hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুসলিম উম্মাহর মানসিক বিপর্যয়ঃ কারণ ও প্রতিকার

লেখকঃ ড. আব্দুল্লাহ আল-খাতির

১৯
পঞ্চম কারণঃ ইতিহাসকে সংকীর্ণ দৃষ্টিতে বিবেচনা করা
উদাহরণ স্বরূপ মনে করুন, কোন ব্যক্তি এমন শহরে বসবাস করে, যেখানে মুসলিমদের পারস্পরিক মতানৈক্য ও দলাদলি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। এ লোক তার এলাকার এ সমস্যাকে ব্যাপক আকারে দেখতে শুরু করে। মনে করে, সারা পৃথিবীতেই বুঝি মুসলিমদের এই দুর্দশা। ফলে সে হতাশায় ভুগতে থাকে। কাজেই এ ধরণের বিচ্ছিন্ন কোন সমস্যাকে ব্যাপকরূপে বিবেচনা করা উচিত নয়। অন্যথা হতাশায় নিমজ্জিত হওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।

কিছুদিন পূর্বে আমি জনৈক লোকের সাথে আলোচনা করছিলাম। তিনি বলছিলেন, ‘‘আমাদের দেশে শিশু-কিশোরদের মাঝে কোরআন হিফজ করার চর্চা এখনো গড়ে উঠেনি। বড়রাও মৃত্যু পথযাত্রী। এ অবস্থা চলতে থাকলে তো হাফেজে কুরআনের সংকট প্রকট আকারে দেখা দিবে।’’ এ লোক নির্দিষ্ট একটি অঞ্চলে তার দৃষ্টি সীমাবদ্ধ রাখার কারণে হতাশ হয়ে পড়েছেন। অথচ তিনি যদি বহির্বিশ্ব সফর করতেন, কিংবা তার আশেপাশে নজর দিতেন তাহলে অবশ্যই তার এই ভুল দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটত। তিনি দেখতে পেতেন যে, সাধারণ মুসলিমদের মাঝে ইসলামের চর্চা কত বেশী, আর দ্বীনি চেতনা কত প্রখর। হয়তো সামাজিক কোন সমীবদ্ধতা কিংবা অন্য কোন কারণে তার এলাকায় সে চেতনা অনুভূত হচ্ছে না।

কিন্তু অনুসন্ধিৎসু দৃষ্টি দিয়ে দেশ-বিদেশে সফর করলে এবং আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে পড়া- লেখা করলে মুসলিম উম্মাহর প্রকৃত অবস্থা জানা যাবে, যা মনে আশাবাদ সৃষ্টি করবে এবং ইসলামী পুনর্জাগরণের চেতনায় উজ্জীবিত করবে। সুতরাং নির্দিষ্ট একটি ভূখন্ডে দৃষ্টিকে নিবদ্ধ রাখলে নিরাশ হতে হবে।

অনুরূপভাবে অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানের পরিধিকে যদি বিশেষ কোন সময়ের মাঝে সীমাবদ্ধ রাখা হয়, তাহলেও অন্তরে হতাশা ছেয়ে যাবে। যেমন, বর্তমান সময়ের প্রতি লক্ষ্য করে যদি বলা হয়, আন্তর্জাতিক সীমারেখা ইসলামী বিশ্বের মাঝে ফাটল সৃষ্টি করেছে, গোটা মুসলিম জাতি ভূখন্ডে বিভক্ত হয়ে পড়েছে, তাদের পারস্পরিক অবস্থান খুবই দুর্বল, দ্বীনের দা’য়ীগণও প্রত্যেকে বিচ্ছিন্নভাবে মেহনত করেছেন, তাহলে এ জাতীয় চিন্তা-ভাবনা আমাদেরকে মানসিকভাবে দুর্বল করে দিবে।

পক্ষান্তরে আমরা যদি অতীত ইতিহাসের প্রতি দৃষ্টিপাত করি, তাহলে সেখান থেকে অনেক কিছুই শিখতে পারি। তাতারীদের সময়ের কথাই ধরা যাক। তাতারীরা মুসলিমদেরকে চরমভাবে পর্যুদস্ত করে লক্ষ লক্ষ মুসলিমকে তারা অবলীলায় হত্যা করেছে। লাগাতার দীর্ঘ চল্লিশ দিন তারা মুসলিম নিধন করেছে। তাদের ভয়ে সমস্ত মানুষ এমনভাবে আত্মগোপন করেছিল যে, দীর্ঘ চল্লিশ দিন যাবত বাগদাদে কেউ জামাআতে নামাজ আদায় করতে বের হয়নি।

হিজরী চতুর্থ শতকের শুরুতে কারামেতা বাহিনী পূর্ব আরব শাসন করত। তিনশত তের হিজরীর ৮ই যিলহজ আবু তাহের কারামতীর নেতৃত্বে একদল সশস্ত্র বাহিনী মক্কায় প্রবেশ করে অসংখ্য মুসলিমকে নির্মমভাবে হত্যা করে এবং ‘‘হাজরে আসওয়াদ’’ ছিনিয়ে নেয়। অতঃপর তাদের নেতা সদম্ভে চিৎকার করে বলে, ‘কোথায় সে আবাবীল পাখি! কোথায় পাথর বৃষ্টি?’ এ জালিমরা হাজরে আসওয়াদ ছিনিয়ে নিয়ে দীর্ঘ বাইশ বৎসর (৩১৭-৩৩৭ হি:) পর্যন্ত পূর্ব আরবে স্থাপন করে রাখে। সেখানে শুধু শিয়া কারামতীরাই হাজরে আসওয়াদের তাওয়াফ করতো। তারা কা’বা শরীফ স্থানান্তারিত করার মত চরম দৃষ্টতাও দেখিয়েছে। এতদসত্বেও মুসলিম উম্মাহ পুনরায় তাদের শক্তি সম্মান ফিরে পেয়েছে।

খৃষ্টান ক্রুসেড বাহিনী বায়তুল মোকাদ্দাসকে জবর দখল করে দীর্ঘ একানববই বছর পর্যন্ত তারা মসজিদে আকসায় তালা ঝুলিয়ে রেখেছিল। না জামাআত হতো, না জুমআ হত, বরং ৪৯২ হিজরী থেকে ৫৮৩ হিজরী পর্যন্ত প্রায় এক শতাব্দীকাল যাবত আল-আকসার উপর ক্রুস স্থাপিত ছিল। কিন্তু তারও অবসান ঘটে এবং মুসলিমরা সুলতান সালাহ উদ্দীন আইয়ুবীর (র.) নেতৃত্বে বায়তুল মোকাদ্দাস খৃস্টান- দখল মুক্ত করে।

পক্ষান্তরে বর্তমানে বায়তুল মোকাদ্দাসের উপর ইয়াহুদী শাসন এখনও পঞ্চাশ বছর অতিক্রম করেনি। সেখানে জামাআতের সাথে নামাজ আদায় হচ্ছে, জুমআর জামাআতও হচ্ছে, এখানে মসজিদের উপর ক্রুস স্থাপিত হয়নি। এতদসত্বেও মুসলিমদের মাঝে দেখা যায় পরাজয় ও দুর্বলতার ছাপ। তারা ইসরাইলকে রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দিচ্ছে। আর বলছে, ইসরাইলের প্রতিষ্ঠা যেহেতু বাস্তব, সেহেতু তার সাথে শান্তি ও সহাবস্থানের সম্পর্ক গড়ে তোলার বিকল্প নেই।

অথচ অতীতে যখন ক্রুসেডার বাহিনী আল-আকসা দখল করেছিল, তৎকালীন মুসলিমগণ নিজেদেরকে দুর্বল ভাবেনি, পরাজিত মনে করেনি, বরং তারা আল্লাহ তাআলার এ অভয়বাণীকে সামনে রেখে নির্ভীকভাবে এগিয়ে গিয়েছিলোঃ

وَلَا تَهِنُوا وَلَا تَحْزَنُوا وَأَنْتُمُ الْأَعْلَوْنَ إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ .

‘‘তোমরা হীনবল হয়ো না এবং দু:চিন্তা করো না, তোমরাই জয়ী হবে যদি তোমরা মু’মিন হও। (সুলা আলে ইমরান : ১৩৯)

ইতিহাস সাক্ষী, তৎকালীন মুসলিমগণ নিরাশ হয়নি, ভেঙ্গে পড়েনি। ইবনে কাসীরের ‘আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ’ খুলে দেখুন, ৫৮৩ হিজরীতে কি বীর-বিক্রমে মুসলিম বাহিনী আল-আকসায় প্রবেশ করেছিল এবং দীর্ঘ একানববই বছর পর সেখানে তারা কি বীরত্বের সাথে জুমআর নামাজ আদায় করেছিল।

এ সকল ঐতিহাসিক ঘটনা মনে আশার সঞ্চার করে যে, বর্তমান অবস্থাও অতি দ্রুত পরিবর্তিত হবে, ইনশাআল্লাহ। কিন্তু ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহণ না করে যদি নির্দিষ্ট একটি সময়ের মাঝে নিজের দৃষ্টিকে সীমাবদ্ধ করে রাখা হয়, তাহলে আমাদেরকে তা হতাশায় নিমজ্জিত করবে। ইতিহাসের এ সব ঘটনাবলী গভীরভাবে আমাদের অধ্যয়ন করা উচিত। তাহলে ঈমানী প্রেরণা সৃষ্টি হবে এবং অন্তরে নতুন সঞ্জীবনী শক্তি সঞ্চারিত হবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন