hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

যে কেউ কোনো জাতির সাথে সামঞ্জস্য বিধান করে চলবে সে তাদের দলভুক্ত বলে গণ্য হবে

লেখকঃ ড. নাসের ইবন আবদিল কারীম আল-‘আকল

দ্বিতীয় বিষয়: কেন আমাদেরকে কাফিরদের অনুকরণ-অনুসরণ করতে নিষেধ করা হয়েছে?
শুরুতেই আমাদেরকে ইসলামের মূলনীতি সম্পর্কে বুঝতে হবে- নিশ্চয় দীনের মূলভিত্তি হলো ‘কায়মনোবাক্যে মেনে নেওয়া’। আল্লাহ তা‘আলার নিকট জন্য সবকিছু মেনে নেওয়া এবং রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সবকিছু মেনে নেওয়া।

আর ‘মেনে নেওয়া’ এর অর্থ: আল্লাহ তা‘আলার কর্তৃক প্রদত্ত সংবাদকে সত্য বলে স্বীকার করা, তাঁর নির্দেশ মেনে নেওয়া এবং তাঁর নিষেধকৃত বস্তু পরিত্যাগ করা। অনুরূপভাবে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক প্রদত্ত সংবাদকে সত্য বলে স্বীকার করা, তাঁর নির্দেশ মেনে নেওয়া, তাঁর নিষেধ করা বস্তু বা বিষয় থেকে দূরে থাকা এবং তাঁর আদর্শ মেনে চলা।

সুতরাং যখন আমরা এ মূলনীতি সম্পর্কে জানতে পারব, তখন প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তির জন্য উচিৎ হবে:

প্রথমত: রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট থেকে যা কিছু এসেছে, তার সবকিছুকে মেনে নেওয়া।

দ্বিতীয়ত: তাঁর আনুগত্য করা এবং কাফিরদের সামঞ্জস্য বিধান করার ব্যাপারে তাঁর পক্ষ থেকে যে নিষেধাজ্ঞা এসেছে, তা মান্য করা।

তৃতীয়ত: আল্লাহর বাণী ও তাঁর শরী‘আতের প্রতি পূর্ণ আত্মসমর্পণ, সেগুলোর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপন এবং সেগুলোকে মেনে নেওয়ার পর তার জন্য (শরী‘আতের বিধি-বিধানের) কারণসমূহ অনুসন্ধান করতে কোনো বাধা নেই।

তাই আমরা বলতে পারি যে, কাফিরদের অনুসরণ-অনুকরণ করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞার কারণসমূহ অনেক; যার অধিকাংশই সুস্থ বিবেক ও সঠিক স্বভাব-প্রকৃতিসম্পন্ন ব্যক্তিগণ খুব সহজে বুঝতে পারেন।

প্রথমত: কাফিরদের কর্মসমূহের ভিত্তিই হচ্ছে ভ্রষ্টতা ও ফাসাদের ওপর, বিষয়ের ওপর। এটাই হচ্ছে কাফিরদের কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে মূলনীতি। চাই সেসব কর্ম তোমাকে মুগ্ধ করুক অথবা নাই করুক; সেগুলো ফেতনা-ফাসাদপূর্ণ হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্য হউক বা অপ্রকাশ্য হউক; কারণ, কাফিরদের আকীদা-বিশ্বাস, আচার-আচরণ, পূজা-পার্বন, উৎসব ও রীতিনীতিসমূহের সাথে সংশ্লিষ্ট তাদের কর্মসমূহ হয়ে থাকে ভ্রষ্টতা, বিকৃতি ও অন্যায়ের ওপর ভিত্তি করে। তাদের দ্বারা যে সব সৎকর্ম হয়ে থাকে তা হচ্ছে ব্যতিক্রম। সুতরাং যখন তাদের মাঝে কোনো সৎকর্ম দেখতে পাবে, তখন তোমাদের জানা থাকা উচিত যে, এগুলো এমন কর্মের অন্তর্ভুক্ত যার ব্যাপারে তাদের কাউকে কোনো প্রতিদান দেওয়া হবে না; যেমনটি আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

﴿وَقَدِمۡنَآ إِلَىٰ مَا عَمِلُواْ مِنۡ عَمَلٖ فَجَعَلۡنَٰهُ هَبَآءٗ مَّنثُورًا ٢٣﴾ [ الفرقان : ٢٣ ]

“আর আমরা তাদের কৃতকর্মের প্রতি অগ্রসর হয়ে সেগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত করব”। [সূরা আল-ফুরকান, আয়াত: ২৩]

দ্বিতীয়ত: কাফিরদের অনুকরণ করার বিষয়টি মুসলিমগণকে তাদের অনুসারী বানিয়ে ছাড়বে। আর এর মধ্যে আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিরুদ্ধাচরণ করা এবং অবিশ্বাসীদের পথ অনুসরণ করার বিষয় রয়েছে। আর এ ব্যাপারে কঠিন হুমকি প্রদান করা হয়েছে; আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿وَمَن يُشَاقِقِ ٱلرَّسُولَ مِنۢ بَعۡدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ ٱلۡهُدَىٰ وَيَتَّبِعۡ غَيۡرَ سَبِيلِ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ نُوَلِّهِۦ مَا تَوَلَّىٰ وَنُصۡلِهِۦ جَهَنَّمَۖ وَسَآءَتۡ مَصِيرًا ١١٥﴾ [ النساء : ١١٥ ]

“আর কারো নিকট সৎপথ প্রকাশ হওয়ার পর সে যদি রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং মুমিনদের পথ ছাড়া অন্য পথ অনুসরণ করে, তবে যেদিকে সে ফিরে যায়, সে দিকেই তাকে আমরা ফিরিয়ে দেব এবং তাকে জাহান্নামে দগ্ধ করাব, আর তা কতই না মন্দ আবাস”! [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১১৫]

তৃতীয়ত: অনুসরণকারী ব্যক্তি ও অনুসৃত ব্যক্তির সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়া, যা অনুসরণকারী ব্যক্তি ও অনুসৃত ব্যক্তির মাঝে কোনো না কোনো সামঞ্জস্য সৃষ্টি করবে। অর্থাৎ পরস্পরের কাঠামোগত সম্পৃক্ততা, আন্তরিক আকর্ষণ এবং কথায় ও কাজে পারস্পরিক মিল -এগুলো হলো এমন বিষয়, যা ঈমান বিনষ্টকারী; তাতে লিপ্ত হওয়া কোনো মুসলিম ব্যক্তির জন্য উচিত নয়।

চতুর্থত: অনুকরণ করার বিষয়টি অধিকাংশ ক্ষেত্রে কাফিরদের প্রতি মুগ্ধ বা তুষ্ট থাকার নীতি সৃষ্টি করবে। সেখান থেকে যেমন, তাদের ধর্ম, আচার-আচরণ, রীতি-নীতি, কর্মকাণ্ড এবং তারা যে অন্যায় ও বিশৃঙ্খলার ওপর প্রতিষ্ঠিত আছে, তার প্রতি মুগ্ধ থাকা, আর এ তুষ্টি অপরিহার্যভাবে সুন্নাতসমূহ এবং সত্য ও হিদায়াত প্রতি তাচ্ছিল্য প্রদর্শন করতে বাধ্য করবে, যা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিয়ে এসেছেন এবং যার ওপর পূর্ববর্তী সৎকর্মশীল ব্যক্তিগণ প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। কারণ, যে ব্যক্তি কোনো জাতির অনুকরণ করে, সে ব্যক্তি তাদের মতো হয়ে যায় এবং সে তাদের কর্মকাণ্ডের প্রতি সন্তুষ্ট থাকে; আর এটা তাকে মুগ্ধ ও তুষ্ট করে; আর অপরদিকে বিপরীত কথা ও কাজ তখন আর তাকে আনন্দ দিবে না।

পঞ্চমত: পরস্পরের অনুকরণের বিষয়টি সম্প্রীতি ও ভালবাসা এবং অনুকরণকারীদের মাঝে পারস্পরিক বন্ধুত্বের সৃষ্টি করে; কারণ, মুসলিম ব্যক্তি যখন কাফিরের অনুসরণ করবে, তখন আবশ্যকীয়ভাবে তার মনের মাঝে তার জন্য বন্ধুত্বের আকর্ষণ পাওয়া যাবে আর এ অন্তরঙ্গতাই নিশ্চিতভাবে মুমিন, সৎকর্মশীল, মুত্তাকী, সুন্নাহর অনুসারী ও দীনের ওপর সুদৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিবর্গকে বাদ দিয়ে অন্যদের জন্য ভালোবাসা, সন্তুষ্টি ও পারস্পরিক বন্ধুত্বের জন্ম দিবে; আর এটা আবশ্যকীয়ভাবেই একটি স্বভাবসুলভ ব্যাপার, যা প্রত্যেক বিবেকবান ব্যক্তিই অনুভব করতে পারে; বিশেষ করে যখন অনুসরণকারী নিজে একাকিত্ব অনুভব করে অথবা অনুসরণকারী ব্যক্তি মানসিকভাবে পর্যুদস্ত থাকে, এ কারণে সে যখন অন্যকে অনুসরণ করে, তখন সে অনুসৃত ব্যক্তির মহত্ব, তার প্রতি ভালোবাসা ও বন্ধুত্ব এবং উভয়ের মধ্যকার মিল অনুভব করে। এটা যদি কেবল বাহ্যিক মিলেই সীমাবদ্ধ থাকতো তবুও তা হারাম হওয়ার জন্য যথেষ্ট হতো, অথচ বাহ্যিক মিল, অভ্যাসের মিল, চাল-চলনে মিল থাকা আবশ্যকীয়ভাবে অভ্যন্তরীণ মিল-মহব্বত সৃষ্টি করে। আর এটা এমন এক বিষয়, যা এমন প্রত্যেক ব্যক্তিই অনুধাবন করতে পারে, মানুষের চালচলনের ক্ষেত্রে এ ধরনের বিষয়সমূহ নিয়ে যে চিন্তাভাবনা করে।

এখানে আমি পরস্পর পরস্পরের অনুকরণকারীদের মাঝে বিদ্যমান সম্পর্ক, মহব্বত (ভালোবাসা) ও বন্ধুত্বের ব্যাপারে একটি দৃষ্টান্ত পেশ করছি:

যদি কোনো মানুষ ভিন্ন দেশে গমন করে, তবে সে তাতে একাকিত্ব অনুভব করতে থাকে, ফলে সে যদি তার মতো কোনো মানুষকে তার পোষাকের মতো পোষাক পরিধান করে বাজারে চলাফেরা করতে এবং তার ভাষায় কথা বলতে দেখে, তাহলে সে অবশ্যই তার কেন্দ্রিক অনেক বেশি পরিমাণে ভালোবাসা ও হৃদ্যতা অনুভব করবে। আর এ ভালোবাসা ও হৃদ্যতার পরিমাণ তখন সে অবস্থার চেয়ে বেশি দেখা দিবে যদি এ লোকটিকে সে তার নিজ দেশে প্রত্যক্ষ করত।

অতএব, মানুষ যখন অনুভব করে যে, সে অপরের অনুসারী, তখন এ অনুকরণ মনের মধ্যে তার জন্য নিশ্চিতভাবে প্রভাব তৈরি করবে; এটা হচ্ছে স্বাভাবিক অবস্থায়। কিন্তু যদি কোনো মুসলিম কোনো কাফিরের প্রতি মুগ্ধ হয়ে তার অনুকরণ করে, তাহলে তার অবস্থা কেমন হবে তা সহজেই অনুমেয়! আর এটাই হলো আসল কথা। কারণ কোনো মুসলিম ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোনো কাফির ব্যক্তির অনুসরণ-অনুকরণ করার বিষয়টি কেবল তখনই সংঘটিত হবে, যখন সে তার প্রতি মুগ্ধ হয়ে যায়, তার অনুসরণকে নিজের জন্য গৌরবের বিষয় মনে করে, তার মত চাল-চলনকে মনে স্থান দিবে, তার ভালোবাসায় মজে যাবে। আর এটাই তাদের পরস্পরের মাঝে অন্তরঙ্গ বন্ধুত্ব ও ভালোবাসার সৃষ্টি করবে। যেমনটি আমরা ইউরোপিয়ান সভ্যতায় অভ্যস্ত মুসলিমগণের মাঝে লক্ষ্য করে থাকি।

ষষ্ঠত: আমাদেরকে (কাফিরদের) অনুকরণ করা থেকে নিষেধ করা হয়েছে; কারণ, মুসলিম কর্তৃক কাফিরের অনুকরণ করার বিষয়টি অধিকাংশ ক্ষেত্রে আবশ্যকীয়ভাবে মুসলিমকে নীচ-অপমানিত ও দুর্বল অবস্থানে ফেলবে। ফলে সে নিজেকে হীন ও পরাজিত মনে করতে থাকবে। আর বর্তমানে কাফিরদেরকে অনুসরণকারীদের অনেকেই এ পরিস্থিতির মাঝেই আছে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন