মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
কোন মহান আদর্শের সফল বাস্তবায়ন, কোন জাতির পুনর্গঠন ও তার সার্বিক সমৃদ্ধি অর্জনে যে পরিমাণ বৈষায়িক শক্তির প্রয়োজন, তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন মানসিক শক্তির। যে জাতির কাছে প্রয়োজনীয় সকল বৈষয়িক উপকরণ বিদ্যমান, কিন্তু আদর্শ প্রতিষ্ঠার দৃঢ় সংকল্প, অটল সিদ্ধান্ত ও অপরাজেয় মনোবল নেই, সভ্যতার সংঘাত ও আদর্শিক সংগ্রামে কুপোকাতই তাদের ললাট লিখন। পক্ষান্তরে যে জাতির বৈষয়িক আসবাবের যথেষ্ট অভাব রয়েছে বটে, কিন্তু সাহস- মনোবলে কোনরূপ ঘাটতি নেই, কালের ইতিহাসে তারাই বিজয়ী, তারাই শ্রেষ্ঠ। প্রথম যুগের মুসলিমদের কৃতিত্ব গাঁথা সোনালী ইতিহাস তার জ্বলন্ত প্রমাণ।
শীর্ণ বদন, জীর্ণ বসন, উদরশূন্য মুসলিম পক্ষ। পর্যাপ্ত যুদ্ধাস্ত্র নেই। অথচ প্রতিপক্ষ সব ধরনের সমরাস্ত্রে সজ্জিত। সৈন্য সংখ্যায়ও মুসলিমদের কয়েকগুণ। তথাপি বিজয়ের বরমাল্য মুসলিমদের কণ্ঠলগ্ন হয়। যুদ্ধ জয়ের প্রয়োজনীয় উপকরণের মধ্যে ঈমান, তাওয়াক্কুল, দৃঢ় প্রত্যয় ও আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন বাস্তবায়নের অদম্য স্পৃহা ছাড়া উল্লেখযোগ্য তেমন কিছুই ছিলনা। তা সত্ত্বেও মুসলিমদের দুরন্ত সাহস, আকাশ ছোঁয়া মনোবলের সামনে সকল বাতিল পরাশক্তি মাথা নোয়াতে বাধ্য হয়। ফলে কুফর-শিরকের নিশ্চিদ্র আঁধার চিরে উদিত হয় ইসলামের দীপ্ত সূর্য। বর্বরতা ও পাশবিকতার ধ্বংসস্ত্তপের উপর নির্মিত হয় মানবতার নতুন মিনার। কায়েম হয় আল্লাহর দ্বীন, মুক্ত হয় মানবতা, প্রতিষ্ঠিত হয় ন্যায়- ইনসাফ, উচু হয় আল্লাহর কালেমা।
কিন্তু তিক্ত হলেও সত্য যে, মাত্র চৌদ্দটি শতকের ব্যবধানে অনুসারীদের গাফলতির কারণে ইসলামের আলো নিস্প্রভ হয়ে পড়েছে। এত কালের বিশ্বজয়ী মুসলিম জাতি ঈমান-আমলের দুর্বলতা, কর্ম বিমুখতা, জ্ঞানের স্বল্পতা ও নৈতিক অবক্ষয়ের এক কলঙ্কময় ইতিহাস রচনা করে চলছে। তারা ভুলে গেছে নিজেদের সোনালী ইতিহাস, হারিয়ে ফেলেছে গৌরবময় ঐতিহ্য, খুইয়ে ফেলেছে আকাশ ছোঁয়া মনোবল, দৃঢ়চেতা মন ও সতেজ ঈমান। হতাশা ও আত্মবিস্মৃতি আজ পুরো জাতিকে অবশ করে দিয়েছে। এক সময়কার সিংহ-শার্দূলের এখন আকৃতিই অবশিষ্ট রয়েছে- প্রকৃতি নেই; দেহটাই আছে, আত্মা নেই। দুনিয়া জুড়ে ইসলামের বিজয় কেতন ওড়ানোর মহৎ উদ্যোগ তাদের নেই। নেই তাদের হৃত ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারের কোন শুভ চিন্তা। অধিকন্তু বেশীরভাগ মুসলিমই ইসলামের পুনঃ প্রতিষ্ঠা নিয়ে দারুন সন্দিহান ও চরম হতাশ। অবস্থা দৃষ্টে মনে হয়, তারা যেন এ ধারণা বদ্ধমূল করে নিয়েছে যে, এ যুগ ফিৎনা-ফাসাদের যুগ, মুসলিমদের পতনের যুগ, ইমাম মাহদি বা ঈসার (আঃ) আগমনের পূর্বে ইসলামী পুনর্জাগরণ সম্ভব নয়..।’’ অথচ এ ধরনের বিশ্বাস সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। পবিত্র কুরআনের বহু আয়াত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘‘আমার উম্মত বৃষ্টির ন্যায়, যার প্রথমাংশ ভাল, নাকি শেষাংশ ভাল তা নিশ্চিত করে বলা যাবে না’’। এ হাদীস স্পষ্টভাবে ঘোষণা করছে, উম্মতের যে কোন অংশই ভাল হতে পারে। যে কোন যুগেই আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। আল্লাহর বিধি-লিপির এমন কোন সিদ্ধান্ত আমাদের জানানো হয়নি যে, কল্যাণ ও বিজয় কেবল প্রথম যুগের মুসলিমদের জন্যই, শেষ যুগের মুসলিমদের কপালে কেবল অবনতি আর পরাজয়। বরং আল্লাহর অমোঘ ঘোষণা হল, ‘‘তোমরাই জয়ী হতে যদি তোমরা মু’মিন হও’। আল্লাহ তাআলার এ চিরন্তন ঘোষনা সর্বকালের জন্য. সর্বযুগের মু’মিনদের জন্য। সুতরাং এখনো যদি আমরা নিজেদেরকে প্রকৃত ‘মু’মিন’ প্রমাণ করতে পারি, তাহলে বিজয় অবশ্যই আমাদের পদ চুম্বন করবে।
বস্ত্ততঃ বর্তমান মুসলিম উম্মাহর যে অবনতি ও অধঃপতন আমরা অবলোকন করছি- ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ থেকে শুরু করে রাজনীতি, অর্থনীতি, সমরনীতিসহ সর্বক্ষেত্রে বিপর্যয়ের যে করুণ চিত্র আমরা প্রত্যক্ষ করছি, মূলতঃ তা আমাদের ঈমানী দুর্বলতা, হীনমন্যতা, হতাশা, সংশয় সন্দেহ তথা মানসিক বিপর্যয় থেকেই সৃষ্টি হয়েছে। নচেৎ প্রথম যুগের মুসলিমদের চেয়ে আমাদের বাহ্যিক শক্তি-উপকরণ বহু গুনে বেশী। আমাদের রয়েছে ৫৭টি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র, ১৪০ কোটি জনগণ, অফুরন্ত প্রাকৃতিক সম্পদ এবং বিশ্বের শতকরা পচাত্তর ভাগ তেল সম্পদ, যার উপর নির্ভর করে আধুনিক বিশ্ব চরম উৎকর্ষতা লাভ করছে। তা সত্ত্বেও আমাদের এ চরম বিপর্যয়ের কী কারণ থাকতে পারে? উন্নতি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির এতগুলো বাহ্যিক উপকরণের সাথে যদি আমরা সহীহ ঈমান, বিশুদ্ধ আমল, পূর্ণ এক্বীন ও দৃঢ় মনোবলের অধিকারী হতাম; হতাশা, হীনমন্যতা ঝেড়ে ফেলে দ্বীন প্রতিষ্ঠায় আত্মনিয়োগ করতাম, তাহলে অবশ্যই আমরা পৃথিবীতে ইসলামের বিজয়ী ঝান্ডা উড্ডীন করতে সক্ষম হতাম। কাজেই এ মুহুর্তে খুবই প্রয়োজন হতাশা, হীনমন্যতা ও মানসিক বিপর্যয়ের কারণ ও লক্ষণ চিহ্ণিত করে এমন পথ ও পদ্ধতি অবলম্বন করা যার মাধ্যমে আমরা মরণ ব্যাধি এ মানসিক বিপর্যয় উত্তরণ করে একটি সমৃদ্ধ জাতি হিসাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে পারি এবং সমগ্র দুনিয়ায় ইসলামের ঝান্ডা উড্ডীন করার মাধ্যমে উভয় জাহানের কল্যাণ লাভ করতে পারি।
অত্র পুস্তিকাটিতে মুসলিম উম্মাহর বিরাজমান মানসিক বিপর্যয় এবং তার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত অথচ সারগর্ভ আলোচনা করা হয়েছে। এটি الهزيمة النفسية عند المسلمين নামে আরবী পুস্তিকার অনূদিত বাংলা রূপ। সৌদি আরবের দাম্মামের অধিবাসী প্রখ্যাত মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, আল মুনতাদা আল ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা ড. আব্দুল্লাহ আল-খাতির বিরচিত গবেষণাধর্মী পুস্তিকাটি মূলতঃ একটি ভাষণ। লন্ডনের এক সেমিনারে তিনি এ গবেষণামূলক ভাষনটি উপস্থাপন করেন। এ বইয়ের ছত্রে ছত্রে লেখকের দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতা ও গভীর গবেষণার সুস্পষ্ট ছাপ বিরাজমান। কুরআন, সুন্নাহ ও বাস্তবতার নিরিখে অত্যন্ত সুন্দর ও সাবলীলভাবে মুসলিম উম্মাহর মানসিক বিপর্যয়ের লক্ষণ, কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে সুচিন্তিত মতামত ব্যক্ত করেনে। বলা যায়, বইটি একজন বিজ্ঞ হাকীমের মূল্যবান ব্যবস্থাপত্র- যা অনুসরণ করলে দুরারোগ্য ব্যাধি- মানসিক বিপর্যয়, হাতাশা ও হীনমন্যতা সহজেই উপশম করা যাবে।
লেখালেখির জগতে অনুবাদকের যোগ্যতা ‘তিফলে মকতব’ বা বাল্য শিক্ষার্থীর পর্যায়ে। তথাপি বইটির গুরুত্ব অনুধাবন করে অনুবাদের ন্যায় একটি কঠিন কাজে হাত দেয়ার দুঃসাহসকিতা দেখানো হয়েছে। অনুবাদের ক্ষেত্রে শাব্দিক তরজমার দুর্গম পথ পরিহার করে ভাবানুবাদের মানসিক বিপর্যয় কেটে উঠতে সামান্য ভূমিকা রাখলেও অনুবাদ সার্থক হয়েছে বলে মনে করব।
পরিশেষে আল্লাহর দরবারে কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করছি- তিনি যেন মুসলিম উম্মাহর উপর করুণার বারি বর্ষণ করেন, যেন তারা ইসলামের ঝান্ডা উড্ডীন করতে পারে দিগ-দিগন্তে এবং সমগ্র বিশ্বের নেতৃত্বের খেদমত আঞ্জাম দেয়ার মাধ্যমে সক্ষম হয় মানবতার মুক্তি সাধন করতে। আরও প্রার্থনা করছি- মুসলিম উম্মাহর পুনর্জাগরণে যে যেভাবে মেহনত করে চলছেন, তিনি যেন সবার প্রচেষ্টা ও মেহনতকে গ্রহণ করেন। সেই সাথে এ নগন্য অনুবাদকের ক্ষুদ্র মেহনতকে কবুল ও মঞ্জুর করেন। আমীন!!
কিফায়াতুল্লাহ
দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম
হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/789/2
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।