মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
অনেকের অন্তর সম্পদের মোহে মোহগ্রস্ত হয়ে আছে। সম্পদের মহববত তাদের অন্তরে বদ্ধমূল হয়ে গেছে, টাকা-পয়সা তাদেরকে গোলামে পরিণত করেছে। তাদের উঠা-বসা, ত্যাগ ও গ্রহণ সব কিছুতেই টাকা আর টাকা। তাদের সর্বদা একই ধ্যান, একই চিন্তা, সম্পদ আর সম্পদ। সন্তুষ্ট হলেও সম্পদের জন্য, গোস্বা করলেও সম্পদের জন্য, তাদের মহববতও সম্পদের জন্য, শত্রুতাও সম্পদের জন্য।
আল্লাহ তাআলা কুরআনের অনেক জায়গায় দুনিয়ার খারাপি সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন। যেমন, তিনি বলেন,
‘তোমরা জেনে রেখ যে, দুনিয়ার জীবন ক্রীড়া কৌতুক, শোভা-সৌন্দর্য।’ (আল-হাদিদ : ২০)
দুনিয়ার অসারতা ও খারাপি সম্পর্কে হাদিসের বিভিন্ন জায়গায় বলা হয়েছে। যেমন, আবু সাইদ খুদরি রা. বলেন, রাসূল সা. একদিন মেম্বারে বসলেন, আমরা তার চার পাশে বসলাম। তিনি বললেন, ‘তোমাদের জন্য দুনিয়ার যে সম্পদ ও চাকচিক্যের ভান্ডার উন্মুক্ত করে দেয়া হবে, আমি শুধু তার ভয় করি।’ (বোখারি ও মুসলিম)
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রসুল সা. বলেন, ‘টাকা-পয়সা ও পোশক-আশাকের বৃত্তরা নিপাত যাক। তারা পেলে খুশি হয়, না পেলে বেজার হয়।’ (বোখারি)
কাব ইবনে আয়াজ রা. বলেন, আমি রাসূল সা.-কে বলতে শুনেছি, ‘প্রত্যেক উম্মতের জন্য ফেত্না রয়েছে, আমার উম্মতের ফেত্না হচ্ছে সম্পদ।’ (তিরমিজি)
কাব ইবনে মালেক রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেন, ‘ক্ষুধার্ত দু’টি নেকড়ে বাঘ বকরির পালে ছেড়ে দেয়া যে পরিমাণ বিপদজনক, দীনের জন্য তার চেয়েও বেশী বিপদজনক সম্পদ ও সম্মানের মোহ।’ (তিরমিজি)
হাসান বসরি রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘তোমরা দুনিয়ার ব্যস্ততা থেকে বিরত থাক। কারণ, দুনিয়ার ব্যস্ততার শেষ নেই। যে ব্যক্তি দুনিয়ার ব্যস্ততার একটি দরজা উন্মুক্ত করবে, খুব সম্ভব তার এ একটি দরজা আরো দশটি ব্যস্ততার দরজা উন্মুক্ত করবে।’ (জুহুদের কিতাবে ইবনে মুবারক বর্ণনা করেছেন।)
তিনি আরো বলতেন, ‘দুনিয়াকে অবজ্ঞা কর, আল্লাহর কসম করে বলছি, তুমি যদি তাকে অবজ্ঞা করতে পার, তবে তুমি পরিতৃপ্ত হয়ে যাবে।’ (সিয়ারু আলামিন নুবালা : ৪/৫৭৯) তিনি শপথ করে বলতেন, ‘যে ব্যক্তি অর্থকে বড় করে দেখেছে, আল্লাহ তাকে অপমান করেছেন।’ (আবু নাইম ফিল হিলইয়া : ২/১৫২ সিয়ারু আলামিন নুবালা : ৪/৫৭৬)
ইবনে কাইয়ূম রহ. এর ওপর সুন্দর একটি আলোচনা করেছেন, যা দুনিয়ার প্রতি অনিহা ও আখেরাতের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করার জন্য খুবই কার্যকর। এখানে আমরা তা উপাস্থাপন করছি : ‘দুনিয়া ত্যাগ করার ইচ্ছা ছাড়া আখেরাতের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করা সম্ভব নয়। আবার দুনিয়ার প্রতি অনিহা সৃষ্টি করার জন্য দু’টি বিষয়ের ওপর চিন্তা করা খুবই জরুরি। প্রথম বিষয় : দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী, ধ্বংশীল, অসম্পূর্ণ জ্ঞান করা এবং তার নিকৃষ্টতার দিকগুলো নিয়ে চিন্তা করা। দুনিয়ার ব্যাপারে প্রতিযোগিতার ফলাফল ও তার প্রতি লোভের বিষাদ নিয়ে চিন্তা করা। এবং এর মধ্যে যে দুঃখ, যন্ত্রণা, প্রতিকুলতা ও পেরেশানী রয়েছে তা নিয়েও চিন্তা করা। আরো চিন্তা করা যে, দুনিয়ার চিরন্তন স্বভাব হচ্ছে দুঃখ, দুর্দশা রেখে পিছু হটা ও প্রস্থান কর। দুনিয়া অন্বেষণকারী দুনিয়া অর্জন করার আগে এক ধরণের দুশ্চিন্তায় ভোগে আর অর্জন করার পর আরেক ধরণের দুশ্চিন্তায় ভোগে, আবার হাত ছাড়া হয়ে গেলে তৃতীয় ধরণের দুশ্চিন্তায় ভোগে। এ হলো প্রথম বিষয়।
দ্বিতীয় বিষয় : আখেরাতের প্রতি দৃষ্টি দেয়া। আখেরাতের এগিয়ে আসা ও তার আবশ্যকতার নিয়ে চিন্তা করা। আরো চিন্তা করা যে, আখেরাত স্থায়ী, তার সম্মান, ইজ্জতও স্থায়ী। সঙ্গে সঙ্গে সেখানকার সুখ ও কল্যানের কথা চিন্তা করা এবং দুনিয়ার সাথে তার পার্থক্যের ব্যবধান সম্পর্কে ফিকির করা। আল্লাহ তাআলা বলেন,
(আরবি)
‘অথচ আখেরাত সর্বোত্তম ও স্থায়ী।’ (সুরায়ে আলা : ১৭)
মূলত আখেরাতের কল্যানই পরিপূর্ণ ও স্থায়ী, দুনিয়ার কল্যান ক্ষণস্থায়ী, অসম্পূর্ণ ও কাষ্টসাধ্য।
তিনি আরো বলেন, ‘অধিকন্তু আল্লাহ সে ব্যক্তির ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন যে, ব্যক্তি দুনিয়াকে নিয়ে সন্তুষ্ট, পরিতৃপ্ত ও আল্লাহর নিদর্শন এবং তার সাক্ষাতের ব্যাপারে উদাসীন। আল্লাহ তাআলা বলেন,
(আরবি)
‘নিশ্চয় যারা আমার সাক্ষাতের আশা রাখে না এবং দুনিয়ার জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট আছে ও তা নিয়ে পরিতৃপ্ত রয়েছে। আর যারা আমার নিদর্শনাবলী হতে গাফেল, তারা যা উপার্জন করত, তার কারণে আগুনই হবে তাদের ঠিকানা।’ (ইউনুস : ৭-৮)
যে সকল মুমিন পার্থিব জীবন নিয়ে পরিতৃপ্ত তাদের তিরস্কার করে আল্লাহ বলেন,
(আরবি)
‘ হে ইমানদারগণ! তোমাদের কি হল, যখন তোমাদের বলা হয়, আল্লাহর রাস্তায় (যুদ্ধে) বের হও, তখন যমীনের প্রতি প্রবলভাবে ঝুঁকে পড়? তবে কি তোমরা আখিরাতের পরিবর্তে দুনিয়ার জীবনে সন্তুষ্ট হলে? অথচ দুনিয়ার জীবনের ভোগ-সামগ্রী আখিরাতের তুলনায় একেবারেই নগণ্য।’ (তওবা : ৩৮)
দুনিয়ার নিরাগ্রহের অনুপাতে আল্লাহর আনুগত্য ও আখেরাতের আগ্রহের সৃষ্টি হয়। যার দুনিয়ার প্রতি আগ্রহ কম, আখেরাতের প্রতি তার আগ্রহ বেশী।
দুনিয়া ত্যাগ করার জন্য উপদেশ হিসেবে আল্লাহর এ বাণীই যথেষ্ট :
(আরবি)
‘তুমি কি লক্ষ্য করেছ, আমি যদি তাদেরকে দীর্ঘকাল ভোগ-বিলাসের সুযোগ দিতাম। অতঃপর তাদেরকে যে বিষয়ে ওয়াদা করা হয়েছে, তা তাদের নিকট এসে পড়ত, তখন যা তাদের ভোগ-বিলাসের জন্য দেয়া হয়েছিল, তা তাদের কোনই কাজে আসত না।’ (শুআরা : ২০৫-২০৭) (আল-ফাওয়ায়েদ : ৮৭-৮৯ সংক্ষিপ্ত)
উত্তাতুস্সাবিরীন নামক কিতাবে ইবনুল কাইয়ূম লিখেছেন : ‘যে সকল উম্মত ও জাতি নবিদের প্রত্যাখ্যান করেছে ও তাদের মিথ্যারোপ করেছে, তাদের মূল সমস্যা ছিল দুনিয়ার মোহ ও তার মহববত। কারণ, নবিগণ তাদেরকে গুনাহ থেকে ও অবৈধ পন্থায় সম্পদউপার্জন থেকে বিরত থাকতে বলতেন। বলাবাহুল্য পার্থিব সকল অনাচারের মূল হচ্ছে দুনিয়ার মহববত। সম্পদ ও পদের মহববতের কারণেই জাহান্নামের হালে পানি পাবে। অর্থাৎ জাহান্নামীরা একারণেই জাহান্নামী হবে। এর বিপরীতে দুনিয়ার প্রতি অনিহা ও পদের নির্মোহ জান্নাত লাভের উপায় হবে। দুনিয়ার মোহ মাদকের চেয়েও মারাত্বক ও ক্ষতিকর। যে মোহ থেকে চেতনা ফিরে পাওয়া, কবরের ঘোর অন্তকারের আগে প্রায় অসম্ভব। মালেক ইবনে দিনার বলতেন : ‘ভেলকিবাজ যাদুকর থেকে নিরাপদ থাক, ভেলকিবাজ যাদুকর থেকে নিরাপদ থাক। কারণ, তা আলেমদের অন্তর মোহগ্রস্ত করে ফেলে।’
দুনিয়ার মোহের সব চেয়ে কম ক্ষতির দিকটি হচ্ছে, আল্লাহর জিকির ও তার মহববত থেকে দূরে সরে যাওয়া। যার সম্পদ তাকে আল্লাহর মহববত থেকে বিরত রাখলো সে ক্ষতিগ্রস্ত। বান্দা যখন আল্লাহর জিকির হতে বিরত থাকে শয়তান তখন সেখানে নিজ অবস্থান দৃঢ় করে এবং তাকে নিয়ে যেখানে ইচ্ছে সেখানেই চলে যায়।’ (উত্তাতুস্সাবিরীন : পৃ : ১৮৫-১৮৬ সংক্ষিপ্ত)
হয়তো এ জন্যই ওলামায়ে কেরাম পার্থিব জগতে মগ্ন হওয়া ও তার থেকে উপকৃত হওয়াকে নিন্দার চোখে দেখেছেন। তারা এর প্রতি ভাল দৃষ্টি দেয়া এবং তাতে ঝুঁকে পড়াকেও ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন। ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন : ‘বৃক্ষ, ঘোড়া ও পশুর দিকে দুনিয়া এবং তার নেতৃত্বের মোহ নিয়ে দৃষ্টি দেয়াও খারাপ। কারণ, আল্লাহ তাআলা বলেন,
(আরবি)
‘আর তুমি কখনো প্রসারিত করো না তোমার দু'চোখ সে সবের প্রতি, যা আমি তাদের বিভিন্ন শ্রেণীকে দুনিয়ার জীবনের জাঁক-জমকস্বরূপ উপভোগের উপকরণ হিসেবে দিয়েছি। যাতে আমি সে বিষয়ে তাদেরকে পরীক্ষা করে নিতে পারি। আর তোমার রবের প্রদত্ত রিয্ক সর্বোৎকৃষ্ট ও অধিকতর স্থায়ী।’ (ত্বহা : ১৩১)
হ্যাঁ, যদি সম্পদের প্রতি এমন ঝোঁক থাকে যাতে দীনের কোন ক্ষতি নেই, যেমন আত্মতৃপ্তি বা বিনোদনের জন্য, এটাও খারাপ, বরং একটা বাতেল বস্ত্তর মাধ্যমে স্বার্থ সিদ্ধির বাহানা বৈ আর কিছু নয় এটা। (মিসরে সংকলিত ফতওয়া হতে: পৃ : ২৯ সংক্ষিপ্ত) ইজ ইবনে আবদুসসালাম লিখিত শাজারাতুল মাআরেফ ও আল-আহওয়াল : পৃ : ৭)
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/217/8
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।