HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আয়াতে তাতহীর ও হাদিসে কিসার অর্থ

লেখকঃ সানাউল্লাহ নজির আহমদ

(খ). “আহলুল বাইত” দ্বারা উদ্দেশ্য কি?
আরবিতে أَهْلُ الْبَيْتِ [আহলুল বাইত] দ্বারা সর্বপ্রথম স্ত্রী, অতঃপর পর্যায়ক্রমে একই ঘর ও এক ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে বসবাসকারী যেমন ছেলে-মেয়ে, পিতা-মাতা ইত্যাদি বুঝানো হয়। অতঃপর আত্মীয় স্বজন এবং একই বংশের লোকদের বুঝানো হয়।

কুরআনে আহল দ্বারা মৌলিক অর্থ স্ত্রীই বুঝানো হয়েছে, যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿فَلَمَّا قَضَىٰ مُوسَى ٱلۡأَجَلَ وَسَارَ بِأَهۡلِهِۦٓ﴾ [ القصص : ٢٩ ]

“অতঃপর মূসা যখন মেয়াদ পূর্ণ করল এবং সপরিবারে যাত্রা করল”। [সূরা কাসাস: (২৯)] নিশ্চিতভাবে এখানে আহাল দ্বারা মূসা আলাইহিস সালামের স্ত্রী উদ্দেশ্য, কারণ তার সাথে আর কেউ ছিল না। মিসরের বাদশাহর স্ত্রী তার স্বামীকে বলেছিল:

﴿مَا جَزَآءُ مَنۡ أَرَادَ بِأَهۡلِكَ سُوٓءًا إِلَّآ أَن يُسۡجَنَ أَوۡ عَذَابٌ أَلِيمٞ ٢٥﴾ [ يوسف : ٢٥ ]

“যে লোক তোমার পরিবারের সাথে মন্দকর্ম করতে চেয়েছে, তাকে কারাবন্দী করা বা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দেয়া ছাড়া তার আর কী দণ্ড হতে পারে? [সূরা ইউসুফ: (২৫)] এখানে আহল দ্বারা নিশ্চিতভাবে স্ত্রী উদ্দেশ্য।

( أهل البيت ) আহলুল বায়েতের দ্বিতীয় শব্দ البيت অর্থ ঘর। সূরা আল-আহযাবের এ অংশে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রীদের সম্বোধন করে البيت একবচন ও بيوت বহুবচন শব্দটি তিনবার উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন:

(ক). وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ

(খ). إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمْ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيتِ

(গ). وَاذْكُرْنَ مَا يُتْلَى فِي بُيُوتِكُنَّ

কয়েক আয়াত পর আবারও البيت শব্দের উল্লেখ করা হয়েছে, কিন্তু সেখানে البيت শব্দটির সম্পর্ক জুড়ে দেয়া হয়েছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে, এর ন্যায় তার স্ত্রীদের সাথে সম্পৃক্ত করা হয় নি, যেমন আল্লাহর বাণী:

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا تَدۡخُلُواْ بُيُوتَ ٱلنَّبِيِّ إِلَّآ أَن يُؤۡذَنَ لَكُمۡ ٥٣ ﴾ [ الاحزاب : ٥٣ ]

“হে মুমিনগণ, তোমরা নবীর ঘরসমূহে প্রবেশ করো না; অবশ্য যদি তোমাদেরকে অনুমতি দেয়া হয়”। সূরা আহযাব: (৫৩), এ আয়াতের শেষে আল্লাহ বলেন:

﴿وَإِذَا سَأَلۡتُمُوهُنَّ مَتَٰعٗا فَسۡ‍َٔلُوهُنَّ مِن وَرَآءِ حِجَابٖۚ ذَٰلِكُمۡ أَطۡهَرُ لِقُلُوبِكُمۡ وَقُلُوبِهِنَّۚ ٥٣ ﴾ [ الاحزاب : ٥٣ ]

“আর যখন নবীপত্নীদের কাছে তোমরা কোন সামগ্রী চাইবে তখন পর্দার আড়াল থেকে চাইবে; এটি তোমাদের ও তাদের অন্তরেরজন্য অধিকতর পবিত্র”। সূরা আহযাব: (৫৩), আয়াতের এ অংশ থেকে প্রমাণিত যে, নবীর ঘরের প্রথম সদস্য তার স্ত্রীগণ।‎

