মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আমাদেরকে সহীহ ঈমানের তারবিয়্যাত ও প্রশিক্ষণ নিতে হবে। কারণ বিপর্যয় উত্তরণের এ দীর্ঘ পথ-পরিক্রমার প্রথম পদক্ষেপই হলো বিশুদ্ধ ঈমানের প্রশিক্ষণ গ্রহণ। কাজেই আবাল-বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ তথা সর্বস্তরের মুসলিমদের খালেস দ্বীনের পূর্ণ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে ঈমানের এমন স্তরে পৌঁছতে হবে, যে স্তরে পৌছে তারা আল্লাহ ছাড়া অপর কোন শক্তিকে ভয় করবে না।
ঈমান কোন বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তাধারা বা দৃষ্টিভঙ্গির নাম নয়, যা কেবল চিন্তার জগতে সীমাবদ্ধ থাকে। এজন্য বিশুদ্ধ ঈমান আক্বীদাকে প্রকৃত অর্থে অন্তরে স্থাপন করতে হবে এবং জীবনের সর্বক্ষেত্রেই তার বাস্তবায়ন ও প্রতিফলন ঘটাতে হবে।
বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, এক শ্রেণীর লোকের কাছে ঈমান শুদ্ধকরণ ও তা কর্মজীবনে বাস্তবায়নের কোন গুরুত্ব নেই। অধিকন্তু তারা এ বিষয়ের প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আমাদের প্রশ্ন করে থাকে, তোমরা কেবল আমল-আক্বীদা শুদ্ধ করার কথাই বলোঃ কিন্তু সাম্রাজ্যবাদ, পুঁজিবাদ ও কমিউনিজমসহ অপরাপর ভ্রান্ত মতবাদের বিরুদ্ধে কিছুই বল না!
এর জবাবে আমরা বলবো, সাম্রাজ্যবাদ, পুজবাদ, কমিউনিজমসহ সকল ইসলাম-বিরোধী অপশক্তি ও ভ্রান্ত মতবাদের বিরুদ্ধে সহীহ আক্বীদা বিশ্বাসই পারে কথা বলার শক্তি ও সাহস যোগাতে : চিন্তা ধারা ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটাতে এবং সর্ব ক্ষেত্রে স্বাতন্ত্র ফুটিয়ে তুলতে।
ঈমান আক্বীদা বিশুদ্ধ না হলে বাতিলের ভয়ে অন্তর ভীত থাকে। তার বিরুদ্ধে কথা বলার সৎ সহস সৃষ্টি হয় না। নানা প্রকার জেহালাত ও কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে ক্ষুদ্র মাখলুকের ভয়ে হীনমন্য ও বিপর্যন্ত জীবন যাপন করতে হয়। এ বক্তব্যের স্বপক্ষে আমি কতিপয় উপমা পেশ করছি।
যামানায়ে জাহেলিয়্যার মূর্খ লোকেরা যখন কোন উপত্যকায় গমন করতো তখন দুষ্ট জিন ও প্রেতাত্মাদের ভয়ে এতই ভীত হতো যে, তারা সামনে এগিয়ে চলার মনোবল পর্যন্ত হারিয়ে ফেলত। জিনদের প্রতি তাদের মাত্রাতিরিক্ত ভয় ও ভ্রান্ত বিশ্বাসের কারণে তাদের কাছে সাহায্য চাইতো। তারা বলতো ‘‘হে উপত্যকাপতি, আমরা এখানকার প্রেতাত্মা হতে তোমার আশ্রয় চাই, তুমি আমাদের আশ্রয় দাও।’’
তাদের এরূপ করার কারণ ছিল, জিনদের সম্পর্কে তাদের ভ্রান্ত আক্বীদা-বিশ্বাস। জ্বিনদেরকে তারা ত্রাণকর্তা মনে করত।
কিন্তু আমরা যেহেতু জিনদের ভয়ে ভীত নই এবং জিনদের সম্পর্কে আমাদের সঠিক ধারণা রয়েছে, সেহেতু আমরা জিনদেরকে ত্রাণকর্তা মনে করে তাদের সাহায্য কামনা করি না, বরং সর্বাবস্থায় আমরা আল্লাহরই সাহায্য ও নিরাপত্তা কামনা করি। কারণ, জিন সম্পর্কে আমাদের বোধ ও বিশ্বাস কেমন হওয়া উচিত, সে বিষয়ে আমরা সম্যক অবগত। আমরা জানি, জিনদের মধ্যে সৎ ও অসৎ দু’ধরণের জিন রয়েছে। পবিত্র কুরআনে জিনদের স্বীকারোক্তি এভাবে বর্ণিত হয়েছেঃ
‘‘আমাদের কেউ কেউ সৎকর্মপরায়ণ এবং কেউ আবার এরূপ নয়। আমরা ছিলাম বিভিন্ন পথে বিভক্ত। আমাদের কিছু সংখ্যক মুসলিম এবং কিছু সংখ্যক অন্যায়কারী। (সুরা জিনঃ১১, ১৪)
জিন সম্প্রদায়ের কিছু সংখ্যক এমনও রয়েছে, যারা দ্বীনের দা’য়ী হিসাবে আল্লাহর পথের দিক-নির্দেশনা দিয়ে থাকে। জিন সম্পর্কে ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস হল, এরা আল্লাহর এক প্রকার সৃষ্ট জীব, যারা আল্লাহর হুকুম ছাড়া কারো কোন ক্ষতি বা উপকার করতে পারে না। যেমন অন্যান্য সৃষ্টি আল্লাহর হুকুম ছাড়া কোন প্রকার ক্ষতি বা উপকার করার ক্ষমতা রাখে না। এ লালিত বিশ্বাস আমাদেরকে এমন শক্তি, সাহস ও এক্বীন প্রদান করে যে, আমরা যে কোন পরিস্থিতির মোকাবেলা করার সৎসাহস পাই এবং যে কোন পরিস্থিতিতে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে সক্ষম হই। বস্ত্ততঃ সঠিক আক্বীদা সামগ্রিক জীবনের আমূল পরিবর্তন ঘটিয়ে মানুষকে এক স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্ব উপহার দেয়।
সঠিক ধর্ম-বিশ্বাসই যে মানসিক শক্তির উৎস এবং সর্ব প্রকার প্রকার মনস্তাত্বিক দুর্বলতা বিদূরণের প্রধান উপকরণ সে বিষয়ে আরেকটি উপমা দেয়া যাক।
কোন বিষয়ে শুভাশুভ ধারণা পোষণ প্রসঙ্গে বুখারী শরীফে বর্ণিত একখানা হাদীসে রাসূলে পা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেনঃ
لا طيرة وأحب الفال الصالح
‘‘কোন বিষয়ে অশুভ ধারণা রাখা ঠিক নয়, আমি শুভ ধারণা পোষণ করাকেই পছন্দ করি।’’ (বুখারী ২/৮৫৬)
অন্যত্র ইরশাদ করেনঃ لا عدوى ولا طيرة
‘‘ইসলামে শুভাশুভের ধারণার ভিত্তি নেই।’’ (বুখারী ২/৮৫৬)
এই শুভাশুভের ধারণা জাহেলী যুগের মানুষের অন্তরে এতই প্রবলভাবে বদ্ধমূল ছিল যে, সফরের উদ্দেশ্যে বহির্গমনকালে যদি তারা কোন কাল পাখি দেখতো তাহলে তারা সফরের ইচ্ছা ত্যাগ করতো। কারণ, কালো পাখিকে তারা অশুভ লক্ষণ মনে করতো। এদের এই ভ্রান্ত বিশ্বাস ও অমূলক ভয় যে এক প্রকার মনস্তাত্বিক বিপর্যয়- এতে কোন সন্দেহ নেই।
পক্ষান্তরে মুসলিমগণ যখন সঠিক আক্বীদা শিক্ষা লাভ করবে তখন বস্ত্তর শুভাশুভের ধারণাকে ভিত্তিহীন বলে জ্ঞান করবে। তারা আরও বুঝবে যে, এই ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী হয়ে জাহেলী যুগের মানুষদের কতই না বিপর্যস্ত জীবন যাপন করতে হয়েছে, তখন মুসলিমরা শুভাশুভের এই অমূলক ধারণাকে আঁস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করবে। বস্ত্ততঃ এতদবিষয়ে যখন মুসলিমদের বোধ ও বিশ্বাস বিশুদ্ধ হয়ে যাবে, তখন তারা বাস্তবিকভাবেই প্রবল মানসিক শক্তির অধিকারী হবে এবং তাদের জীবনে এক ক্রিয়াশীল নব অধ্যায়ের সূচনা হবে।
কিন্তু তিক্ত হলেও সত্য যে, এক শ্রেণীর মুসলিম এখনো সেই জাহেলী যুগের মনোভাব ও ভিত্তিহীন আক্বীদা নিয়ে বসবাস করছে। তারা ঘরের ফটকে গরু বা ঘোড়ার হাড় এবং গাড়ীতে শিশুদের জুতা ঝুলিয়ে রাখে। তাদের ধারণা হলো, এগুলো কুদৃষ্টি হতে গাড়ী ও বাড়ীকে রক্ষা করবে। এটা একটা অলীক ধারণা। এ ধারণা পোষণের কারণ হলো কুদৃষ্টি ও জিনদের প্রতি তাদের সীমাহীন ভয়-ভীতি, যার ফলে তারা অত্যন্ত বিপর্যস্ত জীবন যাপন করে।
পক্ষান্তরে যে মুসলিম প্রকৃত অর্থেই সঠিক আক্বীদা পোষণ করে, সে সর্বদা স্থিতিশীল জীবন যাপন করে। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রসহ জীবনের সর্বস্তরে ইসলামী আদর্শ মেনে চলে। কোন পর্যায়েই সে আল্লাহর অবাধ্যতায় লিপ্ত হয় না। উদাহরণতঃ জীবিকা নির্বাহ বা রিযিক যোগাড়ের বিষয়টি মানব জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। এ সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে বহু মুসলিম এমন রয়েছেন, যারা ইসলামী বিধি-বিধান, শরয়ী অুনশাসন অহরহ লংঘন করে চলছেন। কিন্তু যারা আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস রাখে যে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা প্রতিটি জীবের জীবিকা ব্যবস্থা করেন, তিনি সকলের রিযিকদাতা-রায্যাক, তারা কখনও রিযিক জোগাড় করতে গিয়ে হারাম কাজে লিপ্ত হয় না। তাদের পক্ষে তা কখনো সম্ভবপরও নয়।
এ প্রসঙ্গে একটি সুন্দর ঘটনা আমার মনে পড়েছে। লন্ডনে এক আলজেরীয় মুসলিম ভাইয়ের সাথে সাক্ষাৎ হলে সে তার এই ব্যক্তিগত ঘটনাটি আমাকে শোনায়। যুবকটি বললঃ
‘‘একদিন আমি কাজের সন্ধানে এক হোটেলে গেলাম। হোটেল মালিক যথারীতি আমার প্রাইভেট ইন্টারভিউ গ্রহণ করল। কিন্তু তার কোন ফলাফল আমাকে জানালো না, বরং বললঃ এ বিষয়ে আমাদের একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে, সেখানেই ফলাফল জানানো হবে। তোমার বিষয়টিও আমরা ভেবে দেখবো।
‘‘অতঃপর সে আমাকে মদ্যপানের আমন্ত্রণ জানালো। হোটেল মালিকের এমন আমন্ত্রণে আমি বিপাকে পড়ে গেলাম। মুসলিম হিসাবে তার এ আহবানের সাড়া দেয়া আমার পক্ষে ছিল অসম্ভব। কিন্তু এ মূহুর্তে সাড়া না দিলে যে রিযিকের সম্ভাব্য পথটিও বন্ধ হবার উপক্রম! এজন্য আমি সিদ্ধান্তহীনতায় পড়ে গেলাম। পরক্ষণেই এ স্থির সিদ্ধান্তে উপনীত হলাম যে, মালিক আমাকে চাকুরীর জন্য গ্রহণ করুক বা না-ই করুক, আমি তার এ আমন্ত্রণে কিছুতেই সাড়া দেব না এবং মদও পান করব না। তাই বললামঃ ‘‘জনাব! আমি মুসলিম, আমাদের ধর্মে মদ্যপান হারাম। এজন্য আপনার আমন্ত্রণে সাড়া দিতে পারলাম না।’’
এ কথা শুনে হোটেল মালিক বিস্মিত হয়ে বললো, তাই নাকি!
আমি বললামঃ হ্যাঁ তা-ই!
মালিক বললঃ তাহলে আর বিলম্ব নয় তুমি এখন থেকেই চাকুরীর জন্য নির্বাচিত।
আমি বিস্মিত হয়ে বললামঃ তা কীভাবে?
‘‘মালিক বললঃ এখানে হোটেল কর্মচারীদের নিয়ে ভীষণ সমস্যা। এরা রাতভর মদের নেশায় মত্ত হয়ে আমোদ ফুর্তিতে কাটায়। তারপর ঘুমের কোলে ঢলে পড়ে। এজন্য প্রত্যহ আসতে তাদের দেরী হয়। দেরী করা ছাড়া তারা আসতেই পারে না। তুমি যেহেতু মদ পান করো না সেহেতু তোমার ঘুমাতেও দেরী হবে না, আর আসতেও বিলম্ব হবে না। কাজেই তোমার জন্য সু-সংবাদ, এ হোটেলের চাকুরী প্রার্থীদের মধ্যে তোমাকেই প্রথমে নির্বাচন করা হল।’’
বস্ত্ততঃ মানুষ যখন এ এক্বীন করবে যে, রিযিক একমাত্র আল্লাহরই হাতে, কেউ তার রিযিক বন্ধ করার ক্ষমতা রাখে না, তখন আল্লাহ তাআলা তার জন্য রিযিকের অসংখ্য দ্বার উন্মোচন করে দেন।
উপরোল্লিখিত ঘটনাই তার সুস্পষ্ট প্রমাণ। যেখানে এ যুবক ধারণাই করতে পারেনি যে, নিজেকে মুসলিম হিসাবে পরিচয় দেয়ার পর এবং মদ্যপানের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করার পরও তাকে চাকুরীর জন্য গ্রহণ করা হবে, সেখানে তাকে কতইনা সম্মানের সাথে চাকুরীতে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/789/29
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।