দিয়েছে এবং এর মাধ্যমে তার চাহিদা পূরণ করার বিধান দিয়েছে। ইসলাম এক থেকে চারটি পর্যন্ত বিবাহের অনুমতি দিয়েছে। এভাবেই ইসলাম মানুষের প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। যার মূল লক্ষ্য হচ্ছে মানব জাতিকে নৈতিক পদস্খলন, বেহায়াপনা ও অশ্লীলতা থেকে রক্ষা করা।’ (জাম্মুল হাওয়া : ৩৫ ইবনে জাওজি)
যে ব্যক্তি প্রবৃত্তির অনুসরণ ও তার চাহিদা পূরণে মশগুল থাকে, সে কার্যত প্রবৃত্তির দাস ও গোলামে পরিণত হয় এবং প্রবৃত্তি তাকে গ্রাস করে নেয় সম্পূর্ণরূপে। শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন, ‘পানাহার, পোশাক-আশাক, অবৈধ ভালবাসা ও গান-বাজনায় মগ্নতা মানুষকে উন্মাদ বানিয়ে দেয়। কারো অন্তরে যখন তার ভালবাসার বস্ত্তটির চিত্র ফুটে উঠে, তখন সে তাতেই নিমজ্জিত হয়ে পড়ে, এগুলো একাকার হয়ে যায় তার সত্তার সঙ্গে, যা থেকে উত্তরণ সম্ভব হয় না তার পক্ষে। এমন হয় কখনো লোভের কারণে, যেমন সম্পদ, সম্মান ইত্যাদির জন্য। কখনো হয় ভয়ের করণে, যেমন দুশমন বা অন্য কারো আতঙ্কে আতঙ্কিত ব্যক্তির অন্তর। প্রবৃত্তির অনুসারীরা আরো অনেক কারণে পানিতে নিমজ্জিত ব্যক্তির ন্যায় প্রবৃত্তির চাহিদা পূরণে আপাত-মস্তক নিমজ্জিত হয়ে থাকে।’ (মাজমুআতুল ফতওয়া : ১০ / ৫৯৪)
ইমাম শাফি রহ. বলেছেন, ‘যে তার প্রবৃত্তির অনুসরণ করবে, সে প্রকারন্তরে দুনিয়াদার লোকদের দাসে পরিণত হবে।’ (সিয়ারু আলামিন নুবালা ১০ / ৯৭)
নফসের নিয়ন্ত্রণহীন অনুসরণ ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ ও সুস্থ্য বিবেক উভয়ের আলোকেই নিন্দিত ও পরিত্যাজ্য। আল্লাহ তাআলা বলেন,
‘তাদের পরে আসল এমন এক অসৎ বংশধর যারা সালাত বিনষ্ট করল এবং কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করল। সুতরাং শীঘ্রই তারা জাহান্নামের শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে।’ (মারইয়াম : ৫৯)
তদ্রূপ সুস্থ্য বিবেকের বিচারেও তা ঘৃণ্য ও নিন্দিত। কারণ, বিবেকবান কাজ হচ্ছে কর্মের ভাল-মন্দ বিচার করা, অস্থায়ী স্বাদ ও আনন্দের বিপরীতে স্থায়ী দুঃখ ও কষ্ট খরিদ না করা। কাজেকাজেই একজন বিবেকবান কোনভাবেই পার্থিব সুখ-দুঃখের মোকাবিলায় আখেরাতের সুখ-দুঃখকে প্রধান্য দিতে পারে না।
ইবনে জাওজি রহ. বলেন, ‘মনে রেখো, নফসের প্রকৃতি হচ্ছে দূর ভবিষ্যৎ বা ভাল-মন্দ বিচার না করে বর্তমান ভোগ ও আনন্দের প্রতি প্ররোচিত করা, তাকে প্রধান্য দেয়া এবং তার জন্যই উদ্বুদ্ধ করা। যদিও এর পশ্চাতে থাকে দুঃখ আর লাঞ্ছনা, নিরানন্দ আর যন্ত্রণা। পক্ষান্তরে বিবেকবানরা এমনসব ভোগ-বিলাস ও আনন্দ-বিনোদন পরিত্যাগ করে, যার পশ্চাতে রয়েছে দুঃখ-বিড়ম্বনা, অপমান ও লাঞ্ছনা। এর দ্বারাই প্রমাণিত হয় নফস ও বিবেকের পার্থক্য, বুদ্ধিমান ও নির্বোধের মধ্যকার তফাৎ।
দুনিয়া একটি পরীক্ষাগার, তাই এর সবর্ত্র প্রবৃত্তির বিচরণ থাকাই স্বাভাবিক। তবে বিবেকবানের কর্তব্য হচ্ছে প্রতিটি বিষয় গ্রহণ ও বর্জনের জন্য বিবেকের শরাণপন্ন হওয়া এবং বিচারের ভার তার ওপর ন্যস্ত করা। কারণ বিবেক তার বিবেচনায় অস্থায়ী সুখের পরিবর্তে স্থায়ী সুখ গ্রহণ করার পরামর্শ দিবে, এবং যার মাধ্যমে আখেরাতের স্থায়ী সুখ, শান্তি নিশ্চিত হবে তাই গ্রহণ করার জন্য বারবার তাগিদ দিবে।’ (জাম্মুল হাওয়া ৩৬, ইবনে জাওজি)
‘একটি কথা মনে রাখা প্রয়োজন যে, নফসের প্ররোচনা, উত্তেজনা, চাকচিক্য-প্রীতি ও তার আসক্তিকে তখনই কঠোরভাবে দমন ও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, যখন নফসের প্রায়শ্চিত্ত তথা আফসোস, পরিতাপ, হতাশা ও যন্ত্রণা সম্পর্কে গভীর দৃষ্টি রাখবে ও সে ব্যাপারে চিন্তা করবে। ইবনুল কাইয়ূম রহ. বলেন, ‘প্রবৃত্তির প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করার চেয়ে প্রবৃত্তি দমন করাই সহজ। কারণ, প্রবৃত্তির প্রায়শ্চিত্ত খুবই নির্মম ও বেদনাদায়ক। হয়তো অফসোস, হয়তো হতাশা কিংবা অসম্মান। কখনো সম্পদ বঞ্চিত হওয়া, কখনো পদচ্যুতি কিংবা মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়া। আবার অধস্তন ব্যক্তিদের তিরস্কার বা নিন্দার পাত্রে পরিণত হওয়াও কম কিসের!? যা কল্পনাতেও স্থান পায়নি কখনো। অধিকন্তু অন্তরের উদ্বেগ-উৎকন্ঠা, বিষাদ-দুশ্চিন্তা আর ভয় ও শঙ্কা তো রয়েছেই। ন্যূনতম পক্ষে প্রবৃত্তির ফলে তুলনামূলক বিনোদন থেকে মাহরুম হওয়া, শত্রুর খুশির কারণ হওয়া, শুভাকাঙ্খীদের দুশ্চিন্তায় লিপ্ত হওয়া, অথবা কলঙ্গের চাপ মাথায় নিয়ে বেচে থাকায় মঙ্গল কোথায়!? কারণ, কর্মের দ্বারাই মানুষ সৎ-অসৎ ও ভাল-মন্দ হিসেবে বিবেচিত হয়, বরং কর্মই তার ফল নির্ধারণ করে দেয়, তাই প্রবৃত্তি তাড়িত কর্মের ফলাফল চিন্তা করে প্রবৃত্তির ডাকে সাড়া না দেয়াই হচ্ছে বিবেকবান কাজ।’ (আল ফাওয়ায়েদ : ১৩১)
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/217/2
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।