মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
মৃত ব্যক্তির জন্য ইছালে ছাওয়াব শরীয়তের দৃষ্টিভঙ্গি
লেখকঃ আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান
৮
৫-মীলাদ
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/269/8
মীলাদ আরবী মাওলিদ শব্দ থেকে উদ্ভুত। মাওলিদ অর্থ হল কোন ব্যক্তির বিশেষ করে নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্মকাল, জন্মস্থান এবং জন্মোৎসব। জন্মক অর্থেও মীলাদ শব্দের ব্যবহার হয়। এই উপমহাদেশে মাওলিদ শব্দের পরিবর্তে মেলুদ বা মৌলুদ শরীফ আখ্যা প্রচলিত আছে। কিন্তু অধুনা মীলাদ শব্দটি বাংলাদেশে ব্যবহৃত হয়।
সাধারণত ১২ রবীউল আওয়াল তারিখে নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্ম দিন উপলক্ষে এই উৎসব উদযাপিত হয়। তবে যে কোন ব্যক্তির জন্মদিন, নতুন ব্যবসায়ের সুত্রপাত, গৃহ নির্মাণ সমাপ্তি, মৃত্যু বার্ষিকী ইত্যাদি উপলক্ষ্যে বছরের যে কোন সময় মীলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হতে দেখা যায়।
মিসরে ফাতেমী আমলের মাঝামাঝিকালে এবং শেষের দিকে মাওলিদুন-নবী অনুষ্ঠানের কিছু আভাষ পরিলক্ষিত হয়। তবে মাওলিদের আদি উৎস সম্পর্কে মুসলিম গ্রন্থাকারগণ যে ঐকমত্য প্রদান করেন তা থেকে প্রতীয়মান হয় যে মাওলিদ অনুষ্ঠান সর্বপ্রথম সালাহ-আল-দীনের ভগ্নিপতি আল মালিক আবু সাঈদ মুজাফফর আদ-দীন কোকবুরী (মৃত ৬৩০ হিজরী) কর্তৃক প্রবর্তিত হয়।
৬০৪ হিজরী অর্থ্যাৎ ১২০৭ খৃষ্টাব্দে ইরাকের মুসেল শহরের কাছে আরবালা নামক স্থানে ১২ রবিউল আওয়াল তারিখে নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্মদিন উপলক্ষে পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম বারের মত আনুষ্ঠানিকভাবে মীলাদ শরীফ অনুষ্ঠিত হয়। বিখ্যাত ঐতিহাসিক ইবনে খাল্লিকান এই মীলাদ বা মাওলিদ অনুষ্ঠানের বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন। অন্যান্য লেখকগণও একই ধরনের বিবরণই দিয়ে আসছেন। জালালুদ্দীন সুয়ূতী (মৃত ৯১১ হিজরী) এ সম্পর্কে একটি গ্রন্থ রচনা করেছেন। যার নাম হুসনিল মাকসিদ ফী আমালিল মাওলিদ।
আরবালাতে অবস্থানকালে কোকবুরীর প্রস্তাবক্রমে ইবনে দিহয়া তার ‘কিতাবুত-তানবীর ফী মাওলিদিস সিরাজ’ রচনা করেন। ... তবে
সর্বযুগেই মুসলিম সমাজে আরবালাতে অনুষ্ঠিত এ মাওলিদের বিরোধিতা দেখা যায়। প্রতিপক্ষের মতে এই উৎসব একটি বিদ‘আ অর্থাৎ ধর্মে নব উদ্ভাবিত প্রথা এবং সুন্নাতের পরিপন্থী। কিন্তু বহু মুসলিম রাষ্ট্রে বিশেষ করে এই উপমহাদেশে জনগণের ধর্মীয় জীবনে মীলাদ সুপ্রতিষ্ঠিত আসন লাভ করায় এই অনুষ্ঠান অনেক আলেমের সমর্থন লাভ করে। তারা এই বিদআতকে নীতিগতভাবে ‘বিদআতে হাসানা’ রূপে স্বীকৃতি দেন। তাদের অভিমত মীলাদ সাধারণ্যে প্রচার লাভ করার ফলে কতগুলি সৎকাজ আনুসঙ্গিকভাবে সম্পন্ন হয়। যেমন পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্ম উপলক্ষে আনন্দ প্রকাশ, তাঁর উদ্দেশ্যে দরুদ ও সালাম পেশ, দান-খয়রাত ও দরিদ্রজনকে আহার্য দান। অবশ্য মীলাদের বিরুদ্ধে অবস্থানকারীদের অভিমত অনুযায়ী মীলাদ সামা’ সূফীগনের নৃত্য (তুরস্ক) এবং ভাবোচ্ছাসমুলক অনৈসলামিক কার্যকলাপের জন্য এ অনুষ্ঠান পরিত্যাজ্য। তারা এ কথাও বলেন যে, এক শ্রেণীর লোক মীলাদকে ব্যবসারূপে গ্রহণ করে এবং এমন অলৌকিক কল্প-কাহিনী বর্ণনা করে যাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রকৃত সীরাত অলীক ও অবাস্তব কাহিনীর আড়ালে পড়ে যায়। [বাংলাপিডিয়া] মীলাদ সম্পর্কে যে কথাগুলো এতক্ষণ বলা হল তা আমার কথা নয়। সম্পূর্ণটাই বাংলাপিডিয়া থেকে নেয়া।
প্রচলিত অর্থে মীলাদ বলতে এমন অনুষ্ঠানকে বুঝায়, যেখানে কিছু মানুষ একত্রিত হয়ে কুরআনের অংশ বিশেষ পাঠ, নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশ, তাঁর উদ্দেশ্যে কিছু কবিতার পঙ্ক্তি আবৃত্তি, দুআ-মুনাজাত ও মিষ্টি বিতরণ করা হয়। এর নির্দিষ্ট কোন রূপ বা নিয়ম-কানুন নেই। অঞ্চলভেদে এর অনুষ্ঠান বিভিন্নরূপে দেখা যায়। এ যে শুধু মৃত ব্যক্তির জন্য করা হয়, তা নয় ; বরং কখনো কোন দোকান, বাড়িঘর উদ্বোধনসহ বিভিন্ন উপলক্ষে মীলাদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আশ্চর্যের ব্যাপার হল, মীলাদের অর্থ জন্ম হলেও কারো জন্মদিনে এর আয়োজন খুব একটা নজরে পড়ে না ; বরং মৃত্যু দিবসেই এর আয়োজন চোখে পড়ে বেশি। তবে কারো জন্ম দিনে মীলাদ পড়তে হবে, এ দাবি কিন্তু আমরা করছি না। এ মীলাদ মাহফিল সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় ইছালে ছাওয়াব তথা মৃতের কল্যাণের জন্য উৎসর্গিত অনুষ্ঠান আকারে।
বাংলাপিডিয়াতে মীলাদের যে ইতিহাস উল্লেখ করা হয়েছে তা যে সঠিক সে ব্যাপারে ঐতিহাসিক ও উলামায়ে কেরামের মধ্যে কোন মতভেদ নেই। বাংলাপিডিয়ার এ বিবরণ থেকে আমরা কয়েকটি বিষয় অবগত হলাম : এক. ইসলামে মীলাদ একটি নুতন আবিস্কার। কারণ রাসুলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বা তাঁর সাহাবায়ে কেরাম অথবা তাদের পরে ইসলামের অনুসরণীয় যুগে এর অস্তিত্ব ছিল না। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ইন্তেকালের প্রায় ৫৯৪ বছর পর এর প্রচলন শুরু হয়। অতএব তা ইসলামে অনুমোদিত হওয়ার প্রশ্নই আসে না। কেননা, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান আবিস্কার-উদ্ভাবনের বিষয় নয়। বরং, কুরআন-সুন্নাহ ও সাহাবাদের আচরণে তার উপস্থিতি অপরিহার্য। দুই. মীলাদ মাহফিলের প্রচলনের পর থেকে একদল উলামায়ে কেরাম এর বিরোধিতা করে আসছেন।
উম্মতে মুসলিমার উলামাগণ কখনো মীলাদের স্বপক্ষে একমত হননি। তিন. যে সকল আলেম ওলামা মীলাদকে সমর্থন করেন তারাও স্বীকার করেন যে মীলাদ বিদআত ক্রিয়া বা ধর্মে নব-আবিস্কার। অবশ্য তাদের বক্তব্য এটা বিদআতে হাসানা বা সুন্দর বিদআত। ইসলামে বিদআতে হাসানাহ বলে কিছু আছে কি না, এবং এটা গ্রহণযোগ্য কিনা তা একটু পরে আলোচনা করছি। চার. যে ব্যক্তি মীলাদের প্রচলন করেন তিনি কোন ইমাম বা আলেম ছিলেন না। তিনি ছিলেন একজন বাদশা। তবে তিনি ন্যায়পরায়ণ ছিলেন না। অনুসরণযোগ্য হওয়ার প্রশ্নতো অনেক দূরে। তার সম্পর্কে ঐতিহাসিক ইবনে খাল্লিকান বলেন, ‘সে ছিল এক অপচয়ী বাদশা। প্রজাদের বাইতুল মাল থেকে লক্ষ-লক্ষ টাকা আত্মসাত করে তা দিয়ে মীলাদের আয়োজন করত। তার সম্পর্কে ইমাম শামসুদ্দীন আজ যাহাবী রহ. বলেন : ‘সে প্রতি বছর মিলাদুন্নবীর নামে তিন লক্ষ দিনার খরচ করত।’’ [শরীয়ত ও প্রচলিত কুসংস্কার : মুফতী ইবরাহীম খান, পৃ:৪৮]
মিশরে মীলাদ সম্প্রসারিত হয় সূফীদের মাধ্যমে। এই মিলাদের আঙ্গিক তুর্কী রীতি-নীতির আতিশয্য দ্বারা বিশেষভাবে প্রভাবিত হয়। প্রায় সব যুগেই মীলাদকে একটি বিদআত অনুষ্ঠান বিবেচনা করেই হক্কানী আলেমদের পক্ষ হতে এর বিরোধিতা করা হয়েছে। হিজরী ৯৯৪ মোতাবেক ১৫৮৮ খৃষ্টাব্দে উসমানী সাম্রাজ্যের সুলতান তৃতীয় মুরাদ মীলাদকে এই উপমহাদেশে এবং তুরস্কে নব আঙ্গিকে প্রবর্তন করেন। [সংক্ষিপ্ত ইসলামী বিশ্বকোষ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন]
চলমান আলোচ্য বিষয় মীলাদ নয়। তবে ইছালে ছাওয়াবের একটি প্রচলিত বড় পদ্ধতি হিসেবে এখানে অতিসংক্ষেপে তার আলোচনা করা হল। এ সম্পর্কে আরো জানতে হলে হাকীমুল উম্মত আশ্রাফ আলী থানবী রহ. সংকলিত ‘ইসলাহুর রুসুম’ এবং তাঁরই সংকলিত আরেকটি বই ‘শরীয়তের দৃষ্টিতে ঈদে মীলাদুন্নবী’, মুফতী ইবরাহীম খান সংকলিত ‘শরীয়ত ও প্রচলিত কুসংস্কার’ পাঠ করা যেতে পারে। এ ছাড়া এ বিষয়ে হক্কানী উলামায়ে কেরাম কর্তৃক সংকলিত বহু বই-পুস্তক রয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/269/8
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।