hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সহজ ফিকহ শিক্ষা

লেখকঃ ড. সালিহ ইবন গানিম আস-সাদলান

৩৭
ইসলামের পঞ্চম রুকন হজ
১- হজের পরিচিতি:

হজ ( حج )শব্দের আভিধানিক অর্থ: ইচ্ছা করা ও কোনো গন্তব্যের দিকে গমন করা। কোনো কাজ বারবার করা।

পারিভাষিক অর্থে: বিশেষ ইবাদত আদায়ের উদ্দেশ্যে সুনির্দিষ্ট সময়ে মক্কা গমন করার ইচ্ছা করা।

২- ইসলামে হজের অবস্থান:

হজ ইসলামের পঞ্চ রুকনের মধ্যে পঞ্চম রুকন। নবম হিজরিতে হজ ফরয হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿وَلِلَّهِ عَلَى ٱلنَّاسِ حِجُّ ٱلۡبَيۡتِ مَنِ ٱسۡتَطَاعَ إِلَيۡهِ سَبِيلٗاۚ٩٧﴾ [ ال عمران : ٩٧ ]

“এবং সামর্থ্যবান মানুষের ওপর আল্লাহর জন্য বায়তুল্লাহর হজ করা ফরয”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৯৭]

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«بُنِيَ الإِسْلاَمُ عَلَى خَمْسٍ : شَهَادَةِ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ، وَإِقَامِ الصَّلاَةِ، وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ، وَالحَجِّ، وَصَوْمِ رَمَضَانَ» .

“ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি। এ কথার সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ ব্যতীত কোনো (সত্য) ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল, সালাত কায়েম করা, যাকাত দেওয়া, হজ করা এবং রমযান মাসের সিয়াম পালন করা”। [সহীহ বুখারী, ঈমান, হাদীস নং ৮; সহীহ মুসলিম, ঈমান, হাদীস নং ১৬; তিরমিযী, ঈমান, হাদীস নং ২৬০৯; নাসাঈ, ঈমান ওয়াশারায়ে‘উহু, হাদীস নং ৫০০১; আহমদ, ২/৯৩।]

৩- হজের হুকুম:

আল্লাহ তার (সক্ষম) বান্দার ওপর জীবনে হজ পালন করা ফরয করেছেন।

« الحج مَرَّةً، فَمَنْ زَادَ فَهُوَ تَطَوُّعٌ»

“হজ জীবনে একবার, কেউ এর চেয়ে বেশি করলে তা তার জন্য অতিরিক্ত (নফল)”। [নাসাঈ, মানাসিকুল হজ, হাদীস নং ২৬২০; আবু দাউদ, মানাসিক, হাদীস নং ১৭২১; ইবন মাজাহ, মানাসিক, হাদীস নং ২৮৮৬; আহমদ, ১/২৯১; দারেমী, মানাসিক, হাদীস নং ১৭৮৮।]

হজের অর্থ: বিশেষ ইবাদত আদায়ের উদ্দেশ্যে সুনির্দিষ্ট সময়ে মক্কা গমন করার ইচ্ছা করা।

৪- উমরা:

উমরার পরিচিতি: উমরার শাব্দিক অর্থ পরিদর্শন করা, সাক্ষাৎ করা। আর পারিভাষিক অর্থে উমরা হলো: কতিপয় নির্দিষ্ট কাজ নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে পালন করা।

‘উমরার হুকুম:

জীবনে একবার উমরা পালন করা ওয়াজিব।

৫- হজ ও উমরা শরী‘আতসম্মত হওয়ার হিকমত:

ইসলামে হজ ও উমরা শরী‘আতসম্মত হওয়ার অন্যতম হিকমত হলো পাপ-পঙ্কিলতা থেকে মানুষের অন্তরকে পবিত্র করা যাতে আখিরাতে আল্লাহর দেওয়া সম্মানিত স্থানের (জান্নাতের) অধিবাসী হওয়া যায়। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

« من حج هذا البيت فَلَمْ يَرْفُثْ، وَلَمْ يَفْسُقْ، رَجَعَ كَيَوْمِ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ»

“যে ব্যক্তি এ ঘরের হজ পালন করলো এবং অশালীন কথাবার্তা ও গুনাহ থেকে বিরত রইল, সে নবজাতক শিশু, যাকে তার মা এ মুহূর্তেই প্রসব করেছে, তার ন্যায় নিষ্পাপ হয়ে ফিরবে”। [সহীহ বুখারী, হজ, হাদীস নং ১৫২১; সহীহ মুসলিম, হজ, হাদীস নং ১৩৫০; তিরমিযী, হজ, হাদীস নং ৮১১; নাসাঈ, মানাসিকুল হজ, হাদীস নং ২৬২৭; ইবন মাজাহ, মানাসিক, হাদীস নং ২৮৮৯; আহমদ, ২/৪১০; দারেমী, মানাসিক, হাদীস নং ১৭৯৬।]

৬- হজ ও উমরা ফরয হওয়ার শর্তাবলী:

হজ ও উমরা ফরয হওয়ার শর্তাবলী নিম্নরূপ:

১- ইসলাম।

২- আক্বল বা জ্ঞানসম্পন্ন হওয়া।

৩- বালিগ হওয়া।

৪- হজে গমনের সামর্থ থাকা। অর্থাৎ হজে যাওয়া আসার যাতায়াত খরচ, খাদ্য ইত্যাদির সামর্থ্য থাকা।

৫- স্বাধীন হওয়া।

৬- উপরের পাঁচটি শর্তের সাথে মহিলাদের জন্য অতিরিক্ত আরেকটি শর্ত রয়েছে, তা হলো মুহরিম থাকা। মুহরিম ব্যতীত হজ পালন করলে গুনাহগার হবে, যদিও তার হজ আদায় হয়ে যাবে।

শিশু হজ করলে তার হজ নফল হিসেবে সহীহ হবে, তবে বালিগ হলে তার ওপর হজ পালন করা ফরয হবে।

কারো ওপর হজ ফরয হওয়ার পরে হজ পালন না করে মারা গেলে তার পরিত্যক্ত সম্পত্তি থেকে তার পক্ষ থেকে হজ করানো ফরয।

কেউ নিজে হজ পালন না করলে সে অন্যের পক্ষ থেকে হজ পালন করতে পারবে না। নফল হজ বা উমরা পালনের জন্য যেকোন কাউকে স্থলাভিষিক্ত করা সহীহ।

হজ তথা মানাসিকের প্রকারভেদ:

১- শুধু উমরা পালন করা।

২- শুধু হজ পালন করা।

৩- হজ ও উমরা একত্রে পালন করা।

৪- উমরা পালন করে কিছুদিন ইহরাম থেকে মুক্ত হয়ে আবার হজ পালন করা।

শুধু শুধু উমরা পালন বছরের যে কোনো সময় করা যায়। তবে সর্বোত্তম উমরা হলো যা হজের সাথে বা রমযান মাসে পালন করা হয়।

ইফরাদ হজ তথা শুধু হজ হলো হজের দিনে শুধু হজের জন্য ইহরাম বাঁধা, এর আগে বা পরে উমরা পালন না করা।

আর কিরান তথা হজের সাথে উমরা হলো শুরু থেকেই হজ ও উমরার জন্য ইহরাম বাঁধা এবং হজ ও উমরার কিছু কাজ একত্রে করা। ফলে হজ ও উমরার জন্য একবারই তাওয়াফ ও সা‘ঈ করা।

আর তামাত্তু হজ হলো সবচেয়ে উত্তম হজ। হজের মাসে প্রথমে উমরার জন্য ইহরাম বাঁধা। অতঃপর উমরার জন্য সা‘ঈ ও তাওয়াফ শেষে হালাল হয়ে যাওয়া। অতঃপর একই বছর যিলহজ মাসের আট তারিখ হজের জন্য ইহরাম বাঁধা এবং তাওয়াফ, সা‘ঈ, আরাফাতের ময়দানে অবস্থান ইত্যাদি হজের কার্য সম্পন্ন করা। তামাত্তু ও কারিন পালনকারীর উপর হাদী যবেহ করা ওয়াজিব।

হজ ও উমরার রুকনসমূহ:

হজের রুকন চারটি। সেগুলো হলো: ইহরাম, বাইতুল্লাহর তাওয়াফ, সাফা ও মারওয়ায় সা‘ঈ ও ‘আরাফায় অবস্থান। এ চারটি রুকনের কোনো একটি ছুটে গেলে হজ বাতিল হয়ে যাবে।

উমরার রুকন তিনটি। সেগুলো হলো: ইহরাম, তাওয়াফ ও সা‘ঈ। অতএব, এগুলো আদায় না করলে উমরা আদায় হবে না। এ সব রুকনের বিস্তারিত বিবরণ নিচে দেওয়া হলো:

প্রথম রুকন: ইহরাম

ইহরাম হলো: হজ বা উমরা পালনের নিয়াতে হজ বা উমরার কাজে প্রবেশের নিয়ত করা এবং সাধারণ সেলাই করা কাপড় ছেড়ে ইহরামের পোশাক পরিধান করা।

ইহরামের ওয়াজিবসমূহ:

ইহরামের ওয়াজিব তিনটি। সেগুলো হচ্ছে:

১- মিকাত থেকে ইহরাম বাঁধা:

শরী‘আত প্রণেতা যেসব জায়গা থেকে হজ ও উমরার জন্য ইহরাম বাঁধতে নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। সুতরাং হজ বা উমরা পালনকারীকে ইহরামের নিয়ত ব্যতীত এ সব স্থান অতিক্রম করা জায়েয নেই।

২- সেলাইবিহীন কাপড় পরিধান করা:

পুরুষ মুহরিম সেলাইকৃত জামা, কামিছ, টুপিওয়ালা জামা, পাগড়ি পরবে না। কোনো কিছু দিয়ে মাথা ঢেকে রাখবে না। জুতো পরবে, চামড়ার মোজা বা কাপড়ের মোজা পরবে না, তবে জুতো না পেলে চামড়ার মোজা বা কাপড়ের মোজা পরতে পারবে। নারী নিকাব ও হাতমোজা পরবে না।

৩- তালবিয়া পাঠ করা। তালবিয়া হলো নিম্নোক্ত এ দো‘আ পড়া।

«لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ لَبَّيْكَ، لَبَّيْكَ لاَ شَرِيكَ لَكَ لَبَّيْكَ، إِنَّ الحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالمُلْكَ، لاَ شَرِيكَ لَكَ»

“আমি উপস্থিত, হে আল্লাহ! আমি উপস্থিত। আপনার কোনো শরীক নেই। নিশ্চয় প্রশংসা ও নি‘আমত আপনার এবং রাজত্বও, আপনার কোনো শরীক নেই”।

মুহরিম মিকাত থেকে ইহরাম পরিধান করার সময় তালবিয়া পড়বে এবং এ দো‘আ পাঠ না করে মিকাত অতিক্রম করবে না। পুরুষ উচ্চস্বরে এবং (নারীরা আস্তে আস্তে) বেশি বেশি পরিমাণে ও বার বার প্রত্যেক উঠা, বসা, চলা, ফেরা, সালাতের আগে-পরে ও কারো সাক্ষাতে তালবিয়া পাঠ করবে। উমরা আদায়কারী উমরার তাওয়াফ শেষ করলে তালবিয়া পাঠ শেষ করবে এবং হজ আদায়কারী জামরায়ে ‘আকাবাতে পাথর নিক্ষেপ শেষে তালবিয়া পাঠ সমাপ্ত করবে।

দ্বিতীয় রুকন: তাওয়াফ

তাওয়াফ হলো কা‘বা ঘরের চারপাশে সাতবার ঘোরা। এর সাতটি শর্ত। সেগুলো হচ্ছে:

১- তাওয়াফ শুরু করার নিয়ত করা।

২- ছোট বড় সব ধরণের অপবিত্রতা থেকে পবিত্র থাকা।

৩- সতর ঢেকে রাখা। যেহেতু তাওয়াফ সালাতের মতোই।

৪- মসজিদের ভিতর দিয়ে বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করা, যদিও বাইতুল্লাহ থেকে দুর দিয়ে হয়।

৫- তাওয়াফের সময় বাইতুল্লাহ যেন তাওয়াফকারীর বাম দিকে থাকে।

৬- তাওয়াফে সাতটি চক্কর দেওয়া।

৭- ধারাবাহিকভাবে ও বিরতিহীন তাওয়াফ করা। ওযর ব্যতীত বিলম্ব করবে না।

তাওয়াফের সুন্নাতসমূহ:

১- রমল করা: পুরুষদের জন্য তাওয়াফে কুদূম তথা আগমনি তাওয়াফের প্রথম তিন চক্করে রমল করা সুন্নাত। রমল হলো তাওয়াফের সময় দ্রুত পদে চলা। নারীরা রমল করবে না। [ইমাম মুসলিম ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাজরে আসওয়াদ থেকে প্রথম তিন চক্কর রমল করেছেন এবং বাকী চারবার স্বাভাবিক হেঁটেছেন।]

২- ইযতিবা করা: তাওয়াফে কুদূমের সময় ইযতিবা করা। ইযতিবা হলো ডান বগলের নিচে চাদর রেখে ডান কাঁধ উন্মুক্ত রাখা। এটা শুধু পুরুষের জন্য প্রযোজ্য, নারীদের জন্য নয়। সাত বার তাওয়াফের পুরো সময়ই ইযতিবা করবে।

৩- হাজরে আসওয়াদ চুম্বন: তাওয়াফ শুরু করার সময় ও সম্ভব হলে প্রতি চক্করে হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করা। সম্ভব হলে রুকনে ইয়ামানী স্পর্শ করা।

৪- প্রথম চক্কর তাওয়াফ শুরু করার সময় এ দো‘আ পড়া:

«بسم اللّه واللّه أكبر . اللهم إيمانا بك وتصديقا بكتابك ووفاءً بعهدك واتباعا لسنة نبيك » .

“বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবর, হে আল্লাহ আপনার ওপর ঈমান, আপনার কিতাবের ওপর সত্যায়ন, আপনার ওয়াদা পূরণ ও আপনার নবীর অনুসরণে (আমি তাওয়াফ শুরু করছি)।”

৫- তাওয়াফের সময় দো‘আ করা: তাওয়াফের সময় আল্লাহর কাছে যে কোনো দো‘আ করতে পারে, তবে প্রত্যেক চক্কর শেষ করার সময় এ দো‘আ পড়া সুন্নাত:

﴿رَبَّنَآ ءَاتِنَا فِي ٱلدُّنۡيَا حَسَنَةٗ وَفِي ٱلۡأٓخِرَةِ حَسَنَةٗ وَقِنَا عَذَابَ ٱلنَّارِ ٢٠١﴾ [ البقرة : ٢٠١ ]

“হে আমাদের রব, আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দিন। আর আখিরাতেও কল্যাণ দিন এবং আমাদেরকে আগুনের ‘আযাব থেকে রক্ষা করুন”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২০১]

৬- তাওয়াফের সময় মুলতাযিমে দো‘আ করা। আর মুলতাযিম হলো হাজরে আসওয়াদ ও বাইতুল্লাহর দরজার মধ্যবর্তী জায়গা।

৭- সাত তাওয়াফ শেষে মাকামে ইবরাহীমে দু’রাকা‘আত সালাত আদায় করবে। এ সময় মাকামে ইবরাহীম তার ও কা‘বার মাঝখানে রেখে এর পিছনে দু রাকা‘আত সালাত আদায় করবে। প্রথম রাকা‘আতে সূরা আল-ফাতিহার পরে ‘সূরা আল-কাফিরূন’ এবং দ্বিতীয় রাকা‘আতে সূরা আল-ফাতিহার পরে সূরা আহাদ তথা কুল হুআল্লাহু আহাদ পড়বে।

৮- এ দু’রাকাত সালাত শেষে যমযমের পানি পান করবে।

৯- সা‘ঈ করার আগে হাজরে আসওয়াদের কাছে গিয়ে তা স্পর্শ করবে।

তৃতীয় রুকন: সা‘ঈ:

সা‘ঈ হলো সাফা ও মারওয়ার মাঝে ইবাদতের নিয়াতে হাঁটা। এটি হজ ও উমরার রুকন।

ক- সা‘ঈর শর্তাবলী:

সা‘ঈর শর্তাবলী নিম্নরূপ:

১- নিয়ত করা: কেননা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ»

“প্রত্যেক কাজ নিয়তের ওপর নির্ভরশীল” [সহীহ বুখারী, বাদউল অহী, হাদীস নং ১; সহীহ মুসলিম, আল-ইমারাহ, হাদীস নং ১৯০৭; তিরমিযী, ফাদাইলুল জিহাদ, হাদীস নং ১৬৪৭; নাসাঈ, ত্বাহারাত, হাদীস নং ৭৫; আবু দাউদ, ত্বলাক, হাদীস নং ২২০১; ইবন মাজাহ, যুহুদ, হাদীস নং ৪২২৭; আহমদ, ১/৪৩।]

২- তাওয়াফ ও সা‘ঈর মধ্যে তারতীব ঠিক রাখা। আগে তাওয়াফ করা, পরে সা‘ঈ করা।

৩- সা‘ঈর সাত চক্করের মাঝে ধারাবাহিকতা ও বিলম্ব না করা, তবে সামান্য বিলম্বে কোনো অসুবিধে হবে না, বিশেষ করে তা যদি প্রয়োজনে করা হয়।

৪- সাত চক্কর পূর্ণ করা। সাতের কম করলে বা কোনটি আংশিক করলে সা‘ঈ আদায় হবে না। যেহেতু সা‘ঈ মূলত সাত চক্কর পূর্ণ করার সাথে শর্তযুক্ত।

৫- বিশুদ্ধ তাওয়াফের পরে হওয়া, চাই তা ওয়াজিব তাওয়াফ হোক বা সুন্নাত তাওয়াফ।

খ- সা‘ঈর সুন্নাতসমূহ:

সা‘ঈর সুন্নাতসমূহ নিম্নরূপ:

১- পুরুষের জন্য দুই সবুজ চিহ্নিত জায়গা যেখানে ইসমাঈল আলাইহিস সালামের মা হাজের আলাইহাস সালাম পায়ের দ্বারা আঘাত করে চলেছেন সে জায়গা সাধ্যানুযায়ী দ্রুত অতিক্রম করা সুন্নাত। দুর্বল ও মহিলারা স্বাভাবিক গতিতে হাঁটবে।

২- দো‘আর জন্য সাফা ও মারওয়ায় উঠা।

৩- সাফা ও মারওয়ায় সাতবার সা‘ঈ করার সময় বেশি বেশি দো‘আ পড়া।

৪- সাফা ও মারওয়ায় তিনবার “আল্লাহু আকবর” ও এ দো‘আ পড়া:

«لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ، لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ، أَنْجَزَ وَعْدَهُ، وَنَصَرَ عَبْدَهُ، وَهَزَمَ الْأَحْزَابَ وَحْدَهُ»

“আল্লাহ ব্যতীত কোনো সত্য ইলাহ নেই, তিনি এক। তাঁর কোনো অংশীদার নেই। রাজত্ব তাঁরই। প্রশংসাও তাঁর। সকল বিষয়ের ওপর তিনি ক্ষমতাবান। আল্লাহ ব্যতীত কোনো সত্য ইলাহ নেই, তিনি এক। আল্লাহ তাঁর অঙ্গীকার পূর্ণ করেছেন ও তাঁর বান্দাকে সাহায্য করেছেন এবং একাই শত্রুদেরকে পরাজিত করেছেন”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২১৮।]

৫- তাওয়াফের সাথে সাথেই সা‘ঈ করা। তবে কোনো শর‘ঈ ওযর থাকলে ভিন্ন কথা।

চতুর্থ রুকন: ‘আরাফাতের ময়দানে অবস্থান

‘আরাফাতের ময়দানে অবস্থান বলতে ৯ যিলহজ যোহরের পর থেকে ১০ই যিলহজ ঈদের দিন ফজরের সালাতের পূর্ব পর্যন্ত সেখানে অবস্থানের নিয়াতে কিছুক্ষণ থাকা। কেউ ঈদের দিনের ফজরের সালাতের আগে অবস্থান করতে না পারলে তার ‘আরাফাতের ময়দানে অবস্থান শুদ্ধ হবে না এবং তার হজ বাতিল বলে গণ্য হবে। তখন সে উমরা করে হালাল হয়ে যাবে। পরের বছর সে উক্ত হজ পালন করবে। হজের ইহরাম বাঁধার সময় বাধাপ্রাপ্ত হলে হালাল হয়ে যাওয়ার শর্ত না করে থাকলে হাদীও প্রদান করতে হবে। কেউ বাইতুল্লায় যেতে শত্রু দ্বারা আক্রান্ত হলে হাদী পাঠাবে এবং যেখানে বাধা পাবে সেখানেই হালাল হয়ে যাবে।

কেউ অসুস্থ বা অর্থ হারিয়ে যাওয়ার কারণে হজে আসতে বাধাগ্রস্ত হলে তখন সে শর্তকারী হলে (সময় এ কথা বলা: আমার গন্তব্য সেখানেই শেষ যেখানে আমি বাধাগ্রস্ত হবো) তখন সেখানে হালাল হয়ে যাবে, তাকে কিছু হাদী হিসেবে দিতে হবে না। আর যদি শর্ত না করে থাকে তাহলে হালাল হবে এবং তার সাধ্যমত হাদী পাঠাতে হবে।

হজের ওয়াজিবসমূহ:

হজের ওয়াজিব সাতটি। তাহলো:

১ - মিকাত থেকে ইহরাম বাঁধা।

২- যে ব্যক্তি দিনের বেলায় ‘আরাফাতে অবস্থান করবে তার জন্য সূর্যাস্ত পর্যন্ত ‘আরাফাতে অবস্থান করা।

৩- কুরবানীর রাত মুযদালিফায় মধ্যরাতের বেশি অবস্থান করা।

৪- আইয়ামে তাশরীকে মিনার রাতগুলো মিনায় যাপন করা।

৫- ধারাবাহিকভাবে তিন জামরায় কঙ্কর নিক্ষেপ করা।

৬- মাথা মুণ্ডন বা চুল ছোট করা।

৭- বিদায়ী তাওয়াফ।

উমরার ওয়াজিবসমূহ:

উমরার ওয়াজিব দু’টি:

১- মক্কাবাসী হালাল এলাকা থেকে এবং মক্কার বাইরে থেকে আগতরা মিকাত থেকে ইহরাম বাঁধা।

২- মাথা মুণ্ডন বা চুল ছোট করা।

কেউ উপরোক্ত রুকনের কোনো একটি ছেড়ে দিলে তার হজ ও উমরা আদায় হবে না।

কারো হজ ও উমরার ওয়াজিব ছুটে গেলে তাকে দম (প্রাণি যবাই) দিতে হবে। তবে সুন্নাত ছুটে গেলে তাকে কিছু দিতে হবে না।

ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজসমূহ:

হজ বা উমরা অবস্থায় এসব নিষিদ্ধ কাজ করলে তার ওপর ফিদিয়া তথা যবেহ করা ওয়াজিব হয়। অথবা মিসকীনদের খাদ্য দান করতে হবে। অথবা সাওম পালন করবে। হজ অথবা উমরার ইহরাম বাঁধলে নিম্নোক্ত কাজসমূহ নারী পুরুষ উভয়ের জন্য করা হারাম:

