মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
الوقف (ওয়াকফ) শব্দটি وقف এর মাসদার। এর বহুবচন أوقاف যেমন বলা হয়, ( وقف الشيء وأوقفه وحبسه وأحبسه وسبّله ) কোনো কিছু ওয়াকফ করা, আটকে রাখা, উৎসর্গ করা। সবগুলোই একই অর্থে ব্যবহৃত হয়।
আর পারিভাষিক অর্থে, বস্তুর মূল স্বত্ব ধরে রেখে (মালিকানায় রেখে) এর উপকারিতা ও সুবিধা প্রদান করা।
২- ওয়াকফ শরী‘আতসম্মত হওয়ার মূল দলীল:
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাত ও উম্মতের ইজমার দ্বারা ওয়াকফ শরী‘আতসম্মত হয়। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাত হলো, সহীহ বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত হাদীস,
“(উমার ইবন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু খায়বারে কিছু জমি লাভ করেন। তিনি এ জমির ব্যাপারে পরামর্শের জন্য রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এলেন) এবং বললেন, ‘ইয়া রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমি খায়বারে এমন উৎকৃষ্ট কিছু জমি লাভ করেছি যা ইতোপূর্বে আর কখনো পাই নি। আপনি আমাকে এ ব্যাপারে কী আদেশ দেন? রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “তুমি ইচ্ছা করলে জমির মূল স্বত্ত্ব ওয়াকফে আবদ্ধ করতে এবং উৎপন্ন বস্তু সাদকা করতে পার।” বর্ণনাকারী ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেন, উমার ইবন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এ শর্তে তা সদকা (ওয়াকফ) করেন যে, তা বিক্রি করা যাবে না, তা দান করা যাবে না এবং কেউ এর উত্তরাধীকারী হবে না”। [সহীহ বুখারী, শুরুত, হাদীস নং ২৫৮৬; সহীহ মুসলিম, অসিয়্যাহ, হাদীস নং ১৬৩৩; তিরমিযী, আহকাম, হাদীস নং ১৩৭৫; নাসাঈ, আহবাস, হাদীস নং ৩৬০৪; আবু দাউদ, ওয়াসাইয়া, হাদীস নং ২৮৭৮; ইবন মাজাহ, আহকাম, হাদীস নং ২৩৯৬; মুসনাদ আহমদ, ২/৫৫।]
ফলে উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর উৎপন্ন বস্তু অভাবগ্রস্ত, আত্মীয়-স্বজন, দাসমুক্তি, আল্লাহর রাস্তায়, মুসাফির ও মেহমানদের জন্য সদকা করে দেন। বর্ণনাকারী আরও বলেন, যিনি এর মুতাওয়াল্লী হবে তার জন্য সম্পদ সঞ্চয় না করে যথাবিহীত খাওয়া কোনো দোষের বিষয় নয়।
ওয়াকফ শুধু মুসলিমদের বৈশিষ্ট্য। জাবির রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীগণের যাদেরই সামর্থ ছিলো তারা সকলেই ওয়াকফ করেছেন।
উপরোক্ত আলোচনার দ্বারা এটি প্রমাণিত হয় যে, বর্তমানে মানুষ যা করে তা আসলে সাহাবীগণের কাজের বিপরীত। কেননা বর্তমানে মানুষ সাধারণত অসিয়ত করে থাকেন, ওয়াকফ করেন না।
৩- ওয়াকফ শরী‘আতসম্মত হওয়ার হিকমত:
১- আল্লাহ যাদেরকে ধন-সম্পদ দিয়ে প্রশস্ত করেছেন তাদের কল্যাণকর ও তাঁর আনুগত্যের কাজে কিছু দান করতে তিনি উৎসাহিত করেছেন যাতে তাদের সম্পদ তাদের মৃত্যুর পরেও এর মূলস্বত্ব অবশিষ্ট থেকেও এর ফায়েদা মানুষ ভোগ করতে পারে এবং তার জীবন শেষ হলেও এর সাওয়াব উক্ত ব্যক্তি পেতে পারে। হতে পারে তার মৃত্যুর পরে তার ওয়ারিশরা তার সম্পদ যথাযথ হিফাযত করবে না, ফলে তার আমল শেষ হয়ে যাবে এবং এতে তার পরিণাম দুর্দশাগ্রস্ত হবে। এসব সম্ভাবনা দূরীকরণে এবং কল্যাণকর কাজে অংশীদার হতে ইসলাম মানুষের জীবদ্দশায় ওয়াকফ করার পদ্ধতি শরী‘আতসম্মত করেছে। যাতে ওয়াকফকারী নিজে মরে যাওয়ার পরেও এসব ভালো কাজে সম্পৃক্ত থাকতে পারে, ফলে তিনি জীবদ্দশায় যেভাবে দান করতে চাইতেন মরনের পরেও সেভাবে সাওয়াব পাবেন।
২- মসজিদ, মাদ্রাসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইত্যাদি কল্যাণকর কাজ এবং এসবের দেখভাল ও রক্ষণাবেক্ষণের মূল হলো ওয়াকফ করা। যুগে যুগে যেসব মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তার অধিকাংশ ওয়াকফের দ্বারাই হয়েছে। এমনকি মসজিদে ব্যবহৃত আসবাবপত্র, বিছানা, কার্পেট, পরিস্কার পরিচ্ছন্নের জিনিসপত্র ও মসজিদ রক্ষণাবেক্ষণে নিয়োজিত ব্যক্তিদের যাবতীয় খরচ এসব ওয়াকফের মাধ্যমেই হয়ে থাকে।
৪- ওয়াকফের শব্দাবলী:
ওয়াকফের স্পষ্ট কিছু শব্দ আছে, তা হলো:
( وقفت ) আমি ওয়াকফ করলাম বা ( حبست ) আমি এর মূল মালিকানা আটকে ওয়াকফ রাখলাম বা ( سبّلت ) আমি আল্লাহর রাস্তায় ওয়াকফ করলাম।
আর ওয়াকফের অস্পষ্ট ও ঈঙ্গিতপূর্ণ শব্দ হলো:
( تصدقت ) আমি দান করলাম বা ( حرّمت ) আমি এটি আমার জন্য হারাম করলাম বা ( أبدت ) আমি মানুষের জন্য সারাজীবনের জন্য দান করলাম।
তবে অস্পষ্ট ও ঈঙ্গিতপূর্ণ শব্দে ওয়াকফ করলে নিচের তিনটি জিনিসের যে কোনো একটি পাওয়া যেতে হবে।
১- ওয়াকফের নিয়ত করা। কেউ এসব শব্দ বলে ওয়াকফের নিয়ত করলে ওয়াকফ হয়ে যাবে।
২- এসব অস্পষ্ট ও ঈঙ্গিতপূর্ণ শব্দ বলার সাথে স্পষ্ট শব্দ পাওয়া গেলে বা অন্য ঈঙ্গিতপূর্ণ শব্দ পাওয়া যায় তাহলেও ওয়াকফ হবে। যেমন, এভাবে বলা,
تصدقت بكذا صدقة موقوفة أو محبّسة أو مسبّلة أو مؤبدة أو محرمة .
“আমি এটি ওয়াকফ হিসেবে দান করলাম বা মূলস্বত্ব রেখে ওয়াকফ হিসেবে দান করলাম বা উৎসর্গ করলাম বা সারাজীবনের জন্য দান করলাম বা এটি আমার জন্য হারাম”।
৩- ওয়াকফের বস্তুটি নিম্নোক্ত শব্দাবলী দ্বারা বর্ণনা করা। যেমন, বলা
محرمة لا تباع ولا توهب .
ওয়াকফের বস্তুটি আমার জন্য হারাম, তা বিক্রি করা যাবে না, তা দান করা যাবে না।
শব্দ উচ্চারণের মাধ্যমে যেমন ওয়াকফ করা যায় তেমনি ব্যক্তির কাজের দ্বারাও ওয়াকফ করা যায়। যেমন কেউ নিজের জমিতে মসজিদ নির্মাণ করল এবং লোকজনকে তাতে সালাত আদায় করতে অনুমতি দিলো।
৫- ওয়াকফের প্রকারভেদ:
প্রথম থেকে ওয়াকফটি কাদের জন্য করা হয়েছে সে হিসেবে ওয়াকফ দু’প্রকার।
১- খাইরী তথা কল্যাণকর কাজে ওয়াকফ।
২- আহলী তথা পরিবার পরিজনের জন্য ওয়াকফ।
১- খাইরী তথা কল্যাণকর কাজে ওয়াকফ:
ওয়াকফকারী শুরু থেকেই জনকল্যাণকর কাজে বস্তুটি ওয়াকফ করল; যদিও তা নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য। এরপরে ওয়াকফটি নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য হবে। যেমন কেউ হাসপাতাল বা মাদ্রাসার জন্য জমি ওয়াকফ করল। অতঃপর পরবর্তীতে তা তার সন্তানদের জন্য হবে।
২- আহলী তথা পরিবার পরিজনের জন্য ওয়াকফ:
শুরুতে নিজের বা নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের নামে ওয়াকফ হবে। পরবর্তীতে তা জনকল্যাণ কাজে ওয়াকফ হবে। যেমন কেউ তার নিজের নামে ওয়াকফ করল, অতঃপর তা তার সন্তানদের হবে, অতঃপর তা জনকল্যাণ কাজে ওয়াকফ হবে।
৬- যেসব জিনিস ওয়াকফ করা যায়:
ওয়াকফের স্থান তথা যেসব জিনিস ওয়াকফ করা যায় তা হলো মূল্যবান স্থাবর সম্পত্তি যা ব্যক্তির মালিকানায় বর্তমান রয়েছে। যেমন, জমি, ঘর-বাড়ি ইত্যাদি অথবা স্থানান্তরযোগ্য জিনিস। যেমন, বই, কাপড়, অস্ত্র ইত্যাদি। কেননা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
৪- ওয়াকফকৃত বস্তুটি সুনির্দিষ্ট হবে, এজমালী সম্পত্তি হবে না। অতএব, বহু মানুষের মালিকানাধীন কোনো বস্তুর একাংশ ওয়াকফ করা শুদ্ধ হবে না।
৫- ওয়াকফকৃত জিনিসটিতে অন্যের অধিকার সম্পৃক্ত না থাকা।
৬- ওয়াকফকৃত বস্তুটি দ্বারা ‘উরফ তথা প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী উপকার গ্রহণ সক্ষম হওয়া।
৭- ওয়াকফকৃত জিনিসটিতে বৈধ উপকার থাকা।
৯- ওয়াকফকৃত বস্তু থেকে উপকার সাধনের পদ্ধতি:
নিম্নোক্ত পদ্ধতিতে ওয়াকফকৃত বস্তু থেকে উপকার অর্জন করা যায়:
ঘর-বাড়িতে বসবাস করে, আরোহণকারী পশু ও যানবাহনে আরোহণ করে, জীবজন্তুর পশম, দুধ, ডিম, লোম সংগ্রহ করে উপকার নেওয়া যায়।
১০- ওয়াকফ ও অসিয়তের মধ্যে পার্থক্য:
১- ওয়াকফ হলো মূলস্বত্ব নিজের রেখে বস্তুটির উপকার দান করা, অন্যদিকে অসিয়ত হলো দানের মাধ্যমে মৃত্যুর পরে বস্তুগত বা অবস্তুগত (উপকার) জিনিসের মালিক বানানো।
২- অধিকাংশ আলেমদের মতে, ওয়াকফ করলে তা বাস্তবায়ন অত্যাবশ্যকীয় হয়ে পড়ে এবং ওয়াকফ ফেরত নেওয়া যায় না। কেননা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বলেছেন,
অন্যদিকে অসিয়ত করলে বাস্তবায়ন অত্যাবশ্যকীয় হলেও অসিয়তকারী তার অসিয়তের পুরোটাই বা আংশিক ফেরত নিতে পারবে।
৩- ওয়াকফকৃত বস্তুটি কারো মালিকানায় প্রবেশ করা থেকে বেরিয়ে যাবে, শুধু বস্তুটির উপকার যাদের জন্য ওয়াকফ করা হয়েছে তাদের জন্য নির্ধারিত হবে। পক্ষান্তরে, অসিয়াতের বস্তুটি যাদের জন্য অসিয়ত করা হয়েছে তাদের মালিকানায় যাবে বা এর উপকার অসিয়তকৃতদের জন্য নির্ধারিত হয়ে যাবে।
৪- ওয়াকফের উপকারের মালিকানা যাদের জন্য ওয়াকফ করা হয়েছে তারা ওয়াকফকারীর জীবদ্দশায়ই পাবে এবং তার মৃত্যুর পরেও ভোগ করবে। কিন্তু অসিয়তের মালিকানা অসিয়তকারীর মৃত্যুর পর ছাড়া ভোগ করতে পারবে না।
৫- ওয়াকফের সর্বোচ্চ সীমা নির্দিষ্ট নয়; পক্ষান্তরে অসিয়তের সর্বোচ্চ সীমা শরী‘আত কর্তৃক নির্ধারিত। আর তা হলো মোট সম্পত্তির এক তৃতীয়াংশ। তবে ওয়ারিশের অনুমতি সাপেক্ষে এর বেশিও করা যায়।
৬- ওয়ারিশের জন্য ওয়াকফ করা জায়েয, কিন্তু ওয়ারিশের অনুমতি ব্যতীত ওয়ারিশের জন্য অসিয়ত করা জায়েয নেই।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/396/42
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।