hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল-কুরআন ও তার সুমহান মর্যাদা

লেখকঃ শাইখ আব্দুল আযীয ইবন আবদুল্লাহ আলে শাইখ

১৪
কুরআনের তাফসীর বা ব্যাখ্যা
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদেরকে যেভাবে কুরআনের শব্দ বলে দিয়েছেন সেভাবে অর্থও বর্ণনা করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ لِتُبَيِّنَ لِلنَّاسِ مَا نُزِّلَ إِلَيۡهِمۡ ٤٤ ﴾ [ النحل : ٤٤ ]

“যাতে আপনি মানুষের জন্য স্পষ্ট করে দিতে পারেন, যা তাদের প্রতি নাযিল হয়েছে”। [সূরা আন-নাহল, আয়াত ৪৪]

এমনিভাবে তাবে‘য়ীগণ সাহাবীগণ থেকে কুরআন গ্রহণ করেছেন। মুজাহিদ (রহ.) বলেছেন, আমি ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর নিকট কুরআন কাছে কুরআন শিক্ষা করেছি, প্রত্যেক আয়াতে থেমেছি ও তা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছি। এজন্যই ছাওরী (রহ.) বলেছেন, মুজাহিদের বর্ণনায় কোনো তাফসীর হলে সঠিক হওয়ার জন্য তা যথেষ্ট। এখানে উদ্দেশ্য হলো: আল্লাহর কালামের অর্থ বিদ্যমান ও জানা আছে, আলহামদুলিল্লাহ, অধিকাংশ তাফসীরই লিখিত ও সর্বত্রে পাওয়া যায়। কুরআনের সবচেয়ে বড় তাফসীর বা ব্যাখ্যা হলো সেটা যা কুরআন দিয়েই করা হয়, কেননা এটা সর্বজনস্বীকৃত যে, কুরআন একটি সাদৃশ্যপূর্ণ কিতাব, যা বারবার তিলাওয়াত করা হয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ ٱللَّهُ نَزَّلَ أَحۡسَنَ ٱلۡحَدِيثِ كِتَٰبٗا مُّتَشَٰبِهٗا مَّثَانِيَ ٢٣ ﴾ [ الزمر : ٢٣ ]

“আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম বাণী, সাদৃশ্যপূর্ণ একটি কিতাব (আল কুরআন), যা বারবার আবৃত্তি করা হয়”। [সূরা যুমার, আয়াত ২৩] এ আয়াতের উদ্দেশ্য হলো, কুরআনের এক আয়াত অন্য আয়াতের সাদৃশ, এক আয়াত অন্য আয়াতের ব্যাখ্যা করে, একটি ঘটনা এক স্থানে উল্লেখ হলে অন্য স্থানে ব্যাখ্যা করে থাকে। তা কুরআনে স্পষ্ট (আলহামদুলিল্লাহ)। আল্লাহর তা‘আলার বাণী অধিক স্পষ্ট ও তা উদ্দিষ্ট অর্থে অধিক ইঙ্গিতবহ; কারণ আল্লাহ তা‘আলা নিজেই তা বলেছেন, আর তিনিই অধিক জ্ঞাত তাঁর কথার উদ্দিষ্ট অর্থ সম্পর্কে। সালাফে সালেহীন এ ধরনের (অর্থাৎ কুরআন দিয়ে কুরআনের) তাফসীরের উপর বেশী গুরুত্ব দিয়েছেন। এর উদাহরণ অনেক, গণনা করে শেষ করা যাবে না।

কুরআনের দ্বারা কুরআনের তাফসীরের পরের স্তরে আসে হাদীস দ্বারা কুরআনের তাফসীর। কেননা আল্লাহর পরে আল্লাহর কালাম সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চেয়ে বেশী কেউ জানে না। তাঁর উপর কুরআন নাযিল হয়েছে, আল্লাহ তাকে মানুষের কাছে তা বর্ণনা করতে আদেশ করেছেন।

এর পরে সাহাবীদের কথা, যেহেতু তারা কুরআন নাযিলের যুগে বাস করেছেন, রাসূলের থেকে সরাসরি কুরআন নিয়েছেন।

এর পরে তাবে‘য়ী ইমামগণের ব্যাখ্যা।

অতঃপর অন্যান্য তাফসীরকারকদের ব্যাখ্যা যা কুরআন, হাদীস, সাহাবীদের মতের বেশী কাছাকাছি হয়।

আর যদি এ ব্যাপারে তাদের কথা পাওয়া না যায় তবে আরবী ভাষার উপযুক্ত অর্থের অধিক কাছাকাছি অর্থ গ্রহণ করা হবে। কেননা কুরআন আরবী ভাষায় নাযিল হয়েছে। তাফসীরকারদের মধ্যে যারা ইজতিহাদ ও ইস্তিম্বাতের পদ্ধতি গ্রহণ করেন, তাদের মতটি যদি বিশুদ্ধ হয় তবে তাদের জন্য রয়েছে দু’টি সাওয়াব। আর ইজতিহাদে ভুল হলে একটি সাওয়াব।

এখানে একটি বিষয় সতর্ক করা দরকার যে, মুসলিম ব্যক্তিকে ইলম ব্যতিত আল্লাহর কালাম ব্যাখ্যা করা থেকে বিরত থাকা উচিত। অতঃএব না জেনে তার বলা জায়েয নেই যে, এ আয়াতের তাফসীর এরকম। কেননা তা মহাপাপ, আল্লাহর ব্যাপারে না জেনে মিথ্যাচার, আর আল্লাহ তা‘আলা তা হারাম করেছেন:

﴿ قُلۡ إِنَّمَا حَرَّمَ رَبِّيَ ٱلۡفَوَٰحِشَ مَا ظَهَرَ مِنۡهَا وَمَا بَطَنَ وَٱلۡإِثۡمَ وَٱلۡبَغۡيَ بِغَيۡرِ ٱلۡحَقِّ وَأَن تُشۡرِكُواْ بِٱللَّهِ مَا لَمۡ يُنَزِّلۡ بِهِۦ سُلۡطَٰنٗا وَأَن تَقُولُواْ عَلَى ٱللَّهِ مَا لَا تَعۡلَمُونَ ٣٣ ﴾ [ الاعراف : ٣٣ ]

“বলুন, ‘আমার রব তো হারাম করেছেন অশ্লীল কাজ- যা প্রকাশ পায় এবং যা গোপন থাকে, আর পাপ ও অন্যায়ভাবে সীমালঙ্ঘন এবং আল্লাহর সাথে তোমাদের শরীক করা, যে ব্যাপারে আল্লাহ কোনো প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি এবং আল্লাহর উাপরে এমন কিছু বলা যা তোমরা জান না।” [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত ৩৩]

কুরআন শিক্ষা করা ও শিক্ষা দেয়া উম্মতের উপর ফরযে কিফায়া। আর যে ব্যক্তি এ কাজে সম্পৃক্ত রয়েছে সে এ উম্মতের সবচেয়ে উত্তম ব্যক্তি।

عَنْ عُثْمَانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : «خَيْرُكُمْ مَنْ تَعَلَّمَ القُرْآنَ وَعَلَّمَهُ»

উসমান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ঐ ব্যক্তি যে নিজে কুরআন শিক্ষা করে এবং অন্যকে শিক্ষা দেয়”। [বুখারী, হাদীস নং ৫০২৭।]

সপ্তমত: যে কুরআন শিক্ষা করেছে তার উচিত সে অনুযায়ী আমল করা, কেননা তা হলো ইলমের ফলাফল, আসমানী কিতাব নাযিল ও নবী রাসূলদের প্রেরণ এ উদ্দেশ্যেই। আমল ছাড়া ইলমের কোনো ফায়েদা নেই; বরং ক্ষতিকর। আলী ইবন আবী তালিব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, “ইলম বা জ্ঞান সেটা অনুযায়ী আমল বা কাজ করাকে হাতছানি দিয়ে ডাকে; যদি কেউ সে ডাকে সাড়া দেয় তো সে ইলম অবশিষ্ট থাকে, নতুব সে ইলম চলে যায়”।

যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাবের ইলম অর্জন করল কিন্তু সে অনুযায়ী আমল করল না তার সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে জানিয়েছেন এবং তার উদাহরণ নিকৃষ্টভাবে দিয়েছেন, যাতে অন্যরা এরূপ না করে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেছেন,