১- শরীরের যেকোনো অঙ্গ থেকে চুল মুণ্ডানো, কাটা অথবা উপড়ে ফেলা।

২- হাত ও পায়ের নখ কাটা।

৩- এমন কোনো কাপড় দিয়ে পুরুষের মাথা ঢেকে রাখা যা মাথার সাথে লেগে থাকে। নারীদের চেহারা ঢেকে রাখা, তবে ভিনপুরুষ থাকলে ঢেকে রাখবে।

৪- পুরুষের ক্ষেত্রে সেলাই-করা পোশাক পরা। সেলাই করা পোশাক অর্থ এমন পোশাক যা মানুষের শরীরের মাপে অথবা কোনো অঙ্গের মাপে সেলাই করে তৈরি করা হয়েছে, যেমন স্বাভাবিক পরিধানের পোশাক, প্যান্ট-পাজামা, জামা, ইত্যাদি।

৫- সুগন্ধি লাগানো।

৬- ভক্ষণ করা হয় এমন স্থলজ শিকার-জন্তু হত্যা করা বা শিকার করা।

৭- বিবাহ করা।

৮- সহবাস করা। প্রথম তাহাল্লুল হওয়ার আগে (১০ তারিখ মাথা মুণ্ডানো বা চুল ছোট করার পূর্বে) সহবাস করলে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের হজ বাতিল হয়ে যাবে। তাকে বাতিল হওয়া সত্বেও তাকে বুদনা তথা পূর্ণ একটি উট দম হিসেবে দিতে হবে, হজের বাকী কাজ পূর্ণ করতে হবে এবং পরের বছর আবার হজ করতে হবে। আর প্রথম তাহাল্লুল (১০ তারিখ মাথা মুণ্ডানো বা চুল ছোট করার পরে) সহবাস হলে তার হজ বাতিল হবে না, তবে তাকে ছাগল দম হিসেবে যবাই করতে হবে।

৯- স্ত্রীর যৌনাঙ্গ ছাড়া অন্যভাবে সহবাস করলে এতে বীর্যাপাত হলে বুদনা ওয়াজিব হবে আর বীর্যাপাত না হলে ছাগল ওয়াজিব হবে। তবে উভয় অবস্থাতেই হজ বাতিল হবে না।

ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজের বিধানের ক্ষেত্রে মহিলারা পুরুষের মতোই; তবে সেলাইকৃত কাপড় পরিধান করার ব্যাপারে আলাদা। তারা ইচ্ছামতো সেলাইকৃত জামা-কাপড় পরতে পারবে তবে তা অশ্লীল হতে পারবে না। তারা মাথা ঢেকে রাখবে এবং চেহারা খোলা রাখবে, তবে গাইরে মুহরিম তথা পরপুরুষ থাকলে চেহারাও ঢেকে রাখবে।

হজে তিনটি কাজের যেকোন দু’টি কাজ করলে প্রথম তাহাল্লুল বা প্রাথমিকভাবে নিষেধাজ্ঞামুক্ত হয়ে যায়। সেগুলো হচ্ছে:

১- তাওয়াফ

২- পাথর নিক্ষেপ ও

৩- মাথার চুল মুণ্ডানো বা কাটা।

তামাত্তু হজ পালনকারী মহিলা তাওয়াফের আগে হায়েযগ্রস্ত হলে এবং সে হজের কার্যক্রম ছুটে যাওয়ার আশঙ্কা করলে তখন সে ইহরাম বাঁধবে এবং এতে সে ক্বারিন হজকারী হিসেবে গণ্য হবে। হায়েয ও নিফাসগ্রস্ত নারীরা তাওয়াফ ব্যতীত হজের সব কাজ করবে, শুধু তাওয়াফটি পবিত্র হলে আদায় করবে।

মুহরিম ব্যক্তির জন্য খাওয়া যোগ্য পশু যেমন, মুরগি ইত্যাদি যবেহ করা বৈধ। হিংস্র ও ক্ষতিকর প্রাণী যেমন, সিংহ, নেকড়ে বাঘ, চিতাবাঘ, সাপ, বিচ্চু, ইঁদুর ও সব ধরণের ক্ষতিকর প্রাণি হত্যা করা জায়েয। এমনিভাবে তার জন্য সামুদ্রিক প্রাণী শিকার করা ও খাওয়া জায়েয।

মুহরিম ও গাইরে মুহরিম সকলের জন্য মক্কার হারাম এলাকার গাছ কাটা ও আগাছা উপড়ে ফেলা হারাম। তবে ইযখির কাটা যাবে। এমনিভাবে হারাম এলাকার প্রাণীও হত্যা করা হারাম। কেউ এসব করলে তাকে ফিদিয়া দিতে হবে। মদীনার হারাম সীমানা থেকেও গাছ কাটা হারাম, তবে কেউ গাছ কেটে ফেললে তাকে কিছু ফিদিয়া দিতে হবে না।

কারো উল্লিখিত সহবাস ব্যতীত ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজের কোনো একটি করার বিশেষ প্রয়োজন দেখা দিলে যেমন, মাথার চুল মুণ্ডানো বা সেলাইকৃত পোশাক পরা ইত্যাদি করলে তাকে ফিদিয়া দিতে হবে। সে নিচের যেকোন একটি আদায়ের মাধ্যমে এ ফিদিয়া আদায় করতে পারবে। সেগুলো হলো:

১- তিনদিন সাওম পালন করবে।

২- অথবা ছয়জন মিসকীনকে খাদ্য দিবে। প্রত্যেককে এক মুদ গম বা চাল বা এ জাতীয় খাদ্য দান করতে হবে।

৩- অথবা ছাগল যবেহ করতে হবে।

কেউ অজ্ঞতাবশত বা ভুলে বা জোরপূর্বক ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজ করলে সে গুনাহগার হবে না এবং তাকে কোনো ফিদিয়াও দিতে হবে না। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذۡنَآ إِن نَّسِينَآ أَوۡ أَخۡطَأۡنَا﴾ [ البقرة : ٢٨٦ ]

“হে আমাদের রব! আমরা যদি ভুলে যাই, অথবা ভুল করি তাহলে আপনি আমাদেরকে পাকড়াও করবেন না।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২৮৬]

কেউ ইহরাম অবস্থায় ইচ্ছাকৃত স্থলজ প্রাণী হত্যা করলে তাকে অনুরূপ প্রাণী ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, উক্ত প্রাণী যবাই করে হারামের অধিবাসী মিসকীনদেরকে খাদ্য খাওয়াতে হবে অথবা এর মূল্যে খাদ্য ক্রয় করে তা মিসকীনকে খাওয়াতে হবে, প্রত্যেক মিসকীনকে এক মুদ পরিমাণ খাদ্য দিতে হবে। অথবা প্রত্যেক মুদের পরিবর্তে একদিন সাওম পালন করতে হবে। আর হত্যাকৃত প্রাণীর যদি অনুরূপ প্রাণী পাওয়া না যায় তাহলে তাকে উক্ত প্রাণীর মূল্য ধার্য করে সে মূল্য দ্বারা খাদ্য ক্রয় করে তা হারামের অধিবাসী মিসকীনদেরকে খাদ্য খাওয়াতে হবে। প্রত্যেক মিসকীনকে এক মুদ পরিমাণ খাদ্য দিতে হবে। অথবা প্রত্যেক মুদের পরিবর্তে একদিন সাওম পালন করতে হবে।

বীর্যপাত ছাড়া সহবাসের ফিদিয়া উপরোক্ত বিশেষ প্রয়োজনে ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজে লিপ্ত হওয়ার ফিদিয়ার মতোই। অর্থাৎ সাওম পালন বা খাদ্য দান বা ছাগল যবেহ করা।

আর হজে প্রাথমিক নিষেধাজ্ঞামুক্ত হওয়ার আগে সহবাস করলে বুদনা (উট) ফিদিয়া দিতে হবে। উট যবেহ করতে অক্ষম হলে হজের দিনগুলোতে তিনদিন ও হজের পরে বাড়ি ফিরে বাকী সাত দিন সাওম পালন করতে হবে। আর প্রাথমিক নিষেধাজ্ঞামুক্ত হওয়ার পরে সহবাস করলে শুধু কষ্টের কারণে করা কাজের ফিদিয়া (অর্থাৎ সাওম পালন বা মিসকীনকে খাদ্য দান বা ছাগল যবেহ করা) দিলেই হবে।

তামাত্তু‘ ও ক্বারিন হজ আদায়কারী মক্কাবাসী না হলে তাদের ওপর হাদী তথা ছাগল বা উটের সাত ভাগের একভাগ বা গরুর সাত ভাগের একভাগ যবেহ করা ওয়াজিব। আর কেউ হাদী যবেহ করতে না পারলে সে হজের দিনগুলোতে তিনদিন ও বাড়ি ফিরে বাকী সাত দিন সাওম পালন করবে।

হজ পালনে বাধাগ্রস্ত ব্যক্তি হাদী যবেহ করতে না পারলে দশ দিন সাওম পালন করে হালাল হবে।

কেউ একই ধরনের নিষিদ্ধ কাজ বারবার সম্মুখীন হলে সে ফিদিয়া আদায় না করে থাকলে একবার ফিদিয়া আদায় করলেই হবে, তবে শিকার করলে তার জন্য আলাদা আলাদা ফিদিয়া দিতে হবে। আর কেউ ভিন্ন ধরণের নিষিদ্ধ কাজ একাধিক বার করলে যেমন, একবার মাথা মুণ্ডন করলো, তারপরে নখ কাটলো তাকে প্রত্যেকটি কাজের জন্য আলাদা আলাদা ফিদিয়া আদায় করতে হবে।

মিকাত

মিকাতের প্রকারভেদ:

মিকাত দু’প্রকার। তাহলো:

১- মিকাত যামানী বা সময়ের মিকাত। তা হলো হজের মাসসমূহ। অর্থাৎ শাওয়াল, যিলকদ ও যিলহজ মাস।

২- মিকাতে মাকানী বা স্থানের মিকাত। হজ বা উমরা পালনকারীকে ইহরামের নিয়ত ব্যতীত এ সব স্থান অতিক্রম করা হারাম। এগুলো পাঁচটি:

ক- যুলহুলাইফা: যুলহুলাইফা মদীনাবাসী ও মদীনার দিক থেকে আসা জল, স্থল বা আকাশসীমার হাজীদের মিকাত। এটি মক্কা থেকে ৪৩৫ কি.মি দূরে এবং মক্কা থেকে সবচেয়ে দূরবর্তী মিকাত।

খ- আল-জুহফা: এটি সিরিয়া, মিসরসহ সে দিক থেকে আসা জল, স্থল বা আকাশসীমার হাজীদের মিকাত। এটি রাবেগ শহরের কাছে অবস্থিত মক্কা থেকে ১৮০ কি.মি দূরে অবস্থিত। বর্তমানে লোকেরা সেটার বদলে রাবেগ শহর থেকে ইহরাম বাঁধে।

গ- ইয়ালামলাম: এটি ইয়েমেন ও ইয়ামেনের দিক থেকে আসা জল, স্থল বা আকাশসীমার হাজীদের মিকাত। এটি মূলতঃ একটি উপত্যকা যা মক্কা থেকে ৯২ কি.মি দূরে অবস্থিত।

ঘ- কারনুল মানাযিল: এটি নাজদ, তায়েফ ও এদিক থেকে দিক থেকে আসা জল, স্থল বা আকাশসীমার হাজীদের মিকাত। বর্তমানে এর নাম ‘আস-সাইলুল কাবীর’। মক্কা থেকে ৭৫ কি.মি দূরে অবস্থিত। ওয়াদি মুহাররাম কারনুল মানাযিলের সবচেয়ে উঁচু স্থান।

ঙ- যাতু ইরক: এটি ইরাক, খোরাসান, নজদের মধ্য অঞ্চল ও উত্তরাঞ্চল ও এর ওপারের দেশবাসীদের দিক থেকে আসা জল, স্থল বা আকাশসীমার হাজীদের মিকাত। এটি একটি উপত্যকা। এটি ‘দরীবা’ নামে পরিচিত। এটি মক্কা থেকে প্রায় ১০০ কি.মি দূরে অবস্থিত।

এসব মিকাত উপরোক্ত অঞ্চলে বসবাসকারী ও যারা এ দিক থেকে হজ ও উমরা আদায় করার জন্য অতিক্রম করবে তাদের মিকাত।

যাদের বাড়ি উপরোক্ত মিকাতের অভ্যন্তরে মক্কার দিকে, তাদের হজ ও উমরার মিকাত নিজের ঘর থেকে শুরু করতে হবে। তবে যাদের বাড়ি মক্কার মধ্যে তারা হারাম এলাকার বাড়ি থেকে বের হয়ে ‘হিল’ বা হালাল এলাকায় এসে উমরার নিয়ত করবে। আর হজের জন্য মক্কায় বসেই নিয়ত করবে।

যাদের পথ এসব মিকাতের পথে পড়ে না তারা তাদের মিকাতের সর্বাধিক কাছাকাছি ও সমান সীমায় পৌঁছলে সেখান থেকে ইহরাম বাঁধবে। চাই তারা বিমান বা গাড়ি বা নৌযান যেকোনো পথে আসুক।

ইহরাম ছাড়া এসব মিকাত অতিক্রম করা জায়েয নেই। কেউ ইহরাম ছাড়া এসব স্থান অতিক্রম করলে তাকে সেখানে ফিরে যেতে হবে এবং সেখান থেকে ইহরাম বাঁধতে হবে। আর যদি সেখানে ফিরে যাওয়া সম্ভব না হয় তাহলে যেখানে আছে সেখান থেকেই ইহরাম বাঁধবে এবং তাকে দম দিতে হবে। তার হজ ও উমরা সহীহ হবে। আর মিকাতের আগে থেকেই ইহরাম বাঁধলে মাকরূহসহ জায়েয হবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন