hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সহজ ফিকহ শিক্ষা

লেখকঃ ড. সালিহ ইবন গানিম আস-সাদলান

৩৯
দ্বিতীয় অধ্যয়: মু‘আমালাত তথা লেনদেন ১- বাই‘ তথা বেচাকেনা
ক- বাই‘ তথা বেচাকেনার পরিচিতি:

বাই‘ ( البيع )শব্দটি ( باع )এর মাসদার। শাব্দিক অর্থ মালের বিনিময় মাল নেওয়া বা বিনিময় পরিশোধ করে তার বিনিময়ে বস্তু গ্রহণ করা।

পারিভাষিক অর্থে বেচাকেনা হলো, এমন আর্থিক লেনদেন যা নির্দিষ্ট বস্তু বা কোনো উপকারের স্থায়ী মালিকানা সাব্যস্ত করে। যা কোনো নৈকট্য অর্জনের উদ্দেশ্যে সংঘটিত হয় না।

বাই‘ তথা বেচাকেনার হুকুম:

বাই‘ তথা বেচাকেনা জায়েয হিসেবে শরী‘আতসম্মত। কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা ও কিয়াসের ভিত্তিতে এটা জায়েয হওয়া প্রমাণিত।

খ- বাই‘ তথা বেচাকেনা জায়েয হওয়ার হিকমত:

যেহেতু অর্থ, পণ্য ও বস্তু বিভিন্ন মানুষের কাছে ছড়িয়ে আছে। একজন মানুষ অন্যের কাছে যা আছে তার প্রতি মুখাপেক্ষী। আবার উক্ত ব্যক্তি যেহেতু বিনিময় পরিশোধ ছাড়া অন্যকে বস্তুটি দিবে না সেহেতু বেচাকেনা জায়েয করা হয়েছে। বেচাকেনা বৈধ হওয়ার দ্বারা মানুষ তার অভাব পূরণ করতে সক্ষম হয় এবং তার প্রয়োজনীয় জিনিস লাভ করতে পারে। এজন্যই আল্লাহ মানুষের এসব প্রয়োজন মিটাতে বেচাকেনা হালাল করেছেন।

বাই‘ তথা বেচাকেনার রুকনসমূহ:

বেচাকেনার রুকন হলো:

১- সিগাহ তথা বেচাকেনার শব্দ: ইজাব তথা বেচাকেনার প্রস্তাব ও কবুল তথা প্রস্তাবনা গ্রহণ করা।

২- ক্রেতা ও বিক্রেতা।

৩- বেচাকেনার বস্তু ও দাম।

সিগাহ তথা বেচাকেনার শব্দ:

ক্রেতা ও বিক্রেতার একজনের বেচাকেনার প্রস্তাব ও অন্যজনের গ্রহণ করার শব্দ বা যেসব শব্দ বেচাকেনার ওপর উভয়ের সন্তুষ্টি বুঝায় তাই বেচাকেনার শব্দ। যেমন বিক্রেতা বলল, আমি এ জিনিসটি এমন কিছুর বিনিময়ে আপনার কাছে বিক্রি করলাম বা আপনাকে দিলাম বা আপনাকে মালিক বানালাম ইত্যাদি। আর ক্রেতা তথা খরিদদার বলল, আমি জিনিসটি ক্রয় করলাম বা মালিক হলাম বা ক্রয় করলাম বা গ্রহণ করলাম বা এ জাতীয় কোনো শব্দ বলা।

কর্মবাচক ক্রিয়া দ্বারা বেচাকেনা বিশুদ্ধ হবে, চাই তা ক্রেতা-বিক্রেতা যে কোনো একই ব্যক্তির পক্ষ থেকে হোক কিংবা ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের পক্ষ থেকেই হোক।

টেলিফোনে বেচাকেনা:

টেলিফোনে কথা বলা বেচাকেনার বৈঠক হিসেবে ধর্তব্য। ফোনে কথা শেষ হওয়া মানে এ বৈঠক সমাপ্ত হওয়া। কেননা ‘উরফ তথা প্রচলিতভাবে ফোনে কথা শেষ মানে উভয়ের বেচাকেনা শেষ বলেই ফয়সালা করা হয়।

বেচাকেনা শুদ্ধ হওয়ার শর্তাবলী:

বেচাকেনা শুদ্ধ হওয়ার শর্ত সাতটি। সেগুলো হচ্ছে:

১- ক্রেতা ও বিক্রেতা বা তাদের স্থলাভিষিক্ত উভয়ের সন্তুষ্ট।

২- ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের বেচাকেনা জায়েয হওয়া অর্থাৎ উভয়ে স্বাধীন, মুকাল্লাফ তথা শরী‘আতের বিধানের উপযোগী হওয়া এবং জ্ঞানবান হওয়া।

৩- বিক্রয়ের জিনিসটির ব্যবহার বৈধ হওয়া। অতএব সেসব জিনিস বেচা-কেনা করা জায়েয নেই যেসব জিনিস ব্যবহারে কোনো উপকার নেই (অর্থাৎ বেহুদা জিনিস) বা যেসব জিনিস ব্যবহার করা হারাম, যেমন: মদ, শূকর ইত্যাদি অথবা যাতে এমন উপকার রয়েছে যা কেবল নিরুপায় হলেই ব্যবহার করা যায় যেমন মৃতপ্রাণি।

৪- বেচাকেনার সময় বিক্রিত জিনিস বিক্রেতা বা তার পক্ষ থেকে বিক্রির জন্য অনুমোদিত ব্যক্তির মালিকানায় থাকা।

৫- বিক্রিত জিনিসটি সম্পর্কে জ্ঞান থাকা, তার গুণাগুণ জানা ও দেখার মাধ্যমে।

৬- বিক্রয়ের জিনিসের দাম নির্দিষ্ট থাকা।

৭- বিক্রয়ের জিনিসটি হস্তান্তরযোগ্য হওয়া। অতএব, পলাতক বা হাওয়ায় উড়ন্ত কোনো কিছু ইত্যাদি বেচাকেনা করা শুদ্ধ হবে না।

বেচাকেনার মধ্যে শর্ত প্রদানের বিধান:

বেচাকেনার মধ্যে শর্তাবলী দুভাগে বিভক্ত। প্রথম প্রকার সহীহ শর্ত, যাতে বেচাকেনা অত্যাবশ্যকীয় হয়ে যায়, আর দ্বিতীয় প্রকার ফাসিদ শর্ত, যাতে বেচাকেনা চুক্তি বাতিল হয়ে যায়। বেচাকেনার মধ্যে সহীহ শর্ত যেমন, মূল্য পুরোটাই বা সুনির্দিষ্ট অংশ বাকী রাখা বা সুনির্দিষ্ট বস্তু বন্ধক রাখা বা সুনির্দিষ্ট বস্তু গ্যারান্টি হিসেবে রাখা। কেননা এসব শর্ত বেচাকেনার সুবিধার্থেই করা হয়। অথবা বিক্রিত জিনিসের ক্ষেত্রে কোনো গুণাগুণ থাকা শর্ত করা। কারণ হাদীসে এসেছে,

«الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ»

“মুসলিমের উচিৎ সন্ধির শর্তের উপর স্থির থাকা।”। [আবু দাউদ, আকদিয়্যাহ, হাদীস নং ৩৫৯৪।]

অনুরূপভাবে ক্রেতা তার বিক্রিত জিনিসের ওপর নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিক্রেতার কাছে উপকারের শর্তারোপ করা সহীহ। যেমন, বসতঘরে একমাস থাকার শর্তারোপ করা।

আর ফাসিদ শর্ত, তা দু’প্রকার। তন্মধ্যে কিছু ফাসিদ শর্ত আছে যা মূল বেচাকেনাকেই বাতিল করে দেয়। যেমন, এক বেচাকেনার ওপর আরেকটি বেচাকেনার শর্ত জুড়ে দেওয়া, উদাহরণত: ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে অগ্রিম হাওলাত দেওয়ার শর্ত কিংবা অন্য কিছু বিক্রি করার শর্ত, অথবা ইজারা দেওয়ার শর্ত অথবা ঋণ দেওয়ার শর্ত জুড়ে দেওয়া।

আবার কিছু শর্ত আছে যাতে বেচাকেনা বাতিল হয় না তবে শর্ত বাতিল হয়ে যায়। যেমন, কারও পক্ষ থেকে এমন শর্ত দেওয়া যে, বিক্রিত জিনিসের কোনো লোকসান তার ওপর বর্তাবে না বা ক্রয়-বিক্রয়ের জিনিস চালু রাখবে নতুবা সে তা ফেরত দিবে। অথবা জিনিসটিকে ক্রেতা বিক্রি করতে পারবে না বা দান করতে পারবে না। তবে এসব শর্ত যদি কোনো নির্দিষ্ট স্বার্থ সংরক্ষণ করে তখন সে শর্ত দেওয়া শুদ্ধ হবে।

নিষিদ্ধ বেচাকেনা:

যেসব জিনিস কল্যাণকর ও বরকতময় সেসব জিনিসে ইসলাম বেচাকেনা বৈধ করেছে। যেসব বেচাকেনার মধ্যে অস্পষ্টতা বা অজ্ঞতা বা ধোকা বা মানুষের জন্য ক্ষতিকর বা কারো ওপর আক্রমণের আশঙ্কা থাকে ইত্যাদি যা মানুষের মধ্যে হিংসা-বিদ্বেষ, ঝগড়া ও মনোমালিন্য সৃষ্টি হয় সেসব বেচাকেনা ইসলাম হারাম করেছে। এসব বেচাকেনার মধ্যে অন্যতম:

১- আল-মুলামাসা: (ছোয়া-স্পর্শের বেচাকেনা)

যেমন কেউ কাউকে বলল, আপনি যে কাপড়টিই স্পর্শ করবেন তা এত টাকার বিনিময়ে আপনার। এ ধরনের বেচা-কেনা ফাসিদ। কেননা এতে অজ্ঞতা ও ধোকা রয়েছে।

২- বাই‘য়ুল মুনাবাযা: (নিক্ষেপ-ছোঁড়ার বেচা-কেনা)

যেমন, এভাবে বলা, যে কাপড়টি আপনি আমার দিকে ছুঁড়ে মারবেন তা এত টাকার বিনিময়ে আপনার। এ ধরণের বেচা-কেনাও ফাসিদ। কেননা এতে অজ্ঞতা ও ধোকা রয়েছে।

৩- বাই‘য়ুল হুসাত: (ঢিল ছোঁড়ার বেচাকেনা)

যেমন কেউ এভাবে বলা, আপনি এ কঙ্করটি নিক্ষেপ করুন, তা যে জিনিসটির ওপর পরবে তা এত টাকার বিনিময়ে আপনার। এ ধরণের বেচাকেনাও ফাসিদ। কেননা এতে অজ্ঞতা ও ধোকা রয়েছে।

৪- বাই‘য়ুন নাজশ: (দালালীর বেচাকেনা)

কেউ মূল্য বৃদ্ধির জন্য অন্যকে শোনানোতে কোনো জিনিসের দাম বলা অথচ সে জিনিসটি কিনবে না। এ ধরণের বেচাকেনা হারাম। কেননা এতে ক্রেতাকে ধোকা দেওয়া হয় এবং তাকে প্রতারিত করা হয়।

৫- বাই‘আতাইন ফী বাই‘আহ (এক বেচাকেনায় দু’টি বেচাকেনা থাকা)

যেমন কেউ বলল, আমি আপনার কাছে এ জিনিসটি বিক্রয় করলাম এ শর্তে যে আপনি আমার কাছ ঐ জিনিসটি বিক্রি করবেন বা আপনি আমার কাছ থেকে এ জিনিসটি ক্রয় করবেন। অথবা এভাবে বলা, এ জিনিসটি আপনার কাছে নগদ দশ টাকায় বা বাকীতে বিশ টাকায় বিক্রি করলাম এবং দু’টির একটি নির্দিষ্ট না করেই দুজনে আলাদা হয়ে যাওয়া। এ ধরণের বেচাকেনা সহীহ নয়; কেননা এ ধরণের বেচাকেনায় প্রথম অবস্থায় বিক্রিটি শর্তের সাথে ঝুলে থাকে, আর দ্বিতীয় অবস্থায় বেচাকেনার মূল্য স্থির হয় নি।

৬- শহরের লোক গ্রামের কারও বিক্রেতা হওয়া:

অর্থাৎ গ্রামের কেউ শহরে পণ্য নিয়ে আসার আগেই তার থেকে কম মূল্যে ক্রয় করে বেশি মূল্যে বিক্রি করা: দৈনিক বাজারদরের চেয়ে বেশি মূল্যে দালালদের বেচাকেনা।

৭- একজনের বেচাকেনার ওপর আরেকজনের বেচাকেনা:

যেমন কেউ একটি জিনিস দশ টাকায় ক্রয় করতে চাইলে তাকে বলা যে, এটি আমার থেকে নয় টাকায় ক্রয় করতে পারবে।

৮- কোনো বস্তু হস্তগত করার আগেই তা আবার বিক্রি করা।

৯- বাই‘য়ুল ‘ঈনাহ:

যেমন কোনো বস্তু নির্দিষ্ট মেয়াদে বিক্রি করে অতঃপর তার থেকে নগদে অল্প দামে ক্রয় করা।

১০- জুমু‘আর সালাতের দ্বিতীয় আযান হলে যাদের ওপর জুমু‘আর সালাত আদায় করা ফরয তাদের বেচাকেনা।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন