HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আকীদা

লেখকঃ শাইখ মুহাম্মাদ আস-সালেহ আল-উসাইমীন

আখেরাতের প্রতি ঈমান
আমরা শেষ দিবসে ঈমান আনি। আর শেষ দিন হচ্ছে কেয়ামতের দিন। এরপর আর কোন দিন নেই।

সেদিন মানুষ পুন:জীবন লাভ করবে। সে জীবন হবে হয় দারুন্নাইম, অর্থাৎ নিয়ামাতপূর্ণ ও শান্তিময় গৃহে নতুবা কঠিন শাস্তির গৃহে অনন্তকাল থাকার জন্য।

শিঙ্গায় ফুঁক

আমরা ঈমান আনি যে, ইসরাফীলের দ্বিতীয়বার শিংগায় ফুঁক দেয়ার পর মৃতকে জীবিত করার মাধ্যমে পুনরুত্থান সংঘটিত হবে।

﴿وَنُفِخَ فِي ٱلصُّورِ فَصَعِقَ مَن فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَن فِي ٱلۡأَرۡضِ إِلَّا مَن شَآءَ ٱللَّهُۖ ثُمَّ نُفِخَ فِيهِ أُخۡرَىٰ فَإِذَا هُمۡ قِيَامٞ يَنظُرُونَ ٦٨﴾ [ الزمر : 68]

“সেদিন সিংগায় ফুঁক দেয়া হবে। তখন আসমান ও যমীনের সকল প্রাণী মরে পড়ে থাকবে। অবশ্য আল্লাহ যাদেরকে জীবন্ত রাখবেন তারা ছাড়া। অতঃপর শিংগায় আরেকবার ফুঁক দেয়া হবে। তখন সবাই উঠে দাঁড়াবে এবং তাকিয়ে থাকবে।” [যুমার : ৬৮]

এরপর সব মানুষ রাব্বুল আলামীনের উদ্দেশ্যে কবর থেকে উঠবে। তাদের অবস্থা হবে পাদুকা বিহীন নগ্ন এবং বস্ত্র বিহীন উলঙ্গ।

﴿كَمَا بَدَأۡنَآ أَوَّلَ خَلۡقٖ نُّعِيدُهُۥۚ وَعۡدًا عَلَيۡنَآۚ إِنَّا كُنَّا فَٰعِلِينَ ١٠٤﴾ [ الأنبياء :104]

“যেভাবে সর্বপ্রথম আমরা সৃষ্টির সূচনা করেছিলাম ঠিক সেভাবে আমরা তার পুনরাবৃত্তি করবো। এটা একটা ওয়াদা, যা পুরণ করার দায়িত্ব আমাদের। একাজ অবশ্যই আমরা করবো।” [আম্বিয়া : ১০৪]

আমল নামা

আমরা আমল নামার উপর ঈমান আনি। এ আমল নামা হয় ডান হাতে দেয়া হবে নতুবা পিছন দিক থেকে বাম হাতে দেয়া হবে।

﴿فَأَمَّا مَنۡ أُوتِيَ كِتَٰبَهُۥ بِيَمِينِهِۦ ٧ فَسَوۡفَ يُحَاسَبُ حِسَابٗا يَسِيرٗا ٨ وَيَنقَلِبُ إِلَىٰٓ أَهۡلِهِۦ مَسۡرُورٗا ٩ وَأَمَّا مَنۡ أُوتِيَ كِتَٰبَهُۥ وَرَآءَ ظَهۡرِهِۦ ١٠ فَسَوۡفَ يَدۡعُواْ ثُبُورٗا ١١ وَيَصۡلَىٰ سَعِيرًا ١٢﴾ [ الإنشقاق : 7-12]

“অতঃপর যারা আমল নামা তার ডান হাতে দেয়া হবে তার হিসাব সহজভাবে নেয়া হবে। আর সে আপনজনদের কাছে হাসি-খুশী ও আনন্দচিত্তে ফিরে যাবে। আর যে ব্যক্তির আমল নামা পিছন দিক হতে দেয়া হবে, সে ভয়ে মৃত্যুকে ডাকবে। সে জলন্ত অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষিপ্ত হবে।” [ইনশিকাক : ৭-১২]

﴿وَكُلَّ إِنسَٰنٍ أَلۡزَمۡنَٰهُ طَٰٓئِرَهُۥ فِي عُنُقِهِۦۖ وَنُخۡرِجُ لَهُۥ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ كِتَٰبٗا يَلۡقَىٰهُ مَنشُورًا ١٣ ٱقۡرَأۡ كِتَٰبَكَ كَفَىٰ بِنَفۡسِكَ ٱلۡيَوۡمَ عَلَيۡكَ حَسِيبٗا ١٤﴾ [ الإسراء : 13-14]

“আর প্রত্যেক ব্যক্তির ভাগ্যই আমরা তার গলায় ঝুলিয়ে রেখেছি। আর কেয়ামতের দিন আমরা তার জন্য একটি কিতাব প্রকাশ করবো। সে কিতাবটিকে উন্মুক্ত গ্রন্থ হিসেবে দেখতে পাবে। নিজের আমল নামা পড়ে দেখো। তাহলে আজ তোমার নিজের হিসাব দেখার জন্য তুমি নিজেই যথেষ্ট।” [ইসরা : ১৩-১৪]

মিজান

আমরা ঈমান আনি, কেয়ামতের দিন “মিজান” বা ভাল-মন্দ ওজন করার ব্যবস্থা থাকবে। কোন ব্যক্তির প্রতি জুলুম করা হবে না।

﴿فَمَن يَعۡمَلۡ مِثۡقَالَ ذَرَّةٍ خَيۡرٗا يَرَهُۥ ٧ وَمَن يَعۡمَلۡ مِثۡقَالَ ذَرَّةٖ شَرّٗا يَرَهُۥ ٨﴾ [ الزلزلة : 7-8]

“যে ব্যক্তি বিন্দু পরিমাণ নেক আমল করবে সে তা দেখতে পাবে এবং যে ব্যক্তি বিন্দু পরিমান বদ-আমল করবে, তাও সে দেখতে পাবে।” [যিল-যাল: ৭-৮]

﴿فَمَن ثَقُلَتۡ مَوَٰزِينُهُۥ فَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡمُفۡلِحُونَ ١٠٢ وَمَنۡ خَفَّتۡ مَوَٰزِينُهُۥ فَأُوْلَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ خَسِرُوٓاْ أَنفُسَهُمۡ فِي جَهَنَّمَ خَٰلِدُونَ ١٠٣ تَلۡفَحُ وُجُوهَهُمُ ٱلنَّارُ وَهُمۡ فِيهَا كَٰلِحُونَ ١٠٤﴾ [ المؤمنون : 102-104]

“যাদের (নেক আমলের) পাল্লা ভারী হবে তারাই সফলকাম হবে। আর যাদের পাল্লা হালকা হবে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তারা অনন্তকাল জাহান্নামে থাকবে। আগুন তাদের মুখমণ্ডলের চামড়া চেটে-চেটে খাবে। এর ফলে তাদের জিহবা বের হয়ে আসবে।” [মুমিনুন : ১০২-১০৪]

﴿مَن جَآءَ بِٱلۡحَسَنَةِ فَلَهُۥ عَشۡرُ أَمۡثَالِهَاۖ وَمَن جَآءَ بِٱلسَّيِّئَةِ فَلَا يُجۡزَىٰٓ إِلَّا مِثۡلَهَا وَهُمۡ لَا يُظۡلَمُونَ ١٦٠﴾ [ الأنعام : 160]

“বস্তুত: যে ব্যক্তি আল্লাহর দরবারে নেক আমল নিয়ে উপস্থিত হবে তার জন্য দশগুন বেশী পুরষ্কার রয়েছে। আর যে ব্যক্তি পাপ কাজ নিয়ে উপস্থিত হবে, তাকে তার পাপের সমপরিমাণ প্রতিফল দেয়া হবে। কারো প্রতি কোন জুলুম করা হবে না।” [আন‘আম : ১৬০]

শাফা‘আত

আমরা ঈমান আনি যে, রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর জন্য ‘শাফাআতে উযমা’ (বা মহান শাফাআত) বিশেষভাবে নির্দিষ্ট রয়েছে। বান্দাহদের মধ্যে বিচার ফায়সালা করার জন্য আল্লাহ তা‘আলার কাছে তাঁরই অনুমতিক্রমে এ শাফা‘আত এমন এক সময়ে করবেন যখন মানুষ হাশরের মাঠে সীমাহীন দুশ্চিন্তা আর সংকটের মধ্যে পড়ে যাবে। লোকেরা প্রথমত আদম [আলাইহিস সালাম] এর নিকট যাবে। তারপর নূহ [আলাইহিস সালাম] তারপর ইবরাহীম, মূসা, ঈসা [আলাইহিস সালাম] এবং সর্বশেষ রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর কাছে যাবে।

আমরা ঈমান আনি যে, মুমিনদের মধ্যে যারা জাহান্নামে যাবে তাদেরকে সেখান থেকে বের করার ব্যাপারে শাফা‘আতের সুযোগ রয়েছে। এ শাফা‘আত রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম] সহ অন্যান্য নবী, নেককার বান্দাহ এবং এবং ফিরিশ্‌তাদের জন্য নির্দিষ্ট।

আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় রহমত ও ফজলে শাফা‘আত ছাড়াই জাহান্নামীদের মধ্য হতে একদল লাককে বের করে আনবেন।

হাওযে রাসূল

আমরা ঈমান আনি যে, রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর জন্য এমন একটি হাওয নির্দিষ্ট রয়েছে যার পানি দুধের চেয়ে সাদা, মধুর চেয়ে মিষ্টি এবং মিশকের চেয়ে সুঘ্রাণ বিশিষ্ট। এর দৈর্ঘ একমাসের পথ এবং প্রস্থও একমাসের পথ। এর পাত্রগুলো সৌন্দর্যের দিক থেকে যেন আকাশের নক্ষত্র। নবী [সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর উম্মতের মধ্যে মুমিনগণ এই হাওয থেকে পানি তুলবে। যে ব্যক্তি এ হাওয থেকে পানি পান করবে তার কখনো পিপাসা লাগবে না।

পুলসিরাত

আমরা ঈমান আনি যে, জাহান্নামের উপর পুলসিরাত স্থাপিত রয়েছে। মানুষ তাদের আমল অর্থাৎ কার্য-কলাপের ভিত্তিতে এ পুলসিরাত অতিক্রম করবে। প্রথম ব্যক্তি বিদ্যুতের গতিতে এটি অতিক্রম করবে। এর পরের ব্যক্তি অতিক্রম করবে বাতাসের গতিতে। তার পরের ব্যক্তি পাখির গতিতে। পুলসিরাত পার হওয়া শুরু হলে রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম] সেখানে দাড়িয়ে বলতে থাকবেন, হে আমার রব [বিপদ থেকে] রক্ষা করো, রক্ষা করো। শেষ পর্যন্ত অবস্থা এমন হবে যে, বান্দাহদের নেক আমল এতই কম হবে যে তারা হামাগুড়ি দিবে। আর পুলসিরাতের দু’পাশে থাকবে কাটা বা হুলযুক্ত লোহার শলাকা লটকানো। আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ মোতাবেক হুলযুক্ত শলাকার আঘাত খেয়ে যে ব্যক্তি পার হতে পারবে সে নাজাত পাবে আর যে ব্যক্তি শলাকায় আটকা পড়ে যাবে সে জাহান্নামে যাবে।

আর আমরা কেয়ামতের দিন এবং সে দিনের ভয়ঙ্কর অবস্থা সংক্রান্ত যাবতীয় খবর যা কুরআন ও সুন্নায় এসেছে সে সবের উপরই ঈমান আনি। আল্লাহ সে কঠিন সময় আমাদের সাহায্য করুন।

বিশেষ শাফা‘আত

আমরা ঈমান আনি যে, জান্নাতের অধিকারী ব্যক্তিগণ জান্নাতে প্রবেশ করার জন্য রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম] আল্লাহর কাছে বিশেষ সুপারিশ [খাস শাফা‘আত] করবেন। এ শাফা‘আত তাঁর জন্যই খাস।

জান্নাত ও জাহান্নাম

আমরা জান্নাত ও জাহান্নামের অস্তিত্বে ঈমান আনি। জান্নাত পরম সুখ ও শান্তির স্থান। আল্লাহ তা‘আলা মুত্তাকী মুমিনদের জন্য জান্নাত তৈরী করেছেন। জান্নাতে এমন সুখ-শান্তির উপকরণ রয়েছে যা কোন চোখ দেখে নি। কোন কান যা শুনে নি। কোন অন্তর যা কখনো কল্পনা করেনি।

﴿فَلَا تَعۡلَمُ نَفۡسٞ مَّآ أُخۡفِيَ لَهُم مِّن قُرَّةِ أَعۡيُنٖ جَزَآءَۢ بِمَا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ ١٧﴾ [ السجدة : 17]

“তাদের কর্মের প্রতিফল হিসেবে চক্ষু শীতলকারী যে সুখ-সামগ্রী তাদের জন্য গোপন রাখা হয়েছে কোন প্রাণীই তা জানে না।” [সাজদাহ : ১৭]

আর জাহান্নাম হচ্ছে শাস্তির স্থান। জালিম, কাফেরদের জন্য আল্লাহ তা‘আলা জাহান্নাম তৈরী করেছেন। এতে এমন দুঃখ-কষ্ট এবং শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে যা কোন হৃদয় কল্পনা করতে পারে না।

﴿إِنَّآ أَعۡتَدۡنَا لِلظَّٰلِمِينَ نَارًا أَحَاطَ بِهِمۡ سُرَادِقُهَاۚ وَإِن يَسۡتَغِيثُواْ يُغَاثُواْ بِمَآءٖ كَٱلۡمُهۡلِ يَشۡوِي ٱلۡوُجُوهَۚ بِئۡسَ ٱلشَّرَابُ وَسَآءَتۡ مُرۡتَفَقًا ٢٩﴾ [ الكهف : 29]

“আমরা জালিমদের জন্য আগুনের [জাহান্নামের] ব্যবস্থা করে রেখেছি। এ আগুনের লেলিহান শিখা তাদেরকে পরিবেষ্টিত করে রাখবে। সেখানে তারা পানি চাইলে এমন পানি সরবরাহ করা হবে যা গলিত পদার্থের মত হবে। এর ফলে তাদের মুখমণ্ডল বিদগ্ধ হয়ে যাবে। এটা কতই না নিকৃষ্ট পানীয়। কতই না খারাপ আশ্রয়স্থল।” [কাহাফ : ২৯]

জান্নাত ও জাহান্নামের অস্তিত্ব বর্তমান রয়েছে। অনন্তকাল ধরে থাকবে। কোন দিন তা ধ্বংস হবে না।

﴿وَمَن يُؤۡمِنۢ بِٱللَّهِ وَيَعۡمَلۡ صَٰلِحٗا يُدۡخِلۡهُ جَنَّٰتٖ تَجۡرِي مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُ خَٰلِدِينَ فِيهَآ أَبَدٗاۖ قَدۡ أَحۡسَنَ ٱللَّهُ لَهُۥ رِزۡقًا ١١﴾ [ الطلاق : 11]

“আর যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে এবং নেক আমল করবে, আল্লাহ তাকে এমন জান্নাতে দাখিল করাবেন যার তলদেশ হতে ঝর্ণাধারা সদা প্রবাহমান থাকবে। এসব লোকেরা সেখানে অনন্তকাল বসবাস করবে। নেককার লোকদের জন্য আল্লাহ সেখানে উত্তম রিযিকের ব্যবস্থা রেখেছেন।” [তালাক: ১১]

﴿إِنَّ ٱللَّهَ لَعَنَ ٱلۡكَٰفِرِينَ وَأَعَدَّ لَهُمۡ سَعِيرًا ٦٤ خَٰلِدِينَ فِيهَآ أَبَدٗاۖ لَّا يَجِدُونَ وَلِيّٗا وَلَا نَصِيرٗا ٦٥ يَوۡمَ تُقَلَّبُ وُجُوهُهُمۡ فِي ٱلنَّارِ يَقُولُونَ يَٰلَيۡتَنَآ أَطَعۡنَا ٱللَّهَ وَأَطَعۡنَا ٱلرَّسُولَا۠ ٦٦﴾ [ الأحزاب : 64-66]

“আল্লাহ কাফেরদের উপর লা‘নত করেছেন এবং তাদের জন্য জ্বলন্ত আগুন তৈরী করে রেখেছেন। তারা সেখানে অনন্তকাল ধরে থাকবে। সেখানে কোন সাহায্যকারী বন্ধু তারা পাবে না। যেদিন তাদের চেহারা আগুনের উপর উলট-পালট করা হবে সেদিন তারা বলবে: হায়! আমরা যদি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করতাম।” [আহযাব : ৬৪-৬৬]

কুরআন ও হাদীস যাদের জান্নাতের যাবার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট করে ও মানগত দিক উল্লেখ করে ঘোষণা দিয়েছে, আমরা তার উপর ঈমান আনি এবং স্বীকার করি। নির্দিষ্ট করে জান্নাতে যাবার ব্যাপারে যাদের ঘোষণা দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে আবূ বকর, ওমর, ওসমান, আলী [রাদিয়াল্লাহু আনহুম] এর মত ব্যক্তিবর্গ। রাসূল [সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এদের নাম নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। আর মানগত ও গুনগত দিক বিচার করে যাদের ব্যাপারে জান্নাতে যাবার ঘোষণা রয়েছে তারা হলেন, প্রত্যেক মুমিন ও মুত্তাকী লোক।

জাহান্নামে যাবার ব্যাপারে কুরআন ও হাদীস যাদের নাম নির্দিষ্ট করে ও মানগত দিক বর্ণনা করে ঘোষণা দিয়েছে আমরা তাতেও ঈমান আনি। নির্দিষ্ট করে জাহান্নামের যাবার ঘোষণা রয়েছে আবু লাহাব, আমর বিন লোহাই আল খুযা‘য়ী সহ আরো কতিপয় ব্যক্তি সম্পর্কে। আর গুণগত ও মানগত দিক দিয়ে জাহান্নামে যাবার ঘোষণার মধ্যে রয়েছে প্রত্যেক বড় ধরনের শিরককারী মুশরিক এবং মুনাফিক।

কবরে মৃত ব্যক্তির পরীক্ষা

আমরা ঈমান আনি যে, কবরে মৃত ব্যক্তির পরীক্ষা হবে। সে পরীক্ষাটি হচ্ছে, কবরে মৃত ব্যক্তিকে ফিরিশ্‌তারা তাঁর রব, দ্বীন এবং নবী সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। তখন

﴿يُثَبِّتُ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ بِٱلۡقَوۡلِ ٱلثَّابِتِ فِي ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَا وَفِي ٱلۡأٓخِرَةِۖ﴾ [ إبراهيم : 27]

“শাশ্বত বাণীতে বিশ্বাসীগণকে আল্লাহ দুনিয়ার জীবনে এবং আখেরাতে সুপ্রতিষ্ঠিত রাখবেন।” [ইবরাহীম : ২৭]

এসব প্রশ্নের জবাবে মুমিন ব্যক্তি বলবে, ‘আল্লাহ আমার রব’ ‘ইসলাম আমার দ্বীন’ মুহাম্মদ আমার নবী’ ।

পক্ষান্তরে কাফের এবং মুনাফিক ব্যক্তি বলবে, আমি কিছুই জানি না। দুনিয়ার লোকদেরকে যা বলতে শুনেছি আমিও তাই বলেছি।

কবরের শান্তি

কবরে মুমিনদের জন্য সুখ-শান্তি আছে একথা আমরা ঈমান আনি।

﴿ٱلَّذِينَ تَتَوَفَّىٰهُمُ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ ظَالِمِيٓ أَنفُسِهِمۡۖ فَأَلۡقَوُاْ ٱلسَّلَمَ مَا كُنَّا نَعۡمَلُ مِن سُوٓءِۢۚ بَلَىٰٓۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلِيمُۢ بِمَا كُنتُمۡ تَعۡمَلُونَ ٢٨﴾ [ النحل : 28]

“পবিত্র থাকা অবস্থায় ফিরিশ্‌তারা যাদের রূহ কবয করে, তাদেরকে তারা বলে, তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। তোমরা তোমাদের আমলের বিনিময়ে জান্নাতে প্রবেশ করো।” [নাহল : ২৮]

কবরের আযাব

আমরা এতেও ঈমান আনি যে, জালিম, কাফেরদের জন্য কবরে আযাবের ব্যবস্থা রয়েছে।

﴿وَلَوۡ تَرَىٰٓ إِذِ ٱلظَّٰلِمُونَ فِي غَمَرَٰتِ ٱلۡمَوۡتِ وَٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ بَاسِطُوٓاْ أَيۡدِيهِمۡ أَخۡرِجُوٓاْ أَنفُسَكُمُۖ ٱلۡيَوۡمَ تُجۡزَوۡنَ عَذَابَ ٱلۡهُونِ بِمَا كُنتُمۡ تَقُولُونَ عَلَى ٱللَّهِ غَيۡرَ ٱلۡحَقِّ وَكُنتُمۡ عَنۡ ءَايَٰتِهِۦ تَسۡتَكۡبِرُونَ ٩٣﴾ [ الأنعام : 93]

“হায় তুমি যদি জালিমদেরকে সে অবস্থায় দেখতে পেতে যখন তারা মৃত্যুর যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকে। ফিরিশ্‌তারা তখন হাত বাড়িয়ে বলতে থাকে, দাও, বের করে দাও তোমাদের প্রাণ। আজ তোমাদের সেসব অপরাধের শাস্তি হিসাবে লাঞ্ছনার আযাব দেয়া হবে যে অপরাধ আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা ও অন্যায় বলার মাধ্যমে এবং তাঁর আয়াতসমুহের মোকাবেলায় অহংকার ও বিদ্রোহের মাধ্যমে তোমরা করেছো।” [আন‘আম: ৯৩]

এ প্রসংগে অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। কুরআন ও সুন্নায় যেসব গায়েবী খবর ও তথ্য এসেছে সেগুলো বিশ্বাস করা প্রতিটি মুমিন ব্যক্তির উপর কর্তব্য। দুনিয়ার চোখে দেখা কোন জিনিসের উপর আন্দাজ অনুমান করে এসব বিষয়ের বিরোধিতা করা ঠিক নয়। কেন না নশ্বর দুনিয়া ও অবিনশ্বর আখিরাত, এ দু’টি জগতের মধ্যে রয়েছে বিরাট ব্যবধান। একমাত্র আল্লাহই হচ্ছেন সাহায্যের আধার।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন