HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল্লাহর রাসূলের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আদর্শ

লেখকঃ জাকেরুল্লাহ আবুল খায়ের

শিক্ষককে অবশ্যই নম্র হতে হবে:
যিনি শিক্ষা দেবেন তাকে অবশ্যই কোমল ব্যবহারের অধিকারী হতে হবে, তাকে অবশ্যই আদর্শবান হতে হবে। তার আচার ব্যবহার অবশ্যই মনোমুগ্ধকর হতে হবে। অন্যথায় শিক্ষকের প্রতি ছাত্রদের আস্থা দুর্বল হয়ে পড়বে। তখন শিক্ষকের কাছ থেকে সে কোনো কিছুই শিখতে চাইবে না। নম্র ও ভদ্র ব্যবহার দিয়ে যতটুক মন জয় করা যায় কটু ব্যবহার ও শাস্তি দিয়ে তত টুকু পারা যায় না। নম্র ব্যবহারে মানুষের মনের ওপর কর্তৃত্ব করা সহজ হয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿فَبِمَا رَحۡمَةٖ مِّنَ ٱللَّهِ لِنتَ لَهُمۡۖ وَلَوۡ كُنتَ فَظًّا غَلِيظَ ٱلۡقَلۡبِ لَٱنفَضُّواْ مِنۡ حَوۡلِكَۖ فَٱعۡفُ عَنۡهُمۡ وَٱسۡتَغۡفِرۡ لَهُمۡ وَشَاوِرۡهُمۡ فِي ٱلۡأَمۡرِۖ فَإِذَا عَزَمۡتَ فَتَوَكَّلۡ عَلَى ٱللَّهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلۡمُتَوَكِّلِينَ ١٥٩﴾ [ ال عمران : ١٥٩ ]

“অতঃপর আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমতের কারণে তুমি তাদের জন্য নম্র হয়েছিলে। আর যদি তুমি কঠোর স্বভাবের, কঠিন হৃদয়সম্পন্ন হতে, তবে তারা তোমার আশপাশ থেকে সরে পড়ত। সুতরাং তাদেরকে ক্ষমা কর এবং তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর। আর কাজে-কর্মে তাদের সাথে পরামর্শ কর। অতঃপর যখন সংকল্প করবে তখন আল্লাহর ওপর তাওয়াককুল করবে। নিশ্চয় আল্লাহ তাওয়াক্কুল কারীদেরকে ভালবাসেন”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৫৯]

ফিরআউনের মতো এত বড় যালিমকে দাওয়াত দেওয়ার উদ্দেশ্যে মুসা ও হারুন আলাইহিস সালাম প্রেরণ করার পেক্ষাপটে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তার সাথে তোমরা নরম কথা বল।

﴿فَقُولَا لَهُۥ قَوۡلٗا لَّيِّنٗا لَّعَلَّهُۥ يَتَذَكَّرُ أَوۡ يَخۡشَىٰ ٤٤﴾ [ طه : ٤٤ ]

“তোমরা তার সাথে নরম কথা বলবে। হয়তোবা সে উপদেশ গ্রহণ করবে অথবা ভয় করবে”। [সূরা ত্ব-হা, আয়াত: ৪৪]

আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সর্বোত্তম শিক্ষক হিসেবে যথেষ্ট। তিনি এমনভাবে শিক্ষা দিতেন, যাতে মানুষের অন্তরে তার প্রতি ক্ষোভ বা আতঙ্ক থাকতো না। শিক্ষকের প্রতি ভালোবাসা ও মহব্বত বৃদ্ধি পেত। তিনি শুধু মাত্র প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোই শিক্ষা দিতেন। অত্যন্ত নম্রতা ও ভদ্রতার সাথে শিক্ষা দিতেন। ছাত্রের সাথে কোনো প্রকার দুর্ব্যবহার করতেন না। তাদেরকে প্রহার করতেন না, গালি দিতেন না এবং ধমক দিতেন না। যেমন, হাদীসে এসেছে: মুয়াবিয়া ইবন হাকাম আস সুলামি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«بَيْنَا نَحْنُ نُصَلِّي مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذْ عَطَسَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ، فَقُلْتُ : يَرْحَمُكَ اللهُ، فَرَمَانِي الْقَوْمُ بِأَبْصَارِهِمْ، فَقُلْتُ : وَاثُكْلَ أُمِّيَاهْ مَا شَأْنُكُمْ تَنْظُرُونَ إِلَيَّ قَالَ : فَجَعَلُوا يَضْرِبُونَ بِأَيْدِيهِمْ عَلَى أَفْخَاذِهِمْ، فَلَمَّا رَأَيْتُهُمْ يُصْمِتُونِي، لَكِنِّي سَكَتُّ، فَلَمَّا صَلَّى رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَبِأَبِي هُوَ وَأُمِّي مَا رَأَيْتُ مُعَلِّمًا قَبْلَهُ وَلَا بَعْدَهُ أَحْسَنَ تَعْلِيمًا مِنْهُ، وَاللهِ مَا كَهَرَنِي وَلَا شَتَمَنِي وَلَا ضَرَبَنِي قَالَ : إِنَّ هَذِهِ الصَّلَاةَ لَا يَصْلُحُ فِيهَا شَيْءٌ مِنْ كَلَامِ النَّاسِ هَذَا، إِنَّمَا هِيَ التَّسْبِيحُ وَالتَّكْبِيرُ وَقِرَاءَةُ الْقُرْآنِ أَوْ كَمَا قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْتُ : يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّا قَوْمٌ حَدِيثُ عَهْدٍ بِالْجَاهِلِيَّةِ، وَقَدْ جَاءَ اللهُ بِالْإِسْلَامِ، وَإِنَّ مِنَّا قَوْمًا يَأْتُونَ الْكُهَّانَ قَالَ : فَلَا تَأْتُوهُمْ قُلْتُ : إِنَّ مِنَّا قَوْمًا يَتَطَيَّرُونَ قَالَ : ذَاكَ شَيْءٌ يَجِدُونَهُ فِي صُدُورِهِمْ، فَلَا يَصُدَّنَّهُمْ قُلْتُ : إِنَّ مَنَّا قَوْمًا يَخُطُّونَ قَالَ : كَانَ نَبِيٌّ يَخُطُّ، فَمَنْ وَافَقَ خَطَّهُ فَذَلِكَ» .

“একদা আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে সালাত আদায় করতে ছিলাম, এক ব্যক্তি সালাতে হাঁচি দিয়ে আল হামদু লিল্লাহ বললে, আমি বললাম, আল্লাহ তোমার প্রতি দয়া করুন। আমার কথা শোনে লোকেরা আমার দিক বাঁকা চোখে তাকাচ্ছিল, তাদের অবস্থা দেখে আমি তাদের বললাম, তোমাদের কি হল, তোমরা আমার দিকে এভাবে তাকাচ্ছ? আমার কথা শোনে তারা তাদের হাত দিয়ে রানের ওপর থাপড়াচ্ছিল যাতে আমি চুপ থাকি। আমি যখন বুঝতে পারলাম, তারা আমাকে চুপ করাচ্ছে, তখন আমি চুপ হয়ে গেলাম। তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাত শেষ করলেন, তার ওপর আমার মাতা-পিতা কুরবান হোক, ইতোপূর্বে ও পরবর্তীতে আমি তার থেকে উত্তম শিক্ষক যিনি তার চেয়ে উত্তম শিক্ষা দিতে পারে আর কখনো দেখিনি। আমি আল্লাহর শপথ করে বলছি, তিনি আমাকে ধমক দেননি, গালি দেননি এবং কোনো ধরনের প্রহার করেন নি। তিনি আমাকে বললেন, সালাতে কথা বলা গ্রহণ যোগ্য নয়। সালাত হল, তাসবীহ, তাকবীর ও কুরআনের তিলাওয়াত। তারপর আমি বললাম, আমরা কিছু আগেও জাহেলিয়্যাতের অন্ধকারে নিমজ্জিত, নতুন ইসলাম গ্রহণ করেছি, আমাদের মধ্যে কিছু লোক এমন আছে যারা যাদুকরের কাছে যাতায়াত করে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা তাদের কাছে যাতায়াত করো না। আমাদের মধ্যে কিছু লোক এমন আছে, যারা পাখি উড়িয়ে ভাগ্য পরীক্ষা করে, তিনি বললেন, এটি মানুষের মনের কু-সংস্কার, এ ধরনের কোনো বিষয় যেন তোমাদেরকে তোমাদের কর্ম হতে বিরত না রাখে। তারপর সে বলল, আমাদের মধ্যে কতক লোক এমন আছে যারা রেখা টানে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, পূর্বের একজন নবী ছিল যিনি রেখা টানত, যা তার জন্য বৈধ ছিল, তোমাদের জন্য তা বৈধ নয়। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫৩৭; আহমদ, হাদীস নং ২৩৭৬২।]

হাদীসটিতে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকটিকে যেভাবে শিক্ষা দিলেন, তা জাতির জন্য কিয়ামত অবধি আদর্শ হয়ে থাকবে। একজন আদর্শ শিক্ষকের কাজ হল, তিনি তার ছাত্রদের এমনভাবে শিক্ষা দেবেন, যাতে ছাত্রের অন্তরে শিক্ষকের মহব্বত, ভালোবাসা ও আস্থা বৃদ্ধি পায়। শিক্ষককে অবশ্যই তার ছাত্রের কল্যাণকামী ও হিতাকাংখী হতে হবে, ছাত্রের সাথে স্বাভাবিক আচরণ করতে হবে, যাতে ছাত্র তার অজানা বিষয়গুলো শিক্ষকের কাছ থেকে জেনে নিতে পারে। হাদীসে বর্ণিত, ঘটনাটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্বাভাবিক আচরণে উদ্বুদ্ধ হয়ে, লোকটির মনে জানার আগ্রহ বেড়ে যায় এবং তিনি তার সম্প্রদায়ের লোকদের বিভিন্ন কু-সংস্কার সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছ থেকে সমাধান জানতে চান।

অপর একটি হাদীস: আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«دَخَلَ أَعْرَابِيٌّ الْمَسْجِدَ، فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ قَالَ : اللَّهُمَّ ارْحَمْنِي وَمُحَمَّدًا، وَلَا تَرْحَمْ مَعَنَا أَحَدًا . فَالْتَفَتَ إِلَيْهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ : «لَقَدْ تَحَجَّرْتَ وَاسِعًا، ثُمَّ لَمْ يَلْبَثْ أَنْ بَالَ فِي الْمَسْجِدِ، فَأَسْرَعَ النَّاسُ إِلَيْهِ، فَقَالَ لَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : «إِنَّمَا [ص:198] بُعِثْتُمْ مُيَسِّرِينَ، وَلَمْ تُبْعَثُوا مُعَسِّرِينَ، أَهْرِيقُوا عَلَيْهِ دَلْوًا مِنْ مَاءٍ، أَوْ سَجْلًا مِنْ مَاءٍ»

“একজন গ্রাম্য লোক মসজিদে এসে দু’ রাকাত সালাত আদায় করার পর বলে, হে আল্লাহ তুমি আমাকে এবং মুহাম্মদকে রহম কর এবং আমাদের সাথে আর কাউকে তুমি দয়া করো না। তার কথা শোনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি আল্লাহর ব্যাপক রহমতকে সংকীর্ণ করে দিলে। তারপর লোকটি একটু পরেই মসজিদে পেশাব করে দিল। পেশাব করতে দেখে লোকেরা তার দিকে ছুটে আসতে আরম্ভ করলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের সহজকারী হিসেবে প্রেরণ করেছেন, তিনি তোমাদের কঠোরতাকারী হিসেবে প্রেরণ করেননি। লোকটির পেশাবের উপর এক বালতি বা এক মশক পানি ঢেলে দাও”।

উল্লিখিত হাদীসে দেখা যাচ্ছে যে এক লোক মসজিদে পেশাব করে দিল, অথচ আল্লাহর রাসূল তাকে সুন্দরভাবে তালিম দিলেন। তাকে তিনি কিছুই জিজ্ঞাসা করলেন না। যারা তাকে বাধা দিতে চাইলেন, তাদের তিনি থামিয়ে দিলেন। আর লোকটি বাধাহীন পেশাব করে গেলেন। তারপর অন্যদের নির্দেশ দিলেন, যাতে তারা পেশাবকে ধুয়ে ফেলে। এভাবেই আল্লাহর রাসূল মানব জাতির জন্য আদর্শ ছিলেন। অথচ বর্তমানে আমরা ছোট বাচ্চারা যদি মসজিদে এসে দুষ্টামী করে তাদেরকে মসজিদ থেকে বের করে দেই। মসজিদে কারও মোবাইল বেজে উঠলে তার প্রতি তেলে বেগুনে জ্বলে উঠি এবং তার উপর চড়াও হই। মনে রাখবে এগুলো কোনোটিই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদর্শ নয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদর্শ হল তিনি যা বলেছেন,

«إِنَّمَا بُعِثْتُمْ مُيَسِّرِينَ، وَلَمْ تُبْعَثُوا مُعَسِّرِينَ»

“আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের সহজকারী হিসেবে প্রেরণ করেন, কঠোরতাকারী হিসেবে প্রেরণ করেননি”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫৩৭; আহমদ, হাদীস নং ২৩৭৬২।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন