HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আকীদা

লেখকঃ শাইখ মুহাম্মাদ আস-সালেহ আল-উসাইমীন

তাকদীরের প্রতি ঈমান
আমরা ‘তাকদীর’ এবং তাকদীরের ভাল-মন্দের উপর ঈমান আনি। তাকদীর হচ্ছে, সবজান্তা হিসেবে আল্লাহ তা‘আলার পূর্ব জ্ঞান ও হিকমতের দাবী অনুযায়ী সমগ্র সৃষ্টিজগতের জন্য সবকিছু নির্ধারণ।

তাকদীরের স্তর

তাকদীরের চারটি স্তর রয়েছে:

প্রথম স্তর হচ্ছে : জ্ঞান বা ইলম

আমরা ঈমান আনি যে, আল্লাহ তা‘আলা হচ্ছেন সর্বজ্ঞানী ও সর্বজান্তা। কি ছিল, কি হবে, কিভাবে হবে এসব তিনি তাঁর ‘ইলমে আযালী ও আবাদী’ অথাৎ স্থায়ী এবং চিরন্তন অপরিসীম জ্ঞান শক্তির মাধ্যমেই জানেন। তাই অজানার পর নতুন করে জানা এবং জানার পর ভুলে যাওয়ার ব্যাপারটি আল্লাহ তা‘আলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

দ্বিতীয় স্তর হচ্ছে : লিপিবদ্ধকরণ

আমরা ঈমান আনি যে, কিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু সংঘটিত হবে তার সব কিছুই আল্লাহ তা‘আলা লৌহে মাহফুযে লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন।

﴿أَلَمۡ تَعۡلَمۡ أَنَّ ٱللَّهَ يَعۡلَمُ مَا فِي ٱلسَّمَآءِ وَٱلۡأَرۡضِۚ إِنَّ ذَٰلِكَ فِي كِتَٰبٍۚ إِنَّ ذَٰلِكَ عَلَى ٱللَّهِ يَسِيرٞ ٧٠﴾ [ الحج : 70]

“তুমি কি জান না যে, আসমান ও যমীনে যা কিছু আছে, তার সব কথাই আল্লাহ তা‘আলা জানেন। সব কিছুই একটি কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে। আল্লাহর পক্ষে এসব কাজ খুবই সহজ।” [হজ্ব: ৭০]

তৃতীয় স্তর : ইচ্ছা

আমরা ঈমান আনি যে, আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে সবই আল্লাহ তা‘আলার ইচ্ছায় সৃষ্টি হয়েছে। আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত কোন কিছুই হয় না। আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন তাই হয়। যা ইচ্ছা করেন না তা হয় না।

চতুর্থ স্তর : সৃষ্টি

আমরা ঈমান আনি যে,

﴿ٱللَّهُ خَٰلِقُ كُلِّ شَيۡءٖۖ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ وَكِيلٞ ٦٢ لَّهُۥ مَقَالِيدُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۗ﴾ [ الزمر : 62-63]

“আল্লাহ তা‘আলা সব কিছুরই সৃষ্টিকর্তা। তিনি সব কিছুরই অভিভাবক। আসমান ও যমীনের ধন-ভাণ্ডারের চাবি তাঁরই কাছে সংরক্ষিত”। [যুমার : ৬২-৬৩]

আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে এবং তাঁর বান্দাহর পক্ষ থেকে যা কিছু সংঘটিত হবে, তা চাই কথা হোক, কাজ হোক অথবা অমান্য করাই হোক না কেন এর সব কিছুই উক্ত চারটি স্তরের অন্তর্ভুক্ত। এর সবই তাঁর জানা এবং তাঁর কাছে লিখা রয়েছে। এর সবকিছুই তাঁর ইচ্ছা ও সৃষ্টির অন্তর্ভুক্ত।

﴿لِمَن شَآءَ مِنكُمۡ أَن يَسۡتَقِيمَ ٢٨ وَمَا تَشَآءُونَ إِلَّآ أَن يَشَآءَ ٱللَّهُ رَبُّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ٢٩﴾ [ التكوير : 28-29]

“তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সোজা-সরল পথে চলতে চায় [তার জন্য এ কিতাব উপদেশস্বরূপ] আর যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা না চান ততক্ষণ পর্যন্ত তোমাদের চাওয়ায় কিছুই হয় না।” [তাকওয়ীর : ২৮-২৯]

﴿وَلَوۡ شَآءَ ٱللَّهُ مَا فَعَلُوهُۖ فَذَرۡهُمۡ وَمَا يَفۡتَرُونَ ١٣٧﴾ [ الأنعام : 137]

“আল্লাহ চাইলে তারা এ রকম করতো না। কাজেই তাদেরকে ছেড়ে দাও। নিজেদের মিথ্যা রচনায় তারা নিমগ্ন থাকুক”। [আন‘আম: ১৩৭]

﴿وَلَوۡ شَآءَ ٱللَّهُ مَا ٱقۡتَتَلُواْ وَلَٰكِنَّ ٱللَّهَ يَفۡعَلُ مَا يُرِيدُ ٢٥٣﴾ [ البقرة : 253]

“আল্লাহ চাইলে তারা কখনো লড়াই করতো না। কিন্তু আল্লাহ যা চান তাই করেন”। [বাকারাহ : ২৫৩]

﴿وَٱللَّهُ خَلَقَكُمۡ وَمَا تَعۡمَلُونَ ٩٦﴾ [ الصافات : 96]

“আল্লাহ তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমরা যা করো তাও সৃষ্টি করেছেন”। [সাফফাত: ৯৬]

এরপরও আমরা ঈমান আনি, যে কোন কাজ সংঘটিত হওয়ার ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাহকে এখতিয়ার এবং কিছু ক্ষমতা দিয়েছেন। বান্দাহর কাজ যে তার এখতিয়ার এবং ক্ষমতায় সংঘটিত হয়ে থাকে তার কিছু প্রমাণ:

১. আল্লাহ তা‘আলার বাণী :

﴿فَأۡتُواْ حَرۡثَكُمۡ أَنَّىٰ شِئۡتُمۡۖ﴾ [ البقرة : 223]

“তোমাদের ইচ্ছা মাফিক তোমাদের ক্ষেত্র [স্ত্রীদের কাছে] গমন করো”। [বাকারাহ : ২২৩]

﴿وَلَوۡ أَرَادُواْ ٱلۡخُرُوجَ لَأَعَدُّواْ لَهُۥ عُدَّةٗ﴾ [ التوبة : 46]

“তারা যদি বের হওয়ার ইচ্ছা সত্যিই পোষণ করতো, তাহলে তারা অবশ্যই সে জন্য কিছু প্রস্তুতি গ্রহণ করতো”। [তাওবা : ৪৬]

উক্ত আয়াত দু’টিতে বান্দাহর ইচ্ছা পোষণ করা এবং ইচ্ছানুযায়ী প্রত্তুতি গ্রহণ করার ব্যাপারটি প্রমাণিত হয়েছে।

২. যদি বান্দাহর কাজ করার কোন এখতিয়ার ও ক্ষমতাই না থাকে তাহলে বিধি-নিষেধ পালনের ক্ষেত্রে যে নির্দেশ ও উপদেশ বান্দাহকে দেয়া হয়েছে তার অর্থ দাঁড়ায়, বান্দাহকে এমন কাজের প্রতি নির্দেশ দেয়া যা করার কোন ক্ষমতাই তার নেই। অথচ এমনটি হওয়া সম্পূর্ণভাবে আল্লাহর করুণা, হিকমত ও কৌশলের পরিপন্থী। সাথে সাথে আল্লাহর এ ঘোষণার সম্পূর্ণ বিপরীত:

﴿لَا يُكَلِّفُ ٱللَّهُ نَفۡسًا إِلَّا وُسۡعَهَاۚ﴾ [ البقرة : 286]

“আল্লাহ কারোর উপরই তার শক্তি-সামর্থের অধিক বোঝা চাপিয়ে দেন না”। [বাকারা : ২৮৬]

৩. মুহসীন ব্যক্তির ইহসানের প্রশংসা এবং খারাপ ব্যক্তির খারাপ কাজের নিন্দা করা আর উভয়কেই তার কৃতকর্মের প্রাপ্য পুরষ্কার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টিও এ ক্ষেত্রে একটি দলীল।

যদি বান্দাহর কর্ম, তার ইচ্ছা ও এখতিয়ার অনুযায়ী কোন কাজ সংঘটিত না-ই হতো তাহলে মুহসিন ব্যক্তির ইহসানের প্রশংসা করার কোন অর্থই হয় না। আর অন্যায়কারীর অন্যায়ের জন্য শাস্তি প্রদান যুলুম ছাড়া আর কিছুই নয়। অথচ আল্লাহ তা‘আলা কোন অর্থহীন কাজ করা এবং যুলুম করা থেকে সম্পূর্ণ পবিত্র।

৪. আল্লাহ তা‘আলা রাসূলগণকে পাঠিয়েছেন

﴿مُّبَشِّرِينَ وَمُنذِرِينَ لِئَلَّا يَكُونَ لِلنَّاسِ عَلَى ٱللَّهِ حُجَّةُۢ بَعۡدَ ٱلرُّسُلِۚ وَكَانَ ٱللَّهُ عَزِيزًا حَكِيمٗا ١٦٥﴾ [ النساء : 165]

“সু-সংবাদ দাতা ও ভয় প্রদর্শণকারী হিসেবে। যেন তাঁদেরকে পাঠাবার পর আল্লাহ তা‘আলার বিরুদ্ধে লোকদের কোন যুক্তি না থাকে। আল্লাহ তো সর্বাবস্থায় মহা পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়”। [নিসা : ১৬৫]

কাজ সংঘটিত হওয়ার ক্ষেত্রে যদি বান্দাহর ইচ্ছা ও শক্তি কাজে লাগানোর কোন এখতিয়ারই না থাকে তাহলে রাসূল পাঠানোর মাধ্যমে আল্লাহর বিরুদ্ধে বান্দাহর হুজ্জত (যুক্তি) বাতিল বলে গণ্য হতো না।

৫. কার্য সম্পাদনকারী প্রত্যেক ব্যক্তিই কাজ করার সময় কোন রকম জবর-দস্তির অনুভূতি ও ধারণা পোষণ করা ছাড়াই কাজ করে। সে দাড়ায়, বসে, প্রবেশ করে, বের হয়, সফর করে আবার মুকীম হয় সম্পূর্ণ তার নিজ ইচ্ছানুযায়ী। সে এ কথা মনে করে না যে, কেউ তাকে এসব করার জন্য বাধ্য করছে কিংবা জবর-দস্তি করছে।

বরং বান্দাহ নিজেই স্বতঃষ্ফুর্ত কাজ আর জবর-দস্তিমূলক কাজের মধ্যে বাস্তব পার্থক্য বের করে। এমনি ভাবে শরী‘আত ও এ দু’ধরনের কাজের মধ্যে পার্থক্য করে থাকে। ফলে জবর-দস্তির শিকার হয়ে যদি বান্দাহ আল্লাহর হকের ব্যাপারে কোন কাজ করে ফেলে তাহলে এর জন্য কোন শাস্তি হবে না।

আমরা মনে করি পাপী ব্যক্তির জন্য তার পাপ কাজের পক্ষে ‘তাকদীর’ দ্বারা যুক্তি পেশ করার কোন সুযোগ নেই। কারণ পাপী তার নিজ এখতিয়ার ও শক্তির বলে পাপ কাজ করে অথচ সে জানে না যে পাপ কর্মটি তার ‘তাকদীরে’ আল্লাহ তা‘আলা লিখেছেন কি না। যে কোন কাজ নিজ এখতিয়ার ও ক্ষমতা বলে সমাপ্ত করার পূর্ব পর্যন্ত কেউ জানতে পারে না যে সংশ্লিষ্ট কাজটি আল্লাহ তা‘আলা তার ‘তাকদীরে’ লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন কি না।

﴿وَمَا تَدۡرِي نَفۡسٞ مَّاذَا تَكۡسِبُ غَدٗاۖ﴾ [ لقمان : 34]

“কেউ জানে না আগামী কাল সে কি কামাই করবে।” [লোকমান : ৩৪] তাহলে কোন কাজ করা বা না করার ক্ষেত্রে অপারগতা অথবা অক্ষমতার যুক্তি [অর্থাৎ আল্লাহ চাইলে করতাম, না চাইলে করতাম না] দেখানো কিভাবে সঠিক হতে পারে? তাই আল্লাহ তা‘আলা এ ধরনের যুক্তি দেখানোর বিষয়টি বাতিল ঘোষণা করেছেন:

﴿سَيَقُولُ ٱلَّذِينَ أَشۡرَكُواْ لَوۡ شَآءَ ٱللَّهُ مَآ أَشۡرَكۡنَا وَلَآ ءَابَآؤُنَا وَلَا حَرَّمۡنَا مِن شَيۡءٖۚ كَذَٰلِكَ كَذَّبَ ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِهِمۡ حَتَّىٰ ذَاقُواْ بَأۡسَنَاۗ قُلۡ هَلۡ عِندَكُم مِّنۡ عِلۡمٖ فَتُخۡرِجُوهُ لَنَآۖ إِن تَتَّبِعُونَ إِلَّا ٱلظَّنَّ وَإِنۡ أَنتُمۡ إِلَّا تَخۡرُصُونَ ١٤٨﴾ [ الأنعام :148]

“মুশরিক লোকেরা অচিরেই একথা বলবে, যদি আল্লাহ চাইতেন তাহলে আমরা শিরক করতাম না। আমাদের বাপ দাদারাও শিরক করতো না। আর আমরা কোন জিনিসকে হারাম করতাম না। বস্তুত: এধরনের কথা বলে তাদের পূর্ববর্তী লোকেরা সত্যে মিথ্যারোপ করেছিলো। এদেরকে বলো, তোমাদের কাছে এমন কোন জ্ঞান আছে কি যা আমাদের সামনে পেশ করার মতো? তোমরা তো কেবল ধারণা আর অনুমানের উপর চলো। আর ভিত্তিহীন ধারণার জন্ম দিয়ে চলছো।” [আন‘আম : ১৪৮]

যে পাপী ব্যক্তি তাকদীরের দোহাই দেয়, তাকে আমরা বলতে চাই, আনুগত্য বা নেক কাজ করাকে তুমি তোমার তাকদীরের লিখন বলছো না কেন। আল্লাহ তা‘আলা তো নেক কাজই তোমার তাকদীরে লিখে রেখেছেন। তোমার দ্বারা কোন কাজ সম্পন্ন হওয়ার পূর্বে পাপ-পূণ্যের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। কারণ তাকদীরের লিখন তো তোমার অজানা। অর্থাৎ পাপ করে তুমি যেভাবে তাকদীরের লিখন বলে চালিয়ে দিচ্ছো, পূণ্য কাজ করেও তাকদীরের লিখন বলে চালিয়ে দিতে পারো। এ জন্যই সাহাবায়ে কিরামকে যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানিয়ে দিলেন যে, প্রত্যেক ব্যক্তির জন্যই জান্নাত কিংবা জাহান্নামের স্ব-স্ব স্থান লিপিবদ্ধ রয়েছে তখন তাঁরা বললেন, আমরা কি তাহলে তাকদীরের উপর ভরসা করে আমল বাদ দিয়ে দিবো? তিনি উত্তরে বললেন, বরং তোমরা আমল করতে থাকো। যার জন্য যাকে সৃষ্টি করা হয়েছে তার জন্য সে কাজ সহজ।

তাকদীরের দোহাই দিয়ে যে ব্যক্তি পাপ কাজ করে তাকে আমরা বলতে চাই, তুমি যদি মক্কা শরীফ সফর করতে চাও, আর সেখানে যাওয়ার জন্য যদি দু’টি পথ থাকে, আর একজন সত্যবাদী সংবাদ দাতা তোমাকে জানালো যে, মক্কার একটি পথ খুবই বিপদজনক ও দুর্গম, আর একটি পথ সোজা এবং নিরাপদ, তাহলে তুমি নিশ্চয়ই দ্বিতীয় পথটি অবলম্বন করবে। প্রথম পথটি অবলম্বন করা তোমার জন্য আদৌ ঠিক নয়। কিন্তু প্রথম পথটি অবলম্বন করে যদি তুমি এ কথা বলো, আমার তাকদীরে এটাই লিখা ছিল। তাহলে অবশ্যই লোকেরা তোমাকে পাগল বলে গণ্য করবে।

তাকে আরো বলতে চাই, তোমার কাছে যদি এমন দু’টি চাকুরীর প্রস্তাব পেশ করা হয় যার একটি হচ্ছে অধিক বেতনের [অপরটি স্বল্প বেতনের] তাহলে তুমি বেশী বেতনের চাকুরিটাই গ্রহণ করবে। তাহলে আখেরাতের আমলের ক্ষেত্রে তুমি কিভাবে নিম্ন মানের কাজ করাকে বেছে নিবে? তারপর বলবে এটাই তাকদীরের লিখন?

তাকে আরো বলতে চাই, “আমরা দেখতে পাই তোমার যখন কোন শারীরিক রোগ দেখা দেয়, তখন চিকিৎসার জন্য তুমি সংশ্লিষ্ট প্রত্যেক ডাক্তারের দরজায় ধর্ণা দাও। তারপর অপারেশনের যত ব্যথা তা সহ্য করো। ঔষধ খাওয়ার যাবতীয় ঝামেলাকে বরদাস্ত করো। তাহলে অসংখ্য গুণাহর দ্বারা তোমার অন্তরে যে রোগের উৎপত্তি হয়েছে তা থেকে মুক্তি লাভের জন্য কেন তুমি সে রকমটি করো না।

আমরা ঈমান আনি যে, বান্দাদের প্রতি আল্লাহর অপরিসীম রহমত ও পূর্ণ হিকমতের কারণে কোন খারাপ কাজকেই আল্লাহর সাথে সম্পর্কযুক্ত করা যায় না। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন:

«والشر ليس إليك»

“খারাপ তোমার দিকে বর্তাবে না”

আল্লাহর ফায়সালা নিজে কখনো খারাপ হতে পারে না। কেন না ফায়সালাটির পিছনে কোন না কোন কল্যাণ ও হিকমত নিহিত আছে। অনিষ্টতা বা ত্রুটি মূলত আল্লাহর ফায়সালার নয় বরং ফায়সালাকৃত জিনিস বা বিষয়টির সাথে সম্পৃক্ত। এর প্রমাণ হচ্ছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী :

«وقني شرّ ما قضيت»

“হে আল্লাহ! তোমার ফায়সালাকৃত জিনিসের অনিষ্টতা হতে আমাকে বাঁচাও”। [আবু দাউদ]। এ বাক্যটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসান [রাদিয়াল্লাহু আনহু] কে দু‘আয়ে কুনুতের অংশ হিসেবে শিখিয়েছেন।

এখানে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনিষ্ট কথাটি আল্লাহ তা‘আলার ফায়সালাকৃত জিনিসের সাথে সম্পৃক্ত করেছেন। তাই অনিষ্টতা বা দোষ মূলত ফায়সালাকৃত বিষয়ের। তবে নিছক অনিষ্টতাই এর মুল কথা নয়। এক দিক থেকে খারাপ হলেও আবার অপর দিক থেকে এর মধ্যে কোন না কোন কল্যাণ নিহিত আছে।

দুনিয়ার বিপর্যয় যেমন: দুর্ভিক্ষ, রোগ-ব্যধি, অভাব-অনটন, ভয়-ভীতি ও আতংক ইত্যাদি খারাপ বটে কিন্তু অন্য দিক থেকে বিচার করলে এগুলোর মধ্যেও কল্যাণ খুঁজে পাওয়া যাবে। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করছেন:

﴿ظَهَرَ ٱلۡفَسَادُ فِي ٱلۡبَرِّ وَٱلۡبَحۡرِ بِمَا كَسَبَتۡ أَيۡدِي ٱلنَّاسِ لِيُذِيقَهُم بَعۡضَ ٱلَّذِي عَمِلُواْ لَعَلَّهُمۡ يَرۡجِعُونَ ٤١﴾ [ الروم : 41]

“লোকদের নিজেদের কৃতকর্মের দরুণ স্থলে ও জলে বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। যেন তাদেরকে নিজেদের কৃতকর্মের স্বাদ ভোগ করাতে পারেন। এর ফলে হয়তো তারা [আল্লাহর পথে] ফিরে আসবে।” [রূম : ৪১]

চোরের হাত কাটা, ব্যাভিচারীর রজম অর্থাৎ পাথর মেরে মৃত্যুদণ্ড দেয়া, চোর এবং ব্যভিচারীর নিজের জন্য অনিষ্টকর হতে পারে। কেননা চোর তার হাত হারাচ্ছে আর ব্যভিচারী তার জীবন হারাচ্ছে। কিন্তু অন্য দৃষ্টিকোন থেকে চিন্তা করলে দেখা যাবে এর মধ্যেও কল্যাণ নিহিত রয়েছে। আর তা হচ্ছে, তাদের উভয়ের পাপের কাফফারা হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে তাদের জন্য দুনিয়া ও আখেরাতের শাস্তি একত্রিত করা হবে না। অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে এর আরো একটি কল্যাণময় দিক রয়েছে। তা হচ্ছে, এ বিধান প্রয়োগের মাধ্যমে মানুষের ধন-সম্পদ, মান-ইজ্জত, এবং বংশ রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন