HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আয়াতে তাতহীর ও হাদিসে কিসার অর্থ

লেখকঃ সানাউল্লাহ নজির আহমদ

(ঙ). “হাদিসুল কিসা” কি, অর্থসহ জানতে চাই?
কথিত হাদিসুল কিসা উম্মুল মুমেনিন আয়েশা, উম্মে সালামা ও ওয়াসেলাহ ইব্‌ন আসকা রাদিয়াল্লাহু আনহুম প্রমুখ থেকে বিভিন্নভাবে বর্ণিত রয়েছে। তুলনামূলক বিশুদ্ধ ও প্রসিদ্ধ কয়েকটি বর্ণনা পেশ করছি: আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:

‎" خَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ غَدَاةً، وَعَلَيْهِ مِرْطٌ مُرَحَّلٌ مِنْ شَعْرٍ أَسْوَدَ، فَجَاءَ الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ، فَأَدْخَلَهُ، ثُمَّ جَاءَ الْحُسَيْنُ فَدَخَلَ مَعَهُ، ثُمَّ جَاءَتْ فَاطِمَةُ فَأَدْخَلَهَا، ثُمَّ جَاءَ عَلِيٌّ فَأَدْخَلَهُ، ثُمَّ قَالَ : إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا "

“একদা সকালে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হলেন, তার গায়ে ছিল কালো পশমের চাদর, হাসান ইব্‌ন আলি আসল তাকে তাতে দাখিল করলেন, অতঃপর হুসাইন আসল তাকে তার সাথে দাখিল করলেন, অতঃপর ফাতেমা আসল তাকে দাখিল করলেন, অতঃপর আলি আসল তাকেও দাখিল করলেন। অতঃপর তিলাওয়াত করলেন:

﴿إِنَّمَا يُرِيدُ ٱللَّهُ لِيُذۡهِبَ عَنكُمُ ٱلرِّجۡسَ أَهۡلَ ٱلۡبَيۡتِ وَيُطَهِّرَكُمۡ تَطۡهِيرٗا﴾ [ الاحزاب : 33 ]

“হে নবী পরিবার, আল্লাহ তো কেবল চান ‎‎ তোমাদের থেকে অপবিত্রতাকে দূরীভূত করতে এবং তোমাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র করতে”। [মুসলিম: ৪৪৫৭]

হাদিসটি আমাদের কথার বিপরীত নয়, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দোয়া থেকে স্পষ্ট হয় যে, তাদের চার জন্য বা তার কোন আত্মীয় সম্পর্কে এ আয়াত নাযিল হয় নি, যদি নাযিল হত তবে দোয়ার প্রয়োজন ছিল না, কারণ আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত বিষয় প্রার্থনা করা মানে দেয়ার মত কোনো বস্তু প্রার্থনা করা। যেমন কোন নবী নবুওয়তের জন্য দোয়া করেন নি কারণ তা বৃথা।

ইমাম তিরমিযি রহ. বর্ণনা করেন:

عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، أَنّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَلَّلَ عَلَى الْحَسَنِ، وَالْحُسَيْنِ، وَعَلِيٍّ، وَفَاطِمَةَ كِسَاءً، ثُمَّ قَالَ : " اللَّهُمَّ هَؤُلَاءِ أَهْلُ بَيْتِي وَخَاصَّتِي أَذْهِبْ عَنْهُمُ الرِّجْسَ، وَطَهِّرْهُمْ تَطْهِيرًا " ، فَقَالَتْ أُمُّ سَلَمَةَ : وَأَنَا مَعَهُمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ : " إِنَّكِ إِلَى خَيْرٍ ".

উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসান, হুসাইন, আলি ও ফাতেমাকে কাপড় দ্বারা ঢেকে নেন, অতঃপর বলেন: “হে আল্লাহ এরা আমার আহলে বায়েত ও বিশেষ ব্যক্তি, তাদের থেকে নাপাকি দূর করুন, তাদেরকে পূর্ণরূপে পবিত্র করুন”। উম্মে সালামা বললেন: হে আল্লাহর রাসূল, আমি কি তাদের অন্তর্ভুক্ত? তিনি বললেন: “তুমি কল্যাণের ওপর রয়েছে”। ইমাম তিরমিযি বলেন: এ হাদিসটি হাসান ও সহিহ। এ অধ্যায়ে এ হাদিসটিই সবচেয়ে উত্তম। তিরমিযি: (৩৮৩৫) এ হাদিসের একজন্য বর্ণনাকারী শাহর ইব্‌ন হাওশাব খুব দুর্বল, শুবা ও ইয়াহইয়া ইব্‌ন মায়িন তার হাদিস গ্রহণ করতেন না।

ইমাম আহমদ রহ. উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণনা করেন:

" اللَّهُمَّ أَهْلِي، أَذْهِبْ عَنْهُمْ الرِّجْسَ، وَطَهِّرْهُمْ تَطْهِيرًا، اللَّهُمَّ أَهْلُ بَيْتِي، أَذْهِبْ عَنْهُمْ الرِّجْسَ، وَطَهِّرْهُمْ تَطْهِيرًا، اللَّهُمَّ أَهْلُ بَيْتِي أَذْهِبْ عَنْهُمْ الرِّجْسَ وَطَهِّرْهُمْ تَطْهِيرًا " ، قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَلَسْتُ مِنْ أَهْلِكَ؟ قَالَ : " بَلَى، فَادْخُلِي فِي الْكِسَاءِ " ، قَالَتْ : فَدَخَلْتُ فِي الْكِسَاءِ بَعْدَمَا قَضَى دُعَاءَهُ لِابْنِ عَمِّهِ عَلِيٍّ وَابْنَيْهِ وَابْنَتِهِ فَاطِمَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ

“হে আল্লাহ আমার আহাল, তুমি তাদের থেকে নাপাকি দূর কর, তাদেরকে পূর্ণরূপে পবিত্র কর। হে আল্লাহ আমার আহলে বায়েত, তাদের থেকে নাপাকি দূর কর, তাদেরকে পূর্ণরূপে পবিত্র কর। হে আল্লাহ আমার আহলে বায়েত, তাদের থেকে নাপাকি দূর কর, তাদেরকে পূর্ণরূপে পবিত্র কর। আমি বললাম: হে আল্লাহর রাসূল, আমি কি আপনার আহলে বায়েত না? তিনি বললেন: অবশ্যই, চাদরে প্রবেশ কর”। তিনি বলেন: আমি চাদরে প্রবেশ করি তখন তিনি চাচাত ভাই আলি, দুই ছেলে ও মেয়ে ফাতেমার জন্য দোয়া শেষ করেছেন। আহমদ: (২৫৯৫১) এ হাদিসেও দুর্বল বর্ণনাকারী শাহর ইব্‌ন হাওশাব রয়েছে।

ইমাম তাবারি রহ. বর্ণনা করেন:

وَاثِلَةَ بْنِ الأَسْقَعِ ... إِنِّي عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ يَوْمٍ إِذْ جَاءَ عَلِيٌّ، وَفَاطِمَةُ، وَالْحَسَنُ، وَالْحُسَيْنُ، فَأَلْقَى عَلَيْهِمْ كِسَاءً لَهُ، ثُمَّ قَالَ : اللَّهُمَّ هَؤُلاءِ أَهْلُ بَيْتِي، اللَّهُمَّ أَذْهِبْ عَنْهُمُ الرِّجْسَ وَطَهِّرْهُمْ تَطْهِيرًا " ، فَقُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ، وَأَنَا، قَالَ : " وَأَنْتَ " ، قَالَ : فَوَاللَّهِ إِنَّهَا لأَوْثَقُ عَمَلِي فِي نَفْسِي "

ওয়াসেলাহ ইব্‌ন আসকা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: “..একদা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে উপস্থিত ছিলাম, আলি, ফাতেমা, হাসান ও হুসাইন আসল, তিনি তাদের ওপর নিজ কাপড় ছড়িয়ে দিলেন। অতঃপর বললেন: “হে আল্লাহ এরা আমার আহলে বায়েত, তাদের থেকে নাপাকি দূর কর এবং তাদেরকে পূর্ণরূপে পাক কর”। আমি বললাম: হে আল্লাহর রাসূল আমিও? তিনি বললেন: “তুমিও”। তিনি বললেন: আল্লাহর শপথ সেটা আমার নিকট আমার খুব গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। মুজামুল কাবির লি তাবরানি: (১৭৬৫৫), হাদিসটি হাসান, কুলসুম ইব্‌ন জিয়াদের কারণে এতে দুর্বলতা এসেছে।

ইমাম বায়হাকি রহ. বর্ণনা করেন:

عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، قَالَتْ : فِي بَيْتِي أُنْزِلَتْ إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا، قَالَتْ : فَأَرْسَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى فَاطِمَةَ، وَعَلِيٍّ، وَالْحَسَنِ، وَالْحُسَيْنِ، فَقَالَ : " هَؤُلاءِ أَهْلُ بَيْتِي " وَفِي حَدِيثِ الْقَاضِي، وَالسُّلَمِيِّ : هَؤُلاءِ أَهْلِي قَالَتْ : فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَمَا أَنَا مِنْ أَهْلِ الْبَيْتِ؟ قَالَ : بَلَى إِنْ شَاءَ اللَّهُ تَعَالَى " ، قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ : هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ سَنَدُهُ ثِقَاتٌ رُوَاتُهُ، قَالَ الشَّيْخُ : وَقَدْ رُوِيَ فِي شَوَاهِدِهِ، ثُمَّ فِي مُعَارَضَتِهِ، أَحَادِيثُ لا يَثْبُتُ مِثْلُهَا، وَفِي كِتَابِ اللَّهِ الْبَيَانُ، لِمَا قَصَدْنَاهُ إِلَى إِطْلاقِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الآلَ، وَمُرَادُهُ مِنْ ذَلِكَ أَزْوَاجُهُ، أَوْ هُنَّ دَاخِلاتٌ فِيهِ

উম্মে সালামা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমার ঘরে নাযিল হয়েছে:

﴿إِنَّمَا يُرِيدُ ٱللَّهُ لِيُذۡهِبَ عَنكُمُ ٱلرِّجۡسَ أَهۡلَ ٱلۡبَيۡتِ وَيُطَهِّرَكُمۡ تَطۡهِيرٗا﴾ [ الاحزاب : 33 ]

তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাতেমা, আলি ও হাসান-হুসাইনকে ডেকে পাঠান। অতঃপর বলেন: “এরা আমার আহলে বায়েত”। কাদি ও সুলামির বর্ণনাকৃত হাদিসে রয়েছে: এরা আমার আহাল [পরিবার], তিনি বলেন: আমি বললাম হে আল্লাহর রাসূল, আমি কি আহলে বায়েতের অন্তর্ভুক্ত নয়? তিনি বললেন: অবশ্যই, ইনশাআল্লাহ। আবু আব্দুল্লাহ বলেন: এ হাদিসের সনদ বিশুদ্ধ, এর বর্ণনাকারী সবাই নির্ভরযোগ্য। এর স্বপক্ষে শাহেদ ও বিপরীতে বিপরীত বর্ণনা রয়েছে, কিন্তু সেগুলো এর মত বিশুদ্ধ নয়। আমাদের উদ্দেশ্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের “আল” বা পরিবার ব্যাপক, যার অর্থ তার স্ত্রীগণ অথবা তার স্ত্রীগণ তার অন্তর্ভুক্ত”। সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকি: (২৬২৮)

ইমাম তাহাভি রহ. বলেন:

عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، قَالتْ : جَاءَتْ فَاطِمَةُ بِطَعَامٍ لَهَا إلَى أَبِيهَا، وَهُوَ عَلَى مَنَازِلِهِ، فَقَالَ : " أَيْ بُنَيَّةُ، ائْتِينِي بِأَوْلادِي وَابْنَيَّ وَابْنِ عَمِّكِ " ، قَالَتْ : ثُمَّ جَلَّلَهُمْ، أَوْ قَالَتْ : حَوَى عَلَيْهِمُ الْكِسَاءَ، فَقَالَ : " هَؤُلاءِ أَهْلُ بَيْتِي وَحَامَّتِي، فَأَذْهِبْ عَنْهُمُ الرِّجْسَ، وَطَهِّرْهُمْ تَطْهِيرًا " قَالَتْ أُمُّ سَلَمَةَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ، وَأَنَا مَعَهُمْ، قَالَ : " أَنْتِ مِنْ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ عَلَيْهِ السَّلامُ وَأَنْتِ عَلَى خَيْرٍ " ، أَوْ " إلَى خَيْرٍ ".

উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: ফাতেমা কিছু খানা নিয়ে তার পিতার নিকট আসল। তিনি তখন নিজ ঘরেই ছিলেন। তিনি বললেন: “হে মেয়ে, আমার নিকট আমার সন্তান ও আমার দু’ছেলে এবং তোমার চাচাত ভাইকে নিয়ে আস”। তিনি বলেন: অতঃপর তাদেরকে ঢেকে নেন, অথবা বলেছেন: তাদের ওপর কাপড় ফেলে দেন এবং বলেন: “এরা আমার আহলে বায়েত ও বিশেষ ব্যক্তি, এদের থেকে নাপাকি দূর করুন এবং তাদেরকে পূর্ণরূপে পবিত্র করুন। উম্মে সালামা বলেন: হে আল্লাহর রাসূল, আমি কি তাদের সাথে? তিনি বললেন: তুমি নবীর স্ত্রী, তুমি কল্যাণের ওপর রয়েছে”। মুশকিলুল আসার লিত তাহাভি: (৬৫৩)

আহলে বায়তের অর্থ উম্মে সালামার নিকট অস্পষ্ট ছিল না, তিনি আহলে বায়তের শামিল ভাল করেই জানতেন। কারণ তার ভাষা আরবি, আয়াতেও কোন জটিলতা বা অস্পষ্টতা নেই। তিনি জানতেন আয়াতে নিষ্পাপ হওয়ার ঘোষণা নেই, বরং তাতে রয়েছে আল্লাহর পছন্দ ও সন্তুষ্টির কথা, অর্থাৎ “হে নবী পত্নীগণ/আহলে বায়েত আল্লাহ তো কেবল পছন্দ করেন তোমাদের ‎‎ থেকে অপবিত্রতাকে দূরীভূত করতে এবং ‎‎ তোমাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র করতে”। এটা শুধু সংবাদ, যার আমল যে পরিমাণ তার থেকে সে পরিমাণ নাপাকি দূর হবে, সে পরিমাণ সে পবিত্রতা হাসিল করবে। উম্মে সালাম যখন দেখলেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাতেমা, হাসান-হুসাইন ও আলির জন্য দোয়া করছেন, সে দোয়ায় তিনিও অংশ গ্রহণ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে দোয়া লাভের এটা সুবর্ণ সুযোগ ছিল। কোন সাহাবিই এ সুযোগ ছাড়তেন না। কায়স ইব্‌ন সাদ ইব্‌ন উবাদাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন:

«زارنا رسول الله صلى الله عليه وسلم في منزلنا فقال : السلام عليكم ورحمة الله، قال : فرد سعد رداً خفيفاً يعني : أباه قلت : ألا تأذن لرسول الله صلى الله عليه وسلم قال : ذره يكثر علينا السلام، فقال : السلام عليكم ورحمة الله، فرد سعد رداً خفيفاً، ثم قال : السلام عليكم ورحمة الله، ثم رجع رسول الله صلى الله عليه وسلم وأتبعه سعد فقال : يا رسول الله ! إني كنت أسمع تسليمك وأرد رداً خفيفاً لتكثر علينا من السلام، فانصرف معه صلى الله عليه وسلم» رواه أبو داود

“একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বাড়িতে আসলেন, তিনি বললেন: السلام عليكم ورحمة الله সাদ আস্তে উত্তর দিলেন, অর্থাৎ তার পিতা। আমি বললাম: আপনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অনুমতি দিচ্ছেন না? তিনি বললেন: চুপ থাক, আমাদের ওপর সালামের সংখ্যা বাড়ুক। অতঃপর তিনি বললেন: السلام عليكم ورحمة الله সাদ আস্তে উত্তর দিলেন। অতঃপর বললেন: السلام عليكم ورحمة الله অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রওয়ানা করলেন, সাদ তার পিছু নিলেন এবং বললেন: হে আল্লাহর রাসূল, আমি আপনার সালাম শুনতে ছিলাম ও আস্তে উত্তর দিতে ছিলাম যেন, আমাদের ওপর সালামের সংখ্যা বাড়ে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাথে রওয়ানা করলেন”। আবু দাউদ: (৪৫১৩)

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু সূত্রে বুখারি ও মুসলিম বর্ণনা করেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

«يَدْخُلُ مِنْ أُمَّتِي الْجَنَّةَ سَبْعُونَ أَلْفًا بِغَيْرِ حِسَابٍ، فَقَالَ رَجُلٌ : يَا رَسُولَ اللَّهِ، ادْعُ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ، قَالَ : اللَّهُمَّ اجْعَلْهُ مِنْهُمْ، ثُمَّ قَامَ آخَرُ، فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ، ادْعُ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ، قَالَ : سَبَقَكَ بِهَا عُكَّاشَةُ»

আমার উম্মত থেকে সত্তুর হাজার বিনা হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ করবে, এক ব্যক্তি বলল: হে আল্লাহর রাসূল, আমার জন্য দোয়া করুন যেন, আল্লাহ আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন, তিনি বললেন: হে আল্লাহ তাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করুন। অতঃপর এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলে: হে আল্লাহর রাসূল, আমার জন্য দোয়া করুন যেন, আল্লাহ আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন, তিনি বললেন: উক্কাশা তোমাকে অতিক্রম করে গেছে”। বুখারি: (৬০৮৬), মুসলিম: (৩২২)

এভাবে সাহাবিগণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দোয়ার জন্য প্রতিযোগিতা করতেন, উম্মে সালামার বিষয়টিও অনুরূপ ছিল। এতে যদি ব্যতিক্রম কিছু থাকত, তাহলে অবশ্যই অন্যান্য স্ত্রীগণ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতেন।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দোয়ার বরকতে আলি, ফাতেমা ও হাসান-হুসাইন আহলে বায়েতের অন্তর্ভুক্ত, আয়াতের কারণে নয়। কারণ আয়াত নাযিলের পর একটি বিরতিসহ এ ঘটনা ঘটে। হাদিসে কিসার মূল বিষয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের জন্য দোয়া করেছেন যেন আল্লাহ তাদের থেকে নাপাকি দূর করেন ও তাদেরকে পরিপূর্ণরূপে পবিত্র করেন। এর চূড়ান্ত দাবি হচ্ছে তারা মুত্তাকীদের অন্তর্ভুক্ত, তারা নাপাকি মুক্ত ও পবিত্র। নাপাকি ত্যাগ করে পবিত্রতা অর্জন করা প্রত্যেক মুমিনের ওপরই ওয়াজিব, কারণ আল্লাহ সকল মুমিনের ক্ষেত্রে চান তারা পবিত্রতা অর্জন করুক, শুধু আহলে বায়েতের ক্ষেত্রে নয়, যদিও তারা এর বেশী হকদার। নবীর স্ত্রী হিসেবে আল্লাহ আহলে বায়েতের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন, তাদের জন্য দ্বিগুণ সাওয়াবের সুসংবাদ ও শাস্তির হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চেয়েছেন ফাতেমা, আলি ও হাসান-হুসাইন আল্লাহর বিশেষ খেতাবের অন্তর্ভুক্ত হোক, তারা আহলের বায়েতের ন্যায় ফজিলত অর্জন করুক। এটা তার মনুষ্য দুর্বলতা, রক্তের টান। যেমন ছিল চাচা আবু তালেবের প্রতি তার হৃদয়ের টান এবং পিতা আজরের প্রতি ইবরাহিমের অধিক আগ্রহ। যেমন নূহ আলাইহিস সালাম হাজারো কাফের থেকে নিজ সন্তানকেই আহ্বান করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿وَنَادَىٰ نُوحٌ ٱبۡنَهُۥ وَكَانَ فِي مَعۡزِلٖ يَٰبُنَيَّ ٱرۡكَب مَّعَنَا وَلَا تَكُن مَّعَ ٱلۡكَٰفِرِينَ ٤٢ ﴾ [ هود : ٤٢ ]

এবং নূহ তার পুত্রকে ডাক দিল, আর সে ছিল আলাদা স্থানে- ‘হে আমার পুত্র, আমাদের সাথে আরোহণ কর এবং কাফেরদের সাথে থেকো না”। সূরা হুদ: (৪২)

ইমাম মুসলিম রহ. বর্ণনা করেন:

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ : «لَمَّا أُنْزِلَتْ هَذِهِ الآيَةُ وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الأَقْرَبِينَ، دَعَا رَسُولُ اللَّهِ قُرَيْشًا، فَاجْتَمَعُوا، فَعَمَّ، وَخَصَّ، فَقَالَ : يَا بَنِي كَعْبِ بْنِ لُؤَيٍّ، أَنْقِذُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ، يَا بَنِي مُرَّةَ بْنِ كَعْبٍ، أَنْقِذُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ، يَا بَنِي عَبْدِ شَمْسٍ، أَنْقِذُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ، يَا بَنِي عَبْدِ مَنَافٍ، أَنْقِذُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ، يَا بَنِي هَاشِمٍ، أَنْقِذُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ، يَا بَنِي عَبْدِ الْمُطَّلِبِ، أَنْقِذُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ، يَا فَاطِمَةُ، أَنْقِذِي نَفْسَكِ مِنَ النَّارِ، فَإِنِّي لَا أَمْلِكُ لَكُمْ مِنَ اللَّهِ شَيْئًا، غَيْرَ أَنَّ لَكُمْ رَحِمًا سَأَبُلُّهَا بِبَلَالِهَا»

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, যখন এ আয়াত নাযিল হল:

﴿ وَأَنذِرۡ عَشِيرَتَكَ ٱلۡأَقۡرَبِينَ ٢١٤ ﴾ [ الشعراء : ٢١٤ ]

“আর তুমি তোমার নিকট আত্মীয়দের সতর্ক কর”। সূরা আশ-শুআরা: (২১৪) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরাইশদের আহ্বান করলেন, ফলে তারা জমা হল: তিনি সাধারণভাবে ও খাসভাবে আহ্বান করে বললেন: হে বনু কাব ইব্‌ন লুআই, তোমরা তোমাদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত কর। হে বনু মুররাহ ইব্‌ন কাব, তোমরা তোমাদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত কর। হে বনু আবদে শামস, তোমরা তোমাদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত কর। হে বনু আবদে মানাফ, তোমরা তোমাদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত কর। হে বনু হাশেম, তোমরা তোমাদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত কর। হে বনু আব্দুল মুত্তালিব, তোমরা তোমাদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত কর। হে ফাতেমা, তুমি নিজেকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত কর। কারণ আমি তোমাদের জন্য আল্লাহর কোন বিষয়ে অধিকার রাখি না, তবে তোমাদের সাথে রক্তের সম্পর্ক রয়েছে, আমি তা [দুনিয়ায়] পূর্ণরূপে আদায় করব”। মুসলিম: (৩০৮)

ইমাম বুখারি রহ. আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«يَا بَنِي عَبْدِ مَنَافٍ اشْتَرُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ اللَّهِ، يَا بَنِي عَبْدِ الْمُطَّلِبِ اشْتَرُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ اللَّهِ، يَا أُمَّ الزُّبَيْرِ بْنِ الْعَوَّامِ عَمَّةَ رَسُولِ اللَّهِ يَا فَاطِمَةُ بِنْتَ مُحَمَّدٍ اشْتَرِيَا أَنْفُسَكُمَا مِنَ اللَّهِ لَا أَمْلِكُ لَكُمَا مِنَ اللَّهِ شَيْئًا سَلَانِي مِنْ مَالِي مَا شِئْتُمَا»

হে বনু আবদে মানাফ, তোমরা তোমাদেরকে আল্লাহর থেকে খরিদ কর। হে বনু আব্দুল মুত্তালিব, তোমরা তোমাদেরকে আল্লাহর কাছ থেকে খরিদ কর। হে আল্লাহর রাসূলের ফুফি, হে ফাতেমা বিন্‌তে মুহাম্মদ, তোমরা নিজেদেরকে আল্লাহর কাছ থেকে খরিদ কর, আমি তোমাদের জন্য আল্লাহর কোন বিষয়ে অধিকার রাখি না, তোমরা আমার সম্পদ থেকে যা ইচ্ছা আমার কাছে চাও”। বুখারি: (৩২৮৬)

আল্লাহ তা‘আলা মুমিনদেরকে নির্দেশ প্রদান করে বলেন:

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ قُوٓاْ أَنفُسَكُمۡ وَأَهۡلِيكُمۡ نَارٗا ٦ ﴾ [ التحريم : ٦ ]

“হে ঈমানদারগণ, তোমরা নিজেদেরকে ও তোমাদের পরিবার-পজিনকে আগুন হতে বাঁচাও”। সূরা আত্-তাহরীম: (৬)

এ জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতে যাওয়ার সময় তাদেরকে বলতেন: الصلاة يا أهل البيت “হে আহলে বায়েত, সালাত”। তিরমিযি: (৩১৪৯) তাদেরকে আল্লাহর নির্দেশ, ইবাদত ও আনুগত্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিতেন, যেহেতু এভাবেই নাপাকি দূর হয় এবং তাতহীর বা পবিত্রতা হাসিল হয়। এর অর্থ কখনো নিষ্পাপ ঘোষণা করা নয়।

এ দোয়ার অর্থ নেতৃত্ব বা ইমামতের হকদার ঘোষণা করা উদ্দেশ্য নয়, ইমামতের বিষয় আলাদা, তার জন্য প্রয়োজন যোগ্যতা, আমানতদারী ও ওহীর জ্ঞান। যার মধ্যে নেতৃত্বের যোগ্যতা নেই, তাকে তার দায়িত্ব দেয়া উম্মতের সাথে খিয়ানত করা, এ খেয়ানত কোন নবী কখনো করতে পারেন না। এ জন্যই আমরা দেখি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপস্থিতিতে সালাতের ইমামতি করেন আবু বকর। ইমামত করার নির্দেশ তিনি আবু বকরকেই প্রদান করেন। অতএব নেতৃত্বের ওসিয়ত তিনি কিভাবে করবেন, তিনি জানেন না তার পরবর্তী বংশধর কেমন হবে। আল্লাহর বাধ্য-না অবাধ্য, যোগ্য না অযোগ্য!!!

শিয়া পণ্ডিতরা বিভিন্ন বিকৃতি, অপব্যাখ্যা ও মিথ্যাচার দ্বারা এ আয়াত প্রথমে আসহাবে কিসার জন্য সাবেত করে, অতঃপর তাদের নিষ্পাপ প্রমাণ করে। তারা অন্যান্য আয়াত বেমালুম ভুলে যায় যেখানে সাহাবিদের ফযিলত, তাতহীর, তাযকিয়ার ঘোষণা রয়েছে এবং তাদের ওপর আল্লাহর সন্তুষ্টির ঘোষণা ও তাদের আনুগত্য করার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। যার পশ্চাতে তাদের মূল উদ্দেশ্য ইসলামের নামে ইসলাম থেকে দূরে রাখা, আহলে বায়েতের মহব্বতের নামে নবীর দীনকে ধ্বংস করা ও সঠিক পথ থেকে মুসলিম উম্মাহকে বিভ্রান্ত করা। আল্লাহ তাদের ষড়যন্ত্র থেকে ইসলাম ও মুসলিম জাতিকে হিফাজত করুন।

সমাপ্ত

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন