HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

বিশ্বমানবতার প্রতি বিশ্বনবীর শাশ্বত অবদান

লেখকঃ সিরাজুল ইসলাম আলী আকবর

২। মানবতার সাম্য ও মৈত্রী
বিশ্বনবীর দ্বিতীয় অবদান হচ্ছে, বিশ্বমানবতার ঐক্য, অভিন্নতা এবং পূর্ণ মাত্রার সাম্য। মানুষ সাধারণত বিভিন্ন আকার আকৃতির হয়ে থাকে। তাদের গায়ের বর্ণও অভিন্ন নয়। এমনকি তাদের নিকট অতীতের বংশীয় ধারাবাহিকতাও অভিন্ন থাকে নি। কিন্তু মৌলিকতার দিক দিয়ে মানুষ যে একই বংশোদ্ভুত, একই পিতা ও মাতার সন্তান, তা প্রথমবারের মতো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কন্ঠেই ধ্বনিত ও প্রচারিত হলো। অথচ তখনকার দুনিয়ার মানুষ সংকীর্ণ গোত্র শ্রেণী, বর্ণ ও বংশে অত্যন্ত করুণভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। এসবের মধ্য দিয়ে মানুষে মানুষে যে পার্থক্যের সৃষ্টি হয়েছিল, তা ছিল অত্যন্ত ভয়াবহ। মানুষের মধ্যে অভিন্নতা ও ঐক্য পর্যায়ে কোনো ধারণা পর্যন্ত ছিল না, তখনকার দুনিয়ার কোনো একটি সমাজেও; বরং মানুষ ছিল মানুষের দাসানুদাস, মানুষ ছিল মানুষের প্রভু। মানুষের বিভিন্ন শ্রেণীর মধ্যে ঠিক সেই পার্থক্য বিদ্যমান ছিল, যা ছিল মানুষ ও পশুর মধ্যে। ঠিক এরূপ পরিস্থিতিতে বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উদাত্ত কন্ঠে ঘোষণা করলেন:

“হে মানুষ! তোমাদের রব–প্রভু ও সার্বভৌম মাত্র একজন (অর্থাৎ আল্লাহ)। তোমাদের সকলের পিতাও একজন। তোমরা সকলেই আদমের বংশধর আর আদম মাটি থেকে সৃষ্টি। তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি আল্লাহর নিকট অধিক সম্মানিত, যে তোমাদের মধ্যে অধিক তাকওয়াসম্পন্ন। আর তাকওয়ার ভিত্তি ছাড়া কোনো আরবের বিশেষ কোনো মর্যাদা নেই অনারবের ওপর।

এ ঘোষণাতে দু’টি বিষয়ের সমন্বয় ঘটেছে। সেই দু’টি বিষয়ের ওপরই বিশ্ব শান্তি নির্ভর করে। প্রত্যেক যুগে ও প্রত্যেক সমাজে কেবল এ দু’টি বিষয়ের ভিত্তিতেই প্রকৃত শান্তি ও স্বস্তি প্রতিষ্ঠিত হওয়া সম্ভব। আর তা হচ্ছে রব-এর এক ও অভিন্ন হওয়া এবং বিশ্বমানবতার একত্ব ও অভিন্নতা।

রব-এর এক ও অভিন্ন হওয়ার অর্থ, মানুষের উপাস্য, স্রষ্টা-রিযিকদাতা ও আইনবিধাতা তথা সার্বভৌম একমাত্র আল্লাহ। তিনি ছাড়া এ সব গুণের অধিকারী আর কেউ নেই, আর কেউ নয়। উপাস্য একজন আর আইনদাতা অন্যজন এ ধারণা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অগ্রহণযোগ্য।

মানুষের রব, মা‘বুদ বা উপাস্য ও সার্বভৌম একমাত্র আল্লাহ। এটাই হচ্ছে বিশ্বদর্শন ও সমাজ দর্শনের মৌলভিত্তি। আর দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, সকল মানুষ একই বংশজাত। সকলের দেহেই একই পিতা-মাতার রক্ত প্রবাহমান।

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ ٱتَّقُواْ رَبَّكُمُ ٱلَّذِي خَلَقَكُم مِّن نَّفۡسٖ وَٰحِدَةٖ وَخَلَقَ مِنۡهَا زَوۡجَهَا وَبَثَّ مِنۡهُمَا رِجَالاً كَثِيرٗا وَنِسَآءٗۚ﴾ [ النساء : ١ ]

“হে মানব সম্প্রদায়, তোমরা তোমাদের রবের তাকওয়া অবলম্বন কর। যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এক আত্মা থেকে। আর তা থেকে সৃষ্টি করেছেন তার স্ত্রীকে এবং তাদের থেকে ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু পুরুষ ও নারী।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১]

বস্তুত এ দু’টি ঘোষণা যেমন ছিল সম্পূর্ণ অভিনব, তেমনি তদানীন্তন সমাজ পরিবেশে ছিল অত্যন্ত বিপ্লবাত্মক। সে কালের সমাজ প্রাসাদের পক্ষে তা ছিল এক প্রলয় সৃষ্টিকারী কম্পন। তখনকার দুনিয়া এরূপ একটি বিপ্লবাত্মক ঘোষণার সাথে কিছুমাত্র পরিচিত ছিল না। এই ঘোষণার আঘাতে ছিন্ন ভিন্ন হয়ে গিয়েছিল শির্ক, মুর্তি পূজা, মানুষের গোলামী, রাজতন্ত্র, স্বৈরতন্ত্র, পৌরহিত্যবাদ ও নৈরাজ্যবাদদের সর্বব্যাপী দুশ্চেদ্য জাল। যদিও আজকের দিনের বহু আন্তর্জাতিক সংস্থাই এ ধরনের কথা বলছে। মানবাধিকার সনদ রচিত ও ঘোষিত হয়েছে। মানুষের সাম্যের ধ্বনি তোলা হয়েছে। কিন্তু সে দিনের মানুষ এসবের কিছুই জানত না। তখনকার মানুষ বংশীয় ও গোত্রীয় হীনতার তারতম্যে মর্মান্তিকভাবে বিভক্ত ছিল। কোনো কোনো বংশ নিজেদেরকে সূর্য বা চন্দ্রের অধীনস্ত বলে দাবী করত। ইয়াহূদী-খ্র্রিস্টানরা নিজেদের সম্পর্কে বলত, )আমরাই হচ্ছি আল্লাহর সন্তান ও সর্বাধিক প্রিয় লোক।)

আর কয়েক হাজার বছর পূর্বে মিশরের ফির‘আউনের দাবী ছিল, আমরা সূর্যের অর্থ্যাৎ আল্লাহর প্রতিবিম্ব। তার প্রভাব চতুর্দিকে সমান বিদ্যমান। উপমহাদেশে তখন সূর্যবংশের (অর্থাৎ সূর্যের সন্তান ও চন্দ্রের বংশধর) রাজত্ব চলছিল।

পারস্যের কিসরারা মনে করত, তাদের দেহে আল্লাহর রক্ত প্রবাহমান। জনগণ তাদের প্রতি সম্ভ্রম ও শ্রদ্ধাবোধ সহকারে তাকাত। রোমের কাইজারও মানুষের আল্লাহ হয়ে বসেছিল। লোকদের ধারণা ছিল, যারাই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অধিকারী হয়, তারাই আল্লাহ। তাদের উপাধী দেওয়া হয়েছিল মহিমান্বিত, সম্মানিত, অতিশয় শ্রদ্ধাস্পদ।

এ দিকে চীনের লোকেরা সম্রাটকে ‘আকাশ-পুত্র’ মনে করত। তাদের বিশ্বাস ছিল আকাশ পুরুষ, পৃথিবী স্ত্রী। আর দুয়ের সম্মেলনে বিশ্বের অস্তিত্ব সৃষ্টি হয়েছে।

বস্তুত এ সব ধারণা যে নিতান্তই কুসংস্কার ও অজ্ঞতাপ্রসূত তা সেদিনের লোকেরা উপলব্ধি করতে ছিল সম্পূর্ণ অক্ষম। বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আগমনের ফলেই এ ধরনের অসংখ্য ভিত্তিহীন ধারণার অসারতা থেকে মুক্তি লাভ করা সম্ভব হয়েছে বিশ্বমানবতার পক্ষে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন