HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

যিকিরের তাৎপর্য ও ফযীলত

লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল বাকী

১৩
ওরাই প্রকৃত বিবেকবান:
এ সকল মুহূর্তে যারা মহান আল্লাহকে দোয়া ও যিকরের মাধ্যমে স্মরণ করেন, মহান আল্লাহ তাদেরকে বিবেকবান তথা বুদ্ধিমান বলে আখ্যায়িত করেছেন। কারণ, এরা নদীর কলতান, পাখির কলকাকলি, সাগরের উর্মিমালা, সুরভিত পুষ্প আর প্রেমাবেশ মাখা জ্যোৎস্না ৱাত শুক্লাদাদশী চাঁদের দিকে উদাস নয়নে চেয়ে চেয়ে শুধু কবিতাই রচনা করেনা, বরং এগুলো যার সৃষ্টি এবং যার অবারিত অনুগ্রহ, তাঁর জন্য প্রশংসা করে বলে উঠে সুবহানাল্লাহ…..,প্রতিপালক! তুমি এগুলো অযথা সৃষ্টি করনি! মোট কথা এরা বৃহৎ কিংবা অতি ক্ষুদ্র উৎস হতে সহজেই হেদায়েতের তালীম হাসিল করতে পারে। তাই বুদ্ধি জীবী না হলেও এরা বুদ্ধিমান অবশ্যই। মহান আল্লাহ কি বলেছেন দেখুন

إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاخْتِلَافِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ لَآَيَاتٍ لِأُولِي الْأَلْبَابِ الَّذِينَ يَذْكُرُونَ اللَّهَ قِيَامًا وَقُعُودًا وَعَلَى جُنُوبِهِم

অর্থ: নিশ্চয় ভূ-মণ্ডল ও নভোমণ্ডলের সৃষ্টি বৈচিত্র এবং রজনী ও দিবসের বিবর্তনের মধ্যে অনেক নিদর্শন লুকিয়ে আছে ঐসব বিবেকবানদের জন্য যারা দাঁড়ানো, উপবেশন এবং শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে তথা আল্লাহর যিকর করে………।(সূরা আালু ইমরান/১৯০,১৯১)

চূড়ান্ত সাফল্য লাভের জীবন যুদ্ধে এমন সুযোগ যারা অবলীলায় অবহেলায় হাত ছাড়া করে তারা সত্যিই নির্বোধ। এদের কপালে রয়েছে অনেক দুর্ভোগ। যিকিরের জন্য কোন ধরণ নেই, পদ্ধতি নেই, শর্ত নেই, অন্য কাজের ক্ষতি হয়না, এমনকি মসজিদে যাবার প্রয়োজন পড়ে না। তবু কেন পাগল মানুষ যিকর হতে এতো উদাসীন? এর দুটি কারণ হতে পারে। যথা:

এক – দুনিয়া উপার্জনের ব্যস্ততা এদের কে এতোটাই তাড়া করে যে, আল্লাহর যিকরের কথা এদের মনেই আসে না। কারণ দুনিয়ার সম্পদ এমন আকর্ষণীয় ও লোভনীয় বস’, দুনিয়ার ভোগ বিলাস ও চাক-চিক্ক এতো আরাম দায়ক এবং মজাদার যে, এসবের মধ্যে যে ব্যক্তি একবার মগ্ন হবে তার আল্লাহর স্মরণ শিথিল হয়ে যাবে। আল্লাহর স্মরণ তার কাছে নিরর্থক ও নি:ষ্প্রয়োজন মনে হবে। আল্লাহকে স্মরণ করার প্রয়োজনই সে অনুভব করবেনা। কখনো বা স্মরণ করলেও তার স্বাদ পাবেনা এবং মজা ও আকর্ষণ থাকবেনা। এভাবেই মানুষ ধীরে ধীরে আল্লাহর যিকর থেকে দূরে সরে যায়। মহান প্রভু এরশাদ করেন -يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا لَا تُلْهِكُمْ أَمْوَالُكُمْ وَلَا أَوْلَادُكُمْ عَنْ ذِكْرِ اللَّهِ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ فَأُولَئِكَ هُمُ الْخَاسِرُونَ অর্থ: ওহে মুমিনগণ! তোমাদের সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর যিকর তথা আল্লাহর স্মরণ থেকে উদাসীন করে দিতে না পারে। এমনটা যাদের ঘটবে তারাই তো ধ্বংস। (সূরা জুমুয়াহ/৯)

তাহলে কি আমরা দুনিয়া উপার্জন এবং আনন্দ-বিনোদন করবোনা ? এর উত্তর হল,আমরা এগুলো করবো অবশ্যই তবে আল্লাহকে ভুলে গিয়ে নয়; তাকে স্মরণে রেখে।

তাই, যারা সফল ও সচেতন মুমিন তাদের একটা বড় বৈশিষ্ট্য হল, ব্যবসা, সফর, দোকান, চাকরী, সন্তান, পরিবার, বন্ধু, আনন্দ-বেদনা, বিরহ-যাতনা কোন কিছুই তাদেরকে আল্লাহর যিকর থেকে গাফেল রাখতে পারেনা। পবিত্র কুরআনে এদের প্রশংসা করে আল্লাহ তায়ালা বলেন, رِجَالٌ لَا تُلْهِيهِمْ تِجَارَةٌ وَلَا بَيْعٌ عَنْ ذِكْرِ اللَّهِ وَ إِقَامِ الصَّلَاةِ وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ يَخَافُونَ يَوْمًا تَتَقَلَّبُ فِيهِ الْقُلُوبُ وَالْأَبْصَارُ অর্থ: তারা এমন লোক, যাদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ক্রয়-বিক্রয় (কোন কছুই) আল্লাহর যিকর, সলাত কায়েম এবং যাকাত আদায় করা হতে বিরত রাখতে পারেনা; তারা ভয় করে সেদিনকে, যেদিন তাদের অন্তর ও দৃষ্টি বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে। (সূরা নূর/৩৭)

অনুরূপ, যারা কুরুচিপূর্ণ ফিল্ম, নাটক, সিরিয়াল, টিভি, সিডি, ইত্যাদিতে মত্ত হবে তার কাছেও কুরআন-হাদীসের কোন কথাই ভাল লাগবেনা বা স্বাদ লাগবে না। বরং তার কাছে এসব খুবই বিরক্তিকর মনে হবে। কারণ, ঐ সব অপবিত্র বিনোদনগুলোই হল আল্লাহর স্মরণ থেকে মানুষকে দূরে সরাবার জন্য পাতানো শয়তানী চক্রের বিপদজনক ফাঁদ। এ ফাঁদে যারা আটকা পড়েছে, তারা সারাদিন এসব তুচ্ছ ও অপবিত্র বিনোদনে সময় কাটালেও ক্ষণিকের জন্য তাদেরকে কুরআন শিখতে বসাতে কষ্ট হয়।

২য় -আর একটি কারণে বহু মানুষ আল্লাহকে ভুলে যাচ্ছে। আর তা হল, তথাকথিত তরীকত পন্থীদের বিভিন্ন ভঙ্গিমার আজব যিকর আবিষ্কার । যেমন ছয় লতিফার যিকর, তবলার তলেতলে যিকর, নারী-পুরুষের সম্মিলিত যিকর, ইল্লাল্লাহ ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আল্লাহু, হু হু ইত্যাদি। এ সকল যিকরের বিক্রিত বাজারে আসল যিকর তার পরিচয় হারিয়ে ফেলেছে। আর পরিতাপের বিষয় হল, পীর সাহেবদের আবিষ্কৃত বিদআতী যিকরকে মানুষ আজ প্রকৃত যিকর বলে মনে করে। আর আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কর্তৃক প্রবর্তিত যিকরকে যিকরই মনে করেনা। মূলত: এরা সপ্তাহের এক কিংবা দুই সন্ধ্যায় তথাকথিত যিকর করার দ্বারা প্রতিমুহূর্তের আসল যিকর থেকে উদাসীন থাকছে। আলেমগণ সঙ্গতই বলেছেন, যেখানে একটি বিদআত বা মানব রচিত প্রথা চালু হয় সেখান থকে একটি সুন্নত বা রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর রেখে যাওয়া তরীকা হারিয়ে যায় বা উঠে যায়। সত্যিই কত মানুষ আজ বরকতময় সুন্নতকে কবর দিয়ে মানুষের মস্তিস্ক প্রসূত পদ্ধতি ও প্রথার পেছনে ছুটতে গিয়ে নিজেদের অজান্তে আল্লাহর যিকরকে হারিয়ে ফেলেছে। এদের জান্নাত যাওয়ার পথ যে কতটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে তা ভাবতেও গা শিউরে উঠে।

মানুষের তৈরি করা এই যিকরে শরীর গরম হলেও ঈমান ঠাণ্ডা হয়ে যায়। তারা এই যিকর করে বে-হুশ হয়ে পড়ে থাকে। পরে হুশ ফিরে পেলেও ঈমান আর ফিরে পায়না। এরা বাদ্য ও নারীর উষ্ণ আমেজে যিকর করলেও হাউজে কাউসারের পানি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এদেরকে কখনোই পান করেতে দিবেন না।

একথা যেমন স্বতঃসিদ্ধ যে, ওজু, গোসল, জুব্বা, দাড়ি, টুপি, আতর, খোশবু, লম্বা পাগড়ি, ইত্যাদি সবই আচ্ছা মত লাগিয়ে আউযু বিল্লাহ… বিসমিল্লাহ… দরুদ শরীফ, কোরআন শরীফ ইত্যাদি খতম দিয়ে, মসজিদের মেহরাবের মধ্যে বসে যদি কেউ এক চুমুক বিষ পান করে তাহলে নিশ্চিত তাকে কবরে যেতে হবে। একে এক হাজার বার মধু ভেবে পান করলেও কোন লাভ হবেনা। কারণ, সব ঠিক আছে; শুধু যেটা পান করছে সেটা ঠিক নয়। অনুরূপই, কেউ খালেস নিয়ত, পূর্ণ একাগ্রতা, জান্নাত লাভের উদগ্র বাসনা ও ঐকানি-ক প্রত্যয় বুকে নিয়ে, টুপি-দাড়ি ইত্যাদি লাগিয়ে যদি তরীকতের যিকর করে, সেও কখনোই আল্লাহর অসন’ষ্টি থেকে বাঁচতে পারবেনা। কারণ এদেরও সবকিছু ঠিক আছে; শুধু যে আমলটা করছে সেটা ইবাদত নয়, ওটা বিদআত নামক বিষ!

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন