মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামাজিক বিপ্লবের স্বরূপ
লেখকঃ সিরজুল ইসলাম আলী আকবর
৬
রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামাজিক বিপ্লবের সূচনা পর্ব
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/427/6
তখনকার দুনিয়া এবং বিশেষ করে আরব উপদ্বীপ ও মক্কার যে সাধারণ ও সর্বাত্মক বিপর্যস্ত অবস্থা ছিল, তাতে মানবতার জন্য আল্লাহর প্রেরিত একজন রাসূলের প্রয়োজন ছিল অত্যন্ত তীব্র। খ্রিষ্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীতে নিছক কোন সমাজ সংস্কারক, শিক্ষাগুরু, দার্শনিক নিছক কোন ধর্ম প্রবর্তকের অথবা কোন স্বৈরতান্ত্রিক রাষ্ট্রনেতার পক্ষে কিছুই করার ছিলনা। শুধু আকীদা-বিশ্বাসের সংশোধন, কোন খারাপ অভ্যাসের পরিবর্তন সাধন বা সামাজিক কুসংস্কার দূরীকরণই ছিল তখনকার মূল চাহিদা। অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধন বা আরব উপদ্বীপ ও তার অরাজনৈতিক জীবনে রাষ্ট্র ও রাজনীতি প্রবর্তন মৌলিক কাজ ছিল না। বলতে গেলে, এ ধরণের লোকের তেমন কোন অভাবও ছিল না, কিন্তু তাদের কারোর পক্ষেই আরব দেশের তখনকার প্রয়োজন পূরণ করা সম্ভব ছিল না। এই সময় প্রয়োজন ছিল সর্বগ্রাসী জাহিলিয়াতের জগদ্দল পাথরের তলা থেকে বিশ্ব মানতাকে উদ্ধার করা, প্রয়োজন ছিল একটি পূর্ণাঙ্গ সামাজিক বিপ্লবের দায়িত্ব পালনের। প্রকৃত পক্ষে এর জন্যই প্রেরিত হয়েছিলেন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং কার্যত তা পালন করে তাঁর উপর অর্পিত মিশন তিনি পুরামাত্রায় সফল করে গেছেন।
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি হেরা গুহায় প্রথম ওহী নাযিল হলে এটাতো জানা এবং বোঝা গিয়েছিল যে, তিনি আল্লাহর মনোনীত নবী ও রাসূল। কিন্তু তাঁকে কি কাজ করতে হবে তাঁর দায়িত্ব ও কর্তব্য কি এবং তা কিভাবে পালন করতে হবে, এ বিষয়ে তখন কিছুই জানা যায়নি। প্রথম ওহীর পর কিছুদিন অতিবাহিত হয়ে যায়। তারপর সূরা আল-মুদ্দাস্সিরের প্রথম সাতটি আয়াত একসঙ্গে নাযিল হয়।
হে বস্ত্রাবৃত। উঠ অতঃপর সতর্ক কর। আর তোমার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর। আর তোমার পোষাক-পরিচ্ছেদ পবিত্র কর। আর অধিক পাওয়ার আশায় দান করো না। আর তোমার রবের জন্যই ধৈর্য ধারণ কর। (সূরা মুদ্দাস্সির : ১-৭)
এ আয়াত কয়টির মাধ্যমেই প্রথমবারের মত তাঁকে নির্দেশ দেয়া হলঃ আপনি উঠুন এবং বিশ্বমানব যে পন্থা ও পদ্ধতিতে জীবন যাপন করছে, তার ভয়াভহ পরিণতি সম্পর্কে তাদেরকে সতর্ক করে দিন। সজাগ, সচেতন ও ভীত সন্ত্রস্ত করে তুলুন। দুনিয়ার মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব ও সার্বভৌমত্বের শ্রেষ্ঠত্ব বড়ত্ব কর্তৃত্ব ও সার্বভৌমত্বের কথা ঘোষণা করুন এবং তা বাস্তবে প্রতিষ্ঠিত করার কাজ শুরু করে দিন। এই কাজটি যথার্থ ও পূর্ণ যোগ্যতা সহকারে সমাধান করার জন্য প্রথমে আপনার নিজের জীবন সর্বতোভাবে পবিত্র ও পরিশুদ্ধ হতে হবে। আপনি সমস্ত বৈষয়িক স্বার্থ ও সুবিধার দিক হতে দৃষ্টি ফিরিয়ে পরিপূর্ণ ঐকান্তিকতা নিষ্ঠা ও নিঃস্বার্থপরতা সহকারে মানব সাধারণের সার্বিক সংশোধন ও উন্নয়নের কাজে মনোযোগী হোন। মানুষের কল্যাণে আপনি যা কিছু করবেন তাদের নিকট থেকে তার বেশি পেতে চাইবেন না। নিঃসন্দেহে এ এক বিরাট কাজ এ কর্তব্য পালনে সুকঠিন অসুবিধা জটিলতা সমস্যা বিরুদ্ধতা ও শুত্রুতার সম্মুখীন হওয়া অবধারিত।
তাই এজন্য আপনাকে অশেষ ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার গুণে গুণান্বিত হতে হবে সে সব আপনাকে সহ্য করতে হবে আপনার রব এর জন্য। তাঁরই নির্দেশিত কাজ করতে আপনি ধৈর্য ধারণ করবেন তাঁরই সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে। এ আয়াত কয়টি থেকে রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামাজিক বিপ্লবের যে স্বরূপ বোঝা যায়, তা হচ্ছেঃ এটি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম- এর নিজের পরিকল্পিত কোন কাজ নয় বরং স্বয়ং রাব্বুল আলামীনের নির্দেশিত। এ কাজের লক্ষ্য হচ্ছে সমগ্র মানব সমাজের উপর একমাত্র মহান আল্লাহর শ্রেষ্টত্ব ও সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করা, এবং তার পূর্বে মানবীয় প্রাধান্য ও সার্বভৌমত্ব উৎখাত করা। এ কাজ দুনিয়ায় প্রচলিত তথাকথিত রাজনৈতিক তৎপরতা ও ক্ষমতা দখলের কোন প্রতিযোগিতা নয়। এটা হচ্ছে নিজেকে ও বিশ্ব মানবকে সকল প্রকার শিরকের কলুষতা ও কদর্যতা থেকে পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করে মহান আল্লাহর একনিষ্ঠ ও পরিপূর্ণ বান্দা বানানোর কাজ। আর সে জন্য নিছক ধর্ম প্রচারের পদ্ধতিতে কিংবা ক্ষমতা দখলের পদ্ধতিতে কাজ করলে লক্ষ্যে পৌঁছা সম্ভব হবে না, সেজন্য পরম ধৈর্য ও অনমনীয়- অন্যকথায় বিপ্লবাত্মক পদ্ধতিতে কাজ করতে হবে। বলা বাহুল্য এই হচ্ছে আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠার আল্লাহ নির্দেশিত পদ্ধতি।
অতপর রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথমে নির্দেশ পানঃ
আর তুমি তোমার নিকটাত্মীয়দেরকে সতর্ক কর। আর মুমিনদের মধ্যে যারা তোমার অনুসরণ করে, তাদের প্রতি তুমি তোমার বাহুকে অবনত কর। (সূরা শুআরাঃ ২১৪-২১৫)
এ নির্দেশ পেয়ে রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরাইশ বংশের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদেরকে নিজের ঘরে আমন্ত্রিত করে দীনের দাওয়াত পেশ করেন। তখনও তার দাওয়াত ছিল সম্পূর্ণ প্রাথমিক এবং অত্যন্ত গোপন পর্যায়ের। এই সূচনা পর্বে তার দাওয়াতের সার নির্যাস ছিল এই মহা সত্য যে এই বিশ্বলোকে আল্লাহই হচ্ছেন একমাত্র ইলাহ, তিনি ছাড়া আর কেউ ইলাহ নেই। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নবী ও রাসূল, আর পরকাল অবশ্যই হবে, আল্লাহর সম্মুখে প্রতিটি মানুষকে ইহ জীবনের যাবতীয় কাজের হিসাব-নিকাশ দিতে হবে। সে অনুযায়ী তিনি শুভ পুরস্কার কিংবা কঠিন শাস্তির ফয়সালা করবেন, যা কার্যকর হওয়া থেকে কেউই নিস্কৃতি পাবে না। সেই সাথে তিনি মূর্তিপূজা ও মানুষের দাসত্ব সম্পূর্ণরূপে পরিহার করে এক আল্লাহর নিকট পূর্ণমাত্রায় আত্মসমর্পনের আহবান জানান।
এই প্রাথমিক ও গোপন পর্যায়ের দাওয়াত কবুল করে যাঁরা মুমিন সমাজে শামিল হন, তাঁদের মধ্যে মক্কার উচ্চ বংশীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ যেমন ছিলেন, তেমনি ছিলেন তদানীন্তন সমাজের দরিদ্রতম ও ক্রীতদাস পর্যায়ের। যেমন পুরুষরা শামিল ছিলেন, তেমনি নারীরাও। তাঁদের মধ্যে পূর্ণ বয়স্ক লোক যেমন ছিলেন তেমন ছিলেন কম বয়স্ক বালকও। তাদের মধ্যে যেমন ছিলেন ব্যবসায়ী, তেমনি ছিলেন বড় বড় যোদ্ধা ও সামরিক নেতৃত্বের অধিকারী ব্যক্তিবর্গ।
বিদেশীদের মধ্য থেকে ছিলেন সালমান ফারসী, সুহাইব রুমী ও বিলাল হাবশী প্রমুখ। এদের মধ্যে আরকাম ইবনে আবুল আরকাম নামক ব্যক্তিও ছিলেন এবং সাফা পর্বতের উপরে অবস্থিত তাঁর ঘরটি ছিল রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইসলামী দাওয়াতের গোপন কেন্দ্র। এই কেন্দ্রভিত্তিক দাওয়াতী কর্মকান্ডের ফলে আরো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ তাওহীদী দীন কবুল করার সৌভাগ্য লাভ করেছিলেন।
ঐতিহাসিক দৃষ্টিতে এটা ছিল ব্যক্তিগতভাবে তাওহীদী দাওয়াতের পর্যায়। কেনান এ সময় পর্যন্ত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব্যক্তিগতভাবে এক একজনকে এই দাওয়াত দিতেন এবং লোকেরা ব্যক্তিগত ভাবেই তা গ্রহণ করতেন। এরপরই শুরু হয় প্রকাশ্য ও সামষ্টিক পর্যায়ের দাওয়াতী কার্যক্রম।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/427/6
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।