অতএব এ আয়াতে ‘বুয়ূতে নবী’ বা নবীর ঘর ও পূর্বের আয়াতে ‘আহলাল বাইত’ বা ঘরের পরিবার মূলত একই ঘর। ঘরের সম্পর্ক কখনো স্ত্রী তথা আহলের সাথে, কখনো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে করা হয়েছে। নবীর ঘর তার স্ত্রীদের ঘর, তার স্ত্রীদের ঘর তার ঘর। কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আলাদা কোন ঘর ছিল না। বিবেকও সমর্থন করে না যে, তার ঘর তার স্ত্রীদের ঘর হবে না। অতএব ঘর একটিই অর্থাৎ নবীর ঘর, এর পরিবার সবাই আহলুল বাইত। রহমত, বরকত ও সম্মান এ ঘরেই নাযিল হয়। নবীর সম্মানে তার স্ত্রীদের বিষয় যে গুরুত্ব রাখে, আলির ঘর কখনোই সে গুরুত্ব রাখে না। আলির ঘরে যেহেতু নবীর সন্তান রয়েছে, তাই তিনি চেয়েছেন তার পরিবারের ন্যায় আলির পরিবার বরকত, রহমত ও পবিত্রতা লাভ করুক। এ জন্যই তিনি আল্লাহর নিকট দো‘আ করেছেন। সুতরাং আহলুল বাইত দ্বারা স্ত্রীদের ব্যতীত অন্য অর্থ নেয়া চরম গোঁড়ামি এবং বিবেক, ভাষা ও পরিভাষার বিপরীতে অবস্থান নেয়া।

যুক্তি সঙ্গত কোন কারণ ব্যতীত আহলূল বায়েতের মৌলিক ও প্রকৃত অর্থ ত্যাগ করা ব্যাকরণের ভাষায় বৈধ নয়। শিয়ারা “আহলে বায়েত” এর যে অর্থ নেয় তা প্রকৃত অর্থ নয়। কোন শব্দের প্রকৃত অর্থ না নিয়ে দূরবর্তী অর্থ নেয়ার জন্য দু’টি শর্ত অবশ্যই জরুরী:

১. মৌলিক অর্থ গ্রহণ করা সম্ভব নয় এমন বাধা থাকা।

২. দূরবর্তী অর্থের কোন আলামত অথবা দলিল থাকা।

এখানে এ দু’টি বিষয়ের কোনটি নেই, না বাধা, না আলামত, একমাত্র প্রবৃত্তি, গোঁড়ামি ও মূর্খতা ব্যতীত! বরং যুক্তি ও ব্যাক্যরীতি মৌলিক অর্থই প্রমাণ করে, যা আমরা আয়াতের শানে নুযূলে উল্লেখ করব ইনশাআল্লাহ।

আহল এর দূরবর্তী অর্থ:

দূরবর্তী অর্থে ‘আহাল’ আত্মীয়-স্বজন বুঝায়, বরং একই বংশের সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে। যেমন ইউসুফ আলাইহিস সালাম তার ভাইদের বলেছিলেন:

﴿ وَأۡتُونِي بِأَهۡلِكُمۡ أَجۡمَعِينَ ٩٣ ﴾ [ يوسف : ٩٢ ]

“আর তোমরা তোমাদের পরিবারের সকলকে নিয়ে আমার কাছে চলে আস”। সূরা ইউসুফ: (৯৩) পরবর্তী আয়াতে আল্লাহ পরিবারের অর্থের বর্ণনা দিয়েছেন, যেমন:

﴿فَلَمَّا دَخَلُواْ عَلَىٰ يُوسُفَ ءَاوَىٰٓ إِلَيۡهِ أَبَوَيۡهِ وَقَالَ ٱدۡخُلُواْ مِصۡرَ إِن شَآءَ ٱللَّهُ ءَامِنِينَ ٩٩ وَرَفَعَ أَبَوَيۡهِ عَلَى ٱلۡعَرۡشِ وَخَرُّواْ لَهُۥ سُجَّدٗاۖ ١٠٠﴾ [ يوسف : ٩٨، ٩٩ ]

“অতঃপর যখন তারা ইউসুফের নিকট প্রবেশকরল, তখন সে তার পিতামাতাকে নিজের কাছে ‎‎ স্থান করে দিল এবং বলল, ‘আল্লাহর ইচ্ছায়আপনারা নিরাপদে মিসরে প্রবেশ করুন’। আর সে তার পিতামাতাকে রাজাসনে উঠাল এবংতারা সকলে তার সামনে সেজদায় লুটিয়ে পড়ল”। সূরা ইউসুফ: (৯৯-১০০), অর্থাৎ ইউসূফ আলাইহিস সালামের এগারো ভাই ও পিতা-মাতা।

মূসা আলাইহিস সালামের বোন বলেছেন। আল্লাহর বাণী:

﴿ فَقَالَتۡ هَلۡ أَدُلُّكُمۡ عَلَىٰٓ أَهۡلِ بَيۡتٖ يَكۡفُلُونَهُۥ لَكُمۡ وَهُمۡ لَهُۥ نَٰصِحُونَ ١٢﴾ [ القصص : ١٢ ]

“তারপর মুসার বোন এসেবলল, ‘আমি কি তোমাদেরকে এমন একটিপরিবারের সন্ধান দেব, যারা এ শিশুটিকে ‎‎ তোমাদের পক্ষে লালন পালন করবে এবং তারাতার শুভাকাঙ্ক্ষী হবে”। সূরা কাসাস: (১২)

এখানে “আহলে বায়েত” দ্বারা গৃহকর্ত্রী মূসা আলাইহিস সালামের মা অবশ্যই উদ্দেশ্য, কারণ দুগ্ধ দান একমাত্র তারই কাজ, কিন্তু পরিবারের সবাই যেহেতু তার প্রতি আন্তরিক ও তার কল্যাণ কামী, তাই নারী-পুরুষ সবাইকে শামিল করে পরবর্তীতে ক্রিয়ার পুংলিঙ্গ ও বহুবচন ব্যবহার করা হয়েছে।

দূরবর্তী অর্থে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়েকটি হাদিসে আহলে বায়েত দ্বারা বংশের লোকদের বুঝিয়েছেন:

যায়েদ ইব্‌ন আরকাম রাদিয়াল্লাহু আনহুকে প্রশ্ন করা হয়েছিল: “তার স্ত্রীগণ কি আহলে বাইতের অন্তর্ভুক্ত? তিনি বলেন: তার স্ত্রীগণ আহলে বায়তের অন্তর্ভুক্ত, কিন্তু যে আহলে বায়তের ওপর সদকা হারাম, তারা হলেন: আলি, জাফর, আকিল ও আব্বাসের পরিবার”। মুসলিম: (৪৪৩২) অতএব আব্বাস, আব্দুল মুত্তালিব, আকিল ইব্‌ন আবি তালেব ও জা‘ফর ইব্‌ন আবি তালেবের পরিবার।

আব্দুল মুত্তালিবের সন্তানও আহলে বাইতের অন্তর্ভুক্ত। মুসলিমে এসেছে: রবিআ ইব্‌ন হারেস ইব্‌ন আব্দুল মুত্তালিব ও আব্বাস ইব্‌ন আব্দুল মুত্তালিব, তাদের সন্তান আব্দুল মুত্তালিব ইব্‌ন রাবিআ ও ফজল ইব্‌ন আব্বাসকে সদকার বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট প্রেরণ করেন, তিনি তাদেরকে বলেন: “সদকা মুহাম্মাদের পরিবারের জন্য উচিত নয়, তা শুধু মানুষের ময়লা”। মুসলিম: (১৭৯১), এখানে তাদেরকে তিনি মুহাম্মদের পরিবার আখ্যা দিয়েছেন।

এ দু’টি হাদিস থেকে প্রমাণ হল যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাদা আব্দুল মুত্তালিব ও চাচা আবু তালেবের সন্তানগণ মুহাম্মাদের আহলের অন্তর্ভুক্ত, শুধু আলি, ফাতেমা, হাসান-হুসাইন নয়। তাদের জন্য সদকা হারাম।

মোদ্দাকথা: আহলে বায়েতের মৌলিক ও প্রকৃত অর্থ স্ত্রী, অতঃপর সন্তান, পিতা-মাতা ও বংশকে অন্তর্ভুক্ত করে। যেমন আমরা যখন কাউকে সপরিবারে আমন্ত্রণ করি, তার স্ত্রীই প্রথম উদ্দেশ্য হয়। সন্তান থাকলে স্ত্রীসহ সন্তানও উদ্দেশ্য হয়। তার পরিবারে যদি পিতা-মাতা ও কোন আত্মীয় থাকে, হোক দূরের, সেও অন্তর্ভুক্ত হয়। সে যাদের অভিভাবক, যাদের ভরণপোষণ তার দায়িত্বে এবং যারা তার অধীন ও তত্ত্বাবধানে রয়েছে সবাই পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। কখনো আরো ব্যাপক অর্থে বংশের জন্য পরিবার ব্যবহার হয়, অনুরূপ আহলে বাইত শব্দটি।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন