hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আত্মশুদ্ধি

লেখকঃ খালেদ ইবন আব্দুল্লাহ আল-মুসলেহ

তৃতীয় আপদ: প্রবৃত্তি অনুসরণ ও গুনাহের কাজে পতিত হওয়া।
প্রবৃত্তির অনুসরণ এবং গুনাহের কাজ অন্তর নষ্ট এবং তা ধ্বংস ও সর্বনাশের সবচেয়ে বড় মাধ্যম। আল্লাহ তা‘আলা প্রবৃত্তির কামনা বাসানার প্রভাব এবং তাঁর অনুসরণ করা সম্পর্কে বলেন,

﴿أَفَرَءَيۡتَ مَنِ ٱتَّخَذَ إِلَٰهَهُۥ هَوَىٰهُ وَأَضَلَّهُ ٱللَّهُ عَلَىٰ عِلۡمٖ وَخَتَمَ عَلَىٰ سَمۡعِهِۦ وَقَلۡبِهِۦ وَجَعَلَ عَلَىٰ بَصَرِهِۦ غِشَٰوَةٗ فَمَن يَهۡدِيهِ مِنۢ بَعۡدِ ٱللَّهِۚ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ ٢٣﴾ [ الجاثية : ٢٣ ]

“(হে রাসূল!) তুমি কি লক্ষ্য করেছো তাকে, যে তার খেয়াল-খুশীকে নিজের মা‘বূদ বানিয়ে নিয়েছে? আল্লাহ জেনে শুনেই তাকে বিভ্রান্ত করেছেন এবং তার কর্ণ ও হৃদয় মোহর করে দিয়েছেন এবং তর চক্ষুর উপর রেখেছেন আবরণ। অতএব, আল্লাহর পর কে তাকে পথ-নির্দেশ করবে? তবুও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে না?” [সূরা আল-জাছিয়াহ, আয়াত: ২৩]

অতএব, লক্ষ্য কর কীভাবে প্রবৃত্তির অনুসরণ অন্তরের উপর সীলমোহরের কারণ হয়ে থাকে। অতঃপর মনোযোগ সহকারে লক্ষ্য কর, চিন্তা ও গবেষণা কর এবং (আরও) গভীরভাবে চিন্তা করে দেখ যে, কীভাবে এই সীলমোহরের প্রভাব ও ছাপ এবং অন্তরের প্রতি যে পর্দা ও আবরণ তা শরীরের সমস্ত অংশে সংক্রমিত হয়ে পড়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿أَفَرَءَيۡتَ مَنِ ٱتَّخَذَ إِلَٰهَهُۥ هَوَىٰهُ وَأَضَلَّهُ ٱللَّهُ عَلَىٰ عِلۡمٖ وَخَتَمَ عَلَىٰ سَمۡعِهِۦ وَقَلۡبِهِۦ وَجَعَلَ عَلَىٰ بَصَرِهِۦ غِشَٰوَةٗ فَمَن يَهۡدِيهِ مِنۢ بَعۡدِ ٱللَّهِۚ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ ٢٣﴾ [ الجاثية : ٢٣ ]

“(আল্লাহ) তার কর্ণ ও হৃদয়ে মোহর করে দিয়েছেন এবং তার চক্ষুর উপর রেখেছেন আবরণ। অতএব, আল্লাহর পর কে তাকে পথ নির্দেশ করবে? তবুও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে না?” [সূরা আল-জাছিয়াহ, আয়াত: ২৩]

যে ব্যক্তি অন্তরের পরিশুদ্ধতা কামনা করে, সে যেন সাবধান হয় এবং প্রবৃত্তির অনুসরণের মাধ্যমে অন্তরের রোগাক্রান্ত হওয়া থেকে সাবধান হয়। কারণ, তা ধ্বংসের কাছে পৌঁছে দিবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿كَلَّاۖ بَلۡۜ رَانَ عَلَىٰ قُلُوبِهِم مَّا كَانُواْ يَكۡسِبُونَ ١٤﴾ [ المطففين : ١٤ ]

“না এটা সত্য নয়, বরং তাদের কৃতকর্মই তাদের মনের উপর মরিচারূপে জমে গেছে।” [সূরা আল-মুতাফফিফীন, আয়াত: ১৪]

গুনাহ অন্তরকে অন্ধ করে দেয়। তাই গুনাহ থেকে সাবধান এবং সাবধান। কারণ, এর পরিণতি খুবই মারাত্মক ও ভয়াবহ।

কবি বলেন,

رأيت الذنـوب تمـيت القلـوبَ

وقـد يـورث الذَّل إدمانـها

وتـرك الذنـوب حيـاة القلوب

وخـير لنفسـك عصيانهـا

“গুনাহ বা পাপ অন্তরগুলোকে মৃত্যুতে পরিণত করতে দেখেছি এবং তা করতে থাকলে অন্তরগুলোকে তা লাঞ্ছিত করে দেয়। গুনাহ পরিত্যাগ করা হলো অন্তরের প্রাণ। তাই তোমার নিজের জন্য গুনাহের বিরোধিতাকে বেছে নেওয়াই উত্তম।”

ইমাম মুসলিম হুযাইফা ইবনুল ইয়ামান রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন যে, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন:

«تُعرض الفتن على القلوب كالحصير عوداً عوداً، فأيّ قلبٍ أُشربها نُكت فيه نكتة سوداء، وأيُّ قلبٍ أنكرها نُكت فيه نكتة بيضاء، حتى تصير على قلبين : على أبيض مثل الصفا فلا تضره فتنة ما دامت السماوات والأرض، والآخر أسود مُربادّاً كالكوز مجخِّياً، لا يعرف معروفاً ولا ينكر منكراً إلا ما أشرب من هواه»

“ফিতনাসমূহ (মানুষের) অন্তরসমূহে এমনভাবে আসতে থাকবে যেভাবে মাদুর বা চাটাই বুনার খেজুর পাতাগুলো একটির পর একটি (সংলগ্ন) হয়ে থাকে। সুতরাং যে অন্তর উক্ত ফিতনার মধ্যে জড়িত হবে সে ফিতনা তার অন্তরের মধ্যে একটি কালো নকশা সৃষ্টি করে দিবে। আর যে অন্তর উক্ত ফিতনাকে প্রত্যাখ্যান করবে (এবং গ্রহণ করতে অস্বীকার করবে) তা তার অন্তরের মধ্যে একটি একটি সাদা (নূরানী) নুকতা লেগে যাবে। এমনিভাবে (কালো-সাদা নুকতা পড়ে অন্তরের বিশ্বাসের অবস্থার গুণগ্রাহীতায় মানুষ) দুই অন্তরের (মধ্যে বিভক্ত) হয়ে যাবে। একটি শ্বেত পাথরের ন্যায় (ধবধেবে) সাদা। যতদিন আকাশ ও ভূ-মণ্ডল প্রতিষ্ঠিত থাকবে ততদিন (অর্থাৎ আজীবন) কোনো ফিতনা তাকে ক্ষতি করতে পারবে না। আর অপরটি ধুসর কালো উল্টানো পেয়ালার ন্যায়, যা (জ্ঞান ও বিবেক থেকে খালি হবে) না বুঝবে কোনো ভালো কথাকে ভালো, আর না বুঝবে কোনো মন্দ কথাকে মন্দ। তবে তাই সে বুঝবে যা প্রবৃত্তি তার অন্তরে দৃঢ় ও বদ্ধমূল করে দিয়েছে (অর্থাৎ সে ভালো ও মন্দের পার্থক্যকরণ ছাড়া এবং বিনা চিন্তা-ভাবনায় নিজ প্রবৃত্তির আনুগত্য করবে)।

বস্তুত গুনাহ অন্তরকে সব দিক থেকে বেষ্টন করে নিয়ে থাকে। কোনো ব্যক্তি যখন তার প্রবৃত্তি ও কামনার অনুসরণ করে এবং গুনাহের কাজে লিপ্ত হয় তার অন্তরে প্রতিটি গুনাহের দ্বারা অন্ধকার প্রবেশ করে তা অন্ধকার করে তুলে এবং যখন সে গুনাহের কাজে অনবরত লেগে থাকে এবং তাওবা করে না, তখন তা তার প্রতি ক্রমাগতভাবে অন্ধকার সৃষ্টি করতে থাকে এবং তা বৃদ্ধি হতে থাকে এবং বৃদ্ধি হয়ে এক পর্যায়ে তাকে হতবুদ্ধি ও কিংকর্তব্যবিমূঢ় করে তুলে এবং তার দুর্ভাগ্য আরও শক্তিশালী হয়ে উঠে ও সে এমনভাবে ধ্বংসে পতিত হয় যে সে তা বুঝতেও পারে না। আর অন্তরের অন্ধকারকে আরও শক্তিশালী করে তুলে, এক পর্যায় গুনাহকারীর মুখে তা পরিস্ফুট হয়ে উঠে এবং তা কালো হয়ে যায় এবং প্রত্যেকেই তা দেখতে পায়।”ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেন,

«إن للحسنة لنوراً في القلب، وضياءً في الوجه، وقوة في البدن، وسعةً في الرزق، ومحبةً في قلوب الخلق، وإن للسيئة لظلمة في القلب، وسواداً في الوجه، ووهناً في البدن، وبغضاً في قلوب الخلق»

“নিশ্চয় নেক কাজের প্রভাবে অন্তরের জ্যোতি তৈরী হয়, চেহারার আলো পড়ে এবং দেহ বা শরীরে শক্তির সঞ্চার হয়, রিযিক বা জীবিকার প্রশস্ততা বা প্রাচুর্যতা আসে এবং সৃষ্টিজীবের অন্তরের ভালোবাসার উদ্রেক করে। আর খারাপ কাজের প্রভাবে অন্তরে অন্ধকার তৈরী হয়, চেহারায় কালছে ভাব আসে, দেহে আসে শীর্ণতা আর সৃষ্টিজীবের অন্তরে আসে তার প্রতি ঘৃণা বা শক্রতা”।

এই সকল কর্ম এবং এই উজ্জ্বলতা ও সেই কালো দাগ যে দু’টি সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীসে উল্লেখ করেছেন, এগুলো এমন আলামত বা চিহ্ন যা কোনো কোনো দূরদৃষ্টি সম্পন্ন ব্যক্তি এই দুনিয়াতেই অবলোকন করে থাকে, তবে তা সেসব লোকদের মুখে স্পষ্ট ও পরিপূর্ণভাবে কিয়ামতের দিন প্রকাশিত হবে, যে দিন সমস্ত গোপনীয়তা প্রকাশ হবে এবং অন্তরের গোপন রহস্য উন্মোচিত হবে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿وَيَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ تَرَى ٱلَّذِينَ كَذَبُواْ عَلَى ٱللَّهِ وُجُوهُهُم مُّسۡوَدَّةٌۚ أَلَيۡسَ فِي جَهَنَّمَ مَثۡوٗى لِّلۡمُتَكَبِّرِينَ ٦٠ وَيُنَجِّي ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ٱتَّقَوۡاْ بِمَفَازَتِهِمۡ لَا يَمَسُّهُمُ ٱلسُّوٓءُ وَلَا هُمۡ يَحۡزَنُونَ ٦١﴾ [ الزمر : ٦٠، ٦١ ]

“যারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যারোপ করে, তুমি কিয়ামতের দিন তাদের মুখ কালো দেখবে। উদ্ধতদের আবাসস্থল কি জাহান্নাম নয়? এবং আল্লাহ মুত্তাকিদেরকে উদ্ধার করবেন তাদের সাফল্যসহ; তাদেরকে অমঙ্গল স্পর্শ করবে না এবং তারা দুঃখও পাবে না।” [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৬০-৬১]

আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন,

﴿يَوۡمَ تَبۡيَضُّ وُجُوهٞ وَتَسۡوَدُّ وُجُوهٞۚ فَأَمَّا ٱلَّذِينَ ٱسۡوَدَّتۡ وُجُوهُهُمۡ أَكَفَرۡتُم بَعۡدَ إِيمَٰنِكُمۡ فَذُوقُواْ ٱلۡعَذَابَ بِمَا كُنتُمۡ تَكۡفُرُونَ ١٠٦ وَأَمَّا ٱلَّذِينَ ٱبۡيَضَّتۡ وُجُوهُهُمۡ فَفِي رَحۡمَةِ ٱللَّهِۖ هُمۡ فِيهَا خَٰلِدُونَ ١٠٧﴾ [ ال عمران : ١٠٦، ١٠٧ ]

“সেদিন কতকগুলো মুখমণ্ডল হবে শ্বেতবর্ণ এবং কতকগুলো মুখমণ্ডল হবে কৃষ্ণবর্ণ। অতঃপর যাদের মুখমণ্ডল কৃষ্ণবর্ণ হবে (তাদেরকে বলা হবে) তবে কি তোমরা ঈমান আনার পর কাফের হয়েছো? অতএব, তোমরা শাস্তির আস্বাদ গ্রহণ কর, যেহেতু তোমরা কুফরি করেছিলে। আর যাদের মুখমণ্ডল শুভ্র (সাদা) হবে তারা আল্লাহর করুণার অন্তর্ভুক্ত হবে। তারা তন্মধ্যে সদা অবস্থান করবে।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১০৬-১০৭]

গুনাহ ছোট হোক বা বড় হোক তা অন্তরকে নষ্ট করে দেয় এবং অন্তরের পরিচ্ছন্নতা ও নির্মলতাকে কর্দমক্ত ও পঙ্কিলতায় পরিপূর্ণ করে তুলে। এ কারণেই আল্লাহ তা‘আলা গুনাহ ত্যাগ করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَذَرُواْ ظَٰهِرَ ٱلۡإِثۡمِ وَبَاطِنَهُۥٓۚ إِنَّ ٱلَّذِينَ يَكۡسِبُونَ ٱلۡإِثۡمَ سَيُجۡزَوۡنَ بِمَا كَانُواْ يَقۡتَرِفُونَ ١٢٠﴾ [ الانعام : ١٢٠ ]

“আর তোমরা প্রকাশ্য পাপকার্য পরিত্যাগ কর এবং পরিত্যাগ কর গোপনীয় পাপকার্যও।” [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ১২০]

তাই প্রত্যেক ঈমানদারের ওপর অপরিহার্য কর্তব্য হচ্ছে প্রকাশ্য এবং গোপনীয় সকল প্রকার গুনাহ ত্যাগ করা। বিশেষ করে অন্তরের গুনাহ ও ভুল-ক্রটি। কারণ, তা খুবই মারাত্মক ও গভীর প্রভাব বিস্তারকারী।

এর মধ্যকার অন্যতম হলো, *রিয়া বা লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে কোনো কাজ করা, যা সমস্ত আমল নষ্ট করে দেয়। *অনুরূপ অহমিকা ও আত্মপ্রসাদ, যা আমলকে বিক্ষিপ্ত ধুলিকণায় পরিণত করে। *তদ্রূপ হিংসা, বিদ্বেষ ও পরশ্রীকাতরতা যা সাওয়াবকে নিঃশেষ করে দেয় এবং গুনাহের পরিমাণই কেবল বৃদ্ধি করে।

আরও যে সকল গুনাহ অন্তরকে নষ্ট করে দেয় এবং অন্তরের আলো নিভিয়ে দেয় তাহলো, হারামকৃত জিনিসের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করা। এ কারণেই আল্লাহ তা‘আলা তাঁর ঈমানদার বান্দাদেরকে তাদের দৃষ্টিকে সংযত করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿قُل لِّلۡمُؤۡمِنِينَ يَغُضُّواْ مِنۡ أَبۡصَٰرِهِمۡ وَيَحۡفَظُواْ فُرُوجَهُمۡۚ ذَٰلِكَ أَزۡكَىٰ لَهُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ خَبِيرُۢ بِمَا يَصۡنَعُونَ ٣٠﴾ [ النور : ٣٠ ]

“(হে রাসূল!) মুমিনদেরকে বলো: তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। এটাই তাদের জন্যে উত্তম। তারা যা করে সে বিষয়ে আল্লাহ অবহিত।” [সূরা আন-নূর, আয়াত: ৩০]

আল্লাহ তা‘আলা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীগণকে তারা কীভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রীদের সাথে সম্বোধন করে কথা বলবেন তার প্রতি উপদেশ প্রদান করে বলেন,

﴿وَإِذَا سَأَلۡتُمُوهُنَّ مَتَٰعٗا فَسۡ‍َٔلُوهُنَّ مِن وَرَآءِ حِجَابٖۚ ذَٰلِكُمۡ أَطۡهَرُ لِقُلُوبِكُمۡ وَقُلُوبِهِنَّ﴾ [ الاحزاب : ٥٣ ]

“তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের) পত্নীদের নিকট কিছু চাইলে পর্দার অন্তরাল থেকে চাইবে। এই বিধান তোমাদের ও তাদের হৃদয়ের জন্যে অধিক পবিত্র।” [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৫৩]

যে ব্যক্তি তার নজর বা দৃষ্টিকে হারামে পতিত হওয়া থেকে সংরক্ষণ করলো, আল্লাহ তা‘আলা তার দৃষ্টিকে কার্যকর এবং অন্তরকে নির্মল, সুস্থ্য, শুদ্ধ ও শক্তিশালী করে দিবেন। তাই তোমার নজরকে হারাম থেকে হিফাযত রাখো। কারণ, কোনো কোনো দৃষ্টি, দৃষ্টি নিক্ষেপকারীর অন্তরের জন্য বিপদের কারণ হয়েছে।

আরও যে সকল গুনাহর কাজ অন্তর নষ্ট করে দেয় এবং অন্তরের নির্মলতা ও পরিচ্ছন্নতা কর্দমাক্ত করে তুলে তাহলো, বাদ্যযন্ত্র এবং সূর শ্রবণ করা। গান, সূর এবং সঙ্গীত অন্তরকে নষ্ট করে দেয়। ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন,

«إن الغناء ينبت النفاق في القلب كما ينبت الماء البقل»

“গান, সূর ও সঙ্গীত অন্তরে মোনাফেকীর চারা অঙ্কুরিত করে যেমন, পানি তৃণ ও উদ্ভিদ অঙ্কুরিত করে।”

বস্তুত বাদ্যযন্ত্র, সূর ও সঙ্গীত তোমার অন্তরে আল্লাহর আয়াত বা নির্দশন নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করতে বাধার সৃষ্টি করে থাকে। তোমার অন্তরে কুরআন শুনাকে ও অর্থ জানা কঠিন করে তোলে এবং তোমার শরীরে আনুগত্য, ও ইহসানকে বোঝা করে তোলে।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن يَشۡتَرِي لَهۡوَ ٱلۡحَدِيثِ لِيُضِلَّ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِ بِغَيۡرِ عِلۡمٖ وَيَتَّخِذَهَا هُزُوًاۚ أُوْلَٰٓئِكَ لَهُمۡ عَذَابٞ مُّهِينٞ ٦﴾ [ لقمان : ٦ ]

“মানুষের মধ্যে কেউ কেউ অজ্ঞতাবশতঃ (মানুষকে) আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করবার জন্যে অসার বাক্য ক্রয় করে নেয় এবং আল্লাহ প্রদর্শিত পথ নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রূপ করে; তাদেরই জন্যে রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি।” [সূরা লোকমান, আয়াত: ৬]

সালাফদের অনেকেই এই আয়াত ( لَهْوَ الْحَدِيثِ ) এর ব্যাখ্যা গান, সূর ও সঙ্গীত বলে উল্লেখ করেছেন। তাই বাদ্যযন্ত্র ও গান-বাজনা শোনা থেকে বারবার সাবধান করছি।

এবং তোমাকে আবারও সাবধান করছি তুমি যেন অধিকাংশ মানুষের অবস্থা দেখে ধোকা ও প্রতারিত না হও। কারণ, তাদের প্রতি আল্লাহ তা‘আলার এ কথা যথার্থ, যাতে তিনি বলেন,

﴿وَإِن تُطِعۡ أَكۡثَرَ مَن فِي ٱلۡأَرۡضِ يُضِلُّوكَ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِۚ إِن يَتَّبِعُونَ إِلَّا ٱلظَّنَّ وَإِنۡ هُمۡ إِلَّا يَخۡرُصُونَ ١١٦﴾ [ الانعام : ١١٦ ]

“(হে রাসূল) তুমি যদি দুনিয়াবাসীদের অধিকাংশ লোকের কথা মতো চলো, তবে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিভ্রান্ত করে ফেলবে।” [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ১১৬]

আর নিম্নের দো‘আ বেশি বেশি পাঠ করবে:

«اللهم طهرني من خطاياي بالماء والثلج والبرد»

“হে আল্লাহ! আমার গুনাহকে পানি বরফ ও শিশির দ্বারা ধুয়ে পবিত্র কর।”

কারণ, গুনাহ ছোট হোক বা বড় হোক তা অন্তরকে নোংরা এবং আবর্জনাযুক্ত করে তুলে। তাই অন্তরকে পবিত্র করা প্রয়োজন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন