মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
অর্থ: নিশ্চয় যারা এতিমদের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে তারা তো তাদের পেটে আগুন খাচ্ছে, আর অচিরেই তারা প্রজ্জ্বলিত আগুনে প্রবেশ করবে। (সূরা নিসা : ১০)
জাহেলি যুগে মানুষেরা এতিমদের ধন-সম্পদ থেকে উপকার হাসিলের মধ্যে সীমালঙ্ঘন করত। এমন কি সম্পদের লোভে কখনো বিয়ে করত অথবা সম্পদ যাতে হাত ছাড়া না হয়ে যায় সে জন্য নিজের ছেলেকে দিয়ে বিয়ে করাত এবং বিভিন্ন পন্থায় তাদের সম্পদ ভক্ষণের চেষ্টা করত। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাদের ব্যাপারে উপরোক্ত আয়াতটি নাযিল করেন।
আয়াতের পরিপ্রেক্ষিতে ইবনে জারির রহ. বলেন:
إذا الرجل يأكل مال اليتيم ظلما يبعث يوم القيامة ولهب النار يخرج من فيه ومن مسامعه و من أذنيه وأنفه وعينيه يعرف من رآه بآكل مال اليتيم .
এতিমের মাল অন্যায়ভাবে ভক্ষণকারী কিয়ামতের দিন এমতাবস্থায় উত্থিত হবে যে, তার পেটের ভিতর থেকে আগুনের লেলিহান শিখা মুখ, দুই কান, নাক ও দুইচক্ষু দিয়ে বের হতে থাকবে। যে তাকে দেখবে সে চিনতে পারবে যে, এ হচ্ছে এতিমের মাল ভক্ষণকারী। (ইবনে কাসীর)
এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
يبعث يوم القيامة قوم من قبورهم تأجج أفواههم نارا فقيل يا رسول الله من هم ؟ قال ألم تر أن الله يقول : إن الذين يأكلون أموال اليتمى ظلما ... أخرج ابن أبى شيبة في مسنده
অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের দিন এক সম্প্রদায় নিজ নিজ কবর হতে এমতাবস্থায় উত্থিত হবে যে, তাদের মুখ থেকে আগুনের উদগীরণ প্রকাশিত হতে থাকবে। সাহাবায়ে কিরাম আরজ করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এরা কারা? তিনি বললেন: তোমরা কি লক্ষ্য করনি যে, আল্লাহ তাআলা বলেন, যারা এতিমের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে তারা তাদের পেটে আগুন ছাড়া আর কিছুই ভক্ষণ করে না। (ইবনে কাসীর)
عن أبى سعيد الخدري رضي الله عنه أن النبى صلى الله عليه وسلم قال : ليلة أسري بي رأيت قوما لهم مشافر كمشافر الإبل وقد وكل لهم من يأخذ بمشافر هم ثم يجعل في أفواههم صخرا من النار يخرج من أسافلهم فقلت : يا جبريل من هؤلاء؟ فقال : هؤلاء الذين يأكلون أموال اليتامى ظلما .
আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বর্ণনা করেছেন, যে রাতে আমাকে ভ্রমণ করানো হলো (অর্থাৎ ইসরার রাতে), সেথায় এমন এক সম্প্রদায়কে দেখলাম তাদের রয়েছে উটের ঠোটের ন্যায় ঠোট, যারা তাদের দায়িত্বে নিয়োজিত তারা ঐ লোকদের মুখের চোয়াল খুলে হা করাচ্ছে তারপর তাদের মুখ দিয়ে আগুনের পাথর ঢুকিয়ে দিচ্ছে, আর সাথে সাথে পাথরগুলি তাদের মলদ্বার দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। আমি জিবরাঈলকে বললাম, এরা করা ? তিনি বললেন: এরা হচ্ছে এতিমদের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণকারী । (ইবনে কাসীর)
আর তোমরা এতিম বয়:প্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত সদুপায় ছাড়া তার সম্পদের নিকটবর্তী হয়োনা এবং প্রতিশ্রুতি পালন কর। নিশ্চয়ই প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। (সূরা ইসরা: ৩২)
উপরোক্ত আয়তদ্বয়ের ব্যাখ্যায় বর্ণিত হয়েছে, এতিম যদি পারিতোষিক অথবা উপঢৌকন হিসাবে কিছু সম্পদ প্রাপ্ত হয় তাহলে এতিমের অভিভাবকের দায়িত্ব হচ্ছে, সেসব মালেরও হিফাযত করা। এতিমের মৃত পিতা, দেশের সরকার কিংবা অন্য যে কেউ উক্ত অভিভাবক মনোনীত করুক না কেন, তার উপরই এতিমের মাল-সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব থাকবে। এ ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন সম্পর্কে অত্যন্ত জোর দিয়ে বলা হয়েছে যে, এতিমের মালের কাছেও যাবে না। অর্থাৎ এতে যেন শরিয়তবিরোধী অথবা এতিমদের স্বার্থের পরিপন্থী কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ না হয়। এতিমদের মালের হেফাজত ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব যাদের উপর অর্পিত হবে তাদের এ ব্যাপারে খুব সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। তারা শুধু এতিমের স্বার্থ দেখে ব্যয় করবে। এ কর্মধারা ততদিন অব্যাহত থাকবে যতদিন না এতিম যৌবনে পদার্পন করে নিজের মালের হিফাযত নিজেই করতে সক্ষম হবে। এর সর্বনিম্ন বয়স পনের বছর এবং সর্বোচ্চ আঠারো। কারণ এ বয়সের পূর্বে তার জ্ঞান ও বুদ্ধি-বিবেচনা সম্পত্তি সংরক্ষণের মত না হওয়াই স্বাভাবিক।
অবৈধ পন্থায় যে কোনো ব্যক্তির মাল খরচ করা জায়েয নয়। এখানে বিশেষ করে এতিমের কথা উল্লেখ করার কারণ এই যে, সে নিজে কোনো হিসাব নেয়ার যোগ্য নয় অন্যেরাও এ সম্পর্কে জানতে পারে না। যেখানে মানুষের পক্ষ থেকে হক দাবী করার কেউ থাকে না সেখানে আল্লাহর পক্ষ থেকে দাবী কঠোরতর হয়ে যায়। এতে ত্রুটি হলে সাধারণ মানুষের হকের তুলনায় গুনাহ অধিক হয়।
অর্থ: আর তোমরা এতিমদেরকে তাদের ধন-সম্পদ দিয়ে দাও এবং তোমরা অপবিত্র বস্তুকে পবিত্র বস্তুদ্বারা পরিবর্তন করো না এবং তাদের ধন-সম্পদকে তোমাদের ধন-সম্পদের সাথে খেয়ো না। নিশ্চয় তা বড় পাপ। (সূরা নিসা: ২)
এ আয়াতে এতিমদের সর্ব প্রকার হকের প্রতি সর্বদা তীক্ষ্ণ সকর্ত দৃষ্টি রাখতে নির্দেশ করা হয়েছে। এতিমের ধন-সম্পদ তার নিকট পৌছে দাও, এর অর্থ হচ্ছে, সে বালেগ হলেই কেবল তার গচ্ছিত মালামাল তার নিকট পৌছে দেয়া যেতে পারে। তবে বয়:প্রাপ্ত হওয়ার পর দেখতে হবে, তার মধ্যে নিজের সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ এবং শুদ্ধ খাতে ব্যয় করার যোগ্যতা হয়েছে কিনা। যদি যোগ্যতা না হয়ে থাকে তাহলে পচিশ বছর পর্যন্ত ধন-সম্পদ হিফাযত করার দায়িত্ব অভিভাবকদের। যখনই ধন-সম্পদ সংরক্ষণ এবং কারবারের যোগ্যতা তার মধ্যে দেখা যাবে, তখনই তার সম্পদ তার হাতে সমর্পন করতে হবে। যদি পচিশ বছর বয়স পর্যন্তও তার মধ্যে এ যোগ্যতা সৃষ্টি না হয়, তাহলে ইমাম আবু হানিফা রাহমাতুল্লাহি আলাইহি-এর মতে তার মাল তাকে সমর্পণ করতে হবে, যদি সে উন্মাদ না হয়। কোনো কোনো ইমামের মতে তখনও তার মাল তাকে দেয়া যাবে না, বরং শরিয়তের কাজী (বিচারক) তার মাল সংরক্ষণের জন্য কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তির হাতে সমর্পণ করবেন।
এতিমের অভিভাবককে আরো নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তারা শিশুর লেখা পড়া ও জীবন গঠনের উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। অত:পর বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বিষয় বুদ্ধির বিকাশ ঘটানোর উদ্দেশ্যে ছোট ছোট কাজ কারবার এবং লেনদেনের দায়িত্ব অর্পন করে তাদের পরীক্ষা করতে থাকবে।
অর্থ : আর তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে এতিমদের সম্পর্কে। তুমি বল, সংশোধন করা তাদের জন্য উত্তম। আর যদি তাদেরকে নিজেদের সাথে মিশিয়ে নাও, তবে তারা তোমাদেরই ভাই। আর আল্লাহ জানেন কো ফাসাদকারী, কে সংশোধনকারী এবং আল্লাহ যদি চাইতেন, অবশ্যই তোমাদের জন্য (বিষয়টি) কঠিন করে দিতেন। নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (সূরা বাকারা: ২২০)
একটি হাদিসে বর্ণিত আছে,
إن رسول صلى الله عليه وسلم قال لأبي ذر : يا أبا ذر ! إني أراك ضعيفًا وإني أحب لك ما أحب لنفسي، فلا تأمرن على اثنين ولا تولين مال يتيم . رواه مسلم
অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবু জর রা. কে বললেন: হে আবু জর! আমি তোমাকে দুর্বল দেখতে পাচ্ছি। আমি তোমার জন্য তাই পসন্দ করি যা করি নিজের জন্য। তুমি কখনো দুই জনের উপর আমির হবে না এবং এতিমের সম্পদের দায়িত্বশীল হবে না।
অর্থ : আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, হে আল্লাহ নিশ্চয় আমি দুই অসহায়-দুর্বলের হক বিষয়ে (ভয়ে) সংকীর্ণতায় আছি, একজন হচ্ছে এতিম অপর জন নারী। (সুনান ইবন মাজাহ)
আরো বর্ণিত হয়েছে, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
أربعة حق على الله أن لا يدخلهم الجنة ولا يذيقهم نعيمها : مدمن الخمر ، وآكل الربا ، وآكل مال اليتيم بغير حق ، والعاق لوالديه » « هذا حديث صحيح الإسناد ولم يخرجاه
অর্থ : চার ব্যক্তি এমন আল্লাহ তাদের ব্যাপারে নিজের উপর ওয়াজিব করে নিয়েছেন যে, তিনি তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন না এবং জান্নাতের কোনো নিয়ামতের স্বাদ আস্বাদন করাবেন না। নিয়মিত মদ্য পানকারী, সুদখোর, অন্যায়ভাবে এতিমের মাল ভক্ষণকারী এবং পিতামাতার অবাধ্য। (মুসতাদরাক আলাস সহীহাইন লিল হাকেম)
আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ধ্বংসকারী সাত প্রকার কবিরা গুনাহকে তোমরা (বিশেষভাবে) পরিহার কর। সাহাবারা আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! সেগুলো কি? তিনি বললেন: আল্লাহর সাথে শরিক করা, যাদু করা, মানুষকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা, সুদখাওয়া, এতিমের মাল ভক্ষণ করা, জিহাদের ময়দান থেকে পলায়ন করা ও সতী সাধ্বী মুমিন রমণীর সতীত্বের উপর মিথ্যা অপবাদ দেয়া। (সহিহ বোখারি)
বর্ণিত আয়াত ও হাদিসগুলোতে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, এগুলোতে একদিকে এতিমের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ কারীদের প্রতি ব্যক্ত হয়েছে কঠিন হুশিয়ারি, অপর দিকে এতিমের প্রতি রয়েছে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে অশেষ রহমত ও করুণা। কেননা তারা হচ্ছে শেষ পর্যায়ের দুর্বল ও অসহায়।
হে ঈমানদার বান্দাগণ, তোমরা তোমাদের নিজদিগকে ও তোমাদের পরিবার-পরিজনকে আগুন থেকে বাঁচাও...। (সূরা তাহরীম: ৬)
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/502/13
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।