﴿ وَٱتۡلُ عَلَيۡهِمۡ نَبَأَ ٱلَّذِيٓ ءَاتَيۡنَٰهُ ءَايَٰتِنَا فَٱنسَلَخَ مِنۡهَا فَأَتۡبَعَهُ ٱلشَّيۡطَٰنُ فَكَانَ مِنَ ٱلۡغَاوِينَ ١٧٥ وَلَوۡ شِئۡنَالَرَفَعۡنَٰهُ بِهَا وَلَٰكِنَّهُۥٓ أَخۡلَدَ إِلَى ٱلۡأَرۡضِ وَٱتَّبَعَ هَوَىٰهُۚ فَمَثَلُهُۥ كَمَثَلِ ٱلۡكَلۡبِ إِن تَحۡمِلۡ عَلَيۡهِ يَلۡهَثۡ أَوۡ تَتۡرُكۡهُ يَلۡهَثۚ ذَّٰلِكَ مَثَلُ ٱلۡقَوۡمِ ٱلَّذِينَ كَذَّبُواْ بِ‍َٔايَٰتِنَاۚ فَٱقۡصُصِ ٱلۡقَصَصَ لَعَلَّهُمۡ يَتَفَكَّرُونَ ١٧٦ ﴾ [ الاعراف : ١٧٥، ١٧٦ ]

“আর আপনি তাদের উপর সে ব্যক্তির সংবাদ পাঠ কর, যাকে আমরা আমাদের আয়াতসমূহ দিয়েছিলাম। অতঃপর সে তা হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল এবং শয়তান তার পেছনে লেগেছিল। ফলে সে বিপথগামীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গিয়েছিল। আর আমি ইচ্ছা করলে উক্ত নিদর্শনাবলীর মাধ্যমে তাকে অবশ্যই উচ্চ মর্যাদা দিতাম, কিন্তু সে পৃথিবীর প্রতি ঝুঁকে পড়েছে এবং নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করেছে। সুতরাং তার দৃষ্টান্ত হচ্ছে কুকুরের মত। যদি তার উপর বোঝা চাপিয়ে দাও তাহলে সে জিহ্বা বের করে হাঁপাবে অথবা যদি তাকে ছেড়ে দাও তাহলেও সে জিহবা বের করে হাঁপাবে। এটি হচ্ছে সে কওমের দৃষ্টান্ত যারা আমার আয়াতসমূহে মিথ্যারোপ করেছে। অতএব তুমি কাহিনী বর্ণনা কর, যাতে তারা চিন্তা করে।” [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত ১৭৫-১৭৬]

অনুরূপভাবে আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের সম্পর্কে বলেছেন,

﴿ مَثَلُ ٱلَّذِينَ حُمِّلُواْ ٱلتَّوۡرَىٰةَ ثُمَّ لَمۡ يَحۡمِلُوهَا كَمَثَلِ ٱلۡحِمَارِ يَحۡمِلُ أَسۡفَارَۢاۚ بِئۡسَ مَثَلُ ٱلۡقَوۡمِ ٱلَّذِينَ كَذَّبُواْ بِ‍َٔايَٰتِ ٱللَّهِۚ وَٱللَّهُ لَا يَهۡدِي ٱلۡقَوۡمَ ٱلظَّٰلِمِينَ ٥ ﴾ [ الجمعة : ٥ ]

“যাদেরকে তাওরাতের দায়িত্বভার দেয়া হয়েছিল তারপর তারা তা বহন করেনি, তারা গাধার মত! যে বহু কিতাবের বোঝা বহন করে। সে সম্প্রদায়ের উপমা কতইনা নিকৃষ্ট, যারা আল্লাহর আয়াতসমূহে মিথ্যারোপ করে। আর আল্লাহ যালিম সম্প্রদায়কে হিদায়াত করেন না”। [সূরা আল্-জুমু‘আ, আয়াত ৫]

অন্যদিকে আল্লাহ তা‘আলা আহলে কিতাবের এক দলের প্রশংসা করেছেন, কেননা তারা কিতাব অনুযায়ী আমল করত। আল্লাহ বলেন,

﴿ ٱلَّذِينَ ءَاتَيۡنَٰهُمُ ٱلۡكِتَٰبَ يَتۡلُونَهُۥ حَقَّ تِلَاوَتِهِۦٓ أُوْلَٰٓئِكَ يُؤۡمِنُونَ بِهِۦۗ ١٢١ ﴾ [ البقرة : ١٢١ ]

“যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছি, তারা তা পাঠ করে যথার্থভাবে। তারাই তার প্রতি ঈমান আনে”। [সূরা আল-বাকারাহ্‌, আয়াত ১২১]

অর্থাৎ তারা আল্লাহর হারামকৃত জিনিসকে হারাম মনে করতেন, আর হালালকে হালাল মনে করতেন। আর তারা আল্লাহর বিধানের বিকৃতি করত না।

ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেছেন, এ উম্মতের যে ব্যক্তি কুরআন অনুযায়ী আমল করবে না তার বিরুদ্ধে কুরআন দলিল হিসেবে দাঁড়াবে”।

আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে ঐ সব লোকদের সংবাদ দিয়েছেন যারা বেশী বেশী নামায রোযা ও তিলাওয়াত করত, অথচ তাদের শেষ পরিণতি খুবই মারাত্মক ছিল।

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الخُدْرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّهُ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ : «يَخْرُجُ فِيكُمْ قَوْمٌ تَحْقِرُونَ صَلاَتَكُمْ مَعَ صَلاَتِهِمْ، وَصِيَامَكُمْ مَعَ صِيَامِهِمْ، وَعَمَلَكُمْ مَعَ عَمَلِهِمْ، وَيَقْرَءُونَ القُرْآنَ لاَ يُجَاوِزُ حَنَاجِرَهُمْ، يَمْرُقُونَ مِنَ الدِّينِ كَمَا يَمْرُقُ السَّهْمُ مِنَ الرَّمِيَّةِ، يَنْظُرُ فِي النَّصْلِ فَلاَ يَرَى شَيْئًا، وَيَنْظُرُ فِي القِدْحِ فَلاَ يَرَى شَيْئًا، وَيَنْظُرُ فِي الرِّيشِ فَلاَ يَرَى شَيْئًا، وَيَتَمَارَى فِي الفُوقِ»

আবু সাঈদ খুদুরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ ভবিষ্যতে এমন সব লোকের আগমন ঘটবে, যাদের সালাতের তুলনায় তোমাদের সালাতকে, তাদের রোযার তুলনায় তোমাদের রোযাকে এবং তাদের আমলের তুলনায় তোমাদের আমলকে তুচ্ছ মনে করবে। তারা কুরআন পাঠ করবে; কিন্তু তা তাদের কন্ঠনালীর নিচে প্রবেশ করবে না (অর্থাৎ অন্তরে প্রবেশ করবে না এবং তা লোক দেখানো হবে)। এরা দ্বীন (ইসলাম) থেকে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে যেমনভাবে নিক্ষিপ্ত তীর ধনুক থেকে বেরিয়ে যায়। আর অন্য শিকারী সেই তীরের অগ্রভাগ পরীক্ষা করে দেখতে পায়, তাতে কোনো চিহ্ন নেই। সে তীরের ফলার পার্শ্বদেশদ্বয়েও নজর করে অথচ সেখানে কিছু দেখতে পায় না। অবশেষে ঐ ব্যক্তি কোনো কিছু পাওয়ার জন্য তীরের নিম্নভাগে সন্দেহ পোষণ করে”। [বুখারী, হাদীস নং ৫০৫৮।]

সালফে সালেহীন সাহাবাগণের অভ্যাস ছিল, তারা কুরআন হিফযের চেয়ে যতটুকু শিক্ষা করেছে সে অনুযায়ী আমল করতে বেশী উৎসাহী ছিল। আবু আব্দুর রহমান আস-সুলামী (রহ.) বলেছেন, আমাদেরকে সে সব সাহাবারা বর্ণনা করেছেন যারা আমাদেরকে কুরআন শিখিয়েছেন, যেমন উসমান ইবন আফফান, আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ প্রভৃতি। তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে দশটি আয়াত শিখলে যতক্ষণ না এর সব ইলম ও আমল শেষ না হতো ততক্ষণ সামনে এগুতেন না। তারা বলেছেন: এভাবে আমরা ইলম ও আমল উভয়সহকারে কুরআন শিখেছি।

ইমাম আহমদ তার মুসনাদে এ হাদীসটি এভাবে বর্ণনা করেছেন,

عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ قَالَ : حَدَّثَنَا مَنْ كَانَ يُقْرِئُنَا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَنَّهُمْ كَانُوا " يَقْتَرِئُونَ مِنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَشْرَ آيَاتٍ " ، فَلَا يَأْخُذُونَ فِي الْعَشْرِ الْأُخْرَى حَتَّى يَعْلَمُوا مَا فِي هَذِهِ مِنَ الْعِلْمِ وَالْعَمَلِ، قَالُوا : فَعَلِمْنَا الْعِلْمَ وَالْعَمَلَ

আবু আব্দুর রহমান (রহ.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমাদেরকে সাহাবীদের সে সব কারীগণ বর্ণানা করেছেন যারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের থেকে কুরআন পড়েছেন। তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের থেকে দশটি আয়াত পড়ে নিতেন, যতক্ষণ সে সব আয়াতের উপর আমল না হতো ততক্ষণ অন্য দশ আয়াত নিতেন না। তারা বলতেন, এভাবে আমরা ইলম ও আমল শিখেছি। [মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং ২৩৪৮২]

এজন্যই তারা একটি সূরা হিফয করতে দীর্ঘ দিন অতিবাহিত করতেন। আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, কোনো ব্যক্তি সূরা বাকারা ও আলে-ইমরান পড়লে তা আমাদের কাছে অনেক বড় মনে হতো।

মুয়াত্তায়ে মালেকে এসেছে, ইমাম মালেকের কাছে সংবাদ পৌঁছেছে যে, আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু সূরা বাকারা আট বছর ধরে শিক্ষা করেছেন। [মুয়াত্তা মালেক, হাদীস নং ২৩৮।]

এভাবেই আমরা দেখি যে, সাহাবীদের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল আল্লাহর কিতাব অর্থসহকারে চিন্তাভাবনা ও আমলের মাধ্যমে শিক্ষা করা, শুধু শব্দ হিফয করা তাদের লক্ষ্য ছিল না।

অষ্টমত: মুসলিমের কুরআন পরিত্যাগ করা উচিত নয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَقَالَ ٱلرَّسُولُ يَٰرَبِّ إِنَّ قَوۡمِي ٱتَّخَذُواْ هَٰذَا ٱلۡقُرۡءَانَ مَهۡجُورٗا ٣٠﴾ [ الفرقان : ٢٩ ]

“আর রাসূল বলবে, ‘হে আমার রব, নিশ্চয় আমার কওম এ কুরআনকে পরিত্যাজ্য গণ্য করেছে।” [সূরা আল-ফুরকান, আয়াত ২৯]

ইবন কাইয়্যেম (রহ.) কুরআন পরিত্যাগ করার কয়েকটি প্রকার উল্লেখ করেছেন, তাহলো:

প্রথম: কুরআন শ্রবণ থেকে বিরত থাকা, এর উপর ঈমান না আনা ও এতে মনোযোগ না দেয়া।

দ্বিতীয়: এর আমল ত্যাগ করা, এর হালাল-হারাম অনুযায়ী আমল না করা, যদিও তা পড়া ও ঈমান আনা হয়।

তৃতীয়: দ্বীনের মূল ও শাখা প্রশাখায় এর বিধান বর্জন করা, অনুরূপ এ বিশ্বাস করা যে, তা দ্বারা ইলমে ইয়াকীন তথা দৃঢ় জ্ঞান অর্জিত হয় না, এর দলীল শব্দগত; যা দ্বারা দৃঢ় জ্ঞান লাভ হয় না, এরূপ মনে করা।

চতুর্থ: এর গভীর চিন্তা-ভাবনা, অনুধাবন ও আল্লাহর উদ্দিষ্ট অর্থ জানার প্রচেষ্টা থেকে বিরত থাকা।

পঞ্চম: অন্তরের সব রোগ-ব্যাধি ও এর নিরাময় হিসেবে কুরআনকে গ্রহণ না করা। ফলে কুরআন ছাড়া অন্যত্রে এ সব রোগের নিরাময় খোঁজা, এর দ্বারা নিরাময় না খোঁজা। এ সব কিছুই আল্লাহর নিন্মোক্ত বাণীর অন্তর্ভুক্ত:

﴿ وَقَالَ ٱلرَّسُولُ يَٰرَبِّ إِنَّ قَوۡمِي ٱتَّخَذُواْ هَٰذَا ٱلۡقُرۡءَانَ مَهۡجُورٗا ٣٠ ﴾ [ الفرقان : ٢٩ ]

“আর রাসূল বলবে, ‘হে আমার রব, নিশ্চয় আমার কওম এ কুরআনকে পরিত্যাজ্য গণ্য করেছে।” [সূরা আল-ফুরকান, আয়াত ২৯]

যদিও উপরোক্ত পরিত্যাগের প্রকারসমূহের মধ্যে কোনো কোনোটি অপরটির চেয়ে মারাত্মক।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন